ভাবা যায়??
এক ৯ বছরের বাচ্চা মেয়ে বলছে তার মাকে, সে বেহেশতে যেতে চায় না। এক বেহেশতে এতোদিন একটা মানুষ কিভাবে থাকে?
বোরিং লাগে না! (nauzubillah)
আরেক বাচ্চা তার বাবাকে বলছে, বেহেশতে ওয়াইফাই নেই, কাজেই সে বেহেশতে যেতে চায় না। (nauzubillah)
প্রথমটা আমার এক ফিমেল হিজাবি কলিগের কাছে শোনা তার নিজের বাচ্চার ব্যাপারে।
দ্বিতীয়টা ফেসবুকে এক বাবা কমেন্ট করেছেন তার নিজের বাচ্চার ব্যাপারে।
উভয় প্যারেন্টই তাদের বাচ্চাদের এরূপ কথা বলার মতো প্রতিভায় পুলকিত। হাসির রিএক্ট দেখলাম চোখেমুখে উভয়েরই।
আমার চোখেমুখে ভয়ের রিএক্ট। কি জেনারেশন আমরা রেখে যাচ্ছি পৃথিবীতে। এদের উপরই কি তাহলে কিয়ামত হবে??
বাসায় ফিরে বাচ্চার মাকে অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। বাচ্চার মা সাথে সাথে মেয়েকে ডাকলো। বলল, এখনই আবার শিউর হয়ে নেই। অনেকদিন বাসায় জান্নাত জাহান্নামের আলোচনা হয় না। বাচ্চার মেন্টালিটি এখনো ঠিক আছে কি না পরীক্ষা নেয়া দরকার? বর্তমানে বিগড়ে যেতে সময় লাগে না।
জিজ্ঞাসা করল, তুমি কি জান্নাতে যেতে চাও, নাকি জাহান্নামে।
উত্তর দিল জান্নাতে।
বাচ্চার মা বলল, কেন যেতে চাও? পয়েন্টগুলো বলো।
এরপর একে একে পয়েন্ট বলা হলো। আমরাও কিছু হেল্প করলাম।
বাচ্চার মা বলল, দেখো, জান্নাতে কিন্তু ওয়াইফাই নাই। সমস্যা হবে না।
উত্তর এলো, না। এরচেয়ে ভালো জিনিস আছে।
জিজ্ঞাসা করা হলো, জাহান্নামে কেন যেতে চাও না? সেখানের খাবারের নামগুলো বলো। ক্ষুধায় কাঁটাযুক্ত যাককুম ফল, রক্ত পূজ, আগুন, এবং সাপ।
ওকে। ঠিক আছে যাও।
এরপর আজকে আবার ডাকা হলো। আজকের বিষয়বস্তু সম্পত্তি বন্টন। কারণ আমার মা তার ছেলেমেয়েদের শিখিয়েছিলেন, ছেলে মেয়ে সমান। যার জন্য আমার বোনের সেভাবে মাইন্ড সেটআপ হয়েছিল। আমি চাই নাই, আমার সন্তান ভুল মাইন্ড সেটআপ নিয়ে বড় হোক।
বাচ্চার মা জিজ্ঞেস করল, ধরো, তোমার বাবা একটা সম্পত্তি রেখে গেল। এটা তুমি আর তোমার ছোট ভাই মুহাম্মাদ কিভাবে ভাগ করে নিবে?
আমার মেয়ে অনেকক্ষন চিন্তা করে বলল, অর্ধেক অর্ধেক।
বাচ্চার মা বলল, এটা তো তোমার কথা বললা। কিন্তু আল্লাহর কথা বলো। আল্লাহ কিভাবে ভাগ করতে বলছেন?
উত্তর এলো, জানি না।
বাচ্চার মা বলল, দেখ, তোমার কিন্তু কোন খরচ নেই। এখন তোমার খরচ কে চালায়?
- বাবা।
- তোমার বিয়ের পর তোমার খরচ কে চালাবে? তোমার স্বামী চালাবে। বুঝতে পারছ।
আর অন্যদিকে তোমার ভাইয়ের খরচ কে চালাবে?
তাকে নিজেই চালাতে হবে। এমনকি ওর বৌয়ের খরচও ওকেই চালাতে হবে। ওর ছেলেমেয়েদের খরচও চালাতে হবে। এমনকি প্রয়োজনে আমার খরচও চালাতে হবে। এমনকি আল্লাহ না করুক, তুমি যদি কখনো ওর বাসায় উঠতে বাধ্য হও, তাহলে তোমার খরচও চালাবে।
কারণ মেয়েদের খরচ সবসময়ই ছেলেরা চালায়। এটাই মেয়েদের সম্মান।
বুঝতে পারছ?
তাহলে এখন বলো, ওর খরচ কত বেশি। আর তোমার কোন খরচই নেই।
তাহলে এখন বলো, বাবার সম্পত্তিতে ওর কতভাগ পাওয়া উচিত, আর তোমার কতভাগ??
আল্লাহ একটা সমাধান দিছেন। সে অনুযায়ী তুমি পাবে ১ ভাগ, আর তোমার ভাই ২ ভাগ।
ঠিক আছে??
আর কখনো শুনবো না তো, অর্ধেক অর্ধেক পাবা?
- নাহ।
প্যারেন্টিং। এভাবেই আলহামদুলিল্লাহ, নিজের জ্ঞান বুদ্ধিকে আল্লাহর হুকুমের সামনে নত করে দেয়ার নামই মুসলমান।
- সংগৃহীত
মা হিসেবে করনীয় পর্ব-২০