“ কারাগারে শিক্ষাগ্রহণ করেছিলেন নবী ইউসুফ আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
কালক্রমে মহান এই নবীর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে বন্দীত্বের স্বাদ আস্বাদন করেছিলেন -
খুবাইব ইবনু আদি রাদিয়াল্লাহু আনহু, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালিক, আহলুস সুন্নাহর ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বলসহ সালাফ আস-সালেহিনের অনেকেই।
এই পাঠশালার গর্বিত শিক্ষার্থী ছিলেন - ইবনুল কাইয়্যিম, ইবনু কাসির, ইবনু হাজর আল-আসকালানী, ইবনু হাযম, ইবনুল আসির, শাইখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ সহ উম্মাহর মহিরুহরা, আল্লাহ তাঁদের ওপর রাহমাহ বর্ষণ করুন।
সাম্প্রতিক যুগেও যখন সোনালি এই পথের উত্তরাধিকারীরা তাওহিদের পতাকা উঁচিয়ে ধরলেন, হক ও বাতিলের পার্থক্য সুস্পষ্ট করলেন, মানবরচিত সংঘ, তন্ত্রমন্ত্র ও শরীয়াহর বদলে কিতাবুল্লাহ ও নববী মানহাজের দিকে উম্মাহকে আহ্বান করলেন;
পূর্ব ও পশ্চিমের তাওয়াগ্বীত তাদের বন্দী করল, কারাগারে ছুড়ে দিলো।
কুরআনে বর্ণিত সেই ফিরআউনের মতোই আধুনিক ফিরাউনরাও বলল,
- ‘যদি তুমি আমাকে ছাড়া কাউকে ইলাহরূপে গ্রহণ করো, তাহলে আমি তোমাকে অবশ্য অবশ্যই কারারুদ্ধ করব।’
[ তরজমা, সূরা আশ শুয়ারা, ২৬ঃ২৯ ]
সত্য পথের পথিকদের আবদ্ধ করা হলো। তাঁদের ওপর চালানো হলো অমানুষিক, অবিশ্বাস্য সব নির্যাতন।
পুনরাবৃত্তি হলো সেই একই গল্পের। বদলালো কেবল নামগুলো।
পুরোনো কারাগার আর অন্ধকূপগুলো জায়গা দখল করে নিল তোরা, গুয়ান্তানামো, বাগরাম, আবু গারিব, আল হাইর, সাইদনায়া আর নানা ব্ল্যাক সাইট।
খুবাইব, বিলাল আর সুমাইয়্যাদের ( রাদিয়াল্লাহু আনহুম ) জায়গা নিতে আসলো - সাইদ, উমার, নাসির আর আফিয়াসহ নাম না জানা আরও অসংখ্য মুওয়াহহিদ।
দোররা, চাবুক, মরুভূমির সূর্য, উত্তপ্ত কয়লা, আর বর্শার জায়গা নিল - এনহ্যান্সড ইন্টারোগেইশান টেকনিক, ইলেকট্রিকিউশান, সেনসরি ডিপ্রাইভেইশান, ওয়াটার বোর্ডিং আর আবু গারিবের মতো পৈশাচিকতা।
কিন্তু বদলালো কেবল খুঁটিনাটি গুলোই।
মূল চিত্রনাট্য আজও অপরিবর্তিত।
অনেকে হার মানল, আপস কিংবা চুক্তি করল, বিকিয়ে দিলো নিজের বিশ্বাস ও আদর্শকে।
কিন্তু ইমাম আবু হানিফা, ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল, ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহর মতোই তাঁদের উত্তরসূরিরা শক্ত হাতে আঁকড়ে রাখলেন তাওহিদের হাতলকে।
নিজেদের স্বাধীনতা, সময় ও রক্তের বিনিময়ে, নবি ইউসুফের ( আলাইহিস সালাম ) পাঠশালায় নিজেদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আঁধারের এই সুদীর্ঘ মওসুমে পথহারা উম্মাহর সামনে হক ও বাতিলের পার্থক্য স্পষ্ট করে তুলে ধরলেন।
বন্দীত্ব আর কারাগার তাঁদের পরাজিত করতে পারেনি, পারেনি সত্যের পথ থেকে বিচ্যুত করতে। নির্যাতন পারেনি হকের প্রশ্নে আপসে তাঁদের বাধ্য করতে।
বরং আল্লাহ , তাঁর রাসূল ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) ও তাঁর দ্বীনের ব্যাপারে আপসহীন অবস্থানের কারণে তাঁরা হয়েছেন পরিশুদ্ধ, সম্মানিত! ”
- শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিল হাফিজাহুল্লাহ
https://t.me/ShaikhAhmadMusaJibril