fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ @fatwaa_org Channel on Telegram

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

@fatwaa_org


আমাদের উদ্দেশ্য কুরআন-সুন্নাহর আলোকে, সময়ের চাহিদা অনুযায়ী ইসলামের সঠিক ফাতওয়া তুলে ধরা।

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ (Bengali)

ফ্যাটওয়া.অর্গ টেলিগ্রাম চ্যানেলটি একটি উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ যা অনুসন্ধান এবং শিক্ষা প্রদানের জন্য উদ্দীপনা দেয়। এই চ্যানেলটির উদ্দেশ্য হল কুরআন-সুন্নাহ এবং ইসলামিক শাস্ত্রের বিষয়ে সঠিক ফাতওয়া উদ্ধৃত করা যা সময়ের চাহিদা অনুযায়ী পরিষ্কার এবং সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা দেয়। এই চ্যানেলে আপনি ইসলামিক আইন, শাস্ত্র, ফিকাহ, কুরআন তাফসীর, হাদিস, প্রলোকন এবং আরও অনেক বিষয়ে জানতে পারবেন। এছাড়াও, এই চ্যানেলে উচ্চতর ইসলামী আইন এবং ফাতওয়া সম্পর্কে আলোচনা, প্রশ্নোত্তর, আলোচনা সেমিনার, ওয়েবিনার এবং লেখা পেতে পারবেন।

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

15 Jan, 12:00


একটি হাদীসের তাহকীক

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%80%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a6%95%e0%a7%80%e0%a6%95/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

15 Jan, 12:00


একটি হাদীসের তাহকীক

প্রশ্নঃ

মাওলানা আ-সে-ম উ-ম-র রহিমাহুল্লাহর ‘ইসলাম ও গণতন্ত্র’ নামক বইয়ের ৪৬ নম্বর পৃষ্ঠায় একটি হাদীস দেখলাম। হাদীসটি হলো, نصرت بالشباب منعت بالشيوخ এই হাদীসের কি কোনও ভিত্তি আছে? আমি যতটুকু জানি, এটি হাদীস নয়। যদি হাদীস হয়ে থাকে তাহলে হাওয়ালাটা একটু জানাবেন। অনূদিত কিতাবটি মাকতাবাতুল হাবিব থেকে প্রকাশিত হয়েছে।

-হাসান মাহমুদ

উত্তরঃ

এমন কোনও হাদীসের ভিত্তি আমরা পাইনি। উর্দু ভাষায় রচিত মাওলানা আ-সে-ম উ-ম-র রহিমাহুল্লাহর মূল কিতাব ‘আদইয়ান কি জ-ঙ্গ’ এর ই-দা-রা-য়ে হি-ত্তি-ন থেকে ১৪৩৪ হিজরীর মুদ্রিত কপিতে আমরা এটির উল্লেখ পাইনি। তেমনিভাবে মাওলানা আবু জারির আব্দুল ওয়াদুদ কর্তৃক অনূদিত ও আবাবিল প্রকাশন কর্তৃক প্রকাশিত উক্ত গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ ‘ইসলাম ও গণতন্ত্র’ বইয়েও এটির উল্লেখ পাইনি। মুহাদ্দিসদের অনেকে এই বর্ণনাকে ভিত্তিহীন বলেছেন। মাকতাবাতুল হাবিব থেকে প্রকাশিত বইটি এই মুহূর্তে আমাদের হাতে নেই। তাতে এমন ভুল কিছু থাকলে মাকতাবা কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন।

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-১২-১৪৪৪ হি.

০৭-০৭-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

14 Jan, 14:15


ব্রেইন স্টোক রোগীর কাযা নামায-রোযার বিধান

প্রশ্নঃ

আমার নানু শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ ছিলেন। ব্রেইন স্টোক করেছিলেন। যার কারণে প্রায় এক বছরের বেশি নামায আদায় করতে পারেননি এবং ফরয রোযাও রাখতে পারেননি। গত রমযানে ইন্তেকাল করেছেন।

এখন জানার বিষয় হলো, তাঁর কাযা রোযা এবং নামাযগুলো কি তাঁর মেয়ে কিংবা ছেলে অথবা নাতনিরা কেউ আদায় করতে পারবে?

-আমজাদ হোসাইন

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد:

কোনো ব্যক্তির অসুস্থতা যদি এ পর্যায়ের হয় যে, সে রোযা পালনে অক্ষম হয়ে যায় এবং রোযার সক্ষমতা ফিরে পাবার আগেই সে ইন্তেকাল করে, তাহলে ঐ অবস্থায় তার ছুটে যাওয়া রোযাগুলো মাফ হয়ে যায়। তা কাযা করতে হয় না।

অনুরূপ কেউ যদি এমন অসুস্থ হয়, যার দরুণ সে শুয়ে মাথায় ইশারা করেও নামায আদায় করতে অক্ষম হয়ে পড়ে এবং এ অবস্থায় একদিন-একরাতের বেশি সময় অতিবাহিত হয়, তাহলেও তার নামায মাফ হয়ে যায়। তা আর কাযা করতে হয় না।

তবে অসুস্থতা যদি এর চেয়ে আরও কম হয়, যার ফলে সে শুয়ে ইশারার মাধ্যমে নামায আদায়ে সক্ষম হয়, তাহলে তার নামায মাফ হয় না।

কারও নামায ও রোযা অপরজন আদায় করলে তা আদায় হয় না; বরং নিজের নামায-রোযা নিজেকেই আদায় করতে হয়। আদায় না করে মারা গেলে এর বিনিময়ে ফিদইয়া আদায়ের অসিয়ত করতে হয়।

সুতরাং আপনার নানীর অসুস্থতা যদি নামায-রোযা মাফের পর্যায়ে না পৌঁছে থাকে, আর তিনি এগুলোর জন্য ফিদিয়া আদায়ের অসিয়ত করে যান এবং তার পরিত্যক্ত সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ দ্বারা অসিয়ত পূরণ করা সম্ভব হয়, তাহলে প্রত্যেক রোযার জন্য একটি এবং বিতরসহ প্রত্যেক নামাযের জন্য একটি করে ফিদইয়া আদায় করতে হবে। তা না করে অন্য কেউ তার পক্ষ থেকে নামায ও রোযা আদায় করলে যথেষ্ট হবে না।

পক্ষান্তরে তিনি যদি অসিয়ত করে না যান অথবা এই পরিমাণ সম্পদ রেখে না যান, যার এক-তৃতীয়াংশ দ্বারা অসিয়ত পূরণ করা সম্ভব, তাহলে তার নামায রোযার ফিদইয়া আদায় করা আপনাদের উপর ওয়াজিব নয়; বরং প্রাপ্ত বয়স্ক ওয়ারিসদের জন্য মুস্তাহাব। সামর্থ্য থাকলে আত্মীয় হিসেবে তার পক্ষ থেকে ফিদইয়া আদায় করা চাই এবং আশা করি আল্লাহ তাআলা এর উসীলায় তাঁকে ক্ষমা করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। অসিয়ত না করার ক্ষেত্রে এবং অসিয়ত করলে এক-তৃতীয়ংশের বেশি খরচ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রাপ্ত বয়স্ক সকল ওয়ারিসের স্বতঃস্ফূর্ত অনুমতি লাগবে এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের অংশ খরচ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

ফিদইয়া হলো এক সাদাকাতুল ফিতর পরিমাণ, যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে দিয়ে দেওয়া।

তা যদি আটা অথবা গম দিয়ে পরিশোধ করা হয়, তাহলে ১ কেজি ৬৩৫ গ্রাম আটা কিংবা গম অথবা তার মূল্য আদায় করতে হবে। আর যদি খেজুর, যব, কিশমিশ দিয়ে পরিশোধ করা হয়, তাহলে ৩ কেজি ২৭০ গ্রাম অথবা তার মূল্য আদায় করতে হবে।

উপর্যুক্ত বস্তুসমূহের মধ্যে যে কোনো একটি দিয়ে আদায় করলেই ফিদইয়া আদায় হয়ে যাবে। অবশ্য সামর্থ্যের ভিতরে সবচেয়ে দামিটা দিয়ে আদায় করা উত্তম। -সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১১১৭; সুনানে কুবরা, নাসায়ী, হাদীস নং ২৯৩০; তাহকীক সুনানে আবু দাউদ, আরনাউত: ৪/৭৫; আলমুহীতুল বুরহানি: ২/১৪৩; আদ্দুররুল মুখতার; ২/৯৯; ফতোয়া হিন্দিয়া: ১/১২৫, ১৩৭; উসূলুস সারাখসি: ১/৫১; ফতোয়া শামী: ২/৭২-৭৩

فقط. والله تعالى اعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২২-১২-১৪৪৪ হি.

১১-০৭-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

14 Jan, 14:15


ব্রেইন স্টোক রোগীর কাযা নামায-রোযার বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%87%e0%a6%a8-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a7%8b%e0%a6%95-%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%97%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a6%be-%e0%a6%a8/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

13 Jan, 13:37


عَنْ مُعَاذِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خُبَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: خَرَجْنَا فِي لَيْلَةٍ مَطِيرَةٍ وَظُلْمَةٍ شَدِيدَةٍ نَطْلُبُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي لَنَا، قَالَ: فَأَدْرَكْتُهُ، فَقَالَ: «قُلْ » فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا، ثُمَّ قَالَ: «قُلْ»، فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا، قَالَ: «قُلْ»، فَقُلْتُ، مَا أَقُولُ؟ قَالَ: ” قُلْ: قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ، وَالمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُمْسِي وَتُصْبِحُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ ” قال الترمذي: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الوَجْهِ. اهـــــ. –سنن الترمذي: 3575، وأخرجه أيضا: الإمام ابو داود: 5082 و الإمام النسائي: 5428 قال العلامة محمَّدُ بنُ عزِّ الدِّينِ عبدِ اللطيف الحنفي المشهور بـ ابن المَلَك (المتوفى: 854 هـ) رحمه الله تعالى: تدفع هذه السُّوَرُ عنك شرَّ كلِّ ذي شرٍّ. اهـــــ. – شرح مصابيح السنة للإمام البغوي: 3/46 ط. إدارة الثقافة الإسلامية.

“হযরত মুয়াজ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে খুবাইব রহিমাহুল্লাহ তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা এক বর্ষণমুখর ও ভীষণ অন্ধকার রাতে রাসূলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লামকে খুঁজতে বের হলাম। যাতে তিনি আমাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করেন। এক পর্যায়ে আমরা তাকে খুঁজে পেলাম। অতঃপর তিনি আমাদেরকে বললেন, বলো। আমরা কিছুই বললাম না। আবার বললেন, বলো। তখনও আমরা কিছু বললাম না। তৃতীয়বার বললেন, বলো। তখন আমি বললাম, কী বলবো? তিনি বললেন বলো, قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ (সূরা ইখলাস), ফালাক ও নাস সকাল-সন্ধ্যায় তিন বার করে। (যদি তা সকাল-সন্ধ্যায় পাঠ করো), তাহলে যাবতীয় অনিষ্ট থেকে নিরাপদে থাকবে।”-সুনানে তিরমিযী: ৩৫৭৫, আবু দাউদ: ৫০৮২, নাসায়ী: ৫৪২৮

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-১১-১৪৪৪ হি.

১৮-০৬-২০২৩ ঈ.জাদু কাটানোতে সূরা ফালাক ও নাসের চিকিৎসা পদ্ধতি

প্রশ্নঃ

সূরা ফালাক ও নাস কি যাদু কাটার জন্য নাযিল হয়েছে? যদি তা-ই হয়, তাহলে তার পদ্ধতি কী?

-আবদুল হক

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক ইহুদী জাদু করে, ফলে তিনি জাদুগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং অসুস্থতা বোধ করেন। আল্লাহ তাআলা জিবরাঈল আলাইহিস সালামকে পাঠিয়ে জাদুর বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অবহিত করেন। কোন কূপে যাদুর উপকরণ রাখা হয়েছে,তাও জানিয়ে দেন। ওই সময়ই এ সূরাদ্বয় নাযিল করা হয়। হাদীসে এসেছে,

عن زيد بن أرقم قال: سحر النبي -صلى الله عليه وسلم- رجل من اليهود. قال: فاشتكى، فأتاه جبريل، فنزل عليه بالمعوذتين وقال: “إن رجلا من اليهود سحرك، والسحر في بئر فلان”. قال: فأرسل عليا فجاء به، قال: فأمره أن يحل العقد “ويقرأ” آية، فجعل يقرأ ويحل, حتى قام النبي -صلى الله عليه وسلم- كأنما أنشط من عقال. –مسند عبد بن حميد: 271 ط. دار بلنسية.

قال المحقق الشيخ مصطفى العدوي: سند صحيح. اهـــــ. – مسند عبد بن حميد: 1/228 ط. دار بلنسية. قال العلامة ابن حجر العسقلاني رحمه الله تعالى:

قوله: “وفي ذلك نزلت المعوذتان”، انتهى، وهذا ذكره الثعلبي في “تفسيره” من حديث ابن عباس تعليقا، ومن حديث عائشة أيضا تعليقا، وطريق عائشة صحيح؛ أخرجه سفيان بن عيينة في تفسيره رواية أبي عبيد الله عنه، عن هشام بن عروة، عن أبيه، عن عائشة، فذكر الحديث، وفيه “ونزلت: {قل أعوذ برب الفلق}. اهـــ. – التلخيص الحبير: 4/110 ط. دار الكتب العلمية.

قال الشيخ العلامة الألباني رحمه الله تعالى:

زيادة نزول جبريل بـ (المعوذتين) ، وسندها صحيح أيضا. ولها شاهد من حديث عمرة عن عائشة. اهـــــ. – سلسلة الأحاديث الصحيحة: 6/617 ط. مكتبة المعارف –الرياض

“যায়েদ ইবনে আরকাম রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক ইহুদী জাদু করলো। ফলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অতঃপর জিবরাঈল আলাইহিস সালাম আসলেন এবং তাঁর উপর ফালাক-নাস নাযিল করলেন। তিনি আরও বললেন, এক ইহুদী আপনাকে জাদু করেছে এবং জাদুর উপকরণ অমুক কূপে রেখেছে। যায়েদ ইবনে আরকাম রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, (এ কথা শুনে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুকে পাঠালেন, হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু (জাদুর উপকরণগুলো সে কূপ থেকে উঠিয়ে) নিয়ে আসলেন। তিনি আরও বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুকে গিরা খুলতে এবং আয়াত পড়তে নির্দেশ করলেন। আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু আয়াত পড়তে লাগলেন এবং গিরা খুলতে লাগলেন। এক পর্যায়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে সুস্থ হয়ে উঠলেন, যেন তাঁকে বাঁধন মুক্ত করা হয়েছে।” -মুসনাদে আবদ ইবনে হুমাইদ, হাদীস নং: ২৭১

জাদু কাটার পদ্ধতি

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

13 Jan, 13:37


জাদু কাটানোতে সূরা ফালাক ও নাসের চিকিৎসা পদ্ধতি

প্রশ্নঃ

সূরা ফালাক ও নাস কি যাদু কাটার জন্য নাযিল হয়েছে? যদি তা-ই হয়, তাহলে তার পদ্ধতি কী?

-আবদুল হক

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক ইহুদী জাদু করে, ফলে তিনি জাদুগ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং অসুস্থতা বোধ করেন। আল্লাহ তাআলা জিবরাঈল আলাইহিস সালামকে পাঠিয়ে জাদুর বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অবহিত করেন। কোন কূপে যাদুর উপকরণ রাখা হয়েছে,তাও জানিয়ে দেন। ওই সময়ই এ সূরাদ্বয় নাযিল করা হয়। হাদীসে এসেছে,

عن زيد بن أرقم قال: سحر النبي -صلى الله عليه وسلم- رجل من اليهود. قال: فاشتكى، فأتاه جبريل، فنزل عليه بالمعوذتين وقال: “إن رجلا من اليهود سحرك، والسحر في بئر فلان”. قال: فأرسل عليا فجاء به، قال: فأمره أن يحل العقد “ويقرأ” آية، فجعل يقرأ ويحل, حتى قام النبي -صلى الله عليه وسلم- كأنما أنشط من عقال. –مسند عبد بن حميد: 271 ط. دار بلنسية.

قال المحقق الشيخ مصطفى العدوي: سند صحيح. اهـــــ. – مسند عبد بن حميد: 1/228 ط. دار بلنسية. قال العلامة ابن حجر العسقلاني رحمه الله تعالى:

قوله: “وفي ذلك نزلت المعوذتان”، انتهى، وهذا ذكره الثعلبي في “تفسيره” من حديث ابن عباس تعليقا، ومن حديث عائشة أيضا تعليقا، وطريق عائشة صحيح؛ أخرجه سفيان بن عيينة في تفسيره رواية أبي عبيد الله عنه، عن هشام بن عروة، عن أبيه، عن عائشة، فذكر الحديث، وفيه “ونزلت: {قل أعوذ برب الفلق}. اهـــ. – التلخيص الحبير: 4/110 ط. دار الكتب العلمية.

قال الشيخ العلامة الألباني رحمه الله تعالى:

زيادة نزول جبريل بـ (المعوذتين) ، وسندها صحيح أيضا. ولها شاهد من حديث عمرة عن عائشة. اهـــــ. – سلسلة الأحاديث الصحيحة: 6/617 ط. مكتبة المعارف –الرياض

“যায়েদ ইবনে আরকাম রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক ইহুদী জাদু করলো। ফলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অতঃপর জিবরাঈল আলাইহিস সালাম আসলেন এবং তাঁর উপর ফালাক-নাস নাযিল করলেন। তিনি আরও বললেন, এক ইহুদী আপনাকে জাদু করেছে এবং জাদুর উপকরণ অমুক কূপে রেখেছে। যায়েদ ইবনে আরকাম রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, (এ কথা শুনে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুকে পাঠালেন, হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু (জাদুর উপকরণগুলো সে কূপ থেকে উঠিয়ে) নিয়ে আসলেন। তিনি আরও বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুকে গিরা খুলতে এবং আয়াত পড়তে নির্দেশ করলেন। আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু আয়াত পড়তে লাগলেন এবং গিরা খুলতে লাগলেন। এক পর্যায়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে সুস্থ হয়ে উঠলেন, যেন তাঁকে বাঁধন মুক্ত করা হয়েছে।” -মুসনাদে আবদ ইবনে হুমাইদ, হাদীস নং: ২৭১

জাদু কাটার পদ্ধতি

এতো গেলো শানে নুযুল সংক্রান্ত আলোচনা। আর কীভাবে জাদু কাটা হবে –এ বিষয়ে কথা হলো, ওয়াহব ইবনে মুনাব্বিহ রহিমাহুল্লাহ এর কিতাবে একটি পদ্ধতি বর্ণিত আছে। যেটা পরীক্ষিত ও অনেক কার্যকর বলে উলামায়ে কেরামের অনেকেই মতামত দিয়েছেন। ইমাম ইবনে বাত্তাল রহিমাহুল্লাহ বলেন,

وفى كتب وهب بن منبه أن يأخذ سبع ورقات من سدر أخضر فيدقه بين حجرين ثم يضربه بالماء ويقرأ فيه آية الكرسى وذوات قل، ثم يحسو منه ثلاث حسوات ويغتسل به؛ فإنه يذهب عنه كل ما به إن شاء الله، وهو جيد للرجل إذا حبس عن أهله. اهــــ. – شرح صحيح البخارى لابن بطال: 9/446 ط. مكتبة الرشد – السعودية، الرياض.

“ওয়াহব ইবনে মুনাব্বিহের কিতাবে আছে, (জাদু কাটার জন্য) সাতটি সবুজ বড়ই পাতা নিবে এবং সেগুলোকে পাথর দ্বারা পিষবে। অতঃপর তা পানির সাথে মিশাবে এবং তাতে আয়াতুল কুরসী ও চার কুল (সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস) পড়বে। পরে সেখান থেকে তিন ঢোক পানি পান করবে। (আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে) গোসল করবে। এতে তার অসুস্থতা (জাদু) দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। কাউকে জাদু করে স্ত্রী সহবাসে অক্ষম বানিয়ে ফেললে, চিকিৎসাটি এর মহৌষধ।” -শরহু সহীহিল বুখারী, ইবনে বাত্তাল: ৯/৪৪৬

অনুরূপ ফালাক-নাস সকাল সন্ধ্যায় পাঠ করলেও যাদু-টোনা সহ যাবতীয় অনিষ্ট থেকে মুক্ত থাকা যায়। হাদীসে এসেছে,

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

13 Jan, 13:37


এতো গেলো শানে নুযুল সংক্রান্ত আলোচনা। আর কীভাবে জাদু কাটা হবে –এ বিষয়ে কথা হলো, ওয়াহব ইবনে মুনাব্বিহ রহিমাহুল্লাহ এর কিতাবে একটি পদ্ধতি বর্ণিত আছে। যেটা পরীক্ষিত ও অনেক কার্যকর বলে উলামায়ে কেরামের অনেকেই মতামত দিয়েছেন। ইমাম ইবনে বাত্তাল রহিমাহুল্লাহ বলেন,

وفى كتب وهب بن منبه أن يأخذ سبع ورقات من سدر أخضر فيدقه بين حجرين ثم يضربه بالماء ويقرأ فيه آية الكرسى وذوات قل، ثم يحسو منه ثلاث حسوات ويغتسل به؛ فإنه يذهب عنه كل ما به إن شاء الله، وهو جيد للرجل إذا حبس عن أهله. اهــــ. – شرح صحيح البخارى لابن بطال: 9/446 ط. مكتبة الرشد – السعودية، الرياض.

“ওয়াহব ইবনে মুনাব্বিহের কিতাবে আছে, (জাদু কাটার জন্য) সাতটি সবুজ বড়ই পাতা নিবে এবং সেগুলোকে পাথর দ্বারা পিষবে। অতঃপর তা পানির সাথে মিশাবে এবং তাতে আয়াতুল কুরসী ও চার কুল (সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস) পড়বে। পরে সেখান থেকে তিন ঢোক পানি পান করবে। (আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে) গোসল করবে। এতে তার অসুস্থতা (জাদু) দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। কাউকে জাদু করে স্ত্রী সহবাসে অক্ষম বানিয়ে ফেললে, চিকিৎসাটি এর মহৌষধ।” -শরহু সহীহিল বুখারী, ইবনে বাত্তাল: ৯/৪৪৬

অনুরূপ ফালাক-নাস সকাল সন্ধ্যায় পাঠ করলেও যাদু-টোনা সহ যাবতীয় অনিষ্ট থেকে মুক্ত থাকা যায়। হাদীসে এসেছে,

عَنْ مُعَاذِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خُبَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: خَرَجْنَا فِي لَيْلَةٍ مَطِيرَةٍ وَظُلْمَةٍ شَدِيدَةٍ نَطْلُبُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي لَنَا، قَالَ: فَأَدْرَكْتُهُ، فَقَالَ: «قُلْ » فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا، ثُمَّ قَالَ: «قُلْ»، فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا، قَالَ: «قُلْ»، فَقُلْتُ، مَا أَقُولُ؟ قَالَ: ” قُلْ: قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ، وَالمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُمْسِي وَتُصْبِحُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ ” قال الترمذي: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الوَجْهِ. اهـــــ. –سنن الترمذي: 3575، وأخرجه أيضا: الإمام ابو داود: 5082 و الإمام النسائي: 5428 قال العلامة محمَّدُ بنُ عزِّ الدِّينِ عبدِ اللطيف الحنفي المشهور بـ ابن المَلَك (المتوفى: 854 هـ) رحمه الله تعالى: تدفع هذه السُّوَرُ عنك شرَّ كلِّ ذي شرٍّ. اهـــــ. – شرح مصابيح السنة للإمام البغوي: 3/46 ط. إدارة الثقافة الإسلامية.

“হযরত মুয়াজ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে খুবাইব রহিমাহুল্লাহ তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা এক বর্ষণমুখর ও ভীষণ অন্ধকার রাতে রাসূলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লামকে খুঁজতে বের হলাম। যাতে তিনি আমাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করেন। এক পর্যায়ে আমরা তাকে খুঁজে পেলাম। অতঃপর তিনি আমাদেরকে বললেন, বলো। আমরা কিছুই বললাম না। আবার বললেন, বলো। তখনও আমরা কিছু বললাম না। তৃতীয়বার বললেন, বলো। তখন আমি বললাম, কী বলবো? তিনি বললেন বলো, قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ (সূরা ইখলাস), ফালাক ও নাস সকাল-সন্ধ্যায় তিন বার করে। (যদি তা সকাল-সন্ধ্যায় পাঠ করো), তাহলে যাবতীয় অনিষ্ট থেকে নিরাপদে থাকবে।”-সুনানে তিরমিযী: ৩৫৭৫, আবু দাউদ: ৫০৮২, নাসায়ী: ৫৪২৮

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-১১-১৪৪৪ হি.

১৮-০৬-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

13 Jan, 13:37


জাদু কাটানোতে সূরা ফালাক ও নাসের চিকিৎসা পদ্ধতি

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%81-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8b%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a7%82%e0%a6%b0%e0%a6%be-%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%95/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


“হাদীসের বাণী “فقد غزا” (সে যেন জিহাদ করলো), এ ব্যাপারে ইবনে হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘এর অর্থ হলো, সাওয়াব ও প্রতিদানের ক্ষেত্রে সে মুজাহিদের মতোই, যদিও বাস্তবে সে কিতাল করেনি। এরপর তিনি বুসর ইবনে সাঈদের বরাতে ভিন্ন আরেক সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেন এই শব্দে- “كتب له مثل أجره، غير أنه لا ينقص من أجره شيء” (তাঁর জন্য মুজাহিদের সমপরিমাণ সাওয়াব লেখা হবে, তবে ওই মুজাহিদের সাওয়াব থেকে কোনও কিছু কমানো হবে না)। ইবনে মাজাহ ও ইবনে হিব্বান উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে কাছাকাছি অর্থের আরেকটি হাদীস উল্লেখ করেছেন- “من جهز غازيا حتى يستقل كان له مثل أجره حتى يموت أو يرجع” (যে ব্যক্তি এমনভাবে কোনও মুজাহিদের আসবাবপত্র প্রস্তুত করে দিবে, যাতে সে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যায়, সেও ওই মুজাহিদের অনুরূপ সাওয়াব পাবে, যতক্ষণ না সে মৃত্যু বরণ করবে অথবা নিরাপদে ফিরে আসবে)। এই বর্ণনা থেকে দুটি ফায়দা পাওয়া যায়। এক. উল্লেখিত পুরস্কার অর্জিত হবে, যখন মুজাহিদের প্রয়োজনীয় সকল আসবাব সে সরবরাহ করা হবে। দুই. ওই যুদ্ধ শেষ হওয়া পর্যন্ত সব সাওয়াব সে সমান হারে পাবে।” –ফাতহুল বারী: ৬/৫০

আনওয়ার শাহ কাশমীরী রহিমাহুল্লাহ (১৩৫২ হি.) বলেন,

واعلم أن الفعل قد يحصل من واحد، وقد يحصل من جماعة، فإذا كان يحصل من الجماعة يحصل لكل منهم أجر كفاعله، سواء كان فعله بنفسه، أو أعان عليه بنوع، كالجهاد، فإنه لا يحصل إلا من جماعة تغزو، وكذا لا بد له ممن يعين عليه، ويقوم على الغازين، فالمعين له، والقائم عليه كلهم كالغزاة في سبيل الله….. فالحاصل أن من باشر القتال، ومن أعان عليه بنوع، كلهم مشتركون في الجهاد، وإن اختلفوا في الأجر زيادة ونقصانا بحسب تفاوت مراتب الخلوص، وسماحة الأنفس، وصرف الأموال، وبذل المهج. -فيض الباري على صحيح البخاري (4/ 171-172(

“জ্ঞাতব্য যে, কোনো কোনো কাজ একক ব্যক্তির দ্বারা সংঘটিত হয়, কোনো কোনো কাজ হয় জামাআতের মাধ্যমে। যখন কাজ কোনও জামাআতের মাধ্যমে হয়, তখন এর প্রত্যেক সদস্যই মূল কর্তার সমান প্রতিদান পায়। চাই সে সশরীরে সে কাজ করুক অথবা কোনও ভাবে এর সহযোগীর ভূমিকা পালন করুক। যেমন জিহাদ। তা সংঘটিত হওয়ার জন্য এমন একটি দল প্রয়োজন, যারা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে। এমনিভাবে এমন কিছু লোকও এখানে থাকা জরুরি, যারা (বিভিন্ন দিক থেকে) এর সহযোগিতা করবে এবং যোদ্ধাদের দেখাশুনা করবে। সুতরাং সাহায্যকারী দল এবং যোদ্ধাদের দেখাশুনাকারী দল সকলেই আল্লাহর পথে সরাসরি যুদ্ধকারীর মতো গণ্য হবে।… মোটকথা যে ব্যক্তি সরাসরি কিতালে অংশ নেয়, আর যে ব্যক্তি কোনও প্রকারে তাতে সহায়তা করে, সকলেই জিহাদে অংশ নিয়েছে বলে বিবেচিত হবে। হ্যাঁ, ইখলাসের স্তর, (দীনের পথে) কুরবানীর মানসিকতায় কম-বেশ এবং সম্পদ ব্যয় ও প্রাণ উৎসর্গের ক্ষেত্রে কম-বেশের ভিত্তিতে সাওয়াবে কেউ কম কেউ বেশি হবে, সেটি ভিন্ন কথা।” –ফয়জুল বারী: ৪/১৭১

আরেক হাদীসে এসেছে,

عن رافع بن خديج قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: العامل على الصدقة بالحق كالغازي في سبيل الله حتى يرجع إلى بيته. حديث رافع بن خديج حديث حسن. -سنن الترمذي ت بشار (2/ 30(، الرقم: 645

“ন্যায়সঙ্গতভাবে যাকাত উসুলকারী ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধরত মুজাহিদের মতো, যতক্ষণ না সে বাড়িতে ফিরে আসে।” –সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং: ৬৪৫

ইউসুফ বানূরী রহিমাহুল্লাহ (১৩৯৭ হি.) বলেন,

قوله: (كالغازي في سبيل الله) قال ابن العربي: (المعنى صحيح، وذلك أن الله ذو الفضل العظيم قال: «من جهز غازيا فقد غزا، ومن خلفه في أهله بخير فقد غزا»، والعامل على الصدقة خليفة الغازي، لأنه يجمع مال سبيل الله فهو غاز بعمله وهو غاز بنيته، وقد قال عليه السلام: «إن بالمدينة قوما ما سلكتم واديا ولا قطعتم شعبا إلا وهم معكم، حبسهم العذر»، فكيف بمن حبسهم العمل للغازي وخلافته وجمعُ ماله الذي ينفقه في سبيل الله؟ وكما لا بد عن الغزو فلا بد من جمع المال الذي يُغْزى به، فهما شريكان في العمل، فوجب أن يشتركا في الأجر). -معارف السنن: 5\253

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


“হাদীসের বাণী (كالغازي في سبيل الله) এ সম্পর্কে ইবনুল আরাবী রহিমাহুল্লাহ বলেন, এর মর্ম সঠিক। কারণ, আল্লাহ তাআলা সীমাহীন অনুগ্রহের অধিকারী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর পথের কোনও মুজাহিদকে আসবাব পত্র দিয়ে প্রস্তুত করলো, সে যেন নিজে জিহাদ করলো। যে ব্যক্তি কোনও মুজাহিদ জিহাদে যাওয়ার পর উত্তমরূপে তার পরিবার-পরিজনের দেখাশুনা করলো, সেও যেন নিজে জিহাদ করলো।’ আর সাদাকা সংগ্রহকারী ব্যক্তি মুজাহিদের দেখাশুনায় নিয়োজিত। কেননা সে আল্লাহর পথের জন্য মাল সংগ্রহ করে। অতএব সে তার আমলের মাধ্যমে মুজাহিদ, আবার সে তার নিয়তের কারণেও মুজাহিদ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মদীনায় কিছু লোক আছে, যারা তোমরা যত পথ চলেছো, যত উপত্যকা অতিক্রম করেছো, সব জায়গায় (তাদের মন) তোমাদের সাথেই ছিলো (ফলে সাওয়াবেও তারা তোমাদের সাথে অংশীদার হবে)। (কিন্তু শারীরিক কিংবা আর্থিক) অক্ষমতা তাদেরকে আটকে রেখেছে।’ যখন তাদের ক্ষেত্রে এমন, তাহলে ওই সাদাকা উসুলকারীদের হুকুম কী হবে, যারা মুজাহিদের প্রয়োজনে, তার পরিবারের দেখাশুনার প্রয়োজনে এবং ওই সম্পদ সংগ্রহের কাজে আটকা পড়েছে, যা মুজাহিদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করবে? যুদ্ধ যতটা জরুরি, যুদ্ধে ব্যয়ের জন্য মাল সংগ্রহ করা ততটাই জরুরি। কাজেই জিহাদের আমলে উভয়ে অংশীদার। সুতরাং প্রতিদানের ক্ষেত্রেও উভয়ে অংশীদার হওয়া জরুরি।” -মাআরিফুস সুনান: ৫/২৫৩, মাকতাবায়ে আশরাফিয়া

আরেকটি হাদীসে এসেছে,

عن عبد الله بن عبد الرحمن بن أبي حسين، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: إن الله ليدخل بالسهم الواحد ثلاثة الجنة: صانعه يحتسب في صنعته الخير والرامي به والممد به، وقال: ارموا واركبوا، ولأن ترموا أحب إلي من أن تركبوا، كل ما يلهو به الرجل المسلم باطل، إلا رميه بقوسه، وتأديبه فرسه، وملاعبته أهله، فإنهن من الحق. وهذا حديث حسن. -سنن الترمذي ت بشار (3/ 226(، الرقم: 1637

“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা একটি তীরের মাধ্যমে তিন ব্যক্তিকে জান্নাতে দাখিল করাবেন। এর প্রস্তুতকারী, যে প্রস্তুতের সময় সাওয়াবের আশা করেছিলো; এর নিক্ষেপকারী এবং নিক্ষেপের সময় নিক্ষেপকারীর হাতে এক এক করে তীর তুলে দিয়ে সাহায্যকারী।

তিনি আরও ইরশাদ করেন, তোমরা তীরন্দাজি ও অশ্বারোহণ রপ্ত করো। আর তোমাদের অশ্বারোহণের তুলনায় তীরন্দাজী শেখা আমার কাছে বেশি পছন্দনীয়। মুসলিম ব্যক্তি যত খেল-তামাশা করে, সবই পরিত্যাজ্য। তবে ধনুক থেকে তীর নিক্ষেপ, ঘোড়ার প্রশিক্ষণ এবং স্ত্রীর সাথে ক্রীড়া-কৌতুক এর অন্তর্ভুক্ত নয়। এগুলো ভালো কাজ।”–সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং: ১৬৩৭

হাদীসগুলোর সারকথা

এসব হাদীস থেকে বুঝা যায়, যারা ময়দানের পেছনে থেকে, কিতাল করা ও চালিয়ে যাওয়ার জন্য জরুরি রসদ, পরামর্শ ও জ্ঞান সরবরাহের কাজ আঞ্জাম দেন, তারাও ময়দানে কিতালরত মুজাহিদদের অনুরূপ সাওয়াব লাভ করবেন ইনশাআল্লাহ।

বিশেষ করে যারা জিহাদ ও কিতালের মতো জামাতবদ্ধ ও সমষ্টিগত কাজে, কর্ম বণ্টন নীতির ভিত্তিতে এবং আমীরের নির্দেশ পালনার্থে পেছনে থেকে দায়িত্ব আঞ্জাম দেন, সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ময়দানে যেতে পারেন না, তারা অবশ্যই কিতালের ফযীলত ও মর্যাদা লাভ করবেন ইনশাআল্লাহ। বরং আমীরের নির্দেশ, বিশেষ যোগ্যতা, প্রয়োজন ইত্যাদির কারণে যদি শরঈ দিক থেকে এই কাজের জন্য তারা বিকল্পহীন হয়ে পড়েন, তখন তা তাদের জন্য ময়দানের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ।

সহীহ বুখারীতে এসেছে,

عن أبي هريرة، عن النبي صلى الله عليه وسلم، قال: «… طوبى لعبد آخذ بعنان فرسه في سبيل الله، أشعث رأسه، مغبرة قدماه، إن كان في الحراسة، كان في الحراسة، وإن كان في الساقة كان في الساقة، إن استأذن لم يؤذن له، وإن شفع لم يشفع». -صحيح البخاري (4/ 34 (

“আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, … সুসংবাদ ওই বান্দার জন্য, যে নিজ ঘোড়ার লাগাম ধরে আল্লাহর পথে জিহাদে বের হয়েছে। মাথার চুল তার এলোমেলো। পা ধূলিমলিন। তাকে পাহারায় নিযুক্ত করা হলে পাহারায়ই থাকে। বাহিনীর পশ্চাতে রাখা হলে পশ্চাতেই থাকে। (অথচ সে এতই সাধারণ স্তরের মানুষ) যদি কারও সাক্ষাতের অনুমতি চায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যদি কারও জন্য সুপারিশ করে সুপারিশ গৃহীত হয় না।” –সহীহ বুখারী, হাদীস নং: ২৮৮৭

তুরিবিশতী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

قال التوربشتي رحمه الله: أراد بالحراسة حراسته من العدو أن يهجم عليهم، وذلك يكون في مقدمة الجيش، والساقة مؤخرة الجيش، فالمعنى ائتماره لما أمر، وإقامته حيث أقيم، لا يفقد من مكانه بحال. -مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح (8/ 3230 (

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


আলোচ্য প্রথম হাদীসটিতে যেমন ফী সাবীলিল্লাহর এক সকাল বা এক বিকালকে দুনিয়া এবং দুনিয়ায় যা আছে, সবকিছু থেকে উত্তম বলা হয়েছে, এখানেও একটু ভিন্ন বাক্যে একই ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। কিতালের উদ্দেশ্যে সফরের এক সকালকে দুনিয়ার সব কিছু দান করা অপেক্ষা উত্তম বলা হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, কিতালের উদ্দেশ্যে যে সফর হয়, সেটা জিহাদ; কিতাল নয়। সুতরাং জিহাদে রত ব্যক্তিরাও উক্ত ফযীলত লাভ করবেন ইনশাআল্লাহ।

তৃতীয় ফযীলতটির বিবরণ হাদীসের ভাষায় নিম্নরূপ:

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: مَرَّ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِشِعْبٍ فِيهِ عُيَيْنَةٌ مِنْ مَاءٍ عَذْبَةٌ فَأَعْجَبَتْهُ لِطِيبِهَا، فَقَالَ: لَوِ اعْتَزَلْتُ النَّاسَ، فَأَقَمْتُ فِي هَذَا الشِّعْبِ، وَلَنْ أَفْعَلَ حَتَّى أَسْتَأْذِنَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَذَكَرَ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: «لَا تَفْعَلْ، فَإِنَّ مُقَامَ أَحَدِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَفْضَلُ مِنْ صَلَاتِهِ فِي بَيْتِهِ سَبْعِينَ عَامًا، أَلَا تُحِبُّونَ أَنْ يَغْفِرَ اللَّهُ لَكُمْ وَيُدْخِلَكُمُ الجَنَّةَ، اغْزُو فِي سَبِيلِ اللَّهِ، مَنْ قَاتَلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَوَاقَ نَاقَةٍ وَجَبَتْ لَهُ الجَنَّةُ»: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ. – سنن الترمذي ت شاكر (4/ 181): 1650

“আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক সাহাবী একবার এক পাহাড়ী উপত্যকা অতিক্রম করছিলেন। সেখানে ছিলো মিষ্টি পানির একটি ছোট ঝর্ণা। এর স্বাদ ও সৌন্দর্য তাঁকে মুগ্ধ করে। তিনি ভাবলেন, আমি যদি মানুষ থেকে আলাদা হয়ে (ইবাদতের জন্য) এই উপত্যকায় বসবাস করতে পারতাম! কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুমতি না নিয়ে তো তা করা যায় না! এরপর তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করলেন। উত্তরে তিনি বললেন, এমনটি করো না। সাবীলুল্লাহ তথা আল্লাহর পথে সামান্য সময় অবস্থান করা, ঘরে বসে সত্তর বছর সালাত আদায় করার চেয়ে উত্তম। তোমরা কি পছন্দ করো না যে, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিবেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করাবেন? আল্লাহর পথে লড়াই করে যাও! উটনীর দুইবার দুধ দোহনের মধ্যবর্তী সময় পরিমাণও যদি কেউ আল্লাহর পথে কিতাল করে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।” –সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং: ১৬৫০

শুধু এই হাদীসের ভিত্তিতে জিহাদের জন্য এই ফযীলত সাব্যস্ত করার সুযোগ নেই

উক্ত হাদীসে সরাসরি কিতাল শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘উটনীর দুইবার দুধ দোহনের মধ্যবর্তী সময় পরিমাণও যদি কেউ আল্লাহর পথে কিতাল করে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়’। সুতরাং যারা সহযোগী ভূমিতে কাজ করছেন, তারা যেহেতু কিতাল করছেন না, তাই তাদেরকে সরাসরি উক্ত হাদীসের মিসদাক ও প্রতিপাদ্য বলার যেমন সুযোগ নেই, তেমনি শুধু উক্ত হাদীসের উপর ভিত্তি করে এটাও বলার সুযোগ নেই যে, তারা তাদের জিহাদী কাজের বিনিময়ে উক্ত হাদীসে বর্ণিত সুনির্দিষ্ট ফযীলতটি লাভ করবেন।

অন্যান্য হাদীস দ্বারা এই ফযীলতটিও জিহাদের জন্য প্রমাণিত

তবে অন্যান্য কিছু হাদীস প্রমাণ করে, কিতালের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু কাজেও কিতালের সাওয়াব পাওয়া যায়। যেমন এক হাদীসে এসেছে,

حدثنا أبو معمر، حدثنا عبد الوارث، حدثنا الحسين، قال: حدثني يحيى، قال: حدثني أبو سلمة، قال: حدثني بسر بن سعيد، قال: حدثني زيد بن خالد رضي الله عنه: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: ”من جهز غازيا في سبيل الله فقد غزا، ومن خلف غازيا في سبيل الله بخير فقد غزا“-صحيح البخاري (4/ 27(، الرقم: 2843

“যায়েদ ইবনে খালিদ জুহানী রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথের কোনও মুজাহিদকে আসবাব পত্র দিয়ে প্রস্তুত করে দিলো, সে যেন নিজে জিহাদ করলো। যে ব্যক্তি কোনও মুজাহিদের অনুপস্থিতিতে তার পরিবার-পরিজনকে উত্তমভাবে দেখা-শুনা করলো, সে যেন নিজে জিহাদ করলো।”–সহীহ বুখারী, হাদীস নং: ২৮৪৩

হাদীসের ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনে হাজার রহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু: ৮৫২ হি.) বলেন,

قوله: “فقد غزا” قال ابن حبان: معناه أنه مثله في الأجر وإن لم يغز حقيقة. ثم أخرجه من وجه آخر عن بسر بن سعيد بلفظ: “كتب له مثل أجره، غير أنه لا ينقص من أجره شيء” ولابن ماجه وابن حبان من حديث عمر نحوه بلفظ: “من جهز غازيا حتى يستقل كان له مثل أجره حتى يموت أو يرجع” وأفادت فائدتين إحداهما أن الوعد المذكور مرتب على تمام التجهيز، وهو المراد بقوله: “حتى يستقل”. ثانيهما أنه يستوي معه في الأجر إلى أن تنقضي تلك الغزوة. -فتح الباري لابن حجر (6/ 50(

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


“কী কারণে তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করছো না, অথচ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সমস্ত মীরাস আল্লাহরই জন্য। তোমাদের মধ্যে যারা (মক্কা) বিজয়ের আগে ব্যয় করেছে ও কিতাল করেছে, তারা (পরবর্তীদের) সমান নয়। মর্য়াদায় তাঁরা সেই সকল লোক অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, যারা মক্কা বিজয়ের পরে ব্যয় করেছে ও কিতাল করেছে। তবে আল্লাহ কল্যাণের প্রতিশ্রুতি সকলকেই দিয়েছেন। তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত।” -সূরা হাদীদ ৫৭: ১০

আল্লামা কুরতুবী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

وإنما كانت النفقة قبل الفتح أعظم، لأن حاجة الناس كانت أكثر لضعف الإسلام، وفعل ذلك كان على المنفقين حينئذ أشق والأجر على قدر النصب. -تفسير القرطبي (17/ 240(

“বিজয়ের আগের দান শ্রেষ্ঠ ছিলো, কারণ ইসলামের দুর্বলতার দরুন মানুষের প্রয়োজন তখন অনেক বেশি ছিলো। তাছাড়া যারা দান করেছেন, তাদের জন্যও (দারিদ্র্য ইত্যাদির কারণে) কাজটা অনেক কঠিন ছিলো।” –তাফসীরে কুরতুবী: ১৮/২৪০

আমলে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

আসলে কাজ কোনটা করছি বা কোনটা আমার ভাগে পড়লো, সেটা বড় বিষয় নয়। আমলের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও মূল বিষয় দুটি।

এক. কাজটি শরীয়তের উসুল ও নীতি অনুযায়ী করছি কি না? যেমন শরীয়তের তাকাযা অনুযায়ী করা, শরীয়ত নির্ধারিত পদ্ধতিতে করা, ইখলাসের সঙ্গে করা, ইহতিসাব ও সাওয়াবের আশায় করা, আল্লাহর ভয়ে করা ইত্যাদি।

দুই. সর্বোচ্চ ফযীলত ও মর্যাদার এবং সর্বোচ্চ ত্যাগ ও কুরবানীর কাজটি করার জন্য আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত কি না, তার সত্যিকার অন্বেষা আছে কি না এবং সুযোগ পেলে আমলের মাধ্যমে তার সত্যায়ন করছি কি না?

এ দুটি বিন্দুতে যে যত অগ্রগামী হবে, তার আমলের সাওয়াব তত বেশি হবে। এই দুই বিন্দুতে যারা দুর্বল, তারা বাহ্যত অনেক বড় আমল করেও যে সাওয়াব পাবে না, যারা এই দুই বিন্দুতে সবল, তারা অনেক ছোট আমল করেও তার চেয়ে অধিক সাওয়াব লাভ করবে। একজন বীর বিক্রমে কিতাল করেও যে সাওয়াব পাবে না, আরেকজন মুজাহিদদের রান্নার খড়ি কুড়িয়ে তার চেয়ে বেশি সাওয়াব লাভ করবে। যেমন ইতিমধ্যে সাহাবায়ে কেরামের ‘মুদ’ ও ‘নিসফে মুদ’ পরিমাণ দানের একটি হাদীস আমরা উল্লেখ করেছি।

এজন্যই হাদীসে এসেছে,

من سألَ اللَّهَ الشَّهادةَ صادقًا بلَّغَه اللَّهُ منازلَ الشُّهداءِ وإن ماتَ علَى فراشِه. -أخرجه مسلم برقم: 5039، كتاب الإمارة، باب استحباب طلب الشهادة في سبيل الله.

“যে সততা ও নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর কাছে শাহাদাত প্রার্থনা করবে, আল্লাহ তাঁকে শহীদদের মর্যাদায় উত্তীর্ণ করবেন; যদিও সে তাঁর বিছানায় মৃত্যু বরণ করে।” –সহীহ মুসলিম, হাদীস নং: ৫০৩৯

সুতরাং আমাদের কর্তব্য হচ্ছে, এই দুটি বিন্দুতে কার কোথায় দুর্বলতা আছে, তা খুঁজে বের করা এবং তার সংশোধন ও উন্নয়নে সর্বাত্মক চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে শরীয়তের প্রতিটি বিষয় যথাযথ বুঝার এবং সে অনুযায়ী সর্বোচ্চ ত্যাগ ও কুরবানী করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

وما توفيقي إلا بالله، والله تعالى أعلم بالصواب، وعلمه أتم وأحكم، وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وعلى آله وصحبه أجمعين ومن تبعهم بإحسان إلى يوم الدين، وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (গুফিরা লাহু)

১৬-১২-১৪৪৪ হি.

০৫-০৭-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


“পাহারা দ্বারা উদ্দেশ্য, বাহিনীকে শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করা। এটা হয় বাহিনীর অগ্রভাগ থেকে। আর ‘সাকা’ অর্থ বাহিনীর পশ্চাৎভাগ। হাদীসের মর্ম হলো, তাকে যে আদেশই করা হয়, তা মেনে নেয়। যে কাজই তাকে দেওয়া হয়, সঠিকভাবে তা বাস্তবায়ন করে। সে তার কাজ ছেড়ে কোথাও যায় না।” –মিরকাতুল মাফাতিহ: ৮/৩২৩০

একটি ফতোয়া

মিম্বারুত তাওহীদে প্রকাশিত; শায়খ আবু মুহাম্মাদ আল মাকদিসী (ফাক্কাল্লাহু আসরাহু)র একটি ফতোয়া লক্ষ করুন,

هل يجوز لشاب فيه إستطاعة القتال أن يجلس خلف الحاسوب للجهاد الاعلامي؟ رقم السؤال: 1066

السلام عليكم و رحمة الله و بركاته أنا أعمل مع احدى مؤسسات المجاهدين الإعلامية؛ ولكن قلبي ليس مطمئنا؛ لأن صحتي الحمد لله جيده و إن شاء الله لدي استطاعة القتال ضد الكفار والمرتدين ولكن هناك إخواننا يقولون العمل الإعلامي أفضل لك بسبب قلة إعلام المجاهدين هناك في خراسان. سؤالي هل يجوز لي أن أجلس خلف الحاسوب؟ ام أقاتل في الجبهات؟ و إن كان الجواب كلاهما جهاد في سبيل الله فأيهما أفضل؟ 1 – الجهاد في الجبهات مع المجاهدين؟ 2 – الجهاد الإعلامي؟ الرجاء أريد الجواب من شيخ المجاهدين الشيخ أبي محمد المقدسي حفظك الله من كيد الكفار و من معهم من المرتدين سامحوني! لا أفهم لغة العربية الا قليلا ابو زياد من ارض خراسان (افغانستان)

السائل: ابو زياد

المجيب: الشيخ أبو محمد المقدسي

الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله أخانا الفاضل جزاك الله خيرا على حرصك على تحري الأفضل والأحب إلى الله؛ وما دمت كذلك فاقرأ قوله تعالى: (إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُمْ بُنْيَانٌ مَرْصُوصٌ) فالقتال والجهاد الجماعي الذي تضبطه إمارة وجماعة ومنهج واضح وتحت راية نقية؛ هذا هو أفضل الأعمال وأكملها وأحبها إلى مولانا وهو ذروة سنام الإسلام؛ وهذا النوع من الجهاد لا يكمل ولا ينجح ولا تتأتى أهدافه بالقتال وحده، وإن كان القتال من أعظم الأعمال فيه؛ ولكن لابد فيه من جوانب أخرى تردف هذا الجهاد وتكون لسانه الفصيح الناطق الذي يوضح غاياته وأهدافه ويذب عنه تحريف المحرفين وشبهات المبطلين، ورحمه التي تزوده بالدعاة والمجاهدين ولا تعقم، أو نهره الذي يزوده بالرجال والأموال ولا ينضب؛ وغير ذلك مما يحتاجه الجهاد ولا يكمل ويؤتي ثماره إلا به؛ ولذلك يحب الله القتال والجهاد الذي يقوم به من وصفهم بأنهم (صفا كأنهم بنيان مرصوص) يشد بعضه بعضا ويكمل بعضه بعضا، ويكون فيه للردء أجر المباشر للقتال، لأن المباشر للقتال لن يستمر في قتاله ولن ينجح فيه بغير أخيه الذي هو معه ردءا .. وعليه فما أستطيع نصحك به؛ أنه إذا كان عملك الإعلامي الذي تقوم به بتكليف من أميرك أو من المجاهدين فلا يحل لك أن تتركه وتهمل الثغر الذي وضعوك فيه بغير إذنهم ودون التنسيق معهم، بأن تعلمهم بأن نفسك اشتاقت للقتال وملت القعود خلف الحاسوب، وحبذا لو يوفروا غيرك ليسد مكانك ويقوم مقامك؛ فإن أذنوا وفعلوا فاستعن بالله وتوكل عليه وإلا فلا يحل لك إن كنت مؤتمنا على أمانة لا يوجد من يقوم بها غيرك أن تفرط فيها وتضيعها، والله يتولاك وإن علم منك صدقا بلغك منازل الشهداء ولو مت على فراشك .. وفقك الله وإيانا لما يحب ويرضى ..

কিতালে সক্ষম যুবকের জন্য মিডিয়া জিহাদের কাজে কম্পিউটারে বসে থাকা জায়েয আছে কি?

প্রশ্ন নং ১০৬

প্রশ্ন:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ!

আমি মুজাহিদদের একটি মিডিয়া সংস্থার সঙ্গে কাজ করি। কিন্তু আমার মন আশ্বস্ত হতে পারছে না। আমার স্বাস্থ্যগত অবস্থা আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো। ইনশাআল্লাহ কাফের মুরতাদদের বিরুদ্ধে আমি কিতাল করতে পারবো এবং সে সক্ষমতা আমার আছে। কিন্তু আমাদের এখানকার ভাইয়েরা বলছেন, ‘আপনার জন্য মিডিয়ার কাজ করাই উত্তম হবে। কারণ, এখানে খোরাসানে মুজাহিদদের মিডিয়া ও প্রচার মাধ্যম অনেক কম।’ আমার প্রশ্ন হলো, আমার জন্য কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা কি জায়েয হচ্ছে? না, আমি ময়দানে সম্মুখ সমরে লড়াইয়ের জন্য চলে যাবো? যদি ‍উত্তর হয় যে, উভয়টিই জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ, তাহলে প্রশ্ন হলো, কোনটি উত্তম? মুজাহিদ ভাইদের সঙ্গে রণাঙ্গণে লড়াই করা, নাকি মিডিয়া জিহাদের কাজ করা?

শায়খুল মুজাহিদীন শায়খ আবু মুহাম্মাদ আল-মাকদিসীর কাছে উত্তর আশা করছি। আল্লাহ তাঁকে কুফফার ও কুফফারদের দোসর মুরতাদদের ষড়যন্ত্র থেকে নিরাপদ রাখুন।

আমাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, আমি আরবী ভাষা খুব ভালো জানি না।

নিবেদক

আবু যিয়াদ

খোরাসান (আফগানিস্তান)

উত্তর:

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর।

মুহতারাম ভাই! আল্লাহ তাআলা আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন যে, আল্লাহর কাছে কোনটি উত্তম ও অধিক পছন্দের, তা আপনি অনুসন্ধান করছেন। এই যখন আপনার প্রত্যাশা, আপনি আল্লাহ তাআলার এই আয়াতে কারীমাটি পড়ুন:

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


} إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُمْ بُنْيَانٌ مَرْصُوصٌ} [الصف: 4[

‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরকে ভলোবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধ হয়ে যু্দ্ধ করে; যেন তারা সীসা ঢালা প্রাচীর।’’ (সূরা সফ ৬১:০৪)

যে জিহাদ ও কিতাল হবে জামাআতবদ্ধ, আমীর ও জামাআতের অধীনে। যার থাকবে সুস্পষ্ট একটি মানহাজ, সম্পাদিত হবে একটি পরিচ্ছন্ন ঝাণ্ডার ছায়ায়, সে জিহাদই হবে শ্রেষ্ঠ ও পরিপূর্ণ। আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় এবং সে জিহাদই ইসলামের সর্বোচ্চ চূড়া।

এ ধরনের জিহাদ শুধু কিতালের মাধ্যমে তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে না। সফল ও পূর্ণ হতে পারে না। কিতাল যদিও জিহাদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি আমল, কিন্তু সফলতার জন্য কিতালের সহযোগী আরও অনেক কিছু প্রয়োজন, যা ‘বিশুদ্ধ ও স্পষ্টভাষী মুখপাত্র হয়ে জিহাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য মানুষের সামনে স্পষ্ট করে তুলে ধরবে এবং বিকৃতিকারীদের বিকৃতি ও বাতিলপন্থীদের সংশয়ের প্রতিরোধ করবে, উর্বর গর্ভ হয়ে অনবরত দাঈ ও মুজাহিদ জন্ম দিবে, অনিঃশেষ ধারার নদী হয়ে মাল ও রিজাল প্রবাহিত করবে। এ ছাড়াও কিতালের জন্য এমন সব কিছু সরবরাহ করবে, যা ছাড়া এ কিতাল পরিপূর্ণ হতে পারে না এবং কাঙ্ক্ষিত ফলও বয়ে আনতে পারে না।

এ জন্যই আল্লাহ তাআলা সেই জিহাদ পছন্দ করেন, যা সম্পাদিত হয় এমন ব্যক্তিদের মাধ্যমে, যাদের বৈশিষ্ট্য তিনি বর্ণনা করেছেন এভাবে যে, ‘তারা হবে এমন সুশৃঙ্খল ও সারিবদ্ধ; যেন সীসা ঢালা প্রাচীর’। তারা একে অপরকে শক্তিশালী করবে, পরস্পর পরস্পরকে পূর্ণতা দান করবে। এখানে যারা সহযোগী হবে, সরাসরি কিতালে অংশগ্রহণকারীর সাওয়াব তারাও পাবে। কারণ যারা ময়দানে লড়াই করছেন, তারা কখনোই লড়াই অব্যাহত রাখতে পারবেন না এবং সফল হতে পারবেন না; তাদের সে ভাইদের বাদ দিয়ে, যারা তাদের সহযোগিতায় আছেন।

সুতরাং এর আলোকে আমি আপনার প্রতি যে নসীহা পেশ করতে পারি তা হলো, মিডিয়ার যে কাজ আপনি করছেন, তা যদি আপনার আমীর বা মুজাহিদদের পক্ষ থেকে অর্পিত হয়ে থাকে, তাহলে তাঁদের অনুমোদন এবং তাঁদের সঙ্গে কোনোরকম বোঝাপড়া ছাড়া তাঁরা আপনাকে যে কাজে নিয়োজিত রেখেছেন, তা খালি ফেলে রেখে চলে যাওয়া আপনার জন্য জায়েয হবে না। আপনার কর্তব্য, আপনি তাঁদের জানাবেন যে, আপনার মন লড়াইয়ের জন্য উদগ্রীব এবং কম্পিউটারের সামনে বসে বসে ক্লান্ত। বড় ভালো হয় যদি তারা আপনার পরিবর্তে এমন কাউকে পেয়ে যান, যিনি আপনার শূন্যতা পূরণ করতে পারবেন এবং আপনার স্থলাভিষিক্ত হয়ে কাজ করতে পারবেন।

(তাদেরকে জানানোর পর) যদি তাঁরা অনুমতি দেন, তাহলে আল্লাহর সাহায্য কামনা করুন এবং তাঁর উপর ভরসা করে অগ্রসর হোন। অন্যথায় এমন কোনো দায়িত্বে যদি আপনি তাঁদের আস্থা ভাজন হয়ে থাকেন; যেখানে আপনাকে ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না, তাহলে আপনার জন্য জায়েয হবে না সে দায়িত্বে কোনও ত্রুটি করা বা তা ব্যর্থতার মুখে ফেলে চলে যাওয়া। আল্লাহ আপনার সহায় হোন। তিনি যদি আপনার মাঝে সততা দেখেন, তবে বিছানার শয্যায় মৃত্যু হলেও তিনি আপনাকে শহীদের মর্যাদা দান করবেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে তাঁর পছন্দ ও সন্তুষ্টির পথে চলার তাওফীক দান করুন!

উত্তর প্রদানে: শায়খ আবু মুহাম্মাদ আলমাকদিসী

দুর্দিনের আমলের সাওয়াব ও মর্যাদা বেশি

আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো, দুর্দিনের আমলের সাওয়াব ও মর্যাদা আল্লাহর কাছে সুদিনের আমল অপেক্ষা বেশি। কিতাল যদিও অনেক দিক থেকে এবং অনেকের জন্য বেশ কঠিন একটি আমল, কিন্তু কিতালের পর্বের কাজের ধরন, শক্তি সামর্থ্যের স্তর, শত্রুর ক্ষতি সাধন, লক্ষ্যে পৌঁছার তৃপ্তি, বিজয়ের স্বাদ ও প্রত্যাশা, গনীমতের প্রাপ্তি, আবেগের প্রশ্রয় ইত্যাদির মতো বেশ কিছু কারণ থাকে, যা অনেক ক্ষেত্রে কর্মীকে মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে সবল রাখে এবং কিতালের কাজকে প্রস্তুতি পর্বের কাজের চেয়ে সহজ করে দেয়। পক্ষান্তরে প্রস্তুতি পর্বে এবিষয়গুলোর অনুপস্থিতি এবং দুর্বলতা কাজ ও কর্মীদের মনোবলকে অনেক কঠিন ও দুর্বল করে রাখে। এই বিবেচনায় এই পর্বের কাজের সাওয়াব ও মর্যাদা বেশি। একারণেই আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারীমে বলেছেন, যারা মক্কা বিজয়ের পূর্বে খরচ করেছে এবং কিতাল করেছে, আর যারা মক্কা বিজয়ের পরে করেছে, তারা কখনও সমান হতে পারে না। বরং যারা বিজয়ের আগে করেছে, তাদের মর্যাদা অনেক বেশি। ইরশাদ হচ্ছে,

}وَمَا لَكُمْ أَلَّا تُنْفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلِلَّهِ مِيرَاثُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ لَا يَسْتَوِي مِنْكُمْ مَنْ أَنْفَقَ مِنْ قَبْلِ الْفَتْحِ وَقَاتَلَ أُولَئِكَ أَعْظَمُ دَرَجَةً مِنَ الَّذِينَ أَنْفَقُوا مِنْ بَعْدُ وَقَاتَلُوا وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَى وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ} [الحديد: 10[

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


“জিহাদ অধ্যায়: আভিধানিক অর্থে الْجِهَادِ (আলজিহাদ) শব্দটি جَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ (জা-হাদা ফী সাবীলিল্লাহ) এর ক্রিয়ামূল। শরীয়তের পরিভাষায় জিহাদ হলো, ‘সত্য দীনের প্রতি আহ্বান করা এবং যে তা গ্রহণ করবে না, তার সঙ্গে কিতাল (সশস্ত্র যুদ্ধ) করা’। (এই সংজ্ঞা দিয়েছেন) শুমুন্নী রহিমাহুল্লাহ। ইবনে কামাল পাশা রহিমাহুল্লাহ সংজ্ঞা দিয়েছেন, ‘সরাসরি কিতাল ফী সাবীলিল্লায় শক্তি সামর্থ্য ব্যয় করা অথবা সম্পদ, পরামর্শ, সংখ্যা বৃদ্ধি ইত্যাদির মাধ্যমে তাতে সহযোগিতা করা’।” –আদদুররুল মুখতার (রদ্দুল মুহতারের সঙ্গে মুদ্রিত): ৪/১২১

ইবনে আবেদীন শামী রহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু: ১২৫২ হি.) উক্ত বক্তব্যের ব্যাখ্যায় বলেন,

)قَوْلُهُ وَقِتَالُ مَنْ لَمْ يَقْبَلْهُ) أَيْ قِتَالُهُ مُبَاشَرَةً أَوْ لَا. فَتَعْرِيفُ ابْنِ كَمَالٍ تَفْصِيلٌ لِإِجْمَالِ هَذَا ح (قَوْلُهُ فِي الْقِتَالِ) أَيْ فِي أَسْبَابِهِ وَأَنْوَاعِهِ مِنْ ضَرْبٍ وَهَدْمٍ وَحَرْقٍ وَقَطْعِ أَشْجَارٍ وَنَحْوِ ذَلِكَ (قَوْلُهُ أَوْ مُعَاوَنَةً إلَخْ) أَيْ وَإِنْ لَمْ يَخْرُجْ مَعَهُمْ بِدَلِيلِ الْعَطْفِ ط (قَوْلُهُ أَوْ تَكْثِيرِ سَوَادٍ) السَّوَادُ الْعَدَدُ الْكَثِيرُ وَسَوَادُ الْمُسْلِمِينَ جَمَاعَتُهُمْ مِصْبَاحٌ (قَوْلُهُ أَوْ غَيْرِ ذَلِكَ) كَمُدَاوَاةِ الْجَرْحَى وَتَهْيِئَةِ الْمَطَاعِمِ وَالْمَشَارِبِ ط. – الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) ) 4/ 121(

“শুমুন্নী রহিমাহুল্লাহর বক্তব্যে ‘যে তা গ্রহণ করবে না, তার সঙ্গে কিতাল করা’ বলতে উদ্দেশ্য, সরাসরি নিজে করুক বা না করুক (অর্থাৎ সরাসরি নিজে কিতাল করুক বা কিতালে সহযোগিতা করুক উভয়টি শামিল) । এ হিসেবে ইবনে কামাল রহিমাহুল্লাহ কৃত সংজ্ঞাটি শুমুন্নী রহিমাহুল্লাহ কর্তৃক সংক্ষিপ্তভাবে বিবৃত সংজ্ঞারই বিশ্লেষণ।

‘কিতাল’ বলতে (সরাসরি কাফেরদের উপর) আক্রমণ, (তাদের স্থাপনা) ধ্বংস করা ও পুড়িয়ে ফেলা, (ফল-ফসলের) গাছ কেটে ফেলা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের (সামরিক) কার্যক্রম উদ্দেশ্য।

‘সহযোগিতা’র মধ্যে মুজাহিদদের সাথে (বের হয়ে সহযোগিতা করা যেমন শামিল,) বের না হয়ে কৃত সহযোগিতাও শামিল। কারণ, প্রথমে বলা হয়েছে ‘হতে পারে তা সরাসরি কিতাল ও যুদ্ধে অংশ নিয়ে’ তারপর বলা হয়েছে, ‘কিংবা সহযোগিতা করে’। যা থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট (যে, সরাসরি বের না হয়ে কৃত সহযোগিতাও জিহাদ বলে গণ্য) ।

‘অথবা দল ভারী করা’; অর্থাৎ মুসলিম যোদ্ধাদের সংখ্যা বৃদ্ধি ও বাহিনী বড় করা। ‘আরও বিভিন্ন কাজ’; যেমন আহতদের চিকিৎসা করা এবং খাবার-দাবার প্রস্তুত করা।” -রদ্দুল মুহতার: ৪/১২১

জিহাদ হচ্ছে কিতাল ও কিতাল সংশ্লিষ্ট ও সহযোগী সকল কাজ

উপর্যুক্ত ইমাম চতুষ্টয়ের (শুমুন্নী, ইবনুল কামাল, হাসকাফী ও শামীর) জিহাদের সংজ্ঞা থেকে যে বিষয়টি পরিষ্কার, তা হচ্ছে কিতাল ও কিতাল সংশ্লিষ্ট প্রহার, জ্বলাও-পোড়াও, গাছ কর্তনসহ শত্রু ও শত্রুর শক্তি বিনাশী যাবতীয় ধ্বংসকার্য এবং আহত মুজাহিদদের সেবা, পানাহার প্রস্তুতসহ কিতালের সকল সহযোগিতার নাম জিহাদ; যদিও সহযোগী কাজে যুক্ত ব্যক্তিরা; মুজাহিদদের সঙ্গে ময়দানে না যায়।

অতএব জিহাদের কাজে যুক্ত ব্যক্তিরাও উক্ত ফযীলত লাভ করবেন

বলা বাহুল্য, বৈশ্বিক জিহাদী সংগঠনে যারা সাহায্যকারী ভূমিতে কাজ করছেন, তারা কিতাল করছেন না ঠিক, কিন্তু তারা যা করছেন সবই কিতালের সহযোগী জিহাদের কাজ। সুতরাং উপর্যুক্ত দুটি হাদীসের মতো যেসব হাদীসে ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ জিহাদের বিভিন্ন ফযীলতের কথা এসেছে, সে হাদীসগুলোর সরাসরি ‘মিসদাক’ ও প্রতিপাদ্য হিসেবে ময়দানে কিতালরত মুজাহিদদের পাশাপাশি সহযোগী ভূমির মুজাহিদরাও সেই ফযীলত লাভ করবেন ইনশাআল্লাহ।

একটি মুরসাল হাদীসও প্রমাণ করে সকাল-বিকেলের ফযীলতটি জিহাদের জন্য

একটি মুরসাল হাদীসের বর্ণনা থেকেও বুঝা যায়, ফী সাবীলিল্লাহ’য় এক সকাল বা এক বিকেল অতিবাহিত করার হাদীসটি শুধু কিতালের জন্য নয়; বরং জিহাদের জন্য আম। হাদীসটি হচ্ছে,

بعث رسول الله صلى الله عليه وسلم جيشا فيهم عبد الله بن رواحة، فتأخر ليشهد الصلاة مع النبي صلى الله عليه وسلم، فقال له النبي صلى الله عليه وسلم: والذي نفسي بيده لو أنفقت ما في الأرض ما أدركت فضل غدوتهم – رواه ابن المبارك في كتاب الجهاد (14) من مرسل الحسن و أخرجه الترمذي أيضا (527) في باب ما جاء في السفر يوم الجمعة، وقال: هذا حديث لا نعرفه إلا من هذا الوجه.

“একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বাহিনী প্রেরণ করলেন, তাতে সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহাও ছিলেন। তিনি নবীজির পেছনে (জুমআর) নামায পড়ে যাওয়ার অপেক্ষায় তৎক্ষণাৎ বাহিনীর সাথে না গিয়ে রয়ে গেলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে (দেখে) বললেন, ওই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ, পৃথিবীর মধ্যে যা আছে, সব বিলিয়ে দিয়েও তুমি তাঁদের এই একটি সকালের ফযীলত লাভ করতে পারবে না।”–কিতাবুল জিহাদ, ইবনুল মুবারাক, হাদীস নং ১৪; জামে তিরমিযী, হাদীস নং: ৫২৭

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


সাহায্যকারী ভূমিতে জিহাদের কাজ করলে কি কিতালের ফযীলত পাওয়া যাবে?

প্রশ্নঃ

আমরা জানি, জিহাদের ময়দান দুই ধরনের হয়ে থাকে । একটি হচ্ছে, সম্মুখ যুদ্ধের ময়দান। আরেকটি হচ্ছে, সাহায্যকারী ময়দান । বর্তমানে আলহামদুলিল্লাহ উভয় ময়দানেই জিহাদের কাজ হচ্ছে।

আমরা এও জানি যে, জিহাদ ও কিতালের বিপুল ফযীলতের কথা অসংখ্য হাদীসে এসেছে। যেমন, আল্লাহর রাস্তায় এক সকাল কিংবা এক বিকাল পরিমাণ সময় দেওয়া, উটের দুধ দোহানো পরিমাণ কিতাল করা, আল্লাহর রাস্তায় ধূলি-মলিন হওয়া ইত্যাদির বিরাট বিরাট ফযীলতের কথা বিভিন্ন হাদীসে এসেছে। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে,

ক) আমরা যারা বাংলাদেশের মতো সাহায্যকারী ভূমিতে জিহাদ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজ করছি, আমরা যদি এসব কাজে পূর্ণ ইখলাস ও ইহতিসাবের সাথে (একমাত্র আল্লাহর কাছ থেকে সাওয়াব প্রাপ্তির আশায়) এক সকাল কিংবা এক বিকাল পরিমাণ অথবা উটের দুধ দোহানো পরিমাণ সময় দেই তাহলে কি সম্মুখ যুদ্ধের ময়দানে এক সকাল কিংবা এক বিকাল পরিমাণ অথবা উটের দুধ দোহানো পরিমাণ সময় দেয়ার সেই ফযীলত লাভ করতে পারবো?

একইভাবে আল্লাহর রাস্তায় ধূলি-মলিন হওয়ার যে ফযীলতের কথা হাদীসে এসেছে, আমরা যদি পূর্ণ ইখলাস ও ইহতিসাবের সাথে জিহাদী কোনো উদ্দেশ্যে কোথাও সফর করি তাহলে কি সেই ফযীলত আমরা লাভ করবো?

খ) যদি আমাদের এখানকার কাজের দ্বারা এই সব ফযীলত লাভ করা না যায় তাহলে আমার জন্য শাম কিংবা এ ধরনের কোনো ময়দানে গিয়ে সেই ফযীলত অর্জনের চেষ্টা করা দীনী দিক থেকে অধিক নিরাপদ হবে কি না? মেহেরবানি করে একটু বিস্তারিত জানালে অনেক উপকৃত হবো।

-আব্দুর রহীম



উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহর নিকট কোন আমল অধিক পছন্দনীয়, কোন আমলের সাওয়াব ও মর্যাদা বেশি, সে অন্বেষা প্রত্যেক মুসলিমের মধ্যে থাকা কাম্য। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তাআলা আপনাকে এই অন্বেষা দান করেছেন। আপনাকে আমাকে এবং সকল মুসলিমকে আল্লাহ তাআলা এই নেয়ামত পূর্ণাঙ্গরূপে দান করুন এবং সে অনুযায়ী আমল করার তাওফীক দান করুন।

সাওয়াবের পরিমাণ ‘তাওকীফী’ বিষয়

কোনো আমলের সুনির্দিষ্ট সাওয়াব ও ফযীলতের বিষয়টি ‘তাওকীফী’ তথা শরীয়তের পক্ষ থেকে বর্ণনা নির্ভর বিষয়। কিয়াস ও যুক্তি দিয়ে তার বর্ণনা দেওয়া যায় না।

শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ (৭২৮ হি.) বলেন,

فالحاصل: أن هذا الباب يروى ويعمل به في الترغيب والترهيب لا في الاستحباب ثم اعتقاد موجبه وهو مقادير الثواب والعقاب يتوقف على الدليل الشرعي. -مجموع الفتاوى (18/ 68)

“… সাওয়াব ও আযাবের পরিমাণের বিষয়টি শরীয়তের দলীলের ওপর মওকুফ-নির্ভরশীল।” –মাজমুউল ফাতাওয়া: ১৮/৬৮

আব্দুল আযীয বিন আহমাদ আল-বুখারী রহিমাহুল্লাহ (৭৩০ হি.) বলেন,

الثواب والعقاب لا يعرفان إلا بورود السمع وليس في العقل إمكان الوقوف عليهما. اه -كشف الأسرار شرح أصول البزدوي (4/ 230(

“সাওয়াব ও আযাব শরীয়তের বর্ণনা ব্যতীত জানা যায় না, যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে তা নির্ণয় করার সুযোগ নেই।” –কাশফুল আসরার, শরহু উসূলিল বাযদাবী: ৪/২৩০

সব আমলের ফযীলত কুরআন সুন্নাহ’য় বর্ণিত হয়নি

সব আমলের সুনির্দিষ্ট ফযীলত ও সাওয়াব কুরআন সুন্নাহ’য় বর্ণিত হয়নি। বিশেষ কোনো কারণে বিশেষ কিছু আমলের সুনির্দিষ্ট ফযীলত ও সাওয়াবের কথা কুরআন সুন্নাহ’য় বর্ণিত হয়েছে। কোনো আমলের বিশেষ ফযীলত বর্ণিত হওয়া স্বাভাবিকভাবেই উক্ত আমলের বিশেষত্ব নির্দেশ করে, কিন্তু এর অর্থ আদৌ এটা নয় যে, যে আমলের ফযীলত বর্ণিত হয়নি, তার সাওয়াব ও মর্যাদা, যে আমলের ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, তার চেয়ে কমই হতে হবে। হতে পারে বিশেষ কোনো কারণে অন্য আমলের ফযীলত ও মর্যাদা এর চেয়েও বেশি হবে।

সাওয়াব বৃদ্ধির কারণ অনেক

একটি আমলের সাওয়াব ও মর্যাদা বৃদ্ধির বিভিন্ন কারণ রয়েছে। আমলটি কতটুকু প্রয়োজনীয়, কতটুকু উপকারী, কতটুকু কষ্টসাধ্য, কতটুকু ইখলাস ও ইহতিসাবের সঙ্গে করা হচ্ছে, আনুগত্যের কতটুকু অনুকূল হয়েছে, এমন নানান কারণে আমলের সাওয়াব ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।

ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ (৭২৮ হি) বলেন,

ومما ينبغي أن يعرف أن الله ليس رضاه أو محبته في مجرد عذاب النفس وحملها على المشاق حتى يكون العمل كلما كان أشق كان أفضل كما يحسب كثير من الجهال أن الأجر على قدر المشقة في كل شيء لا ولكن الأجر على قدر منفعة العمل ومصلحته وفائدته، وعلى قدر طاعة أمر الله ورسوله. فأي العملين كان أحسن وصاحبه أطوع وأتبع كان أفضل. فإن الأعمال لا تتفاضل بالكثرة. وإنما تتفاضل بما يحصل في القلوب حال العمل. -مجموع الفتاوى (25/ 281-282(

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


“জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি ও ভালোবাসা লাভ শুধুই নফসকে শাস্তি দেওয়া আর যাবতীয় কষ্টসাধ্য কাজে বাধ্য করার মধ্যে নিহিত নয়। এমন নয় যে, সর্বদাই আমল যত কঠিন হবে তার ফযীলতও তত বেশি হবে। যেমনটা অনেক নির্বোধ মনে করে যে, সকল ক্ষেত্রেই কষ্ট অনুপাতে সাওয়াব নির্ধারিত হয়। না, বিষয়টা এমন নয়। বরং কাজের বিনিময় ও প্রতিদান নির্ধারিত হয় তার উপকারিতা, কল্যাণ ও ফায়েদার দিকে লক্ষ করে এবং কাজটা আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণে কতটা উত্তীর্ণ সে বিবেচনায়। সুতরাং প্রত্যেক দুটি আমলের মধ্যে যেটা অধিক সুন্দর এবং যার কর্তা অনুসরণ অনুকরণে বেশি অগ্রগামী, সেটাই শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হবে। কেননা দীনী কাজসমূহে শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি সংখ্যাধিক্য নয়; বরং কাজের সময় অন্তরের অবস্থা কেমন ছিলো, সেটাই মুখ্য বিষয়।” –মাজমুউল ফাতাওয়া: ২৫/২৮১-২৮২

তিনি অন্যত্র বলেন,

قول بعض الناس: الثواب على قدر المشقة ليس بمستقيم على الإطلاق … وأما الأجر على قدر الطاعة فقد تكون الطاعة لله ورسوله في عمل ميسر كما يسر الله على أهل الإسلام ” الكلمتين ” وهما أفضل الأعمال؛ ولذلك قال النبي صلى الله عليه وسلم {كلمتان خفيفتان على اللسان ثقيلتان في الميزان حبيبتان إلى الرحمن سبحان الله وبحمده سبحان الله العظيم} أخرجاه في الصحيحين. ولو قيل: الأجر على قدر منفعة العمل وفائدته لكان صحيحا. –مجموع الفتاوى: 10\620-621

“অনেকে যে বলেন, ‘আমলের সাওয়াব এর কষ্ট অনুপাতে মিলবে’, একথাটি সর্বক্ষেত্রে পুরোপুরি সঠিক নয়। … বরং সাওয়াব হবে আনুগত্যের পরিমাণ অনুযায়ী। কখনও অনেক সহজ আমলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য থাকে। যেমন আল্লাহ তাআলা মুসলিমদের জন্য দুটি কালিমা সহজ করে দিয়েছেন। অথচ এ কালিমাদ্বয় শ্রেষ্ঠ আমল। এজন্য নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘দুটি কালিমা আছে, যা যবানে অনেক হালকা, কিন্তু দাঁড়িপাল্লায় অনেক ভারি এবং দয়াময়ের কাছে অনেক প্রিয়। (কালিমা দুটি হচ্ছে-) سبحان الله وبحمده سبحان الله العظيم (আমরা আল্লাহর প্রশংসাসহ তাসবীহ পাঠ করছি, মহান আল্লাহ যাবতীয় ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে পবিত্র)’। (সুতরাং তা না বলে) যদি বলা হতো, সাওয়াব দেয়া হবে আমলের উপকারিতা ও ফায়দা অনুপাতে, তাহলে কথাটি সঠিক হতো।” -মাজমুউল ফাতাওয়া: ১০/৬২০-৬২১

সাওয়াব বৃদ্ধির একটি কেন্দ্রীয় মূলনীতি

সাওয়াব বৃদ্ধির একটি ‘আসলুল উসূল’ তথা কেন্দ্রীয় মূলনীতি হল, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বাড়িয়ে দেন। আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

{مَثَلُ الَّذِينَ يُنْفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنْبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنْبُلَةٍ مِائَةُ حَبَّةٍ وَاللَّهُ يُضَاعِفُ لِمَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ } [البقرة: 261[

“যারা আল্লাহর পথে অর্থ ব্যয় করে, তাদের দৃষ্টান্ত এ রকম, যেমন একটি শস্য দানা সাতটি শীষ উদগত করে এবং প্রতিটি শীষে একশত দানা জন্মায়। আর আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন, বহু গুণে বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ অতি প্রাচুর্যময় এবং সর্বজ্ঞ।” –সূরা বাকারা ০২:২৬১

অর্থাৎ আল্লাহ যাকে খুশি, তাকে বাড়িয়ে দেন এবং যত খুশি তত বাড়িয়ে দেন। এর কোনও সীমা পরিসীমা নেই।

একারণেই হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَسُبُّوا أَصْحَابِي فَلَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا بَلَغَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلَا نَصِيفَهُ. -صحيح البخاري: 3673

“হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা আমার সাহাবীদেরকে গালমন্দ করো না। তোমাদের কেউ যদি উহুদ পরিমাণ সোনাও (আল্লাহর পথে) ব্যয় করে, তাঁদের এক মুদ কি আধা মুদের সমানেও পৌঁছতে পারবে না।” -সহীহ বুখারী, হাদীস নং: ৩৬৭৩

উল্লেখ্য, মুদ হচ্ছে এক কেজির কাছাকাছি একটি পরিমাপ।

শুধু পরিমাণ নয়, সাওয়াবের মানেও ব্যবধান আছে

আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো, মান ও পরিমাণের ব্যবধান। অন্য সবকিছুর মতো বান্দার আমলের ক্ষেত্রেও বিষয়টি প্রযোজ্য। একারণেই যে ব্যক্তি হাজার মাসের চেয়ে উত্তম শবে কদরের মতো ফযীলতপূর্ণ রাতে শুধু ইশা ও ফজরের ফরয আদায় করে বাকি রাত ঘুমিয়ে কাটায়, তার আমল ওই ব্যক্তির এমন হাজার রাতের আমল অপেক্ষা উত্তম, যে ইশা ও ফজর বাদ দিয়ে এই রাতগুলো বিনিদ্র নফল ইবাদতে যাপন করে।

একারণে হাদীসে বলা হয়েছে, আল্লাহর নিকট সর্বাধিক পছন্দনীয় আমল ফরযসমূহ। অর্থাৎ যখন যে পরিস্থিতিতে যে আমল বান্দার উপর ফরয, তা আল্লাহর নিকট অন্য সকল আমল থেকে অধিক পছন্দনীয় এবং বান্দার জন্যও তা সর্বাগ্রে করণীয়।

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


عن معاذِ بن جبَلٍ، عن رسولِ الله -صلَّى الله عليه وسلم- أنه قال: “الغَزْوُ غزوانِ: فأما من ابتغَى وجهَ اللهِ، وأطاعَ الإمامَ، وأنفقَ الكريمةَ، وياسَرَ الشريكَ، واجتنَبَ الفَسادَ، فإنَّ نومَه ونَبَهَه أجرٌ كُلُّه. وأما من غزا فخْراً ورِياءً وسُمعةً، وعصَى الإمامَ، وأفسدَ في الأرضِ، فإنه لم يَرجِع بالكَفَافِ”. -سنن أبي داود ت الأرنؤوط (4/ 169)، كتاب الجهاد، 24 – باب في من يغزو يَلتمِسُ الدنيا، الرقم: 2515

“মুয়ায ইবনে জাবাল রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যুদ্ধ দুই ধরনের। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে, আমীরের আনুগত্য করে, নিজের প্রিয় সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে, সাথি-সঙ্গীদের সাথে ভালো ব্যবহার করে এবং যাবতীয় অন্যায়-অপকর্ম থেকে দূরে থাকে, তার নিদ্রা ও জাগরণ সবই পুণ্যে পরিণত হয়। পক্ষান্তরে যে দাম্ভিকতা, লোক দেখানো ও সুনাম-সুখ্যাতির জন্য লড়াই করে, আমীরের অবাধ্যতা করে এবং জমিনে শান্তি বিনষ্ট করে, সে প্রয়োজন পরিমাণ পুণ্য নিয়েও বাড়ি ফিরে না।” –সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং: ২৫১৫

অতএব একথা যদি আমরা আপাতত ধরেও নেই যে, সুনির্দিষ্ট ফযীলতগুলো যেসব হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, ইদাদের ভূমিতে কাজ করা ব্যক্তিরা সেসব হাদীসের অন্তর্ভুক্ত নন, তবুও একথা বলতে হবে যে, উপরোল্লেখিত বিভিন্ন কারণে তাদের জন্য আমীরের নির্দেশ ও অনুমতি ব্যতীত ময়দানে যাওয়া অপেক্ষা, আমীরের আনুগত্য করে ইদাদের ভূমিতে কাজ করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ; যদিও বাস্তবে একথা বলার সুযোগ নেই যে, তারা ওইসব হাদীসের অন্তুর্ভুক্ত নন। যেমনটি আমরা সামনে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা আমাদের প্রত্যেকের আত্মস্থ করা জরুরি।

আলোচ্য ফযীলত সংক্রান্ত হাদীসগুলোর বিশ্লেষণ

দ্বিতীয়ত আপনি যে ফযীলতগুলো উল্লেখ করেছেন, তার দুটির বিবরণ হাদীসের ভাষায় নিম্নরূপ:

এক.

عن أنس بن مالك رضي الله عنه : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال ( لغدوة في سبيل الله أو روحة خير من الدنيا وما فيها) [ 2643 ] [ ش أخرجه مسلم في الإمارة باب فضل الغدوة والروحة في سبيل الله تعالى رقم 1880 . – صحيح البخاري (3/ 1028): 2639

“আনাস ইবনে মালেক রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহর রাস্তায় এক সকাল অথবা এক বিকাল অতিবাহিত করা, দুনিয়া ও দুনিয়ায় যা কিছু আছে, সব থেকে উত্তম।” –সহীহ বুখারী, হাদীস নং: ২৭৯২

দুই.

حدثنا إسحاق أخبرنا محمد بن المبارك حدثنا يحيى بن حمزة قال حدثني يزيد بن أبي مريم أخبرنا عباية بن رافع بن خديج قال أخبرني أبو عبس هو عبد الرحمن بن جبر : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال ( ما اغبرت قدما عبد في سبيل الله فتمسه النار ). -صحيح البخاري (3/ 1035): 2656

“আব্দুর রহমান ইবনে জবর রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এমন হবে না যে, আল্লাহর রাস্তায় কোনো বান্দার পা ধূলো মলিন হবে, অতঃপর তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে।”–সহীহ বুখারী, হাদীস নং: ২৮১১

দুটি হাদীসই সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে এবং দুটিতেই ‘সাবীলুল্লাহ’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।

‘সাবীলুল্লাহ’ দ্বারা উদ্দেশ্য জিহাদ; শুধু কিতাল নয়

‘সাবীলুল্লাহ’ দ্বারা শুধু ‘কিতাল’ উদ্দেশ্য নয়; বরং ‘সাবীলুল্লাহ’ দ্বারা যে জিহাদ উদ্দেশ্য, এতে কারও দ্বিমত নেই। বলা বাহুল্য, কিতাল হচ্ছে জিহাদের একটি অংশ, পক্ষান্তরে জিহাদ হচ্ছে ব্যাপক, যা কিতাল ও কিতাল সংশ্লিষ্ট আরও অনেক কাজকে বুঝায়।

প্রথমোক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম নববী রহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু: ৬৭৬ হি.) বলেন,

ومعناه أن الروحة يحصل بها هذا الثواب وكذا الغدوة والظاهر أنه لا يختص ذلك بالغدو والرواح من بلدته بل يحصل هذا الثواب بكل غدوة أو روحة في طريقه إلى الغزو. وكذا غدوه وروحة في موضع القتال؛ لأن الجميع يسمى غدوة وروحة في سبيل الله – شرح النووي على مسلم: 13/ 26

“অর্থাৎ এক বিকালের বিনিময়েই এই সাওয়াব লাভ হবে। এমনিভাবে এক সকালের বিনিময়েও। স্পষ্ট যে, নিজ এলাকা ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে এক সকাল ও এক বিকাল চলার মধ্যে এই সাওয়াব সীমাবদ্ধ নয়। বরং যুদ্ধে যাওয়ার পথে প্রত্যেক সকাল ও প্রত্যেক বিকালের বিনিময়ে এই সাওয়াব অর্জিত হবে। এমনিভাবে কিতালের ময়দানের এক সকাল ও এক বিকালের বিনিময়েও। কেননা, এ সবগুলোকেই ‘আল্লাহর রাস্তায় এক সকাল বা এক বিকাল’ বলা যায়।” –শরহুন নববী: ১৩/২৬

ইমাম ইবনুল জাওযী রহিমাহুল্লাহ বলেন,

وسبيل الله هَاهُنَا الْجِهَاد، وَالْمعْنَى أَن مَا يحصل للْإنْسَان من الثَّوَاب فِي غدوته أَو روحته فِي الْجِهَاد خير من كل مَا فِي الدُّنْيَا -كشف المشكل من حديث الصحيحين لابن الجوزي: 2/ 93

“এখানে ‘সাবীলুল্লাহ’র দ্বারা উদ্দেশ্য জিহাদ। অর্থাৎ ব্যক্তি জিহাদে থাকাবস্থায় এক সকাল কিংবা এক বিকালে যে সাওয়াব অর্জিত হয়, তা দুনিয়ার সব কিছু থেকে উত্তম।” -কাশফুল মুশকিল: ২/৯৩

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ” إن الله قال: من عادى لي وليا فقد آذنته بالحرب، وما تقرب إلي عبدي بشيء أحب إلي مما افترضت عليه، وما يزال عبدي يتقرب إلي بالنوافل حتى أحبه، فإذا أحببته: كنت سمعه الذي يسمع به، وبصره الذي يبصر به، ويده التي يبطش بها، ورجله التي يمشي بها، وإن سألني لأعطينه، ولئن استعاذني لأعيذنه، وما ترددت عن شيء أنا فاعله ترددي عن نفس المؤمن، يكره الموت وأنا أكره مساءته. -صحيح البخاري (8/ 105(

“আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, যে আমার কোনও ওলীর সাথে দুশমনি করবে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবো। আমি বান্দার উপর যা ফরয করেছি, আমার কাছে তার চেয়ে অধিক প্রিয় কোনও আমল নেই, যা দিয়ে বান্দা আমার আরও অধিক নৈকট্য লাভ করতে পারে। নফল আমলসমূহের মাধ্যমে বান্দা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে, এক পর্যায়ে আমি তাকে ভালোবেসে ফেলি। আর আমি যখন তাকে ভালোবাসি, তার কান হয়ে যাই, যা দ্বারা সে শোনে। তার চোখ হয়ে যাই, যা দ্বারা সে দেখে। তার হাত হয়ে যাই, যা দ্বারা সে ধরে। তার পা হয়ে যাই, যা দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কিছু চায়, আমি অবশ্যই তাকে তা দান করি। সে যদি আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, আমি অবশ্যই তাকে আশ্রয় দান করি। আমি কোনও কাজ করতে গিয়ে অতটা দ্বিধান্বিত হই না, যতটা দ্বিধান্বিত হই মুমিনের মৃত্যুর ব্যাপারে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে। আর আমিও তাকে কষ্ট দিতে অপছন্দ করি।” –সহীহ বুখারী, হাদীস নং: ৬৫০২

ফরযে ফরযেও ব্যবধান আছে

ফরযের মধ্যেও স্থান কাল পাত্র বিবেচনায় যেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটির মর্যাদা বেশি। যেমন একদিকে ফরয নামাযের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে, অপরদিকে কেউ আগুনে পুড়ে কিংবা পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় দুটি কাজই ফরয হলেও, মরতে যাওয়া লোকটিকে উদ্ধার করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অধিক মর্যাদাপূর্ণ।

ফরযে কেফায়া বিশেষ কারণে ফরযে আইনে পরিণত হয়

যে কাজগুলো মৌলিকভাবে ফরযে কেফায়া, সেগুলোতে আমীরের নির্দেশ, কাজটির জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ যোগ্যতার অধিকারী হওয়া, কাজটিতে তার কোনও বিকল্প না থাকা ইত্যাদি কারণে একটি কাজ অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ হয়ে যায়। বরং একাধিক ফরযে কেফায়া থেকে সুনির্দিষ্ট কাজটিই তার একমাত্র ফরয বা ফরযে আইন হয়ে যায়। যেমন নাফীরে আমের কারণে তাবুকের যুদ্ধ সবার জন্যই ফরয ছিলো। অপরদিকে পৃথিবীর বুকে একমাত্র ইসলামী রাষ্ট্র মদীনার রক্ষণাবেক্ষণও মুসলিমদের উপর ফরয ছিলো। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে মদীনায় থেকে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। স্বভাবতই আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুর মতো মুখলিস বীর মুজাহিদ, যিনি সকল যুদ্ধে অগ্রগামী ছিলেন, তাঁর জন্য তাবুকের মতো সর্বব্যাপী যুদ্ধে না গিয়ে নারী ও শিশুদের সঙ্গে মদীনায় বসে থাকা ছিলো কষ্টকর। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন,

أَتُخَلِّفُنِي فِي الصِّبْيَانِ وَالنِّسَاءِ؟

“আপনি কি আমাকে নারী আর শিশুদের মধ্যে রেখে যাবেন?”

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কষ্টের বিষয়টা বুঝলেন। তিনি তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন,

أَلاَ تَرْضَى أَنْ تَكُونَ مِنِّي بِمَنْزِلَةِ هَارُونَ مِنْ مُوسَى؛ إِلَّا أَنَّهُ لَيْسَ نَبِيٌّ بَعْدِي

“তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, আমার অপেক্ষা তোমার মর্যাদা তেমন, যেমন মূসা অপেক্ষা হারুনের মর্যাদা? তবে পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, আমার পরে কোনও নবী নেই।” –সহীহ বুখারী, হাদীস নং: ৪৪৪৬

এখানে যে বিষয়টি আমাদের জন্য লক্ষণীয়, তা হলো তাবুকের যুদ্ধ যেমন সবার উপর ফরয ছিলো, তেমনি সকলের অনুপস্থিতিতে মদীনায় যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখা এবং মদীনার রক্ষণাবেক্ষণ করাও সমষ্টিগতভাবে সবার উপর ফরয ছিলো। কিন্তু মদীনায় অবস্থানের জন্য যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রাযিয়াল্লাহু আনহুকে অধিক সঙ্গত মনে করলেন এবং হুকুম করলেন, তখন তাঁর জন্য ময়দানে যাওয়া অপেক্ষা মদীনায় থাকা অধিক জরুরি ও মর্যাদাপূর্ণ হয়ে গেল। শুধু তাই নয়; বরং এমতাবস্থায় তাঁর জন্য ময়দানে যাওয়াই নাজায়েয ছিলো এবং মদীনায় থাকা একমাত্র ফরয ছিলো।

বাইয়াহ বদ্ধ ভাইদের জন্য বাইয়াহ ভঙ্গ করা এবং নির্দেশ অমান্য করা নাজায়েয

সুতরাং যে ভাইরা শরীয়তের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ জিহাদের কোনো জামাতে বাইয়াহ বদ্ধ হয়েছেন, তাদের জন্য শরয়ী কোনো কারণ ছাড়া শুধু সরাসরি কিতালে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ ও আবেগের বশে জামাতের বাইয়াহ ভঙ্গ করে কিংবা নির্দেশ অমান্য করে সম্মুখ সমরের ময়দানে কিতালে যুক্ত হওয়া অপেক্ষা জামাতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং অধিক মর্যাদার; চাই তা সমর্থক ভূমিতে জিহাদের ইদাদের কাজই হোক না কেন। কারণ শরঈ ওজর ব্যতীত এসব জামাআতের বাইয়াহ ভঙ্গ করা এবং আমীরের নির্দেশ অমান্য করা নাজায়েয।

এক হাদীসে এসেছে,

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:57


সাবীলুল্লাহ ‘মুতলাক’ বললে জিহাদ উদ্দেশ্য হয়

এছাড়া ‘সাবীলুল্লাহ’ যখন ‘মুতলাক’ তথা কোনও বন্ধন ব্যতীত উল্লেখ করা হয়, তখন তা দ্বারা জিহাদ উদ্দেশ্য হয়, একথা উলামায়ে কেরামের অনেকেই বলেছেন।

হাফেয ইবনে হাজার রহিমাহুল্লাহ (৮৫২ হি.) বলেন,

قال ابن الجوزي: إذا أطلق ذكر سبيل الله فالمراد به الجهاد. … وقال ابن دقيق العيد: العرف الأكثر استعماله في الجهاد. … قال: ويحتمل أن يراد بسبيل الله طاعته كيف كانت، والأول أقرب. – فتح الباري لابن حجر: 6/ 48

“ইবনুল জাওযী রহিমাহুল্লাহ বলেন, যখন ‘সাবীলুল্লাহ’ মুতলাক (কোনও বন্ধন ছাড়া) বলা হয়, তখন তা দ্বারা জিহাদ উদ্দেশ্য হয়। … ইবনু দাকীকিল ঈদ রহিমাহুল্লাহ বলেন, প্রসিদ্ধ হলো, এর (সাবীলুল্লাহর) অধিকাংশ ব্যবহার জিহাদের ক্ষেত্রে। … তিনি বলেন, সাবীলুল্লাহ দ্বারা যে কোনও ইবাদত উদ্দেশ্য হতে পারে। তবে প্রথমোক্ত মতটি অধিক সঠিক।” –ফাতহুল বারী: ৬/৪৮

ইবনে বাত্তাল রহিমাহুল্লাহ (৪৪৯ হি.) বলেন,

واختلفوا فى قوله تعالى: (وفى سبيل الله) فقال مالك، وأبو حنيفة، والشافعى، وأبو ثور، وإسحاق: هم الغزاة. … قال ابن القصار: وحجة من قال هم الغزاة، أن كل موضع ذكر فيه سبيل الله، فالمراد منه الغزو والجهاد، قال الله تعالى: (الذين يقاتلون فى سبيله صفا) [الصف: 4] وقال: (الذين آمنوا وهاجروا وجاهدوا فى سبيل الله) [التوبة: 20] ، فكذلك آية الصدقات. -شرح صحيح البخارى لابن بطال المالكي (3/ 497(

“(যাকাত বণ্টনের ক্ষেত্রে) আল্লাহর বাণী ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ (وفى سبيل الله) এর মর্ম নির্ধারণে আলেমদের মতনৈক্য হয়েছে। মালেক, আবু হানীফা, শাফেয়ী, আবু সাওর, ইসহাক প্রমুখ ইমামগণ বলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য মুজাহিদগণ। … ইবনুল কাস্সার রহিমাহুল্লাহ বলেন, যাঁরা বলেন এর দ্বারা উদ্দেশ্য মুজাহিদগণ, তাঁদের দলীল হলো, যত জায়গায় সাবীলুল্লাহ উল্লেখ করা হয়েছে, সবখানেই যুদ্ধ ও জিহাদ উদ্দেশ্য। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, الذين يقاتلون فى سبيله صفا (যারা সারিবদ্ধ ভাবে আল্লাহর পথে লড়াই করে…) অন্যত্র বলেন, الذين آمنوا وهاجروا وجاهدوا فى سبيل الله (যারা ঈমান এনেছে এবং হিজরত করেছে, অতঃপর আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে …)। অতএব সাদাকার আয়াতেও এমনই হবে।” –শারহু সহীহিল বুখারী, ইবনে বাত্তাল: ৩/৪৯৭

মাওসুআ ফিকহিয়া কুয়েতিয়ায় বলা হয়েছে,

ذهب جمهور العلماء (الحنفية والمالكية والشافعية والثوري وأبو ثور وابن المنذر وهو رواية عن أحمد ، وقال ابن قدامة: إنه الصحيح) إلى أنه لا يجوز الصرف في الحج من الزكاة؛ لأن سبيل الله في آية مصارف الزكاة مطلق، وهو عند الإطلاق ينصرف إلى الجهاد في سبيل الله تعالى، لأن الأكثر مما ورد من ذكره في كتاب الله تعالى قصد به الجهاد، فتحمل الآية عليه. -الموسوعة الفقهية الكويتية: 23/ 323

“জুমহুর আলেমদের (হানাফী, মালেকী ও শাফেয়ী আলেমগণ, সুফিয়ান সাওরী, আবু সাওর, ইবনুল মুনযির এবং ইমাম আহমাদের এক বক্তব্য; -ইবনে কুদামা রহিমাহুল্লাহ বলেছেন, এটিই আহমাদ রহিমাহুল্লাহ-এর বিশুদ্ধ মত- তাঁদের সকলের) মতে যাকাতের সম্পদ হজে ব্যয় করা জায়েয নেই। কেননা যাকাতের খাত সম্পর্কিত আয়াতে সাবীলুল্লাহ মুতলাক (কোনও বন্ধন ছাড়া) ব্যবহৃত হয়েছে। আর এরূপ স্থানে এর দ্বারা ‘জিহাদ ফী-সাবীলিল্লাহ’ই উদ্দেশ্য হয়। কারণ কুরআনে যতবার এর উল্লেখ হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর দ্বারা জিহাদ বুঝানো হয়েছে। সুতরাং আয়াতের অর্থ এমনই হবে।” –মাওসুয়া ফিকহিয়া কুয়েতিয়া: ২৩/৩২৩

উক্ত হাদীস দুটির ফযীলত জিহাদের জন্য; শুধু কিতালের জন্য নয়

‘সাবীলুল্লাহ’ শুধু কিতালে সীমাবদ্ধ না হওয়া; বরং তা কিতাল ও কিতাল সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি তথা জিহাদের জন্য ব্যাপক হওয়ার বিষয়ে যেহেতু সকল উলামায়ে কেরাম একমত, তাই আমরা সামনে এই আলোকেই কথা বলবো ইনশাআল্লাহ।

উপরের আলোচনা থেকে যে বিষয়টি পরিষ্কার, তা হলো উক্ত হাদীস দুটিতে যে ফযীলতের কথা এসেছে, তা মূলত যারা জিহাদের কাজে রত, তাদের জন্য। যারা কিতালে রত, শুধু তাদের জন্য নয়। এখন আমাদের দেখতে হবে, জিহাদ কী এবং কারা জিহাদে রত?

জিহাদ কী?

আলাউদ্দীন হাসকাফী রহিমাহুল্লাহ (মৃত্যু: ১০৮৮ হি.) জিহাদের সংজ্ঞায় বলেন,

كِتَابُ الْجِهَادِ… وَهُوَ لُغَةً: مَصْدَرُ جَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ. وَشَرْعًا: الدُّعَاءُ إلَى الدِّينِ الْحَقِّ وَقِتَالُ مَنْ لَمْ يَقْبَلْهُ شُمُنِّيٌّ. وَعَرَّفَهُ ابْنُ الْكَمَالِ بِأَنَّهُ بَذْلُ الْوُسْعِ فِي الْقِتَالِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ مُبَاشَرَةً أَوْ مُعَاوَنَةً بِمَالٍ، أَوْ رَأْيٍ أَوْ تَكْثِيرِ سَوَادٍ أَوْ غَيْرِ ذَلِكَ. اهـ. -الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (4/ 121)

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Jan, 16:56


সাহায্যকারী ভূমিতে জিহাদের কাজ করলে কি কিতালের ফযীলত পাওয়া যাবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0/%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2/%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%af%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%80-%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

10 Jan, 12:00


নিজ সম্পদ দ্বারা উপকৃত হওয়া সম্ভব না হলে কি যাকাত নেওয়া যাবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%ab%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a6%be/%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%9c-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa%e0%a6%a6-%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be-%e0%a6%89%e0%a6%aa%e0%a6%95%e0%a7%83%e0%a6%a4-%e0%a6%b9%e0%a6%93/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

10 Jan, 12:00


নিজ সম্পদ দ্বারা উপকৃত হওয়া সম্ভব না হলে কি যাকাত নেওয়া যাবে?

প্রশ্ন:

আমার পরিচিত কিছু লোক দ্বীনি কাজের নিরাপত্তার স্বার্থে বাড়ি থেকে দূরে অবস্থান করেন। বাড়ির সাথে যোগাযোগ থাকলেও নিরাপত্তার খাতিরে বাড়িতে যেতে পারেন না। ফলে বাড়ি থেকে সম্পদ নেওয়া কিংবা তা দ্বারা উপকৃত হওয়ার কোনো সুযোগ তাঁদের নেই। জানার বিষয় হলো, তাঁদের বাড়িতে জমি-জমা থাকলে, তাঁদেরকে কি যাকাতের টাকা দেওয়া যাবে? আর যদি কারো মাধ্যমে জমি-জমা বিক্রি করা কিংবা তা দ্বারা উপকৃত হওয়ার সুযোগ থাকে, তাহলে হুকুম কী হবে?

-মুহাম্মাদ আবদুল মাজেদ

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله وسلام على عباده الذين اصطفى، أما بعد!

যেসব ভাই নিজে বা কারো মাধ্যমে আপন সম্পদ থেকে প্রয়োজনীয় খরচের ব্যবস্থা করতে পারছেন না এবং খরচ চালানোর মতো কোনো উপার্জন বা অন্য কোনো ব্যবস্থাও তাদের নেই, তাদেরকে ব্যক্তিগত প্রয়োজন পরিমাণ যাকাত দেয়া যাবে। এক্ষেত্রে বাড়িতে থাকা সম্পদ যাকাত গ্রহণে বাধা হবে না। তবে তারা কোনো সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকলে সংগঠনের অফিসিয়াল কাজে যে খরচ করেন, তা যাকাত থেকে দেয়া যাবে না। হ্যাঁ, যাকাতের কোনো সম্পদ তাদেরকে সম্পূর্ণ মালিক বানিয়ে দিলে সেটা তারা চাইলে অফিসিয়াল কাজে ব্যয় বা ব্যবহার করতে পারবেন।

পক্ষান্তরে কোনো মাধ্যমে বাড়ির সম্পদ থেকে খরচের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হলে অথবা খরচ চালানোর মতো উপার্জন বা অন্য কোনো ব্যবস্থা থাকলে যাকাত দেয়া যাবে না। তবে যতটুকু ব্যবস্থা আছে তা যথেষ্ট না হলে বাকিটুকু যাকাত থেকে দেয়া যাবে।

উভয় ক্ষেত্রেই তাদেরকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত যাকাত দেয়া যাবে না।

-ইখতিয়ার: ১/১৯৪, দারুল হাদীস; গায়াতুল বয়ান: ৩/১১৪, দারু যিয়া –কুয়েত; ফাতহুল কাদীর: ২/২৬৯, মাকতাবায়ে আশরাফিয়্যা –দেওবন্দ; রদ্দুল মুহতার: ২/৩৪৩, দারুল ফিকর; রুহুল মাআনী: ১০/৪৩১, দারুল হাদীস; ইমদাদুল ফাতাওয়া (জাদীদ): ৩/৫৪৩, যাকারিয়া; ফাতাওয়া মাহমুদিয়া: ৯/৬০০, জামিয়া ফারুকিয়া করাচি; ফতোয়া সাইট বানুরী টাউন: ১৪৪১০৫২০০৯৫৮, ১৪৪৩০৮১০২০১৬, ১৪৪৩০৬১০০৬৭৪; ফতোয়া সাইট দারুল উলুম দেওবন্দ: ১৭৮৩৬১

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১১-০৪-১৪৪৬ হি.

১৫-১০-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

09 Jan, 12:01


মোজা উপর মাসহের মেয়াদ শেষ হলে করণীয়

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b9%e0%a6%9c-%e0%a6%93%e0%a6%ae%e0%a6%b0%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a7%82%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be%e0%a6%ab/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

09 Jan, 12:01


মোজা উপর মাসহের মেয়াদ শেষ হলে করণীয়

প্রশ্ন:

মোজা পরিধানের পর মাসহের সময়সীমা অতিবাহিত হয়ে গেলে করণীয় কী? এক্ষেত্রে অযু থাকলে মোজা খুলে শুধু দুই পা ধৌত করলেই যথেষ্ট হবে? নাকি অন্য অঙ্গসহ পুরো অযু করতে হবে?

-আবদুল খালিক

উত্তর: এক্ষেত্রে অযুর সব অঙ্গ ধৌত করতে হবে না; বরং মোজা খুলে দুই পা ধৌত করলেই হয়ে যাবে। তবে নতুন করে পূর্ণ অযু করে নেয়া উত্তম। -ফতোয়া শামি, দারুল ফিকর: ১/২৭৬; ফাতহুল কাদীর, আশরফিয়া: ১/১৫৫

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৫-০৫-১৪৪৬ হি.

২৮-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

08 Jan, 12:14


সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফ পরবর্তী দুই রাকাত পড়ার বিধান

প্রশ্ন:

আমরা জানি, আসরের নামাযের পর কোনো ধরনের নফল নামায পড়া যায় না। কেউ আসরের পর তাওয়াফ করলে তাওয়াফের দুই রাকাত তখনই আদায় করতে পারবে কি না? শুনেছি, তাওয়াফের নামায নাকি বিলম্ব করা ঠিক নয়।

আমি একদিন তাওয়াফ শেষ করে মাগরিবের আগেই দুই রাকাত শুরু করি, নামাযে থাকতেই মাগরিবের আযান হয়ে যায়। আমার নামাযটি কি হয়েছে? আমি অবশ্য পরবর্তীতে পড়ে নিয়েছি।

-মুহাম্মাদ মারূফ

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

حامدا ومصليا ومسلما، أما بعد!

নামাযের মাকরূহ ও নিষিদ্ধ ওয়াক্তেও তাওয়াফ করা জায়েয। সুতরাং আসরের পর বা সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফ করতে সমস্যা নেই। তবে আসরের পর তাওয়াফ করলেও সূর্যাস্তের পূর্বে তাওয়াফ পরবর্তী দুই রাকাত সালাত আদায় করা যাবে না। এক্ষেত্রে তাওয়াফের নামায মাগরিবের ফরয আদায়ের পর সুন্নতের আগে পড়ে নিবেন। মাকরূহ ও নিষিদ্ধ ওয়াক্ত থেকে বাঁচার জন্য তাওয়াফের সালাতে এতটুকু বিলম্ব করতে সমস্যা নেই; বরং জরুরি।

ভুলবশত মাগরিবের আগে শুরু করলে স্মরণ হওয়া মাত্র নামায ছেড়ে দিতে হবে। অবশ্য কেউ যদি সূর্যাস্ত আরম্ভ হওয়ার পূর্বে পড়ে ফেলে, তাহলে নামায হয়ে যাবে, তবে তা পুনরায় আদায় করা উত্তম। পক্ষান্তরে সূর্যাস্তের সময় আদায় করলে নামায সহীহ হবে না; বরং তা পুনরায় আদায় করা জরুরি। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার নামাযটি সহীহ হয়নি। তাই পরবর্তীতে পড়ে নেয়া ঠিক হয়েছে। -মুআত্তা মুহাম্মাদ (আল-মাকতাবাতুল ইলমিয়্যাহ): ১৬১-১৬২; রদ্দুল মুহতার (দারুল ফিকর): ২/৪৭০ ও ৪৯৯; জাওয়াহেরুল ফিকহ (যাকারিয়া): ৪/১২০

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৫-০৫-১৪৪৬ হি.

২৮-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

08 Jan, 12:14


সূর্যাস্তের সময় তাওয়াফ পরবর্তী দুই রাকাত পড়ার বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b9%e0%a6%9c-%e0%a6%93%e0%a6%ae%e0%a6%b0%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a7%82%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%af%e0%a6%bc-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be%e0%a6%ab/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

07 Jan, 12:02


যাকাত ফাণ্ডে জমা হওয়া কাপড় বিক্রি করার বিধান

প্রশ্ন:

কোনো দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের যাকাত সংগ্রহকারীর কাছে কেউ যদি যাকাতের লুঙ্গি, কাপড় কিংবা এ জাতীয় কিছু দেয়, তাহলে তিনি কি ওগুলো বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানের যাকাত ফান্ডে অর্থ জমা দিতে পারবেন? এ ক্ষেত্রে মূলনীতি কী? বিস্তারিত জানালে অনেক উপকৃত হবো।

-আবদুল হাসীব

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله وسلام على عباده الذين اصطفى، أما بعد!

এখানে দুটি বিষয়ঃ

এক. যাকাতের লুঙ্গি, কাপড় ইত্যাদি বিক্রি করা জায়েয কি না?

দুই. বিক্রি করা গেলে সংগ্রহকারীগণ নিজেরা বিক্রি করতে পারবেন কি না?

প্রথম প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, দাতাদের অনুমতি থাকলে যাকাত হিসেবে দেওয়া জিনিস স্বাভাবিক বাজার মূল্যে বিক্রি করা যাবে। অনুমতি না থাকলে বিক্রি করা যাবে না। যদি বুঝা যায় যে, বিক্রি করে দিলে তারা অসন্তষ্ট হবেন না, তাহলে তাও অনুমতি বলে গণ্য হবে এবং বিক্রি করা যাবে। সর্বাবস্থায় স্বাভাবিক বাজার মূল্যের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।-খানিয়া: ৩/২০৭, রদ্দুল মুহতার: ২/২৬৯, ইমদাদুল মুফতিন (জামে): ৫/৫০৯-৫১০, ফাতাওয়া দারুল উলূম করাচি: ২/৪৬৩

দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, যাকাত সংগ্রহকারীগণ প্রতিষ্ঠানের অধীন। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যতটুকুর অনুমতি থাকবে, তারা ততটুকুই করতে পারবেন। -আহকামুস সুলতানিয়া (মাওয়ারদী): ১৭৯-১৮১, আলজাওহারাতুন নায়্যিরাহ: ২/২৪৫, রদ্দুল মুহতার: ৫/৪১৯

অতএব, যাকাতদাতা ও প্রতিষ্ঠান উভয় পক্ষ থেকে যদি বিক্রির অনুমতি থাকে, তাহলে সংগ্রহকারীরা তা বিক্রি করে যাকাত ফাণ্ডে অর্থ জমা দিতে পারবেন। অনুমতি না থাকলে বিক্রি করতে পারবেন না, বরং সংগ্রহকৃত লুঙ্গি কাপড় ইত্যাদি যা পাবেন তাই জমা দিবেন। বিক্রি করা, না করার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের পরিষ্কার কোনো নির্দেশনা জানা না থাকলে, বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলদের অবগত করে নির্দেশনা অনুযায়ী আমল করবেন।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৪-০৫-১৪৪৬ হি.

০৭-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

07 Jan, 12:02


যাকাত ফাণ্ডে জমা হওয়া কাপড় বিক্রি করার বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%ab%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a3%e0%a7%8d%e0%a6%a1%e0%a7%87-%e0%a6%9c%e0%a6%ae%e0%a6%be-%e0%a6%b9%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%be/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

06 Jan, 11:57


দুইজন ব্যক্তি জামাতে নামায আদায় কালে তৃতীয় ব্যক্তি আসলে করণীয়

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9c/%e0%a6%a6%e0%a7%81%e0%a6%87%e0%a6%9c%e0%a6%a8-%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

06 Jan, 11:57


দুইজন ব্যক্তি জামাতে নামায আদায় কালে তৃতীয় ব্যক্তি আসলে করণীয়

প্রশ্ন:

দুজন ব্যক্তি জামাতের সাথে নামায পড়ছিল। একজন ইমাম, অপরজন মুক্তাদি। এ সময় তৃতীয় ব্যক্তি আসলে আমরা জানি, মুক্তাদি পেছনে সরে আসবে। কিন্তু যদি মুক্তাদির জন্য পেছনে সরার মতো জায়গা না থাকে তাহলে কি ইমাম সামনে যেতে পারবে?

-আবদুল আহাদ



উত্তর: এক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম হলো, ইমাম আপন স্থানে থাকবে, আর প্রথম মুক্তাদি উল্টোপায়ে (কেবলার দিক থেকে সিনা না ফিরিয়ে) পেছনে সরে আসবে এবং আগন্তুক ব্যক্তির সাথে মিলে ইমামের পেছনে কাতার করবে। নবীজীর সাথে সফরের ঘটনা সম্বলিত একটি দীর্ঘ হাদীসে জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

جئت حتى قمت عن يسار رسول الله صلى الله عليه وسلم، فأخذ بيدي فأدارني حتى أقامني عن يمينه، ثم جاء جبار بن صخر فتوضأ، ثم جاء فقام عن يسار رسول الله صلى الله عليه وسلم، فأخذ رسول الله صلى الله عليه وسلم بيدينا جميعا، فدفعنا حتى أقامنا خلفه. -صحيح مسلم (4/ 2305 رقم: 3010)

“(রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে দাঁড়ালে) আমি এসে তাঁর বাম পাশে দাঁড়াই। তখন নবীজী আমার হাত ধরে আমাকে ঘুরিয়ে ডান পাশে দাঁড় করান। এরপর জাব্বার বিন সাখর রাযিয়াল্লাহু আনহু (ইস্তেঞ্জা সেরে) অযু করে এসে নবীজীর বাম পাশে দাঁড়ান। তখন নবীজী আমাদের দুজনের হাত ধরে আমাদের পেছনে ঠেলে দেন এবং আমাদেরকে তাঁর পেছনে দাঁড় করান।” -সহীহ মুসলিম: ৪/২৩০৫ হাদীস: ৩০১০ (দারু ইহয়ায়িত তুরাস)

কিন্তু যদি মুক্তাদির পেছনে সরার মতো জায়গা না থাকে কিংবা মাসআলা না জানার কারণে সে পেছনে না যায়, তাহলে ইমাম সিজদার স্থান পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারবে। -রদ্দুল মুহতার: ১/৫৬৮ (দারুল ফিকর)

আর যদি ইমামেরও সামনে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ না থাকে, তাহলে তৃতীয় ব্যক্তি ইমামের পাশেই দাঁড়িয়ে যাবে। এক্ষেত্রে প্রথম মুক্তাদি সুন্নত তরীকা অনুযায়ী ইমামের ডান পাশে দাঁড়িয়ে থাকলে তৃতীয় ব্যক্তি ইমামের বাম পাশে দাঁড়াবে। -সহীহ মুসলিম: ১/৩৭৮ হাদীস: ৫৩৪ (দারু ইহয়ায়িত তুরাস); মাবসূতে সারাখসী: ১/৪২ (দারুল মারেফা); বাদায়েউস সানায়ে: ১/১৫৮ (দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ); আল-বাহরুর রায়েক: ১/৩৭৪ (দারুল কিতাবিল ইসলামী); ইমদাদুল মুফতীন, পৃ: ২৯৪ (দারুল ইশাআত, করাচী)

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৩-০৫-১৪৪৬ হি.

২৬-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

05 Jan, 12:00


বাংলাদেশের জমি কি উশরি? না, খারাজি?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be/%e0%a6%89%e0%a6%b6%e0%a6%b0-%e0%a6%96%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%9c/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%ae%e0%a6%bf-%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%89%e0%a6%b6%e0%a6%b0%e0%a6%bf-%e0%a6%a8%e0%a6%be/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

05 Jan, 12:00


বাংলাদেশের জমি কি উশরি? না, খারাজি?

প্রশ্ন:

ভারত উপমহাদেশের জমি বিশেষ করে বাংলাদেশের জমি কি উশরি? না, খারাজি? না, এ দুটোর কোনোটাই না? বিষয়টি কুরআন-সুন্নাহের আলোকে সবিস্তারে জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

-আবু ইয়াহইয়া

উত্তর: বাংলাদেশসহ ভারত উপমহাদেশের যে সকল জমি যুগ যুগ ধরে মুসলিমদের মালিকানায় চলে আসছে এবং মাঝে তা কাফেরের মালিকানায় থাকার কোনো প্রমাণ নেই, তা উশরি জমি বলেই বিবেচিত হবে এবং তাতে উশরই ওয়াজিব হবে। সে হিসেবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অধিকাংশ ভূমিই উশরি। হ্যাঁ, যেসব জমি বর্তমানে কাফেরদের মালিকানায় রয়েছে কিংবা বর্তমানে মুসলিমদের মালিকানায় থাকলেও পূর্বে তা কাফেরদের মালিকানায় থাকা প্রমাণিত, সেসব জমি খারাজি জমি বলে গণ্য হবে।

পক্ষান্তরে দারুল হা-র-ব হওয়ার কারণে ভারত উপমহাদেশের জমি উশরি না এবং খারাজীও না, তাই তাতে উশর-খারাজ কোনোটিই ওয়াজিব হবে না—এই মতটি সঠিক নয়।-কারারাত ও তাওসিয়াতু মাজমায়িল ফিকহিল ইসলামী, আল-হিন্দ, সিদ্ধান্ত নং: ২৯ পৃ: ৭০ (প্রকাশক, মাজমাউল ফিকহিল ইসলামী, নয়া দিল্লী)

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৫-০৫-১৪৪৬ হি.

২৮-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

04 Jan, 11:54


লাঠি নিয়ে খুতবা দেওয়া কি সুন্নত?

প্রশ্ন: লাঠি নিয়ে খুতবা পাঠ করা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত। আবার অন্যদিকে লা-মাযহাবিদের শিআর-প্রতীক। এখন এটিকে নবীজীর সুন্নত হিসেবে পালন করব? না, বিশেষ মাসলাকের লোকদের শিআর হওয়ার কারণে বর্জন করব?

উল্লেখ্য, আমাদের অঞ্চলে লাঠি ছেড়ে দেওয়ারই ব্যাপকতা দেখা যায়। শুধু লাঠি নিয়ে খুতবা দেওয়ার কারণে লা-মাযহাবি অপবাদ লাগিয়ে দেয়া হয়।

-আলী

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله وسلام على عباده الذين اصطفى، أما بعد!

খুতবা দেয়ার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাঠি বা ধনুকে ভর দিতেন বলে হাদীসে এসেছে।-সুনানে আবু দাউদ: ১০৯৬, ১১৪৫ দারুর রিসালা; সুনানে ইবনে মাজাহ: ১১০৭, দারুর রিসালা

তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাজটি সুন্নত আমল হিসেবে করেছেন, না শক্ত হয়ে দাঁড়ানোর প্রয়োজনে করেছেন, একইভাবে শুধু মিম্বার তৈরির পূ্র্ব পর্যন্ত করেছেন, না যখন মিম্বারে দাঁড়িয়ে খুতবা দিতেন, তখনও করেছেন, এসব বিষয়ে সালাফী ও মাযহাবী সকল উলামায়ে কেরামের বিস্তর বিশ্লেষণ রয়েছে। সালাফী আলেমরাও সবাই সুন্নত হওয়ার বিষয়ে একমত নন।

অধিকাংশ আলেমের মতে এটি মুস্তাহাব বা সুন্নতে যায়েদাহ। তবে কারো মতেই এটি খুতবার আবশ্যক কোনো অংশ নয়। সুতরাং একে আবশ্যক মনে করা এবং ছেড়ে দেয়াকে মন্দ মনে করা বাড়াবাড়ি। কারণ এমন মুস্তাহাব (মতান্তরে জায়েয) বিষয়কে আকীদাগত কিংবা কর্মগত দিক থেকে আবশ্যক বানিয়ে নিলে, তা বিদআতে পরিণত হয়।

অপরদিকে এর উপর আমল করার কারণে কাউকে বিশেষ কোনো দলের বা ভ্রান্ত ব্যক্তি বলে আখ্যায়িত করাও বাড়াবাড়ি। কারণ কেউ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ ও মুস্তাহাব আমলের নিয়তে তা করলে, অবশ্যই তিনি সাওয়াব পাবেন এবং তা প্রশংসনীয়। -বিনায়া: ৩/৬৩; রদ্দুল মুহতার: ২/১৬৩; ইমদাদুল ফাতাওয়া-জাদীদ: ৩/১৩৯-১৪০, যাকারিয়া; ইমদাদুল মুফতীন-জামে: ৪/৪১৪, যাকারিয়া; ফাতাওয়া উসমানী: ১/৫১৪, যাকারিয়া

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৩-০৫-১৪৪৬ হি.

২৬-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

04 Jan, 11:54


লাঠি নিয়ে খুতবা দেওয়া কি সুন্নত?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%9c%e0%a7%81%e0%a6%ae%e0%a6%86/%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%a0%e0%a6%bf-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%96%e0%a7%81%e0%a6%a4%e0%a6%ac%e0%a6%be-%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be-%e0%a6%95/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

03 Jan, 11:32


কু-ফ-রী কাজ করে ফেললে করণীয়


প্রশ্ন: আমি কিছু দিন আগে শয়তানের ধোঁকায় পড়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে এমন একটি পাপকাজ করে ফেলি, যা কু-ফ-র কিংবা শি-র-কে-র পর্যায়ের পড়ে। এখন আমার জানার বিষয় হলো, আল্লাহ কি আমার তাওবা কবুল করবেন? তিনি কি আমাকে ক্ষমা করবেন? এ মুহূর্তে আমার করণীয় কী?

-মুহাম্মাদ সিরাত

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد:

যেকোনো অপরাধের পর কেউ যদি আল্লাহ তাআলার নিকট লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে খালেস দিলে তাওবা ইস্তেগফার করে, আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

{كَيْفَ يَهْدِي اللَّهُ قَوْمًا كَفَرُوا بَعْدَ إِيمَانِهِمْ وَشَهِدُوا أَنَّ الرَّسُولَ حَقٌّ وَجَاءَهُمُ الْبَيِّنَاتُ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ (86) أُولَئِكَ جَزَاؤُهُمْ أَنَّ عَلَيْهِمْ لَعْنَةَ اللَّهِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ (87) خَالِدِينَ فِيهَا لَا يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنْظَرُونَ (88) إِلَّا الَّذِينَ تَابُوا مِنْ بَعْدِ ذَلِكَ وَأَصْلَحُوا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ} [آل عمران: 86 – 89]

“আল্লাহ এমন লোকদের কিভাবে হেদায়াত দেবেন, যারা ঈমান আনার পর কু-ফ-র অবলম্বন করেছে, অথচ তারা সাক্ষ্য দিয়েছিল যে, রাসূল সত্য এবং তাদের কাছে উজ্জ্বল নিদর্শনাবলীও এসেছিল। আল্লাহ এরূপ জালিমদেরকে হেদায়াত দান করেন না। এরূপ লোকদের শাস্তি হচ্ছে, তাদের প্রতি আল্লাহর, ফিরিশতাদের ও সমস্ত মানুষের লানত। তারই মধ্যে (লানতের মধ্যে) তারা সর্বদা থাকবে। তাদের শাস্তি লাঘব করা হবে না এবং তাদেরকে অবকাশও দেয়া হবে না। অবশ্য যারা এসব কিছুর পরও তাওবা করবে ও নিজেদেরকে সংশোধন করবে, (তাদের জন্য) আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।” – সূরা আলে ইমরান ০৩: ৮৬-৮৯

অন্যত্র ইরশাদ করেন,

{إِنَّ الْمُنَافِقِينَ فِي الدَّرْكِ الْأَسْفَلِ مِنَ النَّارِ وَلَنْ تَجِدَ لَهُمْ نَصِيرًا (145) إِلَّا الَّذِينَ تَابُوا وَأَصْلَحُوا وَاعْتَصَمُوا بِاللَّهِ وَأَخْلَصُوا دِينَهُمْ لِلَّهِ فَأُولَئِكَ مَعَ الْمُؤْمِنِينَ وَسَوْفَ يُؤْتِ اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ أَجْرًا عَظِيمًا } [النساء: 145، 146]

“নিশ্চয়ই মু-না-ফি-ক-রা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে এবং আপনি তাদের পক্ষে কোনো সাহায্যকারী পাবেন না। তবে যারা তাওবা করবে, নিজেদেরকে সংশোধন করে নিবে, আল্লাহর আশ্রয়কে শক্তভাবে ধরে রাখবে এবং নিজেদের দ্বীনকে আল্লাহর জন্য খালেস করে নেবে, তারা মুমিনদের সঙ্গে শামিল হয়ে যাবে। আল্লাহ অবশ্যই মুমিনদেরকে মহা প্রতিদান দান করবেন।” -সূরা নিসা ০৪: ১৪৫-১৪৬

আরও ইরশাদ করেন,

{وَالَّذِينَ عَمِلُوا السَّيِّئَاتِ ثُمَّ تَابُوا مِنْ بَعْدِهَا وَآمَنُوا إِنَّ رَبَّكَ مِنْ بَعْدِهَا لَغَفُورٌ رَحِيمٌ} [الأعراف: 153]

“আর যারা মন্দ কাজ করে ফেলে তারপর তাওবা করে ও ঈমান আনে, তোমার প্রতিপালক সেই তাওবার পর (তাদের পক্ষে) অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” -সূরা আরাফ ০৭: ১৫৩

আরও ইরশাদ করেন,

{وَهُوَ الَّذِي يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَعْفُو عَنِ السَّيِّئَاتِ وَيَعْلَمُ مَا تَفْعَلُونَ (25) وَيَسْتَجِيبُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَيَزِيدُهُمْ مِنْ فَضْلِهِ وَالْكَافِرُونَ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ} [الشورى: 25، 26]

“এবং তিনিই নিজ বান্দাদের তাওবা কবুল করেন ও গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। আর তোমরা যা কিছু করো তা তিনি জানেন। যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের দোয়া তিনি শোনেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরো বেশি দান করেন। আর কা-ফে-র-দে-র জন্য আছে কঠিন শাস্তি।” -সূরা শূরা ৪২: ২৫-২৬

আরও ইরশাদ করেন,

{وَإِنِّي لَغَفَّارٌ لِمَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا ثُمَّ اهْتَدَى} [طه: 82]

“আর এটাও সত্য যে, যে ব্যক্তি তাওবা করে, ঈমান আনে, সৎকর্ম করে অতঃপর সরল পথে প্রতিষ্ঠিত থাকে, আমি তার প্রতি পরম ক্ষমাশীল।” –সূরা তহা ২০: ৮২

হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

يَا عِبَادِي إِنَّكُمْ تُخْطِئُونَ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَأَنَا أَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا، فَاسْتَغْفِرُونِي أَغْفِرْ لَكُمْ. -صحيح مسلم (4/994 رقم: 2577 ط. دار إحياء التراث)

“হে আমার বান্দারা, তোমরা দিন-রাত গুনাহ করে থাকো, আর আমি সকল গুনাহ ক্ষমা করি। তোমরা ক্ষমা চাও আমি তোমাদের ক্ষমা করে দিবো।” -সহীহ মুসলিম: ২৫৭৭

অন্য হাদীসে এসেছে,

عن أبي عبيدة بن عبد الله عن أبيه، قال: قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم -: “التائب من الذنب كمن لا ذنب له”. –سنن ابن ماجه ت الأرنؤوط (5/ 320): 4250، قال المحققون: حديث محتمل للتحسين بشواهده. اهـ وقال الحافظ ابن حجر في فتح الباري (13/471) : “سنده حسن”. وقال الحافظ السخاوي في المقاصد الحسنة (ص: 249) : “رجاله ثقات، بل حسنه شيخنا يعني لشواهده…”.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

03 Jan, 11:32


“গুনাহ থেকে তাওবাকারী ব্যক্তি ঐ ব্যক্তির ন্যায় যার কোনো গুনাহ নাই।” –সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪২৫০

কাজেই যত বড় গুনাহই করে থাকুন নিরাশ হবেন না। আল্লাহর কাছে খালেস দিলে তাওবা ইস্তেগফার করুন। প্রতিজ্ঞা করুন আর কখনো এমন কাজ করবেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ তাআলা গুনাহগার বান্দাদের তাওবার দিকে আহ্বান করে বলেন,

قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ. –الزمر 53

“আপনি বলে দিন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজের উপর সীমালঙ্ঘন করেছো, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন। নিশ্চয় তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” -সূরা যুমার ৩৯: ৫৩

তাওবা ইস্তেগফারের পাশাপাশি আপনি নতুন করে কালিমায়ে শাহাদাত গ্রহণের মাধ্যমে ঈমানের নবায়ন করুন এবং এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য কোনো আলেমের শরণাপন্ন হোন। বিষয়টি তাঁকে বিস্তারিত জানান। যদি সত্যই আপনার গুনাহটি শিরক-কুফর পর্যায়ের হয় এবং আপনি বিবাহিত হন, তাহলে তাঁর নির্দেশনা অনুাযায়ী বিবাহও দোহরিয়ে নিন।

উল্লেখ্য, সূরা নিসার ৪৮ নং আয়াতে এসেছে,

{إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَى إِثْمًا عَظِيمًا} [النساء: 48]

“নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শি-র-ক করাকে ক্ষমা করেন না। এর নিচের সকল গোনাহ, যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন। আর যে আল্লাহর সঙ্গে শ-রী-ক করল, সে তো মহাপাপে লিপ্ত হলো।” –সূরা নিসা ০৪: ৪৮

উক্ত আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে, শিরকের গোনাহ তাওবা ছাড়া ক্ষমা করেন না। পক্ষান্তরে অন্যান্য গোনাহ তাওবা ছাড়াও আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন; যদিও যেকোনো কবীরা গোনাহ ক্ষমা পাওয়ার সাধারণ নিয়ম হচ্ছে তওবা করা। -তাফসীরে তাবারী (মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ) : ৮/৪৫০

فقط، والله تعالى أعلم الصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৪-০৫-১৪৪৬ হি.

২৭-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

03 Jan, 11:32


কুফরী কাজ করে ফেললে করণীয়

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%88%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%86%e0%a6%95%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a6%be/%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%95-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a6%86%e0%a6%a4/%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%ab%e0%a6%b0%e0%a7%80-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9c-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%ab%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%a3%e0%a7%80%e0%a6%af/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

02 Jan, 11:55


লটারির হুকুম কী?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a8/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae/%e0%a6%b2%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a7%81%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%ae-%e0%a6%95%e0%a7%80/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

02 Jan, 11:55


লটারির হুকুম কী?

প্রশ্ন: শরীয়তের দৃষ্টিতে লটারির হুকুম কী? কুরআন ও হাদীসের আলোকে বিস্তারিত জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

-আবদুর রহমান

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله وكفى وسلام على عباده الذين اصطفى، أما بعد:

প্রচলিত লটারি এমন এক খেলা, যাতে অংশগ্রহণকারী লাভ কিংবা গচ্ছা দেয়ার ঝুঁকিতে থাকে। অংশগ্রহণকারীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে খেলায় প্রবেশ করে। পুরস্কার পেলে বিপুল অর্থ পায়, অন্যথায় সব গচ্ছা যায়। এটি জুয়ার একটি প্রকার। জুয়া ইসলামে নাজায়েয ও হারাম।

জাহেলি আরবদের একটি প্রচলন ছিল, তারা সম্পদশালী কয়েকজন মিলে উট ক্রয় করে, জবাইয়ের পর গোশত দশ ভাগ করতো। এরপর দশটি তীর নিয়ে এর সাতটির কোনোটায় এক অংশ, কোনোটায় দুই অংশ এভাবে পাঁচ অংশ পর্যন্ত লিখে দিতো। আর বাকি তিনটিতে কোনো অংশ লিখতো না। তারপর তীরগুলোকে একটি চামড়ার পাত্রে রেখে বিশ্বস্ত লোকের হাতে তুলে দিতো। সে লোক একজনের নাম নিয়ে একটি তীর উঠাতো। ঐ তীরে যত অংশ লিখা থাকতো, যার নামে উঠানো হত, সে তা পেয়ে যেতো। যার নামে উঠানো তীরে কোনো অংশ লিখা থাকতো না, সে কিছুই পেতো না। এভাবে কারো লাভ হতো, কারো গচ্ছা যেতো। এ ধরনের জুয়ার রীতি আরবে প্রচলিত ছিল। -তাফসীরে বাগাবী থেকে সংক্ষেপিত, দেখুন: বাগাবী: ১/২৮০

পবিত্র কুরআন একে শয়তানের কর্ম বলে অভিহিত করেছে।

ইরশাদ হয়েছে,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ. –سورة المائدة: 90

“হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমার বেদি ও জুয়ার তীর অপবিত্র, শয়তানী কাজ। সুতরাং তোমরা এসব থেকে দূরে থাক, যাতে তোমরা সফল হতে পারো। -সূরা মায়েদা ০৫: ৯০, ৯১

অপর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে,

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِنْ نَفْعِهِمَا. –سورة البقرة: 219

“লোকে আপনাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি বলে দিন, এ দুটোর মধ্যে মহা পাপও রয়েছে এবং মানুষের জন্য কিছু উপকারও রয়েছে। আর এ দুটোর পাপ তার উপকার অপেক্ষা গুরুতর।” -সূরা বাকারা ০২: ২১৯

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম ইরশাদ করেছেন,

إِنَّ اللهَ حَرَّمَ عَلَيْكُمِ الْخَمْرَ، وَالْمَيْسِرَ، وَالْكُوبَةَ .-مسند أحمد: 2625 ط. الرسالة. وقال الإمام الذهبي رحمه الله تعالى: إِسناده مقارب. اهــــ -المهذب في اختصار السنن الكبير: 8/4234 ط. دار الوطن للنشر.

“আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর মদ, জুয়া, তবলাকে হারাম করেছেন।” –মুসনাদে আহমাদ: ২৬২৫

ইমাম আবু বকর জাসসাস রহিমাহুল্লাহ (মৃত: ৩৭০ হিজরী) বলেন,

ولا خلاف بين أهل العلم في تحريم القمار وأن المخاطرة من القمار. اهــــ. -أحكام القرآن للجصاص ط العلمية (1/ 398)

“আলেমদের মাঝে কোনো দ্বিমত নেই যে, জুয়া হারাম এবং যে কোনো (পাওয়া-না পাওয়ার) ঝুঁকি জুয়ার অন্তর্ভুক্ত।” -আহকামুল কুরআন-জাসসাস: ১/৩৯৮

তবে লটারির আরেকটি প্রকার রয়েছে, যা কোনো বৈধ বণ্টনের কোনো ভাগ কে নিবে, তা নির্ধারিত করার জন্য করা হয়। যেমন দুইজন ওয়ারিসের মাঝে একটি জমি বণ্টন হলো সমান হারে দুই ভাগে। এখন কে কোন ভাগ নেবেন, এটা নির্ধারিত করার জন্য লাটারি করা হলো।

অনুরূপ যে ক্ষেত্রে কারো হক নেই, তাদের কিছু দেয়ার জন্য লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত করা। যেমন কেউ দশজনকে কিছু হাদিয়া দিবে, তাই কোন দশজনকে দিবে তা লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হলো। এ ধরনের লটারি জায়েয ও বৈধ। -সহীহ বুখারী: ২৫৯৩; আল-মুহিতুল বুরহানী: ৭/৩৫৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক: ৭/৪৬৬; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/৩০৫; আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৪০৩; রদ্দুল মুহতার: ৬/৪০৩; মওসুআ ফিকহিয়া কুয়াইতিয়া: ৪/৮১; ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ: ১৪/৫০৪

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৭-০৫-১৪৪৬ হি.

৩০-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

01 Jan, 11:55


জিহাদের জন্য অর্থ সঞ্চয় করব? না, হজের জন্য?


প্রশ্ন: বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রত্যেক সচেতন মুসলিম গাযওয়াতুল হিন্দের আভাস পাচ্ছে। এমতাবস্থায় যারা মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির, তারা হজের জন্য টাকা জমা করবে? না, জিহাদের জন্য? আমার পরিচিত এক ভাই হজের জন্য টাকা জমাতে বলেন, কিন্তু আরেক ভাই বলেন, জিহাদের জন্য টাকা জমাতে। শরীয়তের আলোকে কার কথা সঠিক? আমরা কোনটা করবো?

-আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ

উত্তর:

بسم الله، والحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد!

হজের খরচ বহন করার সামর্থ্য যার নাই, তার উপর হজ ফরয নয় এবং হজের জন্য অর্থ জমা করাও তার দায়িত্ব নয়। এ অবস্থায় তার কর্তব্য, যেসকল কাজে অর্থ ব্যয় করা ফরয বা ওয়াজিব, সেগুলোতে অর্থ ব্যয় করা। ফরয ওয়াজিব দায়িত্ব পূর্ণ আদায় করার পর যদি সম্ভব হয় তাহলে নফল সাদাকা করা কিংবা হজ ওমরার মতো যেকোনো নফল ইবাদতের জন্য অর্থ জমা করতে কোনো সমস্যা নেই।

জিহাদ একটি ফরয দায়িত্ব। সামর্থ্যভেদে স্বশরীরে এবং অর্থ দিয়ে জিহাদে শরীক হওয়া মুসলিমদের ফরয দায়িত্ব। মুসলিম ভূমি কাফেরদের দখলে না থাকলে এবং মুসলিমরা কাফেরদের দ্বারা আক্রান্ত না হলে এ দায়িত্বটি ফরযে কেফায়া। পক্ষান্তরে মুসলিমদের ভূমি কাফেরদের দখলে থাকলে কিংবা মুসলিমরা কাফেরদের দ্বারা আক্রান্ত হলে দায়িত্বটি ফরযে আইন। প্রয়োজন এবং সুযোগ-সক্ষমতার মাত্রানুযায়ী প্রতিটি মুসলিমের উপর এ দায়িত্বটি বর্তিায়।

ফরযে আইন জিহাদ সকল আমল অপেক্ষা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন,

أَجَعَلْتُمْ سِقَايَةَ الْحَاجِّ وَعِمَارَةَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ كَمَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَجَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ لَا يَسْتَوُونَ عِنْدَ اللَّهِ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِنْدَ اللَّهِ وَأُولَئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ (التوبة: 19)

“তোমরা কি হাজিদের পানি পান করানো এবং মসজিদে হারাম আবাদ করাকে আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনা এবং আল্লাহর পথে জিহাদ করার সমতূল্য মনে করো? তারা তো আল্লাহর তাআলার নিকট সমান নয়। আল্লাহ তাআলা জালেমদের হেদায়াত দান করেন না। যারা ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে এবং আল্লাহর পথে জানমাল দিয়ে জিহাদ করেছে, তারা আল্লাহ তাআলার নিকট উচ্চ মর্যাদার অধিকারী এবং তারাই সফলকাম।” -সূরা তাওবা ০৯: ১৯-২০

আয়াতের তাফসীরে আল্লামা তাকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহ বলেন,

“(উপর্যুক্ত) আয়াতে মূলনীতি বলে দেয়া হয়েছে যে, সমস্ত নেক কাজ সমমর্যাদার হয় না। … নিশ্চয়ই হাজিদেরকে পানি পান করানো একটি মহৎ কাজ, কিন্তু মর্যাদা হিসেবে তা নফল বৈ নয়। অনুরূপ মসজিদুল হারামের তত্ত্বাবধানও অবস্থাভেদে ফরযে কিফায়া কিংবা একটি নফল ইবাদত। পক্ষান্তরে ঈমান তো মানুষের মুক্তির জন্য বুনিয়াদী শর্ত। আর জিহাদ কখনো ফরযে আইন এবং কখনোও ফরযে কিফায়া। প্রথমোক্ত কাজ দুটির তুলনায় এ দুটোর মর্যাদা অনেক উপরে।” -তাওযীহুল কুরআন: ১/৫২৮

ইমাম আবুল আব্বাস কুরতুবী রহিমাহুল্লাহ (মৃ: ৬৫৬ হি.) বলেন,

وقد حصل من مجموع هذه الأحاديث: أن الجهاد أفضل من جميع العبادات العملية، ولا شك في هذا عند تعيينه على كل مكلف يقدر عليه، كما كان في أوّل الإسلام، وكما قد تعيَّن في هذه الأزمان؛ إذ قد استولى على المسلمين أهل الكفر والطغيان، فلا حول ولا قوة إلا بالله العلي العظيم. (المفهم لما أشكل من تلخيص كتاب مسلم: 3/712 ط. دار ابن كثير: 1417 هـ )

“এই সকল হাদীস থেকে বুঝা যায়, জিহাদ সকল আমলী ইবাদতের চেয়ে উত্তম। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, জিহাদ ফরযে আইন হওয়ার সুরতে জিহাদই সর্বোত্তম আমল। যেমন ইসলামের সূচনালগ্নে জিহাদ ফরযে আইন ছিল এবং বর্তমান যমানায়ও জিহাদ ফরযে আইন হয়ে গেছে, যেহেতু মুসলিমদের উপর কাফের ও সীমালঙ্ঘনকারীরা কর্তৃত্ব বিস্তার করেছে…।” –আল-মুফহিম: ৩/৭১২

একথা স্পষ্ট যে, বর্তমান বিশ্বে সর্বত্রই মুসলিমরা আক্রান্ত এবং মুসলিমদের প্রায় সকল ভূমি কাফেরদের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ দখলে। এ পরিস্থিতিতে জান ও মাল দিয়ে জিহাদে শরীক হওয়া ফরযে আইন। এ ফরয আদায়ের ব্যবস্থাও আল্লাহ তাআলা করে দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। কিছু ভূমিতে সরাসরি জিহাদের কাজটি চলমান রয়েছে আর কিছু ভূমিতে দাওয়াত ও প্রস্তুতির মারহালা চলছে। একজন মুমিন হিসেবে আমার দায়িত্ব হকপন্থি জিহাদি কাফেলার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাওয়া এবং প্রয়োজন অনুপাতে শারীরিক ও আর্থিক সামর্থ্য ব্যয় করা। এই বিবেচনায় ভবিষ্যতের জন্য জমা করার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, এখনি জিহাদ ও ইদাদের কাজে অর্থ খরচ করা। হাঁ নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্র না পেলে অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি জিহাদের জন্য অর্থ জমা করাও কাম্য, যাতে নির্ভরযোগ্য সূত্র পাওয়া মাত্র অর্থ ব্যয় করা যায়।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২০-০৫-১৪৪৬ হি.

২৩-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

01 Jan, 11:55


জিহাদের জন্য অর্থ সঞ্চয় করব? না, হজের জন্য?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0/%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2/%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%af-%e0%a6%85%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5-%e0%a6%b8%e0%a6%9e%e0%a7%8d%e0%a6%9a%e0%a6%af%e0%a6%bc/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

31 Dec, 12:17


অপ্রাপ্তবয়স্ক বাচ্চাদেরকে নামাযের কাতারে দাঁড় করানোর পদ্ধতি

প্রশ্ন: অপ্রাপ্তবয়স্ক বাচ্চাদেরকে মসজিদে আনার হুকুম কী এবং তাদেরকে নামাযের কাতারে দাঁড় করানোর পদ্ধতি কী?

-মুইনুদ্দিন

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

حامدا ومصليا ومسلما، أما بعد!

যেসব অপ্রাপ্তবয়স্ক বাচ্চা একদমই ছোট, ভালো মন্দের তমিয বুঝে না, তাদের মসজিদে না আনা কাম্য। পক্ষান্তরে যে বাচ্চাদের কিছুটা বুঝ হয়েছে, তাদেরকে গুরুত্বের সঙ্গে মসজিদে আনবে এবং জামাতের নামাযে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করবে।

এমন বাচ্চারা প্রথম কাতারে ইমামের পেছনে দাঁড়াবে না। ইমামের পেছনে আলেম হাফেজ ও তুলনামূলক বুঝমান লোকেরা দাঁড়াবে। যাতে নামাযে ইমামের কোনো সমস্যা হলে তারা সহযোগিতা করতে পারে।

স্বাভাবিক অবস্থায় অপ্রাপ্তবয়স্ক বাচ্চাদের নিয়ম হলো, তারা বড়দের কাতারের ডানে বা বামে দাঁড়াবে। বড়দের কাতার পূর্ণ হয়ে গেলে পেছনে আলাদা কাতার করে দাঁড়াবে। তবে যদি বিশেষ কোনো কারণ থাকে, যেমন বড় জমায়েতে বাচ্চাকে অভিভাবক থেকে আলাদা করার সুযোগ না থাকে কিংবা বাচ্চা আলাদা দাঁড়ালে দুষ্টুমি অথবা অন্যের নামাযের ক্ষতি করার আশঙ্কা থাকে, তাহলে তাদেরকে বড়দের ফাঁকে ফাঁকে দাঁড় করিয়ে দিবে। এসব ক্ষেত্রে বাচ্চাদের আলাদা দাঁড় না করিয়ে বড়দের মাঝে দাঁড় করানো জরুরি।

বলা বাহুল্য, বর্তমান যামানায় ব্যাপকভাবে বড়দের মধ্যেই নামাযের যথাযথ আজমত ও গুরুত্ব নেই। বাচ্চাদের অবস্থা তো আরও নাযুক। মসজিদ ও নামাযের আদাবের লেহায খুব কমই লক্ষ করা যায়। এ অবস্থায় মক্তব মাদরাসার মতো যেসব প্রশিক্ষণালয়ে বাচ্চাদের উপর সুশৃঙ্খল নিয়ন্ত্রণ থাকে, এমন কিছু ব্যতিক্রম বাদে সর্বত্রই বাচ্চাদের দুষ্টুমির বিষয়টি লক্ষ রাখা জরুরি এবং সে অনুযায়ী নামাযের কাতারে তাদের জায়গা ঠিক করা জরুরি। -সহীহ মুসলিম: ৪৩২; শারহু সুনানি আবি দাউদ, ইবনু রাসলান: ৪/১৭৫; আততাহরিরুল মুখতার, রাফিয়ি (রদ্দুল মুহতার, মাকতাবায়ে রশিদিয়া, কোয়েটা- এর সাথে মুদ্রিত): ২/৩৭৭[1]

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৩-০৫-১৪৪৬ হি.

২৬-১১-২০২৪ ঈ.

[1] صحيح مسلم، ط. إحياء التراث (1/ 323): 122 – (432) عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمْسَحُ مَنَاكِبَنَا فِي الصَّلَاةِ، وَيَقُولُ: «اسْتَوُوا، وَلَا تَخْتَلِفُوا، فَتَخْتَلِفَ قُلُوبُكُمْ، لِيَلِنِي مِنْكُمْ أُولُو الْأَحْلَامِ وَالنُّهَى ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ».

قال الرافعي رحمه الله : قال الرحمتي: ربما يتعين في زماننا إدخال الصبيان في صفوف الرجال، لأن المعهود منهم إذا اجتمع صبيان فأكثر تبطل صلاة بعضهم ببعض، وربما تعدى ضررهم إلى إفساد صلاة الرجال، انتهى. “سندي”. -التحرير المختار للرافعي (المطبوع مع رد المحتار بتحقيق فرفور) : 3/567

شرح سنن أبي داود لابن رسلان (4/ 175): فيه دلالة على أنه إذا كثر الرجال، والصبيان، والنساء، فيقدم الرجال، ثم الصبيان، ثم النساء. هكذا قال أصحابنا وأكثر (6) العلماء. … هكذا إذا كان الغلمان عدد، فإن كان صبي واحد دخل مع الرجال، ولا ينفرد خلف الصف، قاله السبكي، وقيل عند اجتماع الرجال والصبيان يقف بين كل رجلين صبي ليتعلموا منهم الصلاة وأفعالها، والحديث حجة على هذا، قلت: ينبغي إذا كان الصبيان يكثر منهم اللعب إذا اجتمعوا صفًّا بانفرادهم، بأن يقع منهم الضحك، ودفع بعضهم لبعض في السجود، وغير ذلك مما شاهدناه في زماننا فيعمل بالأول. اهـ

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

31 Dec, 12:17


অপ্রাপ্তবয়স্ক বাচ্চাদেরকে নামাযের কাতারে দাঁড় করানোর পদ্ধতি

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9c/%e0%a6%85%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%ac%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%9a%e0%a7%8d%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

30 Dec, 12:00


কাবলাল জুমআ ছুটে গেলে কাযা করা কি জরুরি?

প্রশ্ন: আমি একদিন কাবলাল জুমআ চার রাকাত নামায পড়ছিলাম। প্রথম বৈঠকে থাকাকালেই খুতবা শুরু হয়ে যায়। তাই সালাম ফিরিয়ে নামায থেকে বের হয়ে যাই। নামাযের পর তা আর পুনরায় পড়িনি। জানার বিষয় হলো, এখন কি আমাকে কাবলাল জুমআ চার রাকাতের কাযা করতে হবে?

-আবুল হাসান

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

চার রাকাত বিশিষ্ট সুন্নত শুরু করার পর জামাত কিংবা খুতবা শুরু হয়ে গেলে দুই রাকাত আদায় করেই সালাম ফিরিয়ে দিতে হয় এবং জামাতের পর আবার চার রাকাত আদায় করতে হয়। সুতরাং দুই রাকাত আদায় করে সালাম ফিরিয়ে দেয়াটা নিয়ম সম্মতই হয়েছে। কিন্তু জামাতের পর চার রাকাত আদায় করে নেওয়া উচিত ছিল। তবে তখন যেহেতু আদায় করেননি, এখন আর আদায় করতে হবে না।

কারণ, গ্রহণযোগ্য মত অনুসারে চার রাকাত বিশিষ্ট সুন্নত নামায শুরু করার পর তৃতীয় রাকাতে দাঁড়ানোর আগ পর্যন্ত কেবল দুই রাকাতই ওয়াজিব হয়। প্রশ্নোক্ত সূরতে যেহেতু তৃতীয় রাকাত শুরু করেননি, তাই দুই রাকাতই ওয়াজিব হয়েছিল। আর আপনি তা আদায় করে নিয়েছেন। সুতরাং এখন কোনো ওয়াজিব অনাদায়ী থাকছে না। ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাওয়ার পর যেহেতু সুন্নত কাযা করার নিয়ম নেই, তাই এখন তা কাযা করতে হবে না।

দেখুন: কিতাবুল আসল: ১/৩০৩, মাবসুতে সারাখসী: ১/১৫৯, আল-হিদায়া: ১/১০৮, খুলাসাতুল ফাতাওয়া: ১/১৯১, গুনিয়াতুল মুতামাল্লী: ২/৩৯, হালবাতুল মুজাল্লী: ২/২৪৭, রদ্দুল মুহতার: ২/৫৩-৫৪

فقط. والله تعالى اعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৩-০৫-১৪৪৬ হি.

২৬-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

30 Dec, 12:00


কাবলাল জুমআ ছুটে গেলে কাযা করা কি জরুরি?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%9c%e0%a7%81%e0%a6%ae%e0%a6%86/%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%9c%e0%a7%81%e0%a6%ae%e0%a6%86-%e0%a6%9b%e0%a7%81%e0%a6%9f%e0%a7%87-%e0%a6%97%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%af/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

29 Dec, 12:00


কৃত্রিম প্রজনন ও তা থেকে উপার্জিত অর্থের বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a8/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae/%e0%a6%95%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%ae-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a6%a8-%e0%a6%93-%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%a5%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%89/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

29 Dec, 12:00


কৃত্রিম প্রজনন ও তা থেকে উপার্জিত অর্থের বিধান

প্রশ্ন: কৃত্রিম প্রজনন করার মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ কি হালাল? দলীলসহ জানালে উপকৃত হবো।

- আবদুল মালেক

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله وصحبه أجمعين، أما بعد!

কৃত্রিম প্রজনন একটি ব্যাপক শব্দ যা উদ্ভিদ, চতুষ্পদ জন্তু ও মানুষ সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তবে কৃত্রিম প্রজনন বলতে আমাদের দেশে স্বাভাবিকভাবে গরু ছাগলের মতো হালাল জন্তুর প্রজননকে বুঝানো হয়। আমরা এ আলোকেই উত্তর দিচ্ছি।

কৃত্রিম প্রজননের প্রচলিত পদ্ধতি এমন হয়ে থাকে: আধুনিক পদ্ধতিতে নর পশুর বীর্য গ্রহণ করে বিভিন্ন ধাপে প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীতে উপযুক্ত সময়ে তা মাদী পশুর জরায়ুতে স্থাপন করা হয়।

বীজ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও স্থাপনের উক্ত পদ্ধতিটি যদিও পছন্দনীয় নয়, তথাপি উক্ত প্রক্রিয়ায় প্রজনন করার বিষয়ে ইসলামে নিষেধাজ্ঞা নেই। এমনিভাবে এ কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক নেয়া এবং নর পশুর সংরক্ষিত বীজ ক্রয়-বিক্রয় করাকেও সমকালীন নির্ভরযোগ্য অনেক আলেম জায়েয বলেছেন। তাদের মতে হাদীসে পাল দিয়ে পারিশ্রমিক গ্রহণের যে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, কৃত্রিম প্রজননের প্রক্রিয়াটি সে নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত নয়। আমাদের দৃষ্টিতে এ মতটিই শক্তিশালী ও অগ্রগণ্য। -তিজারাত কে মাসায়েল কা ইনসাইক্লোপিডিয়া, মুফতী ইনআমুল হক কাসেমি: ২/৪২২-৪২৪

তবে কোনো কোনো আলেম বীজ ক্রয়-বিক্রয় নাজায়েয বলেছেন এবং প্রজনন প্রক্রিয়ার পারিশ্রমিক গ্রহণ বৈধ হওয়ার ব্যাপারে সংশয় ব্যক্ত করেছেন। -ফাতাওয়া কাসিমিয়া: ২৪/৪৩৮

সুতরাং সবচেয়ে ভালো হয় যদি সংশয়যুক্ত পেশা গ্রহণ না করে আপনি অন্য কোনো সংশয়মুক্ত হালাল ও সম্মানজনক পেশা গ্রহণ করেন।

তাছাড়া কৃত্রিম প্রজনন একটি অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া। নর পশুর মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় প্রজনন করানোই কাম্য। তার সুযোগ না থাকলে বা কষ্টকর হলে তখন কৃত্রিম প্রজনন প্রক্রিয়ায় যাওয়া উচিত।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৩-০৫-১৪৪৬ হি.

২৬-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

28 Dec, 14:01


বিয়ের পূর্বে ফোনালাপের বিধান

প্রশ্ন: আমার এক বন্ধু। খালাতো বোনের সাথে যার প্রায় সাত আট বছর ধরে সম্পর্ক। এখন পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে ঠিক হয়েছে। জানার বিষয় হলো, তাদের বিয়ে তো পাকাপাকি। সুতরাং এখন কি তারা পরস্পর ফোনালাপ কিংবা দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে?

-মুহাম্মাদ হাফিয

উত্তর:

بسم الله والصلاة والسلام على رسول الله

কথা পাকাপাকির দ্বারা বিয়ে সংঘটিত হয় না, বরং দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ইজাব কবুল দ্বারা বিয়ে সংঘটিত হয়। বিয়ে সংঘটিত হওয়ার আগ পর্যন্ত পরস্পর স্বামী-স্ত্রী বলে গণ্য হয় না, বরং আগের মতোই বেগানা থেকে যায়। -আদ্দুররুল মুখতার: ৩/৯, ২১; রদ্দুল মুহতার: ৩/১১

ইসলামে বেগানা নারী-পুরুষের পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ ও অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা হারাম ও যিনার অন্তর্ভুক্ত। হাদীসে এসেছে,

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا. –صحيح مسلم: 2657 ط. دار إحياء التراث العربي – بيروت

“চোখের যিনা দৃষ্টিপাত করা। দুকানের যিনা শ্রবণ করা। জিহ্বার যিনা কথা বলা। হাতের যিনা স্পর্শ করা। পায়ের যিনা হেঁটে যাওয়া।” -সহীহ মুসিলম: ২৬৫৭

সুতরাং প্রশ্নোক্ত সুরতে তাদের পরস্পর কথা-বার্তা ও দেখা-সাক্ষাৎ কোনোটাই জায়েয হবে না। -আল-মাবসুত: ১০/১৫৩, রদ্দুল ‍মুহতার: ১/৪০৬

উল্লেখ্য, বিয়ের উদ্দেশ্যে পাত্র-পাত্রী একে অপরকে দেখতে পারে, প্রয়োজনে কিছু কথাও বলতে পারে। তবে তা প্রয়োজনের বেশি নয়। এটা সাধারণত এক দু-বারের দ্বারাই সেরে যায়। -বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২৯৪; উমদাতুল কারী: ২০/১১৯

আরও দেখুন: আল-বাহরুর রায়েক: ১/৪৭০, ৩/১৪৪, ১৪৭; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২৯৪; রদ্দুল মুহতার: ১/৪০৬; মাজমাউল আনহুর: ১/২২০; সুনানুত তিরমিযী: ৩/৩৮৯

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৫-০৫-১৪৪৬ হি.

২৮-১১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

25 Dec, 12:00


নিসাবের অধিকারীর কুরবানী ও যাকাত প্রসঙ্গে

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%ab%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a6%be/%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%85%e0%a6%a7%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%80/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

25 Dec, 12:00


নিসাবের অধিকারীর কুরবানী ও যাকাত প্রসঙ্গে

প্রশ্নঃ-১

আমি গত কয়েক বছর ধরে রমযান মাসে যাকাত আদায় করে আসছি, কিন্তু এই বছর রমযান আসার আনুমানিক তিনমাস আগে জমানো টাকাগুলো দিয়ে আমরা ১২ জন অফিস সহকর্মী মিলে ফ্ল্যাট কিংবা বিল্ডিং করার উদ্দেশ্যে ছয় গোন্ডা জমি কিনে ফেলি। এতে আমাদের জন প্রতি ৫৭০০০০ টাকা খরচ হয়। এখন ওই জমির যে পরিমাণ অংশ প্রত্যেকের ভাগে পড়বে, সেই পরিমাণ জমির মূল্য যদি নেসাব পরিমাণ হয়, তাহলে আমাকে কি এই বছর কুরবানী দিতে হবে?

প্রশ্নঃ-২

আমি কয়েকজনের কাছে ৪৪ হাজার টাকা পাওনা আছি। যার মধ্যে ২৪ হাজার টাকার মেয়াদ এক বছর কিংবা তারও বেশি হবে। বাকি টাকাগুলো ধার দিয়েছি মাত্র চার মাস হবে। আমার এটিএম বুথে হাজার দশেক টাকা আছে। এদিকে আট হাজার টাকার মতো আমি ঋণী আছি। বুথের টাকাগুলোর মেয়াদ চার মাস। ওগুলো মাসিক বেতনের সাথে প্রয়োজন অনুযায়ী খরচের জন্য রাখা হয়েছে। এখন আমার জানার বিষয় হলো, আমার ওপর কী যাকাত আসবে?

-মুহাম্মাদ রাসেল

উত্তরঃ-১

কার্যত ওই জমিটির ব্যবহার শুরু করার আগ পর্যন্ত তা কুরবানীর নেসাব গণ্য হবে এবং এ কারণে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। -দেখুন: বাদায়েউস সানায়ি: ৫/৬৪; তাতারখানিয়্যাহ: ৩/৪৫৪; ফাতাওয়া বায়্যিানাত: ৪/৫৬৭; আহসানুল ফাতাওয়া: ৭/৫০৬

উত্তরঃ-২

আপনি যেহেতু নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক এবং নেসাবের উপর এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, তাই যেদিন আপনার যাকাত বর্ষ পূর্ণ হবে, সেদিন আপনার হাতে থাকা সকল নগদ অর্থ, ব্যাংকে থাকা অর্থ এবং মানুষের কাছে পাওনা অর্থ, সবগুলোর যাকাত দিতে হবে। এমনকি যে অর্থের উপর এক বছর অতিক্রান্ত হয়নি এবং যেটা খরচের জন্য রেখেছেন, সেটারও যাকাত দিতে হবে। শুধু ঋণের ৮০০০ টাকার যাকাত দিতে হবে না। -সহীহ বুখারী: ১৪০৫; জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৩/২২৭; আলবাহরুর রায়িক: ২/২২২; শুরুম্বুলালিয়্যাহ, হাশিয়াতুত দুরার: ১/৪৬৮; রদ্দুল মুহতার: ২/২৬২; তাওয়ালিউল আনওয়ার, মাখতুত

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-১১-১৪৪৪ হি.

১৮-০৬-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

24 Dec, 10:42


কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে সংগৃহীত অর্থ অন্যত্র ব্যয় করা যাবে?

প্রশ্নঃ-১

কেউ নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানে দেওয়ার জন্য তার যাকাত, ফিতরা কিংবা মান্নত কারও কাছে অর্পন করলে তা কি অন্য কোনও জায়গায় খরচ করা যাবে?

-ইমাম হুসাইন

প্রশ্নঃ-২

কোনো মাদরাসার কথা বলে সাদাকা সংগ্রহ করে তা কি জিহাদের ফাণ্ডে দেওয়া যাবে?

-তামিম

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

না, অন্য কোনও জায়গায় খরচ করা যাবে না। নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানেই খরচ করতে হবে। অনুরূপ কোনও মাদরাসার কথা বলে সাদাকা সংগ্রহ করে তা জিহাদের ফাণ্ডে দেওয়া যাবে না।-ফতোয়া শামী, দারুল ফিকর: ২/২৬৯

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-১১-১৪৪৪ হি.

১৮-০৬-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

24 Dec, 10:42


কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে সংগৃহীত অর্থ অন্যত্র ব্যয় করা যাবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be/%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a7%8b-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b7%e0%a7%8d%e0%a6%a0%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%b8/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

23 Dec, 12:09


ফসলের উশর কি যেকোনো দীনী কাজে দেওয়া যাবে?

প্রশ্নঃ ফসলের উশর কি যেকোনো দীনী কাজে দেওয়া যাবে?

-মুহাম্মাদ কিরন

উত্তরঃ

যাকাত ও উশরের খাত একই। যাকাতের ন্যায় উশরও যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত অর্থাৎ নেসাবের মালিক নয়, এমন দরিদ্র মুসলিমকে কোনও বিনিময় ছাড়া মালিক বানিয়ে দিতে হবে। তাই সরাসরি জিহাদ অথবা অন্য কোনও দীনী কাজে উশর দেওয়া যাবে না। অবশ্য যদি মুজাহিদ কিংবা দীনী কাজের কর্মীদের মধ্যে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তি থাকে, তাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে উশর দেওয়া যাবে। এছাড়া কোনো সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানে দিলে নিশ্চিত হয়ে দিতে হবে, তাদের কাছে যাকাতের খাত আছে কি না। থাকলে তাদের বলে দিতে হবে, এটা উশরের অর্থ, যাতে তারা যথাস্থানে ব্যয় করতে পারেন।-বাদায়েউস সানায়ে: ২/৭৫; ফাতাওয়া শামী: ২/৩৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১/১৯০; দুরারুল হুক্কাম: ১/১৮৯; জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৩/৩৬৯; মওসুওয়্যাহ ফিকহিয়্যাহ: ২৩/৩২২-৩২৩

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-১১-১৪৪৪ হি.

১৮-০৬-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

23 Dec, 12:09


ফসলের উশর কি যেকোনো দীনী কাজে দেওয়া যাবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%ab%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a6%be/%e0%a6%ab%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%89%e0%a6%b6%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%af%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a7%8b-%e0%a6%a6%e0%a7%80%e0%a6%a8%e0%a7%80-%e0%a6%95/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

22 Dec, 12:01


পাসপোর্ট চেকিং কালে নিকাব খুলতে বললে কী করণীয়?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%aa%e0%a7%8b%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9f-%e0%a6%9a%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%82-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

22 Dec, 12:01


পাসপোর্ট চেকিং কালে নিকাব খুলতে বললে কী করণীয়?

প্রশ্নঃ

বিমানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে এয়ারপোর্টে পাসপোর্ট চেকিং কালে নিকাব খুলতে বলা হলে কী করণীয়? আমি উমরার সময় বাংলাদেশের এয়ারপোর্টে এমন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছিলাম। ইমিগ্রেশন কাউন্টারে পুরুষ পুলিশের সামনে নিকাব খুলে চেহারা দেখাতে হয়। সেখানে কোনও মহিলা পুলিশ নেই। সৌদি আরবে যেমন থাকে। তাই এক্ষেত্রে করণীয় কী? এছাড়া পাসপোর্টে তো ছবি দেওয়া আছে। আল্লাহ আমাকে মাফ করুন, ছবি কান খুলে তোলার নিয়ম। তাই ওভাবে তুলতে হয়েছে। পাসপোর্ট জমা দিলেও বেপর্দা হতে হচ্ছে। এখন জানার বিষয় হলো, এভাবে হজ কিংবা উমরাতে যাওয়ার বিধান কী?

-উম্মে আব্দুর রাহমান

উত্তরঃ

সরকারের জন্য এমন নিয়ম করা অন্যায়, যাতে একজন নারীর ছবি কিংবা চেহারা পরপুরুষকে প্রদর্শন করতে হয়। কারণ তারা চাইলে এটা ছাড়াও নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব। তথাপিও সরকার এমন নিয়ম করলে, মুসলিমদের জন্য এই ওজরে হজ-উমরা বন্ধ করার সুযোগ নেই। কারও সামর্থ্য থাকলে এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া থেকে বাঁচার চেষ্টা করবেন। সামর্থ্য না থাকলে তিনি এভাবেই হজ-উমরা পালন করবেন এবং অক্ষমতার জন্য ইস্তেগফার করবেন। এই অন্যায়ের দায়ভার মূলত আইন প্রণয়নকারী ও প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের উপর বর্তাবে। হজ, উমরা ও নফল, ফরয সবগুলোর বিধানই এক্ষেত্রে অভিন্ন।

অবশ্য এমন আশঙ্কা আগে থেকে জানা থাকলে চেহারায় সজ্জা গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন।-তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম: ৪/১৪২; জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৭/২৫৬-২৫৭; কিতাবুন নাওয়াযিল: ১৬/৪৮৮-৪৮৯; ফাতাওয়া কাসিমিয়্যাহ: ২৫/৫৬২-৫৬৪; ফাতাওয়া বাইয়িনাত: ৪/৪১২-৪১৫; দারুল ইফতা, জামিয়া ইসলামিয়্যাহ বিন্নুরী টাউন, করাচী, ফাতওয়া নং: ১৪৩৮০৯২০০০২৫

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২২-০৭-১৪৪৪ হি.

১৪-০২-২০২৩ ইং

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

21 Dec, 12:02


একাধিকবার সমকামিতার কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তির করণীয় কী?

প্রশ্নঃ

অপ্রাপ্ত বয়সে আমি কঠিন কিছু পরিস্থিতির সম্মুখীন হই। যার ফলে প্রাপ্ত বয়সে পৌঁছার পর সমকামিতার মতো জঘন্য গুনাহে জড়িয়ে পড়ি। ভার্সিটিতে গিয়েও এ গুনাহ ছাড়তে পারিনি। এটি খুবই জঘন্য একটি গুনাহ, তা জানা সত্ত্বেও একাধিক বার তাতে লিপ্ত হয়েছি। বর্তমানে আমি নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি এবং তাওবা করেছি, একাজ আমি আর কখনও করবো না। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে, জেনে বুঝে এমন জঘন্য কাজ বারবার করেছি, আল্লাহ কি আমাকে ক্ষমা করবেন? আমি কীভাবে আল্লাহর ক্ষমা পাবো? আমি চাই, আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার উপর সন্তুষ্ট হয়ে যান। এর জন্য আমি কী করতে পারি?

- আব্দুল্লাহ ইবরাহীম

উত্তরঃ

বান্দা যখন নিজের ভুল বুঝতে পেরে গুনাহের পথ থেকে ফিরে আসে, আল্লাহর কাছে লজ্জিত হয়ে তাওবা করে এবং আর কখনও গুনাহ করবে না বলে সঙ্কল্প করে, আল্লাহ তাআলা তার পিছনের সব গুনাহ মাফ করে দেন।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

وَهُوَ الَّذِي يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَعْفُو عَنِ السَّيِّئَاتِ وَيَعْلَمُ مَا تَفْعَلُونَ. -الشورى: 25

“আর তিনিই নিজ বান্দাদের তাওবা কবুল করেন এবং সব গুনাহ মাফ করে দেন। আর যা কিছু তোমরা করো, (সব) তিনি জানেন।” –সূরা শূরা ৪২:২৫

অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন,

قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ. –الزمر 53

“আপনি বলে দিন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজ সত্তার উপর সীমালঙ্ঘন করেছো, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন। নিশ্চয় তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” -সূরা যুমার ৩৯:৫৩

এক হাদীসে এসেছে,

عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « كَيْفَ تَقُولُونَ بِفَرَحِ رَجُلٍ انْفَلَتَتْ مِنْهُ رَاحِلَتُهُ تَجُرُّ زِمَامَهَا بِأَرْضٍ قَفْرٍ لَيْسَ بِهَا طَعَامٌ وَلاَ شَرَابٌ وَعَلَيْهَا لَهُ طَعَامٌ وَشَرَابٌ فَطَلَبَهَا حَتَّى شَقَّ عَلَيْهِ ثُمَّ مَرَّتْ بِجِذْلِ شَجَرَةٍ فَتَعَلَّقَ زِمَامُهَا فَوَجَدَهَا مُتَعَلِّقَةً بِهِ ». قُلْنَا شَدِيدًا يَا رَسُولَ اللَّهِ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « أَمَا وَاللَّهِ لَلَّهُ أَشَدُّ فَرَحًا بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ مِنَ الرَّجُلِ بِرَاحِلَتِهِ ». -صحيح مسلم للنيسابوري (8/ 93)، الرقم: 7135

“বারা বিন আযিব রাযিয়‌াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের জিজ্ঞেস করলেন, বলো তো, ঘাস-পানি শূন্য এক মরু ময়দানে এক ব্যক্তির বাহনটি ছুটে গেল। সেই মরুভূমিতে না খাওয়ার মতো কিছু আছে আর না পানি আছে। তার বাহনটির উপর তার খাবারও ছিলো, পানিও ছিলো। লোকটি বাহনটি খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়লো (কিন্তু পেলো না)।

এরপর ঘটনা ঘটলো, বাহনটি একটি গাছের গোড়ার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো, তখন তার লাগাম তাতে আটকে গেল। লোকটি গিয়ে বাহনটিকে তাতে আটকা পেয়ে গেল। বলো তো, লোকটির আনন্দের কী হাল হবে? আমরা উত্তর দিলাম, সে খুবই খুশি হবে ইয়া রাসূলাল্লাহ। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, শোনো, আল্লাহর কসম, এই লোক তার বাহন ফিরে পেয়ে যেমন খুশি হয়, বান্দার তাওবায় আল্লাহ এর চেয়েও বেশি খুশি হন।” –সহীহ মুসলিম: ৭১৩৫

অন্য একটি হাদীসে কুদসীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

قَالَ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى: يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ مَا دَعَوْتَنِي وَرَجَوْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ عَلَى مَا كَانَ فِيكَ وَلاَ أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوبُكَ عَنَانَ السَّمَاءِ ثُمَّ اسْتَغْفَرْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ، وَلاَ أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ إِنَّكَ لَوْ أَتَيْتَنِي بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطَايَا ثُمَّ لَقِيتَنِي لاَ تُشْرِكُ بِي شَيْئًا لأَتَيْتُكَ بِقُرَابِهَا مَغْفِرَةً. هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ. -سنن الترمذي ت بشار (5/ 440)، الرقم: 3540، أبواب الدعوات، بَاب فِي فَضْلِ التَّوْبَةِ وَالِاسْتِغْفَارِ وَمَا ذُكِرَ مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ بِعِبَادِهِ

“আল্লাহ তা‌আলা বলেন, হে আদম সন্তান! যতক্ষণ তুমি আমার কাছে দোয়া করতে থাকবে, আমার কাছে আশা করতে থাকবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করতে থাকবো; তোমার গুনাহ যতই হোক। কোনও পরোয়া করবো না। হে আদম সন্তান! যদি তোমার গুনাহ আসমান সমানও হয়ে যায়, তারপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিবো। কোনও পরোয়া করবো না। হে আদম সন্তান! যদি তুমি জমিন ভরা গুনাহ করো, তারপর আমার সঙ্গে কোনও কিছু শরীক না করে আমার সামনে উপস্থিত হও; আমি জমিন ভরা ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে হাজির হবো।” -জামে তিরমিযী: ৩৫৪০

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

21 Dec, 12:02


অতএব, আপনি নিরাশ হবেন না। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া বড় গুনাহ। কিছুতেই তাঁর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া যাবে না। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

{إِنَّهُ لَا يَيْأَسُ مِنْ رَوْحِ اللَّهِ إِلَّا الْقَوْمُ الْكَافِرُونَ } [يوسف: 87]

“আল্লাহর রহমত হতে একমাত্র কাফের সম্প্রদায়ই নিরাশ হয়।” –সূরা ইউসুফ ১২:৮৭

সত্য দিলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখুন, সত্যিকার তাওবা করলে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই সব গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন।

এক হাদীসে এসেছে,

عن أبي عبيدة بن عبد الله عن أبيه، قال: قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم -: “التائب من الذنب كمن لا ذنب له. – سنن ابن ماجه ت الأرنؤوط (5/ 320)، الرقم: 4250، قال المحققون: حديث محتمل للتحسين بشواهده. اهـ

“গুনাহ থেকে তাওবাকারী ওই ব্যক্তির মতো, যার কোনও গুনাহ নেই।” –সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪২৫০

পাশাপাশি বেশি নেক আমল করতে থাকুন। সালাত, সাওম, যিকির, তিলাওয়াত, দান-সাদাকা যথাসাধ্য বেশি বেশি করতে থাকুন এবং আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করতে থাকুন।

মন্দ সাথি-সঙ্গীদের থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকুন। পূর্বেকার কোনো চিন্তা-ভাবনা মাথায় আসলে কোনো পাত্তা দিবেন না। পাশাপাশি নেক ও বুযুর্গ ব্যক্তিদের সাহচর্য অবলম্বন করুন। নেক জীবন লাভের পথে এটি অনেক বড় সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৭-১১-১৪৪৪ হি.

২৮-০৫-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

21 Dec, 11:59


একাধিকবার সমকামিতার কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তির করণীয় কী?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a7%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%ac%e0%a7%80%e0%a6%b0/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

20 Dec, 13:54


স্বেচ্ছায় মীরাসের অংশ ত্যাগ করলে পরবর্তীতে কি তা দাবি করা যাবে?

প্রশ্নঃ

কেউ স্বেচ্ছায় নিজের মীরাসের অংশ ছেড়ে দেয়ার পর পরবর্তীতে কি সে নিজে বা তার উত্তরাধিকারীরা তা দাবি করতে পারবে?

নাম- হাম্মাদ

উত্তরঃ

الحمد لله وسلام على عباده الذين اصطفى، أما بعد:

মীরাস বণ্টন করে বুঝে নেয়ার আগে নিজের প্রাপ্য অংশের দাবি স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিলেও তা কার্যকর হয় না। তাই পরবর্তীতে নিজে বা তার উত্তরাধিকারীরা তা দাবি করতে পারবে।

আব্দুল হাই লাখনৌভি রহিমাহুল্লাহ (১৩০৪ হি.) বলেন,

صرّحوا بأنّ الإرث لا يسقطُ بالإسقاط، بل هو جبري، حتى لو قال وارثٌ بعد موت مورثه: لا آخذ حصّتي من التركة، ثمّ أدعاها صحّت دعواه، صرّح به في ((تنقيح الفتاوي الحامدية)) وغيره. –عمدة الرعاية بتحشية شرح الوقاية (5/ 157)، كتاب العتاق، الناشر : مركز العلماء العالمي للدراسات وتقنية المعلومات

“আইম্মায়ে কেরাম সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে, দাবি ছেড়ে দেয়ার দ্বারা উত্তরাধিকার বাতিল হয় না। … তাই কেউ মারা যাওয়ার পর যদি তার কোনো ওয়ারিস বলে, ‘মীরাসের সম্পদ থেকে আমি আমার প্রাপ্য অংশ নিবো না’, কিন্তু এরপর এসে আবার তার অংশ দাবি করে, তাহলে তার দাবি সহীহ।” –উমদাতুর রিআয়া: ৫/১৫৭

উল্লেখ্য, কোনো ওয়ারিস যদি নিজের অংশ না নিয়ে অন্য ওয়ারিসদের বা তাদের কাউকে দিয়ে দিতে চায়, তাহলে এর সহীহ পদ্ধতি হচ্ছে, প্রথমে সম্পদ বণ্টন করে নিজের প্রাপ্ত অংশ বুঝে নিবে। এরপর যাকে বা যাদেরকে দিতে চায় তাদের বুঝিয়ে দিবে। এভাবে বুঝিয়ে দিলে পরবর্তীতে আর দাবি করতে পারবে না।

একইভাবে কেউ যদি মীরাসের কোনো অংশ গ্রহণ করে সমঝোতার ভিত্তিতে বাকি অংশের দাবি ছেড়ে দেয়, তাহলেও সে পরবর্তীতে কোনো অংশ দাবি করতে পারবে না; চাই তার গৃহীত অংশ যে পরিমাণই হোক না কেন।

-আরও দেখুন রদ্দুল মুহতার: ৫/৬৯২; শারহুল মাজাল্লাহ্-খালিদ আতাসি: ৩/৩৮৮; ইমদাদুল ফাতাওয়া: ১০/২৫, ৭/৪৯৪

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-১১-১৪৪৪ হি.

১৮-০৬-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

20 Dec, 13:54


স্বেচ্ছায় মীরাসের অংশ ত্যাগ করলে পরবর্তীতে কি তা দাবি করা যাবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%89%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%a7%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0/%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%9a%e0%a7%8d%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%ae%e0%a7%80%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%85%e0%a6%82%e0%a6%b6-%e0%a6%a4%e0%a7%8d/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

19 Dec, 12:00


অসহায় নিকট আত্মীয়কে দান করার দ্বারা কি জিহাদের খাতে দানের হক আদায় হবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0/%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2/%e0%a6%85%e0%a6%b8%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%9f-%e0%a6%86%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%80%e0%a7%9f%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%95/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

19 Dec, 12:00


অসহায় নিকট আত্মীয়কে দান করার দ্বারা কি জিহাদের খাতে দানের হক আদায় হবে?

প্রশ্নঃ

আমার একজন বিধবা নিকট আত্মীয় আছেন, যার আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন। বর্তমানে আমি জিহাদের পথে দান না করে সেই অর্থ আমার সেই বিধবা আত্মীয়কে দিতে পারবো কিনা? তাকে দিলে আমার জিহাদের খাতে দানের ফরয আদায় হবে কিনা? অথবা এ অবস্থায় আমার কী করণীয়?

বর্তমানে এদেশে চলমান দাওয়াহ ও ইদাদ পর্যায়ের জিহাদে প্রত্যেক সামর্থ্যবানের সামর্থ্য অনুযায়ী দান সাদাকার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কুরআন হাদীসের আলোকে সামগ্রিকভাবে একটা ধারণা দিলে খুব উপকৃত হতাম।

প্রশ্নকারী- বাশির

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد:

জিহাদে সম্পদ ব্যয় সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু কথা

জিহাদী কার্যক্রমের মূল উপাদান দুটি। জান ও মাল। সুষ্ঠুভাবে জিহাদ করার জন্য অর্থ সম্পদের অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য। বর্তমান যুগে জিহাদের জন্য সম্পদের প্রয়োজন আরও তীব্র। সমর বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিতে বর্তমানে জিহাদের জন্য অর্থের প্রয়োজন ঠিক ততটা, যতটা প্রয়োজন একজন মানুষের সচল থাকার জন্য রক্তের।

তাই জিহাদে দান করার ফযীলত কুরআন হাদীসের অসংখ্য জায়গায় বিবৃত হয়েছে। পবিত্র কুরআনে যত জায়গায় জিহাদের কথা এসেছে, অধিকাংশ জায়গাতেই জানের পাশাপাশি মাল দ্বারা জিহাদের কথা বলা হয়েছে। বরং অধিকাংশ জায়গায় মালের কথা আগে এসেছে। ইরশাদ হচ্ছে,

وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ (سورة التوبة: 41)

“তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো নিজেদের মাল ও জান দিয়ে। এ-ই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানো।” -সূরা তাওবা ০৯: ৪১

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম আবু বকর জাসসাস রহিমাহুল্লাহ বলেন,

وقوله وجاهدوا بأموالكم وأنفسكم في سبيل الله فأوجب فرض الجهاد بالمال والنفس جميعا فمن كان له مال وهو مريض أو مقعد أو ضعيف لا يصلح للقتال فعليه الجهاد بماله بأن يعطيه غيره فيغزو به. اهـ (احكام القران للجصاص: 3/151 ط. دار الكتب العلمية)

“(উক্ত আয়াতে) আল্লাহ তাআলা জান ও মাল উভয়টি দ্বারা জিহাদ করাকে ফরয করেছেন। যার মাল আছে, কিন্তু সে অসুস্থ কিংবা পক্ষাঘাতগ্রস্ত অথবা এমন দুর্বল যে জিহাদ করার শক্তি নেই, তাহলে তার জন্য মাল দ্বারা জিহাদ করা জরুরি। এর পদ্ধতি হলো, সে তার মাল কাউকে দিবে, সে ব্যক্তি উক্ত মাল নিয়ে জিহাদ যাবে।”-আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস: ৩/১৫১

হাদীসে এসেছে,

عن خريم بن فاتك قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من أنفق نفقة في سبيل الله كتبت له بسبع مائة ضعف. رواه الإمام الترمذي: 1625، ط. بشار عواد معروف. قال الإمام الترمذي رحمه الله تعالى: وهذا حديث حسن. و حسن اسناده الشيخ شعيب الأرنؤوط في تعليقه على مسند احمد و صححه الشيخ الألباني في صحيح وضعيف سنن الترمذي (رحمهما الله تعالى.)

“খুরাইম ইবনে ফাতিক রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় কোনো কিছু ব্যয় করবে, এর বিনিময়ে তাকে সাতশ গুণ সাওয়াব দান করা হবে।” –সুনানে তিরমিযী: ১৬২৫

অপর হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، دَعَاهُ خَزَنَةُ الجَنَّةِ، كُلُّ خَزَنَةِ بَابٍ: أَيْ فُلُ هَلُمَّ “، قَالَ أَبُو بَكْرٍ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، ذَاكَ الَّذِي لاَ تَوَى عَلَيْهِ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنِّي لَأَرْجُو أَنْ تَكُونَ مِنْهُمْ». رواه البخاري: 2841و مسلم: 1027، ترقيم محمد فؤاد عبد الباقي)

قال الحافظ ابن حجر العسقلاني رحمه الله تعالى: وقوله: “زوجين” أي شيئين من أي نوع كان مما ينفق، والزوج يطلق على الواحد وعلى الاثنين وهو هنا على الواحد جزما. اهـــ (فتح الباري: 6/49 ط. دار الفكر) وقال في موضع اخر: فصل ز و” قوله: “من أنفق زوجين” أي شيئين من كل شيء ويطلق الزوج على الصنف والنوع وعلى كل مقترنين ونقيضين وشبيهين. اهــــ (فتح الباري: 1/128 ط. دار الفكر)

“আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় দুটি করে কোনো জিনিস ব্যয় করবে, জান্নাতের প্রত্যেক দরজার প্রহরী তাঁকে আহ্বান করবে। (তারা বলবে), হে অমুক! এদিকে আসো। আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাহলে তো তার কোনও পেরেশানি নেই!’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমি আশা করি, তুমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” –সহীহ বুখারী: ২৮৪১, সহীহ মুসলিম: ১০২৭

মুজাহিদের আসবাব সরবরাহ করা, তার অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের দেখাশোনা করাকেও জিহাদ বলা হয়েছে। হাদীসে এসেছে,

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

19 Dec, 12:00


قَالَ بُسْرُ بْنُ سَعِيدٍ: حَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ خَالِدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ جَهَّزَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَقَدْ غَزَا، وَمَنْ خَلَفَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِخَيْرٍ فَقَدْ غَزَا. رواه البخاري: 2843 و مسلم: 1895، ترقيم محمد فؤاد عبد الباقي

“বুছর ইবনে সাঈদ বলেন, আমার নিকট যায়েদ ইবনে খালেদ রাযিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদকারীর আসবাবপত্র সরবরাহ করলো, সে যেন নিজেই জিহাদ করলো। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে কোন জিহাদকারীর পরিবার-পরিজনকে উত্তমরূপে দেখাশোনা করলো, সেও যেন নিজে জিহাদ করলো।” –সহীহ বুখারী: ২৮৪৩, সহীহ মুসলিম: ১৮৯৫

আপনার প্রশ্নের উত্তর:

বর্তমানে সামর্থ্য অনুযায়ী জিহাদে দান করা ফরয। আর গরীব আত্মীয়ের যদি জীবন ধারণের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে তাকে দান করাও ফযীলতপূর্ণ, তবে তা নফল। যতক্ষণ পর্যন্ত নফল ও ফরয একসাথে চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়, ততক্ষণ উভয়টির উপরই আমল করবেন। আর যখন নফল পালন করতে গেলে ফরয ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হয়, তখন নফল ছেড়ে ফরয আদায়ের চেষ্টা করবেন।

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যেহেতু উভয়টা একসাথে চালিয়ে নেওয়া সম্ভব, তাই আপনি সামর্থ্য অনুযায়ী জিহাদেও দান করুন। গরীব আত্মীয়কেও দান করুন।

তবে প্রশ্নে যে নিকট আত্মীয়ের কথা বললেন, তিনি যদি আপনার অধীনস্থ হন এবং তার ভরণ পোষণ আপনার উপর শরয়ীভাবে ওয়াজিব হয়ে থাকে, তাহলে প্রথমে তার ভরণ পোষণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তারপর যতটুকু সামর্থ্য হয় জিহাদেও দান করার চেষ্টা করবেন।

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-১১-১৪৪৪ হি.

১৮-০৬-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

18 Dec, 12:51


“হারাম মাল সাদাকা করা গুনাহের কাজ। … বরং আমাদের মাযহাবের কোনো কোনো ইমাম তো বলেছেন, সাওয়াবের নিয়তে হারাম মাল সাদাকা করলে কাফের হয়ে যাবে। গরীব লোকটি (যাকে এ হারাম দান করা হয়েছে) হারামের বিষয়টি জানার পরও যদি দাতার জন্য দোয়া করে, তাহলে সেও কাফের হয়ে যাবে।”–মিরকাত: ৫/১৮৯৮

বুঝাই যাচ্ছে, বিষয়টি কত ভয়াবহ যে, ক্ষেত্র বিশেষে তা ঈমান নষ্টের দিকেও গড়াতে পারে। আল্লাহ তাআলা হেফাযত করুন।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৭-১১-১৪৪৪ হি.

১৭-০৬-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

18 Dec, 12:51


জিহাদের কাজে ব্যয়ের নিয়তে খতমে কুরআনের টাকা নেওয়ার বিধান

প্রশ্ন:

আমরা জানি, মৃত ব্যক্তির জন্য কুরআন শরীফ খতম করে টাকা নেওয়া জায়েয নেই। তবে কেউ যদি এই নিয়তে টাকা নেয় যে, সে তা নিজে খরচ করবে না; বরং জিহাদের কাজে ব্যয় করবে। তাহলে কি তার জন্য এভাবে টাকা নেওয়া জায়েয হবে?

প্রশ্নকারী- আবরার



উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

حامدا ومصليا ومسلما

না, জায়েয হবে না। জিহাদ বা অন্য কোনো নেক কাজে ব্যয় করার উদ্দেশ্যে হলেও এ ধরনের খতম পড়ে টাকা নেওয়া জায়েয হবে না।

সাদাকা কবুল হওয়ার শর্ত হলো, তা হালাল সম্পদ থেকে হতে হবে। হারাম কামাই করে সাদাকা করলে সাওয়াব তো হবেই না, উল্টো হারাম কামাই এবং সাওয়াবের নিয়তে হারাম সাদাকার কারণে দ্বিগুণ গুনাহ হবে।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ لاَ يَقْبَلُ إِلاَّ طَيِّبًا. -صحيح مسلم (دار الجيل): 3\85، الرقم: 2393، كتاب الزكاة، باب قبول الصدقة من الكسب الطيب وتربيتها

“হে লোক সকল, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা পবিত্র। তিনি কেবল পবিত্র বস্তুই কবুল করেন।” –সহীহ মুসলিম: ২৩৯৩

আরও ইরশাদ করেন,

لاَ تُقْبَلُ صَلاَةٌ بِغَيْرِ طُهُورٍ وَلاَ صَدَقَةٌ مِنْ غُلُولٍ. -صحيح مسلم (دار الجيل): 1/ 140، الرقم: 557

“পবিত্রতা ছাড়া নামায কবুল হয় না। খিয়ানতের মাল থেকে সাদাকা কবুল হয় না।”–সহীহ মুসলিম: ৫৫৭

অন্য হাদীসে ইরশাদ করেন,

“من جمع مالا حراما، ثم تصدق به، لم يكن له فيه أجر، وكان إصره عليه”. -صحيح ابن حبان ت الأرنؤوط (8\153، الرقم: 3367)، ذِكْرُ الْبَيَانِ بِأَنَّ الْمَالَ إِذَا لَمْ يَكُنْ بِطَيِّبٍ أُخِذَ مِنْ حِلِّهِ لَمْ يُؤْجَرِ الْمُتَصَدِّقُ بِهِ عَلَيْهِ، وقال الشيخ شعيب: إسناده حسن. اهـ

“যে ব্যক্তি হারাম সম্পদ উপার্জন করবে, তারপর তা সাদাকা করবে, সে তাতে কোনও সাওয়াব তো পাবেই না, উল্টো এর গুনাহ তার ঘাড়ে বর্তাবে।” –সহীহ ইবনে হিব্বান: ৩৩৬৭

ভালো নিয়তের দ্বারা মুবাহ ও জায়েয বিষয় সাওয়াবে পরিণত হয়। এমনিভাবে সাওয়াবের কাজের সাওয়াব ভালো নিয়তের দ্বারা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু হারাম বিষয়, ভালো নিয়তের দ্বারা হালাল কিংবা সাওয়াবে পরিণত হয় না।

ইমাম গাযালী রহিমাহুল্লাহ (৫০৫ হি.) বলেন,

الطاعة تنقلب معصية بالقصد والمباح ينقلب معصية وطاعة بالقصد فأما المعصية فلا تنقلب طاعة بالقصد أصلا. -إحياء علوم الدين (دار المعرفة): 4/370، كتاب النية والإخلاص والصدقة، بيان تفصيل الأعمال المتعلقة بالنية

“নেক কাজ (বদ) নিয়তের কারণে গুনাহে পরিণত হয়। মুবাহ কাজ কখনও (বদ) নিয়তের কারণে গুনাহে, আবার কখনও (ভালো নিয়তের কারণে) নেক কাজে পরিণত হয়। কিন্তু গুনাহের কাজ কখনোই (ভালো) নিয়তের কারণে নেক কাজে পরিণত হয় না।” –ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন: ৪/৩৭০

তিনি বিষয়টিকে আরও বিশদ ব্যাখ্যা করে বলেন,

اعلم أن الأعمال وإن انقسمت أقساما كثيرة …فهي ثلاثة أقسام معاص وطاعات ومباحات القسم الأول المعاصي وهي لا تتغير عن موضعها بالنية فلا ينبغي أن يفهم الجاهل ذلك من عموم قوله عليه السلام إنما الأعمال بالنيات فيظن أن المعصية تنقلب طاعة بالنية كالذي يغتاب إنسانا مراعاة لقلب غيره أو يطعم فقيرا من مال غيره أو يبني مدرسة أو مسجدا أو رباطا بمال حرام وقصده الخير فهذا كله جهل والنية لا تؤثر في إخراجه عن كونه ظلما وعدوانا ومعصية بل قصده الخير بالشر على خلاف مقتضى الشرع شر آخر فإن عرفه فهو معاند للشرع وإن جهله فهو عاص بجهله إذ طلب العلم فريضة على كل مسلم. -إحياء علوم الدين (دار المعرفة): 4/368-369، كتاب النية والإخلاص والصدقة، بيان تفصيل الأعمال المتعلقة بالنية

“শোনো, আমল যদিও অনেক ভাগে বিভক্ত … কিন্তু (মৌলিকভাবে) তা তিন প্রকারে সীমাবদ্ধ। ক. গুনাহ; খ. নেক; গ. মুবাহ।

প্রথম প্রকার হলো, গুনাহ। এই প্রকারের আমলসমূহ (ভালো) নিয়তের কারণে নিজের বৈশিষ্ট্য থেকে পরিবর্তিত হয় না। … যেমন কেউ কোন ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করার জন্য অপর কারও গীবত করলো। অন্যের মাল থেকে কোনো গরীবকে খানা খাওয়ালো। হারাম মাল দ্বারা মসজিদ, মাদরাসা অথবা সরাইখানা বানিয়ে দিলো। এ সব ক্ষেত্রে তার নিয়ত ভালো। কিন্তু বাস্তবে এর সবটাই মূর্খতা। (ভালো) নিয়ত এ কাজগুলোকে জুলুম, সীমালঙ্ঘন ও গুনাহের গণ্ডি থেকে বের করে দিবে না। বরং শরীয়তের নিয়মের বিপরীতে মন্দ কাজের দ্বারা ভালো নিয়ত করা আরেকটি মন্দ কাজ। বিষয়টি বুঝার পরও তা করে থাকলে তো সে ‘মুআনিদ’ তথা জেনে বুঝে শরীয়ত প্রত্যাখ্যানকারী গণ্য হবে। অজ্ঞতাবশত করে থাকলে (অন্তত) অজ্ঞতার কারণে গুনাহগার হবে। কারণ (প্রয়োজন পরিমাণ) ইলম অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয।”–ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন: ৪/৩৬৮-৩৬৯

মোল্লা আলী কারী রহিমাহুল্লাহ (১০১৪ হি.) বলেন,

التصدق بالمال الحرام سيئة، ولا يمحو الله الأعمال السيئات بالسيئات، بل قال بعض علمائنا: من تصدق بمال حرام ورجا الثواب كفر، ولو عرف الفقير ودعا له كفر. –مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح (5/ 1898)

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

18 Dec, 12:51


জিহাদের কাজে ব্যয়ের নিয়তে খতমে কুরআনের টাকা নেওয়ার বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0/%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2/%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%9f%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%a4/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

18 Dec, 12:20


“নেক কাজ (বদ) নিয়তের কারণে গুনাহে পরিণত হয়। মুবাহ কাজ কখনও (বদ) নিয়তের কারণে গুনাহে, আবার কখনও (ভালো নিয়তের কারণে) নেক কাজে পরিণত হয়। কিন্তু গুনাহের কাজ কখনোই (ভালো) নিয়তের কারণে নেক কাজে পরিণত হয় না।” –ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন: ৪/৩৭০

তিনি বিষয়টিকে আরও বিশদ ব্যাখ্যা করে বলেন,

اعلم أن الأعمال وإن انقسمت أقساما كثيرة …فهي ثلاثة أقسام معاص وطاعات ومباحات القسم الأول المعاصي وهي لا تتغير عن موضعها بالنية فلا ينبغي أن يفهم الجاهل ذلك من عموم قوله عليه السلام إنما الأعمال بالنيات فيظن أن المعصية تنقلب طاعة بالنية كالذي يغتاب إنسانا مراعاة لقلب غيره أو يطعم فقيرا من مال غيره أو يبني مدرسة أو مسجدا أو رباطا بمال حرام وقصده الخير فهذا كله جهل والنية لا تؤثر في إخراجه عن كونه ظلما وعدوانا ومعصية بل قصده الخير بالشر على خلاف مقتضى الشرع شر آخر فإن عرفه فهو معاند للشرع وإن جهله فهو عاص بجهله إذ طلب العلم فريضة على كل مسلم. -إحياء علوم الدين (دار المعرفة): 4/368-369، كتاب النية والإخلاص والصدقة، بيان تفصيل الأعمال المتعلقة بالنية

“শোনো, আমল যদিও অনেক ভাগে বিভক্ত … কিন্তু (মৌলিকভাবে) তা তিন প্রকারে সীমাবদ্ধ। ক. গুনাহ; খ. নেক; গ. মুবাহ।

প্রথম প্রকার হলো, গুনাহ। এই প্রকারের আমলসমূহ (ভালো) নিয়তের কারণে নিজের বৈশিষ্ট্য থেকে পরিবর্তিত হয় না। … যেমন কেউ কোন ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করার জন্য অপর কারও গীবত করলো। অন্যের মাল থেকে কোনো গরীবকে খানা খাওয়ালো। হারাম মাল দ্বারা মসজিদ, মাদরাসা অথবা সরাইখানা বানিয়ে দিলো। এ সব ক্ষেত্রে তার নিয়ত ভালো। কিন্তু বাস্তবে এর সবটাই মূর্খতা। (ভালো) নিয়ত এ কাজগুলোকে জুলুম, সীমালঙ্ঘন ও গুনাহের গণ্ডি থেকে বের করে দিবে না। বরং শরীয়তের নিয়মের বিপরীতে মন্দ কাজের দ্বারা ভালো নিয়ত করা আরেকটি মন্দ কাজ। বিষয়টি বুঝার পরও তা করে থাকলে তো সে ‘মুআনিদ’ তথা জেনে বুঝে শরীয়ত প্রত্যাখ্যানকারী গণ্য হবে। অজ্ঞতাবশত করে থাকলে (অন্তত) অজ্ঞতার কারণে গুনাহগার হবে। কারণ (প্রয়োজন পরিমাণ) ইলম অর্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরয।”–ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন: ৪/৩৬৮-৩৬৯

মোল্লা আলী কারী রহিমাহুল্লাহ (১০১৪ হি.) বলেন,

التصدق بالمال الحرام سيئة، ولا يمحو الله الأعمال السيئات بالسيئات، بل قال بعض علمائنا: من تصدق بمال حرام ورجا الثواب كفر، ولو عرف الفقير ودعا له كفر. –مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح (5/ 1898)

“হারাম মাল সাদাকা করা গুনাহের কাজ। … বরং আমাদের মাযহাবের কোনো কোনো ইমাম তো বলেছেন, সাওয়াবের নিয়তে হারাম মাল সাদাকা করলে কাফের হয়ে যাবে। গরীব লোকটি (যাকে এ হারাম দান করা হয়েছে) হারামের বিষয়টি জানার পরও যদি দাতার জন্য দোয়া করে, তাহলে সেও কাফের হয়ে যাবে।”–মিরকাত: ৫/১৮৯৮

বুঝাই যাচ্ছে, বিষয়টি কত ভয়াবহ যে, ক্ষেত্র বিশেষে তা ঈমান নষ্টের দিকেও গড়াতে পারে। আল্লাহ তাআলা হেফাযত করুন।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৭-১১-১৪৪৪ হি.

১৭-০৬-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

09 Dec, 14:33


সাহেবে নেসাবের অর্থ অন্যের হাতে থাকলে কি তার ওপর কুরবানী ওয়াজিব হবে?

প্রশ্ন:

আমার এক ভাই নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক। তবে সেটা কাগজে কলমে। তার হাতে মাত্র দশ হাজার টাকা আছে। বাকিটা অন্যদের কাছে পাওনা। তারা কবে দিবে, তাও নিশ্চিত না। তবে দিবে এটুকু নিশ্চিত। এমতাবস্থায় কি তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে?

উত্তর:
بسم الله الرحمن الرحيم

যেহেতু তিনি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক, আবার তার হাতে কুরবানী করার মতো টাকাও আছে, তাই তার উপর কুরবানী ওয়াজিব। যদি হাতে কুরবানী করার মতো টাকা না থাকতো এবং ঋণগ্রহীতাদের কাছে কুরবানীর পরিমাণ অর্থ চাইলে তারা না দিতো, তাহলে কুরবানী ওয়াজিব হত না।-আল-ফাতাওয়াত তাতারখানিয়্যাহ: ১৭/৪৬৪ (যাকারিয়া বুক ডিপো, ভারত); আল-ফাতাওয়াল হিন্দিয়া: ৫/৩০৭ (দারুল ফিকর)

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
২৮-১১-১৪৪৪ হি.
১৮-০৬-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

09 Dec, 14:33


সাহেবে নেসাবের অর্থ অন্যের হাতে থাকলে কি তার ওপর কুরবানী ওয়াজিব হবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%85%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%a5-%e0%a6%85%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a7%87/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

08 Dec, 12:37


উপর্যুক্ত যে কোনো মতের আলোকে মূল্য নির্ধারণ করে যাকাত দিলেই যাকাত আদায় হয়ে যাবে। তবে সতর্কতার দাবি ও উত্তম হল, পাইকারি বিক্রেতার জন্য বাজারে প্রচলিত স্বাভাবিক পাইকারি বিক্রয়মূল্য ধরা এবং খুচরা বিক্রেতার জন্য খুচরা বিক্রয়মূল্য ধরা। এতে সকলের মতেই যথাযথভাবে যাকাত আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। -ইমদাদুল ফাতাওয়া জাদীদ: ৪/২৬-২৭ (যাকারিয়া); ফাতাওয়া উসমানী: ২/৫৩ (মাকতাবা মাআরিফুল কুরআন করাচি); ফিকহী মাকালাত: ৩/১৫০ (মাইমান পাবলিশার্স); আলমাআইরুশ শরইয়্যাহ: ৪৭৭; কিতাবুন নাওয়াযিল: ৬/৫৬৮; ফাতাওয়া কাসেমিয়া: ১০/৪১৯

উল্লেখ্য, আপনি যে বিভিন্ন পরিস্থিতির শিকার হয়ে বিভিন্ন দামে বিক্রির প্রসঙ্গটি এনে সংশয় তুলে ধরেছেন, ব্যক্তি বিশেষের এমন বিশেষ পরিস্থিতি এখানে ধর্তব্য নয়; বরং স্বাভাবিকভাবে এই মালগুলো সব একত্রে বিক্রি করলে তার মূল্য কত হতে পারে, সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীদের এমন অনুমান নির্ভর ধারণা উদ্দেশ্য। একেবারে কাঁটায় কাঁটায় সুনির্দিষ্ট করা না গেলেও এমন ধারণা সব মহলের ব্যবসায়ীদেরই থাকে, যা বাস্তবতা থেকে খুব বেশি ব্যবধান হয় না।

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২০-১০-১৪৪৪ হি.

১১-০৫-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

08 Dec, 12:37


যাকাত সম্পর্কে তিনটি মাসআলা

প্রশ্ন-০১

যাকাতের আলোচনায় বলা হয়ে থাকে, কারও কাছে সাড়ে সাত ভরি সোনা কিংবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার কম থাকলে যদি সাথে নগদ ‘কিছু টাকা থাকে তাহলে সবগুলো মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার মূল্যমানের হলে ওই ব্যক্তিকে নেসাবের মালিক বলে গণ্য করা হবে।

আমার জানার বিষয় হলো, এখানে ‘কিছু টাকা’ দ্বারা সর্বনিম্ন কত টাকা উদ্দেশ্য? হাতখরচ বাবদ কিংবা হঠাৎ কোনো মেহমান আসতে পারে, কেউ অসুস্থ হতে পারে অথবা এমন কোনো কাজের জন্য দুই-চারশত টাকা তো সব সময় হাতে থাকেই।

প্রশ্ন-০২

বাজারে সোনা ও রূপার বিভিন্ন ক্যারেট ও গ্রেড থাকে এবং সে হিসাবে দামেও পার্থক্য থাকে। যাকাতের হিসাবের ক্ষেত্রে বাসায় থাকা সোনা অথবা রূপার মূল্যমান কত ক্যারেট হিসেবে নির্ধারণ করবো?

প্রশ্ন-০৩

একটি ওয়েব সাইটে ‘রোযা ও যাকাত: প্রচলিত কয়েকটি মাসআলা’ শিরোনামে ব্যবসায়ী পণ্যের যাকাত সম্পর্কে লিখা হয়েছে,

ব্যবসায়িক পণ্যের কোন মূল্য ধর্তব্য

টাকা-পয়সা ও স্বর্ণাংলকারের মতো ব্যবসায়িক পণ্য এবং ব্যবসার মূলধনেরও যাকাত দিতে হয়। ব্যবসায়ী যাকাত দেওয়ার সময় তার অবিক্রিত পণ্যের কোন মূল্যটি হিসাব করবে, খরিদ মূল্য, পাইকারি মূল্য, খুচরা মূল্য নাকি অন্য কোনো মূল্য?

এ প্রশ্নের জবাব হল, লোকটি তার অবিক্রিত পণ্যের বর্তমান বাজার দর হিসাব করে যাকাত আদায় করবে। অর্থাৎ যেদিন তার যাকাত-বর্ষ পুরো হয়েছে সেদিন তার ব্যবসায়িক পণ্যগুলো একত্রে বিক্রি করে দিলে যে দাম পাওয়া যেত, সে মূল্যের হিসাবে যাকাত প্রদান করবে।”

এখানে ‘সেদিন তার ব্যবসায়িক পণ্যগুলো একত্রে বিক্রি করে দিলে যে দাম পাওয়া যেত’ এটি কীভাবে নির্ধারণ করা হবে?

পাইকারি দামের একটা বাজার দর থাকে, খুচরা দামের আরেকটা বাজার দর থাকে যা ক্রেতা-বিক্রেতা অনুসারে সামান্য কমবেশি হতে পারে। কিন্তু ‘সেদিন তার ব্যবসায়িক পণ্যগুলো একত্রে বিক্রি করে দিলে যে দাম পাওয়া যেত’ এটি তো একটি অস্পষ্ট কথা। কারণ কেউ বিশেষ হালাত ছাড়া তার ব্যবসায়িক পণ্যগুলো একত্রে বিক্রি করে না। বিশেষ হালাত যেমন,

ক) কেউ বর্তমান ব্যবসাতে লাভের আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছে। তখন সে তার কেনা দামেই ছেড়ে দেবে অথবা সামান্য লস দিয়ে হলেও ছেড়ে দেবে।

খ) কেউ আরও বেশি লাভজনক কোনো ব্যবসা পেয়েছে, তখন সে সামান্য লাভে কিংবা সমানে সমানে ছেড়ে দিয়ে টাকা বের করে আনবে।

গ) বড় কোন বিপদ পড়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে।

এমন বিভিন্ন সুরত হতে পারে। স্বাভাবিকভাবে কেউ তার ব্যবসায়িক পণ্যগুলো একত্রে বিক্রি করে না। এখন আমার জানার বিষয় হলো, ব্যবসায়িক পণ্যের মূল্যের হিসাবটা কীভাবে করা হবে?

-মুহাম্মাদ আনাস

উত্তর-০১:

‘কিছু টাকা’ দ্বারা সর্বনিম্ম এক টাকাই উদ্দেশ্য, যা সাধারণত সবার কাছেই থাকে। তাই সোনা অথবা রূপার সাথে হাতখরচ কিংবা মেহমানদারি যে কোনো উদ্দেশ্যে রাখা ‘কিছু টাকা’ মিলিয়ে নেসাব পরিমাণ হলেও যাকাত দিতে হবে। -ফাতাওয়া উসমানী: ২/৭০ (মাকতাবাতু মাআরিফিল কুরআন, করাচি); ফাতাওয়া কাসিমিয়্যাহ: ১০/২৯০ (আশরাফিয়্যাহ বুক ডিপো, দেওবন্দ) কিতাবুন নাওয়াযিল: ৬/৭০ (আল-মারকাযুল ইলমী, মুরাদাবাদ)

উল্লেখ্য, নগদ অর্থ ও সোনা-রূপা; নিজের সম্ভাব্য প্রয়োজন, মেহমানদারি কিংবা চিকিৎসা কিংবা অন্য যে কোনো উদ্দেশ্যেই রাখা হোক না কেন, যাকাত বর্ষের দিন হাতে থাকলেই তা যাকাতের হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে। হ্যাঁ, একমাত্র নিত্যপ্রয়োজনে গৃহীত ঋণ পরিশোধের জন্য রাখলে, সেটা যাকাতের হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে না।

উত্তর-০২:

এক্ষেত্রে আপনার বাসায় যে ক্যারেট/গ্রেডের সোনা/রূপা আছে, সেই ক্যারেট/গ্রেডের সোনা/রূপার বিক্রয় মূল্য তথা আপনি এখন তা বাজারে বিক্রি করলে যে মূল্য পাবেন, তা জেনে যাকাত হিসাব করবেন। সোনা-রূপা কোন ক্যারেট/গ্রেডের, তা জানা না থাকলে স্বর্ণকারদের দেখিয়ে জেনে নিতে পারেন অথবা সতর্কতা মূলক সবচেয়ে দামি ক্যারেট/গ্রেডের মূল্যও হিসাব করতে পারেন।-বাদায়েউস সানায়ে: ২/৪৮৩, (দারুল হাদীস); বানুরী টাউন ওয়েবসাইট, ফাতোয়া নং: ১৪৪২০৮২০১৩২৪, ১৪৩৯০৯২০০৩৪৩, ১৪৪৩০৮১০২২৮৬; কিতাবুন নাওয়াযেল: ৬/৫৫৯, (আলমারকাযুল ইলমী, লালবাগ, মুরাদাবাদ)।

উত্তর-০৩:

এখানে ফকিহদের একাধিক মতামত রয়েছে। যথা: ০১. পাইকারি বিক্রয়মূল্য। ০২. পাইকারি ব্যবসায়ীর জন্য পাইকারি বিক্রয় মূল্য এবং খুচরা ব্যবসায়ীর জন্য খুচরা বিক্রয় মূল্য।

পাইকারি মূল্য কোনটি, তাতেও ফকিহদের একাধিক মত রয়েছে। যথা: ০১. স্বাভাবিক পাইকারি বিক্রয় মূল্য। অর্থাৎ বর্তমান পাইকারি বাজারে এই মালগুলো যে মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। ০২. সবগুলো মাল একত্রে বিক্রি করলে যে মূল্য পাওয়া যাবে সে মূল্য। যেটাকে সাধারণত স্টক লট বিক্রি বলা হয় এবং যা সাধারণত স্বাভাবিক পাইকারি মূল্য থেকেও কম হয়।

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

08 Dec, 12:34


যাকাত সম্পর্কে তিনটি মাসআলা

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b8/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

06 Dec, 12:03


বিয়ের পূর্বে কৃত পাপের কথা কি পাত্রীকে জানানো জরুরি?

প্রশ্নঃ

আমি একসময় জাহিলিয়াতের অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিলাম। আল্লাহর অসীম দয়া যে, তিনি আমাকে দীনের বুঝ দিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ। দীনের বুঝ আসার আগে শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে চরম অশ্লীল পাপ কাজও আমার দ্বারা হয়ে গেছে। শুনেছি, তাওবা করলে সকল গুনাহ মাফ হলেও বান্দার হক রয়ে যায়। এও শুনেছি, বিয়ের আগে এমন কাজে লিপ্ত হলে নাকি হবু স্বামী বা স্ত্রীর হক নষ্ট করা হয়। তাই এটি নাকি বিয়ের সময় জানাতে হয়। আমার জানার বিষয় হলো, বিষয়টি কি আসলেই এমন, বিয়ের আগে এমন কিছু হয়ে গেলে বিয়ের সময় তা জানানো জরুরি আর তা না পারলে বিয়ে থেকে বিরত থাকা উচিত? একটু খুলে বললে খুবই উপকৃত হবো।

-আবদুল্লাহ

উত্তরঃ

শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে কেউ কোনো অশ্লীল তথা ফাহেশা কাজ করে ফেললে উচিত হলো গোপনে তাওবা করে আল্লাহ তাআলার কাছে মাফ চাওয়া এবং সামনে এই কাজ করা থেকে বিরত থাকার সংকল্প করা। নিজের কৃত গুনাহের কথা অন্যকে জানানোও একটি গুনাহ এবং এতে অপরাধের শাস্তি বেড়ে যায়। রাসূল সাল্লাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

عن سالم بن عبد الله قال سمعت أبا هريرة يقول : سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول (كل أمتي معافى إلا المجاهرين وإن من المجاهرة أن يعمل الرجل بالليل عملا ثم يصبح وقد ستره الله فيقول يا فلان عملت البارحة كذا وكذا وقد بات يستره ربه ويصبح يكشف ستر الله عنه ). – صحيح البخاري (5/ 2254)، الرقم: 5721، كتاب الأدب، باب ستر المؤمن على نفسه؛ صحيح مسلم للنيسابوري (8/ 224)، الرقم: 7676؛ كتاب الزهد الرقاق، باب: النَّهْىِ عَنْ هَتْكِ الإِنْسَانِ سِتْرَ نَفْسِهِ

“আমার উম্মতের সবারই ক্ষমার আশা করা যায়, তবে যারা প্রকাশ্যে গুনাহ করে, তারা ব্যতীত। আর এটিও প্রকাশ্য গুনাহের অন্তর্ভুক্ত যে, কোনো ব্যক্তি রাতে কোনো গুনাহ করে ফেললো, আল্লাহ তাআলা সকাল পর্যন্ত তা গোপন রাখলেন। কিন্তু (সকালে) সে বলে দিলো, ‘হে অমুক, গত রাতে আমি এই এই কাজ করেছি’। রাতে আল্লাহ তা গোপন রেখেছিলেন, কিন্তু সকালে সে নিজেই আল্লাহর পর্দা সরিয়ে তা প্রকাশ করে দিলো।” –সহীহ বুখারী: ৫৭২১, সহীহ মুসলিম: ৭৬৭৬

অন্য হাদীসে এসেছে,

عن عبد الله بن عمر رضي الله عنهما : أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قام بعد أن رجم الأسلمي فقال : اجتنبوا هذه القاذورة التي نهى الله عنها فمن ألم فليستتر بستر الله و ليتب إلى الله فإنه من يبدلنا صفحته نقم عليه كتاب الله عز و جل. هذا حديث صحيح على شرط الشيخين ولم يخرجاه. تعليق الذهبي قي التلخيص : على شرط البخاري ومسلم. – المستدرك على الصحيحين للحاكم مع تعليقات الذهبي في التلخيص (6/ 248، بترقيم الشاملة آليا): 7615، كتاب التوبة والإنابة

“আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাযিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, ‘আসলামী’কে ‘রজম’ তথা প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে ভাষণ দিলেন। ইরশাদ করলেন, “তোমরা এই গান্ধা কাজটি (অর্থাৎ যিনা) থেকে বিরত থাকো, যা থেকে আল্লাহ তাআলা বারণ করেছেন। যদি কারও থেকে হয়েই যায়, সে যেন আল্লাহর পর্দার আড়ালে তা গোপন রাখে এবং যেন (গোপনে) আল্লাহর কাছে তাওবা করে নেয়। যে ব্যক্তি তার গুনাহ আমাদের সামনে প্রকাশ করবে, আমরা আল্লাহ আযযা ওয়াজাল্লার কিতাবে বর্ণিত শাস্তি তার উপর কায়েম করবো।” –মুসতাদরাকে হাকেম: ৬/২৪৮, হাদীস নং: ৭৬১৫

কাজেই আপনি আপনার গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হয়ে সত্য দিলে আল্লাহর কাছে তাওবা করুন। হবু স্ত্রী কিংবা অন্য কারও কাছে গুনাহের কথা প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকুন। আর ‘বিয়ের আগে শয়তানের প্ররোচনায় জঘন্য অশ্লীল কাজে লিপ্ত হলে হবু স্বামী বা স্ত্রীর হক নষ্ট হয়, কাজেই তাকে তা অবগত করানো উচিত’ – এই ধারণা সহীহ নয় এবং এই ধারণার ভিত্তিতে বিয়ে থেকে বিরত থাকাও সঠিক নয়। ওয়াল্লাহু আলাম।

-মাজমুউল ফাতাওয়া, ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ- ৩৪/১৮০; ফাতহুল কাদীর: ৫/২১৫

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-১০-১৪৪৪ হি.

০৯-০৫-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

06 Dec, 12:03


বিয়ের পূর্বে কৃত পাপের কথা কি পাত্রীকে জানানো জরুরি?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%80/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a7%82%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a7%83%e0%a6%a4-%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%a5/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

05 Dec, 11:50


ইসলামী ব্যাংকে মুদারাবার বিধান

প্রশ্ন:

আমি দীর্ঘ দিন থেকে ইসলামী ব্যাংকে মুদারাবা লেনদেন করে আসছি৷ কিছু দিন আগে জনৈক আলেম সাহেবকে বলতে শুনলাম, ইসলামী ব্যংকে মুদারাবা ব্যবসায় শেয়ার নেওয়া বৈধ নয়৷ কারণ সেখানে লভ্যাংশ নির্ধারিত না থাকলেও ক্ষতির কোনো সম্ভাবনা বা অপশন নেই৷ অথচ ব্যবসায় লাভ-লস দুটোই থাকে৷

এখন আমার জানার বিষয় হলো, এভাবে মুদারাবা করা বৈধ হবে কি না? এবং এ যাবত যে লভ্যাংশ নিয়েছি তা কি বৈধ ছিল?

-আব্দুর রউফ

উত্তর:

بسم الله، والحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد!

আমাদের অনুসন্ধান অনুযায়ী, এদেশের ইসলামী ব্যাংকগুলো ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেনের ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ শরীয়াহ পদ্ধতি অনুসরণ করে না। ফলে ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন থেকে আয়কৃত মুনাফা সন্দেহমুক্ত নয়। অতএব ইসলামী ব্যাংকসহ সকল ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন থেকে বেঁচে থাকা জরুরি এবং এটিই দীন ও ঈমানের জন্য নিরাপদ। একজন মুমিনের জীবনে হালাল হারামের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

হাদীস শরীফে এসেছে,

إن الحلال بين، وإن الحرام بين، وبينهما مشتبهات لا يعلمهن كثير من الناس، فمن اتقى الشبهات استبرأ لدينه، وعرضه، ومن وقع في الشبهات وقع في الحرام… –صحيح البخاري: 52، ومسلم: 1599 واللفظ له.

“নিশ্চয় হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট। উভয়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয়, অনেক লোকই সেগুলো জানে না। যে ব্যক্তি এসব সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকে সে তার দীন ও মর্যাদাকে নিরাপদে রাখে। আর যে লোক সন্দেহজনক বিষয়ে পতিত হবে, সে হারামের মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়বে।” –সহীহ মুসলিম: ১৫৯৯, সহীহ বুখারী: ৫২

আপনার প্রতি নসীহা হলো, বিলম্ব না করে ব্যাংকের সাথে মুআমালা গুটিয়ে নিবেন এবং ব্যাংক থেকে আয়কৃত মুনাফা সাওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীব মিসকিনদের মাঝে দান করে দিবেন। মুসলিমদের কোনো জনকল্যাণমূলক কাজেও দান করা যাবে। যদি জি-হা-দে-র পথে খরচ করতে পারেন আরও ভালো। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ (৭২৮ হি.) বলেছেন, এমন অর্থ থেকে মুক্তি লাভের উত্তম পথ হচ্ছে, তা জি-হা-দে-র পথে খরচ করা। তিনি বলেন,

“ومن أراد التخلص من الحرام والتوبة ولا يمكن رده إلى أصحابه فلينفقه في سبيل الله عن أصحابه فإن ذلك طريق حسنة إلى خلاصه مع ما يحصل له من أجر الجهاد”. اهـ مجموع الفتاوى 28/422

“যে ব্যক্তি হারাম থেকে দায়মুক্ত হয়ে চায় এবং তওবা করতে চায়; অথচ তা মালিকের নিকট পৌঁছানো সম্ভবপর নয়, তাহলে সে যেন তা মালিকের পক্ষ থেকে জি-হা-দে-র পথে খরচ করে। এটা দায়মুক্তির উত্তম পথ এবং এতে সে জিহাদে অংশ গ্রহণেরও সাওয়াব পাবে।” -মাজমুউল ফাতাওয়া ২৮/৪২১-৪২২, আরো দেখুন ফাতাওয়া উসমানি: ৩/২৭৬, ১২৮-১৪০

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-০৩-১৪৪৬ হি.

০২-১০-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

05 Dec, 11:50


ইসলামী ব্যাংকে মুদারাবার বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a8/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae/%e0%a6%87%e0%a6%b8%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%80-%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%82%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b0/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

05 Dec, 09:04


ভুলবশত সাহু সিজদা দিয়ে ফেললে কি নামায নষ্ট হয়ে যায়?

প্রশ্নঃ

একবার আমাদের ইমাম সাহেব এশার নামাযে বাহ্যিক কোনও কারণ ছাড়াই সাহু সেজদা দেন। নামাযের পর তিনি জানান, তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতেহার পর অন্য সূরা পড়ে ফেলেছেন, তাই সাহু সেজদা দিয়েছেন। আমরা বললাম, এমন হলে তো সাহু সেজদা দিতে হয় না। তখন এ নিয়ে বেশ তর্ক-বিতর্ক হয়। কোনো কোনো মুসল্লি বললেন, ইমাম ঠিকই করেছেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করা ঠিক হয়নি। আমার জানার বিষয় হলো, ইমাম সাহেবকে আমাদের জিজ্ঞেস করা ঠিক হয়েছে কি না? আর আমাদের নামাযে কি কোনও সমস্যা হবে? নামায কি পুনরায় পড়তে হবে?

প্রশ্নকারী- মুহাম্মাদ ফেরদৌস

উত্তরঃ

ফরয নামাযের তৃতীয় অথবা চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার পর অন্য কোনও আয়াত কিংবা সূরা না পড়াই নিয়ম। তবে কেউ পড়ে ফেললে সাহু সিজদা দিতে হবে না। তথাপিও না জেনে সাহু সিজদা দিয়ে দিলে নামায সহীহ হয়ে যাবে। সুতরাং আপনাদেরকে পুনরায় উক্ত নামায আদায় করতে হবে না।

-ফতোয়া শামী: ১/৪৫৯; মাবসুত: ১/২২৯; খিযানাতুল আকমাল: ১/১৭৯; হালবাতুল মুজাল্লি: ২/১৮১-১৮২; ফাতহুল কাদীর: ১/৩৯১

উল্লেখ্য শরয়ী কোন বিষয়ে সংশয় হলে, তা আদবের সাথে প্রশ্ন করে আলেমদের থেকে জেনে নেয়াই কাম্য। সাহাবায়ে কেরাম রাযিয়াল্লাহু আনহুম এমনটিই করতেন।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ انْصَرَفَ مِنَ اثْنَتَيْنِ، فَقَالَ لَهُ ذُو اليَدَيْنِ: أَقَصُرَتِ الصَّلاَةُ، أَمْ نَسِيتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَصَدَقَ ذُو اليَدَيْنِ» فَقَالَ النَّاسُ: نَعَمْ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَصَلَّى اثْنَتَيْنِ أُخْرَيَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ، ثُمَّ كَبَّرَ، فَسَجَدَ مِثْلَ سُجُودِهِ أَوْ أَطْوَلَ. – صحيح البخاري: 1\44، رقم: 714، الناشر: دار طوق النجاة (مصورة عن السلطانية بإضافة ترقيم ترقيم محمد فؤاد عبد الباقي) الطبعة: الأولى، 1422هـ

“আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযে) দুই রাকাত আদায় করে সালাম ফিরিয়ে ফেললেন। (নামায শেষ হলে) যুলইয়াদাইন রাযিয়াল্লাহু আনহু জিজ্ঞেস করলেন, নামায কমানো হয়েছে, না আপনি ভুলে গেছেন ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সাহাবীদের) জিজ্ঞেস করলেন, “যুলইয়াদাইন কি ঠিক বলছে?” লোকেরা বললো “জি, ঠিক বলেছেন।” অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও দুই রাকাত আদায় করলেন….।” সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭১৪

তবে যে বিষয়টি কারও নিশ্চিত জানা নেই, তার জন্য সে বিষয়ে তর্কে জড়ানো অন্যায়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ ۚ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَـٰئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا. الإسراء:36

“যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই, তুমি সে বিষয়ের পেছনে পড়ো না। নিশ্চয়ই কান, চোখ ও হৃদয় প্রত্যেকটি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে।” (সূরা ইসরা ১৭:৩৬)

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৫-০৩-১৪৪৪ হি.

২২-১০-২০২২ ঈ.66

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

04 Dec, 12:48


ভুলবশত সাহু সিজদা দিয়ে ফেললে কি নামায নষ্ট হয়ে যায়?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9c/%e0%a6%ad%e0%a7%81%e0%a6%b2%e0%a6%ac%e0%a6%b6%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a7%81-%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a6%9c%e0%a6%a6%e0%a6%be-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%ab%e0%a7%87/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

03 Dec, 12:22


এক তালাক দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আরেক তালাক দিলে কয় তালাক হয়?

প্রশ্নঃ

যদি কেউ তার স্ত্রীকে এক তালাক দেয় এবং পরবর্তীতে আবার ফিরিয়ে নেয় এবং পরে আবার যদি এক তালাক দেয়, তবে সেটি কি এক তালাক হবে, না দুই তালাক হিসেবে গণ্য হবে?

নাম- তানজিব

উত্তরঃ

স্ত্রীকে এক ‘তালাকে রাজই’ দিয়ে, ইদ্দতের মধ্যে ‘রুজু’ করার (ফিরিয়ে আনার) পর পুনরায় এক তালাক দিলে, তা আগেরটার সঙ্গে যুক্ত হয়ে দুই তালাক গণ্য হয়। অর্থাৎ এরপর স্বামী উক্ত স্ত্রীর ক্ষেত্রে মাত্র একটি তালাকের মালিক থাকে। এরপর কখনও আরেক তালাক দিলে তা তিন তালাক গণ্য হয় এবং উক্ত স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের জন্য সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যায়।-ফাতাওয়া হিন্দিয়া, দারুল ফিকর: ১/৫৪৫, আলবাহরুর রায়েক, যাকারিয়া বুক ডিপো: ৪/৯১, আদদুররুল মুখতার, দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ: ২৩০

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২২-০৭-১৪৪৪ হি.

১৪-০২-২০২৩ ইং

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

03 Dec, 12:21


এক তালাক দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আরেক তালাক দিলে কয় তালাক হয়?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%8f%e0%a6%95-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%95-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%ab%e0%a6%bf%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a7%9f/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

02 Dec, 12:29


একজনের রোযা কি আরেকজন রাখতে পারে?

প্রশ্ন:

কয়েক মাস আগে আমার আব্বা ইন্তিকাল করেছেন। এক রমযানে তিনি অসুস্থতার কারণে ১০টি রোযা রাখতে পারেননি। পরে ওগুলো কাজা করেছেন কিনা, তা আমাদের জানা নাই। সতর্কতাবশত কিছুদিন আগে আমি আব্বার পক্ষ থেকে ১০টি রোযা কাজা রাখি। এখন আমার জানার বিষয় হলো, আমার কাজা রাখার ফলে আব্বার পক্ষ থেকে আদায় হবে কি না? যদি না হয় তাহলে এখন আমাদের করণীয় কী?

যদি ফিদিয়া দিতে হয়, তাহলে ১০টি রোযার ফিদিয়া বর্তমান সময়ের হিসেবে কত টাকা আসবে? এবং তা কোথায় দেওয়া আমাদের জন্য সর্বোত্তম হবে?

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم

المحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد:

আপনার রোযাগুলো আপনার আব্বার কাজা রোযার জন্য যথেষ্ট হবে না। জুমহুর ফুকাহায়ে কেরামের মতে একজনের রোযা অপরজনের জন্য যথেষ্ট নয়। বিষয়টি গ্রহণযোগ্য সূত্রে একটি হাদীসেও বর্ণিত হয়েছে। -আসসুনানুল কুবরা লিননাসায়ী: ২৯৩০

বরং এ রোযাগুলোর জন্য ফিদইয়া আদায় করতে হবে। প্রত্যেকটি রোযার বদলে একটি করে ফিদইয়া দিতে হবে।

ফিদইয়া হলো প্রত্যেক রোযার পরিবর্তে এক সাদাকাতুল ফিতর পরিমাণ, যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে দিয়ে দেওয়া।

তা যদি আটা অথবা গম দিয়ে পরিশোধ করা হয়, তাহলে ১ কেজি ৬৩৫ গ্রাম আটা কিংবা গম অথবা তার মূল্য আদায় করতে হবে। বর্তমান (২৬-৩-২৩ ইং) বাজারে গমের মূল্য, ৪৫ টাকা কেজি। সে হিসেবে একটি ফিদইয়ার মূল্য হবে, ৭৩ টাকা। আর খোলা আটার মূল্য, ৬৫ টাকা কেজি। সে হিসেবে একটি ফিদইয়ার মূল্য হবে, ১০৬ টাকা।

আর যদি খেজুর, যব, কিশমিশ দিয়ে পরিশোধ করা হয়, তাহলে ৩ কেজি ২৭০ গ্রাম অথবা তার মূল্য আদায় করতে হবে।

উপর্যুক্ত বস্তুসমূহের মধ্যে যে কোনো একটি দিয়ে আদায় করলেই ফিদইয়া আদায় হয়ে যাবে। অবশ্য সামর্থ্যের ভিতরে সবচেয়ে দামিটা দিয়ে আদায় করা উত্তম।

ফিদইয়া দেওয়ার সবচেয়ে উত্তম জায়গা হলো, নিজের গরীব আত্মীয়-স্বজন। এতে ফিদইয়া আদায়ের পাশাপাশি আত্মীয়তার হকও আদায় হবে। -সূরা বাকারা ০২:২১৫, আহকামুল কুরআন-জাসসাস: ১/৩৯৯,

তবে যাদেরকে আপনি যাকাত দিতে পারবেন না, তাদেরকে ফিদইয়াও দেওয়া যাবে না। তারা হলেন, স্বামী/স্ত্রী, মা-বাবা, ও তাদের উর্ধ্বতন ব্যক্তি এবং সন্তান ও তাদের অধ্বস্তন ব্যক্তিবর্গ। এরা গরীব হলেও যাকাত-ফিতরা, ফিদইয়া, কাফফারা ইত্যাদির মতো ওয়াজিব সাদাকাসমূহ দেওয়া যাবে না। -রদ্দুল মুহতার: ২/৩৪৬

এ ছাড়া গরীব মুজাহিদ ও গরীব তালিবে ইলমদেরকেও দেওয়া যেতে পারে। এতে আপনি ফিদইয়া আদায়ের পাশাপাশি ইলম ও জিহাদের পথে দানের সাওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।

فقط. والله تعالى اعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-০৯-১৪৪৪ হি.

২৮-০৩-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

02 Dec, 12:29


একজনের রোযা কি আরেকজন রাখতে পারে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%af%e0%a6%be-%e0%a6%87%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%ab/%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%af%e0%a6%be/%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%af%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%86%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a6%9c%e0%a6%a8-%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%96/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

01 Dec, 13:49


কাগুজে নোট দিয়ে যাকাত আদায়ের বিধান

প্রশ্ন:

টাকা দিয়ে যাকাত আদায় করলে কি যাকাত আদায় হয়? একটু বিস্তারিত জানালে উপকৃত হতাম।

নাম- মুহাম্মাদ হানিফ আল মাহদী

উত্তর:

জী, টাকা দিয়ে যাকাত আদায় করলে যাকাত আদায় হয়ে যাবে। কাগুজে নোট সোনা রুপার মতো সৃষ্টিগত মুদ্রা না হলেও মানুষের ব্যবহার ও সামাজিক প্রচলনে বর্তমানে এগুলো মুদ্রায় পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সরাসরি এগুলোকেই স্বতন্ত্র মূল্যমান-বিশিষ্ট ও অন্যান্য সম্পদের ন্যায় সম্পদ গণ্য করা হয়; সোনা রুপার চেক গণ্য করা হয় না। তাই এগুলোর দ্বারা ক্রয়-বিক্রয়, ঋণ পরিশোধ, দান-সাদাকা সবই জায়েয। সুদের বিধি-নিষেধও এগুলোতে প্রযোজ্য। কারও কাছে প্রয়োজনাতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ কাগুজে নোট থাকলে তাতে যাকাত ফরয হবে। যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে নোট প্রদান করলে তা দ্বারা যাকাত আদায় হয়ে যাবে।

এক সময় কাগুজে নোটগুলো যখন চেক হিসেবে ব্যবহৃত হতো, তখন উলামায়ে কেরাম ফতোয়া দিয়েছিলেছেন, নোট দিয়ে যাকাত আদায় হবে না; যেমন বর্তমানে কেউ টাকা না দিয়ে টাকার চেক ধরিয়ে দিলে যাকাত আদায় হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না গরীব ব্যক্তি চেক ভাঙিয়ে টাকা হস্তগত করবেন। [যেমন দেখুন: ইমদাদুল ফাতাওয়া (জাদিদ) ৩/৫০৬, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া ৯/৩৯২]

কিন্তু পরবর্তীতে যখন সোনা-রুপার মুদ্রা সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায় এবং কাগুজে নোটগুলোই সরাসরি মুদ্রা হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে, তখন উলামায়ে কেরাম ফতোয়া দেন যে, সরাসরি নোট দিয়ে যাকাত আদায় হয়ে যাবে, যেমন সোনা-রুপার মুদ্রা দ্বারা আদায় হয়।

দেখুন: তাবইনুল হাকায়েক: ৪/১৪১; ফাতাওয়া মাহমুদিয়া ৯/৩৯১, বুহুস ১/১৭০, ফিকহুল বুয়ূ ২/৭৩৩

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৯-১০-১৪৪৪ হি.

১০-০৫-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

01 Dec, 13:49


কাগুজে নোট দিয়ে যাকাত আদায়ের বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be/%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%ab%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%b0%e0%a6%be/%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%9c%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a7%8b%e0%a6%9f-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%a4-%e0%a6%86%e0%a6%a6%e0%a6%be/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

30 Nov, 12:34


হারাম সম্পদ জিহাদের কাজে ব্যয় করার বিধান

প্রশ্ন: হারাম ভাবে উপার্জিত অর্থ কি জিহাদের কাজে ব্যয় করা যাবে?

-তারেক মাসউদ

উত্তর:

بسم الله، والحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد!

হাদীস শরীফে এসেছে,

عن أبي هريرة رضي الله عنه، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من تصدق بعدل تمرة من كسب طيب، ولا يقبل الله إلا الطيب، وإن الله يتقبلها بيمينه، ثم يربيها لصاحبه، كما يربي أحدكم فلوه، حتى تكون مثل الجبل» -صحيح البخاري: 1410

“হযরত আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সাদাকা করবে, (আল্লাহ তা কবুল করবেন)। আল্লাহ একমাত্র হালাল মালই কবুল করেন। তিনি তাঁর ডান হাত দিয়ে তা কবুল করেন। এরপর আল্লাহ দাতার কল্যাণার্থে তা প্রতিপালন করে বড় করেন, যেমন তোমাদের কেউ অশ্ব শাবক প্রতিপালন করে থাকে, অবশেষে সেই সাদাকা পাহাড় বরাবর হয়ে যায়।” -সহীহ বুখারী: ১৪১০

আরেক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

من جمع مالا حراما، ثم تصدق به، لم يكن له فيه أجر، وكان إصره عليه. -أخرجه ابن حبان، وقال الشيخ شعيب: إسناده حسن … وأخرجه الحاكم … وصححه، ووافقه الذهبي

“যে ব্যক্তি হারাম সম্পদ উপার্জন করে তা সাদাকা করলো, সে কোনো সাওয়াব পাবে না; বরং এর গুনাহ তার উপরই বর্তাবে।” -সহীহ ইবনে হিব্বান: ৩২১৬

মুসলিমদের জন্য ফরয হলো, সামর্থ্যানুযায়ী নিজেদের হালাল সম্পদ জিহাদে খরচ করা।

আল্লাহ তাআলা হারাম কবুল করেন না। তবে একান্ত কেউ যদি হারাম পথে উপার্জন করেই ফেলে, তাহলে তার প্রথম কর্তব্য তাওবা করা এবং হারাম সম্পদ যাদের থেকে গ্রহণ করেছে তাদেরকে কিংবা তাদের না পাওয়া গেলে তাদের ওয়ারিশদেরকে ফিরিয়ে দেয়া। সর্বাত্মক চেষ্টার পরও যদি তাদের খুঁজে না পাওয়া যায়, কিংবা ‍উপার্জনটি যদি ব্যাংকের সুদ বা এ জাতীয় কিছু হয় যেখানে প্রকৃত মালিকের হদিস পাওয়া সম্ভব নয়, তাহলে সাওয়াবের নিয়ত ব্যতীত শুধু হারামের দায়ভার থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে মূল মালিকের পক্ষ হতে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত গরীবদের মাঝে সাদাকা করে দেয়া অথবা মুসলিমদের জনকল্যাণমূলক কোনো কাজে বা জিহাদের কাজে ব্যয় করা। যাতে মালিক তার সম্পদ না পেলেও এর সাওয়াবটুকু পেয়ে যান।

শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ বলেন,

ومن أراد التخلص من الحرام والتوبة ولا يمكن رده إلى أصحابه فلينفقه في سبيل الله عن أصحابه فإن ذلك طريق حسنة إلى خلاصه مع ما يحصل له من أجر الجهاد. -مجموع الفتاوى 28/421–422، الناشر: مجمع الملك فهد لطباعة المصحف الشريف، المدينة النبوية، المملكة العربية السعودية

“যে ব্যক্তি হারাম থেকে দায়মুক্ত হতে চায় এবং তওবা করতে চায়; অথচ তা মালিকের নিকট পৌঁছানো সম্ভব নয়, তাহলে সে যেন তা মালিকের পক্ষ থেকে জিহাদের পথে খরচ করে। এটা দায়মুক্তির উত্তম পথ এবং এতে সে জিহাদে অংশ গ্রহণেরও সাওয়াব হবে।” -মাজমুউল ফাতাওয়া ২৮/৪২১-৪২২

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-০৩-১৪৪৬ হি.

০২-১০-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

30 Nov, 12:33


হারাম সম্পদ জিহাদের কাজে ব্যয় করার বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa%e0%a6%a6-%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%9c%e0%a7%87/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

29 Nov, 14:02


শহীদের দুনিয়াবি বিধান কাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?

প্রশ্নঃ

আফগানিস্তানে কি এখনও হাকিকি শহীদের বিধান বাকি আছে? আমরা জানি যে, সেখানে যুদ্ধ নেই। এখন সেখানে কেউ যদি কোনো শত্রুর আঘাতে বা ট্রেনিং অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে তাহলে কি সে হাকিকি শহীদ হবে?

প্রশ্নকারী- মুস্তাফা আল-আরাবি

উত্তরঃ

হাকিকি শহীদের বিধান ও অবকাশ পৃথিবীর সর্বত্রই বিদ্যমান। চাই তা শত্রুমুক্ত কোনো স্বাধীন ইসলামী ভূমি বা দারুল ইসলাম হোক, কিংবা শত্রু কবলিত কোনো মুসলিম এলাকা হোক। এমনকি দারুর হারবেও হাকিকি শহীদ হওয়ার অবকাশ আছে। কারণ হাকিকি শহীদ হল:

এক. যে প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম ‘কাতলে আমাদ’-এর শিকার হয়। ফিকহের পরিভাষায় ‘কাতলে আমাদ’ এমন হত্যাকে বলা হয়, যা অন্যায়ভাবে এবং ইচ্ছাকৃত ঘাতক অস্ত্র দ্বারা সংঘটিত হয়। অথবা

দুই. যে মুসলিম জিহাদের রণাঙ্গনে শত্রুর আঘাতে নিহত হয় অথবা ডাকাত, সন্ত্রাসী, বিদ্রোহী কিংবা রাতের আঁধারে চোরের হাতে নিহত হয়। অথবা

তিন. যে ব্যক্তি নিজের জান-মাল, পরিবার-পরিজন অথবা সাধারণ কোনো মুসলিম বা যিম্মির জীবন রক্ষা করতে গিয়ে শত্রুর হাতে নিহত হয়। অথবা

চার. যে ব্যক্তিকে জিহাদের রণক্ষেত্রে মৃত অবস্থায় এমন আলামতসহ পাওয়া যাওয়া যায়, যা থেকে বুঝা যায়; সে শত্রুর আঘাতে মৃত্যুবরণ করেছে।

উপরের সকল ব্যক্তি তখনই হাকিকি শহীদ বলে গণ্য হবে, যখন তারা আহত হবার পর মৃত্যুর আগে দুনিয়াবি কোনো সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করবে না এবং সজ্ঞানে পূর্ণ এক ওয়াক্ত নামাযের সময় অতিবাহিত করবে না। যুদ্ধক্ষেত্রে এই শর্ত কার্যকর হবে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে। –বাদায়েউস সানায়ে’ ১/৩২০; আদ্দুররুল মুখতার: ১২৪; ইলইখতিয়ার: ১/৯৭

সুতরাং বর্তমান আফগানিস্তানে যদি কোনো মুজাহিদ বা সাধারণ মুসলিম উপর্যুক্ত কোনো এক প্রক্রিয়ায় নিহত হন এবং উল্লেখিত শর্তটি বিদ্যমান থাকে, তাহলে তিনিও হাকিকি শহীদ বলে গণ্য হবেন এবং তাকে গোসল ছাড়া জানাযা পড়ে রক্তমাখা অবস্থায় দাফন করা হবে।

উল্লেখ্য, দুনিয়ার হুকুমে সকলে শহীদ হলেও সাওয়াব ও ফযীলতের দিক থেকে সকলে সমান নয়। জীবিকা অন্বেষণে বের হয়ে ডাকাতের হাতে মারা পড়া, আর আল্লাহর দ্বীন বুলন্দ করার উদ্দেশ্যে জান-মাল সাথে নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ করতে করতে নিজের জীবন বিলিয়ে দেয়া সমমর্যাদার হতে পারে না; বরং যারা আল্লাহর রাস্তায় নিজেদের জান-মাল বিলিয়ে দিয়ে শাহাদাত বরণ করেন, তাদেরও সকলের মর্যাদা সমান নয়। -সুনানে আবু দাউদ: ১৪৪৯

অতএব,উপরের সকল প্রকার শহীদ শুধু দুনিয়ার বিধান তথা গোসল ব্যতীত রক্তমাখা অবস্থায় দাফন করার ক্ষেত্রে বরাবর। পক্ষান্তরে আখিরাতের সাওয়াব ও মর্যাদা আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেককে প্রত্যেকের ইখলাস, নিয়ত ও আমল অনুযায়ী প্রদান করবেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সর্বোত্তম শহীদদের কাতারে শামিল হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب.

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৫-০৩-১৪৪৪ হি.

২২-১০-২০২২ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

29 Nov, 14:02


শহীদের দুনিয়াবি বিধান কাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0/%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2/%e0%a6%b6%e0%a6%b9%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a7%81%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%bf-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%a8/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

28 Nov, 15:05


শহীদের শরীরে অপবিত্র কিছু থাকলে করণীয়

প্রশ্নঃ

শহীদ ব্যক্তির শরীরে অপবিত্র কিছু থাকলে, তাকে কি গোসল দিতে হয়?

-মুহাম্মাদ উসমান

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله وسلام على عباده الذين اصطفى أما بعد:

শহীদকে গোসল দেয়া হয় না, রক্তসহ দাফন করা হয়। উহুদের দিন যাঁরা শহীদ হয়েছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদেরকে গোসল না দিয়ে রক্তসহ দাফন করতে আদেশ দেন।

সহীহ বুখারীতে এসেছে,

عن جابر، قال: قال النبي صلى الله عليه وسلم: “ادفنوهم في دمائهم” – يعني يوم أحد – ولم يغسلهم. -صحيح البخاري (2/ 91)، كتاب الجنائز، باب من لم ير غسل الشهداء، رقم الحديث: 1346، ط. دار طوق النجاة.

“জাবের রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদের শহীদদের ব্যাপারে নির্দেশ দেন, ‘তাঁদেরকে রক্ত সমেত দাফন কর’ এবং তিনি তাঁদের গোসল দেননি।” –সহীহ বুখারী: ২/৯১, হাদীস: ১৩৪৬

মুসনাদে আহমাদে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: أَمَرَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَوْمَ أُحُدٍ بِالشُّهَدَاءِ أَنْ يُنْزَعَ عَنْهُمِ الْحَدِيدُ وَالْجُلُودُ، وَقَالَ: “ادْفِنُوهُمْ بِدِمَائِهِمْ وَثِيَابِهِمْ”. -مسند أحمد ط الرسالة (4/ 92): 2217، قال المحققون: حسن لغيره. اهـ

“ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: উহুদ যুদ্ধের দিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শহীদদের (শরীর) থেকে লোহা ও চামড়া (-এর পোশাক) খুলে ফেলার নির্দেশ দেন এবং বলেন, ‘তাঁদেরকে রক্ত ও (পরিহিত) কাপড় সমেত দাফন কর’।” -মুসনাদে আহমদ: ৪/৯২, হাদীস: ২২১৭

মুসনাদে আহমাদের আরেক বর্ণনায় এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ ثَعْلَبَةَ بْنِ أَبِي صُعَيْرٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَشْرَفَ عَلَى قَتْلَى أُحُدٍ، فَقَالَ: “إِنِّي أَشْهَدُ عَلَى هَؤُلَاءِ، زَمِّلُوهُمْ بِكُلُومِهِمْ وَدِمَائِهِمْ”. -مسند أحمد ط الرسالة (39/ 64): 23659، قال المحققون: إسناده صحيح. اهـ

“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদের শহীদদের নিকট এসে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই এদের ব্যাপারে আমি সাক্ষ্য দিব। তাঁদেরকে যখম ও রক্ত সমেত ঢেকে দাও’।” –মুসনাদে আহমদ: ৩৯/৬৪, হাদীস: ২৩৬৫৯

তবে শহীদের শরীরে কিংবা কাপড়ে আপন রক্ত ব্যতীত অন্য কোনো নাপাক থাকলে শুধু সে অংশটা ধুয়ে ফেলতে হবে।

ইমাম সারাখসী রহিমাহুল্লাহ (৪৯০ হি.) বলেন,

“لو كان في ثوب الشهيد نجاسة تغسل تلك النجاسة ولا يغسل الدم عنه”. -المبسوط ، باب حمل الجنازة: 2/ 90، ط. دار الكتب العلمية

“যদি শহীদের কাপড়ে নাপাক থাকে, তাহলে সেই নাপাক ধুয়ে ফেলতে হবে, কিন্তু তাঁর রক্ত ধোয়া হবে না।” -মাবসূত: ২/৯০

‘আহকামুশ শাহীদ ফিল ফিকহিল ইসলামী’ গ্রন্থে বলা হয়েছে,

أما إذا أصابت الشهيد نجاسة من غير دمه كروث وبول وغيرهما فإنها تزال عنه، لأن الآثار وردت في إبقاء دمه خاصة، وإن أدى ذلك إلى زوال بعض دمه، لأن دفع المفسدة وهي غسل النجاسة، أولى من جلب المصلحة وهي إبقاء أثر العبادة. -أحكام الشهيد في الفقه الإسلامي ـ عبد الرحمن بن غرمان بن عبد الله، مكتبة دار البيان الحديثة (ص: 254)

“শহীদের গায়ে তাঁর নিজের রক্ত ছাড়া অন্য কোনো নাপাক লাগলে- যেমন মল মূত্র বা অন্য কোনো নাপাক- তাহলে তা পরিষ্কার করতে হবে, যদিও এর সাথে তাঁর নিজের রক্ত কিছুটা ধুয়ে যায়। কেননা, হাদীস-আসারে শুধু তাঁর নিজের রক্ত পরিষ্কার না করার কথা এসেছে। … …” -আহকামুশ শাহীদ ফিল ফিকহিল ইসলামী: ২৫৪

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৬-০৭-১৪৪৫ হি.

২০-০১-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

28 Nov, 15:04


শহীদের শরীরে অপবিত্র কিছু থাকলে করণীয়

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%b6%e0%a6%b9%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b6%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%85%e0%a6%aa%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%9b/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

27 Nov, 12:34


দায়মুক্তির উদ্দেশ্যে প্রদান কৃত হারাম টাকা গ্রহণ করা গরীবের জন্য কি তাকওয়া পরিপন্থী?

প্রশ্ন:

আমি ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত সুদের কিছু অর্থ নেকির নিয়ত ছাড়া দায়মুক্তির নিয়তে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত এক মাওলানা সাহেবকে দিতে চাচ্ছি। আমার জানা মতে, তিনি যথাসাধ্য তাকওয়া-পরহেযগারির সাথে চলার চেষ্টা করেন। এখন জানার বিষয় হলো, তিনি এই টাকা গ্রহণ করতে পারবেন কি না? পারলে তাঁর জন্য তা তাকওয়ার খেলাফ হবে কি না?

উত্তর:

উক্ত টাকা তিনি গ্রহণ করতে পারবেন এবং তা ভোগ করা তাঁর জন্য হালাল।তবে তিনি যদি জানতে পারেন, তাঁকে প্রদত্ত টাকাগুলো হারাম এবং তিনি এই স্তরের মুত্তাকী হন যে, জীবনের সর্বত্র তিনি সর্বোচ্চ তাকওয়ার উপর চলার চেষ্টা করেন, তাহলে এখানেও তাঁর জন্য এই টাকা গ্রহণ না করা উচ্চস্তরের তাকওয়ার অন্তর্ভুক্ত এবং মুস্তাহাব। -আলমাজমুউ: ৯/৩৫১ (দারুল ফিকর); মাজমুউল ফাতাওয়া: ২৮/৫৯৫ (মাজমাউল মালিক ফাহাদ); ইহয়াউ উলুমিদ্দীন: ২/১৩২ (দারুল মারিফা, বৈরুত); মাতালিবু উলিন নুহা: ৪/৬৬; (আল-মাকতাবুল ইসলামী); আল-মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ: ২৬/৩৩৫ (ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত)।

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৯-০৯-১৪৪৪ হি.

১১-০৪-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

27 Nov, 12:29


দায়মুক্তির উদ্দেশ্যে প্রদান কৃত হারাম টাকা গ্রহণ করা গরীবের জন্য কি তাকওয়া পরিপন্থী?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a8/%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%a6-%e0%a6%98%e0%a7%81%e0%a6%b7/%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a7%9f%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%89%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%87-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

26 Nov, 12:25


সফরে কখন কসর করতে হবে?

প্রশ্নঃ

আমি একজন গাড়ি চালক। গাড়ি নিয়ে অনেক সময় সফর পরিমাণ দূরত্বে যেতে হয়। তখন আমি কি কসর করতে পারবো? হাদীস থেকে তো সফরের বিভিন্ন দূরত্বের কথা জানা যায়। আমাদের জন্য কোনটা বেশি নিরাপদ, জানালে উপকৃত হতাম।

-হুমায়ূন কবীর

উত্তরঃ

আপনি সফর পরিমাণ দূরত্বের উদ্দেশ্যে বের হলে, বাড়ি থেকে আপনার গ্রাম বা শহর অতিক্রম করার পর থেকে পুনরায় তাতে প্রবেশ করার আগ পর্যন্ত নামাযে কসর করবেন। হানাফী মাযহাবে মুসাফিরের জন্য কসর করা ওয়াজিব। সফরের দূরত্ব হল, ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার। –সহীহ বুখারী: ১/৭৯ হাদীস নং: ৩৫০ (দারু তাওকিন নাজাহ); সহীহ মুসলিম: ১/৪৭৯ হাদীস নং: ৬৮৭ (দারু ইহইয়ায়িত তুরাস); সুনানুন নাসায়ী: ৩/১১১ হাদীস নং: ১৪২০ (মাকতাবুল মাতবুআতিল ইসলামিয়্যাহ, হালাব); রদ্দুল মুহতার: ২/১২১ (দারুল ফিকর, বৈরুত)

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-০৭-১৪৪৪ হি.

২৮-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

26 Nov, 12:25


সফরে কখন কসর করতে হবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a6%ab%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a6%96%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%b8%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%b9%e0%a6%ac%e0%a7%87/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

25 Nov, 13:59


দুই দেশের মুদ্রা বিনিময় করা কি বৈধ?

প্রশ্নঃ

আমার এক ভাই বিদেশি মুদ্রা (ডলার, রিয়াল ইত্যাদি) কিনে মজুদ করে রাখেন। পরে যখন দাম বাড়ে, বিক্রি করে দেন। আমার জানার বিষয় হলো, এভাবে মুদ্রা কেনা-বেচা করা কি জায়েয আছে?

-উসমান

উত্তরঃ

জি, এভাবে দুই দেশের মুদ্রা কেনা-বেচা করা জায়েয আছে। শর্ত হল, একই মজলিসে যে কোনও এক প্রকার মুদ্রা প্রাপককে হস্তান্তর করতে হবে।-মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক: ৮/৯০ (আল-মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত); ফাতাওয়া উসমানী: ৩/১৪৮ (যাকারিয়া বুক ডিপো, দেওবন্দ); ফিকহুল বুয়ূ: ২/৭৬৩-৭৬৫ (দারুল কলম, দিমাশক); আহসানুল ফাতাওয়া: ৭/৭৭-৮০ (আল-মাকতাবাতুল আশরাফিয়্যা, দেওবন্দ); কিতাবুন নাওয়াযেল: ১১/৮৯ (আল-মারকাযুল ইলমী, মুরাদাবাদ)

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৭-৭-৪৪

০৯-২-২৩

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

25 Nov, 13:59


দুই দেশের মুদ্রা বিনিময় করা কি বৈধ?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a8/%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%a6-%e0%a6%98%e0%a7%81%e0%a6%b7/%e0%a6%a6%e0%a7%81%e0%a6%87-%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a7%9f-%e0%a6%95/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

24 Nov, 12:39


ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো নামায পরবর্তী ওয়াক্তে আদায় করার বিধান

প্রশ্নঃ

বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা আছে, তাই একটি বিষয় জানতে চাচ্ছি, কখনও যদি কাজের সময় নামাযের ওয়াক্ত হয়ে যায় এবং তখন নামায আদায় না করতে পারি, তাহলে যদি পরবর্তী নামাযের সাথে এক সাথে পড়ে নিই, যেমন যোহরের নামায আসরের সময় একসাথে পড়ে নিই, এক্ষেত্রে কি আমার নামায সহীহ হবে?

-মুহাম্মাদ সুমন

উত্তরঃ

প্রত্যেক নামায সেই নামাযের ওয়াক্তে আদায় করা ফরয। সুতরাং এক ওয়াক্তের নামায অন্য ওয়াক্তে আদায় করার সুযোগ নেই। এটা অনেক বড় গুনাহ। এজন্য যত কাজই থাকুক, সব রেখে নামাযের সময় নামায আদায় করে নিতে হবে।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

إِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَوْقُوتًا. -النساء:103

নিশ্চয়ই নামায মুমিনদের ওপর এমন এক অবশ্য পালনীয় কাজ, যা সময়ের সাথে আবদ্ধ।” – (সূরা নিসা: ০৪:১০৩)

আয়াতের তাফসীরে ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহ. (৬০৬ হি.) বলেন,

واعلم أنه تعالى بين في هذه الآية أن وجوب الصلاة مقدر بأوقات مخصوصة اهـ. – التفسير الكبير (11/ 208، الناشر: دار إحياء التراث العربي – بيروت).

“জেনে রাখো, আল্লাহ তাআলা উক্ত আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, নামাযের ফরয বিশেষ সময়ের সাথে নির্ধারিত।” –তাফসীরে কাবীর: ১১/২০৮, (দারু ইহয়াইত তুরাস)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

العهد الذي بيننا وبينهم الصلاة، فمن تركها فقد كفر. -جامع الترمذي ت بشار (4/ 310 رقم الحديث: 2621 دار الغرب الإسلامي) وقال الترمذي: هذا حديث حسن صحيح.

“আমাদের এবং কাফেরদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল হলো, নামায। যে নামায ছেড়ে দিল সে কুফরী করলো।” –জামিউত তিরমিযী: ৪/৩১০ হাদীস নং: ২৬২১ (দারুল গরবিল ইসলামী)

অপর হাদীসে নবীজি ইরশাদ করেন,

خمس صلوات افترضهن الله على عباده، من أحسن وضوءهن وصلاهن لوقتهن، فأتم ركوعهن وسجودهن وخشوعهن كان له عند الله عهد أن يغفر له، ومن لم يفعل فليس له عند الله عهد إن شاء غفر له، وإن شاء عذبه. -مسند أحمد (37/377 ط الرسالة: رقم الحديث: 22704) سنن أبي داود (1/316 رقم الحديث: 425 دار الرسالة العالمية الطبعة الأولى، 1430 هـ)

“আল্লাহ তাআলা পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। যে ব্যক্তি সুন্দররূপে অযু করে ওয়াক্ত মতো পূর্ণাঙ্গ রূপে রুকু-সিজদা ও খুশু-খুযুর সাথে তা আদায় করবে, তাকে ক্ষমা করার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার প্রতিশ্রুতি থাকবে। আর যে তা করবে না, তার জন্য আল্লাহ তাআলার কোনও প্রতিশ্রুতি থাকবে না। আল্লাহ তাআলা চাইলে তাকে ক্ষমা করবেন, চাইলে শাস্তি দিবেন।” –মুসনাদে আহমদ: ৩৭/৩৭৭, হাদীস নং: ৩৩৮১৫ (মুআসসাসাতুর রিসালাহ); সুনানে আবু দাউদ: ১/৩১৬ হাদীস নং: ৪২৫ (দারুর রিসালাতিল আলামিয়্যাহ)

হ্যাঁ, কেউ যদি এমন কঠিন কোনও পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়, যার ফলে নামায আদায় করা কোনোভাবেই সম্ভব না হয়, যেমন খন্দকের যুদ্ধে কঠিন আক্রমণের মুখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হয়েছিলো, তাহলে সে ক্ষেত্রে বিধান হল, ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেলেও পরের ওয়াক্তের নামাযের আগে আগে উক্ত নামায কাযা করে নেওয়া-জামিউত তিরমিযী: ১/২৪৭, হাদীস নং ১৮০ (দারুল গারবিল ইসলামী); রদ্দুল মুহতার: ২/৬২ (দারুল ফিকর)

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-০৭-১৪৪৪ হি.

২৮-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

24 Nov, 12:39


ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো নামায পরবর্তী ওয়াক্তে আদায় করার বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9c/%e0%a6%87%e0%a6%9a%e0%a7%8d%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a7%8b-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%af/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

22 Nov, 12:46


বন্দী বিনিময়ের বিধান

প্রশ্নঃ

তাগুত বাহিনীর কোনও সদস্যকে গ্রেফতার করে তার বিনিময়ে তাদের হাতে থাকা কোনও নিরপরাধ মুসলিম বন্দীকে মুক্ত করা কি জায়েয হবে?

-আবদুল মুকীত

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

এটি শুধু জায়েযই নয়; অনেক বড় নেক কাজও বটে। বরং কারও সামর্থ্য থাকলে তার ওপর অর্পিত শরঈ ওয়াজিব দায়িত্ব। তবে এজন্য অবশ্যই বিজ্ঞ আলেম ও মুজাহিদদের পরামর্শ কাম্য। যাতে কোনও ভুলের কারণে মুসলিমদের উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি না হয়ে যায়।-সহীহ বুখারী: ৪/৬৮ হাদীস নং: ৩০৪৬, (দারু তওকিন নাজাহ); ফাতহুল বারী: ৬/১৬৭ (দারুল ফিকর); উমদাতুল কারী: ১৪/২৯৪, (দারু ইহয়াইত তুরাস আল-আরাবী); ফয়যুল বারী: ৪/২৩৮, (দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ); জামিউত তিরমিযী: ৩/১৮৭, (দারুল গারবিল ইসলামী); শরহুস সিয়ারিল কাবীর, পৃ: ১৫৭৮, (আশ-শারিকাতুশ শারকিয়্যাহ); ফাতহুল কাদীর: ৫/৪৭৪, (দারুল ফিকর); রদ্দুল মুহতার: ৪/১৩৯, (দারুল ফিকর); আল-মাওসূওআতুল ফিকহিয়্যাহ: ৩২/৬২, (ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত); আল-মুগনী: ৯/২২১, (মাকতাবাতুল কাহেরা)

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৭-৭-৪৪

০৯-২-২৩

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

22 Nov, 12:46


বন্দী বিনিময়ের বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0/%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2/%e0%a6%ac%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%80-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a7%9f%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%a8/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

21 Nov, 15:57


হারাম সম্পদ দিয়ে ক্রয়কৃত বস্তু ব্যবহারের বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a8/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%8d%e0%a6%aa%e0%a6%a6-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%95/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

21 Nov, 15:57


হারাম সম্পদ দিয়ে ক্রয়কৃত বস্তু ব্যবহারের বিধান

প্রশ্নঃ

আমরা জানি, ব্যাংক কর্মকর্তার ব্যাংক-উপার্জনটা হারাম। তা থেকে হাদিয়া গ্রহণ করা জায়েয নেই। এখন এই ব্যক্তি তার হারাম উপার্জন থেকে যেই পণ্য ক্রয় করে রেখেছে, আমাদের জন্য কি তা ব্যবহার করা বৈধ হবে? যেমন, তার মালিকানাধীন কেতলি দিয়ে পানি গরম করে তা দিয়ে চা বানিয়ে পান করা? তার কেনা জায়নামাযে নামায পড়া ইত্যাদি।

-আবদুল হাফীয

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد:

হারাম সম্পদ দিয়ে ক্রয়কৃত বস্তু ক্রেতার জন্য ব্যবহার যেমন নাজায়েয, অন্যদের জন্যও ব্যবহার নাজায়েয। -বাদায়েউস সানায়ে: ৭/১৫৫, রদ্দুল মুহতার: ৫/৯৮

সুতরাং যদি সেগুলো তার হারাম উপার্জন থেকে ক্রয়কৃত বলে আপনি নিশ্চিত হোন, তাহলে আপনাদের জন্যও তা ব্যবহার জায়েয হবে না। আর যদি হালাল সম্পদ দিয়ে ক্রয়কৃত বলে নিশ্চিত হোন, তাহলে ব্যবহার জায়েয।

আর যদি কোন সম্পদ দিয়ে ক্রয় করা হয়েছে তা নিশ্চিত না হোন, তাহলে দেখতে হবে, তার অধিকাংশ সম্পদ হালাল, না হারাম। যদি অধিকাংশ হালাল হয়, তাহলে ব্যবহার করতে পারবেন। অধিকাংশ হারাম হলে, ব্যবহার করতে পারবেন না।-আল মুহিতুল বুরহানী: ৫/৩৬৭, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩৪২

তবে ওই জায়নামাযে আদায়কৃত নামায সহীহ হয়েছে। পুনরায় তা আর আদায় করতে হবে না। -মাবসুতে সারাখসী: ৬/৫৭, বাহরুর রায়েক: ২/১৪৯

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৭-৭-৪৪

০৯-২-২৩

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

20 Nov, 12:40


বিয়ে করলে জিহাদ থেকে সরে পড়ার আশঙ্কা হলে করণীয় কী?

প্রশ্নঃ

আমি বেশ কজন ভাইকে দেখেছি, তারা বিয়ে করার পর জিহাদ থেকে সরে পড়েছেন। আমার ভয় হচ্ছে, আল্লাহ না করুন আমার ক্ষেত্রেও এমন হয় কি না। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কী?

তাছাড়া বিয়ের আগেই যদি কারও মাঝে ফরয আদায়ে কমতি থাকে তাহলে বিয়ের পর তা আরও বেশি হওয়া স্বাভাবিক। এই অবস্থায় তার জন্য বিয়ের হুকুম কী হবে? কিংবা যদি এমন আশঙ্কা হয় যে, বিয়ের পর ফরয ঠিক থাকবে না তাহলে করণীয় কী? একটু বিস্তারিত জানালে অনেক উপকৃত হতাম।

-হাবিব নাজ্জার

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

বিয়ে শরীয়তের স্বতন্ত্র একটি বিধান। বিয়ের মাধ্যমে দীনের পূর্ণতা আসে। হাদীস শরীফে ইরশাদ হচ্ছে,

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: “إِذَا تَزَوَّجَ الْعَبْدُ فَقَدْ كَمُلَ نِصْفُ الدِّينِ، فَلْيَتَّقِ اللهَ فِي النِّصْفِ الْبَاقِي “.- شعب الإيمان (7/ 341 رقم الحديث: 5100 مكتبة الرشد، الرياض، الطبعة: الأولى: 1423 هـ) وقال البوصري (840هـ) في “إتحاف الخيرة” (4/10 دار الوطن، الرياض، الطبعة: الأولى، 1420 ه) : وقال الحاكم: صحيح الإسناد. وليس كما زعم، لضعف عبد الرحيم بن زيد وأبيه.

“আনাস বিন মালিক রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন বান্দা বিয়ে করে, তার অর্ধেক দীন পূর্ণতা লাভ করে। সুতরাং সে যেন বাকি অর্ধেকের ক্ষেত্রে আল্লাহকে ভয় করে।” -শুআবুল ঈমান, বায়হাকী: ৭/৩৪১, হাদীস নং: ৫১০০, (মাকতাবাতুর রুশদ, রিয়াদ)

বিশেষ জরুরি অবস্থা ছাড়া স্বাভাবিক অবস্থায় বিয়ের সঙ্গে জিহাদের ফরয আদায়ের কোনো বৈপরীত্য নেই। সুতরাং এঅবস্থায় বিয়েকে জিহাদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। বিশেষ কোনো কারণ না থাকলে শরীয়তের প্রতিটি বিধানের ওপরই স্বাভাবিক গতিতে আমল করার চেষ্টা করা জরুরি।

হ্যাঁ, বিয়ে করলে স্বভাবতই একজন মনুষের কাঁধে অতিরিক্ত কিছু দায়-দায়িত্ব আরোপিত হয়। যার ফলে অন্য কাজের সময় সুযোগ কমে আসে এবং কারও জন্য একই সঙ্গে দুই কাজ কিছুটা কঠিন হওয়াও বিচিত্র নয়। কিন্তু পরিবারবর্গের ভরণ পোষণ ও দেখাশোনাও একটি ফরয কাজ। একারণে জিহাদের কাজে বিয়ের আগের তুলনায় যৌক্তিক পরিমাণে সময় ও শ্রম কম দেয়া দোষণীয় নয়। যতক্ষণ সম্ভব সমন্বয় করে সবগুলো ফরযই আদায় করে যেতে হবে।

কিন্তু কেউ যদি মনে করেন, বিয়ের কারণে জিহাদের পথ থেকে একদমই ছিটকে পড়তে হবে, এটা মোটেও ঠিক নয়। বিয়ে জিহাদ থেকে ছিটকে পড়ার কোনো কারণ নয়। মূল কারণ অলসতা, ঈমান, আমল, তাকওয়া, তাহারাত এবং হিম্মত ও মনোবলের দুর্বলতা। সুতরাং তার জন্য আবশ্যক হলো, কোনো বিজ্ঞ ও মুত্তাকি আলেমের সঙ্গে পরামর্শ করে নিজের দুর্বল জায়গাগুলো চিহ্নিত করা এবং সেগুলোর চিকিৎসা ও উন্নয়নে সচেষ্ট হওয়া।

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৭-৭-৪৪

০৯-২-২৩

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

20 Nov, 12:40


বিয়ে করলে জিহাদ থেকে সরে পড়ার আশঙ্কা হলে করণীয় কী?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0/%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%a5%e0%a7%87%e0%a6%95%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%aa/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

19 Nov, 11:58


ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ জামাআতের সাথে নামায পড়ার সুযোগ না দিলে করণীয় কী?

প্রশ্নঃ

আমি একটি ফ্যাক্টরিতে কাজ করি। কাজ চলাকালে মসজিদে জামাআতের সাথে নামায পড়ার জন্য অপারেটর ভাইয়ের কাছে অনুমতি চাইলে, ভাই বলেন, তুমি ফ্লোরের পাশেই নামায পড়ে নাও। কোনো সময় সুযোগ পেলে মসজিদে যাই, বেশির ভাগ সময় জামাআতে নামায পড়তে পারি না। আমি এখন কী করতে পারি? আমি কি এই চাকরিটা ছেড়ে দেবো?

-আদিল

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

আপনার এবং আপনার অধীনস্থদের যদি জীবিকা নির্বাহের ভিন্ন ব্যবস্থা থাকে অথবা জীবিকা নির্বাহের জন্য এমন কোনও বিকল্প ব্যবসা বা চাকরির ব্যবস্থা করতে পারেন, যেখানে আপনি নামাযগুলো জামাআতের সঙ্গে আদায় করতে পারবেন, তাহলে এই চাকরি ছেড়ে দিতে পারেন। পক্ষান্তরে জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে, এই চাকরি ছাড়া ঠিক হবে না। সে ক্ষেত্রে চাকরি চালিয়ে যান এবং পাশাপাশি জামাআতের সঙ্গে নামায আদায়ের মতো ভালো বিকল্পের জন্য দোয়া এবং চেষ্টা অব্যাহত রাখুন। নামাযের সুযোগ দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকেও বুঝানোর চেষ্টা করুন।-রদ্দুল মুহতার: ১/৫৫৬, ৬/৭০ দারুল ফিকর, বৈরুত; কাশশাফুল কিনা’: ১/৪৯৬ আলামুল কুতুব; ফাতাওয়া মাহমুদিয়া: ৬/৪১৪ জামিয়া ফারুকিয়া করাচি; আল-ইসলাম সুওয়াল ওয়া জওয়াব, ফাতওয়া নং: ৭২৮৯৫

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৭-৭-৪৪

০৯-২-২৩

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

19 Nov, 11:57


ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ জামাআতের সাথে নামায পড়ার সুযোগ না দিলে করণীয় কী?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9c/%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%86%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a5%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%af-%e0%a6%aa%e0%a7%9c%e0%a6%be%e0%a6%b0/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

18 Nov, 12:09


মিডিয়া কর্মীদের উপার্জন কী হালাল, না হারাম?

প্রশ্নঃ

মিডিয়া কর্মীদের উপার্জন কী হালাল? না, হারাম? যদি হারাম হয় তাহলে তাদের করণীয় কী?

-হামযা হিবাতুল্লাহ

উত্তরঃ

সততার সঙ্গে এবং তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের শরীয়াহ নীতি মেনে কেউ মিডিয়ার কাজ করলে অবশ্যই তার পারিশ্রমিক হালাল হবে। তবে বর্তমান অধিকাংশ মিডিয়া কর্মীই প্রচুর মিথ্যাচার করে। যা প্রকাশ করা নাজায়েয, অসৎ উদ্দেশ্যে তা প্রকাশ করে। আবার যা প্রচার করা জরুরি, তা গোপন করে। কুরআন সুন্নাহ ও ইসলামের প্রতি মানুষের মধ্যে ঘৃণা সৃষ্টির চেষ্টা করে। কুফর শিরক ও বিজাতি সভ্যতা সংস্কৃতিকে স্বাভাবিকরণ ও সৌন্দর্যায়নের চেষ্টা করে। এসব অন্যায় কর্মের পারিশ্রমিক হালাল নয়। তাদের করণীয় হচ্ছে, হারাম উপায়ে উপার্জিত অর্থ থেকে দায়মুক্তির জন্য তা দান করে দেওয়া এবং তাওবা করে এই পথ থেকে ফিরে আসা। -আল-ফাতাওয়াত তাতারখানিয়া: ১৫/১৩০-১৩২, (যাকারিয়া বুক ডিপো); মাজমুউল ফাতাওয়া: ২৮/৪২১-৪২২ (মাজমাউল মালিক ফাহাদ)।

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-০৭-১৪৪৪ হি.

২৮-০১-২০২৩ ঈ

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

18 Nov, 12:08


মিডিয়া কর্মীদের উপার্জন কী হালাল, না হারাম?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%a1%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%89%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9c%e0%a6%a8/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

17 Nov, 12:00


কিতালের জন্য কি পিতা-মাতার অনুমতি জরুরি?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0/%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2/%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%af-%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%aa%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%be/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

17 Nov, 12:00


কিতালের জন্য কি পিতা-মাতার অনুমতি জরুরি?

প্রশ্নঃ

কিছু লোককে বলতে শুনি, কিতালে যাওয়ার জন্য নাকি পিতা-মাতার অনুমতি নিতে হয়। আসলেই কি বিষয়টি এমন? পিতা-মাতার অনুমতি ছাড়া কি কিতাল করা যায় না?

-হাম্মাদ, মোমেনশাহী

উত্তরঃ

কিতাল ফরযে আইন হলে পিতা-মাতার অনুমতি নিতে হয় না; বরং তখন পিতা-মাতা নিষেধ করলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কিতাল করা জরুরি।

ইমাম বুরহানুদ্দীন বুখারী রহিমাহুল্লাহ (৬১৬ হি.) বলেন,

قال محمد رحمه الله: إذا جاء النفير، فقيل لأهل مدينة أو مصر قريب من العدو، وقد جاء العدو يريدون أنفسكم وذراريكم وأموالكم، فلا بأس بأن يخرج الرجل بغير إذن والديه، وإن نهياه فلا بأس بأن يعصيهما إذا كان ممن يقدر على الجهاد، وقد ذكرنا هذا، وليس للوالدين أن ينهيا الولد عن الخروج في هذه الحالة؛ لأن القتال في هذه الحالة فرض عين، وليس لهما أن ينهيا الولد عما هو فرض عين. -المحيط البرهاني في الفقه النعماني (8/112-113 ط. إدارة القرآن، كراتشي)

“ইমাম মুহাম্মদ রহিমাহুল্লাহ বলেন, যখন নাফীরে আম হবে অর্থাৎ শত্রুদের নিকটবর্তী কোনো জনপদের অধিবাসীদের জানানো হবে, তোমাদের জান-মাল, সহায়-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর জন্য শত্রুরা চলে এসেছে; তখন পিতা-মাতার অনুমতি ব্যতীত যুদ্ধে বের হতে কোনও অসুবিধা নেই। পিতা-মাতা যেতে বারণ করলে যুদ্ধ করার সক্ষমতা থাকলে তাদের অবাধ্য হতেও দোষ নেই। এটা আমরা আগেই উল্লেখ করেছি। এমন পরিস্থিতিতে পিতা-মাতার জন্য সন্তানকে যুদ্ধে যেতে বারণ করার অনুমতি নেই। কারণ, এই অবস্থায় জিহাদ ফরযে আইন। ফরযে আইন কাজ থেকে সন্তানকে বারণ করার অধিকার পিতা-মাতার নেই।”–আলমুহিতুল বুরহানি: ৮/১১২ (ইদারাতুল কুরআন, করাচি)

আরও দেখুন, তাফসীরুল কুরতুবী: ৮/১৫১ (দারুল কুতুবিল মিসরিয়্যাহ); ফাতহুল বারী: ৬/১৪০ (দারুল ফিকর); শারহুস সিয়ারিল কাবীর, পৃ: ৯৯ (আশ-শারিকাতুশ শারকিয়্যাহ); আল-ফাতাওয়াত তাতারখানিয়া: ৭/৯; রদ্দুল মুহতার: ৪/১২৭ (দারুল ফিকর)

তবে পিতা-মাতা যদি অক্ষম হন এবং একমাত্র আপনার উপর নির্ভরশীল হন, তাদের দেখাশোনা ও ভরণ পোষণের বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না থাকে, তখন তাদের দেখাশোনা ও ভরণ পোষণ করাও আপনার উপর ফরযে আইন। এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়ে কোনও বিজ্ঞ মুফতী সাহেব থেকে মাসআলা জেনে নিবেন ইনশাআল্লাহ।

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-০৭-১৪৪৪ হি.

২৮-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

16 Nov, 12:49


তাগুতের আদালতে বিচারপ্রার্থী হওয়ার বিধান

প্রশ্নঃ

কুরআনে তাগুতের কাছে বিচার নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আমাদের দেশে তো এখন ইসলামী হুকুমত নেই। তাহলে আমরা সন্ত্রাসীদের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হলে কিংবা জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিষয়াদির জন্য কোথায় বিচারপ্রার্থী হবো?

-আবু হানিফা

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

রাষ্ট্রীয় বিচার ব্যবস্থা যেহেতু শরীয়াহ সম্মত নয়, এজন্য কোনো বিষয়ে মুসলিমদের পরস্পর বিবাদ হলে, তাদের সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের ফরয দায়িত্ব হল, বিজ্ঞ আলেমদের শরণাপন্ন হওয়া এবং এবিষয়ে শরীয়তের ফায়সালা কী, তা জেনে সে অনুযায়ী আমল করা। প্রয়োজনে যেসব এলাকায় মুসলিমদের সামাজিক বা পঞ্চায়েত কমিটি আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া। শরীয়াহ সম্মত বিচার বাস্তবায়নে সামর্থ্য অনুযায়ী সার্বিক সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসা পঞ্চায়েত কমিটিসহ এলাকার সকল মুসলিমের দায়িত্ব। বিশেষত নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের দায়িত্ব এখানে সবচেয়ে বেশি।-গিয়াসুল উমাম, পৃ: ৩৯১ (মাকতাবাতু ইমামিল হারামাইন); আয-যাখিরাহ, ইমাম করাফী (৬৮৪ হি.): ১০/৪৪ (দারুল গারবিল ইসলামী); আল-হিলাতুন নাজেযাহ, পৃ: ২৭০-২৭২ (মাকতাবায়ে রযি, দেওবন্দ); ইমদাদুল মুফতীন: ২/৮৯৪ (দারুল ইশায়াত)।

তবে এটা তখনই সম্ভব, যখন উভয় পক্ষই শরীয়াহ সম্মত বিচার চায় অথবা পঞ্চায়েত ও নেতৃস্থানীয় লোকদের; সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপর বিচার বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা থাকে। পক্ষান্তরে আমি শরীয়াহ বিচার চাইলেও, প্রতিপক্ষ যখন শরীয়াহ বিচার চাইবে না বা বিচারের মুখোমুখি হতে চাইবে না এবং পঞ্চায়েত ও সমাজের নেতৃবর্গের শরীয়াহ বিচার বাস্তবায়নের সক্ষমতাও থাকবে না, তখন বাধ্য হয়ে জুলুম থেকে বাঁচার জন্য বা নিজের হক আদায়ের জন্য কিছু শর্ত সাপেক্ষে তাগুতের আদালতে বিচার চাওয়া জায়েয। শর্তগুলো হচ্ছে;

১. শরীয়াহ বিচারই যে উত্তম, পূর্ণাঙ্গরূপে এই বিশ্বাস লালন করা।

২. প্রতিপক্ষের উপর জুলুম না করা।

৩. আমার জন্য যদি এমন কোনো হকের ফায়সালা হয়, যা আমার নয়, তাহলে তা প্রকৃত হকদারকে ফিরিয়ে দেওয়া।

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৭-৭-৪৪

০৯-২-২৩

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

16 Nov, 12:48


তাগুতের আদালতে বিচারপ্রার্থী হওয়ার বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%88%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%86%e0%a6%95%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a6%be/%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a6%9a%e0%a6%bf%e0%a6%a4-%e0%a6%86%e0%a6%87%e0%a6%a8/%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%a4%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%a6%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

15 Nov, 12:15


দীর্ঘ দিন দূরে থাকার পর তালাক দিলে ইদ্দতের হুকুম কী?

প্রশ্নঃ

স্বামী স্ত্রী দেড় বছর ধরে আলাদা। এ অবস্থায় স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেয়। এক্ষেত্রে ইদ্দতের হুকুম কী?

-আবদুল হক

উত্তরঃ

এ অবস্থায়ও তালাকের পর থেকেই ইদ্দত পালন করতে হবে।–মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ: ১০/১৩১ হাদীস নং: ১৯২৫১ দারুল কিবলাহ; বাদায়েউস সানায়ে: ৩/১৯২ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত; রদ্দুল মুহতার: ৩/৫২৯ দারুল ফিকর, বৈরুত; আল-মওসুয়্যাহ ফিকহিয়্যাহ: ২৯/৩০৭ ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত; ইমদাদুল মুফতিন: ২/৫৮৬ যাকারিয়া বুক ডিপো; খাইরুল ফাতাওয়া: ৫/২৮৪ যাকারিয়া বুক ডিপো

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৭-৭-৪৪

০৯-২-২৩

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

15 Nov, 12:15


দীর্ঘ দিন দূরে থাকার পর তালাক দিলে ইদ্দতের হুকুম কী?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%80/%e0%a6%a6%e0%a7%80%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%98-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%a8-%e0%a6%a6%e0%a7%82%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%a5%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a6%b0-%e0%a6%a4%e0%a6%be/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

14 Nov, 12:53


সময়মতো হজ করিনি, এখন করণীয় কী?

প্রশ্নঃ

আমার উপর যখন ফরয হয় তখন হজের খরচ ছিলো ৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। যা এখন ৬ লাখ ৮৩ হাজারে পৌঁছেছে। বর্তমানে আমার কাছে নগদ অর্থ আছে ৭ লাখ ৫০ হাজারের মতো। আমি একজন সাধারণ ব্যবসায়ী। এ মুহূর্তে হজে গেলে অবশিষ্ট সম্পদ পরিবার ও ব্যবসার জন্য যথেষ্ট হবে না। সম্পদের পরিমাণ শুধু বাড়ির জায়গাটুকু। এদিকে ব্যবসার অবস্থাও মন্দা যাচ্ছে। খরচের তুলনায় আয় কম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, যা দিন দিন সামর্থ্যের বাহিরে চলে যাচ্ছে। দীনের বিভিন্ন তাগাদা তো আছেই।

সারকথা হলো, আমার উপর হজ ফরয হওয়ার পর এখন আর্থিক অবস্থা অনেকাংশেই আমার অনুকূলে নেই। এমতাবস্থায় আমি কী করতে পারি? হজে যাবো, নাকি সার্বিক হালাত বিবেচনা করে অবস্থা উন্নতির জন্য আরও বিলম্ব করবো?

উল্লেখ্য, যখন আমার উপর হজ ফরয হয়েছিলো, তখন আমি চাইলে স্বাভাবিকভাবেই হজ করতে পারতাম। কিন্তু অবহেলা করে দেরি করেছি, যার ফলে বর্তমানে এই অবস্থার মুখোমুখি হয়েছি।

-আবদুল মুমিন

উত্তরঃ

হাদীস শরীফে এসেছে,

عن أبي أمامة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من لم يمنعه عن الحج حاجة ظاهرة، أو سلطان جائر، أو مرض حابس فمات ولم يحج، فليمت إن شاء يهوديا، وإن شاء نصرانيا» -(أخرجه الدارمي في سننه (1826)، الناشر: دار المغني للنشر والتوزيع، المملكة العربية السعودية). وقال الإمام البيهقي رحمه الله: وهذا وإن كان إسناده غير قوي فله شاهد من قول عمر بن الخطاب رضي الله عنه اهـ. –السنن الكبرى (4/546)، دار الكتب العلمية.

“আবু উমামা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তিকে স্পষ্ট অভাব বা জালিম শাসক অথবা সফরে বাধাপ্রদানকারী অসুস্থতা; হজ পালনে বাধা দেয়নি, অথচ সে হজ না করে মৃত্যুবরণ করল, সে চাইলে ইহুদী হয়ে মৃত্যুবরণ করুক, না হয় খ্রিস্টান হয়ে মৃত্যু বরণ করুক (তাতে আমার কিছু যায় আসে না) ।” –সুনানে দারেমী, হাদীস নং: ১৮২৬

হযরত উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

من مات وهو موسر لم يحج، فليمت على أي حال شاء، يهوديا، أو نصرانيا. –(أخرجه ابن أبي شيبة في المصنف (14670)، شركة دار القبلة) وقال الشيخ عوامة: إسناده صحيح.

وقال ابن الملقن رحمه الله (804هـ): ورواه سعيد بن منصور بلفظ: «لقد هممت أن أبعث رجالا إلى هذه الأمصار فينظروا كل من كان له جدة ولم يحج؛ فيضربوا عليهم الجزية (ما هم بمسلمين) » . وقال الحافظ أبو محمد المنذري: إسناده حسن، شاهد لحديث أبي أمامة اهـ. – البدر المنير (6/ 38) الناشر: دار الهجرة للنشر والتوزيع – الرياض-السعودية

“যে ব্যক্তি ধনী হয়ে মৃত্যুবরণ করলো, অথচ সে হজ করলো না, সে যে অবস্থায় ইচ্ছা মৃত্যুবরণ করুক; ইহুদী হয়ে বা খ্রিস্টান হয়ে।” –মুসান্নাফ, ইবনু আবী শাইবাহ, হাদীস নং: ১৪৬৭০; হাদীসটি সহীহ।

…অপর বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন: “আমার ইচ্ছে হয়েছিলো, এসব শহরে কিছু লোক প্রেরণ করি, যারা সম্পদ আছে তারপরও হজ করেনি এমন প্রত্যেকটি লোককে খুঁজে বের করে তাদের উপর জিযিয়া আরোপ করবে…।” –সুনানে সায়ীদ বিন মানসূর, দেখুন- আলবাদরুল মুনির: ৬/৩৮

উল্লিখিত হাদীসসমূহ থেকে পরিষ্কার বুঝা যায়, হজ ফরয হওয়ার পর তা আদায় না করা কতটা ভয়াবহ। বস্তুত হজ ফরয হওয়ার পর বিলম্ব না করে যত দ্রুত সম্ভব আদায় করে নেওয়া জরুরি। বিলম্ব করা নাজায়েয।

হাদীসে এসেছে,

عن ابن عباس قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ” تعجلوا إلى الحج – يعني: الفريضة – فإن أحدكم لا يدري ما يعرض له “. –أخرجه أحمد في مسنده (2867)، (الناشر: مؤسسة الرسالة) وقال الأرنؤوط: حديث حسن.

“ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা দ্রুত হজ কর, -অর্থাৎ ফরয হজ-। কারণ তোমাদের কেউই জানে না, সামনে সে কোন পরিস্থিতির শিকার হবে।” –মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং: ২৮৬৭

অপর বর্ণনায় এসেছে,

قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم -: “من أراد الحج فليتعجل، فإنه قد يمرض المريض، وتضل الضالة، وتعرض الحاجة”. أخرجه ابن ماجه في سننه (2883)، (الناشر: دار الرسالة العالمية)، وقال الارنؤوط: حديث حسن.

“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি হজের সংকল্প করে, সে যেন অবিলম্বে তা আদায় করে। কারণ মানুষ কখনও অসুস্থ হয়ে যায়, কখনও প্রয়োজনীয় জিনিস বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং কখনও অপরিহার্য প্রয়োজন সামনে এসে পড়ে।” –সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং: ২৮৮৩

সুতরাং এখন আপনার কর্তব্য, আর কোনো বিলম্ব না করে হজ আদায় করে নেওয়া। অবহেলাবশত বিলম্বের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা। ইনশাআল্লাহ তিনি ক্ষমা করবেন।

আপনি যদি আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহর উপর ভরসা রেখে বর্তমান অভাব অনটনের মধ্যেও হজ আদায় করেন, আল্লাহ আপনার রিযিকের অভাব অনটনসহ সকল সঙ্কট দূর করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

14 Nov, 12:53


}وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًا (2) وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا} [الطلاق: 2، 3[

“যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার উত্তরণের পথ করে দেন এবং তাকে এমনভাবে রিযিক দান করেন, যা সে কল্পনাও করে না। যে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে, তিনি তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাঁর কর্ম সম্পাদন করেই ছাড়েন। আর তিনি সব কিছুর জন্য একটি পরিমাপ নির্ধারিত করেছেন।” (সূরা তালাক: ৬৫:০২-০৩)

আরও ইরশাদ করেন,

}وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مِنْ أَمْرِهِ يُسْرًا (4) ذَلِكَ أَمْرُ اللَّهِ أَنْزَلَهُ إِلَيْكُمْ وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ وَيُعْظِمْ لَهُ أَجْرًا (5)} [الطلاق: 4، 5[

“যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার বিষয় সহজ করে দেন। এ আল্লাহর নির্দেশ, যা তিনি তোমাদের প্রতি নাযিল করেছেন। আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার গুনাহ ক্ষমা করে দেন এবং তাকে বড় প্রতিদান দেন।” (সূরা তালাক: ৬৫:০৪-০৫)

হাদীসে এসেছে,

عن عبد الله بن مسعود قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: تابعوا بين الحج والعمرة، فإنهما ينفيان الفقر والذنوب كما ينفي الكير خبث الحديد، والذهب، والفضة، وليس للحجة المبرورة ثواب إلا الجنة. –أخرجه الترمذي في سننه (410) (تحقيق بشار)، وقال الترمذي: حسن صحيح غريب.

“আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা ধারাবাহিক হজ ও উমরা আদায় করতে থাকো। এ দুটো আমল দারিদ্র্য ও গুনাহ বিদূরিত করে। যেমন ভাটার আগুন লোহা ও সোনা-রূপার ময়লা-জং দূরীভূত করে। একটি কবুল হজের প্রতিদান তো জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।” –সুনানে তিরমিযী হাদীস নং: ৪১০; হাদীসটি সহীহ।

আরও দেখুন:- আলমাবসূত: ৪/১৬৩, দারুল মারিফাহ; হিদায়া: ১/১৩২, দারু ইহয়ায়িত তুরাস; ফাতহুল কাদীর: ২/৪১৪, দারুল ফিকর; রদ্দুল মুহতার: ২/৪৬৬, দারুল ফিকর; জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৪/৯৭

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-০৭-১৪৪৪ হি.

২৮-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

14 Nov, 12:52


সময়মতো হজ করিনি, এখন করণীয় কী?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b9%e0%a6%9c-%e0%a6%93%e0%a6%ae%e0%a6%b0%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a6%ae%e0%a7%9f%e0%a6%ae%e0%a6%a4%e0%a7%8b-%e0%a6%b9%e0%a6%9c-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a6%bf-%e0%a6%8f%e0%a6%96%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%a3%e0%a7%80%e0%a7%9f/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

13 Nov, 12:01


আবহাওয়াবিদদের দেওয়া আগাম সংবাদ কি বিশ্বাস করা যাবে?

প্রশ্নঃ

বর্তমানে ঝড় বৃষ্টির যে আগাম বার্তা দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে আমাদের আকীদা কী হওয়া উচিত? এসব বিশ্বাস করা কি শিরক হবে?

-সাজিদ

উত্তরঃ

আবহাওয়াবিদরা ঝড় বৃষ্টির আগাম বার্তায় যা করেন, তা হচ্ছে, তাদের আবহাওয়া বিষয়ক শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার আলোকে যখন ঝড় বৃষ্টির কোনো লক্ষণ বা পূর্বাভাস দেখেন, তখন বলেন, অমুক এলাকায় অমুক সময় ঝড় বৃষ্টি হতে পারে বা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ঝড় বৃষ্টি হওয়ার নিশ্চিত কোনও সংবাদ তারা দেন না। ঝড় বৃষ্টির এমন আগাম বার্তা আপনি আমি সকলেই কম-বেশি দিতে পারি। আকাশে যখন মেঘ জমে, তখন আমরা বলতে পারি এবং বলি, আজ বৃষ্টি হতে পারে। ঝড়ের লক্ষণ দেখে বলি, ঝড় হতে পারে। আবহাওয়াবিদদের মাঝে আর আমাদের মাঝে পার্থক্য হল, এ বিষয়ক পড়াশোনা অভিজ্ঞতা ও আধুনিক প্রযুক্তি ইত্যাদির কারণে ঝড় বৃষ্টির লক্ষণগুলো তারা আমাদের চেয়ে বেশি বুঝেন এবং আগে বুঝেন।

এ কারণে আমাদের বুঝার আগেই তারা ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনার সংবাদ দিতে পারেন। এভাবে লক্ষণ দেখে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনার সংবাদ দেওয়া এবং ঝড় বৃষ্টি হতে পারে মনে করার মধ্যে আকীদাগত কোনও সমস্যা নেই। -মুয়াত্তা মালিক: ১/১৯২ (দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবী); আত-তামহীদ: ২৪/৩৭৭ (ওযারাতুল আওকাফ, মরক্কো); মাজমুউল ফাতাওয়া: ২৪/২৫৫ (মাজমাউল মালিক ফাহাদ, মদীনা); ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দায়িমা: ১/৬৩৫ (রিয়াসাতু ইদারাতিল বুহুসিল ইলমিয়্যাহ, রিয়াদ); দারুল ইফতা, জামিয়া ইসলামিয়্যাহ বিন্নুরী টাউন, করাচি, ফাতওয়া নং: ১৪৩১০১২০০৪৫৯

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-০৭-১৪৪৪ হি.

২৮-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

13 Nov, 12:01


আবহাওয়াবিদদের দেওয়া আগাম সংবাদ কি বিশ্বাস করা যাবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%86%e0%a6%ac%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be-%e0%a6%86%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a6%ae/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Nov, 12:12


ইলাউস সুনান ১২/৬৪২-৬৪৪ (এদারাতুল কুরআন করাচি)-তেও বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে, সেখানেও দেখে নিতে পারেন ইনশাআল্লাহ।

ফাতাওয়া মাহমুদিয়া: ২/৪৯৩-৪৯৪; ফাতাওয়া হক্কানিয়া (১/১৩৯); কিতাবুন নাওয়াযেল, সালমান মানসুরপুরী: ১/৪১৯ এবং বিন্নুরি টাউন ও দারুল উলূম দেওবন্দের ওয়েবসাইটেও একই কথা বলা হয়েছে।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-০৩-১৪৪৬ হি.

০২-১০-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Nov, 12:12


শাতিমের তাওবা কি কবুল হবে?

প্রশ্ন: কোনো নাস্তিক, শাতেমে রাসূল যদি খাঁটি দিলে তাওবা করে, তাহলে কি তার তাওবা কবুল হবে?

-সাইফুল ইসলাম হায়দার

উত্তর:

بسم الله، والحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد!

কোনো মুসলমান যদি নাস্তিক হয়ে যায় অতঃপর খাঁটি দিলে তাওবা করে ইসলামে ফিরে আসে, আল্লাহ তাআলার কাছে তার তাওবা কবুল হবে এবং আখিরাতে সে নাজাত পাবে। এমনিভাবে কোনো শাতিমে রাসূলও যদি খাঁটি দিলে তাওবা করে, আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করবেন এবং আখিরাতে সে নাজাত পাবে। এ বিষয়ে কারো দ্বিমত নেই।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

{قُلْ يَاعِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ} [الزمر: 53]

“বলে দাও, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজ সত্তার উপর সীমা লংঘন করেছ, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” -সূরা যুমার ৩৯: ৫৩

তবে শাতিমে রাসূল তাওবার দ্বারা আখিরাতে মাফ পেলেও দুনিয়ার বিচারে তার তাওবা কবুল হবে কিনা, অর্থাৎ সে হত্যা থেকে নিষ্কৃতি পাবে কি না, এ বিষয়ে আইম্মায়ে কেরামের দ্বিমত রয়েছে। কারো কারো মতে, সে তাওবা করলেও দুনিয়ার শাস্তি মওকুফ হবে না; বরং তাকে হত্যা করতে হবে। তবে হানাফি ও শাফেয়ি মাযহাবের ফতোয়া হচ্ছে, তাওবা করলে দুনিয়ার বিচারেও শাতিমের তাওবা কবুল হবে এবং সে হত্যা থেকে নিষ্কৃতি পাবে।

তারা বলেন, কোনো মুসলমান কুফর করে মুরতাদ হয়ে গেলে তার তাওবা কবুল হয় এবং তাকে হত্যা করা হয় না। মুরতাদের তাওবা কবুলের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

{كَيْفَ يَهْدِي اللَّهُ قَوْمًا كَفَرُوا بَعْدَ إِيمَانِهِمْ وَشَهِدُوا أَنَّ الرَّسُولَ حَقٌّ وَجَاءَهُمُ الْبَيِّنَاتُ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ (86) أُولَئِكَ جَزَاؤُهُمْ أَنَّ عَلَيْهِمْ لَعْنَةَ اللَّهِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ (87) خَالِدِينَ فِيهَا لَا يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنْظَرُونَ (88) إِلَّا الَّذِينَ تَابُوا مِنْ بَعْدِ ذَلِكَ وَأَصْلَحُوا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ (89)} [آل عمران: 86 – 89]

“আল্লাহ এমন লোকদের কিভাবে হেদায়াত দেবেন, যারা ঈমান আনার পর কুফর অবলম্বন করেছে, অথচ তারা সাক্ষ্য দিয়েছিল যে, রাসূল সত্য এবং তাদের কাছে উজ্জ্বল নিদর্শনাবলীও এসেছিল। আল্লাহ এরূপ জালিমদেরকে হেদায়াত দান করেন না। এরূপ লোকদের শাস্তি হচ্ছে, তাদের প্রতি আল্লাহর, ফিরিশতাদের ও সমস্ত মানুষের লানত। তারই মধ্যে (লানতের মধ্যে) তারা সর্বদা থাকবে। তাদের শাস্তি লাঘব করা হবে না এবং তাদেরকে অবকাশও দেওয়া হবে না। অবশ্য যারা এসব কিছুর পরও তাওবা করবে ও নিজেদেরকে সংশোধন করবে, (তাদের জন্য) আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।” -সূরা আলে ইমরান ০৩: ৮৬-৮৯

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটুক্তি করাও একটি কুফর। এর দ্বারা ব্যক্তি ইসলাম থেকে বের হয়ে মুরতাদ হয়ে যায়। সুতরাং ভুল বুঝতে পেরে তাওবা করে আবার ইসলামে ফিরে আসলে অন্যান্য মুরতাদের মতো তারও তাওবা কবুল হবে এবং তাকে হত্যা করা হবে না।

এ প্রসঙ্গে ইমাম তাকিউদ্দিন সুবকি রহিমাহুল্লাহ (৭৫৬ হি.) বলেন,

وهذه نص في قبول توبة المرتد، وعمومها يدخل فيه الساب. -السيف المسلول على من سب الرسول، ص: 175

“উল্লেখিত আয়াত মুরতাদের তাওবা কবুল হওয়া প্রসঙ্গে স্পষ্ট। এর ব্যাপকতার মধ্যে শাতিমও অন্তর্ভুক্ত হবে।” -আসসাইফুল মাসলুল, পৃ: ১৭৫

ইমাম আবু ইউসুফ রহিমাহুল্লাহ (১৮২ হি.) বলেন,

وأيما رجل مسلم سب رسول الله صلى الله عليه وسلم أو كذبه أو عابه أو تنقصه؛ فقد كفر بالله وبانت منه زوجته؛ فإن تاب وإلا قتل. –كتاب الخراج لأبي يوسف: 199

“যেকোনো মুসলিম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালমন্দ করল বা তাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল বা বদনাম করল অথবা তাঁর শান-মান খাটো করল, সে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কুফর করল! তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয়ে যাবে। যদি সে তাওবা করে ভালো, অন্যথায় তাকে হত্যা করা হবে।” -কিতাবুল খারাজ: ১৯৯

আরও দেখুন- আননুতাফ: ২/৬৯৪; রদ্দুল মুহতার: ৪/২৩১-২৩৫; রসায়েলে ইবনে আবেদিন শামি: ১/৩২৩

শাতিমের তাওবা কবুল হওয়ার আরও একটি দলীল হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক শাতিমকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। শাতিমকে হত্যা করা আবশ্যক হলে তিনি তাদেরকে ক্ষমা করতেন না। -আসসাইফুল মাসলুল, পৃ: ১৭৭

উল্লেখ্য, মুতাআখখিরিন হানাফি ইমামদের কারো কারো কিতাবে বলা হয়েছে, শাতিমে রাসূল তাওবা করলেও তাকে হত্যা করতে হবে। তবে এটি হানাফি মাযহাবের নির্ভরযোগ্য ও ‘মুফতা বিহি’ মত নয়। এ বিষয়ে ইবনে আবিদিন শামি রহিমাহুল্লাহ ‘তাম্বিহুল উলাতি ওয়ালহুক্কাম…’ নামে একটি তাহকীকি পুস্তিকা লিখেছেন। যারা বিস্তারিত তাহকীক জানতে চান পুস্তিকাটি পড়ে নিতে পারেন।

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Nov, 12:12


শাতিমের তাওবা কি কবুল হবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%88%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%86%e0%a6%95%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a6%be/%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%93%e0%a6%ac%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%95%e0%a6%ac%e0%a7%81%e0%a6%b2-%e0%a6%b9%e0%a6%ac%e0%a7%87/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

11 Nov, 14:03


স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার মোহর ও অন্যান্য সম্পদের বিধান

প্রশ্নঃ

আমরা জানি, স্বামী-স্ত্রী কেউ মারা গেলে কিংবা তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে গেলে, মোহরের অবশিষ্ট টাকা পরিশোধ করে দিতে হয়। এটাও জানি, কোনও মেয়ে মারা গেলে, তার রেখে যাওয়া সম্পদ পিতা, স্বামী ও অন্যান্য ওয়ারিশদের মাঝে ফারায়েয অনুসারে বণ্টিত হবে। এখন আমাদের জানার বিষয় হচ্ছে, জনৈক ব্যক্তি তার বিয়েতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মোহর ধার্য করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকা নগদ প্রদান করে। তবে আকদ সম্পন্ন হওয়ার প্রায় মাসখানেক পর, মেয়েকে উঠিয়ে আনার আগেই মেয়েটি মারা যায়। জানার বিষয় হচ্ছে, এমতাবস্থায় ধার্যকৃত মোহরের অবশিষ্ট সম্পূর্ণ টাকা কি স্বামীকে পরিশোধ করতে হবে? যদি করতে হয়, তাহলে এই টাকা কে পাবে? অনুরূপভাবে বিয়ের সময় মোহর বা উপহার স্বরূপ যে স্বর্ণালঙ্কার মেয়েকে দেওয়া হয়েছিলো, তার প্রকৃত হকদার এখন কে হবে? ফারায়েযের মধ্যে এই অলঙ্কারগুলোও অন্তর্ভূক্ত হবে কিনা? আশা করি, দলীল-প্রমাণের আলোকে সঠিক মাসআলাটি জানিয়ে বাধিত করবেন।

-আবদুল হান্নান, ঢাকা

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

স্ত্রীকে উঠিয়ে আনা না আনার সঙ্গে মোহরের কোনও সম্পর্ক নেই; বরং স্বামী-স্ত্রীর যে কেউ মৃত্যুবরণ করলেই ধার্যকৃত পূর্ণ মোহর স্ত্রীর প্রাপ্য হয়ে যায়। সুতরাং স্ত্রীর প্রাপ্য মোহরের কোনও অংশ যদি তার জীবদ্দশায় স্বামী পরিশোধ না করে থাকেন, তাহলে এখন (তার ‍মৃত্যুর পর হলেও) স্বামীর পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে তা পরিশোধ করতে হবে। -হিদায়া: ১/৯৯ (দারু ইহয়াইত তুরাস, বৈরুত); রদ্দুল মুহতার: ৩/১২৩ (দারুল ফিকর, বৈরুত); বাদায়িউস সানায়ে: ৩/৪৯৩, ৩/৫০০, (দারুল হাদীস, কায়রো); আল-মাওসূআতুল ফিকহিয়া: ৩৯/১৭৩, (ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত)

স্ত্রীর মৃত্যুর আগে বা পরে পাওয়া মোহর, বিয়ের মধ্যে পাওয়া স্বর্ণালঙ্কার ও বিভিন্ন উপঢৌকনসহ তার সকল স্থাবর অস্থাবর সম্পদ থেকে প্রথমে তার কাফন দাফনের ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর কোনও ঋণ থাকলে তা পরিশোধ করতে হবে এবং কোনও জায়েয অসিয়ত থাকলে অবশিষ্ট সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ থেকে তা আদায় করতে হবে। এরপর বাকি সম্পদ তার ওয়ারিশদে মাঝে শরীয়তের নিয়ম অনুযায়ী বণ্টন করতে হবে। -রদ্দুল মুহতার: ৩/৫৮৫ দারুল ফিকর, বৈরুত; আল-বাহরুর রায়িক: ৮/৫৫৬ দারুল কিতাবিল ইসলামী, বৈরুত; আল-ফাতাওয়াল হিন্দিয়া: ৫/২৬১ দারুস সালাম, কায়রো; আল-ইখতিয়ার: ২/৬৩৮ দারুল হাদীস, কায়রো; আল-ফাতাওয়াত তাতারখানিয়া: ২০/২১৮ যাকারিয়্যা বুক ডিপো, দেওবন্দ; আল-মাওসুআতুল ফিকহিয়্যাহ: ১১/২১৬ ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত।

ওয়ারিশদের কে কতটুকু পাবেন, বিস্তারিত জানতে চাইলে তার মৃত্যুর সময় আত্মীয়দের কে কে জীবিত ছিলেন, তা বিস্তারিত লিখতে হবে।

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৭-৭-৪৪

০৯-২-২৩

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

11 Nov, 14:02


স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার মোহর ও অন্যান্য সম্পদের বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%80/%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%ae%e0%a7%83%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%b0-%e0%a6%aa%e0%a6%b0-%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%b9%e0%a6%b0/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

10 Nov, 12:28


সুদের টাকা দিয়ে কি অন্যায় ট্যাক্স পরিশোধ করা যাবে?

প্রশ্নঃ

বর্তমান সরকার ভ্যাট বা ট্যাক্সের নামে আমাদের ওপর নানাভাবে জুলুম করছে। গত চার-পাঁচ বছরে আমাকে প্রায় তিন লাখের ওপরে ট্যাক্স বাবদ দিতে হয়েছে। আমার জানার বিষয় হলো, সুদের টাকার মাধ্যমে জুলুমের এই টাকা পরিশোধ করতে চাইলে তা পারবো কিনা?

-আবু বকর

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

কারও সুযোগ থাকলে নিজের ইজ্জত আব্রু রক্ষা করে অন্যায়ভাবে আরোপিত ট্যাক্স না দেওয়ার সুযোগ আছে। বরং কারও যদি এমন ট্যাক্স না দেয়ার শক্তি সামর্থ্য থাকে, তাহলে ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, তার জন্য ট্যাক্স না দেওয়া ওয়াজিব।

আরও জানার জন্য দেখুন, ফাতওয়া: 137-বর্তমান তাগুত সরকারকে ট্যাক্স দেওয়া কি জায়েয হবে?

তবে কেউ যদি ট্যাক্স দিতে বাধ্য হয়, তাহলে তার জন্য সুদের টাকায় তা পরিশোধ করা জায়েয নয়। কারণ সুদের টাকার বিধান হচ্ছে, সাধারণ মানুষ থেকে গ্রহণ করে থাকলে তা তাকেই ফেরত দেওয়া এবং তার মৃত্যু হয়ে থাকলে তার ওয়ারিশদের ফেরত দেওয়া। তাগুতের কোনও প্রতিষ্ঠান কিংবা অন্য কোনও সুদি প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রহণ করে থাকলে, সাওয়াবের নিয়ত ব্যতীত হারামের দায় থেকে মুক্ত হওয়ার উদ্দেশ্যে তা গরীবদের দিয়ে দেওয়া কিংবা কোনও জনকল্যাণমূলক কাজে খরচ করা। তা না করে সুদের অর্থ কোনোভাবেই নিজের উপকারে ব্যবহার করার সুযোগ নেই। বলা বাহুল্য, সুদের টাকায় ট্যাক্স প্রদান করা, তা নিজের কল্যাণে খরচ করারই নামান্তর। সুতরাং তা থেকে বিরত থাকা জরুরি।

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৩-০৭-১৪৪৪ হি.

২৬-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

10 Nov, 12:28


সুদের টাকা দিয়ে কি অন্যায় ট্যাক্স পরিশোধ করা যাবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%85%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%9f%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b8-%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%b6%e0%a7%8b%e0%a6%a7-%e0%a6%95%e0%a6%b0/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

09 Nov, 14:09


বেআইনিভাবে আনা মোবাইল ক্রয়-বিক্রয়ের বিধান

প্রশ্নঃ

ভারত থেকে বেআইনিভাবে আনা মোবাইল ক্রয়-বিক্রয় করা ও ব্যবহার করার হুকুম কী?

উল্লেখ্য, যে মোবাইল কিনতে সাধারণত ২৫/৩০ হাজার টাকা লাগে, একই মোবাইল ১২/১৩ হাজার টাকায় পাওয়া যায়।

-আব্দুল্লাহ আল আযম

উত্তরঃ

ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে বিদেশ থেকে আনা মোবাইল ক্রয় বিক্রয় ও ব্যবহার সবই জায়েয।

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-০৭-১৪৪৪ হি.

২৮-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

09 Nov, 14:09


বেআইনিভাবে আনা মোবাইল ক্রয়-বিক্রয়ের বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%ac%e0%a7%87%e0%a6%86%e0%a6%87%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%ad%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a7%87-%e0%a6%86%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%b2-%e0%a6%95%e0%a7%8d/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

08 Nov, 13:05


নিজের অস্ত্রে নিহত মুজাহিদের বিধান

প্রশ্নঃ

কোনো মুজাহিদ ভুলবশত নিজের অস্ত্রে নিজে নিহত হলে তাঁর জানাযা ও কাফন-দাফনের হুকুম কী?

-আব্দুল হাদী

উত্তরঃ

এমন ব্যক্তি আখিরাতের বিচারে শহীদ গণ্য হলেও দুনিয়ার বিচারে শহীদ হবেন না। তাই সাধারণ মাইয়েতের মতোই তার কাফন দাফন ও জানাযা পড়তে হবে। -শরহুস সিয়ারিল কাবীর: পৃ. ১০২; আলবাহরুর রায়েক: ২/২১১

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৭-৭-৪৪

০৯-২-২৩

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

08 Nov, 13:04


নিজের অস্ত্রে নিহত মুজাহিদের বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a6%be%e0%a6%b0/%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%a6-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b2/%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%9c%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%85%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%b9%e0%a6%a4-%e0%a6%ae%e0%a7%81%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%b9/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

07 Nov, 12:25


বিনা অযুতে মোবাইলে কুরআন তিলাওয়াতের বিধান

প্রশ্নঃ

বিনা অযুতে মোবাইলে কি কুরআন তিলাওয়াত করা যাবে?

-হাফিজ

উত্তরঃ

বিনা অযুতে মোবাইলে কুরআন তিলাওয়াত করা যাবে। তবে সরাসরি আয়াতের ওপর স্পর্শ করা যাবে না।-জামিউত তিরমিযী: ১/২১৪ হাদীস নং: ১৪৬ (দারুল গারবিল ইসলামী); বাদায়েউস সানায়ে: ১/১৩৪ (দারুল হাদীস, কায়রো) রদ্দুল মুহতার: ১/১৭৩ (দারুল ফিকর, বৈরুত)

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৫-০৭-১৪৪৪ হি.

২৮-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

07 Nov, 12:25


বিনা অযুতে মোবাইলে কুরআন তিলাওয়াতের বিধান

https://fatwaa.org/%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A7/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%85%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%86%E0%A6%A8/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

29 Oct, 12:36


আব্দুর রহীম ও আব্দুল করীমকে রহীম ও করীম বলে ডাকার বিধান

প্রশ্নঃ

আমাদের অনেকেরই নাম, আব্দুর রহীম, আব্দুল করীম, আব্দুল খালিক, আব্দুর রাযযাক ইত্যাদি। আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নাম রহীম, রহমান, করীম, খালিক, রাযযাক ইত্যাদির শুরুতে আবদ শব্দ যোগ করে নামগুলো রাখা হয়েছে। এভাবে নাম রাখতে সমস্যা নেই, তা সবারই জানা। তবে আমার জানার বিষয় হলো, ধরুন কারও নাম আব্দুর রহীম বা আব্দুল করীম। কিন্তু অন্যরা তাকে শুধু রহীম বা করীম বলে ডাকে। অথচ আমরা জানি, এই নামগুলো আল্লাহ তাআলার সঙ্গে খাস। তাহলে এভাবে ডাকা কি ঠিক হবে?

প্রশ্নকারী- মাহমুদ

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তাআলার কিছু নাম আছে, যেগুলো একমাত্র আল্লাহ তাআলার সঙ্গে খাস। অন্য কারও জন্য সেগুলো ব্যবহার করা জায়েয নয়। যেমন আল্লাহ, খালিক, রাযযাক ইত্যাদি। এগুলোর শুরুতে ‘আবদ’ যুক্ত করে আব্দুল্লাহ, আব্দুল খালিক ও আব্দুর রাযযাক নাম রাখলে; অর্থ দাঁড়ায় যথাক্রমে আল্লাহর বান্দা, খালিকের বান্দা ও রাযযাকের বান্দা। ‘আব্দুল্লাহ’ থেকে ‘আবদ’ বাদ দিয়ে শুধু আল্লাহ বলে যেমন কাউকে ডাকা জায়েয নয়, তেমনি ‘আব্দুল খালিক’ ও ‘আব্দুর রাযযাক’ থেকে ‘আবদ’ বাদ দিয়ে শুধু ‘খালিক’ ও ‘রাযযাক’ বলে কাউকে ডাকাও জায়েয নয়। কারণ ‘খালিক’ তথা সৃষ্টিকর্তা ও ‘রাযযাক’ তথা রিযিকদাতা একমাত্র আল্লাহ, অন্য কেউ নয়। বান্দাকে ‘খালিক’ ও ‘রাযযাক’ বলার অর্থ তাকে সৃষ্টিকর্তা ও রিযিকদাতা বলা। এটা সম্পূর্ণ ঈমান পরিপন্থী। কেউ যদি কোনও বান্দা সম্পর্কে এমন বিশ্বাস রাখে, তার ঈমান থাকবে না।

এছাড়া আল্লাহর এমন কিছু নাম আছে, যেগুলো তাঁর সঙ্গে খাস নয়; বরং তা আল্লাহর জন্যও ব্যবহৃত হয়, আবার বান্দার ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়। যেমন রাহীম, আযীয, রাউফ ইত্যাদি। এগুলোর শেষে কোনও শব্দ যুক্ত করে যখন কারও নাম রাখা হয়, যেমন রাহীমুদ্দীন, রাউফুদ্দীন, আযীযুর রহমান, তখন এগুলোর অর্থ দাঁড়ায় যথাক্রমে দীনের প্রতি দয়াশীল, দীনের প্রতি বিনম্র ও রহমানের প্রিয় পাত্র ।এক্ষেত্রে পরের অংশ বাদ দিয়ে শুধু রাহীম, আযীয ও রাউফ বলে ডাকতে কোনও অসুবিধা নেই। কারণ এতে অর্থগত সমস্যা যেমন তৈরি হয় না, তেমনি আল্লাহর খাস নামও অন্যের জন্য ব্যবহৃত হয় না।

পক্ষান্তরে এই দ্বিতীয় শ্রেণির নামগুলোর শুরুতে ‘আবদ’ শব্দ যুক্ত করে যদি কারও নাম রাখা হয়, আব্দুর রহীম, আব্দুর রাউফ বা আব্দুল আযীয, তখন অর্থ দাঁড়ায় যথাক্রমে রাহীমের বান্দা, রাউফের বান্দা ও আযীযের বান্দা। স্বভাবতই যখন রাহীম, রাউফ ও আযীযের বান্দা বলা হয়, তখন রাহীম, আযীয ও রাউফ দ্বারা আল্লাহ উদ্দেশ্য হয়। সুতরাং এভাবে কারও নাম রাখা হলে, তাকেও ‘আবদ’ বাদ দিয়ে শুধু রাহীম, আযীয ও রাউফ ডাকা থেকে বিরত থাকা কাম্য। -শরহুল ফিকহিল আকবার, পৃ: ৫১৫ দারুল বাশায়ের; রদ্দুল মুহতার: ৬/৪১৭ দারুল ফিকর, বৈরুত; মাআরিফুল কুরআন, মুফতী শফী রহ. ৪/১৩২-১৩৩, মাকতাবা মাআরিফুল কুরআন; আপকি মাসায়েল: ৭/৩১, মাকতাবা লুধিয়ানবী; ফাতাওয়া মাহমুদিয়া: ২৯/২৩১ যাকারিয়া বুক ডিপো, ভারত; আল-ইসলাম: সুওয়াল ও জাওয়াব, ফাতাওয়া ন: ২২৩৮৫৫; ইসলাম ওয়েব, ফাতাওয়া নং: ৭৭২২৪

এমনিভাবে কারও নাম এমনভাবে সংক্ষিপ্ত করে কিংবা পরিবর্তন করে ডাকাও ঠিক নয়, যা বিকৃতির মধ্যে পড়ে কিংবা যার কারণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কষ্ট পেতে পারে।

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

29 Oct, 12:35


আব্দুর রহীম ও আব্দুল করীমকে রহীম ও করীম বলে ডাকার বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%b0%e0%a6%b9%e0%a7%80%e0%a6%ae-%e0%a6%93-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%ae-%e0%a6%ac%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%a1%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7%e0%a6%be/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

28 Oct, 13:55


মসজিদের টয়লেটে রাখা টিস্যু ব্যবহারের বিধান

প্রশ্নঃ বর্তমানে প্রায় মসজিদের পেশাবখানা ও টয়লেটে টিস্যু রাখা থাকে। উদ্দেশ্য, নামাযের সময় মুসল্লীরা যেন তা ব্যবহার করতে পারেন।

প্রশ্ন হলো, কেউ যদি নামাযের সময় ছাড়া অন্য সময় এসব পেশাবখানা বা টয়লেট ব্যবহার করে, তার জন্য কি ওই টিস্যু ব্যবহার করা জায়েয হবে? টিস্যু তো নামাযে আসা মুসল্লীদের জন্য ওয়াকফ করা হয়েছে।

নাম- হামিদুর রহমান

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

আমরা মনে করি, পেশাবখানা বা টয়লেটে যারা টিস্যুর ব্যবস্থা রাখেন, তারা তা শুধু মুসল্লীদের জন্য নয়; বরং উক্ত পেশাবখানা বা টয়লেট ব্যবহারকারী সকলের জন্যই রাখেন। সুতরাং যার জন্য ওগুলো ব্যবহারের অনুমতি আছে, তার জন্য সেখানে রাখা টিস্যু ব্যবহারও জায়েয হবে; চাই তিনি নামাযের জন্য আসা মুসল্লী হন বা অন্য কেউ; যতক্ষণ না কর্তৃপক্ষের সুস্পষ্ট কোনও নিষেধাজ্ঞা বা এমন কোনও নিদর্শন সামনে আসে, যা দ্বারা বুঝা যায়, ওগুলো সকলের জন্য অনুমোদিত নয়।

তবে হ্যাঁ, অনেক জায়গায় মুসল্লী ব্যতীত অন্যদের জন্য পেশাবখানা বা টয়লেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকে। তথাপিও অনেকে সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তা ব্যবহার করেন। বাস্তবেই যদি কোথাও মুসল্লী ব্যতীত অন্যদের জন্য পেশাবখানা বা টয়লেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকে, তাহলে যার বিকল্প ব্যবস্থা আছে, তার জন্য সেগুলো ব্যবহার যেমন নাজায়েয, তেমনি টিস্যু ব্যবহারও নাজায়েয। পক্ষান্তরে কেউ যদি বাধ্য হয়ে ব্যবহার করে, তার জন্য নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পেশাবখানা বা টয়লেট ব্যবহার নাজায়েয হবে না। তবে তার জন্য টিস্যু ব্যবহার থেকে বিরত থাকা কাম্য; যদি পবিত্রতা অর্জনের অন্য কোনও ব্যবস্থা থাকে। পবিত্রতা অর্জনের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকলে টিস্যু ব্যবহার করাও নাজায়েয হবে না ইনশাআল্লাহ। -বাদায়েউস সানায়ে: ১/২০৮ দারুল হাদীস, কায়রো; আল-বাহরুর রায়েক: ৫/২৭০ দারুল কিতাবিল ইসলামী; ফাতাওয়া শামী: ১/২৫৩ দারুল ফিকর, বৈরুত; ফাতাওয়া উসমানী: ২/৫১৪ ও ৫২১ যাকারিয়া বুক ডিপো, ভারত

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

28 Oct, 13:55


মসজিদের টয়লেটে রাখা টিস্যু ব্যবহারের বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%ae%e0%a6%b8%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%9f%e0%a7%9f%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%9f%e0%a7%87-%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%96%e0%a6%be-%e0%a6%9f%e0%a6%bf%e0%a6%b8%e0%a7%8d/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

27 Oct, 12:53


মোবাইলে ইমার্জেন্সি লোনের লেনদেনের বিধান

প্রশ্নঃ আমরা সিম থেকে যে ইমার্জেন্সি লোন নিয়ে থাকি, সাধারণত যতো টাকা নিই, দেওয়ার সময় তার চেয়ে বেশি দিতে হয়। যেমন, বারো টাকা নিলে পরিশোধ করার সময় চৌদ্দ টাকার মতো দিতে হয়। এখন জানার বিষয় হচ্ছে, এভাবে চৌদ্দ টাকা দিয়ে বারো টাকা নেওয়া কি জায়েয হবে?

নাম- নুরুল আনওয়ার

উত্তরঃ

এক্ষেত্রে সিম কোম্পানি যে অতিরিক্ত অর্থ নেয়, তা সুদ নয়; বরং জায়েয। কারণ তারা আসলে আপনাকে টাকা দেয় না। ব্যালেন্স হিসেবে মোবাইলে যে ১২ টাকা দেখায়, তা টাকা নয়; বরং ১২ টাকা সমমূল্যের সেবা। এই সেবাটাই অন্য সময় অগ্রীম টাকা দিয়ে ক্রয় করেন বিধায় স্বাভাবিক মূল্য নেয়। এখন বাকিতে ক্রয় করছেন বিধায় কিছু বেশি নিচ্ছে। বাকি বিক্রির কারণে নগদ থেকে কিছু বেশি মূল্য নেওয়া নাজায়েয নয়; যদিও অনেক বেশি নেওয়া ঠিক নয়। হ্যাঁ, তারা যদি আপনাকে টাকা দিয়ে টাকা বেশি নিত, তাহলে সেটা সুদ গণ্য হত। -দেখুন: হেদায়া: ৩/২৩০; বাদায়েউস সানায়ি: ৪/১৭৪; ফতোয়া সাইট, বানুরি টাউন: ১৪৪২১২২০০৫০৪; ফতোয়া সাইট, দারুল উলুম দেওবন্দ: ৫৮২২৫; ইসলাম, সুওয়াল-জওয়াব: ২২০২২২

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

27 Oct, 12:51


মোবাইলে ইমার্জেন্সি লোনের লেনদেনের বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a8/%e0%a6%b8%e0%a7%81%e0%a6%a6-%e0%a6%98%e0%a7%81%e0%a6%b7/%e0%a6%ae%e0%a7%8b%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%87%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%87%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%9c%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%b8%e0%a6%bf-%e0%a6%b2%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a7%87/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

26 Oct, 12:25


ছেলে সন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে আকীকা দিলে কি তা আদায় হবে?

প্রশ্নঃ সামর্থ্যের অভাবে ছেলের জন্মের সপ্তম দিন আকীকা দিতে পারিনি। সামর্থ্য হলেই দিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা আছে। জানার বিষয় হলো, একটি ছাগল দিয়ে আকীকা দিলে কি তা আদায় হবে?

বর্তমানে আমার ছেলেটা নানান অসুস্থতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, আমরা কী করতে পারি?

নাম- আবদুর রহমান

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

ছেলের সুস্থতার জন্য নিজেদের আমলের ইসলাহ করুন, আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করুন। কারণ পিতা-মাতার বদ আমলের প্রভাবও অনেক সময় সন্তানের উপর পড়ে। সকাল-সন্ধ্যার আযকার নিয়মিত আদায় করুন। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে ছেলের শরীরে দম করে দিন। ছেলেকে সামনে রেখে নিম্নোক্ত দোয়াটি ৭ বার পড়ুন:

أَسْأَلُ اللَّهَ العَظِيمَ رَبَّ العَرْشِ العَظِيمِ أَنْ يَشْفِيَكَ

“আরশে আযীমের পালনকর্তা, মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করছি, তিনি যেন তোমাকে শিফা দান করেন।”

হাদীসে এসেছে,

عن ابن عباس، عن النبي -صلى الله عليه وسلم-، قال: “من عاد مريضا لم يحضر أجله، فقال عنده سبع مرار: أسأل الله العظيم رب العرش العظيم أن يشفيك، إلا عافاه الله من ذلك المرض”. –أخرجه أبو داود في سننه (3156)، والترمذي في جامعه (2083)، وصححه النووي في “الأذكار”، ص: 134، الناشر: دار الفكر للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت – لبنان.

“ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি এমন কোনও রোগীকে দেখতে যাবে, যার মৃত্যুর সময় এখনও উপস্থিত হয়নি, অতঃপর তার নিকট أَسْأَلُ اللَّهَ العَظِيمَ رَبَّ العَرْشِ العَظِيمِ أَنْ يَشْفِيَكَ এ দোয়াটি সাতবার পাঠ করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে ওই রোগ থেকে অবশ্যই আরোগ্য দান করবেন।” –সুনানে আবু দাউদ: ৩১৫৬, জামিউত তিরমিযী: ২০৮৩

নিচের দোয়াটিও ছেলেকে সামনে রেখে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা পড়ুন,

أُعِيذُكَ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ

“আমি তোমাকে; শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং সমস্ত কুদৃষ্টির অনিষ্ট হতে আল্লাহ তাআলার পরিপূর্ণ কালিমাসমূহের আশ্রয়ে দিচ্ছি।”

হাদীসে এসেছে,

عن ابن عباس، قال: كان النبي – صلى الله عليه وسلم – يعوذ الحسن والحسين “أعيذكما بكلمات الله التامة، من كل شيطان وهامة، ومن كل عين لامة، ثم يقول: كان أبوكم يعوذ بهما إسماعيل وإسحاق”. –أخرجه البخاري في “صحيحه” (4/147 رقم الحديث: 3371 ط. دار طوق النجاة) وأبو داود في سننه، واللفظ له (7/116 رقم الحديث: 4737 ط. دار الرسالة العالمي الطبعة: الأولى، 1430 هـ)

“ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান এবং হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহুমার জন্য (উপর্যুক্ত দোয়া পড়ে) পানাহ চাইতেন আর বলতেন, তোমাদের পিতা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ইসমাঈল ও ইসহাক আলাইহিমাস সালামের জন্য এই দোয়া পড়ে পানাহ চাইতেন।” -সহীহ বুখারী: ৩৩৭১; সুনানু আবু দাউদ: ৪৭৩৭

আর সামর্থ্য হলে আকীকাও দিয়ে দেয়ার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে দামি পশুর চিন্তা না করে কম দামে ভেড়া বা আকীকার উপযুক্ত মাদি ছাগল দিতে পারেন। আকীকার আনুষ্ঠানিকতা বর্জন করুন। দুটি পশু আকীকা করতে না পারলে একটি করলেও হবে ইনশাআল্লাহ। হাদীসে এসেছে,

عن ابن عباس: “أن رسول الله – صلى الله عليه وآله وسلم – عق عن الحسن كبشا وعن الحسين كبشا.” –أخرجه ابن الجارود (ص: 229 رقم الحديث: 912 مؤسسة الكتاب الثقافية – بيروت، الطبعة: الأولى)، والضياء المقدسي (11/286 رقم الحديث: 282 دار خضر، بيروت – لبنان، الطبعة: الثالثة، 1420 هـ) في “صحيحيهما”. وأخرجه أبو داود (4/461 رقم الحديث:2841 دار الرسالة العالمية الطبعة: الأولى، 1430 ه) بلفظ “عق عن الحسن والحسين كبشا كبشا”، وصححه ابن حزم في المحلى (6/242، دار الفكر – بيروت)، وعبد الحق الإشبلي في الأحكام الوسطى (4/141، مكتبة الرشد، الرياض)، وابن عبد الهادي في المحرر في الحديث (رقم الحديث: 743، دار المعرفة – لبنان(

“ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসান রাযিয়াল্লাহু আনহুর জন্য একটি ‍দুম্বা এবং হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহুর জন্য একটি দুম্বা আকীকা করেন।” -সুনানু আবু দাউদ: ২৮৪১; আল-মুনতাকা, ইবনুল জারুদ: ৯১২; আল-আহাদীসুল মুখতারাহ, যিয়াউদ্দিন মাকদিসী: ২৮২

আরও দেখুন, মুসনাদু আবী ইয়ালা: ৫/৩২৩ হাদীস নং ২৯৪৫ দারুল মা’মুন দিমাশক; মুয়াত্তা মালিক: ৩/৭১৬ মুয়াসসাসাতু যায়েদ বিন সুলতান, আবুধাবী; আল-মুহাল্লা: ৬/২৪২ দারুল ফিকর, বৈরুত; রদ্দুল মুহতার: ৬/৩৩৬ দারুল ফিকর; মাওসুয়াহ ফিকহিয়্যাহ: ৩০/২৮০ ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

26 Oct, 12:24


ছেলে সন্তানের জন্য একটি ছাগল দিয়ে আকীকা দিলে কি তা আদায় হবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%8f%e0%a6%95%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%9b%e0%a6%be%e0%a6%97%e0%a6%b2-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%86%e0%a6%95%e0%a7%80%e0%a6%95%e0%a6%be/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

25 Oct, 12:35


গুনাহের কারণে মা-বাবার উপর রাগ করা

প্রশ্ন: মা-বাবা যদি দীন বিরোধী কাজ করেন, তাহলে তাদের ওপর কি রাগ করা যাবে?

-মুহাম্মাদ হিশাম

উত্তর:

بسم الله، والحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد!

রাগ মানুষের স্বভাবজাত একটি বিষয়। সুতরাং দীন-বিরোধী কাজ যেই করুক, তা দেখলে একজন মুমিনের রাগ ওঠবে এবং ওঠা উচিত। অনেক ক্ষেত্রে রাগ ওঠা বান্দার ইচ্ছা ও ইখতিয়ারের বাইরে থাকে। বান্দার ইখতিয়ারে যেটা থাকে সেটা হচ্ছে, রাগের বহিঃপ্রকাশ। কোন ক্ষেত্রে রাগের কতটুকু প্রকাশ ঘটবে, কীভাবে ঘটবে, সেটা বিচার বিবেচনা করে সে অনুযায়ী কাজ করা বান্দার দায়িত্ব।

পিতা-মাতার ক্ষেত্রে রাগ প্রকাশের সুযোগ নেই। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে মা-বাবার সাথে সদাচার করার নির্দেশ দিয়েছেন, যদিও তারা কাফের হন এবং সন্তানকে কুফরি করার নির্দেশ করেন। এমনকি আল্লাহ তাআলা মা-বাবার প্রতি বিরক্ত হয়ে সামান্য ‘উফ’ শব্দ উচ্চারণ করতেও নিষেধ করেছেন। তাই মা-বাবা কোনো গুনাহ বা দীন-বিরোধী কাজ করলেও তাদেরকে নম্র ভাষায় বুঝাতে হবে এবং তাদের জন্য দোয়া ও ইস্তেগফার করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই তাদের উপর রাগ ঝাড়া যাবে না।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

{وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْنًا عَلَى وَهْنٍ وَفِصَالُهُ فِي عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ (14) وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلَى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ (15)} [لقمان: 14، 15]

“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সঙ্গে সদাচারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। কারণ তার মা কষ্টের পর কষ্ট সয়ে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে। তুমি শোকর আদায় কর, আমার এবং তোমার পিতা-মাতার। আমারই কাছে তোমাদের ফিরে আসতে হবে। তারা যদি এমন কাউকে আমার সঙ্গে শরীক করার জন্য তোমাকে চাপ দেয়, যে সম্পর্কে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তাদের কথা মানবে না। তবে দুনিয়ায় তাদের সাথে সদ্ভাবে থাকবে। এমন ব্যক্তির পথ অবলম্বন করো, যে একান্তভাবে আমার অভিমুখী হয়েছে। অতঃপর তোমাদেরকে আমার কাছেই ফিরে আসতে হবে। তখন আমি তোমাদের অবহিত করব, তোমরা যা-কিছু করতে।” -সূরা লুকমান: ১৪-১৫

আয়াতের তাফসীরে আল্লামা তাকী উসমানী (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন,

دین کے معاملے میں اگر والدین کوئی غلط بات کہیں تو ان کی بات ماننا تو جائز نہیں ہے ؛ لیکن ان کی بات رد کرنے کے لئے کوئی ایسا طریقہ اختیار نہیں کرنا چاہیئے جو ان کے لئے تکلیف دہ ہو، یا جس سے وہ اپنی توہین محسوس کریں، بلکہ نرم الفاظ میں ان کو بتا دینا چاہیے کہ میں آپ کی یہ بات ماننے سے معذور ہوں اور صرف اتنا ہی نہیں اپنے عام برتاؤ میں بھی ان کے ساتھ بھلائی کا معاملہ کرتے رہنا چاہیے، مثلاً ان کی خدمت کرنا، ان کی مالی امداد کرنا، وہ بیمارہوجائیں تو ان کی تیمار داری کرنا وغیرہ۔ توضيح القرآن: 3/1259 (ط. مكتبہ معارف القرآن)

“অর্থাৎ দীনের ব্যাপারে পিতা-মাতা কোনো অন্যায় কথা বললে তা মানা তো জায়েয হবে না, কিন্তু তাদের কথা এমন পন্থায় রদ করা যাবে না, যা তাদের জন্য কষ্টদায়ক হয় বা যাতে তারা নিজেদেরকে অপমানিত বোধ করে। বরং তাদেরকে নম্র ভাষায় বুঝিয়ে দেয়া ‍উচিত যে, আমি আপনাদের কথা মানতে অপারগ। কেবল এতটুকুই নয়, বরং সাধারণভাবে অন্য সকল ক্ষেত্রেই তাদের সাথে সদাচার করতে হবে। তাদের খেদমত করতে হবে, আর্থিকভাবে তাদের সাহায্য করতে হবে এবং তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের সেবা-যত্ন করতে হবে ইত্যাদি।” -তাওযিহুল কুরআন, উর্দু: ৩/১২৫৯

আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُلْ رَبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا. -سورة بني إسرائيل: 23-24

“তোমার প্রতিপালক নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করো না, পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করো, পিতা-মাতার কোনো একজন কিংবা উভয়ে যদি তোমার কাছে বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ্’ পর্যন্ত বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না; বরং তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বলো। তাঁদের প্রতি মমতাপূর্ণ আচরণের সাথে তাঁদের সামনে নিজেকে বিনয়াবনত করো এবং দোয়া করো, হে আমার প্রতিপালক! তাঁরা যেভাবে আমার শৈশবে আমাকে লালন-পালন করেছে, তেমনি আপনিও তাঁদের প্রতি রহমতের আচরণ করুন।” -সূরা বনি ইসরাঈল ১৭: ২৩-২৪

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৩-০৩-১৪৪৬ হি.

২৭-০৯-২০২৪ ঈ.


المصادر والمراجع

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

25 Oct, 12:35


أحكام القرآن لابن الفرس (3/ 416): وقوله تعالى: {وصاحبهما في الدنيا معروفًا}: يعني الأبوين الكافرين، أي صلهما وادعهما برفق. اهـ

تفسير القرطبي (14/ 65): قوله تعالى: (وصاحبهما في الدنيا معروفا) نعت لمصدر محذوف، أي مصاحبا معروفا، يقال صاحبته مصاحبة ومصاحبا. و” معروفا” أي ما يحسن. والآية دليل على صلة الأبوين الكافرين بما أمكن من المال إن كانا فقيرين، وإلانة القول والدعاء إلى الإسلام برفق. اهـ

تفسير ابن كثير ت سلامة (6/ 337): وقوله: {وإن جاهداك على أن تشرك بي ما ليس لك به علم فلا تطعهما} أي: إن حرصا عليك كل الحرص على أن تتابعهما على دينهما، فلا تقبل منهما ذلك، ولا يمنعنك ذلك من أن تصاحبهما في الدنيا معروفا، أي: محسنا إليهما، {واتبع سبيل من أناب إلي} يعني: المؤمنين، {ثم إلي مرجعكم فأنبئكم بما كنتم تعملون} . اهـ

صحيح مسلم (2491) : عن أبي كثير يزيد بن عبد الرحمن، حدثني أبو هريرة، قال: كنت أدعو أمي إلى الإسلام وهي مشركة، فدعوتها يوما فأسمعتني في رسول الله صلى الله عليه وسلم ما أكره، فأتيت رسول الله صلى الله عليه وسلم وأنا أبكي، قلت يا رسول الله إني كنت أدعو أ

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

25 Oct, 12:33


গুনাহের কারণে মা-বাবার উপর রাগ করা

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%a3%e0%a7%87-%e0%a6%ae%e0%a6%be-%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%89%e0%a6%aa/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

24 Oct, 15:37


পালিত কন্যা কি মাহরাম হবে?

প্রশ্নঃ

কোনও ব্যক্তির সন্তান হয় না। তাই সে কোনও মেয়েকে পালক নিয়ে এলো। সেই মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর কি তার সাথে দেখা করতে পারবে?

নাম- আবদুর রহমান

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

পালক সন্তানকে যদি চাঁদের মাস হিসেবে তার জন্মের দুবছরের মধ্যে পালক বাবার স্ত্রীর দুধ পান করানো যায়, তাহলে উক্ত সন্তান তার পালক বাবার জন্য দুধ সন্তান হিসেবে মাহরাম গণ্য হবে এবং বালেগা হওয়ার পর বাবার সঙ্গে দেখা সাক্ষাত করতে পারবে। পক্ষান্তরে তাকে যদি এই সময়ের মধ্যে স্ত্রীর দুধ পান করানো না যায়, তাহলে শুধু পালিত কন্যা হওয়ার সূত্রে সে মাহরাম হবে না এবং বালেগা হওয়ার পর পালক বাবার সঙ্গে পরস্পর দেখা সাক্ষাতও জায়েয হবে না। শারীরিক গঠন চোখে পড়ার মতো হলে বালেগা হওয়ার আগে থেকেই দেখা সাক্ষাত বন্ধ করে দিতে হবে। -সূরা আহযাব (৩৩) : ৪; সহীহ বুখারী: ৩/১৭০ হাদীস নং: ২৬৪৭ দারু তাওকিন নাজাহ; সহীহ মুসলিম: ২/১০৭৮ হাদীস নং: ১৪৫৫ দারু ইহইয়ায়িত তুরাসিল আরাবী; জামে’ তিরমিযী: ২/৪৪৯ হাদীস নং: ১১৫২ দারুল গারবিল ইসলামী; তাফসীরে তাবারী: ৫/৩৬-৩৭ মুআসসাসাতুর রিসালাহ; ফাতহুল বারী: ৯/৫০৫ দারুল ফিকর; ফাতাওয়া শামী: ৩/২০৯ দারুল ফিকর; তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম: ১/৫২ দারুল কলম, দিমাশক; ফাতাওয়া উসমানী: ৪/৫০২ যাকারিয়া বুক ডিপো

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

24 Oct, 15:36


পালিত কন্যা কি মাহরাম হবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%a4-%e0%a6%95%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%b9%e0%a6%ac%e0%a7%87/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

23 Oct, 15:24


মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা

প্রশ্ন: অনেক লোককে একটি কথা বলতে শোনা যায়, মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা হারাম। কথাটি কতটুকু সহীহ?

-সাখাওয়াত

উত্তর: ‘মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা হারাম’—কথাটি ঢালাওভাবে ঠিক নয়।

‘মুবাহ’ তথা যেসব দুনিয়াবি কথা মসজিদের বাইরে বৈধ, সেগুলোর বিধান হলো, নামায বা অন্য কোনো ইবাদতের উদ্দেশ্যে মসজিদে গমন করলে, অন্যের ইবাদতে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে প্রসঙ্গক্রমে টুকটাক দুনিয়াবি কথাবার্তা বলতে সমস্যা নেই। তবে উত্তম হলো মসজিদে দুনিয়াবি কথাবার্তা না বলে ইবাদত-বন্দেগি ও যিকির-তিলাওয়াতে মশগুল থাকা।

পক্ষান্তরে দুনিয়াবি আলাপচারিতার উদ্দেশ্যে মসজিদে গমন করা বা অবস্থান করা নিষেধ। -রদ্দুল মুহতার: ১/৬৬২

এমনিভাবে মসজিদে হৈহুল্লোড় ও শোরগোল করাও নাজায়েয। আর যদি একারণে অন্যের ইবাদতে ব্যাঘাত ঘটে, তবে তা আরও নিন্দনীয়।

সহীহ বুখারীতে এসেছে,

عن السائب بن يزيد، قال: كنت قائما في المسجد فحصبني رجل، فنظرت فإذا عمر بن الخطاب، فقال: اذهب فأتني بهذين، فجئته بهما، قال: من أنتما – أو من أين أنتما؟ – قالا: من أهل الطائف، قال: لو كنتما من أهل البلد لأوجعتكما، ترفعان أصواتكما في مسجد رسول الله صلى الله عليه وسلم. -صحيح البخاري (470)

“সায়িব বিন ইয়াযিদ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি মসজিদে নববীতে দাঁড়িয়েছিলাম। এমন সময় একজন লোক আমার দিকে একটি কঙ্কর নিক্ষেপ করলো। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম, তিনি উমর ইবনুল খাত্তাব রাযিয়াল্লাহু আনহু। তিনি বললেন, যাও, এ দুজনকে আমার কাছে নিয়ে এসো। আমি তাদের নিয়ে এলাম। তিনি বললেন, তোমরা কারা? অথবা তিনি বললেন, “তোমরা কোন এলাকার লোক?” তারা বললো, “আমরা তায়েফের অধিবাসী।” তিনি বললেন, “তোমরা যদি মদীনার কেউ হতে, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের কঠোর শাস্তি দিতাম। তোমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলছো!” –সহীহ বুখারী: ৪৭০

উল্লেখ্য, মিথ্যা, গীবত, চোগলখুরি ইত্যাদি যেসব কথা মসজিদের বাইরে বলা হারাম, সেসব কথা যে মসজিদে বলা আরও জঘন্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৩-০৩-১৪৪৬ হি.

২৭-০৯-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

23 Oct, 15:23


মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a8/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae/%e0%a6%ae%e0%a6%b8%e0%a6%9c%e0%a6%bf%e0%a6%a6%e0%a7%87-%e0%a6%a6%e0%a7%81%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%bf-%e0%a6%95%e0%a6%a5%e0%a6%be-%e0%a6%ac%e0%a6%b2%e0%a6%be/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

22 Oct, 13:59


কুরআন শিক্ষা দিয়ে টাকা নেওয়ার বিধান

প্রশ্ন: কুরআনে কারীম শিখানোর জন্য প্রাইভেট পড়িয়ে চুক্তি করে কিংবা চুক্তি ছাড়া টাকা নেওয়া কি বৈধ? দলীলসহ জানালে উপকৃত হবো।

-মুহাম্মাদ আরিফ

উত্তর:

بسم الله، والحمد لله، والصلاة والسلام على رسول الله، أما بعد!

কুরআনে কারীম শিক্ষা দিয়ে চুক্তি করে পারিশ্রমিক নেওয়া বৈধ। -হিদায়া: ৩/২৩৮[1]

এমনিভাবে চুক্তি ছাড়া কেউ হাদিয়া হিসেবে কিছু দিলে, সেটাও গ্রহণ করা বৈধ। -রদ্দুল মুহতার: ৬/৪২৪[2]

তবে কুরআনে কারীম শিক্ষা দেয়া একটি ইবাদত। তাতে বিনিময়টা মুখ্য হওয়া কাম্য নয়। বরং নিয়ত পরিশুদ্ধ করে নিবে, কুরআনে কারীম ও দীনের খেদমতের বিষয়টি মুখ্য রাখবে।

আর প্রাইভেট পড়ানোর ব্যাপারে কথা হলো, বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিউশনি করার রীতি পছন্দনীয় নয়। এটি কুরআন ও কুরআনের শিক্ষকের সম্মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। বরং যারা শিখতে চায় তারা শিক্ষকের কাছে এসে শিখবে। একান্ত যদি বাড়ি গিয়ে পড়াতেই হয়, সে ক্ষেত্রে নিজের সম্মান ও ব্যক্তিত্ব বজায় রাখবে। পর্দা পুশিদার ইহতিমাম করবে। বালেগ বা বালেগের কাছাকাছি বয়সের কোনো মেয়েকে পড়াবে না।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

২৮-০৩-১৪৪৬ হি.

০২-১০-২০২৪ ঈ.



[1] وبعض مشايخنا استحسنوا الاستئجار على تعليم القرآن اليوم؛ لأنه ظهر التواني في الأمور الدينية. ففي الامتناع تضييع حفظ القرآن وعليه الفتوى. -(الهداية في شرح بداية المبتدي (3/ 238)

[2] الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (6/ 424): جَمَعَ أَهْلُ الْمَحَلَّةِ لِلْإِمَامِ فَحَسَنٌ. … (قَوْلُهُ جَمَعَ أَهْلُ الْمَحَلَّةِ) أَيْ شَيْئًا مِنْ الْقُوتِ أَوْ الدَّرَاهِمِ ط (قَوْلُهُ فَحَسَنٌ) أَيْ إنْ فَعَلُوا فَهُوَ حَسَنٌ وَلَا يُسَمَّى أُجْرَةً كَمَا فِي الْخُلَاصَةِ، وَالظَّاهِرُ أَنَّ هَذَا مِنْ تَعْرِيفَاتِ الْمُتَقَدِّمِينَ الْمَانِعِينَ أَخْذَ الْأُجْرَةِ عَلَى الْإِمَامَةِ وَغَيْرِهَا مِنْ الطَّاعَاتِ لِتَظْهَرَ ثَمَرَةُ التَّنْصِيصِ عَلَيْهِ، وَإِلَّا فَمُجَازَاةُ الْإِحْسَانِ بِالْإِحْسَانِ مَطْلُوبَةٌ لِكُلِّ أَحَدٍ تَأَمَّلْ. اهـ

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

22 Oct, 13:59


কুরআন শিক্ষা দিয়ে টাকা নেওয়ার বিধান

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a8/%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae/%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%b0%e0%a6%86%e0%a6%a8-%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%be-%e0%a6%a6%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be-%e0%a6%a8/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

21 Oct, 12:36


নিজ স্ত্রীর আগের ঘরের মেয়েরা কি মাহরাম বলে গণ্য হবে?

প্রশ্নঃ

কেউ এমন নারীকে বিয়ে করলো যার পূর্বে বিয়ে হয়েছিলো এবং সেই স্বামীর ছেলে মেয়েও আছে। এখন সে (দ্বিতীয় স্বামী) এবং তার সন্তানরা কি তার স্ত্রীর প্রথম স্বামীর ছেলে মেয়েদের সাথে দেখা করতে পারবে?

নাম- আবদুর রহমান

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

যে মহিলার দুই বিয়ে হয়েছে, তার গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া উভয় স্বামীর সন্তানেরা পরস্পর মাহরাম, একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারবে। তবে দ্বিতীয় স্বামীর অন্য স্ত্রীর সন্তান এবং এই মহিলার গর্ভে জন্ম নেওয়া প্রথম স্বামীর সন্তানরা পরস্পর মাহরাম নয়। সুতরাং তাদের পরস্পর সাক্ষাতও জায়েয নয়। -সূরা নিসা (০৪) : ২৩; বাদায়েউস সানায়ে: ২/২৫৭ দারুল হাদীস, কায়রো; আল-বাহরুর রায়েক: ৩/৯৮, ১০০, ১০৫ দারুল কিতাবিল ইসলামী; রদ্দুল মুহতার: ৩/৩১ দারুল ফিকর, বৈরুত; আল-মাওসুওয়াতুল ফিকহিয়্যাহ: ৩৬/২১১ ওযারাতুল আওকাফ, কুয়েত; কিফায়াতুল মুফতী: ৫/৩৯ যাকারিয়া বুক ডিপো, ভারত; ফাতাওয়ায়ে কাসিমিয়া: ১৩/১৬২-১৬৩ আশরাফি বুক ডিপো, ভারত

আর দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে উক্ত মহিলার সহবাস হওয়ার পর তার গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া আগের স্বামীর সন্তানরা দ্বিতীয় স্বামীর মাহরাম হবে। সুতরাং তাদের সকলের সঙ্গে সে সাক্ষাত করতে পারবে। পক্ষান্তরে দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে তার সহবাসের পূর্বেই যদি কোনও কারণে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়, তাহলে তার গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া আগের স্বামীর সন্তানরা দ্বিতীয় স্বামীর মাহরাম হবে না। তাদের পরস্পর দেখা সাক্ষাতও জায়েয হবে না। -সূরা নিসা (০৪) : ২৩; আল-বাহরুর রায়েক: ৩/৯৮ দারুল কিতাবিল ইসলামী; রদ্দুল মুহতার: ৩/৩০ দারুল ফিকর; ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়া: ৭/১৮৫-১৮৬ যাকারিয়া বুক ডিপো

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

21 Oct, 12:35


নিজ স্ত্রীর আগের ঘরের মেয়েরা কি মাহরাম বলে গণ্য হবে?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%a6%e0%a7%80/%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%97%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%98%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a7%9f%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%bf/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

20 Oct, 14:37


আগ্রাসী জালিমের হ-ত্যাকারীর বিচার প্রসঙ্গে

প্রশ্ন: ২০২৪ এর জুলাই বিপ্লবে যেসব আওয়ামী কর্মী ও সমর্থক, পুলিশ, বিডিআর, র‌্যাব, আর্মি, যারা আওয়ামী লীগের পক্ষে লড়াই করতে গিয়ে জনসাধারণের আক্রমণে নিহত হয়েছে, তাদের হত্যার দায়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদেরকে কি বিচারের সম্মুখীন করা যাবে?

- আবদুস সালাম

উত্তর:

بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله والصلاة والسلام على رسوله محمد وآله وأصحابه أجمعين أما بعد:

এক. জালিমকে প্রতিহত করা জরুরি। চাই জালেম ব্যক্তি, সংঘবদ্ধ দল কিংবা রাষ্ট্র যেই হোক। যদি হত্যা ছাড়া প্রতিহত করা সম্ভব না হয়, তাহলে হত্যা করাও জায়েয।
ইমাম আবু বকর জাসসাস রহিমাহুল্লাহ (মৃত: ৩৭০ হিজরী) বলেন,

فإذا لم يمكنه تغييره إلا بالقتل فعليه قتله حتى يزيله. وكذلك قلنا في أصحاب الضرائب والمكوس التي يأخذونها من أمتعة الناس: إن دماءهم مباحة وواجب على المسلمين قتلهم. اهـــــ. –احكام القرآن للجصاص: 2/40 ط. دار الكتب العلمية.

“যখন হত্যা ব্যতীত অন্যায় প্রতিরোধ করা সম্ভব না হবে, তখন হত্যা করে হলেও প্রতিরোধ করা জরুরি। অনুরূপ যারা অন্যায় টেক্স ও শুল্ক আদায়ের মাধ্যমে জনগণের সম্পদ গ্রাস করে, তাদের ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য হলো, তাদের রক্ত হালাল এবং তাদেরকে হত্যা করা মুসলিমদের কর্তব্য।” -আহকামুল কুরআন: ২/৪০
দুই. কোনো অস্ত্রধারী অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করতে উদ্যত হলে, অস্ত্রধারীকে হত্যা করা বৈধ হয়ে যায়।
ইমাম আবু বকর জাসসাস রহিমাহুল্লাহ (মৃত: ৩৭০ হিজরী) বলেন,

ولا نعلم خلافا أن رجلا لو شهر سيفه على رجل ليقتله بغير حق أن على المسلمين قتله.اهـــ -أحكام القرآن للجصاص ط العلمية (2/ 503)

“যদি কেউ কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যার জন্য তরবারি উত্তোলন করে, তাহলে তাকে হত্যা করা মুসলিমদের কর্তব্য। এ বিষয়ে কারো দ্বিমত আছে বলে আমাদের জানা নাই।” –আহকামুল কুরআন: ২/৫০৩
তিন. প্রতিহত করতে গিয়ে জালিমকে হত্যা করে ফেললে কেসাস, দিয়াত, কাফফারা, জরিমানা কোনোটাই আদায় করা যায় না।
ইমাম মুহাম্মাদ রহিমাহুল্লাহ (মৃত: ১৮৯ হিজরী) বলেন,

رجل شهر سيفا على المسلمين فلهم أن يقتلوه ولا شيء عليهم.اهــــ -الجامع الصغير: 513 ط. محمد بوينوكالن.

“যদি কেউ মুসলিমদের বিরুদ্ধে তরবারি ধরে, তাকে হত্যা করা মুসলিমদের কর্তব্য। এ হত্যার কারণে মুসলিমদের উপর কোনো শাস্তি বা জরিমানা কিছুই আরোপিত হবে না।” -আলজামিউস সগীর: ৫১৩
ইমাম ইবনে বাত্তাল রহিমাহুল্লাহ (৪৪৯ হি.) বলেন,

ولا يختلفون أن من شهر سلاحا، وأومأ إلى قتله وهو صحيح العقل، فقتله المشهور عليه دافعا له عن نفسه؛ أنه لا ضمان عليه.اهــــ -شرح صحيح البخارى لابن بطال (8/ 521)، كتاب الديات، باب إذا عض رجلا فوقعت ثناياه، دار النشر: مكتبة الرشد – السعودية، الرياض

“হত্যা প্রতিরোধ করতে গিয়ে হত্যা করে ফেললে, কোনো জরিমানা আসবে না।” –শরহে সহীহ বুখারী-ইবনে বাত্তাল: ৮/৫২১
জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে সরকার ও সরকারের বাহিনী, আওয়ামী লীগ, পুলিশ, বিডিআর, র‌্যাব, আর্মি সবাই যে আগ্রাসী জালিম ও অন্যায় হত্যাকারী ছিল, বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট। তাদের প্রতিরোধ করা এবং প্রয়োজনে হত্যা করা ছিল সকলের দায়িত্ব। সুতরাং একারণে কাউকে তাদের হত্যার দায়ে বিচারের সম্মুখীন করা যাবে না। করলে শরীয়তের দৃষ্টিতে তা অন্যায় বিবেচিত হবে।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)
১৪-০৪-১৪৪৬ হি.
১৮-১০-২০২৪ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

20 Oct, 14:36


আগ্রাসী জালিমের হ-ত্যাকারীর বিচার প্রসঙ্গে

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7/%e0%a6%86%e0%a6%97%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a7%80-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a6%bf%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

19 Oct, 12:01


বাকি বিক্রিতে নগদ মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য নেওয়ার হুকুম কী?

প্রশ্নঃ বেশির ভাগ পোল্ট্রি ডিলার ব্যবসায়ী থেকে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে নগদ টাকায় পণ্য কিনলে অনেক কমে নেওয়া যায়। কিন্তু বাকিতে কিনলে দাম অনেক বেশি রাখে। এই ধরনের ব্যবসার বিধান কী?

নাম- হাসান

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

জি, বাকি বিক্রির কারণে পণ্যের মূল্য কিছু বেশি রাখা দুটি শর্তে জায়েয,

শর্ত দুটি হচ্ছে:

১. কত দিনের মেয়াদে এবং কত টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে, তা বিক্রির মজলিসে চূড়ান্ত হতে হবে। এমন বললে হবে না যে, এক সপ্তাহ পর মূল্য পরিশোধ করলে এত দিতে হবে, আর দুই সপ্তাহ পর মূল্য পরিশোধ করলে এত দিতে হবে। এভাবে ঝুলন্ত রেখে দিলে তা নাজায়েয হবে।

২. ক্রেতা কোনও কারণে নির্ধারিত সময়ে মূল্য পরিশোধে ব্যর্থ হলে, মূল্য বাড়ানো যাবে না। বিক্রির সময় যে মূল্য নির্ধারিত হয়েছে, তা-ই নিতে হবে।-মুয়াত্তা মালেক: ২/৬৭২ হাদীস নং: ৮৩ দারু ইহইয়ায়িত তুরাস, বৈরুত; আল-মুসান্নাফ, ইবনু আবী শাইবা: ১০/৫৯২ আসার নং: ২০৮২৬ দারুল কিবলাহ, জিদ্দাহ; কিতাবুল আসল: ২/৪৫৪ দারু ইবনি হাযম, বৈরুত; মাবসূত: ১৩/৮, দারুল মারেফা, বৈরুত; বুহুস ফি কাজায়া ফিকহিয়্যাহ মুয়াসিরা: ১/১২, দারুল কলম, দিমাশক; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, ধারা নং: ২৪৫/২৪৬; ইমদাদুল আহকাম: ৫/৩৬৪, যাকারিয়া বুক ডিপো, ভারত

উল্লেখ্য, বাকি বিক্রির ক্ষেত্রে যদিও নগদ বিক্রির তুলনায় অধিক মূল্য নেয়া জায়েয, কিন্তু তা অস্বাভাবিক বেশি হওয়া কাম্য নয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

رحم الله رجلا سمحا إذا باع، وإذا اشترى، وإذا اقتضى. -صحيح البخاري: 2076 ط. دار طوق النجاة، بيروت

“যে ব্যক্তি কেনার সময়, বেচার সময় এবং পাওনার তাগাদা দেয়ার সময় উদারতা প্রদর্শন করে, মহান আল্লাহ্ তাআলা তার উপর রহম করুন।” -সহীহ বুখারী: ২০৭৬

এ বিষয়ে আরও জানতে নিম্নোক্ত ফাতাওয়াটি দেখুন,

ফাতওয়া: ২৮৭-কিস্তিতে নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত দিয়ে পণ্য ক্রয়ের হুকুম কী?

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

19 Oct, 12:00


বাকি বিক্রিতে নগদ মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য নেওয়ার হুকুম কী?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%a8%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%a8/%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ac%e0%a6%b8%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%9f-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%9f/%e0%a6%ac%e0%a6%be%e0%a6%95%e0%a6%bf-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%97%e0%a6%a6-%e0%a6%ae%e0%a7%82%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a7%87/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

13 Oct, 14:18


ব্যভিচারের গুনাহ শুধু তওবা করার দ্বারা মাফ হবে কি?

প্রশ্নঃ কেউ ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার পর শ-রী-য়া-হ কর্তৃত নির্ধারিত শাস্তি পাওয়া ছাড়া শুধু তওবা করলে কি আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করবেন?

নাম- আবদুল্লাহ

উত্তরঃ

জি, বাস্তবিক অর্থে তওবা করলে, আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا -النساء: 116

“নিশ্চয় আল্লাহ তার সঙ্গে শরীক করা ক্ষমা করবেন না, এছাড়া অন্যান্য গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন।” -সূরা নিসা ০৪: ৪৮

والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

13 Oct, 14:18


ব্যভিচারের গুনাহ শুধু তওবা করার দ্বারা মাফ হবে কি?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a7%e0%a6%be%e0%a6%a8/%e0%a6%ac%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%ad%e0%a6%bf%e0%a6%9a%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%97%e0%a7%81%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b9-%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%a7%e0%a7%81-%e0%a6%a4%e0%a6%93/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Oct, 13:27


স্বপ্নদোষের পর লজ্জায় গোসল না করে নামায আদায় করে ফেললে করণীয় কী?

প্রশ্নঃ

আমার পরিবারের লোকজন দীন-ধর্ম সম্পর্ক তেমন কিছুই জানেন না, পালনও করেন না। আলহামদুলিল্লাহ আমি আমার সাধ্য মতো দীন পালন করার চেষ্টা করি। আমার প্রশ্ন হলো, বাড়িতে থাকাকালে কখনও স্বপ্নদোষ হলে লজ্জার কারণে আমি গোসল করি না। যথাসাধ্য পরিষ্কার করে ওযু করে নামায আদায় করে নিই এবং এর জন্য পরে তাওবা করি। আমার এই সব নামায কি হবে? না হলে আমি কী করতে পারি অনুগ্রহপূর্বক জানাবেন।

প্রশ্নকারী- আদনান কবীর

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

স্বপ্নদোষ হলে গোসল ফরয হয়ে যায়। গোসল ছাড়া শরীর পবিত্র হয় না। এই অবস্থায় নামায আদায় করলে নামায সহীহ হয় না। সুতরাং আপনাকে গোসল করেই নামায আদায় করতে হবে। ইতিপূর্বে যে নামাযগুলো গোসল ছাড়া আদায় করেছেন, সেগুলো পুনরায় কাযা করে নিতে হবে। -আল-হুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনাহ, ইমাম মুহাম্মদ: ১/২৬৬ আলামুল কুতুব, বৈরুত; মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক: ২/৩৫০ হাদিস নং: ৩৬৬১ আল-মাজলিসুল ইলমী, ভারত; আদ্দুররুল মুখতার: ১/২৩০ দারুল ফিকর, বৈরুত; তাওয়ালিউল আনওয়ার, হস্তলিখিত পাণ্ডুলিপি: ১/১৩৯

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ وَإِنْ كُنْتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوا. –المائدة: 6

“হে মুমিনগণ! তোমরা যখন নামাযের জন্য উঠবে তখন নিজেদের চেহারা ও কনুই পর্যন্ত নিজেদের হাত ধুয়ে নিবে, নিজেদের মাথাসমূহ মাসেহ করবে এবং টাখনু পর্যন্ত নিজেদের পা(-ও ধুয়ে নেবে)। তোমরা যদি জানাবত (অপবিত্র) অবস্থায় থাক তবে নিজেদের দেহ (গোসলের মাধ্যমে) ভালোভাবে পবিত্র করে নেবে।” -সূরা মায়েদা ৫ : ৬

হাদীসে এসেছে,

“لا تقبل صلاة بغير طهور”. –صحيح مسلم:1/204 رقم الحديث: 224 دار إحياء التراث العربي – بيروت

“পবিত্রতা ব্যতীত নামায কবুল হয় না।” –সহীহ মুসলিম: ২২৪

দেখুন, সামান্য লজ্জার কারণে এক ওয়াক্ত নামায নষ্ট করা অনেক বড় বোকামি ও অপরিণামদর্শিতা। আজ যাদের লজ্জায় আপনি আপনার আখিরাত নষ্ট করছেন, হাশরের মহাবিপদে তারা কেউ আপনার বিন্দু পরিমাণ উপকার করবে না, করতে পারবেও না। এমনকি আপনিও যদি সেদিন বড় বিপদে পড়ে যান, তখন আপনার প্রাণপ্রিয় স্ত্রী-সন্তানদের বিনিময়ে হলেও মুক্তির জন্য পাগল হয়ে যাবেন। নিচের দুটি আয়াত একটু চিন্তা করে দেখুন বিপদটা কত কঠিন হবে!

يَوْمَ تَكُونُ السَّمَاءُ كَالْمُهْلِ (8) وَتَكُونُ الْجِبَالُ كَالْعِهْنِ (9) وَلَا يَسْأَلُ حَمِيمٌ حَمِيمًا (10) يُبَصَّرُونَهُمْ يَوَدُّ الْمُجْرِمُ لَوْ يَفْتَدِي مِنْ عَذَابِ يَوْمِئِذٍ بِبَنِيهِ (11) وَصَاحِبَتِهِ وَأَخِيهِ (12) وَفَصِيلَتِهِ الَّتِي تُؤْوِيهِ (13) وَمَنْ فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا ثُمَّ يُنْجِيهِ (14) كَلَّا إِنَّهَا لَظَى (15) نَزَّاعَةً لِلشَّوَى (16) -المعارج

“যেদিন আকাশ তেলের গাদের মতো হয়ে যাবে এবং পাহাড় হয়ে যাবে রঙ্গিন তুলার মতো। কোনো অন্তরঙ্গ বন্ধু তার বন্ধুর খোঁজ নেবে না। অথচ তাদের পরস্পরকে দৃষ্টিগোচর করে দেওয়া হবে। অপরাধী সেদিন শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য তার পুত্রকে মুক্তিপণ হিসাবে দিতে চাবে। এবং তার স্ত্রী ও ভাইকে। এবং তার সেই খান্দানকে যারা তাকে আশ্রয় দিতো। এবং পৃথিবীর সমস্ত অধিবাসীকে, যাতে সে নিজেকে রক্ষা করতে পারে। কখনই এটা সম্ভব হবে না। তা তো এক লেলিহান আগুন। যা চামড়া খসিয়ে দেবে।” –সূরা মাআরিজ ৭০: ৮-১৬

لِلَّذِينَ اسْتَجَابُوا لِرَبِّهِمُ الْحُسْنَى وَالَّذِينَ لَمْ يَسْتَجِيبُوا لَهُ لَوْ أَنَّ لَهُمْ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا وَمِثْلَهُ مَعَهُ لَافْتَدَوْا بِهِ أُولَئِكَ لَهُمْ سُوءُ الْحِسَابِ وَمَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمِهَادُ (18) –الرعد

“মঙ্গল তাদেরই জন্য, যারা তাদের প্রতিপালকের ডাকে সাড়া দিয়েছে। আর যারা তার ডাকে সাড়া দেয়নি, তাদের কাছে যদি দুনিয়ার সমস্ত জিনিসও থাকে এবং তার সমপরিমাণ আরও, তবে তারা (কিযামতের দিন) নিজেদের প্রাণ রক্ষার্থে তা সবই দিতে প্রস্তুত হয়ে যাবে। তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট রকমের হিসাব এবং তাদের ঠিকানা জাহান্নাম; তা বড় মন্দ ঠিকানা।” –সূরা রাদ ১৩ : ১৮

সুতরাং আপনি এখনই সতর্ক হোন এবং সেই কঠিন বিপদের দিন আসার আগেই সামান্য লজ্জার কথা ঝেড়ে ফেলে শরীয়তের বিধান যথাযথ পালন করুন, যেদিন কোটি কোটি মানুষের সামনে আপনাকে লজ্জিত হতে হবে, কিন্তু সেদিন পরিণতি ভোগ করা ছাড়া কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণের বিন্দু মাত্র সুযোগ থাকবে না। আল্লাহ আমাদের সকলকে এমন কঠিন পরিস্থিতি থেকে হেফাযত করুন। মৃত্যুর আগে তার পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণের তাওফীক দান করুন।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

12 Oct, 13:27


স্বপ্নদোষের পর লজ্জায় গোসল না করে নামায আদায় করে ফেললে করণীয় কী?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a7%81-%e0%a6%97%e0%a7%8b%e0%a6%b8%e0%a6%b2/%e0%a6%b2%e0%a6%9c%e0%a7%8d%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%97%e0%a7%8b%e0%a6%b8%e0%a6%b2-%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%af/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

11 Oct, 12:20


“হিন্দুদের মেলা-উৎসব যদি ধর্মীয় হয়, তাতে অংশগ্রহণ জায়েয নেই। তাদের এমন মেলাতে মুসলমানদের জন্য দোকান-পাট নিয়ে না যাওয়া চাই। তবে (মেলা থেকে) সওদাপাতি খরিদ করার ব্যাপারে দু’দিকেই বক্তব্য রয়েছে। কিছু ফকিহ সেটাও নিষেধ করেছেন। কেউ বলেছেন, যদি নিয়মিত প্রয়োজনীয় পণ্য খরিদ করা হয়; মেলার কারণে বিশেষভাবে কিছু ক্রয় না করা হয়, তাহলে জায়েয হবে। কিন্তু সতর্কতা হলো, তাদের ধর্মীয় মেলা থেকে কিছু খরিদ না করা। কেননা ক্রেতাদের দ্বারাও মেলার জৌলুস বৃদ্ধি পায়। আর কাফেরদের মেলার জৌলুস বাড়ানো সঙ্গত নয়। হ্যাঁ, যদি বাণিজ্যিক মেলা হয়, যেমন অনেক জায়গাতে পশু-পাখির বাণিজ্যমেলা বসে, সেখানে যেতে এবং কেনাকাটা করতে সমস্যা নেই। শর্ত হলো নাচ-গান থেকে দূরে থাকতে হবে।” –ইমদাদুল আহকাম: ৭/১৭২; আরা দেখুন: ফাতওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ: ১৬/৩৯৮-৩৯৯; ইমদাদুল ফাতাওয়া: ৪/২৬৮-২৭০; আযিযুল ফাতাওয়া, পৃ: ৭১৮; রশিদিয়া, পৃ: ৪৫৫ ও ৪৭১

যফর আহমদ থানভি রহ.এর সময়ে জনৈক হিন্দু তাদের ধর্মীয় প্রথায় স্থানীয় মুসলিদেরকে দাওয়াত করলে, জনৈক মুসলিম এবিষয়ে হযরতের নিকট ফতোয়া তলব করেন। তখন তিনি লিখেন,

مسلمانوں کو اس دعوت میں شریک ہونا جائز نہیں کیونکہ یہ دعوت ہندوؤں کی مذہبی دعوت هے اور كفار كى مذهبى دعوتوں میں شرکت جائز نہیں۔ امداد الاحكام: 7/181

“মুসলমানদের জন্য এই দাওয়াতে শরিক হওয়া জায়েয নেই। কেননা এটা হিন্দুদের ধর্মীয় দাওয়াত। আর কাফেরদের ধর্মীয় দাওয়াতে শরিক হওয়া জায়েয নেই।” –ইমদাদুল আহকাম: ৭/১৮১

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

০৯-০৬-১৪৪২ হি.

২৩-০১-২০২১ ইং.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

11 Oct, 12:20


হিন্দুদের পূজায় কি অংশগ্রহণ করা যাবে?

প্রশ্ন: হিন্দুদের পূজায় অংশগ্রহণের হুকুম কী?

প্রশ্নকারী-কাশিম

উত্তর: হিন্দু বা যে কোনো কাফেরদের পূজা বা ধর্মীয় উৎসব-অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া হারাম। আর সেই উৎসবের প্রতি সম্মান জ্ঞাপনপূর্বক উপস্থিত হওয়া অথবা তাদের পূজা ও ধর্মীয় প্রথা পালনে অংশ গ্রহণ করা কুফর। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

{وَالَّذِينَ لَا يَشْهَدُونَ الزُّورَ وَإِذَا مَرُّوا بِاللَّغْوِ مَرُّوا كِرَامًا} [الفرقان: 72]

“(এবং রহমানের বান্দা তারা) যারা ‘যূরে’ উপস্থিত হয় না। আর অনর্থক কর্মকাণ্ডের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলে সসম্মানে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।” –সূরা ফুরকান: ৭২

ইমাম ইবনে কাসির রহ. (৭৭৪ হি.) বলেন,

وقال أبو العالية، وطاوس، ومحمد بن سيرين، والضحاك، والربيع بن أنس، وغيرهم: هي أعياد المشركين – تفسير ابن كثير: 6/ 130



“আবুল আলিয়া, তাউস, মুহাম্মাদ বিন সিরিন, যাহহাক, রবি বিন আনাস প্রমুখ তাবিয়ি বলেছেন, ‘যূর’ হচ্ছে মুশরিকদের উৎসব।” -তাফসিরে ইবনে কাসির: ৬/১৩০; তাফসিরে বাগাবি: ৩/৪৫৯

ইমাম ফখরুদ্দিন রাযি রহ. (৬০৬ হি.) বলেন:

ويحتمل حضور كل موضع يجري فيه ما لا ينبغي ويدخل فيه أعياد المشركين ومجامع الفساق، لأن من خالط أهل الشر ونظر إلى أفعالهم وحضر مجامعهم فقد شاركهم في تلك المعصية، لأن الحضور والنظر دليل الرضا به. اهـ -التفسير الكبير: 24/485

“আয়াতে ‘যূর’ দ্বারা প্রত্যেক এমন জায়গা উদ্দেশ্য হতে পারে যেখানে অনুচিত কাজ সংঘটিত হয়। মুশরিকদের উৎসব এবং পাপাচারীদের মিলনমেলাও এর অন্তর্ভুক্ত। কেননা যে অবাধ্যদের সাথে মেলামেশা করে এবং তাদের কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করে, তাদের সমাবেশে উপস্থিত হয়, সেও তাদের সঙ্গে উক্ত অপরাধে অংশ নিল। উপস্থিত হওয়া ও পরিদর্শন করা তার প্রতি সন্তুষ্টির প্রমাণ।” –তাফসিরে কাবীর: ২৪/৪৮৫

উমর রা. বলেন:

اجتنبوا أعداء الله في عيدهم. –السنن الكبرى للبيهقي: 18862

“তোমরা আল্লাহর দুশমনদের উৎসবগুলোতে তাদের থেকে দূরে থাক।” – আসসুনানুল কুবরা: ১৮৮৬২

আল্লামা ইবনে নুজাইম রহ. (৯৭০ হি.) বলেন:

يكفر … بخروجه إلى نيروز المجوس والموافقة معهم فيما يفعلون في ذلك اليوم وبشرائه يوم النيروز شيئا لم يكن يشتريه قبل ذلك تعظيما للنيروز لا للأكل والشرب وبإهدائه ذلك اليوم للمشركين ولو بيضة تعظيما لذلك اليوم … اتفاقا. اهـ -البحر الرائق شرح كنز الدقائق ومنحة الخالق وتكملة الطوري: 5/ 133، الهندية: 2/276

“অগ্নিপূজকদের নববর্ষে অংশগ্রহণ করলে এবং তাদের সাথে তাদের ওই দিনের কার্যাবলীর প্রতি সম্মতি জ্ঞাপন করলে অথবা শুধুমাত্র নববর্ষের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে সেদিন কিছু খরিদ করলে, যা সে খরিদ করার ছিল না এবং তা পানাহারের জন্যও নয়, এমনিভাবে ওই দিনের সম্মানার্থে কোনো মুশরিককে হাদিয়া প্রদান করলে; চাই তা একটা ডিমই হোক না কেন, সর্বসম্মতভাবে কাফের হয়ে যাবে।” –আলবাহরুর রায়িক: ৫/১৩৩; হিন্দিয়া: ২/২৭৬

আল্লামা যফর আহমদ থানভি রহ. বলেন,

ہندؤوں کا میلہ اگر مذہبی ہو تو اس میں شرکت جائز نہیں اور نہ مسلمانوں کو ان کے ایسے میلے میں اپنی دوکان لے جانی چاہئے۔ باقی سودا خرید نے میں دونوں قول ہیں۔ بعض فقہاء نے اس کو بھی منع کیا ہے اور بعض نے کہا ہے کہ اگر معمول کے مطابق ضروریات خریدی جائیں اور اس میلہ کی وجہ سے خاص کوئی چیز نہ خریدی جائے تو جائز ہے مگر احتیاط اسی میں ہے کہ ان کے مذہبی میلہ میں سے کچھ بھی نہ خریدے کیونکہ خریداروں سے بھی میلہ کی رونق بڑھتی ہے اور کفّار کے مذہبی میلہ کی رونق کو بڑھانا مناسب نہیں۔ ہاں اگر تجارتی میلہ ہو جیسے بعض جگہ جانوروں کی تجارت کے لئے میلہ لگتا ہے۔ اس میں جانے اور خرید وفروخت کرنے میں مضائقہ نہیں بشرطکیہ ناچ رنگ وغیرہ سے دور رہے۔ واللہ اعلم

حرره الاحقر ظفراحمد ۲۴؍جمادی الاولیٰ ۴۰ ؁ھ –امداد الاحكام: 7/172

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

11 Oct, 12:20


হিন্দুদের পূজায় কি অংশগ্রহণ করা যাবে?

https://fatwaa.org/%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE/%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%A8/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE/%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%82%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%85%E0%A6%82%E0%A6%B6%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B9%E0%A6%A3/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

10 Oct, 16:39


ইমাম সাহেব দ্রুত নামায পড়ালে করণীয় কী?

প্রশ্নঃ

আমি যে ইমাম সাহেবের পিছনে নামায পড়ি তিনি খুব দ্রুত নামায পড়ান, ফলে নামাযের তাসবীহগুলো ঠিক মতো পড়তে পারি না, এমনকি যে নামাযে সূরা ফাতেহা পড়তে হয়; সে নামাযে সূরা ফাতেহা শেষ করার আগেই ইমাম সাহেব রুকূতে চলে যান। এখন আমি যদি জামাআতের সাথে নামায পড়ার পর একাকী আবার ফরয নামায পড়ে নিই, তাহলে কি চলবে?

প্রশ্নকারী- আব্দুল্লাহ

উত্তরঃ

بسم الله الرحمن الرحيم

না, ফরয নামায একবার জামাআতের সঙ্গে আদায় করার পর দ্বিতীয়বার আদায় করা যাবে না। হাদীসে এসেছে,

عن سليمان مولى ميمونة قال: رأيت ابن عمر جالسا على البلاط والناس يصلون قلت: يا أبا عبد الرحمن ما لك لا تصلي؟ قال: إني قد صليت. إني سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «لا تعاد الصلاة في يوم مرتين» -سنن النسائي، كتاب الصلاة، سقوط الصلاة عمن صلى مع الإمام في المسجد جماعة (2/140 رقم: 860 مكتب المطبوعات الإسلامية – حلب الطبعة: الثانية، 1406، وصححه النووي (676هـ) في خلاصة الأحكام (2/668، مؤسسة الرسالة – لبنان – بيروت(.

“মায়মুনা রাযিয়াল্লাহু আনহা-এর আযাদকৃত গোলাম সুলাইমান রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনে উমর রাযিয়াল্লাহু আনহুমাকে বালাত নামক স্থানে বসা দেখলাম। মানুষজন তখন নামায আদায় করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আবু আব্দুর রহমান! আপনার কি হলো, নামায আদায় করছেন না কেন? তিনি বললেন, আমি (একবার জামাআতের সাথে) নামায আদায় করে ফেলেছি। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, একদিনে এক নামায দুবার আদায় করা যাবে না।” –সুনানে নাসায়ী: ৮৬০

তাই প্রথমত এমন ইমামের পেছনে নামায আদায়ের চেষ্টা করবেন, যিনি ধীরে সুস্থে নামায আদায় করেন এবং নামাযের আযকারগুলো আদায়ের জন্য যথেষ্ট সময় নেন। তা সম্ভব না হলে, নামাযের যেসব জায়গায় আপনাকে ইমামের পেছনে আযকার আদায় করতে হয়, যেমন তাসবীহ, তাশাহহুদ ইত্যাদি, সেগুলো আপনি বিশুদ্ধ উচ্চারণ নিশ্চিত করে একটু দ্রুত আদায় করবেন। তাতেও যদি ইমামের সঙ্গে শেষ করতে না পারেন, তাহলে রুকূ সিজদার তাসবীহের মতো সুন্নত আযকারগুলো, যতটুকুই হোক, বাকিটা রেখে ইমামের সঙ্গে উঠে যাবেন। পক্ষান্তরে তাশাহহুদের মতো ওয়াজিব আযকার পূর্ণ করে পরবর্তী অংশে ইমামের সঙ্গে শরীক হবেন। -রদ্দুল মুহতার: ১/৪৭০ দারুল ফিকর; হাশিয়াতুত তহতাভী আলাল মারাকি, পৃ: ২৫৫-২৫৬ দারুল কিতাব দেওবন্দ

উল্লেখ্য, হানাফী মাযহাবে ইমামের পেছনে কেরাত পড়ার কোনও জায়গা নেই। সূরা ফাতেহাও না। সুতরাং আপনি যদি হানাফী মাযহাবের অনুসারী হয়ে থাকেন, তাহলে ইমামের পেছনে কেরাত পড়ার প্রসঙ্গ আসে না।

فقط، والله تعالى أعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৮-০৬-১৪৪৪ হি.

১২-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

10 Oct, 16:38


ইমাম সাহেব দ্রুত নামায পড়ালে করণীয় কী?

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%9c/%e0%a6%87%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b9%e0%a7%87%e0%a6%ac-%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%a4-%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%af-%e0%a6%aa%e0%a7%9c/

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

08 Oct, 12:30


কোনো জামাআত হক হওয়া আর সেই জামাআতের প্রত্যেক সদস্যের প্রতিটি কাজ হক হওয়া এক কথা নয়

প্রশ্নঃ

কয়েকটি বিষয়ে আমার কাছে কিছুটা খটকা লাগছে। অন্য কোনও শাইখকে জিজ্ঞাসা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আপনার কাছেই আবেদন করছি, অনুগ্রহপূর্বক নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর সমাধান দিলে খুবই উপকৃত হবো।

১. যদি ধরে নিই, কোনও জামাআত হকের উপর আছে তাহলে ওই জামাআতের প্রত্যেক সদস্যই হকের উপর আছে, এমনটা ধরে নেওয়া কি ঠিক হবে? শেষ যামানা সংক্রান্ত একটি হাদীসে, বিশেষ একটি দলকে ‘হকপন্থী দল’ বলা হয়েছে। এখন কেউ যদি বলে, এখানে জামাআতের কথা বলা হয়েছে। এর অর্থ হলো, সমষ্টিগতভাবে ওই জামাআত হকের উপর থাকবে। কিন্তু ওই জামাআতের সাথে যুক্ত কোনও ব্যক্তি যখন বলবে, আমি হকের উপর আছি, তখন তাকে অবশ্যই যাচাই করে নিতে হবে যে, তিনি আসলেই পুরোপুরি হকের উপর আছেন কি না? হকপন্থী জামাআতের সাথে আছেন বলেই তিনি নিজেও পুরোপুরি হকের উপর আছেন, এমন ভাবা যাবে না। হতে পারে, তিনি হকের পুরোপুরি অনুসরণ করছেন না।

হাদীসে জামাআতের ব্যাপারে কথা বলা হয়েছে যে, ওই জামাআতটি হকের উপর থাকবে। ব্যক্তি বিশেষের কথা বলা হয়নি। ব্যক্তি হিসেবে শুধু ‘মাহদী’র কথা এসেছে। কিছু আলামত বলে দেওয়া হয়েছে, যা দ্বারা আমরা তাঁকে চিনতে পারি। তাই তিনি ছাড়া অন্য কোনও ব্যক্তি বিশেষকে অনুসরণীয় ব্যক্তিত্বের মর্যাদা দেওয়ার আগে চিন্তা করতে হবে, -এই কথাগুলো কি সঠিক? কেউ হাদীসের সাথে সংযুক্ত করে এই কথাগুলো বললে কি তিনি গুনাহগার হবেন?

২. গাযওয়ায়ে হিন্দের একটি হাদীসে এসেছে, ‘বাইরে থেকে আগমনকারীদের পায়ের গোড়ালি মুসলিমদের রক্তে ডুবে যাবে’। এটি কি আক্ষরিক অর্থেই বলা হয়েছে, না যুদ্ধের ভয়াবহতা বোঝানোর জন্য বলা হয়েছে? যদি বলি, এর অর্থ হচ্ছে, এই যুদ্ধ এমন সবাইকে ছুঁয়ে যাবে যারা নিরাপত্তার অবকাশ চেয়েছিল। আকাশ থেকে কী পরিমাণ বৃষ্টি বর্ষিত হলে পায়ের গোড়ালি ডুবে যায়, এটি চিন্তা করলেই তো এই যুদ্ধের ভয়াবহতা টের পাওয়া যায়, এই ব্যাখ্যাটি কি সঠিক হবে?

৩. কিছুদিন আগে আমার পরিচিত একজনকে বলতে শুনলাম, রিবাত ও হিজরতের ভূমি একটাই। তা হলো আফগান। অথচ আমি জানি, মুজাহিদরা বিজয় করার পর যেটুকু অঞ্চল শরীয়াহ অনুযায়ী পরিচালনা করেন, তার পুরাটাই ইসলামের ভূমি। ইসলামের ভূমি তো আরও থাকার কথা। ওই ভূমিগুলোর কি রিবাত নেই? সেখানে কি হিজরত করা যায় না? রিবাত ও হিজরত কি শুধু আফগানের মাঝেই সীমাবদ্ধ? কেউ আফগান ছাড়া অন্য কোনো দেশে হিজরত করলে তা কি হিজরত হবে না? তাছাড়া আফগানে ইসলামী ইমারাহ ঘোষণা দেওয়ার আগে সেটা কি হিজরত ও রিবাতের ভূমি ছিলো না? অনুগ্রহ করে বিষয়টি একটু পরিষ্কার করে দিলে অনেক উপকৃত হবো।

নাম- তাহসিন

উত্তরঃ

১.জি, আপনি ঠিক বলেছেন আলহামদুলিল্লাহ। এই কথাগুলোর কারণে কেউ গুনাহগার হবে না ইনশাআল্লাহ; বরং এরকমই বলা জরুরি। কারণ একজন ব্যক্তি কোনও হক জামাআতের সঙ্গে থাকার অর্থ এটা নয় যে, ওই ব্যক্তির সবকিছু সঠিক এবং অন্ধের মতো তার সবকিছু গ্রহণ করতে হবে বা করা যাবে; বরং একজন অনুসরণীয় আলেম হক জামাআতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আগে যেমন ভুল করতে পারেন, তেমনি যুক্ত হওয়ার পরও তার ভুল ভ্রান্তি হতে পারে।

সুতরাং সাধারণ মানুষের জন্য সর্বাবস্থায় একজন আলেম অনুসরণীয় প্রমাণিত হওয়ার পর তাঁকে অনুসরণ করার এবং তার থেকে দীন গ্রহণের নীতি হচ্ছে যথাক্রমে;

ক. যে তাকওয়া, ইলম ও প্রজ্ঞার ভিত্তিতে তিনি নির্ভরযোগ্যতার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ ও অনুসরণীয় ব্যক্তিত্বের মর্যাদা লাভ করেছেন, যতক্ষণ সেই নির্ভরযোগ্যতা বিনষ্ট হওয়ার কোনও কারণ না ঘটবে, ততক্ষণ তিনি অনুসরণীয়ের মর্যাদায় বহাল থাকবেন। পক্ষান্তরে তিনি যদি তাঁর কাজ-কর্মের দ্বারা উক্ত নির্ভরযোগ্যতা বিনষ্ট করেন, তখন তাঁকে অনুসরণীয় হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। -জামিউ বয়ানিল ইলম, ইমাম ইবনে আব্দুল বার (৪৬৩ হি.) : ২/৯৮৭ দারু ইবনিল জাওযী; মিশকাতুল মাসাবীহ: ১/৬৭ আল-মাকতাবুল ইসলামী বৈরুত; মিরকাতুল মাফাতীহ: ১/২৭৪ দারুল ফিকর, বৈরুত

খ. একইভাবে তিনি যখন নির্ভরযোগ্য হিসেবে উত্তীর্ণ থাকবেন, তখনও তাঁর ভুল-ত্রুটি হতে পারে। অতএব তখন যদি ঘটনাক্রমে তাঁর কোনও ভুল-ত্রুটি প্রকাশিত হয়ে যায়, তাহলে সুনির্দিষ্ট সেই বিষয়ের অনুসরণ থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে; যদিও এমন বিচ্ছিন্ন ও ঘটনাক্রমের ভুল-ভ্রান্তির কারণে তাঁকে অনুসরণীয় ব্যক্তির মর্যাদা থেকে ফেলে দেয়া যাবে না। -সুনানে আবু দাউদ: ৭/২০; হাদীস নং: ৪৬১১ দারুর রিসালাতিল আলামিয়্যাহ; বাযলুল মাজহুদ: ১৩/১৭ মারকাযুশ শায়েখ আবুল হাসান আলী আন-নদভী; আল-মুওয়াফাকাত, ইমাম শাতেবী: ৫/১৩৬ দারু ইবনি আফফান; সিয়ারু আলামীন নুবালা: ১৪/৩৭৬ ও ২০/৮৭-৮৮ মুয়াসসাসাতুর রিসালাহ; মাজমুউল ফাতাওয়া: ৩২/২৩৯ ও ২৭/৩১১ মাজমাউল মালিক ফাহদ, মদীনা

২. আমাদের ত্রুটিপূর্ণ অনুসন্ধানে আমরা এমন কোনও হাদীস খুঁজে পাইনি।

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

08 Oct, 12:30


৩. জি, আপনি যেমনটা বলছেন, সেটাই বাস্তব। রিবাত ও হিজরত শুধু আফগানে সীমাবদ্ধ নয়। বরং ইয়ামান, সিরিয়া, মালি, সোমালিয়া, মৌরিতানিয়া, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, নাইজার, পাকিস্তান, কাশ্মীরসহ পৃথিবীর এক ডজনেরও অধিক জায়গার উল্লেখযোগ্য অঞ্চল মুজাহিদদের দখলে আছে এবং সেখানে তারা যথাসাধ্য শরীয়াহ মোতাবেক পরিচালনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন আলহামদুলিল্লাহ। এসব অঞ্চলেও হিজরত যেমন হতে পারে তেমনি এগুলোর সীমান্ত প্রহরার জন্য রিবাতও হতে পারে। -ফাতহুল বারী: ৬/৩৯ দারুল ফিকর, বৈরুত; মিরকাতুল মাফাতিহ: ৬/২৪৭৩ দারুল ফিকর; আল-বাহরুর রায়েক: ৫/৭৭ দারুল কিতাবিল ইসলামী; ফাতাওয়া শামী: ৪/১২১ দারুল ফিকর; বাযলুল মাজহুদ: ৯/১৪ মারকাযুশ শায়েখ আবুল হাসান আলী আন-নদভী

والله تعالى اعلم بالصواب

আবু মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আলমাহদি (উফিয়া আনহু)

১৬-০৬-১৪৪৪ হি.

১০-০১-২০২৩ ঈ.

fatwaa.org || উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ

08 Oct, 12:30


কোনো জামাআত হক হওয়া আর সেই জামাআতের প্রত্যেক সদস্যের প্রতিটি কাজ হক হওয়া এক কথা নয়

https://fatwaa.org/%e0%a6%ab%e0%a6%be%e0%a6%a4%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be/%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%a8%e0%a7%8b-%e0%a6%9c%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%86%e0%a6%a4-%e0%a6%b9%e0%a6%95-%e0%a6%b9%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be-%e0%a6%86%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a7%87%e0%a6%87/