▌বহুবিবাহের প্রচলন বা স্বাভাবিকরণ কেনো জরুরি?
❏ ইসলামের কোনো বিষয় সমাজে ট্যাবু হয়ে গেলে, খারাপ চোখে দেখা হলে, ইসলামের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হলে, তার আমল বৃদ্ধি করে ট্যাবু ভেঙে ফেলা অত্যাবশ্যক দায়িত্বে পরিণত হয়, যদিও সাধারণ অবস্থায় ঐ আমলটি ফরজ বা ওয়াজিব পর্যায়ের নাও হয়।
একজন মুসলিমের জন্য এই কারণটিই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে একাধিক বিবাহ ফরজ হলেও তারা করতে পারে না। (যে কারণে এক বিবাহ ফরজ হয়, একই কারণ/উদ্দ্যেশ্য পূরণ না হলে একাধিক বিবাহও ফরজ হতে পারে।)
❏ কুরআন সুন্নাহ এবং সাহাবীগণের সময়ে ইসলামের যে বিষয়কে যেভাবে দেখা হতো, ভাবা হতো, প্রচলন ছিল, ঐভাবেই ভাবতে হবে এবং প্রচলন রাখতে হবে। তা থেকে একটুও বাড়াবাড়ি অথবা ছাড়াছাড়ি কিছুই করা যাবে না।
সমাজে ভারসাম্য-শৃঙ্খলা, ইনসাফ-ইহসান ধরে রাখার জন্য এর বিকল্প নেই।
▌বহুবিবাহের প্রচলন না থাকা, এই বিষয়টিকে খারাপ চোখে দেখা, কঠিন করে ফেলার ফলে-
❏ পুরুষ মানুষ অনেক দেখে শুনে বিবাহ করে, সবদিক থেকে সর্বোচ্চ ভালো পেতে চায়, কোনো রিস্ক নিতে বা ছাড় দিতে চায় না। কেননা বিবাহ কেবলমাত্র একটিই করতে পারবে।
❏ এতে বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা, সৌন্দর্যে কমতি থাকা, বয়স্কা নারীদের সহজে বিবাহ হতে চায় না।
একাধিক বিবাহের প্রচলন থাকলে, পুরুষ মানুষ এক-দুইজন বিধবা, কম সুন্দরী, বয়স্কা নারী বিবাহ করতে চিন্তিত হতো না, ফলে এমন নারীদের অবিবাহিত থাকতে হতো না। সমাজে গোটা বিবাহের সিস্টেম সহজ হয়ে যেতো।
❏ নারী/পুরুষ উভয়েই সংসারে ভয়ঙ্কর সমস্যায় পড়লে/সঙ্গী খুব খারাপ/পাপাচারী/জালিম/বেইনসাফী হলে, সহজেই তালাক নিতে/দিতে পারতো। তালাকের পরে পুণরায় অন্য কোথাও বিবাহ না হবার ভয়ও করতো না।
❏ উত্তম আখলাকের পুরুষরা একাধিক স্ত্রীকে সাথে নিয়েই ভালো থাকতে এবং রাখতে পারতো।
(যে স্বামী ভালো, সে একাধিক স্ত্রীর নিকটেও ভালোই হতো। যে স্বামী খারাপ সে এক স্ত্রীর কাছেও খারাপ।)
❏ খারাপ/জালিম/অবাধ্য নারী/পুরুষদের পরিবার-সংসার করতে বেগ পেত হতো, কেননা তাকে তার খারাবির কারণে সঙ্গী সহজেই ত্যাগ করে যেতো।
এ থেকেও সাধারণ মানুষ নিজেকে ইসলাহ/সংশোধন করার ব্যাপারে মনোযোগী হতো।
(📜 অর্থাৎ যারা ইনসাফের আলাপ তুলে এই বিষয়ের বিরোধীতা করেন, তাদের সমাধান মূলত বহুবিবাহের প্রচলনের মাধ্যমেই সম্ভব, আর ইনসাফ এক বিবাহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, এছাড়া সন্তান নেওয়া, ভাইবোন, ব্যবসা, চাকুরী, সার্ভিস সবক্ষেত্রেই ইনসাফ জরুরি। এমনকি অন্যের ক্ষেত্রে শুধু ইনসাফ যথেষ্ট নয়, সাথে যথাসাধ্য ইহসান ও কল্যাণকামীতাও জরুরি)
❏ কেউই সহজে পরকীয়ার গুণাহে জড়াতো না বা প্রয়োজন হতো না। পুরুষরা প্রয়োজন হলেই একাধিক বিবাহ করতে পারতো, এমনকি স্ত্রীরা নিজেদের সংসারে শান্তির জন্য ভালো সতীন খুঁজে দিতো।
❏ নারীরাও প্রয়োজনে/জরুরি হলে তালাক নিয়ে পছন্দের আলফামেইল খুঁজে নিতো, তাদের তৃতীয়-চতুর্থ স্ত্রী হতেও অনাগ্রহ দেখাতো না। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীরা লজ্জায় এগুলো প্রকাশই করে না।
সাহাবীগণের সময়ে এগুলো এতোটাই সহজ এবং ভারসাম্য পূর্ণ ছিল, জুবাইর রাঃ-এর বিবাহের ঘটনা বেশ প্রসিদ্ধ। এখানে বলা যাবে না, খুঁজে নিন।
❏ উন্নত হিউম্যান রেইসঃ
পশু পাখির উদাহরণ দিয়ে বুঝা যেতে পারে- উন্নত প্রজাতির, শক্ত-সবল, সুস্থ-স্বাস্থ্যবান, অধিক ফার্টাইল জাতের মধ্যে মেটিং হলে উন্নত ব্রিড পাওয়া যায় বা সম্ভাবনা অধিক থাকে।
অর্থাৎ এমন পুরুষের অধীনে এমন একাধিক নারী থাকলে, তাদের অনেক সন্তান-সন্ততি হতো, একইসাথে উন্নত হিউম্যান রেইসের রেশিও বৃদ্ধি পেতো।
বিপরীতে দুর্বল নারীরা এমনিতেই বেশি সন্তান জন্ম দিতে পারে না আর দুর্বল পুরুষের অধীনে একাধিক স্ত্রী থাকে না।
একটা জাতি দীর্ঘমেয়াদে শক্তি-সামর্থ্য-রাজত্বের ওপর টিকে থাকতে, উন্নত জাতিসত্তা বা মেধাবী জনসম্পদে সমৃদ্ধ হতে এটার প্রচলন খুবই জরুরি।
❏ এটা জীবজগতের ফিতরাতের অনুকূলে, আর ফিতরাত বিরোধী নিয়মে অভ্যস্ত হলে, সে সমাজে আকল বিকৃতি/সাইকোপ্যাথের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
উন্নত মেরুদন্ডী জীবজগতের মধ্যে দেখুন- সিংহ থেকে মোরগ-মুরগী সবখানে একই বিষয়, পুরুষ প্রজাতি অপর পুরুষের সাথে তার সঙ্গী ভাগাভাগি করে না, যেকোনো উপায়ে বাকিদেরকে পরাজিত করে বিতাড়ন করে, বিপরীতে বিজয়ী পুরুষের অধীনে একাধিক নারী প্রজাতি থাকলেও তারা এজন্য লড়াই করে না।
অর্থাৎ পুরুষের একাধিক বিবাহ নারীদের ফিতরাতের বিরোধী নয়, অসুস্থ সমাজের প্রভাবে তাদের আকল বিকৃত হয়ে গেছে। বরং তাদের ফিতরাত এতটুকুই যে- একাধিক বিবাহ পরবর্তী অপর সতীন থেকে অধিক গুরুত্ব পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা।
...এমন অসংখ্য জরুরি বিষয় রয়েছে। আল্লাহ্ প্রদত্ত এই একটা বিষয় সমাজ থেকে উঠে যাওয়ার ফলে শতশত ফিতনা-ভোগান্তি সমাজে জেঁকে বসেছে, আর নারীরাই অধিক ভুক্তভোগী।
✍️ Mahmud Ul Hasan ভাই