আল-উরূজ-العروج @alurooj Channel on Telegram

আল-উরূজ-العروج

@alurooj


অত্র চ্যানেলে কুআন তেলোয়াত, ইসলামিক pdf বুকস, নাসিহা, মাসয়ালা, ও ইসলামি বিশ্বের টুকরো খবর আপডেট দেওয়া হয়।

আল-উরূজ-অল-উরূজ (Bengali)

আল-উরূজ-অল-উরূজ চ্যানেলটি একটি ইসলামিক টেলিগ্রাম চ্যানেল। এখানে কুআন তেলোয়াত, ইসলামিক pdf বুকস, নাসিহা, মাসয়ালা, ও ইসলামি বিশ্বের টুকরো খবর আপডেট করা হয়। এই চ্যানেলে আপনি ইসলামি জ্ঞান অর্জন করতে পারেন এবং আপনার আত্মীয়-বন্ধুদের সাথে ভাগ করতে পারেন। এছাড়াও, আপনি এই চ্যানেলের মাধ্যমে ইসলামি বিষয়ে সামাজিক আলোচনা করতে পারবেন এবং আপনার জীবনে ধর্মিক প্রভাব বাড়াতে পারবেন। তাহলে এখনই 'আল-উরূজ-অল-উরূজ' চ্যানেলে যোগদান করুন এবং আপনার ইসলামিক জীবনের উন্নতির পথে অগ্রসর হন।

আল-উরূজ-العروج

21 Nov, 17:46


https://www.facebook.com/profile.php?id=61569045185785

আল-উরূজ-العروج

20 Nov, 12:32


“পুরুষ মানুষ তো সে যে নিজের মাঝে দুশ্চিন্তা ধারণ করে রাখে, পরিবারকে দুশ্চিন্তায় ফেলে না।”

– ইব্রাহীম আল-হারবী (রহ.)
[তথ্যসূত্র: আল-মুন্তাযাম, ১২/৩৮১]

আল-উরূজ-العروج

18 Nov, 14:02


এত চমৎকার আর অর্থবহ বয়ান জীবনে খুব কমই শুনেছি।

কাকরাইলের মুরুব্বি মাওলানা ক্বারী জুবায়ের সাহেব আসরের পর বয়ানে বলেছেন:

মানুষের উপাদান চারটি। যেমন:
১. আগুন
২. পানি
৩. বাতাস
৪. মাটি

এই চারটির প্রত্যেকটির স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যথাক্রমে সেগুলো হল:
১. আগুন উপরের দিকে ওঠে।
২. পানি ঢালু পেলেই সেদিকে বয়ে যায়। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
৩. বাতাস সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।
৪. মাটি সবকিছুকে নিজের দিকে টানে। কোনো কিছু উপরের দিকে ছুঁড়লেও তা ঘুরেফিরে মাটিতেই পড়ে।

এই প্রত্যেকটির খারাপ প্রভাব মানুষের ওপরও পড়ে থাকে। যথাক্রমে তা নিম্নে উল্লেখ করা হল:
১. মানুষও শুধু উপরের দিকে উঠতে চায়। বড়ত্ব দেখায়। অহংকার করে।
২. মানুষও পানির মতো স্রোতে ভেসে যায়। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখে না।
৩. বাতাসের মতো মানুষও সর্বত্র তার ক্ষমতা বিস্তৃত করতে চায়।
৪. মাটির মানুষ মাটির মতো সবকিছুকে নিজের দিকে টেনে আনতে চায়। কোনো কিছু হাতছাড়া হোক, সেটা কখনো চায় না। অর্থাৎ কৃপণতা করে। তার মালিকানা থেকে কোনো কিছু হাতছাড়া করতে চায় না।

এই প্রত্যেকটা থেকে নিরাময়ের উপায়ও ইসলাম বলে দিয়েছে। সেগুলো হল যথাক্রমে:
১. নামায। মানুষ যতই উপরে উঠতে চায়, নামাযের রুকু-সিজদা তার মাথাকে নিচের দিকে নিয়ে যায়। তার অহংকারকে মাটিতে মিশিয়ে দেয়।
২. রোযা। এটি মানুষকে নিয়ন্ত্রিত থাকতে শেখায়।
৩. হজ্ব। এটি মানুষের ক্ষমতার লোভ থেকে বিরত থাকতে শেখায়। সবার মতো সেলাইহীন সাদা কাপড়ে, টুপিহীন উসকোখুসকো চুলে, ফকিরের মতো চলতে শেখায়।
৪. যাকাত। এটি কৃপণতা থেকে বেরিয়ে আসতে সহায়তা করে।

আল-উরূজ-العروج

13 Nov, 02:21


১০ বছরের শিশু রাশা।
গতকাল ইসরায়েল কর্তৃক হত্যার আগে সে একটি উইল তৈরি করে রেখেছিল। উদ্ধারকারী দল তার বাড়ির ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তার উইলটি খুঁজে পেয়েছে।

রাশা তার উইলে উল্লেখ করেছে যে, তার জামা-কাপড়গুলো যেন অভাবীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। আর জিনিসপত্র (খেলনা) যেন তার মেয়ে কাজিনদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়।
mh/13

আল-উরূজ-العروج

21 Oct, 12:54


এই নশ্বর জগতের ভোগ-বিলাস আর আয়েশগুলো খুবই হৃদয়গ্রাহী ও চমৎকার। যদি শরিয়তের চাহিদা মোতাবেক এগুলো গ্রহণ করা হয় তাহলে তো সোনায় সোহাগা। অন্যথায় এই ভোগ আর আয়েশগুলো মধুতে মেশানো বিষের মতো হয়ে যাবে। নির্বোধ মানুষেরা যা দেখে শুধুই প্রতারিত হবে।

আল-উরূজ-العروج

20 Oct, 16:08


মুহাব্বত আল্লাহ সে হো তো সুকুন দেতিহে
না ফিকির জুদাইকা না খতরা বেওফাইকা

আল-উরূজ-العروج

11 Oct, 10:56


বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একটি শিক্ষণীয় গল্প

জঙ্গলের রাজা বাঘ মশাই ঢাকঢোল পিটিয়ে জানিয়ে দিলো কোনো শিশুকে নিরক্ষর রাখা চলবে না। সবার জন্য যথাযথ শিক্ষা সুনিশ্চিত করতে হবে।
সব ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে হবে।
পড়াশুনা শেষ হলে, সবাইকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।
শুরু হলো সর্ব শিক্ষা অভিযান!
হাতির বাচ্চা স্কুলে এলো।‌
বাঁদর, মাছ, কচ্ছপ, বিড়াল,উট, জিরাফ,সবার বাচ্চা স্কুলে পৌঁছে গেলো।
শুরু হলো ধুমধাম করে পড়াশোনা।‌
ফার্স্ট ইউনিট টেষ্ট হলো। হাতির বাচ্চা ফেল!
- কোন সাবজেক্টে ফেল ? হাতি এসে প্রশ্ন করে।‌
-"গাছে ওঠা" সাবজেক্টে ফেল করেছে।।"
হাতি পড়লো মহা চিন্তায়। তার ছেলে ফেল ?এটা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।।
শুরু হলো খোঁজাখুঁজি, ভালো টিউটর পেতেই হবে।। সন্তানের শিক্ষার ব্যাপারে কোনো রকম কম্প্রোমাইজ করা যাবে না।
হাতির এখন একটাই টেনশন, যেভাবেই হোক,ছেলেকে গাছে চড়া শেখাতে হবে !
গাছে ওঠা সাবজেক্টে টপার করে তুলতে হবে।
ফার্স্ট সেশন অতিক্রান্ত।।
ফাইনাল রেজাল্ট আউট হলো।
দেখা গেলো - হাতি, উট, জিরাফ, মাছ, সবার বাচ্চা ফেল।
বাঁদরের বাচ্চা টপার হয়ে গেছে।
প্রকাশ্য মঞ্চে বিভিন্ন গেষ্টদের আমন্ত্রিত করে, বিরাট অনুষ্ঠান আয়োজন করা হলো।
সেখানে টপার হিসাবে বাঁদরের বাচ্চার গলায় মেডেল পরিয়ে দেওয়া হলো।
চুড়ান্ত অপমানিত হয়ে হাতি, উট, জিরাফ, নিজ নিজ সন্তানকে দারুণ পিটুনি দিলো।
এতো টিউশন,এতো খরচ,, এর পরেও চূড়ান্ত অসম্মান!!
তারা মেনে নিতে পারলো না।।
-"ফাঁকিবাজ, এতো চেষ্টা করেও তোর দ্বারা গাছে চড়া সম্ভব হলো না ? নিকম্মা কোথাকার।।
শিখে নে, বাঁদরের বাচ্চার কাছে শিক্ষা নে, কিভাবে গাছে চড়তে হয়।
ফেল কিন্তু মাছের ছেলেও হয়ে গেছে।।
সে আবার প্রত্যেক সাবজেক্টে ফেল, কেবলমাত্র "সাঁতার" কাটা ছাড়া।
প্রিন্সিপাল বললো,আপনার সন্তানের এ্যটেন্ডেন্স প্রবলেম। পাঁচ মিনিটের বেশী ক্লাসে থাকতে পারে না।
মাছ নিজের সন্তানের দিকে ক্রোধান্বিত হয়ে তাকিয়ে রইলো।।
বাচ্চা বলে -"মা-গো, দম নিতে পারি না, ভীষণ কষ্ট হয়। আমার জন্য জলের মধ্যে কোনো স্কুল দেখলে হতো না?
মাছ বলে 'চুপ কর বেয়াদব'।
এতো ভালো স্কুল আর কোথাও খুঁজে পাবি না। পড়াশোনায় মন দে, স্কুল নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।
হাতি,, উট,, জিরাফ,, নিজের নিজের ফেলিওর বাচ্চাকে পিটুনি দিতে দিতে দিতে বাড়ি ফিরে চলেছে। পথিমধ্যে বুড়ো খেঁকশিয়ালের সঙ্গে দেখা।
শিয়াল বলে - "কি হয়েছে সেটা তো বলো ?"
হাতি বলে -"এত বড়ো শরীর নিয়ে,, গাছে চড়তে পারলো না।।
বাঁদরের ছেলে টপার হলো, মান ইজ্জত কিছুই অবশিষ্ট থাকলো না।
শিয়াল অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।
শিয়াল বলো - "তোমাদের গাছে চড়ার কি প্রয়োজন সেটাই তো বুঝতে পারলাম না‌।
শোনো হাতি, তুমি নিজের বিশালাকার শুঁড় উঠিয়ে ধরো, গাছের সবচেয়ে বড়ো ফলটি পেড়ে ভক্ষণ করো।
তোমার গাছে ওঠা লাগবে না।
-উট ভাই, তোমার অনেক উঁচু ঘাড় রয়েছে। ঘাড় বাড়িয়ে দাও,গাছের সর্বশ্রেষ্ঠ ফল,পাতা পেড়ে খাও।
বোন মাছ,তোমার সন্তানকে নদীর স্কুলে ভর্তি করে দাও।
ওকে মনভরে সাঁতার কাটতে শেখাও।
দেখবে, একদিন তোমার ছেলে নদী অতিক্রম করে সমুদ্রে পাড়ি দেবে।।
সাত সমুদ্র পার করে,, তোমার নাম উজ্জ্বল করে দেবো।।
ওকে রাজার স্কুলে মোটেও পাঠিও না।।
ও মারা যাবে।।"
মনে রাখতে হবে,, শিক্ষা আপনার সন্তানের জন্য,, শিক্ষার জন্য আপনার সন্তান নয়
প্রত্যেক শিশুর মধ্যেই কিছু না কিছু স্পেশালিটি আছে।
আমাদের দায়িত্ব হলো,সেটা খুঁজে বের করা।
তাকে সঠিক পথ দেখিয়ে দেওয়া। তাহলেই দেখবেন,
সে নিজেই নিজের গন্তব্য খুঁজে নেবে।

আল-উরূজ-العروج

01 Oct, 19:20


ইরানের আই আর জিসি:

'আমাদের ৯০% ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে ইসরায়েলে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম হয়েছে।' (na/7)

আল-উরূজ-العروج

01 Oct, 19:20


ইরানের বিপ্লবী গার্ড:

'আমরা ৩টি ইজরায়েলের বিমানবন্দর ধ্বংস করেছি যেখানে F-15 বিমান সংরক্ষিত ছিল।' (na/6)

আল-উরূজ-العروج

01 Oct, 19:19


৩টি F-15 যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা হয়েছে।
সাথে ৩ টি ইজরায়েলী সামরিক ঘাটি ধ্বংস করা হয়েছে যার মধ্যে ছিলো F-35 যুদ্ধবিমান এবং কমান্ডার নাসরুল্লাকে হত্যায় ব্যাবহৃত হয়েছিলো টেল নোফ ঘাটিও ।

আল-উরূজ-العروج

14 Sep, 19:33


মূর্তি পাহারা দিতে হবে, পূজার স্থানের নিরাপত্তার জন্য মাদ্রাসার ছাত্র নিয়োগ দিবে ইত্যাদি কথা জাহেল বৈ অন্যদের থেকে আশা করা যায় না। রাজনীতি করতে হলে কি এসব করতে হবে ?এমন সব মূর্খসূলভ কথা বলে নিজেদেরকে হাসির পাত্র বানানো থেকে বিরত থাকুন।

আমরা রাজনীতি থেকে শুরু করে সমরনীতি সব কলাকৌশল রপ্ত করেছি এবং করব রাসূল (সাঃ) থেকে ধ্বজাধারী গণতন্ত্র কিংবা অন্যান্য তন্ত-মন্ত্র থেকে নয়। “আর তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা কৃপা লাভ করতে পার”(আলে ইমরান-১৩২)

সুতরাং শিরকের স্থান ও বস্তু সমূহের সাথে ইসলাম ও নবী করীম (সা:) কি আচরণ করেছেন তা একটু নজর দেই।

নবী করীম সা: খালিদ বিন ওয়ালিদ রা: এর নেতৃত্বে উজ্জা নামক মূর্তিকে ধ্বংস করার জন্য অভিযান প্রেরণ করেছেন।
সাদ বিন যায়েদ আল-আশহালি রা: এর নেতৃত্বে মানাত নামক মূর্তিকে ধ্বংস করার জন্য অভিযানে পাঠান।
আমর বিন আস রা: এর নেতৃত্বে মানাত মূর্তি ধ্বংস করান।

(এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত কথা ভুল হলে শুধরে দিবেন। তা হলো আমি মূর্তি পূজার চেয়ে মাজার পূজা বেশি জঘন্য মনে করি, কারণ হলো মূর্তি যারা পূজা করে তারা মূর্তিকে একটি খোদার রূপ মনে করে পূজা করে,কিন্তু যারা মাজার পূজা করে তারা মাজার ওয়ালাকে হাজত পূরণকারী মনে করে মাজারে সিজদা করে )

যারা শিরকের স্থান গুড়িয়ে দেয় রাসূল (সাঃ) তাদের জন্য একবার নয় দুবার নয় পাঁচবার বরকতের দোয়া করেন.
জারীর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি আমাকে যুল খালাসার ব্যাপারে শান্তি দিবে না? খাশ‘আম গোত্রের একটি মূর্তি ঘর ছিল। যাকে ইয়ামানের কা‘বা নামে আখ্যায়িত করা হত। জারীর (রাঃ) বলেন, তখন আমি আহমাসের দেড়শ’ অশ্বারোহীকে সঙ্গে নিয়ে রওয়ানা করলাম। তারা সুদক্ষ অশ্বারোহী ছিল। জারীর (রাঃ) বলেন, আর আমি অশ্বের উপর স্থির থাকতে পারতাম না। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার বুকে এমনভাবে আঘাত করলেন যে, আমি আমার বুকে তাঁর অঙ্গুলির চিহ্ন দেখতে পেলাম এবং তিনি আমার জন্য এ দু‘আ করলেন, ‘হে আল্লাহ্! তাকে স্থির রাখুন এবং হেদায়াত প্রাপ্ত, পথ প্রদর্শনকারী করুন।’ অতঃপর জারীর (রাঃ) সেখানে যান এবং যুলখালাসা মন্দির ভেঙ্গে ফেলেন ও জ্বালিয়ে দেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ খবর দেখার জন্য এক ব্যক্তিকে তাঁর নিকট প্রেরণ করেন। তখন জারীর (রাঃ)-এর দূত বলতে লাগল, কসম সে মহান আল্লাহ্ তা‘আলার! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, আমি আপনার নিকট তখনই এসেছি যখন যুলখালাসাকে আমরা ধ্বংস করে দিয়েছি। যুলখালাসার মন্দিরটি যে পাঁচড়া যুক্ত উটের মত। জারীর (রাঃ) বলেন, অতঃপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহমাসের অশ্ব ও অশ্বারোহীদের জন্য পাঁচবার বরকতের দু‘আ করেন। (বোখারি-৩০২০)

এই হদিসের ভিত্তিতে ইবনে হাজার (রহি.) বলেন যে-সব জিনিস দ্বারা মানুষ ফিতনায় পতিত হয় সেসব জিনিস উপড়ে ফেলাই শরিয়তের বিধান। হোক তা কোন বিল্ডিং কিংবা অন্য কিছু।

আবূল হাইয়্যাজ আল আসাদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আলী (রাযিঃ) বলেন, আমি কি তোমাকে এমনভাবে পাঠাব না, যে কাজে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে পাঠিয়েছিলেন? তা হচ্ছে কোন (জীবের) প্রতিকৃতি বা ছবি দেখলে তা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিবে এবং কোন উঁচু কবর দেখলে তা ভেঙ্গে দিবে।(মুসলিম-৯৬৯)
বিঃদ্রঃ মাজারে যে-সব কাজকর্ম হয় তার প্রায়সবই কিন্তু হিন্দুয়ানি প্রথা যেমন মোমবাতি প্রজ্বলন এটি একটি হিন্দু প্রথা, গাজা সেবন ,মহিলা পুরুষ একসাথে নৃত্য করা, তালা ঝুলানো ,মাজারে প্রণাম, ইত্যাদি।

সুতারং যে-সব স্থানে এসব গর্হিত কাজ হয় সেসব স্থান নিরাপত্তা দেওয়া শরিয়তের দৃষ্টিতে কতটা যৌক্তিক? এতো নিরাপত্তা দিতে চাইলে মসজিদের নিরাপত্তা দিন,পাহারা দিতে হলে মুসলিম বোনদেরকে দিন যাদেরকে বিভিন্ন ট্র্যাপে ফেলে হিন্দু ছেলেরা গর্ভবতী করে ছেড়ে দিচ্ছে, আপনার এতোই দরদ তাহলে আমার ওইসব বোনদেরকে ফিরিয়ে আনেন যাদেরকে ধোকাদিয়ে কলকাতা নিয়ে ভোগ্যপণ্যে রূপান্তরিত করেছে, এতোই রাজনীতি করেন তাহলে আমরা বোন ফেলানীর বিচারটা একবার করুন না।
আপনারা পারবেন না যদি পারেন করে দেখান, তখন বুঝবো আপনারা রাজনীতি করছেন। না পারলে এমন সব বস্তা পচা ডায়ালগ নিয়ে হাজিরা দিতে আসবেন না।
আল্লাহ বলেন..
তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে চতুষ্পদ জন্তু। কাজেই তোমরা বেঁচে থাক মূর্তিপূজার অপবিত্রতা থেকে এবং বর্জন কর মিথ্যা কথা।
আরো বলেন...
‘‘আল্লাহ তাঁর সাথে শিরক করা গুনাহ মাফ করবেন না। শিরক ছাড়া অন্যান্য যে সব গুনাহ রয়েছে সেগুলো যাকে ইচ্ছা মাফ করে দিবেন।’’ (নিসাঃ৪৮)
উমার ইবনে খাত্তাব (রাঃ) বলেছেন, "তোমরা মুশরিকদের উপাসনালয়ে তাদের উৎসবের দিনগুলোতে প্রবেশ করো না। কারণ সেই সময় তাদের উপর আল্লাহর গজব নাজিল হতে থাকে।"
(আহকামুল জিম্মাহ)

আল্লাহ আমাদের সবাইকে নিরাপদ রাখুক,আমাদের ভুল সমূহ ক্ষমা করে দিক।

(মূল পোস্ট লিংক কমেন্টে)

আল-উরূজ-العروج

13 Sep, 22:07


'পাপ কত ছোট, সেটা দেখো না। বরং দেখো কার সামনে পাপ করছ।'

— বিলাল ইবনু সাদ (রহ.)

সূত্র: হিলইয়াতুল আউলিয়া, ৫/২২৩

আল-উরূজ-العروج

13 Sep, 22:07


শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রহ.) বলেন,

"বিধর্মীদের ধর্মীয় কোনো উৎসবকে সামান্য অনুকরণ করা মুসলিমদের জন্য জায়েজ নেই; হোক সেটা খাওয়া-দাওয়ার মাধ্যমে, জামা-কাপড়ের মাধ্যমে, বাতি জ্বালানো বা উৎসবকে কেন্দ্র করে দৈনন্দিন কাজ বা কোনো ইবাদত স্থগিত করার মাধ্যমে, মোটকথা অনুকরণ যেমনই হোক জায়েয নেই। এমনকি সেই উৎসবকেন্দ্রিক ভোজের আয়োজন, গিফট আদান-প্রদান, তাদের উৎসব উৎযাপনে সহায়ক—এমন জিনিস বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা, তাদের শিশুদের জন্য ধর্মীয় উৎসব-কেন্দ্রিক খেলাধুলার আয়োজন করে দেওয়া কিংবা উৎসব উপলক্ষে বিশেষ ডেকোরেশন করা—এসব কোনোটাই জায়েজ নেই।

বরং এটা জানা কথা যে, কাফিরদের ধর্মীয় আচার-রীতির মুসলিমদের জন্য নাজায়েজ। তাদের ধর্মীয় উৎসবের দিনগুলো মুসলিমদের জন্য অন্যসব স্বাভাবিক দিনের মতই হবে এবং কাফিররা এ দিনে যা কিছু করে, এমন কোনো কাজ মুসলিমরা করার মাধ্যমে এই দিনটিকে বিশেষ গণ্য করবে না।

হাদীসে এসেছে: নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'যে ব্যক্তি যে জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই দলভুক্ত।' (আবূ দাউদ ৪০৩৩, সহীহুল জামে’ ৬১৪৯)"

সূত্র: মাজমু আল-ফাতাওয়া, ২/৪৮৮

আল-উরূজ-العروج

12 Sep, 03:48


শহীদের রক্তের যথার্থ মূল্যায়ন তারাই করবে যারা 'শহীদ'এর মান মর্যাদা এবং বিধান জানে।

আমরা তো বিগত দেড় দশক ধরে যারা জুলুম করতে গিয়ে মারা গেছে তাদেরকেও শহিদ বলেছি, শাপলার রক্তে যাদের হাত রঞ্জিত ছিল তাদেরকে মায়ের আসনে বসিয়েছি, যারা মানবতাকে গলাটিপে হত্যা করেছে তাদেরকে মাদার অফ হিউম্যানিটি বানিয়ে ছেড়েছি, ওসব তো আমার আপনার আশপাশেই হয়েছি তখন তো থুতমা বন্ধ রেখেছেন এখন কেন এতো কথা? তখন আপনার স্বর কোথায় ছিল? কালকে হয়ত আবারো কোন হাসিনা ক্ষমতায় আসবে তখন এই আমরাই হাসিনাদেরকে খুশি করার হাজারো কসরত করে যাবো, লিখে রাখেন এটাই সত্য।

এই যে তাকবির দিয়ে লোক জামায়াত করে শহীদী স্লোগানে রক্ত গরম করে রাজপথে নামাজ আদায় করে দোয়া করে তাকবিরে তাকবিরে আকাশ বাতাশ মুখরিত করে বিজয় আনলেন। যেই ধর্মীয় সমস্ত কার্ড ইউস করে স্বৈরাচার খেদালেন আর এখন কিনা ধর্ম আপনাদের জন্য অন্তরজ্বালা হয়ে গেলো? ধর্মকে কারা ব্যবহার করছে? আর ধর্ম থেকে রাজনীতি পৃথক হলো কবে থেকে?

আমি এমন এক ইসলাম মানি এবং চিনি যার রয়েছে দেড় হাজার বৎসর প্রতাপের সাথে রাজনীতি করার একক ইতিহাস, যেই ইতিহাস কখনো কেউ মুছে দিতে পারবেনা।

আল-উরূজ-العروج

28 Aug, 06:49


উসূলি তথা মৌলিক ও সামগ্রিক নীতির পরিপন্থি।

তাহলে কুরআন-সুন্নাহ কী বলবে?

কুরআন-সুন্নাহ বলবে—“হুকম বিমা আনযালাল্লাহ বা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠা করতে হবে।” কুরআনে অসংখ্য আয়াতে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন অনুযায়ী শাসন পরিচালনার কথা বলা হয়েছে। এর বিপরীতে আল্লাহর আইন ভিন্ন অন্য আইন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি সংক্রান্তও একাধিক আয়াত নাযিল হয়েছে। আয়াত-হাদিসের ফিরিস্তি দিয়ে প্রসঙ্গ পাল্টানো থেকে বিরত রইলাম। আজকাল একটু কষ্ট করে গুগল করলেই এই সংক্রান্ত সবগুলো আয়াত-হাদিস পাওয়া যায়। হাদিসের কিতাবগুলোর “কিতাবুল ইমারাহ” পড়লেও অনেক মৌলিক কথাবার্তা পাওয়া যায়। খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা ফরজ নাকি ওয়াজিব, কার জন্য কখন ফরজ, কখন ফরজ নয়—এসব বিধান সংশ্লিষ্ট আয়াত-হাদিস ও সাহাবিদের আমল থেকে শাস্ত্রীয় নীতিমালার আলোকে ফকিহ ও স্কলারগণ উদঘাটন করেছেন।

এখন প্রশ্ন হলো—‘হুকম বিমা আনযালাল্লাহ’ সংক্রান্ত আয়াত-হাদিস থেকে খিলাফত কি প্রমাণিত হয়?
শরীয়াতের যে-কোনো বিধান বাস্তবায়নের জন্য প্রথমে দেখতে হয়—নবী ও সাহাবি-যুগে কীভাবে তা বাস্তবায়ন হয়েছে। এতক্ষণের আলোচনা ও সিরাত-ইতিহাসের আলোকে আমি একটু প্রশ্ন রাখি—সাহাবি-যুগে ‘হুকম বিমা আনযালাল্লাহ’ বা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর হুকুম কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? খিলাফতব্যবস্থা নাকি অন্য কোনো মাধ্যমে?

সাহাবিদের প্রয়োগকৃত পদ্ধতি ও তাদের সম্পর্কে নবীজির অগ্রিম সনদ থেকে প্রমাণিত হয়—হুকম বিমা আনযালাল্লাহর প্রকৃত রূপ ও পদ্ধতি হলো—খিলাফতব্যবস্থা।

প্রসঙ্গত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বলে রাখি, শুধু খিলাফতব্যবস্থাই নয়; শরীয়ার বহু বিধানের ক্ষেত্রেই ‘তাআমুল’ মুতাওয়াতির পর্যায়ের দলিল হতে পারে। তাআমুল মানে হলো—কোনো বিষয়ে কুরআন-হাদিসের সরাসরি টেক্সটের পাশাপাশি তো বটেই, কখনো-কখনো সরাসরি টেক্সট না থাকলেও নবীজি ও সাহাবি-যুগ থেকে, অথবা শুধু সাহাবি-যুগ থেকে কোনো একটি আমলের পরম্পরা জারি থাকা। সাহাবিদের অনাপত্তির শর্তে এই তাআমুল শরীয়ার দলিল হওয়ার উপযুক্ত। এর অর্থ হলো—নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে এই আমলের নির্দেশনা বা ধারাবাহিকতা শিখে তারা বাস্তবায়ন করছেন।

খিলাফতব্যবস্থার ক্ষেত্রেও এই মূলনীতি প্রযোজ্য। আল্লাহর জমিনে নবীজি কর্তৃক আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের প্রায়োগিক রূপ ও নির্দেশনা মোতাবেক খিলাফতে রাশেদা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পরবর্তীতে এই খেলাফতের তাআমুল বা আমলের ধারাবাহিকতা চালু থাকে। খিলাফতে রাশেদা একমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওয়াহ, অন্যগুলো নয়—এই আলাপ ভিন্ন প্রসঙ্গ। সময় যত গড়িয়েছে, নববী নির্দেশনা থেকে দূরত্ব বেড়েছে; কিন্তু, শত দুর্বলতা ও নীতিভঙ্গ সহকারেও সুদীর্ঘকাল ইসলামী খিলাফতের তাআমুল বা ধারাবাহিকতা চলমান থেকেছে। এজন্য সর্বকালে সকল মুসলিমের জন্য আবশ্যক হলো—শাসনব্যবস্থাকে খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওয়াহ বা নববী নির্দেশনার আলোকে গড়ে তোলা। দূরত্ব থাকলে, যতটা সম্ভব এই দূরত্ব কমিয়ে খিলাফতে রাশেদার নিকটবর্তী করা।

শেষ করি।
আরিফুল ইসলাম ইতিহাস থেকে বেশকিছু অগোছালো প্রসঙ্গকে গুছিয়ে দলিল বানানোর চেষ্টা করেছেন। স্মরণ রাখা জরুরি—ইতিহাস দিয়ে শরীয়া মাপা যায় না; ইতিহাসকে মাপতে হয় শরীয়া দিয়ে। ইতিহাস এমন এক বিস্তৃত ও উন্মুক্ত জায়গা, যেখানে চাইলে যে-কোনো বিষয়ের পক্ষে দলিল বের করা সম্ভব। এজন্য ইতিহাস কখনো শরীয়ার দলিল হয় না। ইতিহাস বলে—সময়ের সাথে-সাথে ইসলামী খিলাফতগুলোতেও নববী নির্দেশনা থেকে অনেক দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বিশ্বে বিভিন্ন রকম পাওয়ার ডায়নামিকস তৈরি হয়েছে। ফলে, এই দূরত্ব তৈরি হওয়া ইসলামী খিলাফতগুলোকে সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্কলারদের পক্ষ থেকে ইসলামী শাসন সম্পর্কে নানা প্রস্তাবনা ও বক্তব্য এসেছে, লিটারেচার তৈরি হয়েছে। মোটাদাগে বড় অংশের মূল উদ্দেশ্য ছিল এটিই—মিনহাজিন নুবুওয়াহ থেকে চলমান শাসনের দূরত্ব কতটা ঘুচানো যায়। পেনফিল্ড পাবলিকেশন থেকে ঐতিহাসিক মুসলিম স্কলারদের রাজনৈতিক ও শাসন-ভাবনা ও ‘রাষ্ট্রচিন্তা’ সংক্রান্ত একটি বইয়ের কাজও পরিকল্পনা চলছে। এই আলোচনা-পর্যালোচনা থাকবে; এবং এর মূল উদ্দেশ্য হলো—প্রকৃত খিলাফতব্যবস্থার কাছাকাছি যাওয়া। খিলাফতকে প্রত্যাখ্যান করা নয়।

এখন প্রশ্ন হলো—স্কলারদের মধ্যে এই মতপার্থক্য কেন?

ইসলামের সকল বিধানের মতোই, খিলাফতব্যবস্থার কিছু অংশ কুরআন-সুন্নাহর টেক্সটের আলোকে অকাট্য, আর কিছু অংশ ইজতিহাদ-নির্ভর। খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে হবে—এটুকু কথা মৌলিক ও মীমাংসিত। তবে, এর প্রায়োগিক যেসব রূপ ও সমাধান সাহাবা-যুগে পাওয়া যায় না, সেগুলোর অধিকাংশই ইজতিহাদ-নির্ভর। এই ইজতিহাদ-নির্ভর অংশে মতপার্থক্য ও ইখতিলাফের সুযোগ ইসলামই রেখে দিয়েছে। মৌলিক অংশে দ্বিমত নেই।

আল-উরূজ-العروج

28 Aug, 06:49


উপরোক্ত মূলনীতি থেকে স্পষ্টতই বোঝা যায়—খিলাফত মানুষের আবিষ্কৃত কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা নয়; বরং নবীজির শাসন পরিচালনা ও নির্দেশনার আলোকে পরিচালিত শাসনব্যবস্থা হলো—খিলাফতব্যবস্থা। অর্থাৎ, শরীয়া কর্তৃক নির্দেশিত এবং ‘মানুষ’ কর্তৃক বাস্তবায়িত শাসনব্যবস্থা হলো খিলাফত।

এবার আসুন দেখি, খিলাফত 'আবিষ্কারকারী' এবং প্রকৃতপক্ষে খিলাফত বাস্তবায়নকারী এই মানুষগুলো কারা? তাদের সম্পর্কে আল্লাহ ও রাসূলের বক্তব্য কী?

* কুরআন বলেছে—“তাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট, তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট।” [সূরা তাওবাহ : ১০০]

* রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—“আমি আমার সাহাবাদের জন্য নিরাপত্তাস্বরূপ। যখন আমি চলে যাব, তখন আমার সাহাবিদের ওপর প্রতিশ্রুত ফিতনা ও বিপদাপদের আগমন ঘটবে। আমার সাহাবিরা আমার উম্মাতের জন্য নিরাপত্তাস্বরূপ। যখন আমার সাহাবিদের প্রস্থান ঘটবে, তখন আমার উম্মাতের ওপর প্রতিশ্রুত ফিতনা ও বিপদাপদের আগমন ঘটবে।” [সহিহ মুসলিম : ২৫৩১]

* “তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম প্রজন্ম হলো আমার প্রজন্ম।” [সহিহ বুখারী : ২৬৫১]

* মুক্তিপ্রাপ্ত দল সম্পর্কে নবীজি বলেছেন—“মুক্তিপ্রাপ্ত দল হলো তারা—যারা আমার ও আমার সাহাবিদের অনুসৃত পথ অনুসরণ করবে।” [সুনানুত তিরমিযী : ২৬৪১]

সুতরাং বোঝা যাচ্ছে—খিলাফতব্যবস্থা বাস্তবায়নকারীগণ শুধু ‘মানুষ’ বলে জেনারেলাইজেশন করার মতো সাধারণ ক্যাটাগরির মানুষ নন; বরং তারা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কর্তৃক পৃথিবীতে দ্বীন ও শরীয়া বাস্তবায়নের জন্য সার্টিফাইড মানুষ। মানুষের আবিষ্কৃত রাজনৈতিক ব্যবস্থা বলার অর্থ হলো—খিলাফতকে শরীয়া থেকে আলাদা করে দেওয়া। অথচ, খিলাফতব্যবস্থা শরীয়ার শাসন পরিচালনা সংক্রান্ত অংশ।

এবার আসি এই কথার সম্পূরক অংশে—খিলাফত পুনরুদ্ধার বা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা ও চিন্তা কি আমাদের জন্য আবশ্যক?

উত্তর হলো—হ্যাঁ, আবশ্যক। তিন কারণে।

১. খিলাফত শরীয়ার অংশ।
২. খুলাফায়ে রাশিদিনকে অনুসরণ করা দ্বীনের অংশ।
৩. কোনো ফরজ বিধান বাস্তবায়ন যার ওপর নির্ভরশীল, তাও ফরজ।

প্রথম কারণের ব্যাখ্যা ওপরের মূলনীতিগুলোর অধীনে চলে এসেছে।

দ্বিতীয়ত, যথাযথভাবে দ্বীন পালনের জন্য সাহাবিদেরকে অনুসরণ করা আবশ্যক। দ্বীন পালনের প্রায়োগিক উদাহরণ হলেন সাহাবায়ে কেরাম। তাদের মধ্যে বিশেষত খুলাফায়ে রাশিদিনকে অনুসরণ করা দ্বীনেরই অংশ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন—“তোমরা আমার আদর্শ ও হিদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশিদিনের আদর্শ অনুসরণ করো। এই দুই আদর্শকে তোমরা দাঁত কামড়ে আঁকড়ে ধরো।” [সুনানু আবি দাউদ : ৪৬০৭; সুনানুত তিরমিযী : ২৬৭৬]

এই হাদিসের আলোকে স্পষ্ট যে—অনুসরণের বিচারে রাসূলের আদর্শের পাশাপাশি খুলাফায়ে রাশিদিনের আদর্শ সমান গুরুত্ব পাবে। বলাবাহুল্য—খুলাফায়ে রাশিদিনের প্রথম আদর্শই হলো খিলাফতব্যবস্থা। এই হাদিসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি নবীজি বলে দিয়েছেন—খিলাফতব্যবস্থা ও শাসন পরিচালনা সংক্রান্ত যে-কোনো বিষয়ে খিলাফতে রাশেদা হবে মূল সোর্স ও অনুসরণীয় দলিল। এই সংক্রান্ত যে-কোনো বিষয়ে তাদের অনুসরণ করা ফরজ।

তৃতীয়ত, শরীয়ার মূলনীতি হলো—কোনো বিধান পালন/বাস্তবায়ন যার ওপর নির্ভরশীল, তাও ফরজ। যেমন, নামাজের জন্য ওজু আবশ্যক; তাই ওজুও ফরজ। হুদুদ-কিসাস সহ কুরআন-সুন্নাহর অকাট্য বহু বিধান বাস্তবায়নের জন্য খিলাফত আবশ্যক। এজন্য খিলাফত প্রতিষ্ঠা করাও ফরজের অন্তর্ভুক্ত।

এই তিন পয়েন্টের আলোকে বোঝা যায়, খিলাফত প্রতিষ্ঠা, পুনরুদ্ধার, বাস্তবায়ন—যে-শব্দেই বলা হোক—ফরজ। ফরজে আইন নাকি ফরজে কিফায়া, কতটুকু হলে ফরজে কিফায়া আদায় হবে না হবে—এসব প্রসঙ্গ আলাদা আলোচ্যবিষয়।

এবার আসি আরিফুল ইসলামের প্রশ্নের প্রসঙ্গে। তার প্রশ্ন—“খিলাফত প্রতিষ্ঠা নিয়ে কুরআন-হাদীসের স্পষ্ট কোনো আয়াত আছে? এটার বিধান ফরজ, ওয়াজিব প্রমাণ করা যায় এমন কোনো আয়াত-হাদীস? কিংবা এর ফযিলত নিয়ে একটা মাত্র হাদীস?”

এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে জানতে হবে—কুরআন-হাদিসের টেক্সটগুলো অনেক ধরনের হয়। আম, খাস, নস, যাহির, মুফাসসার, মুবাইয়ান, খফি, মুজমাল, মুতাশাবিহ, মুশকিল, সরিহ, কিনায়া, ইত্যাদি। নসের দলিল আবার হয় নানা ধরনের। কোনোটা সরাসরি, কোনোটা প্রাসঙ্গিক, কোনোটা সংক্ষিপ্ত, কোনোটা সামগ্রিক। মূলত কুরআন-সুন্নাহতে শরীয়ার সকল দলিল ও বিবরণ বিস্তারিত থাকে না; অধিকাংশই থাকে ইজমালী ও উসূলী—মৌলিক ও সামগ্রিক আঙ্গিকে। কুরআন-হাদিসের কোনো টেক্সটেই কোনো আমলকে ফরজ, ওয়াজিব বা সুন্নাত বলা নেই। “নামাজ ফরজ”—এভাবে কুরআন-হাদিসের টেক্সট হয় না। কুরআন-হাদিসের টেক্সট বলবে—“নামাজ পড়ো/নামাজ কায়েম করো।” উসূলুল ফিকহ, উসূলুল হাদিস ও উলূমুল কুরআনের নীতিমালার আলোকে এসব টেক্সটের শব্দের মান ও নির্দেশের আবশ্যকতা-অনাবশ্যকতা, বাধ্যবাধকতা-শিথিলতা, ইত্যাদি নির্ণয় করা হয়। এক্ষেত্রে নবীজি ও সাহাবিদের আমল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুতরাং কুরআন-হাদিসের কোনো টেক্সট কখনো একথা বলবে না—খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা ফরজ, ওয়াজিব নাকি মুবাহ? কারণ, এভাবে বলা ইজমালী ও

আল-উরূজ-العروج

28 Aug, 06:49


ইতিহাস দিয়ে শরীয়া মাপা যায় না; ইতিহাসকে মাপতে হয় শরীয়া দিয়ে।

পরিচিত অনলাইন একটিভিস্ট, লেখক আরিফুল ইসলাম সম্প্রতি একটি পোস্ট দিয়েছেন। পুরো পোস্টে একটি উপসংহার টেনেছেন এবং একটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। তার লিখিত উপসংহার ও প্রশ্ন-সংক্রান্ত বাক্যদুটি উদ্ধৃত করছি।

১. “খিলাফত মানুষের আবিষ্কৃত রাজনৈতিক ব্যবস্থা।” [উপসংহার]
২. “খিলাফত প্রতিষ্ঠা নিয়ে কুরআন-হাদীসের স্পষ্ট কোনো আয়াত আছে? এটার বিধান ফরজ, ওয়াজিব প্রমাণ করা যায় এমন কোনো আয়াত-হাদীস? কিংবা এর ফযিলত নিয়ে একটা মাত্র হাদীস?” [প্রশ্ন]

ইসলামে খিলাফতের কনসেপ্ট কী, খিলাফত প্রতিষ্ঠার হুকুম কী—এই আলোচনা আমার লেখার পয়েন্ট না; বরং আরিফুল ইসলামের বক্তব্যের সমস্যার ধরন বুঝতে অন্য আলাপ করি।

“খিলাফত মানুষের আবিষ্কৃত রাজনৈতিক ব্যবস্থা”—বক্তব্যটা অর্ধসত্য; আরও রাখঢাক ছাড়া বললে—অসত্য। বাক্যটা হওয়া উচিৎ এমন—“খিলাফত নবীজির শাসন ও নির্দেশনার আলোকে সাহাবিদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা।” আবিষ্কার বলা হয়—নতুন কোনোকিছু উদ্ভাবন করা। খিলাফত কি মুসলিমদের উদ্ভাবিত কোনোকিছু? নাকি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক পরিচালিত ও নির্দেশিত শাসনকার্যের বিস্তৃত রূপ?

খিলাফতের সূচনা হয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর, হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুর খলিফা হওয়ার মধ্য দিয়ে। খিলাফতে রাশেদার সকল খলিফার মূল কাজ, স্বরাষ্ট্রনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, যুদ্ধনীতি, ইসলামী খিলাফতে বসবাসরত কাফিরদের সম্পর্কিত নীতি—সবকিছুই ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নীতি, নির্দেশনা ও কর্মের আলোকে। এজন্যই খিলাফতে রাশেদা হলো খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওয়াহ—অর্থাৎ, নববী নির্দেশনার আলোকে পরিচালিত খিলাফত। রাষ্ট্রপরিচালনা সংক্রান্ত নবীজির সকল আমল এখানে মূল বেইজ ও ফাউন্ডেশন। এর ওপর তার নির্দেশনার আলোকে খিলাফতব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সুতরাং, খিলাফত মানুষের আবিষ্কৃত কোনো ব্যবস্থা না, বরং নববী কর্ম ও নির্দেশনার আলোকে বাস্তবায়িত রাজনৈতিক ব্যবস্থা।

এখন কথা হলো—যে-শাসনব্যবস্থা ‘মানুষ কর্তৃক বাস্তবায়িত’, তা আমাদের জন্য জরুরি ও প্রয়োজনীয় কেন?

এটা বুঝতে শরীয়ার সহজ তিনটি মূলনীতি মাথায় রাখতে হবে।

১. সাহাবিদের সর্বসম্মত আমল শরীয়ার হুজ্জত বা দলিল। সকল মুসলমানের জন্য তা মানা আবশ্যক।

২. কোনো সাহাবি যদি সকলের সম্মুখে কিছু বলেন বা কোনো আমল করেন বা কোনো বিধান বাস্তবায়ন করেন, এবং অন্য সাহাবিরা এর বিরোধিতা না করে প্রকাশ্য বা মৌন সমর্থন করেন—এর অর্থ হলো—বিষয়টি শরীয়া কর্তৃক সমর্থিত; এবং এই বক্তব্য, কর্ম ও বিধান মানা সকল মুসলমানের জন্য আবশ্যক।

৩. যেসকল বিষয়ে সাহাবিদের নিজেদের মনমতো কিছু বলার বা করার সুযোগ নেই, এমন বিষয়ে যদি কোনোকিছু বলেন বা করেন, তাহলে সেসব কাজ ও বক্তব্যকে নবীজি কর্তৃক নির্দেশিত গণ্য করা আবশ্যক। কারণ, শরীয়ার কোনো বিষয়ে কোনো সাহাবির পক্ষে মনগড়া কথা বলা বা কাজ করা অসম্ভব। এক্ষেত্রে তিনি অবশ্যই সরাসরি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা, বক্তব্য বা আমল পেয়েছেন। সুতরাং তার এই কথা বা কাজও দলিল হিসেবে গণ্য হবে। যা মানা মুসলিমদের জন্য আবশ্যক।

আরিফুল ইসলাম ভাই-সহ আগ্রহী পাঠকগণ এই তিনটি মূলনীতির আলোচনা উসূলুল ফিকহ ও উসূলুল হাদিসের গ্রন্থাবলিতে সবিস্তারে পেয়ে যাবেন।

এবার আমরা দেখি—

১. খিলাফতকে শারয়ী শাসনব্যবস্থা হিসেবে কি সকল সাহাবি মেনে নিয়েছিলেন? এটি কি সর্বসম্মত আমল?

সিরাত ও ইতিহাস সাক্ষী, সকল সাহাবি খিলাফতকে সর্বসম্মতভাবে শারয়ী শাসনব্যবস্থা হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন।

২. খুলাফায়ে রাশিদিন লাখ-লাখ সাহাবির উপস্থিতিতে এই শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করেছেন। কখনো কোনো সাহাবি কি খিলাফতব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি করেছিলেন?

করেননি। সিরাত ও ইতিহাসের কোথাও এমন কোনো প্রমাণ নেই—যাতে কোনো একজন সাহাবির খিলাফতব্যবস্থার প্রতি আপত্তি, বিরক্তি, উষ্মা কিংবা বিরোধিতা পাওয়া যাবে। বরং কথা ও কাজে সকলেই এর সমর্থন করেছেন।

৩. নবীজির ইন্তেকালের পর শাসনব্যবস্থা কী হবে—এটি কি নববী নির্দেশনা ব্যতীত সাহাবিদের নিজেদের মনমতো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব ছিল?

ছিল না। বরং এর পিছনে নবীজির সামগ্রিক নির্দেশনা প্রয়োজন ছিল। যা খলিফা নির্ধারণের ঘটনায় হযরত উমর, আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুমা সহ অন্য সাহাবিদের কার্যক্রম ও মন্তব্য দেখলেই বোঝা যায়। শাসনব্যবস্থা খিলাফত হবে—এটুকু নিয়ে সাহাবিদের কোনো কথা ছিল না। খলিফা কে হবেন—পরামর্শটা এ নিয়েই হয়েছিল। সকলে আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহুকে মেনে নেওয়ার অন্যতম কারণও এটা ছিল—তিনি নবীজির সবচেয়ে কাছের মানুষ। নবীজির কথা, কাজ, চিন্তা, দর্শন ও নির্দেশনার আলোকে খিলাফত পরিচালনার জন্য তিনিই সবচেয়ে যোগ্য ও উপযুক্ত ব্যক্তি।