Wafilife

“একটি গুনাহ করার পর আবার গুনাহ করা মূলত গুনাহেরই শাস্তি। অন্যদিকে একটি আমল করার পর আরেকটি আমল করতে পারা মূলত আমলের পুরষ্কার।”
.
— আবুল হাসান আল-মাযনি (রহ.)
সূত্র: সিফাতুস সাফওয়া, ২/২২৬

“আপনি যদি নিজের ঈমানের অবস্থা বুঝতে চান, তাহলে গোপন অবস্থায় যাচাই করুন। বিশেষ করে যখন পাপের সকল সুযোগ থাকে। কেবল দুই রাকাত নামাজ কিংবা দিনভোর রোজা রাখলেই ঈমানের প্রকৃত অবস্থা ধরতে পারবেন না।”

— ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.)
সূত্র: মাদারিজুস সালিকীন

গল্পটা উরওয়া ইবনু জা’দ আল-বারিকী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর। একজন সাধারণ যুবক থেকে ধনী ব্যবসায়ী হবার গল্প।
.
তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একটি দুধেল পশু এলো। এটা ছিল উনার জন্য হাদিয়া। তিনি তখন আমাকে এক দীনার বা স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে বললেন, “হে উরওয়া, পশুর ব্যবসা শুরু করো এবং আমাকে একটি ছাগল এনে দাও।”
.
উরওয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বাজারে ব্যবসা করতে গেলাম। এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে দর কষাকষির পর এক দীনার দিয়ে দুইটি ছাগল কিনলাম। পরে এক লোক আমার সাথে দেখা করে এক দীনারে একটি ছাগল কিনতে চাইলো। আমিও বিক্রি করে দিলাম। এভাবে একটা ছাগল বিক্রি করে এক দীনার উপার্জন করলাম আর অন্য ছাগলটি নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গেলাম।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার ব্যবসার পদ্ধতি দেখে আল্লাহর কাছে দু’আ করে দিলেন। বললেন, “হে আল্লাহ! আপনি তার ব্যবসায়িক চুক্তিগুলোতে বারাকাহ দান করুন।”
.
উরওয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই দু’আর বরকতে আমি দেখেছি, ব্যবসার নিয়তে কুফার কোনো কোনায়ও আমি দাঁড়ালে বাড়ি ফেরার আগেই চল্লিশ হাজার স্বর্ণমুদ্রা লাভ করে ফেলতাম।”
.
এসব দেখে লোকেরা বলতো, উরওয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু যদি মাটিও কিনতেন তাহলে তাতেও উনি লাভ করতে পারতেন।
.
বই: নিজের পায়ে দাঁড়াও

আসছে একুশে বইমেলায় ওয়াফি পাবলিকেশন থেকে

এই ১০টা টিপস মানলে অলসতা কেটে যাবে
.
1️⃣ ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
— বড় কাজকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করুন, এতে কাজ সহজ মনে হবে।
.
2️⃣ ডেডলাইন দিন
— নিজেকে সময় বেঁধে কাজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
.
3️⃣ কাছের কাউকে জানান
— কাজের প্রগ্রেস শেয়ার করলে নিজেকে দায়িত্বশীল মনে হয়।
.
4️⃣ বিরতি নিন, প্রফুল্ল অনুভব করবেন
— দীর্ঘ সময় একটানা কাজ না করে ছোট বিরতি দিন।
.
5️⃣ ফোন/ডিভাইসের ডিস্ট্র্যাকশন এড়ান
— কাজের সময় অপ্রয়োজনীয় স্ক্রলিং এড়িয়ে চলুন।
.
6️⃣ নিজেকে পুরস্কৃত করুন
— একটি কাজ শেষ হলে নিজেকে ছোট উপহার দিন।
.
7️⃣ পরিবেশ সাজিয়ে নিন
— পরিষ্কার ও গোছানো পরিবেশ কাজে মনোযোগ বাড়ায়।
.
8️⃣ সকালে গুরুত্বপূর্ণ কাজ সেরে ফেলুন
— দিনের শুরুতে এনার্জি বেশি থাকে, এটি কাজে লাগান।
.
9️⃣ ব্যায়াম করুন
— এক্সারসাইজ অলসতা দূর করতে সাহায্য করে।
.
1️⃣0️⃣ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন
— শরীর ও মন ক্লান্তি দূর করলে কাজে উদ্যম পাবেন।
.
এছাড়া অলসতা বিষয়ক আরও টিপস পেতে পড়তে পারেন 'অলসতার বিরুদ্ধে লড়াই' বইটি।

হেদায়াত থেকে ছিটকে পড়ার কিছু কমন দৃশ্যপট
.
ডা. শামসুল আরেফীন লিখেছেন-
হেদায়াতের পথ থেকে ছিটকে পড়ার বিভিন্ন রকম দৃশ্যপট হতে পারে। যেমন, ছোটবেলায় ক্লাস ফাইভ, সিক্সের দিকে আমরা অনেকেই নিয়মিত নামাজ পড়তাম। কিন্তু আরেকটু বড় হয়ে ক্লাস নাইন, টেন বা ইন্টারে এসে অনেকেই নামাজ ছেড়ে দিয়েছি।
.
আবার অনেকে স্কুল-কলেজে থাকাকালীন দ্বীন-ইসলাম ও নামাজ-রোজার প্রতি যথেষ্ট আগ্রহী থাকলেও ভার্সিটিতে এসে দ্বীন পালনের প্রতি সে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এমনকি ভার্সিটিতে আসার পরে তার ঈমান নিয়েই সংশয় এসে পড়েছে।
.
আবার কেউ ভার্সিটিতে এসে হেদায়াত পেয়েছে, ইসলামকে বুঝেছে, ঈমানকে ধারণ করে জীবনযাপন শুরু করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে যখন তার ক্যারিয়ারের ধাপ শুরু হয়েছে, সে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে, বা বিবাহশাদী করে সংসারী হয়েছে; তখন দ্বীনকে ভুলে গেছে।
.
আরেকটি দৃশ্যপট এরকম হতে পারে, কোনো ব্যক্তি পড়েছে দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে, থেকেছে দ্বীনি মানুষজনের সান্নিধ্যে, ইসলাম বিষয়ে তার ভালোমতোই জানাশোনা আছে। কিংবা হতে পারে সে কওমি মাদরাসায় পড়াশোনা করেছে, সেখানে অনেক আল্লাহওয়ালা আলেমদের নেক সোহবত পেয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে ভার্সিটিতে এসে পরিবেশের পরিবর্তনে ও পরিস্থিতির বৈরিতায় সে পুরোপুরি দ্বীনকে বিসর্জন দিয়ে দিয়েছে। পুরোপুরি সেক্যুলার লাইফস্টাইল ও চিন্তাচেতনাকে আঁকড়ে ধরেছে।
.
এভাবে হেদায়াত থেকে দূরে সরে যাওয়ার নানা রকম দৃশ্যপট হতে পারে, থাকতে পারে বিভিন্ন ধাপ। হেদায়াত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন স্তরও থাকতে পারে। যেমন, ঈমান আনার পর পুনরায় কুফরে ফিরে যাওয়া একটা স্তর। ভার্সিটিতে গিয়ে নাস্তিক হয়ে যাওয়া, সেক্যুলার হয়ে যাওয়া।
.
হেদায়েত হারিয়ে যাবার একটা ধাপ এমন যে, কেউ আগে দ্বীনের প্রতি আগ্রহ অনুভব করত, এখন আর তা করছে না। দায়সারাভাবে, বোঝা বহনের মতো করে সে দীনকে পালন করছে। আগে কোনো বোন নেকাব পরা, পর্দা করাকে জরুরি মনে করত, কিন্তু এখন সে শুধু বোরকা পরা বা ওড়নাকে হিজাবের মতো করে পেঁচিয়ে নেওয়াকেই যথেষ্ট মনে করছে। আগে কেউ মাহরাম-গায়রে মাহরাম মেনে চলত, এখন আর সে তা মেনে চলছে না। হয়তো-বা এটাকে জরুরিও মনে করছে না। এটাও একটা ধাপ।
.
মূলত হেদায়াত হারিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করে নাস্তিক হয়ে যাওয়া যেমন গোমরাহির শেষ ধাপ, তেমনই মুমিন বান্দার ঈমান-আমলের হালতের অবনতি এবং দ্বীন পালনের উদাসীনতাগুলোও হেদায়াত হারানোর প্রাথমিক ধাপ।
.
'দ্বীনে ফেরার পর হারিয়ে যেয়ো না' বই থেকে।

সাহাবী আবু দারদা (রাদি.)-এর কাছে এক ব্যক্তি উপদেশ চাইলো, “আমাকে এমন কিছু শেখান, যেটার কারণে আল্লাহ আমাকে উপকৃত করবেন।”

তিনি বললেন, “তোমার সম্মান আল্লাহর ওপর ন্যস্ত করো। যাতে কেউ তোমাকে অপমান করলে তুমি তাদেরকে আল্লাহর জন্য এড়িয়ে যেতে পারো।”
.
সূত্র: হিলইয়াতুল আউলিয়া, ১/২১৯

রাসূল (ﷺ) বলেন,

“অতি শীঘ্রই এমন একটি সম্প্রদায় বের হবে, যারা দ্বীনের গভীর জ্ঞান রাখবে, যারা কুরআন তিলাওয়াত করবে, কিন্তু শয়তান তাদের নিকট এসে বলবে-
'যদি তোমরা শাসকের কাছে গিয়ে দুনিয়ার সামান্য অংশও অর্জন করতে পারো, তাতে ক্ষতি কী? দ্বীন তো তোমাদের কাছে সুরক্ষিত আছেই।'
মনে রেখো, এটা কখনোই সম্ভব নয়। কাঁটাগাছ থেকে যেমন কাঁটা ছাড়া কিছু পাওয়া যায় না, তেমনি তাদের কাছে গেলে পাপ ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায় না।” (ইবনে মাজাহ, ২৫৫)
.
বই: সালাফের দরবারবিমুখতা, মীযান হারুন

একবার মুসা (আ.) আল্লাহ তা'আলার কাছে প্রার্থনা করলেন, ইয়া রাব্বি! জান্নাতে আমার সঙ্গী কে হবে তাকে একটু দুনিয়াতে দেখতে চাই।
.
দুদিন পর জিবরাঈল আসলেন। মুসাকে বললেন, জান্নাতে আপনার সঙ্গী হবে অমুক। সে অমুক জায়গায় বাস করে।
.
মুসা (আ.) পরদিন তাকে দেখতে গেলেন। গিয়ে দেখলেন একজন যুবক বসে আছে। যুবকের মধ্যে বিশেষ কিছু চোখে পড়লো না। সারাদিন যুবকটির উপর চোখ রাখলেন। কিন্তু একজন নবীর প্রতিবেশী হওয়ার মতো কোনও গুণপনা লোকটির মধ্যে খুঁজে পেলেন না।
.
বিকেলে পেশাগত কাজ সেরে যুবকটি বাড়ির দিকে রওয়ানা হলো। মুসা (আ.)ও তার পিছু নিয়ে তার দোরগোড়ায় উপস্থিত হলেন। এক রাতের আতিথ্য কামনা করলেন।
.
যুবকটি প্রার্থনা মঞ্জুর করল। মুসা (আ.) দেখলেন যুবকটি এক বৃদ্ধা মহিলার সেবায় নিয়োজিত হলো।
.
বৃদ্ধাকে মুখে খাবার তুলে খাইয়ে দিচ্ছে। জামাকাপড় পরিষ্কার করে দিচ্ছে। আর মহিলাটি বিড়বিড় করে অস্পষ্ট স্বরে কীসব বলে যাচ্ছে।
.
মুসা (আ.) আর থাকতে না পেরে যুবকটির কাছে জানতে চাইলেন। কে এই বৃদ্ধা, আর তিনি বিড়বিড় করে বলছেনই বা কি?
.
যুবকটি বলল, ইনি আমার মা। আমি তাঁর দেখাশোনা করি। খিদমাত করি। তিনি প্রতিদিন আমার জন্য দু'আ করেন। তিনি প্রতিদিন একই দু'আ করেন, বলেন,
.
'আল্লাহ তা'আলা তোমাকে ক্ষমা করুন। আর জান্নাতে তোমাকে মুসার সঙ্গী করে দিন।'
.
মুসা (আ.) উত্তর শুনে কেঁদে ফেলে বললেন, সুসংবাদ গ্রহণ কর।
.
জান্নাতে তুমিই আমার সঙ্গী হবে।
.
বই 'জীবনের ক্যানভাসে আঁকা গল্প',
আতীক উল্লাহ হুজুর

“আমরা যদি দুনিয়াতে পরীক্ষার সম্মুখীন না হতাম, বিপদ-আপদের কষ্ট যদি সহ্য করা না লাগত, তাহলে কিয়ামতের দিন আমাদের দেউলিয়া হয়ে উপস্থিত হতে হতো।”

— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.)

সূত্র: যাদুল মাআদ, ৪/১৭৬

“মানুষ ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ দ্বীনদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে নিজের হিসাব ঠিক সেভাবে নিবে, যেভাবে একজন ব্যবাসায়ী তার ব্যবসায়িক অংশীদারের হিসাব নেয়।”

— মায়মুন ইবনু মিহরান (রহ.)
.
সূত্র: সিয়ার আলাম আন-নুবালা, ৫/৭৪

নবী দাউদ (আ.) আল্লাহকে জিজ্ঞাসা করলেন:
“হে আল্লাহ! আপনার নেয়ামতের মধ্যে কোনটি সবচেয়ে ছোট?”
আল্লাহ তাআলা তাকে বললেন:
“হে দাউদ, একবার শ্বাস নাও।”
দাউদ (আ.) শ্বাস নিলেন। তখন আল্লাহ তাআলা বললেন:
“এটাই আমার নেয়ামতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট নেয়ামত।”
.
সূত্র: আস-সবর, ইবনুল কাইয়্যিম

“হে মানুষ! একটি কুকুরের সামনে সোনা ও রুপা ফেললে দেখবে, সে এগুলো চিনতে পারছে না। এড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তুমি যদি তার সামনে একটি হাড় ফেলো, সে ঝাঁপিয়ে পড়বে। মানুষদের মধ্যে যারা বোকা, তারাও ঠিক এমন। তাদেরকে আমলের কথা বললে তারা এড়িয়ে যায়। কিন্তু গুনাহের জিনিস দিলে ঠিকই ঝাঁপিয়ে পড়ে।”
.
— মালিক ইবনু দিনার (রহ.)

সূত্র: হিলইয়াতুল আওলিয়া, ১/৪১৯

“আমি অতিথি খুব পছন্দ করি। কারণ, তার খাবারের রিজিক আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে, কিন্তু সেই খাবার খাওয়ানোর ওছিলায় সাওয়াব পাই আমি।”
.
— শাকিক ইবনু ইবরাহীম (রহ.)
সূত্র: সিয়ার আলামিন নুবালা, ৯/৩১৫

তাবেয়ী মুহাম্মাদ ইবনু সীরিন (রহ.)। স্বপ্নের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার। তিনি শুধু স্বপ্নের ব্যাখ্যাই দিতেন না, প্রচণ্ড পরহেজগারও ছিলেন।
.
মুহাম্মাদ ইবনু আউন (রহ.) বলেন, তিনি তর্ক-বিতর্কে জড়াতে নিষেধ করতেন; কেবল এমন ব্যক্তির সাথেই তর্ক করতে বলতেন, যার সাথে কথা বলার মাধ্যমে তাকে তার মত থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আশা করা যায়।
.
সূত্র: আল ইবানাতুল কুবরা

রমাদান বিষয়ক ১০টি সেরা বই
.
🌙 তারাবীহর সালাতে কুরআনের বার্তা
লেখক : শায়খ আহমাদুল্লাহ
.
🌙 ধূলিমলিন উপহার রামাদান
লেখক : শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিল
.
🌙 রমাদান কারীম
লেখক : মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহ
.
🌙 প্রোডাক্টিভ রামাদান
লেখক : উস্তাদ আলী হাম্মুদা, মোহাম্মাদ ফারিস
.
🌙 রোযা ও যাকাতের মাসায়েল
লেখক : মাওলানা তানজীল আরেফীন আদনান
.
🌙 কীভাবে রামাদান কাটাবেন
লেখক : ডাঃ ইসরার আহমাদ রাহিমাহুল্লাহ
.
🌙 নবিজির রামাদান
লেখক : শাইখ হামদান আল হুমাইদি রহ.
.
🌙 জীবনের সেরা রামাদান
লেখক : ড. সালমান আল আওদাহ
.
🌙 রমাদান-আত্মশুদ্ধির বিপ্লব
লেখক : ড. খালিদ আবু শাদি
.
🌙 সিয়াম বিশ্বকোষ (ছোট)
লেখক : মুফতী মুহাম্মদ ইনআমুল হক কাসেমী

বইগুলোর ভিতরের পাতা দেখতে ক্লিক করুন: https://www.wafilife.com/search?tag=10-books-for-ramadan

ভয় দূর করার পাঁচ পদ্ধতি
.
💚 প্রথমে বিশ্বাস করুন, আপনার কাজেই ভয়ের ওষুধ আছে। বসে থাকা বা কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া ভয়কে বাড়িয়ে দেয় এবং আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে।
.
💚 মনে শুধু ইতিবাচক চিন্তা জায়গা দিন। ভয়ের সময় নেতিবাচক চিন্তাগুলো বড় আকার ধারণ করে। অপ্রিয় ঘটনা বা পরিস্থিতি স্মরণ না করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
.
💚 আপনি যেমনটা ভাবছেন, এত খারাপ নাও হতে পারে। অধিকাংশ সময় দেখবেন আপনার ধারণা যত খারাপ ছিল, বাস্তবে বিষয়টা আরও সহজে মিটে যাচ্ছে।
.
💚 আর এজন্য আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল বাড়ানো প্রয়োজন। আল্লাহর সিদ্ধান্তের ওপর আস্থা যখন বাড়বে, দেখবেন জাগতিক ভয়ভীতি আপনাকে গ্রাস করছে কম।
.
💚 সবশেষে ঠিক কাজটা করে ফেলুন। সকল সন্দেহ, সংশয় ঝেড়ে ঠিক কাজটা করলে মাথা থেকে পাহাড় নেমে যায়।
.
এগুলো নিয়মিত চর্চা করলে ইনশাআল্লাহ আপনার ভয় কমবে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়বে। 😊

"যে ব্যক্তি দিনে ভালো আমল করে, রাতে তার সাওয়াব পেয়ে যায়। যে ব্যক্তি রাতে ভালো আমল করে, দিনে তার সাওয়াব পেয়ে যায়। আর যে ব্যক্তি কোনো গুনাহ ছেড়ে দেবার ব্যাপারে সৎ, আল্লাহ তার অন্তর থেকে সেটা বের করে দেন।"
.
— আবূ সুলাইমান আদ-দারানী (রহ.)
সূত্র: আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়া, ৬/২৩৪

“মানুষকে খুশী করার জন্য আপনি যদি আপনার সর্বোচ্চটাও দিয়ে দেন, তাও দেখবেন সবার মন পাচ্ছেন না। অতএব যখনই কোনো নিয়ত করবেন কিংবা কাজ করবেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করুন।”
— ইমাম শাফেঈ (রহ.)
.
সূত্র: মানাকিবুশ শাফি, ইমাম বাইহাকি, ২/১৭৯

ফোকাস বাড়ানোর ১০টি শর্টকাট টিপস

1️⃣ প্রায়োরিটি সেট করুন: প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো চিহ্নিত করুন।

2️⃣ ডিসট্রাকশন দূর করুন: কাজের সময় নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন।

3️⃣ প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিন: গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আগে সারুন।

4️⃣ লক্ষ্য স্থির করুন: জীবনের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।

5️⃣ রুটিন তৈরি করুন: দৈনন্দিন কাজের রোডম্যাপ বানান।

6️⃣ জীবন সরল করুন: অপ্রয়োজনীয় জিনিসে জড়ানো বাদ দিন।

7️⃣ মাইন্ডফুলনেস চর্চা করুন: বর্তমান মুহূর্ত নিয়ে ভাবায় এবং কাজ করায় মন দিন।

8️⃣ নিজের যত্ন নিন: ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রামের মাধ্যমে যত্ন নিন।

9️⃣ ‘না’ বলতে শিখুন: অপ্রয়োজনীয় কাজ এড়িয়ে চলুন। ফোকাস এমনিতেই বেড়ে যাবে

🔟 নিয়মিত নিজেকে মূল্যায়ন করুন: লক্ষ্য ও অগ্রাধিকার পর্যালোচনা করে জীবনে সামঞ্জস্য আনুন।

ফোকাস বাড়ানোর আরও উপায় বিস্তারিত জানতে পড়তে পারেন থিবো মেরিসের 'পাওয়ারফুল ফোকাস' বইটি। ছোট বই, কিন্তু ঝাল অনেক!

“একজন মানুষের বেঈমান হবার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট, বিশ্বাসঘাতকদের কাছে সে বিশ্বস্ত।”

— মালিক ইবনু দীনার (রহ.)

সূত্র: সিফাতুস সাফওয়া, ৩/২০১

“যার দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণে নেই, তার অন্তরও নিয়ন্ত্রণহীন। যার অন্তর নিয়ন্ত্রণহীন তার লজ্জাস্থানও নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।”
.
— মুজাদ্দিদ আলফে সানী (রহ.)
সূত্র: এখন যৌবন যার বই থেকে

“মানুষ তোমাকে ততক্ষণ সম্মান করতে থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি তাদের অর্থ সম্পদের প্রতি লোভ না করছো। কিন্তু যদি তুমি লোভ করো, তাহলে তারা তোমাকে তুচ্ছজ্ঞান করবে, তোমার কথা অপছন্দ করবে এবং তোমাকে ঘৃণার চোখে দেখতে শুরু করবে।”

— হাসান বাসরি (রহ.)

সূত্র: হিলইয়াতুল আওলিয়া: ৩/২০

অজুতে ধারাবাহিকতা কেন বজায় রাখতে হয়?
.
কারণ, মানুষের গুনাহ সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ধারাবাহিকতায় প্রকাশ পায়। তাই কুরআনে বর্ণিত ধারায় অজুর অঙ্গগুলো ধৌত করা গুনাহ থেকে ফিরে আসার প্রতীক। এটি তওবার নির্দেশ বহন করে। যেমন, ধারাবাহিকভাবে বললে-
.
(১) চেহারা ধোয়া: চেহারায় মুখ, নাক, চোখ অন্তর্ভুক্ত। প্রথমে কুলি করার মাধ্যমে মুখ পরিষ্কার করা হয়, যা জিহ্বার তওবার প্রতীক।এরপর নাক পরিষ্কার করা নিষিদ্ধ ঘ্রাণ এবং অহংকার থেকে মুক্তির প্রতীক। পুরো মুখমণ্ডল ধোয়া দৃষ্টির পাপ বর্জনের ইঙ্গিত বহন করে।
.
(২) হাত ধোয়া: হাতের মাধ্যমে ঘটে যাওয়া গুনাহ থেকে মুক্তির ইঙ্গিত বহন করে।
.
(৩) মাথা মাসেহ: মাথায় ধোয়ার পরিবর্তে মাসেহের বিধান দেওয়া হয়েছে। কারণ, জবান ও চোখের তুলনায় মাথা থেকে কম অপরাধ ঘটে।
.
(৪) কান মাসেহ: কান অনিচ্ছাকৃতভাবে শব্দ গ্রহণ করে। তাই এটি ধোয়া ও মাসেহের মাঝামাঝি একটি পদ্ধতি।
.
(৫) পা ধোয়া: পা সর্বশেষ অঙ্গ যা গুনাহর দিকে অগ্রসর হয়। তাই এটি সবার শেষে ধোয়া হয়।
.
এখন প্রশ্ন হলো তিনবার করে কেন ধুতে হয়?
.
মূলত প্রতিটি অঙ্গ তিনবার ধোয়ার মাধ্যমে তওবার তিন শর্ত পূরণের দিকে ইঙ্গিত করা হয়:
— গুনাহের প্রতি অনুতপ্ত হওয়া।
— গুনাহ বর্জন করা।
— ভবিষ্যতে গুনাহ না করার প্রতিজ্ঞা।
.
অজুর এই ধারাবাহিকতা মানুষকে পাপ থেকে দূরে থাকার এবং আল্লাহর নিকট তওবার সুযোগ দেয়।
.
এভাবে নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত থেকে শুরু করে জান্নাত জাহান্নাম পর্যন্ত বিষয়গুলো নিয়ে যত প্রশ্ন আমাদের ভিতর কাজ করে, বিশেষ করে, কেন এই বিধান দেওয়া হলো—এ জাতীয় প্রশ্নের বুদ্ধিবৃত্তিক উত্তর নিয়ে লাখে 'ইসলামি বিধানের বুদ্ধিবৃত্তিক উপস্থাপনা' বইটি। হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলি থানভি (রহ.)-এর অনবদ্য রচনা।
.
যারা ইসলামী বিধিবিধানগুলোর উদ্দেশ্য, কারণ, অন্তর্নিহিত প্রজ্ঞা বুঝতে চান, তারা পুরো বইটি পড়ে দেখতে পারেন।

এই ৮টি কাজ করলেই সারাদিন প্রোডাক্টিভ হবে
.
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ৮টি কাজ করুন, দেখবেন সারাদিন কত প্রোডাক্টিভ সময় যাচ্ছে-
.
🕌 ফজরের নামাজ পড়ুন
দিনের শুরুতেই আল্লাহর সামনে উপস্থিত হন, ফজরের সময় দুআ কবুল হয়। তাই তখন দুয়া করুন। এটি আত্মিক শক্তি জোগাবে।
.
💧 পানি পান করুন
ঘুমের পর শরীর ডিহাইড্রেটেড থাকে। এক গ্লাস পানি পান করুন।
.
🤸‍♀️ হালকা ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করুন
শরীর সক্রিয় করতে ৫-১০ মিনিট স্ট্রেচিং বা হালকা যোগব্যায়াম করুন। সময় থাকলে ২০ মিনিট হেটে আসুন সকালের সুন্দর পরিবেশে।
.
📝 দিনের পরিকল্পনা লিখুন
সারাদিন কী কী গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে, সেগুলো একটি নোটবুকে বা নোটপ্যাডে লিখে ফেলুন। তাহলে ভুলে যাবার চান্স কমে যাবে।
.
🍳 হেলদি নাশতা করুন
তেলে ভাজা পরটা কিংবা ভাজাপোড়া কিছু না খেয়ে পুষ্টিকর নাশতা কিছু খেলে শরীর ও মন দুটোই শক্তি পায়।
.
📚 মোটিভেশনাল কিছু পড়ুন বা শুনুন
দিনের জন্য উদ্দীপনা পেতে মোটিভেশনাল বই পড়ুন বা অডিও শুনুন। ইসলামী ছোট ছোট উপদেশ নিয়ে বই আছে, সেগুলোও পড়তে পারেন।
.
🔥 একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ দিয়ে দিন শুরু করুন
দিনের সবচেয়ে কঠিন বা গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সকালেই করুন। এটি আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং সারাদিন নিজেকে বোঝামুক্ত মনে হবে।
.
📴 ডিজিটাল ডিটক্স করুন
ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল বা সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় নষ্ট করবেন না। এটা মারাত্মকভাবে প্রোডাক্টিভিটি কিল করে।
.
এভাবে সকালের সময়গুলো কাজে লাগালে সারাদিন প্রোডাক্টিভভাবে কাটবে ইনশাআল্লাহ।

“তোমরা আদবকেতা বিষয়ক বই পড়ো, আদবকেতা শেখো। এটা মানুষকে মহৎ বানায়, বুদ্ধি বাড়ায়। আদবকেতা একাকিত্বের সঙ্গী এবং গণ জমায়েতে ব্যক্তির ভূষণ-রূপে উপস্থিত হয়।”

— শাবীব ইবনু শাইবাহ (রহ.)
সূত্র: বাহজাতুল মাজালিস, ১/১৯

“যে ব্যক্তি খারাপ লোকদের সঙ্গে মিশে, সে দুটির একটিতে আক্রান্ত হবেই: সে হয় তাদের সঙ্গে মিথ্যা ও অন্যায় কাজে জড়িয়ে পড়বে। অথবা যখন সে তার সাথীদের মাঝে অন্যায় দেখবে বা শুনবে, তখন নীরব থাকবে এবং বাধা দিবে না। ফলে, সে নিজেও পাপী হয়ে যাবে এবং তাদের পাপে অংশীদার হিসেবে গণ্য হবে।”

— ফুদাইল ইবনু ইয়াদ (রহ.)
সূত্র: মাউসুয়াহ ইবনু আবি দুনইয়া, ৬/৫০৬

“যে ৪টি জিনিস পেয়েছে, সে সুখ পেয়ে গেছে:

(১) দ্বীনদার, সচ্চরিত্রা স্ত্রী;
২) দ্বীনদার সন্তান-সন্ততি;
(৩) নিজ দেশে বসবাস করতে পারা;
(৪) দ্বীনদার বন্ধু-বান্ধব থাকা ”
.
— আব্দুল্লাহ ইবনুল হাসান (রহ.)
সূত্র: আল-ইখওয়ান, ১০৫

হাল আমলে অনেকেই অবিবাহিত থাকাকে পছন্দ করছেন। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিয়ে করছেন না।
.
কিছু কিছু পরিবার তো বয়স পেরিয়ে গেলেও মেয়েদের বিয়ের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। অথচ বিয়ে করার জন্য রাসূল সা., সাহাবীরা, পরবর্তী প্রজন্মরা সবসময় গুরুত্ব দিতেন।
.
প্রখ্যাত সাহাবী মুয়ায ইবনু জাবাল (রাদি.) মৃত্যু শয্যায় থাকতে বলে গেছেন, “তোমরা আমাকে বিয়ে করিয়ে দাও! অবিবাহিত অবস্থায় আমি আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করাকে অপছন্দ করি।” (মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবাহ, ৩/৪৫৩)
.
তাবেয়িদের মধ্যে প্রখ্যাত ইমাম সুফিয়ান সাওরী (রহ.) বলতেন, “বাবার ওপর সন্তানের হক হলো, তার সুন্দর নাম রাখা, সাবালক হলে বিয়ের ব্যবস্থা করা, সামর্থ্য হলে হজে নিয়ে যাওয়া এবং তাকে ভালো ব্যবহার শেখানো।” (আল-ইয়াল, ৩৩২)
.
বিয়ের জন্য যেমন পারিবারিক সাপোর্ট জরুরী, মানসিক, আর্থিক প্রস্তুতিও জরুরী। বরং পুরুষদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়টাই সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই আসুন, বিয়ের প্রস্তুতি গ্রহণ করি, পাশাপাশি পরিবারকেও বোঝাতে থাকি।

“নেককারদের সাথে চলাফেরা করলে মানসিকভাবে প্রশান্তিতে থাকা যায়। এমনকি একজন নেক সঙ্গী পাওয়া মানে কল্যাণের আধার পাওয়া। তুমি যদি কখনো গাফেল হয়ে পড়ো, তারা তোমাকে আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেবে। আর তোমার যদি আখিরাতের কথা মনে থাকে, তারা তোমাকে আমল করতে সহায়তা করবে।”
.
— যুন-নূন আল-মিসরি (রহ.)
সূত্র: সিফাতুস সাফওয়া, ২/৩৮৭
.
আপনার বন্ধুবান্ধবের সার্কেলে এমন মানুষ আছে তো? যদি না থাকে, তাহলে এখনই সময় নিজের সার্কেল নিয়ে ভাবুন। চিন্তা করুন, আপনি কাদের সাথে চলছেন এবং কোন পথে হাঁটছেন।

“ক্ষমতা যদি তোমাকে মানুষের প্রতি অন্যায় করতে উদ্বুদ্ধ করে, তাহলে মনে রেখো, তোমার ওপর অসীম ক্ষমতাধর আল্লাহ আছেন।”
.
— গর্ভরনরদের উদ্দেশ্যে খলিফা উমার ইবনু আব্দুল আযীয (রহ.) এর বার্তা।
সূত্র: তারিখ দিমাশক্ব, ৪৫/২০২

“বকরি পালের মাঝে দুটো ক্ষুধার্ত নেকড়ে বাঘকে ছেড়ে দিলে যতটুকু না ক্ষতি হয়, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় ব্যক্তির দ্বীনের, যখন তার মধ্যে অর্থ-সম্পদের লালসা এবং খ্যাতির মোহ থাকে।”

— রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সূত্র: সুনান আত-তিরমিযী, ২৩৭৯

যখন নবী ইউসুফ (আ.)-কে আল্লাহ শারীরিক সৌন্দর্য দান করলেন, তখন তা তাকে কারাগারে নিয়ে গেল। কিন্তু যখন আল্লাহ তাকে জ্ঞান দান করলেন (রাজার স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেওয়ার মাধ্যমে), তখন তা শুধু তাকে কারাগার থেকে মুক্তিই দিলো না, বরং সামাজিকভাবে তাকে উচ্চ মর্যাদায় আসীন করলো। এতে স্পষ্ট হয়ে যায় যে জ্ঞানের মর্যাদা কত বেশি এবং শারীরিক সৌন্দর্যের প্রকৃত মূল্য কত সামান্য।”
.
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.)
সূত্র: আল-ইলম ওয়া ফাদলুহু ওয়া শারাফুহু, ৩২

“প্রত্যেক মানুষের চারটি চোখ রয়েছে: প্রথম দুটি তার মাথায় এবং পরের দুটি তার হৃদয়ে। মাথার চোখ দিয়ে সে দুনিয়ার বিষয়গুলো দেখে; আর হৃদয়ের চোখ দিয়ে সে পরকালীন বিষয়গুলো উপলব্ধি করে। আল্লাহ যার ভালো চান তার হৃদয়ের চোখগুলো তিনি খুলে দেন। তখন সে অদৃশ্য জগতের প্রতিশ্রুতিগুলো উপলব্ধি করতে পারে। এভাবে বান্দা অদৃশ্য (জান্নাতের পুরস্কার) দেখার মাধ্যমে অদৃশ্য (জাহান্নামের শাস্তি) থেকে রক্ষা পেয়ে যায়।”
.
— খালিদ ইবনু মা'দান (রহ.)
সূত্র: সিয়ার আলামিন নুবালা, ৪/৩৪৫

"কথার মাধ্যমে সংশোধন করার তুলনায় কাজের মাধ্যমে সংশোধন দ্রুত হয়। যে ব্যক্তি নিজেকে শুধরে নেবে, সে তার কাজের মাধ্যমে এমন বহু মানুষকে শুধরাতে পারবে, যাদেরকে লম্বা সময় কথা বলেও সংশোধন করা যায় না।

— ইবনুল জাওযী (রহ.)
সূত্র: সাইদুল খত্বির, পৃ. ৫২৪

আল-জিবরিকান ইবনু বাদর রাদিয়াল্লাহু আনহু।
.
জাহেলী যুগে কুরাইশদের একজন সম্মানিত নেতা ছিলেন। পরবর্তীতে সাহাবী হিসেবে ধন্য হন। তিনি যখনই তার কোনো মেয়ে বা নাতনিকে বিয়ে দিতেন, উপদেশ দিতেন-
.
"তুমি তোমার স্বামীর দাসী হয়ে যাও, সে তোমার দাস হয়ে যাবে।"
.
সূত্র: উয়ুনুল আখবার, ৪/৩৬৪

“একবার আমি ইবনে তাইমিয়াহ (রহ.)-এর সঙ্গে ফজরের জামাতে অংশগ্রহণ করলাম। নামাজের পর দেখলাম, তিনি বসে পড়লেন এবং প্রায় দ্বিপ্রহর পর্যন্ত যিকির করলেন। তারপর তিনি আমার দিকে ফিরে বললেন:
.
“এটাই আমার সকালের নাস্তা। যদি আমি এই নাশতা না খাই, আমার (রূহের) শক্তি কমে যাবে।””
.
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.)
সূত্র: আল-ওয়াবিল আস-সইয়িব, পৃঃ ৬০

বিশ্বাস করুন, এগুলো আপনার প্রয়োজন নেই!
.
আপনার আরও সময়ের প্রয়োজন নেই,
প্রয়োজন হলো, ডিস্ট্রাকশন কমানো।
.
আপনার আরও মোটিভেশনের প্রয়োজন নেই,
প্রয়োজন হলো, নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো।
.
আপনার আরও রিসোর্সের প্রয়োজন নেই,
প্রয়োজন হলো, নিজের রিসোর্সের সদ্ব্যবহার করা।
.
আপনার ভালো 'ভাগ্য' থাকার প্রয়োজন নেই,
প্রয়োজন হলো, ভালো কাজে লেগে থাকা।
.
আপনার সবসময় ব্যস্ত থাকার প্রয়োজন নেই,
প্রয়োজন হলো, যখনকার কাজ তখন করা।
.
আপনার সবকিছু জানার প্রয়োজন নেই,
প্রয়োজন, জানা বিষয়গুলোকে কাজে রূপ দেওয়া।

"একজন মামুলি বান্দা হয়ে তুমি আল্লাহকে ভালোবাসো, এতে অবাক হবার কিছু নেই। অবাক তো এটা ভেবে হওয়া উচিত, বিশ্ব জাহানের অধিপতি, রাজাধিরাজ হয়েও আল্লাহ তাঁর মামুলি বান্দাদের ভালোবাসেন!"

— আবূ ইয়াযীদ আল-বাসতামি (রহ.)
সূত্র: সিয়ার আলাম আন-নুবালা, ১৩/৮৬

"বোকারা সত্য শুনলে রাগে, আর জ্ঞানীরা মিথ্যা শুনলে রাগে। "
.
— ইমাম হাফিয ইবনু আব্দিল বার্‌ (রহ.)
সূত্র: বাহযাতুল মাজালিস, ৫৮৪

"বহু মানুষ আছে, যাদের ধৈর্য আছে গরমের দিনে রোজা রাখার এবং শীতের রাতে তাহাজ্জুদ পড়ার; কিন্তু হারাম জিনিসে না তাকানোর ক্ষেত্রে তাদের ধৈর্য নেই।"

— ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রহ.)
সূত্র: উদ্দাতুস সবিরীন

"যে জানে, মৃত্যুর পর তাকে ভুলে যাওয়া হবে, সে ভালো কাজে সময় দেয়। খারাপ কাজ করে না।"
.
— ইমাম আহমাদ (রহ.)
সূত্র: তাবাকাত আল-হানাবিলাহ, ১/৩৮১

"পুরো পৃথিবী এক ঘণ্টার দুঃখেরও যোগ্য নয়। সেখানে গোটা জীবন এ পৃথিবীর জন্য দুঃখ করে কাটানোর কি আদৌ কোনো মানে আছে? আবার এজন্য মুসলিম ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করারও কি কোনো যৌক্তিকতা আছে? অথচ দুনিয়াতে আপনার জীবনকালই সামান্য!"
.
— ইয়াহইয়া ইবনু মুয়ায (রহ.)
সূত্র: তাহযীবুয যুহদ আল-কাবীর, ৮৪

"শৈশবে মা আমার মাথায় ইমামাহ(পাগড়ি) বেঁধে দিতেন এবং বলতেন, "শাইখ রাবিয়াহ-এর কাছে যাও! তাঁর থেকে ইলমে দ্বীন শেখার আগে আদবকেতা শেখো।"

— ইমাম মালেক (রহ.)
সূত্র: তারতীবুল মাদারিক, ১/১৩০

"বয়স আমার ৮০ হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো আমার সবচেয়ে বেশি ভয় লাগে নারীর ফিতনাকে।"

— প্রখ্যাত তাবেয়ি সাঈদ ইবনুল মুসায়িব (রহ.)
সূত্র: হিলইয়াতুল আউলিয়া, ২/১৬৬

নতুন বছরে যে ১০টি কাজ না করলে
১০ বছর পর আফসোস করবেন
.
💚 কষ্টের ফল ভেস্তে যাবে না
— কষ্ট ছাড়া জীবনে উন্নতির কোনো শর্টকাট রাস্তা নেই। জীবনে যত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবেন, ততই আপনি হবেন অভিজ্ঞ, আত্মবিশ্বাসী। তাই চ্যালেঞ্জ দেখে ঘাবড়াবেন না। বলবেন না, "আমি পারব না" । বরং বলুন, "আমি সাধ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করে দেখব!" এই চেষ্টার ফলাফল সবসময় ইতিবাচক নাও হতে পারে। কিন্তু এটাই দিন শেষে আপনাকে সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
.
💚 অভিযোগ করা ছেড়ে দিন
— ভালো করে খেয়াল করে দেখুন, আপনার অধিকাংশ অভিযোগই কোনো কাজের ছিল না। সময় নষ্ট, মানসিক যন্ত্রণা বৃদ্ধি, সম্পর্কের টানাপোড়ন ছাড়া আর কিছুই পান নি অভিযোগ করে। কাজেই যেটা পরিবর্তন করতে পারবেন, সেটা পরিবর্তন করুন। আর যেটা পারবেন না, সেটার সঙ্গে মানিয়ে নিন, নয়ত এড়িয়ে যান।
.
💚 প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান
— জগতের কোনো ব্যস্ততাই চিরস্থায়ী নয়। সকল কাজ, ব্যস্ততা একদিন ফুরিয়ে যাবে, কিন্তু প্রিয়জনদের সঙ্গে উপযুক্ত সময় না কাটানো বেদনা আপনার মৃত্যুর আগ মুহূর্তে কুড়ে কুড়ে খাবে। তাই সুযোগ না হলে জোর করেই সুযোগ করুন এবং পরিবার, ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব, যারাই আছে—তাদের সঙ্গে সময় কাটান। দিনশেষে একটা শান্তির ঘুম দিতে পারবেন।
.
💚 বিপদ যখন নেয়ামত
— জীবনের অনেক বিপদই নেয়ামতে পরিণত হতে পারে যদি আমরা তা যথাযথ কাজে লাগাতে পারি। এজন্য আল্লাহর উপর ভরসা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যখন আপনি দুঃসময়ের মুখোমুখি হন, মনে রাখবেন সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছাতেই ঘটে। আপনার কল্যাণের জন্যই ঘটে। অতএব বিপদে ধৈর্য ধরুন, বিপদ থেকে শিক্ষা নেবার চেষ্টা করুন। দুআর মাধ্যমে সমাধানের জন্য আল্লাহর সাহায্য চান।
.
💚 নিয়মিত ব্যায়াম করুন
— শরীর ঠিক না থাকলে কোনো কিছুই বেশিদিন ঠিক থাকে না। অত্যন্ত মজাদার খাবারও তখন বিস্বাদ ঠেকে। সেখানে পুরো জীবনটা সুখকর করতে হলে শরীর সুস্থ রাখার বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যকর খাবার খান। অল্প হলেও নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এটা আপনাকে শুধু শারীরিকভাবে ফিট রাখবে না, মানসিকভাবেও শক্তি যোগাবে।
.
💚 ডায়েরি লিখুন
— এই আধুনিক যুগে ডায়েরি লেখার চল নেই বললেই চলে। অথচ সফলদের জীবনে দেখা যায়, তাদের লাইফ চেঞ্জিং অধিকাংশ পরিকল্পনাই ছিল লিখিত। তাই ডায়েরি লেখার অভ্যাস করুন। এটা আপনার নিজেকে বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করবে, আপনার চিন্তাধারা পরিষ্কার করবে এবং আপনাকে আরও সৃজনশীল করে তুলবে।
.
💚 কৃতজ্ঞ থাকুন
— 'আরও চাই! আরও চাই'—মানবজাতির এই দৃষ্টিভঙ্গী জীবনের অর্ধেকের বেশি সুখ কেড়ে নিয়েছে। আজ পরিতৃপ্ত শব্দটা যেন বিরল। ফলে কোনো কিছুতেই আমরা সুখী হতে পারছি না। না অল্পে, না বেশিতে। এজন্য প্রতিটি ছোট-বড় জিনিসের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার অভ্যাস গড়ুন। কৃতজ্ঞ মন শুধু অন্যকে খুশি করে না, বরং আপনাকেও আরও সুখী করে।
.
💚 কে কী ভাবল চিন্তা করবেন না
— সবসময় লোকে কী ভাবল, কী বলল—তা নিয়ে চিন্তা করতে গেলে আসল লক্ষ্য থেকে ছিটকে পড়বেন। আপনার কাজ যদি ন্যায়সঙ্গত হয়, কাজ শুরু করে দিন। কাজ ছোট হলে হীনমন্যতায় ভুগবেন না। মনে রাখবেন, জীবনে সুযোগ বার বার পাবেন না, তাই নিজের লক্ষ্যের দিকে মনোযোগ দিন।
.
💚 ঝুঁকি নেবার অভ্যাস গড়ুন
— প্রতিটি সফলতার গল্প পড়ার সময় আমরা শুধু মুনাফার পরিমাণটা দেখি। অথচ সেই মুনাফা অর্জন করতে গিয়ে ব্যক্তি যে কতবার ঝুঁকির মধ্যে নিজেকে ফেলেছে, সেটা আমরা দেখি না। আসলে ঝুঁকি না নিলে জীবনে বড় কোনো সুযোগ মেলে না। ভয়কে জয় করুন এবং সাহস নিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করুন।
.
💚 শুধু চাকরী নয়, পুরো ইন্ডাস্ট্রিকেই টার্গেট বানান
— শুধু একটি চাকরি পাওয়ার জন্য কাজ করবেন না। পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে বুঝুন, শিখুন এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে আপডেট করতে থাকুন। যখন কোনো ইন্ডাস্ট্রির জন্য আপনি দক্ষ হয়ে উঠবেন, তখন চাকরী নিজেই আপনার পেছন পেছন ঘুরবে।
.
আপনার কি মনে আরও কিছু পয়েন্ট যুক্ত করা যায়?
তাহলে কমেন্টে জানান।

"অন্তরগুলো সৃষ্টি করা হয়েছিল আল্লাহকে স্মরণ করার জন্য। কিন্তু সেগুলো আজ দুনিয়াবি লোভ-লালসায় ভরে গেছে..."

— ইউসুফ ইবনু আসবাত (রহ.)
সূত্র: সিয়ার আলামিন নুবালা, ৯/১৭০

সাপ্তাহিক রোজা রিমাইন্ডার

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(প্রত্যেক সপ্তাহে) সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি রোজদার অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করা হোক—এমনটি আমি পছন্দ করছি। (তিরমিযী : ৭৪৭)

মা আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, "নবীজি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। (নাসাঈ : ২৩৬)

“নীরবতা হলো জ্ঞানীদের অলঙ্কার এবং অজ্ঞদের জন্য পর্দাস্বরূপ।”

— সুফইয়ান ইবনু উয়াইনাহ (রহ.)

সূত্র: মুজাম ইবনুল মুকরি, ১০৭০

সাপ্তাহিক রোজা রিমাইন্ডার

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(প্রত্যেক সপ্তাহে) সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি রোজদার অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করা হোক—এমনটি আমি পছন্দ করছি। (তিরমিযী : ৭৪৭)

মা আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, "নবীজি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। (নাসাঈ : ২৩৬)

২০২৪ সালে প্রকাশিত মাস্ট রিড ৩টি সীরাত

এ বছর অনেকগুলো সীরাত প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে ৩টি সীরাত আমাদের মতে সবার পড়া উচিত-

১) সিরাত ইবনে হিশাম (৪ খণ্ড একত্রে)
লেখক : ইবনে হিশাম

২) মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (১ম ও ২য় খন্ড)
লেখক : ড. ইয়াসির ক্বাদি

৩) আমার নবি মুহাম্মাদ (স)
লেখক : জাকারিয়া মাসুদ

"খুব প্রয়োজন ছাড়া মার্কেট যাওয়া তো উচিত নয়ই, এমনকি মার্কেটের পাশেও বসো না। কারণ, মার্কেট মানুষকে আল্লাহর স্মরণ করতে দেয় না, বাধা হয়ে দাঁড়ায়।"

— সাহাবী আবূ দারদা (রাদি.)
সূত্র: আল-উযলাহ, ২৬

সাপ্তাহিক রোজা রিমাইন্ডার

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(প্রত্যেক সপ্তাহে) সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি রোজদার অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করা হোক—এমনটি আমি পছন্দ করছি। (তিরমিযী : ৭৪৭)

মা আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, "নবীজি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। (নাসাঈ : ২৩৬)

"পরনারীর দিকে তাকানো শয়তানের বিষাক্ত তীরগুলোর একটি। যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে নিজের দৃষ্টি সংযত রাখবে, আল্লাহ তাকে এমন ইবাদতের তাওফীক দেবেন, যেটার মিষ্টটা সে মন থেকে অনুভব করতে পারবে।"

— আব্দুল মালিক ইবনু আত্তাব (রহ.)
সূত্র: আয-যুহদ, হান্নাদ, ২/৬৫১

"পুরুষদের উচিত তার নেককার গৃহিণীর সামনে ভালো হওয়ার চেষ্টা করা; তাহলে সে বাহিরের মানুষদের কাছে আরও ভালো হতে পারবে।"

— ইমাম মালেক (রহ.)
সূত্র: আল-মুনতাকা শারহ আল-মুয়াত্তাহ, ৭/২১২

"মুমিনের জীবনে সফলতা তখনই আসে, যখন সে দৃঢ় বিশ্বাস করে এবং আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল রাখে।"

— আবু উবাইদার প্রতি উমার (রাদি.)-এর চিঠি
সূত্র: ফুতুহুশ শাম, ১/৮৭

সাপ্তাহিক রোজা রিমাইন্ডার

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(প্রত্যেক সপ্তাহে) সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি রোজদার অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করা হোক—এমনটি আমি পছন্দ করছি। (তিরমিযী : ৭৪৭)

মা আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, "নবীজি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। (নাসাঈ : ২৩৬)

"মানুষের প্রশংসা কিংবা ভুল ধরা নিয়ে তাড়াহুড়ো করো না। হতে পারে আজ যারা তোমার প্রিয়, কাল তারাই তোমার ক্ষতি করবে।"
.
— সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.)
সূত্র: আল-আদাবুশ শারিয়াহ, ৩/৪৬২

“যদি কোনো পুরুষ তার স্ত্রীকে রাতের বেলা জাগিয়ে তোলে এবং তারা একসাথে নামাজ পড়ে, তাহলে তাদেরকে এমন মানুষদের তালিকায় রাখা হয়, যারা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে।”

— সাহাবী আবূ সাইদ খুদরী এবং আবু হুরাইরা (রাদি.)

সূত্র: মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবাহ, ৬৬৭৫

'হাশরের ময়দানে বান্দাকে যখন উপস্থিত করা হবে এবং তার হাতে তার আমলনামা দেওয়া হবে, সে দেখবে সেখানে তার নামাজ, রোজা কিছুই লেখা নেই। কোনো নেক কাজই আমলনামায় দেখতে পাবে না।

সে তখন বলবে, "ইয়া আল্লাহ! এটা তো মনে হয় অন্য কারও আমলনামা! আমার তো ভালো আমল ছিল, এখানে সেগুলোর উল্লেখ নেই।"

ফেরেশতারা জবাব দেবে, "তোমার রব ভুল করেন না এবং ভুলেও যান না। বরং তোমার আমলগুলো মুছে দেওয়া হয়েছে এজন্য যে, তুমি মানুষের গীবত করতে।'

— প্রখ্যাত তাবেয়ী সাইদ ইবনু যুবাইর (রহ.)

সূত্র: বাহরুদ দুমুঈ, ১৩৩

প্রখ্যাত তাবেয়ী ওয়াহাব ইবনুল ওয়ারদ (রহ.)-কে একজন জিজ্ঞেস করল, "যে ব্যক্তি আল্লাহর সামনে গুনাহ করে, সে কি ইবাদতের স্বাদ পায়?"

তিনি বললেন, "না, সে পায় না। এমনকি যে গুনাহের ইচ্ছা পোষণ করে, সেও ইবাদতের আসল স্বাদ থেকে বঞ্চিত থাকে।"

সূত্র: হিলইয়াতুল আউলিয়া, ৮/১৪৪

সাপ্তাহিক রোজা রিমাইন্ডার

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(প্রত্যেক সপ্তাহে) সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি রোজদার অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করা হোক—এমনটি আমি পছন্দ করছি। (তিরমিযী : ৭৪৭)

মা আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, "নবীজি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। (নাসাঈ : ২৩৬)

আপনার প্রতিদিন কি ইসলামী বই পড়া হয়?

ইমাম শাফেয়ী (রহ.) বলেন, "ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উত্তম হলো, ইলমে দ্বীন শেখা।"

সূত্র: আল-মাদখাল, ইমাম বাইহাকি, ৪৭৫

বলতে পারবেন, কেন কুরআনে 'অন্ধকার' শব্দটি বহুবচনরূপে এসেছে, আর 'আলো' শব্দটি একবচন?
.
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন,
“এটি কুরআনের একটি অলৌকিক দিক। কারণ, গোমরাহির অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেয় এমন রাস্তা অসংখ্য। অন্যদিকে আলোর রাস্তা কেবল একটাই।”
.
সূত্র: বাদিউল ফাওয়ায়িদ, ১/১২৭

যে ব্যক্তি নফসের তাড়নায় পড়ে গুনাহে জড়ায়, তার ব্যাপারে (তাওবার) আশা করা যায়। কিন্তু যে ব্যক্তি অহংকারের সাথে পাপ করে, তার ব্যাপারে আশা করা যায় না।

— সুফিয়ান ইবন উয়াইনা (রহ.)

সূত্র: তাহযীবুল কামাল

সাপ্তাহিক রোজা রিমাইন্ডার

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(প্রত্যেক সপ্তাহে) সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি রোজদার অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করা হোক—এমনটি আমি পছন্দ করছি। (তিরমিযী : ৭৪৭)

মা আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, "নবীজি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। (নাসাঈ : ২৩৬)

"মুসলিম ভাইয়ের খারাপ দিক উল্লেখ করা এবং তার ভালো দিক গোপন রাখা—এটি একটি অন্যায় কাজ। এটা করো না।"

— ইমাম ইবনু সীরীন (রহ.)
সূত্র: আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৯/৩০৩

“তাদের মতো হয়ো না, যারা হক নিজের মনঃপুত হলে অনুসরণ করে। আর না হলে হকের বিরোধিতা করে।”

— উমার ইবনু আব্দিল আযীয (রহ.)
সূত্র: জামিউল মাসাঈল, ৬/১৪৪

"প্রখ্যাত তাবেয়ি সাইদ ইবনু যুবাইর (রহ.) জুমার দিন আসরের জামাত শেষে বসে থাকতেন। তখন দুআয় এমনভাবে ডুবে থাকতেন যে, সূর্য অস্ত যাওয়ার আগ পর্যন্ত কারও সঙ্গেই কথা বলতেন না।"

সূত্র: যাদুল মাআদ, ইবনুল কাইয়্যিম, ১/৩৮২

জুমার দিনের এই সময়টা দুআ কবুলের বিশেষ মুহূর্ত। আসুন, আমরাও এটা কাজে লাগাই।

"আল্লাহর রাসূল সা.-এর কাছে এমন আমল প্রিয় ছিল, যেটা ব্যক্তি নিয়মিত করে; যদিও পরিমাণে তা অল্প। "

— নবীজির স্ত্রী উম্মু সালামাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)

সূত্র: মুসনাদে আহমাদ, ২৬৭২৬

সাপ্তাহিক রোজা রিমাইন্ডার

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(প্রত্যেক সপ্তাহে) সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি রোজদার অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করা হোক—এমনটি আমি পছন্দ করছি। (তিরমিযী : ৭৪৭)

মা আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, "নবীজি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। (নাসাঈ : ২৩৬)

"মানুষ মাঝে মাঝে এমন কথা বলে ফেলে, যা শুনে তার বন্ধু-বান্ধব হয়ত খুশী হয়, কিন্তু সেই কথার কারণে সে জাহান্নামে এত তলে চলে যায় যে, আসমান জমিনের ব্যবধানের চেয়েও তা বিশাল।"

— সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.)

সূত্র: আয-যুহদ, ইবনুল মুবারক, ১১৪৫

"একটা সময় আসবে যখন মানুষের অন্তর কুরআন-শূন্য হয়ে পড়ে। তারা তখন কুরআনের মধ্যে আর আনন্দ খুঁজে পাবে না, প্রশান্তি পাবে না।

তাদেরকে যে আমলের আদেশ দেওয়া হয়েছিল, সেই আদেশগুলো পালনে ব্যর্থ হলে তারা বলবে, 'আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।' আর যে কাজগুলো থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল, সেগুলোতে জড়িয়ে পড়লে বলবে, 'আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করে দেবেন, আমরা শিরক করিনি।'

তাদের সবকিছু থাকবে জাগতিক লোভ-লালসায় ভরপুর, কাজে-কর্মে ইখলাস থাকবে না।"

— আবুল আলিয়া (রহ.)

সূত্র: আয-যুহদ, ইমাম আহমাদ, ১৭৪১

"যে ব্যক্তি তার অপছন্দের বিষয়গুলোতে ধৈর্য ধরতে পারে, সে তার পছন্দের বিষয়গুলো অর্জন করতে পারে।"

— উমাইর ইবনু হাবীব (রহ.)

সূত্র: আয-যুহদ, ইমাম আহমাদ, ১৫০

সাপ্তাহিক রোজা রিমাইন্ডার

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(প্রত্যেক সপ্তাহে) সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি রোজদার অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করা হোক—এমনটি আমি পছন্দ করছি। (তিরমিযী : ৭৪৭)

মা আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, "নবীজি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। (নাসাঈ : ২৩৬)

"জান্নাতে মানুষ একটা জিনিস নিয়েই আফসোস করবে। আর তা হলো, পৃথিবী কাটানো সেই মুহূর্তগুলোর কথা ভেবে, যখন তারা আল্লাহর যিকির করেনি।"
.
— সাহাবী মুয়ায ইবনু জাবাল (রাদি.)

সূত্র: আল-ওয়াবিল আস-সাইয়িব, ৫৯

"আসল পুরুষ তো সে, যে তার দায়িত্বগুলো ঠিকঠাক পালন করে এবং মুসলিমদের সম্মান কোনোভাবে নষ্ট করা থেকে বিরত থাকে।"

— সাহাবী উমর ইবনুল খাত্তাব (রাদি.)

সূত্র: বাহজাতুল মাজালিস, ১/৩৯৭

"খারাপ লোকদের সাথে বসে মিষ্টি খাওয়ার চেয়ে নেককার সাথে থেকে পাথর কুড়ানো ভালো।"

— মালিক বিন দীনার (রহ.)

সূত্র: রওদাতুল উকালা, ১৫৫

"অতীতে রাগের সময় যা-ই বলেছি, সুখের সময় সেগুলোর কথা মনে হলে আফসোস হয়।"

— মুয়াররিক (রহ.)

সূত্র: হিলইয়াতুল আউলিয়া, ২/২৩৫

সাপ্তাহিক রোজা রিমাইন্ডার

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(প্রত্যেক সপ্তাহে) সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি রোজদার অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করা হোক—এমনটি আমি পছন্দ করছি। (তিরমিযী : ৭৪৭)

মা আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, "নবীজি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। (নাসাঈ : ২৩৬)

"একজন মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজনের তাগিদে রাস্তায় হাঁটা লাগলেও সেটা তোমার জন্য নফল হজ্ব করার চেয়ে উত্তম।"

— হাসান বাসরি (রহ.)

সূত্র: লাতায়িফুল মাআরিফ, ৪৪২

"যে ব্যক্তি তিনটি গুণ অর্জন করতে পারবে, আল্লাহ তাআলা তার অন্তর ঈমান দ্বারা পূর্ণ করে দেবেন; আলেমদের সান্নিধ্যে থাকা, কুরআন পড়া এবং রোজা রাখা।"

— সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.)

সূত্র: বাহজাতুল মাজালিস, ১৯৯

"যে ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাযথ পড়লো, সে তার রবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল। আর নামাজ শেষে যে তার মা-বাবার জন্য দুআ করল, সে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল।"

— সুফইয়ান সাওরী (রহ.)

সূত্র: তাফসীরে কুরতুবী, ১৪/৬৫

সাপ্তাহিক রোজা রিমাইন্ডার

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
(প্রত্যেক সপ্তাহে) সোম ও বৃহস্পতিবার বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। কাজেই আমি রোজদার অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর দরবারে পেশ করা হোক—এমনটি আমি পছন্দ করছি। (তিরমিযী : ৭৪৭)

মা আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, "নবীজি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। (নাসাঈ : ২৩৬)

"যে পুরুষ একজন নেককার স্ত্রী পেয়েছে, সে ঐ রাজার মতো যার মাথায় সোনার তাজ রয়েছে।"

— আব্দুর রহমান আল-খুযাঈ (রহ.)

সূত্র: মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ, ১৭১৪৩

"নিয়ত যদি ভালো হয়, আমল করতে না পারলেও সাওয়াব পাওয়া যাবে। কিন্তু নিয়ত যদি খারাপ হয়, আমল করলেও কোনো সাওয়াব পাওয়া যাবে না।"

— শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রহ.)

সূত্র: মুখতাছার ফাতাওয়া আল-মিসরিয়াহ, পৃঃ ১২

"দুনিয়া হলো শয়তানের মদ। যে এটা পান করবে, তার ততক্ষণ পর্যন্ত হুঁশ ফিরবে না, যতক্ষণ না সে মৃতদের দলে শামিল হচ্ছে এবং ব্যর্থদের সাথে থেকে আফসোস করছে।"

— ইয়াহইয়া ইবনু মুয়ায (রহ.)

সূত্র: আল-ইয়াকুতাহ, ৬৭

"আল্লাহ বড় গুনাহগুলোও মাফ করে দেন, কাজেই হতাশ হয়ো না। আবার তিনি চাইলে ছোট গুনাহের জন্যও শাস্তি দেন, কাজেই ধোঁকা খেয়ো না।"

— আবূ বকর সিদ্দীক (রাদি.)

সূত্র: শারহ সাহিহীল বুখারী, ইবনু বাত্তাল, ১৯/২৬৭

"ঈমানের পর বান্দাকে যদি দামী কিছু দেওয়া হয়, তাহলে সেটা হবে ধৈর্য। এটা হলো সেই ধৈর্য, যা ক্ষতির সময় ধরা লাগে, বিপদ আপদের সময় লাগে, ফিতনার সময় লাগে।"
.
— ইবরাহীম আত-তাইমী (রহ.)

সূত্র: আস-সবর, ১/২৮

"আমি কি তোমাদের বলব, দান সদকা এবং রোজা রাখার চেয়েও উত্তম কাজ কোনটা? সেটা হলো, মানুষের ঝগড়া বিবাদ হলে মিটমাট করে দেওয়া।"
.
— সাহাবী আবূ দারদা (রাদি.)

সূত্র: আল-আদাবুল মুফরাদ, ৪১২

"দুনিয়ার লালসার কাছে যে হার মেনে যায়, দুনিয়াদারদের কাছে একদিন সে মাথা নত করতে বাধ্য হবে।"
.
— ইমাম শাফেয়ি (রহ.)

সূত্র: আল-মাজমুঊ, ১/১৩

"আল্লাহ তোমাকে যা দিয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট থাকো। তাহলে মানুষের মধ্যে তুমি সবচেয়ে ধনী হতে পারবে।"

— সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদ্বি.)

সূত্র: আয-যুহদ, ইবনু আবিদ দুনইয়া, ১৩১

"মনে রেখো, যে গুনাহ তোমার চোখে যত তুচ্ছ হবে, সে গুনাহ আল্লাহর কাছে তত বড় হবে। আর যে গুনাহ তোমার চোখে যত বড় হবে, সেই গুনাহ আল্লাহর কাছে তত তুচ্ছ হবে।"

— ফুদাইল বিন ইয়াদ (রহ.)

সূত্র: শুআবুল ঈমান, ৪২৮/৫

"তোমার যদি এমন একজন বন্ধু থাকে, যে তোমাকে দ্বীনের পথে ডাকে, তাহলে তাকে শক্ত করে ধরে রাখো। কারণ, ভালো বন্ধুত্ব ধরে রাখার চেয়ে খুঁয়ে ফেলা সহজ।"

— ইমাম শাফেয়ী (রহ.)

সূত্র: হিলইয়াতুল আউলিয়া, ৪/১০১

"দুনিয়ার ধন-দৌলত আল্লাহ যাকে খুশী তাকে দেন। প্রিয়-অপ্রিয় যে কেউ হতে পারে। কিন্তু ঈমান শুধু তাকেই দেন, যাকে তিনি ভালোবাসেন।"
.
— সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদ্বি.)
.
সূত্র: আয-যুহদ, ইবনু আবিদ দুনইয়া, ১৪৯

আল্লাহর সুন্দর নামগুলো জানার উপকারিতা
.
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
"আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম রয়েছে, যে কেউ এগুলো মুখস্থ করবে (শিখবে/বুঝবে) সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।" (বুখারী ২৭৩৬, মুসলিম ২৬৭৭)
.
🌟 আরও কিছু ফায়দা:
-----------------------
— ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রহ.) বলেন, "যে ব্যক্তি আল্লাহর নামগুলো অর্থসহ জানে এবং সেগুলোতে বিশ্বাস রাখে, তার ঈমান সেই ব্যক্তির তুলনায় অধিক পরিপূর্ণ হবে, যে শুধু সাধারণভাবে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখে।" (মাজমু আল-ফাতাওয়া ৭/২৩৪)
.
— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন, "যে ব্যক্তি আল্লাহর নাম, গুণাবলি এবং কর্ম সম্পর্কে জানবে, সে নিঃসন্দেহে আল্লাহকে ভালোবাসবে।" (আল-জাওয়াব আস-শাফি, ৯৯)
.
🔖 কর্মপরিকল্পনা:
-----------------------
— আল্লাহর নামগুলো অর্থসহ পড়বো, বোঝার চেষ্টা করব এবং চিন্তাভাবনা করব। অন্যদেরও শেখাবো।
.
— আল্লাহর গুণবাচক নামগুলো দুআয় ব্যবহার করব। এগুলো দিয়ে তাঁকে ডাকবো; যাতে দুআ কবুলের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যেমন, ইয়া হায়্যু, ইয়া কাইয়্যূম ইত্যাদি।
.
— আল্লাহকে নামের শিক্ষা আমাদের জীবনে প্রয়োগ করব। যেমন, বিপদে পড়লে বা হতাশ লাগলে আস-সাবূর, আন-নাছীর; গুনাহ হয়ে গেলে আর-রহমান, আল-গফফার; নিজের মধ্যে অহংকার বা আত্মতৃপ্তি কাজ করলে আল-আযীয, আল-মুতাকাব্বির, এমন যত নাম আল্লাহর আছে, নিজের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী সেগুলোর শিক্ষা স্মরণ করব।
.
📚 বই সাজেশন:
-----------------------
— তিনিই আমার রব সিরিজ (সমকালীন)
— তাঁর পরিচয় (সিয়ান)
— আল্লাহর সুন্দর নামসমূহ (পেনফিল্ড)
— অনুভবে আল্লাহর নামবৈচিত্র (ঋদ্ধ প্রকাশন)

ইমাম বুখারি রহ. বলেছেন,

"আমি আমার বই সহীহ বুখারীতে প্রত্যেকটি হাদীস যুক্ত করার আগে প্রথমে গোসল করেছি, তারপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে এরপর লিখতে বসেছি।" তিনি আরও বলেন, "আমি ষোল বছর ধরে এই বইটি সংকলন করেছি এবং আমি এটাকে আমার ও আল্লাহর মধ্যকার একটি প্রমাণ হিসেবে রেখেছি।"

সূত্র: সিয়ান আলাম আন-নুবালা, ১২/৪০২

"বান্দার জীবনে সবচেয়ে ফযিলতপূর্ণ দিন হচ্ছে, যেদিন সে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করে এবং আল্লাহও বান্দার তাওবাহ কবুল করে নেন।"

— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.)
সূত্র: যাদুল মাআদ, ৩/৫১২

"তোমরা সন্তানদেরকে নামাজ এবং ভালো কাজের মাধ্যমে হেফাজত করো। তবে মনে রেখো, ভালো কাজ অভ্যাসের বিষয়। অভ্যাস পরিণত করা ছাড়া এটা বেশিদিন ধরে রাখা যায় না।"

— সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.)

সূত্র: আল-মুজামুল কাবির, ৯১৫৫

"গান-বাদ্য অন্তর দূষিত করে, রবের ক্রোধ ডেকে আনে।"

— আত-তাহহাক (রহ.)
সূত্র: রুহুল মাআনি, ২১/৬৮

"গায়রে মাহরাম নারীর সাথে একান্তে অবস্থান করো না। এমনকি তাকে তুমি আল্লাহর কালাম শেখাবে—এই অজুহাতেও না।"

— মায়মুন বিন মিহরান (রহ.)

সূত্র: আল-আদাবুশ শারইয়াহ, ২/১৮

"তোমার অন্তরকে যদি পবিত্র রাখতে চাও, তাহলে তোমার জিহ্বাকে পবিত্র রাখো।"

— আহমাদ ইবনু আসীম (রহ.)

সূত্র: তবাক্বাতুল আউলিয়া, ৪৬

"জান্নাতবাসীদেরকে যখন জান্নাতের দিকে প্রথম নিয়ে আসা হবে, তখন দরজায় পৌঁছে তারা একটি গাছ দেখতে পাবে। সেই গাছের গুঁড়িতে থাকবে দুটি ঝরনা।

একটি থেকে তারা পান করবে, সাথে সাথে তাদের অন্তর থেকে যাবতীয় বিদ্বেষ দূর হয়ে যাবে। এটাই হলো ’শরাবে তহুর’ বা পবিত্র পানীয়।

আর অন্যটিতে তারা গোসল করবে। তখন তাদের শরীরে ’নাদ্বরাতুন নাঈম’ বা সুখের লাবণ্য ফুটে উঠবে। এরপর আর কখনো তারা উসকো-খুসকো হবে না, অপরিচ্ছন্ন হবে না।"

— সুদ্দী (রাহিমাহুল্লাহ)

সূত্র: তাফসীরুত ত্বাবারী, ১০/১৯৯

"আসল তাওবাহ হয় কাজে-কর্মে বাস্তবায়নের মাধ্যমে এবং কৃত গুনাহ থেকে ফিরে আসার মাধ্যমে। শুধু মুখে মুখে তাওবার নাম তাওবা না।"

— তাবেয়ি আলি ইবনু হুসাইন (রহ.)

সূত্র: আত-তাওবাহ, ইবনু আবিদ দুনইয়া, ৫৭

"যে মুমিন বান্দা আল্লাহর সাথে সৎ থাকে, মানুষের মাঝে তার জীবনধারা হয় সবচেয়ে সেরা, মানসিকতা হয় সবচেয়ে উন্নত, মনের দিক থেকে সবচেয়ে ধনী এবং অন্তরের দিক থেকে সবচেয়ে সুখী...আসল জান্নাতে প্রবেশের আগেই সে জান্নাতে বাস করতে থাকে।"

— ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.)

সূত্র: আদ-দাউ ওয়াদ-দাওয়াহ, ১/৪৫৯

"শেষ সময়ে এক শ্রেণির মানুষ আসবে, যারা বাহিরে থেকে ভাই ভাই, কিন্তু ভিতরে ভিতরে শত্রুতা পোষণ করে ।"

— ফুদায়েল ইবনু ইয়াদ (রহ.)

সূত্র: সিয়ার সালাফ আস-সালিহীন, ১১০৩৩

"গুনাহের পরিমাণ কমিয়ে ফেলো। কারণ, আল্লাহর সাথে কম গুনাহ নিয়ে সাক্ষাতের চেয়ে উত্তম সাক্ষাৎ নেই ।"

— উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাদ্বি.)

সূত্র: আয-যুহদ লি ওয়াকী, ২/৫৩৫

"কবিরা গুনাহ মাফের একটি উপায় হলো, মা-বাবার প্রতি দায়িত্ববান হওয়া।"

— ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রহ.)

সূত্র: আল-আদাবুস শারিয়াহ, ১/৪৬৩

"অপরাধ যখন প্রকাশ্যে হয় এবং মানুষের মাঝে তা স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়, তখন আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর বিভিন্ন বিপদ-আপদ চাপিয়ে দেন।"

— আবু বকর সিদ্দীক (রাদ্বি.)

সূত্র: আয-যুহদ, ইমাম আবূ দাউদ, ৪১

"মানুষের চিন্তায় নিজেকে ব্যস্ত করে ফেলো না। তাহলে নিজেরই ক্ষতি হবে। বরং আল্লাহর চিন্তায় নিজেকে ব্যস্ত রাখো। তাহলে রহমত পাবে।"

— উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদ্বি.)

সূত্র: মাউসুয়াহ ইবনি আবীদ দুনইয়া, ৭/১৩৭

"জমিনবাসিদের প্রতি দয়াবান হও, তাহলে আসমানে যিনি আছেন, তিনি তোমার প্রতি দয়া করবেন।"

— সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.)

সূত্র: আয-যুহদ, ইমাম আহমাদ, ৮৮০

পড়া শেষ করার পর বইয়ের কথাগুলো ভুলে যান?

তা হলে এই ১০টা টিপস আপনার জন্য:
.
📖 পড়ার সময় নোট মাস্ট: পড়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো লিখে রাখুন। আলসেমি ঝেড়ে যদি এই ছোট্ট কাজটা করতে পারেন, দেখবেন অনেক জটিল বিষয়ও আপনার মনে রাখতে সহজ হচ্ছে।
.
📖 বইয়ের সারসংক্ষেপ লিখুন: পড়া শেষ হলেই বই রেখে দেবেন না। নিজের ভাষায় একটি সংক্ষিপ্ত সারমর্ম লিখে ফেলুন। প্রয়োজনে বইয়ের সহায়তা নিয়ে লিখুন। এটি শেখা বিষয়গুলোকে পোক্ত করবে।
.
📖 গুরুত্বপূর্ণ অংশ পুনরায় পড়ুন: একটি ভালো বই কখনই একবার পড়ে আপনি সবটুকু নিতে পারবেন না। আবার বার বার আদ্যোপান্ত পড়াও অনেকের জন্য সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এজন্য উত্তম হচ্ছে, হাইলাইট বা মার্ক করা অংশগুলো পুনরায় পড়া।
.
📖 কাউকে শেখান: নতুন কিছু শিখলে সেটা আপনার বন্ধু বা পরিবারের কাউকে বোঝান। পড়া ও শেখানোর মধ্যে থাকলে আপনার হৃদয়ে পঠিত বিষয়গুলো গেঁথে যাবে।
.
📖 মাইন্ড ম্যাপিং: একটি অধ্যায় শেষ করলে বইটা বন্ধ করে একটু ভাবুন। কী কী পড়লেন, মূল পয়েন্টগুলো নিয়ে চিন্তা করুন। একটার সাথে আরেকটার সম্পর্ক নির্ণয় করুন। এই কাজটা পুরো বই শেষ করেও করতে পারেন।
.
📖 স্পেসড রিভিউ টেকনিক: সব একবারে পড়ার পরিবর্তে নির্দিষ্ট বিরতিতে পড়ুন। বিশেষ করে নতুন নতুন কন্সেপ্টগুলোতে বিরতীতে দিন। এটা লম্বা সময় মনে রাখার ক্ষমতা বাড়ায়।
.
📖 অন্যদের সাথে আলোচনা করুন: বুকস রিডিং ক্লাব বা গ্রুপে যুক্ত হোন। সেখানে আপনার পড়া বইগুলো নিয়ে কথা বলুন, কলাম লিখুন।
.
📖 শেখা বিষয়গুলো কাজে প্রয়োগ করুন: বইয়ের ধারণাগুলো বাস্তবজীবনে প্রয়োগ করার চেষ্টা করুন। মস্তিষ্কে শুধু information দেয়ার মধ্যে খুব একটা ফায়দা নেই। কাজে পরিণত করলে বিষয়গুলো আরও দৃঢ় হয়।
.
এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করলে আপনার বই পড়া আরও ফলপ্রসূ হবে ইনশাআল্লাহ।

ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) অসুস্থ অন্তরের ৭টি বৈশিষ্ট্যের আলোচনা করেছেন-
.
(১) অসুস্থ অন্তরে গুনাহ করার পরেও খারাপ লাগা কাজ করে না, অনুশোচনা জাগে না

(২) অসুস্থ অন্তর গুনাহ করতে পেরে আনন্দিত হয়, প্রশান্তি অনুভব করে

(৩) সে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছেড়ে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে পড়ে থাকে

(৪) হক অপছন্দ করে এবং হকের সামনে আত্মসমর্পণ করতে তার কষ্ট হয়

(৫) নেককার সাথে অবস্থান করলে তার অস্বস্থি লাগে, অন্যদিকে গুনাহগারদের সাথে থাকতে ভালো লাগে

(৬) সংশয়পূর্ণ বিষয়ে আগ্রহ অনুভব করে, কুরআন পড়া এবং অন্যান্য উপকারী কিছু করার চেয়ে সংশয়পূর্ণ জিনিস নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করতে পছন্দ করে

(৭) নসিহা, উপদেশ শুনলে অসুস্থ অন্তর সাড়া দেয় না
.
সূত্র: লিগাছাতুল লাহফা, খণ্ড ১, পৃঃ ৫৪৮

"জ্ঞান শেখার আগে সৎ হতে শেখো। নয়ত এই জ্ঞানকে ব্যবহার করেই ভবিষ্যতে অন্যায় কাজ করবে।"

— ইমাম আওযাঈ (রহ.)

সূত্র: আল-জামিঈ আখলাক আর-রাঈ, ১/৩০৪

"একজন সাহাবীকে নিয়েও যদি দেখো কেউ কটু কথা বলছে, নিশ্চিত থেকো তার ইসলামে ঝামেলা আছে।"

— ইমাম আহমাদ (রহ.)

সূত্র: আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ৮/১৪২

— 'ইমাম আহমাদ, আপনি মিথ্যুকদের চিনেন কীভাবে?'

— 'তাদের ওয়াদা দেখে। কারণ, তারা ওয়াদার বরখেলাপ করে।'

সূত্র: আদাবুল ইমলা, ৪০

'একটা সময় আসবে, যখন মানুষের অন্তর মরে যাবে, শুধু রক্ত মাংসের দেহটাই অবশিষ্ট থাকবে।"

— সুফইয়ান সাওরি (রহ.)

সূত্র: হিলইয়াতুল আউলিয়া, ৭/৮২

"বান্দা যতক্ষণ আল্লাহকে মন থেকে স্মরণ করে, ততক্ষণ সে (নফল) নামাজের মধ্যে থাকে। এমনকি সে তখন বাজারে উপস্থিত থাকলেও।"

— মাসরূক (রহ.)

সূত্র: মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবাহ, ৩০০৮১

"আল্লাহ যদি কাউকে পরিত্যাগ করেন, তার মুখ থেকে তখন অহেতুক কথা বের হয়।"

— মারুফ আল-কারখি (রহ.)

সূত্র: হিলইয়াতুল আউলিয়া, ৮/৩৬১

"যে মানুষের সামনে গুনাহ করতে লজ্জা পায় না, সে আল্লাহর সামনেও লজ্জা পায় না।"

— সাহাবী যায়েদ বিন ছাবিত (রাদ্বি.)

সূত্র: সিয়ার আলামিল নুবালা, ২/৪৩৯