শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহ ইস্তিগাছাকে হারাম মনে করতেন যেটা হল দেওবন্দিরাই মনে করে।ইস্তিগাছার ব্যাখ্যা আছে, কারণ একটা হচ্ছে আল্লাহর পরিবর্তে কাউকে তার চেয়ে যোগ্য মনে করা, আরেকটা হচ্ছে মাখলুকের দুর্বলতার জানা সত্ত্বেও তার পক্ষে সম্ভব এমন কিছু সাহায্য চাওয়া। যেগুলো আমরা সাধারণ মানুষের কাছে করে থাকি। আরো রওজার গিয়ে নবীজির কাছে কিছু চাওয়া। এটার ধরন এবং ব্যাক্তির অবস্থা অনুযায়ী শিরক হয় ও কুফর হয়ে যায়। কিন্তু এটা হারাম মনে করে দেওন্দীরা, কিন্তু কিছু করলে তাকে যা কাফির মুশরিক বলে না কারণ এখানে ব্যাখ্যা থাকে। আদনান রশিদ এই জিনিসটা বুঝতে চায় নাই।
আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে শাহ সাহেবকে নিয়ে সবাই টানাটানি করার কারণ কি জানেন, শাহ সাহেব সুফি ছিলেন বড় মাপের। গাজালির পরে যদি ইলমের গভীরতা আর তাসাউফের সর্বোচ্চ মাকাম কেউ নিয়ে থাকে, তাহলে শাহ সাহেবের নাম নিতে হবে। আর সুফিদের কথা হয়ে থাকে গভীর আর বহু অর্থবোধক। তাদের কথার অনেক দিক থাকে, গভীরতা থাকে। উদাহরণস্বরূপ রুমিকে ধরতে পারেন। রুমির করা কবিতাগুলো আল্লাহ ভালোবাসায় উৎসর্গ করে লেখা, অথচ যখন রুহানিয়াত গুলো শাব্দিক রূপ নেয়, তখন সেটা দিয়ে রুহানিয়াত বুঝানো সম্ভব হয় না। কারণ তাদের কথাগুলো হয় মেটাফোরিক। এজন্য অক্ষরবাদীরা রুমির কবিতাকে নারীর সাথে প্রেম ভালোবাসার কবিতা মনে করে।
( নোট, আমি আশআরি, মাতুরিদি আর আছারি নিয়ে একটু ভয়েস নোট দিছি টেলিগ্রামে। ওইটা শুনতে পারেন, আপনাদের কাজে লাগতে পারে।)
•
আরেকটা অংশ দেখালাম হচ্ছে শিয়াদের বিষয়ে ড্যানিয়েলের অবস্থান। ড্যানিয়েলের অবস্থান ভুল তাতে কোন সন্দেহ নাই কিন্তু। কিন্তু মাহাস তো অলরেডি ইরান থেকে মিলিটারি এডাভান্টেজ নেয়। সুতরাং আলাদাভাবে এটা আর শিয়া সুন্নির ঐক্যের লিটেরেচার প্রচার করার প্রয়োজন হয় না। সৌদি, কাতার আরব আমিরাত সহ মোটামুটি সকল মুসলিম রাষ্ট্রই কিন্তু মাহাসকে মিলিটারি এবং ফাইনান্সিয়াল সাপোর্ট দেয়। কিন্তু স্ট্রাটেজিকলি তারা কিন্তু মাহাস থেকেই সাহায্য বেশি পেয়েছে, এটা স্বীকার করতে হবে। কিন্তু অফিসিয়ালি আলাদাভাবে শিয়া সুন্নির ঐক্যের ডাক ড্যানিয়েলের সবচেয়ে বিভ্রান্তিকর অবস্থান।
ড্যানিয়েলের পেছনে সালাফিদের ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণগুলো নিছক শিয়া সুন্নির ঐক্যের ডাক না আমার বিবেচনায়। মোটাদাগে তাদের সমস্যা হলো:
> ড্যানিয়েল আশআরি মাতুরিদিদেরকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত মনে করে। যেখানে সালাফিরা তাদের নিজেদের ছাড়া আর কাউকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মনে করে না। (অর্থাৎ আশআরি মাতুরিদিরা আহলুল বিদআহ হাস্যকর!)
> ওয়াহহাবি-সালাফি ডকট্রিনের বিরোধীতা
> শিয়া-সুন্নির ঐক্যের বিরোধীতা করে যখন ড্যানিয়েলকে আক্রমণ করা হয়, তখন থেকেই ড্যানিয়েল ওয়াহ্হাবি-সালাফিদেরকে একাডেমিক খন্ডন করতে শুরু করে।
> ড্যানিয়েল দেওবন্দী ফ্যানবয়।
কিন্তু ওয়াহ্হাবি সালাফি ডকট্রিনের অবস্থান শক্তিশালী না কখনোই। আমি আশ্চর্য হয়েছি আদনান রশিদ নিজে সালাফি হয়ে নিছক আশআরি মাতুরিদিদের প্রতি নম্র হওয়ার কারণে সালাফিদের কাছ থেকেই কি পরিমান আক্রমণ শিকার হলো। এটা অবশ্য নতুন না, এটা পুরোনো স্বভাব।