ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল @islamicarticlebd Channel on Telegram

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

@islamicarticlebd


অন্যান্য চ্যানেলঃ
❑ t.me/hakeemacademybd
❑ t.me/islamiclibraryintl
❑ t.me/islamimasayel
❑ t.me/iiqbyhakeemacademy
❑ t.me/iisbyhakeemacademy
❏ t.me/hakeemacademy
❑ t.me/islaah_academy
❑ t.me/selectedwaz
❑ t.me/islamicaudiobd
✪ যোগাযোগঃ t.me/nurulhakim365

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল (Bengali)

ইসলামি আর্টিকেল চ্যানেলটি একটি সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং মৌলিক ধর্মের প্রসারে মূল মাধ্যম। এই চ্যানেলে আপনি ইসলামিক বিষয়ে বিভিন্ন আর্টিকেল, লেখা, উপদেশ এবং মৌলিক সংস্কৃতির কাহিনী পাবেন। যারা ইসলামিক জ্ঞান সংক্রান্ত সঠিক ও মৌলিক তথ্য প্রচার এবং শেয়ার করতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল। এই চ্যানেল আপনার ইসলামিক জীবনে নতুন আলোক নিয়ে আসবে এবং আপনার ধার্মিক জ্ঞান পরিপন্থি করতে সাহায্য করবে। চ্যানেলে যোগ দিন এবং ইসলামিক বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করুন।

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

27 Dec, 02:42


কুদৃষ্টি এবং সৌন্দর্য প্রেমের ধোঁকা
• ────── ✾ ────── •

কিছু অজ্ঞলােক বলে থাকে, আমরা সুদর্শন চেহারা দেখে মহান আল্লাহর বড়ত্বের সাথে পরিচিত হই। এটা নিচক প্রতারণা ও শয়তানি প্রবঞ্চণা। মহান আল্লাহর বহু সৃষ্টি আছে যেগুলাে দেখা বৈধ এবং যেগুলাে তাঁর বিস্ময়কর কুদরতের বহিঃপ্রকাশ। ফুলের বিচিত্র বাহার দেখুন, সেগুলাের সৌরভ নিয়ে ভাবুন। ফুলের সুগন্ধি কিভাবে মানুষের অন্তপ্রাণকে আচ্ছন্ন করে নেয়, তা সম্পর্কে চিন্তা করুন। ফলের বৈচিত্র ও মিষ্টতা সম্পর্কে ভাবুন।

মহান আল্লাহ বলেন...

ফলের প্রতি তাকাও যখন তা পূর্ণতা লাভ করে।

সমুদ্র লেক ও ঝর্ণাধারাগুলাে দেখুন। পৃথিবীর প্রশস্ততা আকাশের উচ্চতা মানুষকে আহবান করে নিজেকে নিয়ে ভাবনার প্রতি।

মহান আল্লাহ বলেন...

“তবে কি তারা দৃষ্টিপাত করে না উটের দিকে, কিভাবে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং আকাশের দিকে কিভাবে ঊর্ধ্বে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে এবং পর্বতমালার দিকে, কিভাবে তাকে স্থাপন করা হয়েছে এবং ভূমন্ডলের দিকে কিভাবে তাকে বিস্তৃত করা হয়েছে?

ভাবতে মনে চাইলে চাঁদ সূর্য তারকার সৌন্দর্য নিয়ে ভাবুন। বাতাসে উড়ন্ত দৃষ্টিনন্দন পাখি, পানির সাঁতারু বিচিত্র মৎসরাজ কি ভাবনার জন্য যথেষ্ট নয়? শুধু মানুষের চেহারা ভাবনার জন্য রয়ে গেল?

এসবই খোঁড়া অজুহাত। গুনাহের অজুহাত নিকৃষ্ট গুনাহ মতই। হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানবী রহ. এর সামনে একবার মনের কাছে পরাজিত একলােক এই অজুহাত পেশ করল যে, আমি তাে সুশ্রীচেহারাগুলাে দেখি আল্লাহর সৃষ্টিনিপুনতা ও কুদরতের কারিশমা অনুধাবন করার জন্য। তিনি লােকটিকে অত্যন্ত শিক্ষণীয় উত্তর দিলেন, বললেন, তুমি তােমার মায়ের লজ্জাস্থান নিয়ে ভাবাে যে, কিভাবে এত সংকীর্ণ পথ দিয়ে তোমার মত মানুষ জন্ম দিয়েছে!

উৎসঃ কুদৃষ্টি | পৃষ্ঠা-২৩

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

21 Dec, 18:18


সহজ তাহাজ্জুদ ও পরম নৈকট্য
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

সুতরাং নফ্স নামক দুশমনকে পরাজিত করার ফিকির থাকা চাই। প্রত্যহ দু'রাকাত ছালাতুল-হাজত পড়ে বড়ই মিনতি সহকারে আল্লাহ পাকের নিকট প্রার্থনা করবে যে, হে আল্লাহ! সকল গুনাহ থেকে আমি তওবা করছি। কিন্তু হে আল্লাহ! আমার তওবা তো বার বার ভেঙ্গে যায়, তওবার উপর আমি টিকে থাকতে পারি না। আপনি আমার জন্য সুবিশাল আসমান হতে সাহায্য পাঠিয়ে দিন।

বহুবারই আমি আরয করেছিলাম যে, ছালাতুত-তওবা, ছালাতুল-হাজত ও ছালাতুত-তাহাজ্জুদ এই তিন নিয়তে বিতিরের পূর্বে দুই রাকাত নামায পড়বেএই নামাযের লাভ কি, সে বিষয়ে আমি প্রামাণ্য কথা পেশ করছি। হাদীস শরীফ, ফাতাওয়া শামী ও হাকীমুল উম্মতের এমদাদুল ফাতাওয়ার বর্ণনা অনুযায়ী এই দু'রাকাত নফলের বরকতে কিয়ামতের দিন আপনাকে তাহাজ্জুদওয়ালাদের সঙ্গে উঠানো হবে। তবে যারা অর্ধ রাতের পর শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়তে পারে তারা তো বহু মোবারকবাদ যোগ্য। তাদের জন্য শেষ রাতে পড়াই বাঞ্ছনীয়। এশার পর উক্ত নফল পড়ার অর্থ এই নয় যে, সস্তা মাল পেয়ে দামী সম্পদ ছেড়ে দাও।

মনে করুন, দুই প্রকার মিষ্টি আছে। একটার কেজি দশ টাকা, আরেকটির কেজি পঞ্চাশ টাকা এবং তা খুবই সুস্বাদু। এমতাবস্থায় যার তওফীক হয়, সে তো দামীটাই নিবে। সহজ পদ্ধতিটা আমি তাদের জন্য পেশ করছি যারা দুর্বল, অসুস্থ অথবা যারা কম-হিম্মত মানুষ। বর্তমান সময়ে অধিকাংশ লোকেরাই স্বাস্থ্যগত কারণে এমন অবস্থায় আছে যে, শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়া মুশকিল। আমি তাদেরকেই বলছি যে, বিতিরের পূর্বে তাহাজ্জুদের নিয়তে দুই রাকাত পড়ে তাহাজ্জুদের নেআমত হাসিল করে নিন। যাতে কিয়ামতের দিন 'অপূর্ণ বান্দা' হয়ে না উঠেন। কেননা, মোহাদ্দেসীন (হাদীস বিশারদগণ) বলেন, যারা কিয়ামুল-লাইল (তাহাজ্জুদ) না পড়ে সব সময় তারা অপূর্ণই থেকে যায়; কামেল হতে পারে না। যেমন বিখ্যাত মোহাদ্দেছ মোল্লা আলী কারী (রহ.) লিখেনঃ

لَيْسَ مِنَ الْكَامِلِيْنَ مَنْ لَّا يَقُوْمُ اللَّيْلَ

অর্থঃ যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদের নামায পড়ে না সে কামেলীনের অন্তর্ভুক্ত হয় না। (মেরকাত, ৩য় খণ্ড, ৩৪৮ পৃষ্ঠা)

আমার আকাঙ্ক্ষা যে, আমাদের কোন দোস্তই যেন নাকেছ (অপূর্ণ) না থাকে। শোয়ার পূর্বে দু' চার রাকাত পড়ে নিবে, যাতে কিয়ামতের দিন কামেলদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

আল্লামা শামী (রহ.) একটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করেছেন:

وَمَا كَانَ بَعْدَ صَلَاةِ الْعِشَاءِ فَهُوَ مِنَ اللَّيْلِ

"এশার পর যত নফল পড়া হয়, তা তাহাজ্জুদ রূপে গণ্য হয়।” অতঃপর তিনি বলেন:

فَإِنَّ سُنَّةَ التَّهَجُّدِ تَحْصُلُ بِالتَّنَفُّلِ بَعْدَ صَلٰوةِ الْعِشَاءِ قَبْلَ النَّوْمِ

(শামী, ১ম খণ্ড, ৫০৬ পৃষ্ঠা)

দেখুন ইহা ফাতাওয়া শামীর এবারত, যেই ফাতাওয়া-শামীর আলোকে সমগ্র দুনিয়ার মুফতী সাহেবগণ ফতোয়া দিয়ে থাকেন। এবারতটির মর্মার্থ হলো, যে ব্যক্তি এশার পরে বিতিরের পূর্বে ঘুমাবার আগে কয়েক রাকাত নফল পড়বে, এতে তার তাহাজ্জুদের সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। বিতিরের পরেও পড়া যায়। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম অধিকাংশই বিতির সবশেষে পড়তেন। এজন্য আমি চাই, আপনারাও সুন্নতের অনুসরণে বিতিরের পূর্বেই নফল পড়বেন। কিন্তু যদি কখনো পরে পড়েন, তাও জায়েয। তবে উত্তম এটাই যে, বিতিরের পূর্বে পড়বেন।

📚 আসমানী আকর্ষণ | পৃষ্ঠা-৭৭

• ────── ✾ ────── •
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | AIF | IA
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

17 Dec, 01:57


কুদৃষ্টির দৃষ্টান্তমূলক পরিণতি
══━━━━✥◈✥━━━━══

❑ শাইখুলহাদীস মাওলানা যাকারিয়া রহ. বলেন, একব্যক্তির ঘটনা। মৃত্যুর কাছাকাছি সময়ে লােকেরা তাকে কালেমার তালকীন দিল। লােকটি বলল, আমার জিহবা তাে কালেমার জন্য নড়ে না। জিজ্ঞেস করা হল, কারণ কী? সে জানাল, এক মহিলা আমার কাছে এসেছিল তােয়ালে খরিদ করার জন্য। আমার ভালো লেগে উঠে। আমি কাম দৃষ্টি দিয়ে তাকে দেখেছিলাম।

❑ ইবনুল জাওযী রহ. লিখেছেন, মিশরের জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আযান দেয়ার উদ্দেশ্যে মিনারে ওঠল। পাশের ছাদে দৃষ্টি পড়তে জনৈক সুন্দরী খৃস্টান নারীর প্রতি তার চোখ পড়ল। ভাবল, নতুন ভাড়াটিয়া মনে হচ্ছে, আযানের পর গিয়ে পরিচিত হব। আযানের পর মুয়াজ্জিন গেল ওই প্রতিবেশীর বাড়িতে। দরজায় কড়া নাড়ার পর মহিলাটির বাবা বের হল। কথাবার্তার একটা পর্যায়ে জানা গেল, এতাে মহিলা নয়; বরং কুমারী মেয়ে। এখনও বিয়ে হয় নি। মুয়াজ্জিন বিয়ের প্রস্তাব দিল। মেয়ের বাবা শর্ত জুড়ে দিল, আমাদের ধর্মগ্রহণ করতে হবে। মুয়াজ্জিনের অন্তরে কামনার এমন ভূত চেপে বসেছিল যে, সে হ্যাঁ বলে দিল। মেয়ের বাবা বলল, ঠিক আছে, চল! ছাদে গিয়ে বিস্তারিত আলােচনা করি। মুয়াজ্জিন সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠতে লাগল। হঠাৎ পা পিছলে সে পড়ে গেল এবং ঘাড়ের রগ ছিড়ে গিয়ে সেখানেই মারা গেল।

আল্লাহকে পেল না,
প্রতিমারও ঘনিষ্ঠ হল না।
এ কূলও পেল না,
ওই কৃলও রইল না।

উৎসঃ কুদৃষ্টি | পৃষ্ঠা-২৪

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

16 Dec, 13:12


আত্মার মন্দ স্বভাবসমূহের সংশােধনের সীমা
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

মানুষের মধ্যে যেসব মন্দ স্বভাব ও প্রবণতা থাকে সেগুলােকে رذائل বলে। এ শিরােনামের অধীনে হযরত থানভী রহ. বলেন, সালেক (তাযকিয়া ও তাসাওউফের পথের পথিক)-এর জন্য উচিত নিজের আভ্যন্তরীণ মন্দ স্বভাবগুলাের এক এক করে নিজ শায়খের মাধ্যমে সংশােধন করিয়ে নেয়া। যখন একটি মন্দ স্বভাব পরিপূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবে এবং সে মন্দ প্রবণতা একেবারে মৃত্যু প্রায় হয়ে যাবে, তখন অন্য আরেকটির চিকিৎসা শুরু করবে। পূর্বে যে মন্দ স্বভাবের চিকিৎসা করিয়েছে সেটা পরিপূর্ণ বিনাশের অপেক্ষা কখনাে করবে না। কারণ এটা অসম্ভব। বরং সে প্রবণতা বিদ্যমান থাকাতেও হাজারাে হেকমত আছে। (আনফাসে ঈসা ১৩৭ পৃ:)

সালেক শব্দের অর্থ হলাে, চলাচলকারী, পথ অতিক্রমকারী । তাসাওউফের পরিভাষায় 'সালেক' বলে যে নিজের সংশােধনের জন্য কোন শায়খের নিকট যায়। অর্থাৎ, যেন সে রাস্তায় চলছে। তাসাওউফকে তরীক’ বা রাস্তা বলে। আর সালেক হলাে সে রাস্তায় চলাচলকারী। আর শায়খ হলেন পথ প্রদর্শকের মতাে, যে পথিককে পথ বাতলে দেয় যে, এভাবে চলাে, এভাবে কাজ করাে। হযরত থানভী রহ. বলেছেন, 'সালেকের উচিত শায়খের মাধ্যমে এক এক করে মন্দ প্রবণতাগুলাের সংশােধন করা। যেমন তার মধ্যে ক্রোধ আছে। যা একটি মন্দ স্বভাব। কাজেই এর সংশােধন করাতে হবে। কারণ ক্রোধের (প্রচণ্ডতার) কারণে সে কখনাে কাউকে প্রহার করে। আবার কখনাে কাউকে ধমক দেয়। ক্রোধের ফলে সে নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কাজেই শায়খের নিকট খুলে বলতে হবে যে, আমার মধ্যে প্রচণ্ড ক্রোধ আছে। এ ধরনের প্রচণ্ড ক্রোধের ফলে অনেক সময় আমার দ্বারা অনেক অন্যায়ও হয়ে যায়। এ কথা শােনার পর শায়খ তার এ রোগের চিকিৎসা করবেন। শায়খ এমন কোন চিকিৎসা করবেন না যে তার মধ্যে আর কখনাে ক্রোধের ভাব হবে না। বরং চিকিৎসার পরও তার ক্রোধ হবে। কারণ ক্রোধ মানুষের সহজাত প্রবণতা। এটা সকল মানুষের মধ্যেই আছে। তবে শায়খের মাধ্যমে চিকিৎসা করানাের ফলে তার ক্রোধ শরীয়তের অনুকূলে এবং তার নিয়ন্ত্রণে এসে যাবে।

এমনিভাবে মানুষের মধ্যে যত মন্দ প্রবণতা আছে, চাই সেটা ক্রোধ হােক, কামভাব হােক, বা কৃপণতা হােক, এ সবই মানুষের সহজাত প্রবণতা। এ সকল স্বভাব আল্লাহপাক মানুষের মধ্যে এজন্য দিয়েছেন যে, মানুষ যেন এগুলাে উপযুক্ত ক্ষেত্রে প্রয়ােগ করে। যদি মানুষের মধ্যে ক্রোধ না থাকে, তাহলে সে আত্মরক্ষা কিভাবে করবে? নিজের স্ত্রী-সন্তান-সন্তুতিকে কিভাবে রক্ষা করবে? তার মধ্যে যদি ক্রোধের সঞ্চার না হয় তাহলে এর ফল এই হবে যে, যদি কেউ তার উপর কিংবা তার পরিবারের উপর আক্রমণ করে, তাহলে সে তার প্রতিপক্ষের অন্যায় পদক্ষেপের প্রতিরােধ করার জন্য নিজের মধ্যে কোন আগ্রহই বােধ করবে না। নিজের ক্ষতি রােধ করার কোন চেষ্টাই সে করবে না।

উৎসঃ ইসলাহী মাজালিস | পৃষ্ঠা-৫১

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

14 Dec, 06:31


হযরত আমর ইবনে জামুহ (রা.) এর ইসলাম গ্রহণের কাহিনী
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

হযরত আমর ইবনে জামুহ প্রথম প্রথম ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে তেমন একটা আগ্রহী ছিলেন না। তার ছেলে মুসলমান হয়েছিল। আমর বললেন, আমি আমার মূর্তি পরিত্যাগ করতে পারব না। ছেলে রাতে এসে মূর্তিগুলোকে তুলে বাইরে রেখে এল। সকালে আমর দেখলেন মূর্তি নেই। ঘর খালি। এদিক সেদিক সন্ধান করতে করতে বাইরে যেয়ে দেখে খোদা আস্তাকুঁড়ে পড়ে রয়েছে। হায় আমার মাবুদ। তোমার সাথে কে এমন আচরণ করল? জানতে পারলে তার গর্দান উড়িয়ে দেব। যাই হোক খোদাকে সেখান থেকে উঠিয়ে ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে আবার ঘরে এনে স্থাপন করল। পরের রাতে ছেলে আবারও তা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করে এল। সকালে দেখে খোদা আবার গায়েব। কয়েকদিন চলল এ অবস্থা। একদিন আমর ইবনে জামুহ বলল, হে আমার খোদা, আমি এখন বৃদ্ধ হয়েছি। ঠিকমত তোমার দেখাশুনা করতে পারি না, তোমার কাছে এ তলোয়ার রেখে দিচ্ছি। তুমি নিজেই আত্মরক্ষা কর। এ বলে সে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। তখন তার বয়স সত্তর বছর। ছেলে রাতে এসে দেখল খোদার পাশে এবার তলোয়ার শোভা পাচ্ছে। তিনি বাইরে বেরিয়ে গেলেন। সারা মদীনা ঘুরে ঘুরে এক জায়গায় দেখতে পেলেন একটি মৃত কুকুর পড়ে আছে। শরীর তার ফুলে ফেটে গেছে। সেটিকে তিনি ঘরে এনে তার পায়ের সাথে মূর্তির পা বেঁধে বাইরে ফেলে দিয়ে এলেন। পিতা সকালে উঠে দেখে খোদা আবার গায়েব। তরবারী যেখানে ছিল সেখানেই পড়ে রয়েছে। মনে মনে বলল, হায় আফসোস। কে আমার খোদার সাথে এ বেয়াদবী করছে, তার সর্বনাশ হোক। এর পরে খুঁজতে খুঁজতে বাইরে এসে দেখে মরা কুকুরের পায়ের সাথে খোদার পা বাঁধা। এবার তার বিবেকে কষাঘাত হল। ভাবল এ যদি খোদাই হবে তাহলে কুকুরের পায়ের সাথে বাধা পড়ে কিভাবে? এরপর ইসলাম সম্পর্কে তার আর কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্বই রইল না। সত্তর বছর বয়সে তিনি মুসলমান হয়ে গেলেন। নবীজীর সাথে এক বছর থাকতে না থাকতেই উহুদ যুদ্ধের দামামা বেজে উঠল। তার এক পা ছিল ল্যাংড়া। কিন্তু তাঁরও জিহাদে যাওয়ার ইচ্ছা হল। বললেন জিহাদে যেয়ে আমি শহীদ হতে চাই। ছেলেরা নিষেধ করল। বলল আমরা যাচ্ছি, আপনি না গেলেও চলবে। কিন্তু তিনি তা মানতে রাজি হলেন না। পরিশেষে মুকাদ্দামা নবীজীর দরবার পর্যন্ত পৌছে গেল। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তো মাজুর, তোমার উপরে জিহাদ ফরয নয়। আমর (রা.) বললেন, আমার আকাংখা যে, আমি এ ল্যাংড়া পা নিয়েই জান্নাতে চলাফেরা করব। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে জিহাদে যাওয়ার এজাজত দিলেন। চিন্তা করুন ভাইয়েরা আমার! সত্তর বছরের কাফের মাত্র এক বছর নবীর বাণীর অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে কোন পর্যায়ে পৌছে গেছেন। তিনি উহুদের ময়দানে শহীদ হলেন। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর লাশের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, আমি দেখতে পাচ্ছি আমর জান্নাতের যমীনে হেটে বেড়াচ্ছে। কিন্তু ল্যাংড়া পায়ে নয় বরং সুস্থ পায়ে।

উৎসঃ ঈমানজাগানিয়া কাহিনী | পৃষ্ঠা-৫১

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

30 Nov, 15:04


স্ত্রীর প্রতি স্বামীর কর্তব্য
━━━━ • ✿ • ━━━━

❑ সামর্থ্য অনুযায়ী স্ত্রীর খোরপোষ তথা ভরণ-পোষণ দিতে অবহেলা না করা এবং স্ত্রীর জন্য পৃথক বাসস্থানের ব্যবস্থা করা। যেমন, পৃথক একটি কামরা দেয়া।

❑ স্ত্রীকে দ্বীনী মাসআলা-মাসায়িল শিখাতে থাকা এবং নেক কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে থাকা।

❑ স্ত্রীর সাথে সুন্দর আচরণ করা, ভাল ব্যবহার করা, ছোট খাট বিষয় নিয়ে অহেতুক রাগ না করা।

❑ মাহরাম আত্মীয়-স্বজনের সাথে মাঝে মধ্যে দেখা সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া।

❑ খামাখা স্ত্রীর প্রতি কু-ধারণা পোষণ না করা এবং তার ব্যাপারে একেবারে উদাসীনও না থাকা।

❑ খরচের ব্যাপারে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা। কৃপণতা না করা আবার বেহুদা খরচেরও অনুমতি না দেয়া।

❑ প্রয়োজন অনুপাতে তার মানবিক চাহিদা পূরণ করে তার দিল-দেমাগ ও দৃষ্টিকে গুনাহ থেকে হেফাজতের ব্যবস্থা করা এবং তা সাধারণভাবে সপ্তাহে একবার হওয়া ভাল। আর প্রতি চার মাসে একবার হওয়া জরুরী।

✾✾ দাম্পত্য জীবনে কামিয়াবী ও পরিপূর্ণ সুখ-শান্তি হাসিলের জন্য কুরআন-হাদীসের আলোকে বর্ণিত পদ্ধতি জানা আবশ্যক। সেসব পদ্ধতি হচ্ছেঃ-

◈ দু‘আ পড়ে প্রথমে ভূমিকা সমূহ অবলম্বন করবে।

◈ ধীর স্থিরতা একান্ত জরুরী

◈ স্বামীর অবস্থান উপরে হবে (সুরা আ‘রাফ-১৮৯)

◈ স্বামীর ভর নিজের হাতের উপরে হবে, সিনা মিলাবে না। (বুখারী শরীফ হাদীস নং-৫১৮৯)

◈ স্ত্রী পা উঠিয়ে ভাজ করে পায়ের পাতাদ্বয় নিতম্বদ্বয় এর নিকটবর্তী রাখবে। (বুখারী শরীফ-হাদীস নং ২৯১) এ ব্যাপারে অবশিষ্ট মাসায়িল ‘নবীজীর সুন্নাত’ নামক কিতাবে দেখুন।

❑ অন্তরঙ্গ মূহুর্তে তার সাথে যেসব কথাবার্তা হয় তা অন্য কারো নিকট কোন অবস্থাতেই প্রকাশ না করা।

❑ নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী তাকে কিছু হাত খরচ দেয়া এবং তাকে সেই টাকা তার ইচ্ছানুযায়ী যে কোন বৈধ খাতে খরচের অনুমতি দেয়া।

❑ প্রচলিত বিভিন্ন কুপ্রথা ও অনুষ্ঠান- যেখানে বেপর্দা বা অন্য কোন গুনাহ হয়ে থাকে-সেখানে যেতে বাধা দেয়া।

❑ তার অসাবধানতা বা বুদ্ধিমত্তার অভাবে কোন ভুল-ত্রুটি হয়ে গেলে তাতে ধৈর্য ধারণ করা। কখনো শাসন বা সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দিলে ভারসাম্য বজায় রাখা।

উৎসঃ ইসলামী বিবাহ | ইসলামী জিন্দেগী

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

27 Nov, 00:44


নবী-রাসূলগণ এবং ওলী-বুযুর্গের জীবনী পড়ার গুরুত্ব
─━━━━⊱✿⊰━━━━━─

হযরত মুআয ইবনে-জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে রেওয়ায়াত আছে, “নবী-রাসূলগণের স্মরণ ও আলোচনা আল্লাহর এবাদতের অন্তর্ভুক্ত। সালেহীনের তথা আল্লাহর ওলীদের স্মরণ ও আলোচনা গুনাহের কাফফারা। মৃত্যুর স্মরণে সাদকার ছাওয়াব মিলে এবং কবরের স্মরণ তোমাদেরকে বেহেশতের নিকটবর্তী করে দেয়।"

উৎসঃ সীরাতুল আউলিয়া | পৃষ্ঠা-১৯

• ────── ✾ ────── •
HAKiM ACADEMY | iARTICLE | iMASAYEL | iLIBRARY | iACADEMY

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

25 Nov, 14:57


বাংলাদেশে প্রচলিত জমি বন্ধক পদ্ধতির শরয়ী জায়েজ পদ্ধতি আছে কী?

প্রশ্ন

প্রিয় মুফতি
আচ্ছালামু আলাইকুম।

আমাদের দেশে একটি প্রচলন আছে, আবাদি জমি বন্ধক রেখে টাকা নেওয়া। যেমন : আপনার ৫০ শতক জমি ১ লক্ষ্য টাকার বিনিময়ে আমার নিকট বন্দক রাখলেন, সেই জমি  টাকা ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত আমার জন্য ভুগ করা যায়েজ হবে কিনা?

উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন।
আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন এবং এলেম নাফেয়া দান করুন.

প্রশ্নকর্তা-আব্দুল্লাহ আলমামুন।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

উক্ত চুক্তিটি জায়েজ হবার দু’টি সূরত রয়েছে। এ দু’টি সূরত অনুসরণ করলে এ চুক্তি জায়েজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

❑ ১ম সূরত

যিনি জমীন নিবেন তিনি এ হিসেবে চুক্তি করবেন যে, তিনি জমিটি ভাড়া নিচ্ছেন। নামমাত্র কিছু মূল্য মাসিক ভাড়া হিসেবে নির্দিষ্ট  করে নিবে। যেমন ৫০ টাকা বা ১০০ টাকা। আর অগ্রিম ভাড়া হিসেবে প্রদান করবে ১/২ লাখ টাকা।

তারপর যেদিন জমিনটি ফেরত নিতে চাইবে, সেদিন আগের নির্ধারণকৃত নামমাত্র ভাড়ার টাকা রেখে বাকি টাকা ফেরত দিয়ে দেবে জমিনটি ভোগদখলকারী তথা জমির ভাড়াটিয়াকে।

যেমন-

আব্দুল্লাহ এর জমি আছে। কিন্তু টাকা নেই। তার টাকা প্রয়োজন। আর আব্দুর রহমানের টাকা আছে। কিন্তু জমি নেই। তার জমি প্রয়োজন। আব্দুল্লাহ তার জমিটি আব্দুর রহমানের কাছে দিয়ে ৫ লাখ টাকা নিতে চাচ্ছে। আর আব্দুর রহমান টাকা প্রদান করে জমিটির ফসল নিতে চাচ্ছে।

এমতাবস্থায় আব্দুল্লাহ তার জমিটি আব্দুর রহমানের কাছে ভাড়া দিবে। মাসিক ভাড়া নির্দিষ্ট করে নিল কথার কথা ৫০ টাকা। যতদিন আব্দুর রহমান জমিটি রাখবে ততদিন মাসিক ৫০ টাকা করে ভাড়া প্রদান করবে। মাসিক ভাড়া অগ্রিম হিসেবে আব্দুর রহমান ৫ লাখ আব্দুল্লাহকে দিয়ে দিবে। ফলে জমিটির ভাড়াটিয়া হিসেবে আব্দুর রহমান ভোগদখল করতে থাকবে। আর আব্দুল্লাহ টাকাটি খরচ করতে পারবে।

তারপর যেদিন আব্দুল্লাহ তার জমিটি ফেরত নিতে চাইবে, সেদিন বিগত দিনের মাসিক ভাড়া বাদ দিয়ে বাকি টাকা প্রদান করে জমিটি ফেরত নিয়ে নেবে। কথার কথা যদি ৫ মাস পর ফেরত নিতে চায়, তাহলে ৫ মাসের ভাড়া ২৫০ টাকা রেখে বাকি এক লাখ নিরান্নব্বই হাজার সাতশত পঞ্চাশ টাকা প্রদান করে আব্দুল্লাহ সাহেব তার জমিটি ফেরত নিয়ে নিবেন। {জাদীদ ফিক্বহী মাসায়েল-১/১৪৭-১৪৮, মালে হারাম আওর উসকে মাসারেফ ওয়া আহকাম-৮৫}

وَأَمَّا زَكَاةُ الْأُجْرَةِ الْمُعَجَّلَةِ عَنْ سِنِينَ فِي الْإِجَارَةِ الطَّوِيلَةِ الَّتِي يَفْعَلُهَا بَعْضُ النَّاسِ عُقُودًا وَيَشْتَرِطُونَ الْخِيَارَ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فِي رَأْسِ كُلِّ شَهْرٍ فَتَجِبُ عَلَى الْآجِرِ لِأَنَّهُ مَلَكَهَا بِالْقَبْضِ وَعِنْدَ الِانْفِسَاخِ لَا يَجِبُ عَلَيْهِ رَدُّ عَيْنِ الْمَقْبُوضِ بَلْ قَدْرُهُ فَكَانَ كَدَيْنٍ لَحِقَهُ بَعْدَ الْحَوْلِ (فتح القدير- كتاب الزكاة، 2/174)

❑ ২য় সূরত

দু’টি চুক্তি সম্পাদন করবে। প্রথমে ক্রয় বিক্রয় চুক্তি। তারপর আলাদা আরেকটি চুক্তি নামায় যেদিন টাকা পরিশোধ করতে পারবে সেদিন জমিটি প্রথম জমির মালিক ক্রয় নিয়ে নিয়ে যাবে আর বর্তমান মালিক তা বিক্রি করে দিবে মর্মে চুক্তি সম্পাদিত করবে।

যেমন-

আব্দুল্লাহ এর জমি আছে। কিন্তু টাকা নেই। তার টাকা প্রয়োজন। আর আব্দুর রহমানের টাকা আছে। কিন্তু জমি নেই। তার জমি প্রয়োজন। আব্দুল্লাহ তার জমিটি আব্দুর রহমানের কাছে দিয়ে ৫ লাখ টাকা নিতে চাচ্ছে। আর আব্দুর রহমান টাকা প্রদান করে জমিটির ফসল নিতে চাচ্ছে।

এমতাবস্থায় আব্দুল্লাহ তার জমিটি ৫ লাখ টাকায় আব্দুর রহমানের কাছে বিক্রি করে টাকা গ্রহণ করে নিবে। এভাবে আব্দুল্লাহ টাকার মালিক ও আব্দুর রহমান জমিটির ভোগ দখলের মালিক হয়ে যাবে।

তারপর ভিন্ন আরেকটি চুক্তি সম্পাদন করবে। যাতে লিখবে যে, যেদিন আব্দুল্লাহ ৫ লাখ টাকা দিতে পারবে, সেদিন আব্দুর রহমান জমিটি আব্দুল্লাহের কাছে ৫ লাখ টাকা দিয়ে বিক্রি করে দিবে।

এভাবে ভিন্ন দু’টি চুক্তি সম্পাদিত করলে টাকা খরচ করা এবং জমিটি ভোগ দখলের মাঝে অবৈধতার কোন কিছুই বাকি থাকবে না।

لو ذكرا البيع بلا شرط ثم ذكرا الشرط على وجه العقد جاز البيع ولزم الوفاء بالوعد، إذ المواعيد قد تكون لازمة فيجعل لازما لحاجة الناس تبايعا بلا ذكر شرط الوفاء ثم شرطاه يكون بيع الوفاء؛ (رد المحتار، كتاب البيوع، مطلب فى البيع بشرط فاسد-7/281، 547، البحر الرائق، كتاب البيوع، باب خيار الشرط-6/8)

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উৎসঃ আহলে হক মিডিয়া

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

10 Nov, 02:17


শহীদের মর্যাদা ও ফজীলত
━━━━━ • ✿ • ━━━━━

যদি দ্বীনের উপর অবিচল থাকার কারণে আল্লাহ পাকের কোনো বান্দা-বান্দীকে হত্যা করা হয়, অথবা দ্বীনের পথে জিহাদ ও মেহনত করতে গিয়ে কারো মৃত্যু হয়, তবে শরীয়তের পরিভাষায় তাকে শহীদ বলে। আল্লাহ পাকের দরবারে শহীদের অনেক অনেক মর্যাদা। কোরআন শরীফে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,

وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ

যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছে, তাদেরকে অন্য মৃতদের মতো মনে করো না। বরং তারা বিশেষ হায়াত প্রাপ্ত এবং তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে বিভিন্ন রিযিক ও নেয়ামত প্রাপ্ত হচ্ছে। সূরা আলে ইমরান ৩/১৬৯

এক হাদীসে এসেছে, নবীজী এরশাদ করেন,

مَا أَحَدٌ يَدْخُلُ الجَنَّةَ يُحِبُّ أَنْ يَرْجِعَ إِلَى الدُّنْيَا، وَلَهُ مَا عَلَى الأَرْضِ مِنْ شَيْءٍ إِلَّا الشَّهِيدُ، يَتَمَنَّى أَنْ يَرْجِعَ إِلَى الدُّنْيَا، فَيُقْتَلَ عَشْرَ مَرَّاتٍ لِمَا يَرَى مِنَ الكَرَامَةِ

কোনো জান্নাতী এটা চাবে না যে, তাকে আবার দুনিয়াতে পাঠানো হোক, যদিও তাকে সারা পৃথিবীর মালিক বানিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু একজন শহীদ তাঁর জান্নাতী মর্যাদা প্রত্যক্ষ করে কামনা করতে থাকবে, তাকে অন্তত দশবার দুনিয়াতে পাঠানো হোক, যেন প্রতিবার সে শহীদ হয়ে আসতে পারে। বুখারী, হাদীস নং ২৮১৭

স্বয়ং নবীজী শহীদী মৃত্যুর তামান্না করে ইরশাদ করেন,

وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ... لَوَدِدْتُ أَنِّي أُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، ثُمَّ أُحْيَا ثُمَّ أُقْتَلُ، ثُمَّ أُحْيَا ثُمَّ أُقْتَلُ، ثُمَّ أُحْيَا ثُمَّ أُقْتَلُ

ঐ সত্ত্বার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! আমার বড় ইচ্ছে হয়, আমি আল্লাহর রাস্তায় নিহত হবো। আমাকে জীবিত করা হবে, আবার আমি নিহত হবো। পুনরায় আমাকে জিন্দা করা হবে এবং আমি আবার আল্লাহর রাস্তায় জীবন বিলিয়ে দিবো। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭২২৬

এক হাদীসে হসেছে,

لِلشَّهِيدِ عِنْدَ اللَّهِ سِتُّ خِصَالٍ: يُغْفَرُ لَهُ فِي أَوَّلِ دَفْعَةٍ، وَيَرَى مَقْعَدَهُ مِنَ الجَنَّةِ، وَيُجَارُ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ، وَيَأْمَنُ مِنَ الفَزَعِ الأَكْبَرِ، وَيُوضَعُ عَلَى رَأْسِهِ تَاجُ الوَقَارِ، اليَاقُوتَةُ مِنْهَا خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا، وَيُزَوَّجُ اثْنَتَيْنِ وَسَبْعِينَ زَوْجَةً مِنَ الحُورِ العِينِ، وَيُشَفَّعُ فِي سَبْعِينَ مِنْ أَقَارِبِهِ

শহীদ আল্লাহ পাকের পক্ষ হতে বড়বড় ছয়টি পুরস্কার পাবে।

এক. তাকে তৎক্ষণাৎ ক্ষমা করে দেয়া হবে এবং তাকে তার জান্নাতী নিবাস দেখনো হবে।

দুই. কবরের আযাব মাফ করে দেয়া হবে ।

তিন. হাশরের ময়দানে যখন ব্যতিক্রম ছাড়া সবাই সন্ত্রস্ত ও পেরেশান থাকবে, তখন আল্লাহ পাক তাকে সেই পেরেশানি ও বিভীষিকা থেকে মুক্ত রাখবেন।

চার. সেদিন তার মাথায় এমন একটি সম্মাননা মুকুট পরানো হবে, যার একেকটি হীরা ও মুক্তা দুনিয়া ও তার সব কিছু থেকে দামী হবে।

পাঁচ. স্ত্রী হিসাবে তাকে বাহাত্তরজন হুর দান করা হবে।

ছয়. তার নিকটজনদের মধ্যে হতে সত্তরজনের ব্যাপারে তার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং ১৬৬৩

অন্য এক হাদীসে এসেছে,

يُغْفَرُ لِلشَّهِيدِ كُلُّ ذَنْبٍ إِلَّا الدَّيْنَ

প্রদেয় ঋণ ব্যতীত শহীদ ব্যক্তির সমস্ত গুনাহ আল্লাহ তাআলা মাফ করে দেবেন। সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮৮৬

শহীদের মতো আল্লাহ পাকের রাস্তায় কেউ যদি কষ্টের সম্মুখীন হয়, কারো শ্লীলতা হানি হয়, ধন-সম্পদ লুণ্ঠিত হয়, তবে আল্লাহ তাআলার দরবারে এমন ব্যক্তিও অনেক বড় বড় সম্মান প্রাপ্ত হয়, যা দেখে ওলী-বুযুর্গরাও ঈর্ষা করে। দুনিয়াতে এ নিয়ম আছে যে, সরকারের অনুগত সৈনিকেরা যদি বীরত্ব প্রদর্শন করে এবং রাষ্ট্রের স্বার্থরক্ষায় হতাহত হয়, তবে তাদেরকে রাষ্ট্রের পক্ষ হতে বড় বড় পুরস্কার ও খেতাব দেওয়া হয়। তেমনি যারা আল্লাহর দ্বীনের কাজ করার অপরাধে প্রহৃত হয়, লাঞ্ছিত হয়, এবং নানা ধরনের ক্ষতি ও বঞ্চনার শিকার হয়, আল্লাহ পাক কেয়ামতের দিন তাদেরকে জনসমক্ষে এমন এমন সম্মান আর মর্যাদা দান করবেন যে, অন্যরা তা দেখে আক্ষেপ করবে, হায়! দুনিয়াতে যদি আল্লাহর রাস্তায় আমাদের সঙ্গেও জুলুম করা হতো, লাঞ্ছনা আর গঞ্জনার আচরণ করা হতো, তাহলে এই পুরস্কার ও সম্মান লাভ করে আমরাও আজ ধন্য হতাম!

আয় আল্লাহ! এমন সুযোগ যদি আমাদের জীবনে আসে, তবে আমাদেরকে তুমি দৃঢ়পদ রেখো, সাহায্যে কোরো।

উৎসঃ মারকাযুল কুরআন | ইসলাম ও মুসলমানের পরিচয়

━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━
HAKEEM ACADEMY | iLIBRARY
ISLAMIC ARTICLE | iMASAYEL

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

09 Nov, 02:15


কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত
-মুফতী মনসূরুল হক (দা. বা.)
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

১. নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম পথ চলার সময় রাস্তা হতে লোকদের ধাক্কানো বা সরানো হত না। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং- ১৪২৩৬)

২. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট কেউ কিছু চাইলে তিনি কখনও না বলতেন না। (অর্থাৎ প্রার্থিত জিনিস থাকলে তা দিয়ে দিতেন, আর না থাকলে অপারগতা প্রকাশ করতেন।) (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং- ১৪২৯৪)

৩. প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কারো মুখ হতে স্বীয় চেহারা মুবারক ফিরিয়ে নিতেন না যতক্ষণ না সে তার চেহারা ফিরিয়ে নিত। কোন ব্যক্তি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কানে কানে কোন কথা বলতে চাইলে তিনি তার দিকে স্বীয় কান মুবারক বাড়িয়ে দিতেন এবং যতক্ষণ তার কথা শেষ না হতো, ততক্ষণ স্বীয় কর্ণ মুবারক সরিয়ে নিতেন না। (ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ৩৭১৬/ আবু দাউদ, হাদীস নং- ৪৭৯৪)

৪. নবীজী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাক্ষাতকালে নিজেই আগে সালাম করতেন, তারপর দু’হাতে মুসাফাহা করতেন। অনেক দিন পর কারো সাথে সাক্ষাত হলে তার সাথে মু‘আনাকাও করতেন। (আবু দাউদ, হাদীস নং- ৫২১৪/ বুখারী শরীফ হাদীস নং- ৬২৬৫-৬২৬৬)

বি.দ্র. সালাম দেয়ার সময় হাত তোলা বিধর্মীদের নীতি। সুতরাং হাত তুলবে না। তবে আওয়াজ না পৌঁছার আশংকা থাকলে হাত তুলতে পারে। কিন্তু স্যালুটের মত করে হাত তুলবে না। আর মুসাফাহার সময় প্রত্যেকের এক হাত অপর ব্যক্তির দু‘হাতের মাঝখানে থাকবে। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৬২৬৫)

অমুসলিমদের হ্যান্ডসেকের মত করে হাত ধরবে না। মু‘আনাকার সময় উভয় ব্যক্তি নিজের ডান গর্দান একবার মিলাবে। সাধারণত লোকেরা উভয় দিকে তিনবার সিনা মিলিয়ে থাকে এবং ঈদের দিন মু‘আনাকার ধুম পড়ে যায়। এর কোন ভিত্তি নেই।

৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাউকে বিদায় দেয়ার সময় মুসাফাহা করতেন এবং এই দু‘আ পড়তেনঃ

اَسْتَوْدِ عُ اللهَ دِيْنَكُمْ وَاَمَانَتَكُمْ وَخَوَاتِيْمَ اَعْمَالِكُمْ.

(আবু দাউদ, হাদীস নং- ২৬০১)

এবং যাকে বিদায় দিতেন তিনি এ দু‘আটি পড়তেনঃ

اَسْتَوْدِعُكُمُ اللهَ الَّذِيْ لَا تَضِيْعُ وَدَائِعُهٗ.

(ইবনে মাজাহ হাদীস নং- ২৮২৫)

৬. রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন পছন্দনীয় জিনিস হাসিল করলে এই দু‘আ পড়তেনঃ

اَ لْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ بِنِعْمَتِهٖ تَتِمُّ الصَّالِحَاتُ.

(ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ৩৮০৩)

৭. পক্ষান্তরে মনের ইচ্ছার ব্যতিক্রম কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে এই দু‘আ পড়তেন:

اَ لْحَمْدُ لِلّٰهِ عَلٰی كُلِّ حَالٍ.

(ইবনে মাজাহ, হাদীস নং- ৩৮০৩)

৮. রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে এই দু‘আ পড়তেনঃ

يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ  بِرَحْمَتِكَ اَسْتَغِيْثُ.
(তিরমিযী, হাদীস নং- ৩৫২৪)

৯. হুযুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কারো দিকে তাকাতেন, তখন সম্পূর্ণ চেহারা ঘুরিয়ে তাকাতেন। অহংকারীদের ন্যায় আড় চোখে তাকাতেন না। (শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ১)

১০. হুযুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বদা দৃষ্টি নীচু করে থাকতেন। অধিক লাজুক হওয়ার কারণে তিনি কারো প্রতি দৃষ্টি ভরে তাকাতে পারতেন না। (শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ২)

১১. হুযুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম পথ চলার সময় কিছুটা সম্মুখ পানে ঝুঁকে চলতেন। দেখলে মনে হতো যেন তিনি উপর হতে নীচের দিকে অবতরণ করছেন। (শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ১)

১২. প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবার সাথে মিলেমিশে থাকতেন, স্বতন্ত্র মর্যাদা বজায় রেখে চলতেন না। মাঝে মাঝে তিনি হাসি-কৌতুকও করতেন। তবে সে কৌতুকও হতো বাস্তবসম্মত। কাউকে কটাক্ষ করে বা অবাস্তব কথা বলে তিনি কোন কৌতুক করতেন না।(শামায়িলে তিরমিযী,পৃ. ১৫)

বি.দ্র. হাসি কৌতুক-এর অনেক হিকমতের মধ্যে একটা হিকমত ছিল যে, এর কারণে লোকেরা নির্ভয়ে তাঁর নিকট যে কোন দীনী প্রশ্ন করার সুযোগ পেত।

১৩. কোন দুঃস্থ বা বৃদ্ধা মহিলা হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে কথা বলতে চাইলে, রাস্তার একপার্শ্বে গিয়ে তিনি তাদের কথা শুনতেন। (শামায়িলে তিরমিযী, পৃ. ২২)

১৪. রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় পরিবারের লোকদের ব্যাপারেও খুব লক্ষ্য রাখতেন। যাতে তাঁর দ্বারা তাদের কোনরূপ কষ্ট না হয়। এজন্য রাতে ঘর হতে বের হওয়ার প্রয়োজন হলে অত্যন্ত ধীরস্থিরভাবে উঠে জুতা পরিধান করতেন এবং নিঃশব্দে দরজা খুলে বের হতেন। অনুরূপভাবে ঘরে প্রবেশ করার সময়ও নিঃশব্দে প্রবেশ করতেন, যাতে ঘুমন্ত ব্যক্তিদের ঘুমের কোন প্রকার ব্যাঘাত না ঘটে।(মুসলিম, হাদীস নং- ১০৩)

১৫. কোন সন্তানের বয়স সাত বছর হলে তাকে নামায এবং শরীয়তের অন্যান্য বিধি-বিধান পালনে অভ্যস্ত করানোর নির্দেশ দিতেন। (তিরমিযী, হাদীস নং- ৪০৭)

❏❏ অসম্পূর্ণ | পর্ব-০২

উৎসঃ ইসলামী যিন্দেগী

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

04 Nov, 02:22


অন্তরের ১০টি রোগের বর্ণনা
━━━━━ • পর্ব-০১ • ━━━━━

অন্তরের ১০টি রোগের চিকিৎসা করে অন্তরের ১০টি গুণ হাসিল করার নাম তাযকিয়া বা আত্মশুদ্ধিযা শরী‘আতের দৃষ্টিতে ফরযে আইন এবং এর জন্যে কোন ইজাযত প্রাপ্ত শাইখের সাথে ইসলাহী সম্পর্ক করাও ফরযে আইন। বাইআত হওয়া ফরয বা ওয়াজিব নয় বরং এটা মুস্তাহাব, এর উপর আত্মশুদ্ধি নির্ভর করে না। আত্মশুদ্ধি অর্জন হলে সমস্ত জাহেরী গুনাহ বর্জন করা এবং জাহেরী ইবাদত-বন্দেগী করা সহজ হয়ে যায় এবং সেই বন্দেগীকে তাকওয়ার যিন্দেগী বা সুন্নতী যিন্দেগী বলে এবং সে ব্যক্তি তথন আল্লাহর ওলী হয় এবং তার হায়াতে তাইয়িবা তথা পবিত্র জীবন নসীব হয়। আল্লাহ তা‘আলা সকলকে এ দৌলত নসীব করেন, আমীন।

অন্তরের ১০টি রোগের বর্ণনা
═════════════════

১. বেশী খাওয়া এবং ভাল খানার প্রতি লোভী হওয়া
বেশি খাওয়া এবং উদর পূর্তি করে খাওয়া অসংখ্য গুনাহের মূল। এজন্য হাদীসে পাকে ক্ষুধার্ত থাকার অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। রাসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ “মানুষের জন্য পূর্ণ করার ক্ষেত্রে পেটের থেকে খারাপ কোন পাত্র নেই।” (বুখারী হা: নং ৪৩৪৩)

খানা কম খাওয়ার উপকারসমূহ
১. অন্তরে স্বচ্ছতা সৃষ্টি হয়।
২. দিল নরম হয় এবং মুনাজাতে স্বাদ অনুভূত হয়।
৩. অবাধ্য নফস অপদস্থ ও পরাজিত হয়।
৪. নফসকে শাস্তি দেওয়া হয়।
৫. কুপ্রবৃত্তি দুর্বল হয়ে যায়।
৬. বেশী নিদ্রা আসে না এবং ইবাদত কষ্টকর হয় না।
৭. দুনিয়াবী চিন্তাভাবনা কমে আসে এবং জীবিকা নির্বাহের বোঝা হাল্কা হয়ে যায়।

✓ উল্লেখ্য বর্তমান যামানার লোকেরা পূর্বের তুলনায় অনেক কমজোর হওয়ায় তাদের খানার মুজাহাদার ব্যাপারে হাকীমুল উম্মত হযরত থানভী রহ. লিখেছেনঃ এ যমানায় খানার মুজাহাদার অর্থ হলো পেট পূর্ণ হতে ২/৪ লুকমা বাকী থাকা অবস্থায় খানা শেষ করা এবং নফস বা শরীর দিয়ে খুব কাজ নেয়া।

২. অধিক কথা বলা
যবান হল অন্তরের দূত, অন্তরের যাবতীয় নকশা ও কল্পনাকে যবানই প্রকাশ করে। এজন্য যবানের ক্রিয়া বড় মারাত্মক হয়।
এজন্যই আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকটা কথাই সংরক্ষণ করা হয়। (সূরা কাফ-১৮)

হাদীসে পাকে ইরশাদ হয়েছেঃ যে ব্যক্তি নিজের লজ্জাস্থান এবং জিহবাহর ব্যাপারে আমাকে নিশ্চয়তা দিতে পারবে আমি তার জন্য জান্নাতের নিশ্চয়তা দিব। (বুখারী হা: নং ৬৪৭৪)

কথা বেশী বলার ক্ষতিসমূহ
১. মিথ্যা বলায় অভ্যস্ত হয়ে পড়া।
২. গীবতে জড়িয়ে পড়া।
৩. অনর্থক ঝগড়া করা।
৪. অতিরিক্ত হাসাহাসি করা, যাদ্দরুন দিল মরে যায়।
৫. অন্যের অযাচিত প্রশংসা করা।

চুপ থাকার উপকারিতা
১. মেহনতবিহীন ইবাদত।
২. সাম্রাজ্যবিহীন দাপট।
৩. দেওয়ালবিহীন দূর্গ।
৪. অস্ত্রবিহীন বিজয়।
৫. কিরামান কাতবীনের শান্তি।
৬. আল্লাহভীরুদের অভ্যাস।
৭. হেকমতের গুপ্তধন।
৮. মূর্খদের উত্তর।
৯. দোষসমূহ আবৃতকারী।
১০. গুনাহসমূহ আচ্ছাদনকারী।

৩. অহেতুক গোস্বা করা
এটা অত্যন্ত খারাপ একটি আত্মিক ব্যাধি। রাগ দোযখের আগুনের একটি টুকরা এজন্য রাগান্বিত ব্যক্তির চেহারা লাল হয়ে যায়। এর কারণে মারামারি, ঝগড়াঝাটি, গালাগালী, এমনকি খুনাখুনী পর্যন্ত সংঘটিত হয়।
এমনকি অনেকে বৃদ্ধ বয়সে এসে তুচ্ছ ঘটনায় বিবিকে তিন তালাক দিয়ে পস্তাতে থাকে।

মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন: ঐ ব্যক্তি বাহাদুর নয় যে যুদ্ধের ময়দানে দুশমনকে নীচে ফেলে দেয় বরং ঐ ব্যক্তি বাহাদুর যে রাগের মুহূর্তে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম। (বুখারী হাদীস নং ৬১১৪)

গোস্বার চিকিৎসা
দুইভাবে গোস্বার চিকিৎসা করা হয়। ১. ইলমী বা জ্ঞানগত পদ্ধতিতে ২. আমলী বা কার্যগত পদ্ধতিতে।

ইলমী চিকিৎসা হলঃ গোস্বার সময় চিন্তা করতে হবে গোস্বা কেন আসে? গোস্বা আসার কারণ তো এটাই যে, যে কাজটি আল্লাহর ইচ্ছায় হয়েছে সে কাজটি আমার মনের মোতাবেক কেন হয়নি? কেন এটা আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী হল? তার মানে আমি আল্লাহর ইচ্ছাকে আমার ইচ্ছার অনুগত বানাতে চাই? নাউযুবিল্লাহ! এভাবে চিন্তা করলে গোস্বার বদ অভ্যাস দূর হয়ে যাবে।

আর আমলী চিকিৎসা হলঃ
গোস্বা আসলে ১ (أعُوْذ ُبِاللهِ مِنَ الشيْطَانِ الرَّجِيْمِ) পড়বে, ২. নিজ অবস্থা পরিবর্তন করবে। অর্থাৎ, দাঁড়ানো থাকলে বসে পড়বে, বসে থাকলে শুয়ে পড়বে। ৩. যার প্রতি গোস্বার উদ্রেক হয় তার সামনে থেকে সরে পড়বে। ৪. তারপরও গোস্বা ঠান্ডা না হলে উযু করবে, নিজ গালকে মাটিতে লাগিয়ে দিবে। এভাবে আমল করলে গোস্বা দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

(অসম্পূর্ণ)

✪ পর্ব-০২

উৎসঃ ইসলামি যিন্দেগী | প্রবন্ধ

──────⊱◈◈◈⊰──────
HAKEEM ACADEMY | ISLAMIC ARTICLE

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

30 Oct, 06:12


জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ এবং যে কোন হুরকে বিয়ে করার আমল
(প্রতি ফরয নামাযের পর সূরা এখলাস ১০ বার)
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিনটি কাজ এমন রয়েছে, যে ব্যক্তি এগুলো সম্পাদন করে, সে জান্নাতের দরজা গুলোর যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে এবং জান্নাতের যে কোন হূরের সাথে ইচ্ছা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

❑ যে ব্যক্তি তার হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেয়
❑ নিজের গোপনীয় ঋণ পরিশোধ করে এবং
প্রত্যেক ফরয নামাযের পরে দশ বার সূরা ইখলাস পড়ে।

তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! এই তিনটি কাজের যে কোন একটি যদি কেউ করে? উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, একটি করলেও একই রকম সম্মান সে লাভ করবে। (দুররে মানসুর ৮/৬৭৩, ইবনে কাসীর)

• ────── ✾ ────── •

যে কোন সময় সূরা এখলাস ১০ বার পড়লে জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মিত হয়

হযরত মুআয ইবনে আনাস আল জুহানী (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, কেউ যদি ১০ বার সূরা এখলাস পাঠ করে তবে আল্লাহ তা'য়ালা তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন । হযরত ওমর (রাঃ) আরজ করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তবে তো আমি অনেক বেশি পরিমাণে পড়ব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালাও অনেক বেশী ও উত্তম সওয়াব দানকারী।

(মুসনাদে আহমদ/ ইবনে কাসীর)

উৎসঃ প্রতিদিনের নেক আমল | পৃষ্ঠা-৭৩

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

28 Oct, 02:24


খুশু বা একাগ্রতার হাকীকত
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

হযরত থানবী (রহঃ) ইরশাদ করেন, নামাযে খুশু ও একাগ্রতার হাকীকত হলাে, মনের স্থিরতা। অর্থাৎ, চিন্তা-ফিকিরের আন্দোলিত হওয়ার বিষয়টি থেমে যাওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়া। আর এমনটি অর্জন করা মন ও মানসিকতা অনুসারে বিভিন্ন রকমে হয়ে থাকে। কারাে যদি মনের স্থিরতা এমনভাবে অর্জিত হয় যে, সে মনে মনে ধ্যান করলাে, পবিত্র বাইতুল্লাহ আমার সামনে আছে, তবে তার জন্য এটাই উত্তম। আবার কারাে জন্য যদি এমনটি সহজ হয় যে, সে যে শব্দগুলাে মুখে উচ্চারণ করছে, তার প্রতি ধ্যান করবে, তবে সেক্ষেত্রে তার জন্য এমনটি করাই মুনাসিব বা উচিত। আর যার পক্ষে আল্লাহ পাকের পবিত্র সত্তার দিকে মনােনিবেশ করা সহজ হয় তবে তার ক্ষেত্রে এটাই সবচাইতে ভাল ও উত্তম।

হযরত থানবী (রহঃ) বলেন যে, একটি যরুরী কথা যা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে অর্জিত হয়েছে। তাহলাে, খুশু বা একাগ্রচিত্ততার ক্ষেত্রে খুব বেশী বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়। এক্ষেত্রে বেশী বাড়াবাড়ি করা হলে দু-এক রােকন আদায় করার পর মন-মানসিকতার মাঝে ক্লান্তি এসে যায় এবং তখন ধ্যান ও খেয়াল বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

কখনাে ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি মনের মাঝে অন্যান্য ধ্যান-খেয়াল আসা-যাওয়া করতে থাকে, তবে তা খুশু বা একাগ্রচিত্ততার পরিপন্থী নয়। তবে সেজন্য শর্ত হচ্ছে ঐসব ধ্যান ও খেয়ালের প্রতি লক্ষ্য ও মনােনিবেশ করা যাবে না। একটি বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি এভাবে বুঝা যায়, যেমন কেউ যদি কোন একটা বিন্দুকে দেখতে চায়, তবে স্বাভাবিকভাবে তার আশপাশের প্রতিও নযর পড়ে। কিন্তু যেহেতু অন্তরের মনােনিবেশ সেদিকে থাকে না, তাই সেটা হিসাবেও আসে না। বরং সেক্ষেত্রে একথাই বলা হয় যে, সে ঐ বিন্দুটিকেই দেখছে। অনুরূপভাবে অন্তরের মনােনিবেশ যখন বিশেষভাবে কোন বস্তুর প্রতি নিবদ্ধ থাকে, তখন স্বাভাবিক নিয়মেই তার আশেপাশের কিছু জিনিসও তার সামনে থাকবে। কিন্তু ওসব জিনিস শুধু সামনে থাকাটা ঐ মনােনিবেশের ক্ষেত্রে বাধা বা অন্তরায় নয়। যতক্ষণ ইচ্ছাকৃতভাবে ঐ জিনিসগুলাের প্রতি মনােনিবেশ করা না হবে।

উৎসঃ মাজালিসে হাকীমুল উম্মত | পৃষ্ঠা-২৯৩

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

27 Oct, 02:25


তাসাওউফের সারবস্তু খুবই সহজ
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

আল্লাহ পাকের নিয়ম হচ্ছে, যেসব জিনিস মানুষের জন্য খুব বেশী প্রয়ােজন, সেসব জিনিস অর্জন করা তিনি আসান করে দিয়েছেন। মানুষের সবচাইতে বেশী প্রয়ােজন হাওয়া। আর তা সব সময় সকল স্থানে বিনা পয়সায় পাওয়া যায়। বরং এটা কেমন যেন জোর করেই ভাগ দিয়ে দেয়ার মত। যদি কেউ এ থেকে বাঁচার ইচ্ছাও করে তবে সে ইচ্ছায় সফলকাম হওয়াও মুশকিল।

দ্বিতীয় পর্যায়ে মানুষের অধিক প্রয়োজন পানি। তাও ব্যাপকভাবে বিনা পয়সায় পাওয়া যায়। অবশ্য কোন কোন স্থানে খুব সামান্য মূল্যও নেয়া হয়। এমনিভাবে অন্যান্য জিনিসও। আর মানুষের সবচাইতে কম উপকারী হলাে, স্বর্ণ, চান্দী ইত্যাদি জাওহারসমূহ। আর এগুলাে হচ্ছে সবচাইতে বেশী দামী।

আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ার পথ যেহেতু ব্যাপকভাবে মানুষের প্রয়ােজনীয় ও উপকারী বস্তু তাই সৃষ্টিগত দিক থেকে সেটা সহজলভ্য হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মুশকিল হলাে লােকদের অতিরঞ্জন ও বাড়াবাড়িই বিষয়টিকে কঠিন বানিয়ে রেখেছে। বর্তমানে মানুষের ইচ্ছা বহির্ভূত এবং নিষ্প্রয়ােজনীয় নীতিমালা এবং আমলের নাম রেখেছে তাসাওউফ। অথচ সেগুলাে মূলতঃ কোন তাসাওউফ নয়। বরং তাসাওউফ তাে হচ্ছে, এই বিশ্বাস নিয়ে আল্লাহ পাকের দিকে মনােনিবেশ করার নাম যে, যখন আমরা মহান আল্লাহর দিকে মনােনিবেশ করবাে তখন হাদীস পাকের ওয়াদা মতে আল্লাহ পাক আমাদের মনােনিবেশ থেকে বেশী আমাদের দিকে মনােনিবেশ দান করবেন। এর মধ্যে তাে কোন নফল আমলেরও প্রয়ােজন নেই তবে ফরয আমলগুলাে ঠিক ঠিকভাবে আদায় করে নেয়া আবশ্যক। আর এতটুকুই যথেষ্ট। উলামায়ে কিরাম লিখেছেন অধিক পরিমাণে নফল ইবাদত করার চাইতে পরিপূর্ণভাবে ফরয ইবাদতগুলাে পালন করা অধিক উত্তম। আর এটি মানুষের মন-মানসিকতার সাথেও সামঞ্জস্যশীল। যেমন এক ব্যক্তি দাওয়াত দিয়ে দশ প্রকার খানা খাওয়ায়। কিন্তু তা সবই খারাপ। পক্ষান্তরে অপর এক ব্যক্তি শুধু এক প্রকারের খানা প্রস্তুত করে এবং তা খুব ভাল ও উন্নত। এক্ষেত্রে একথা স্পষ্টতঃই বুঝা যায় যে, আপনি ঐ দশ প্রকারের খানার তুলনায় এই এক প্রকারের খানাকেই অগ্রাধিকার দিবেন।

মুসনাদে ইমাম আহমদ (রহঃ)-এর মধ্যে একটি হাদীস আছে, যে হাদীসটি 'আত্তাকাশশুফ নামক গ্রন্থে বর্ণনা করা হয়েছে। সে হাদীসের মর্ম হচ্ছে, একবার কয়েকজন সাহাবী (রাযিঃ) বসেছিলেন। অপর একজন সাহাবী তাদের কাছ দিয়ে যেতে লাগলে তাদের মধ্য থেকে একজন সাহাবী (রাযিঃ) বললেন, ঐ ব্যক্তির প্রতি আমি অসন্তুষ্ট ও গােশ্বা। একজন সাহাবী (রাযিঃ) উঠে গিয়ে এ কথাটা ঐ সাহাবী (রাযিঃ) কে বললেন, যিনি ঐ স্থান দিয়ে যাচ্ছিলেন। সংবাদ পেয়ে সাহাবী (রাযিঃ) ফিরে এলেন। এবং জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি আমার সম্পর্কে একথা বলেছেন ? আমি এই ব্যক্তির প্রতি অসন্তুষ্ট ও গোশ্বা!

অপর সাহাবী (রাযিঃ) কথাটা স্বীকার করলেন যে, হাঁ আমি একথা বলেছি। প্রথম সাহাবী পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, আমার প্রতি গােশ্বা ও অসন্তুষ্টির কারণ কি? দ্বিতীয়জন উত্তর দিলেন, আমি তােমাকে কখনাে কোন নফল নামায পড়তে দেখিনি এবং নফল রোজা রাখতে দেখিনি। প্রথম সাহাবী এবার বললেন, আচ্ছা আপনি আমাকে ফরয আমলের ক্ষেত্রে কখনাে কোন শিথিলতা করতে দেখেননি তাে? দ্বিতীয়জন উত্তর দিলেন, না, ফরয আমলে কখনাে শিথিলতা করতে দেখিনি। এবার, প্রথম সাহাবী (রাযিঃ) বললেন, আমি তাে এটাকেই যথেষ্ট মনে করি। এরপর বিষয়টির সমাধানের জন্য উভয়েই উঠে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে উপস্থিত হলেন। হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথম সাহাবী (রাযিঃ)-এর রায় ফরয আমলকে যথেষ্ট মনে করা কেই সঠিক বলে বর্ণনা করলেন।

উৎসঃ মাজালিসে হাকীমুল উম্মত | পৃষ্ঠা-২৭৬

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

26 Oct, 02:17


গুনাহে পতিত হওয়ার কারণসমূহ
━━━━━━ • পর্ব - ০৭ • ━━━━━━

০৬। দীর্ঘ হায়াতের আশা করা

মুসলিম গুনাহে পতিত হয়ে যায়, হিসাবের কথা ভুলে যায়, ভুলে যায় প্রতিক্ষিতি প্রতিদান যেদিন পাবে সেদিনের কথা। এগুলো ভুলে যায় বান্দা তার দীর্ঘ হায়াতের আশা ও মওতের কথা ভুলে গেলে, মৃত্যু যন্ত্রণার কথা ভুলে গেলে, কবর ও সিরাতে মুসতাকিমের কথা ভুলে গেলে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন-

اَلَمْ يَاْنِ لِلَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْ تَخْشَعَ قُلُوْبُهُمْ لِذِكْرِ اللّٰهِ وَمَا نَزَلَ مِنَ الْحَـقِّۙ وَلَا يَكُوْنُوْا كَالَّذِيْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ مِنْ قَبْلُ فَطَالَ عَلَيْهِمُ الْاَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوْبُهُمْ‌ؕ وَكَثِيْرٌ مِّنْهُمْ فٰسِقُوْنَ

যারা মুমিন, তাদের জন্যে কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবর্তীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী। (সূরা হাদীদ, আয়াত ১৬)

আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাধে ধরে বললেন, দুনিয়াতে তুমি এমনভাবে থাকো যেন তুমি আগন্তুক অথবা পথচারী।

হাফিজ ইবনু রজব হাম্বলি রহিমাহুল্লাহ বলেন: দুনিয়াতে অল্প হায়াতের আশা করার প্রেক্ষিতে এই হাদীসখানা হলো আসল বা মূল। আর নিঃসন্দেহে মুমিনদের জন্য উচিত নয় দুনিয়াকে বাসস্থান ও বসবাসের জায়গা হিসেবে গ্রহণ করে তাতে প্রশান্তি লাভ করবে। বরং মুমিনের জন্য উচিত হলো এখানে থাকবে সফরের ডানার ওপর ভর করে, যেখানে সে সফর বা যাত্রার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবে।

সাইয়িদুনা আলি ইবন আবি তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: আমি তোমাদের ব্যাপারে দুই জিনিসের ভয় করি। আর তা হলো, কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ ও দীর্ঘ হায়াতের আশা করা। কেননা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ হক থেকে বিরত রাখে আর দীর্ঘ হায়াতের আশা আখিরাতকে ভুলিয়ে দেয়।

হাসান বসরি রহিমাহুল্লাহ বলেন বান্দা দীর্ঘ হায়াতের আশা করেনা কেবল আমলকে ভুলে যায়।

জনৈক ব্যক্তি বসরায় কোন এক যাহেদকে বলল, বাগদাদে কী আপনার কোন প্রয়োজন আছে? তখন যাহেদ বলল, আমার আশাকে এত লম্বা করা পছন্দ করি না যে, সে বাগদাদ আসা যাওয়া করবে।

কোন এক হাকিম বলেন: জাহেল ব্যক্তি তার আশার ওপর ভরসা করে আর জ্ঞানী ব্যক্তি ভরসা করে নিজের আমলের ওপর।

কোন এক সাহিত্যিক বলেন: আশা হলো মরীচিকার মত। যে তা দেখে সেই ধোঁকা খায় আর যে তার আশা করে সেই ত্রুটিযুক্ত হয়।

হাসান রহিমাহুল্লাহ বলেন: উলামাদের তিনজন একত্রিত হলো। তারা তাদের একজনকে বলল, তোমার আশা আকাঙ্খা কী? সে বলল, আমার কাছে যে মাসই এসেছে আমি ধারণা করেছি যে মৃত্যুবরণ করব মাসটিতে। হাসান বলেন: তার সাথি তাকে বলল, নিশ্চয় এটি আশা আকাঙ্খা। অতপর দ্বিতীয় জনকে বলা হলো, তোমার আশা কী? সে বলল, আমার কাছে এমন কোন জুমা আসে নি যাতে আমি আশা করিনি যে সে জুমাতে আমি মৃত্যুবরণ করব। হাসান রহিমাহুল্লাহ বলেন: এটিও আশা। অতপর তারা দুজনে তৃতীয় জনকে জিজ্ঞেস করল, তোমার আশা কী? সে বলল, যার শ্বাস নিঃশ্বাস অন্যের হাতে তার কী আশা থাকতে পারে?

কোন এক সালাফ বলেন: এমন কোন ঘুমে যাইনি যে, নিজেকে বলেছি আমি এই ঘুম থেকে জাগ্রত হবো।

মারুফ কারখি নামাজে দাঁড়ালেন। অতপর এক ব্যক্তিকে বললেন, সামনে অগ্রসর হও, আর আমাদের নামাজের ইমামতি কর। অতপর লোকটি বলল, যদি আমি এই নামাজে আপনাদের ইমামতি করি তাহলে এ ছাড়া আর কোন নামাজে আপনাদের ইমামতি করবো না। মারুফ কারখি বললেন, তুমি নিজের ব্যাপারে বলছ যে, আরও এক নামাজ পড়ানোর কথা। আল্লাহর কাছে দীর্ঘ আশা থেকে পানাহ চাই। কেননা, নিশ্চয়ই দীর্ঘ আশা নেক আমল থেকে বাধাপ্রদান করে।

আল্লামা ইবনুল কাইয়িম রহিমাহুল্লাহ বলেন: প্রবৃত্তির অনুসরণ ও উচ্চ আশা সকল ফাসাদের মূল, সকল অনিষ্টের মূল। কেননা, প্রবৃত্তির অনুসরণ হক জানতে ও হকের ইচ্ছা করা থেকে অন্ধ বানিয়ে দেয়, আর উচ্চ আশা আখিরাতকে ভুলিয়ে দেয় এবং আখিরাতের পাথেয় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে ভুলিয়ে দেয়।

হাদীসে এরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সেই ব্যক্তি বুদ্ধিমান যে নিজের নাফসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মৃত্যুর পরবর্তী সময়ের জন্য কাজ করে। আর সেই ব্যক্তি নির্বোধ ও অক্ষম যে তার নাফসের দাবির অনুসরণ করে আর আল্লাহ্ তা'আলার নিকটে বৃথা আশা পোষণ করে।

তাই আমরা নফসের দাবির অনুসারে চলে নির্বোধ হতে চাই না, আল্লাহর নিকট বৃথা আশা করতে চাই না। আল্লাহর কাছে পবিত্রতা ও নিরাপত্তা কামনা করছি।

✦✦ অসম্পূর্ণ | চলমান...✍️

🔰 গুনাহ থেকে ফিরে আসুন | পৃষ্ঠা-১০১

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

24 Oct, 02:27


হযরত ওমর (রাঃ) এর যামানায় যুবকের মৃত্যুর ঘটনা...
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

হযরত ওমর (রা.) এর যামানায় এক যুবক মসজিদে বসে ইবাদত করত এবং বেশি বেশি হযরত ওমর (রা.) এর দরবারে যাতায়াত করতো। এক পরমা সুন্দরী মহিলা তাকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য ফুসলাতে থাকে। এক পর্যায়ে যুবকটিকে আকৃষ্ট করে ফেলে এবং শেষ পর্যন্ত একদিন রাত্রবেলায় যুবকটি মহিলার বাড়িতে এসে পড়ে। মহিলা প্রথমে নিজে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে এবং যুবকটিকেও ঘরে প্রবেশ করতে বলে। যুবকটি ঘরে প্রবেশ করার সময় যখন সে এক পা ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে এবং এক পা দরজার বাইরে রয়েছে এমন সময় সাথে সাথে তার এই আয়াতটি মনে পড়ে যায়-

اِنَّ الَّذِيْنَ اتَّقَوْا اِذَا مَسَّهُمْ طٰۤٮِٕفٌ مِّنَ الشَّيْطٰنِ تَذَكَّرُوْا فَاِذَا هُمْ  مُّبْصِرُوْنَ‌ۚ

অর্থাৎ যারা মুত্তাকী (আল্লাহ তা'য়ালাকে ভয় করে) শয়তান যখন তাদেরকে কুমন্ত্রণা দিয়ে খারাপ কাজে নিমগ্ন করে, সাথে সাথে তাঁরা আত্মসচেতন হয়ে আল্লাহ তা'য়ালাকে স্মরণ করে এবং তাদের জ্ঞান চক্ষু খুলে যায়। (সূরা আরাফঃ আয়াত-২০১)

তৎক্ষণাৎ সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। বহুক্ষণ পর্যন্ত তার জ্ঞান ফিরে না আসার কারণে মহিলাটি মনে করলো যে, যুবকটি বোধ হয় মারা গেছে। মহিলাটি চিন্তা করলো, ভোর হলে তো লাশটি কেউ দেখে ফেললে আসল ব্যাপারটা হয় তো সকলে জেনে যাবে তাই তার দাসী এবং নিজে মিলে দু'জনে ঘাড়ে করে যুবকের বাড়ির দরজায় রেখে আসলো। অনেক্ষণ পর যুবকের জ্ঞান ফিরে এলে তার পিতা আয়াতটি শুনতে চাইলে যুবক পুণরায় আয়াতটি তেলাওয়াত করে একটি চিৎকার দিয়ে আবার অজ্ঞান হয়ে পড়ে এবং ইন্তেকাল করেন। রাত্রিকালেই তাকে দাফন করা হয়।

সকাল বেলায় হযরত ওমর (রা.) তার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য তার বাড়িতে উপস্থিত হন এবং তার পিতার নিকট সকল ঘটনা জানতে পেরে তিনি সমবেদনা প্রকাশ করেন। হযরত ওমর (রা.) তার কয়েকজন সাথিকে নিয়ে যুবকের কবরের কাছে গমন করেন এবং তার জানাযা আদায় করেন। তারপর তিনি তাকে সম্বোধন করে বললেন, হে যুবক!

وَلِمَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ جَنَّتَانِ.

অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহ তা'য়ালাকে ভয় করলো তার জন্য (পুরষ্কার রয়েছে) দুটি জান্নাত। (সূরা আররহমান: আয়াত ৪৬ পারা ২৭)

হযরত ওমর (রা.) এর মুখে এই আয়াতটি শুনে যুবকটি কবরের মধ্য থেকে উত্তর দিলঃ আল্লাহ তা'য়ালা আমাকে দুটি জান্নাত দান করেছেন।

(হায়াতুস সাহাবাঃ তাফসীরে ইবনে কাছির, ৪৮৬-৪৮৭ পৃষ্ঠা।)

এ ঘটনা দ্বারা কি বুঝা গেল? এ ঘটনার অল্প কথায়, তথা এক কথায় বুঝা গেল যে, গায়েব সত্য, কুরআন হাদিসের বিরুদ্ধে যত মতবাদ আর যে যা কিছু বলেছে তা সব ভ্রান্ত, সব মিথ্যা, সব কাল্পনিক, সব মানুষের মনগড়া, তার একটাও বিশ্বাস করা যাবে না। সকলকে কুর'আন হাদিস অনুযায়ী জীবন গড়তে হবে, যার পুরস্কার হলো জান্নাত বা বেহেশত। ঐ জান্নাত বা বেহেশত হলো এমন জীবন যৌবন আরাম আয়েশ ভোগ বিলাস শান্তি সুখ সফলতার জায়গা যা কোনদিন চক্ষু দর্শন করেনি। যার বর্ণনা কোনদিন কোনো কর্ণ শ্রবণ করেনি এবং কখনো কোনো দিন কোনো অন্তর কল্পনা করেনি। পক্ষান্তরে যারা কোরআন হাদিস বিশ্বাস করবে না, বিন্দুমাত্র সন্দেহ করবে এবং কোরআন-হাদিস অনুযায়ী জীবন গঠন করবে না, তাদের আর কোন উপায় নাই। জাহান্নাম তথা দোযখ হবে তাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা, যা আগুন আর সাপ বিচ্ছুতে পরিপূর্ণ আর হাজারও রকমের শাস্তি কষ্ট। যার কথা কোরআন হাদিস খুলে খুলে বর্ণনা করেছে, তার প্রতিটি আযাব শাস্তি সেখানে রয়েছে। তার থেকে কেউ বাঁচতে পারবে না। ফলে সকলকে তাওবা এস্তেগফার করে বাঁচার রাস্তা ধরতে হবে তথা কোরআন হাদীসের রাস্তা ধরতে হবে।

🔰 চোখে দেখা কবরের আযাব | পৃষ্ঠা-৫৫

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

23 Oct, 09:23


কুরআন মাজীদের আলোকে কুদৃষ্টির চিকিৎসা

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

23 Oct, 02:24


গুনাহে পতিত হওয়ার কারণসমূহ
━━━━━━ • পর্ব - ০৬ • ━━━━━━

যার প্রায় সময় গাফিলতিতে কাটে তার অন্তরে মরিচা জমতে থাকে। গাফিলতি ও অলসতার অনুপাতে প্রতিটি অন্তরে মরিচা পড়ে। অন্তর মরিচাগ্রস্ত হলে তাতে ইলমের ছাপ পড়ে না। তখন বাতিলকে হকের সুরতে দেখে। আর হককে বাতিলের সুরতে। যখন অন্তরে মরিচা জমাট বাঁধে এবং হৃদয় কালো-ধূসর হয়ে যায়, তখন এর কল্পনা ও বোধশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। তখন হক গ্রহণও করে না। বাতিলকে বারণও করে না। আর এটাই অন্তরের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। আর এগুলোর মূলে হলো গাফলতি ও নিজের খেয়াল খুশির অনুসরণ। কেননা, এগুলো অন্তরের নূরকে নিভিয়ে দেয় এবং চক্ষুকে অন্ধ বানিয়ে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন:

وَ لَا تُطِعْ مَنْ اَغْفَلْنَا قَلْبَهٗ عَنْ ذِكْرِنَا وَاتَّبَعَ هَوٰٮهُ وَكَانَ اَمْرُهٗ فُرُطًا

যার মনকে আমার স্মরণ থেকে গাফেল করে দিয়েছি, যে, নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং যার কার্য কলাপ হচ্ছে সীমা অতিক্রম করা, আপনি তার অনুগত্য করবেন না। (সূরা কাহাফ: ২৮)

সুতরাং আল্লাহ তাআলা ও তার জিকির হতে গাফেল থাকাটা অন্তর কঠিন ও নিষ্ঠুর হওয়া এবং আল্লাহ তাআলা ও তাঁর কথার প্রভাব থেকে দূরে সরে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে বড় কারণের অন্যতম।

ইবনুল কাইয়িম রহিমাহুল্লাহ বলেন: যখনই অন্তরের উদাসীনতা প্রবল হয় তখন অন্তরের নিষ্ঠুরতাও কঠোর হতে থাকে। অতপর যখন আল্লাহর জিকির করে তখন ঐ নিষ্ঠুরতা গলে যায় যেভাবে আগুনের মাঝে সীসা গলে যায়। জিকরুল্লাহর মত কোন জিনিস দ্বারাই অন্তরে নিষ্ঠুরতা নির্দয়তাকে গলানো যায় না। সুতরাং জিকির হলো ক্বলবের শিফা ও তার দাওয়া অর্থাৎ ঔষধ। আর গাফলতি ও উদাসীনতা হলো রোগ। সুতরাং রোগাক্রান্ত অন্তরসমূহের শিফা ও আরওগ্যতা হলো আল্লাহ তাআলার জিকিরের মাঝে।

মাকহুল বলেন: জিকরুল্লাহ তথা আল্লাহর স্মরণ হলো শিফা ও আরওগ্যতা আর মানুষের স্মরণ হলো রোগ ও ব্যাধি।

ইমাম বায়হাকী মাকহুল থেকে মারফু মুরসাল সূত্রে বর্ণনা করেন: যদি আমি জিকির করি তাহলে সেই জিকির আমার শিফা দান করে। আর যখন আমি জিকির থেকে গাফেল থাকি আমার অধঃপতন হয়। যেমন বলা হয়:

إذا مرضنا تداوينا بذكركم - - ونترك الذكر أحياناً فننتكس

যখন আমরা রোগাক্রান্ত হয়ে যাই তোমার জিকির আমাকে সুস্থ করে তোলে। আর যখনই তোমার জিকির ছেড়ে দেই আমার অধঃপতন হয়।

তিনি বলেন: জিকির হলো আল্লাহর সাথে সম্পর্কস্থাপনের আসল

বস্তু, বন্ধুত্বস্থাপনের মূল বিষয়। আর গাফলতি ও উদাসীনতা হলো আল্লাহর সাথে শত্রুতা পোষণের মূল বিষয় ও আসল বস্তু। তাই বান্দা যদি সর্বদা তার রবের জিকিরে থাকবে, তাঁকে স্মরণ করবে এমনকি তাকে ভালবাসতে থাকবে তাহলে তার সাথে সম্পর্ক হবে আর যদি বান্দা তার রবের জিকির থেকে গাফেল থাকে এমনকি তার প্রতি সে অসন্তুষ্ট হয়ে যায় তাহলে তার সাথে শত্রুতা হবে।

ইমাম আওযায়ি বলেন, হাসান বিন আতিয়াহ বলেন, বান্দা তার রবের সাথে সীমালঙ্ঘন করে বা শত্রুতাপোষণ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে বান্দা তার রবের জিকিরকে ও যারা তাঁর জিকির করে তাদেরকে অপছন্দ করা। সুতরাং এই শত্রুতা ও বিদ্বেষের কারণ হলো গাফলতি। বান্দা যখনই আল্লাহর জিকিরকে অপছন্দ করে, যারা জিকির করে তাদেরকে অপছন্দ করে তখন থেকেই আল্লাহ তাআলা তাকে শত্রু হিসেবে গ্রহণ করে যেভাবে আল্লাহ তাঁর জিকিরকারীকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে।

তাই জিকির থেকে গাফেল ও উদাসীন থাকা আমাদের অনুচিত। কেননা জিকিরে গাফেল ব্যক্তি আল্লাহর শত্রুতে পরিণত হয় এবং জিকিরকারী ব্যক্তি আল্লাহর বন্ধু হয়।

✦✦ অসম্পূর্ণ | পরবর্তী পর্ব...✍️

🔰 গুনাহ থেকে ফিরে আসুন | পৃষ্ঠা-১০১

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

22 Oct, 13:01


অধিক কথা বলার ক্ষতি
━━━━ • ✿ • ━━━━

অধিক কথা বলা সর্বাবস্থায় নিন্দনীয় । অনর্থক এবং প্রয়ােজনের অতিরিক্ত কথাও ইহার মধ্যে গণ্য। প্রয়ােজনীয় কথা যেই ক্ষেত্রে সংক্ষেপেও হইতে পারে সেই ক্ষেত্রে একটি বাক্যের স্থলে যদি দুইটি বাক্য ব্যবহার করা হয়, তবে দ্বিতীয় বাক্যটি অতিরিক্ত হইবে। কোন গুনাহ ও ক্ষতি না হলেও এই অতিরিক্ত কথন নিষিদ্ধ।

হযরত আতা ইবনে রাবাহ (রহঃ) বলেন, আমাদের পূর্ববর্তী বুজুর্গগন অনর্থক কথা বলা পছন্দ করিতেন না। তাহাদের নিকট আল্লাহর কিতাব, রাসূলের সুন্নত, সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ এবং অত্যাবশ্যকীয় কথা ব্যতীত অন্য সকল কথাই অতিরিক্ত কথার মধ্যে গণ্য ছিল। বস্তুতঃ এই কথা কেহই অস্বীকার করিতে পারিবে না যে, প্রতিটি মানুষেরই ডানে-বামে কিরামান কাতেবীন সদা সতর্ক অবস্থায় মানুষের ভাল-মন্দ সকল আমল লিপিবদ্ধ করিতেছে। কালামে পাকে এরশাদ হয়েছে...

অর্থ : “সে যেই কথাই উচ্চারণ করে, তাহাই গ্রহণ করার জন্য তাহার নিকট সদা প্রস্তুত প্রহরী রহিয়াছে ।” (সূরা কাহফ - ১৮ আয়াত)

তোমরা কি এই বিষয়ে কিছুমাত্র লজ্জাবোধ করে না যে, হাশরের ময়দানে যখন তোমার আমলনামা খোলা হইবে, তখন ইহাতে এমন অসংখ্য আমলের উল্লেখ পাওয়া যাইবে, যেই সকল আমলের সঙ্গে না দ্বীনের, না দুনিয়ার কোন সম্পর্ক আছে?

এক সাহাবী বলেন, লােকেরা আমার নিকট যেইসব প্রশ্ন করে, সেইসব প্রশ্ন তাহাদের নিকট এমন ভাল লাগে যেমন তৃষ্ণার্ত ব্যক্তির নিকট ঠাণ্ডা পানি ভাল লাগে। আর আমার নিকট তাদের প্রশ্নের জবাব দিতে অনুরূপ ভাল লাগে। কিন্তু আমি এই ভয়ে নীরব থাকি যে, আমার এই কথা আবার অতিরিক্ত কথার মধ্যে গণ্য না হয়!

হযরত মুতরিফ বলেন, তােমরা আল্লাহ পাকের শান ও প্রতাপের প্রতি লক্ষ্য রাখিও। এমন কোন স্থানে তাঁহার উল্লেখ করিও না, যেখানে তাঁহার শান ক্ষুণ্ন হওয়ার বিন্দুমাত্র সন্দেহ হতে পারে। যেমন কুকুর বা গাধা দেখিয়া এইরূপ বলিও না যে, হে আল্লাহ! ইহাকে দূরে সরাইয়া দাও।

উৎসঃ জবানের ক্ষতি | পৃষ্ঠা-১৯

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

22 Oct, 02:18


অবাধ্য স্বামীকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট এবং দ্বীনের পথে আনার পদ্ধতি...
-শাইখুল হাদীস হযরত মাওলানা মুফতী মনসূরুল হক দাঃ বাঃ
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক সুখকর এবং ইহকালীন ও পরকালীন স্থায়ী শান্তির আশায় প্রত্যেক মুসলমান মেয়ের উচিত দ্বীনদার মুত্তাকী ছেলেদের নিকট বিবাহ বসতে চেষ্টা করা এবং অভিভাবকদেরও যিম্মাদারী যে, দ্বীনদার ছেলে দেখে তার নিকট নিজেদের অধীনস্থ মেয়েদেরকে বিবাহ দেয়ার ব্যবস্থা করা।

হাদীসে পাকে ইরশাদ হয়েছে-

اذا خطب اليكم من ترضون دينه وخلقه فزوجوه ان لا تفعلوه تكن فتنة فى الارض رفساد عريض

অর্থ:কেউ যদি তোমাদের নিকট বিবাহের প্রস্তাব দেয়, যার দ্বীনদারী ও চরিত্রে তোমরা সন্তুষ্ট, তাহলে অচিরেই বিবাহের ব্যবস্থা কর, নতুবা সমাজে মারাত্মক ফিতনা-ফাসাদ বিস্তারের সম্ভাবনা রয়েছে। (তিরমিযী শরীফ ১/ ২০৭)

এক্ষেত্রে অভিভাবকদের অবহেলায় বা বাস্তব পর্যবেক্ষণের অসম্পূর্ণতায় কেউ বদদ্বীন স্বামীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকলে, তখন তার উচিত স্বামীকে দ্বীনদার বানানোর সকল চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। তাকে হাক্কানী আলেমের সাথে সম্পর্ক গড়তে ও তাবলীগ জামা‘আতের সাথে জুড়তে উৎসাহিত করা এবং স্বামী যদি সুদ-ঘুষ খেতে অভ্যস্ত থাকে অথবা অন্য কোন অবৈধ রোজগারে অভ্যস্ত থাকে, তাহলে বিনয়ের সাথে তাকে বুঝাবে যে, আমার দামী দামী খানা-পিনা ও পোশাক, অলংকারের কোন দাবী বা চাহিদা নাই। আমি শুধু এতটুকু চাই যে, আমার জন্য দু’বেলা দু’মুঠো হালাল ডাল ভাতের ব্যবস্থা করবেন। সাধারণ কাপড় পরাবেন যাতে আমরা আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হই। দুনিয়া তো একভাবে চলেই যাবে। সুতরাং, আপনার রোজগারের মধ্যে কোনভাবে হারামের সংমিশ্রণ যেন না হয় সেদিকে আপনি খুবই সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন।

সেই সাথে স্ত্রী নিজেও পরিপূর্ণ দ্বীনদারীর সাথে চলতে চেষ্টা করবে। নিজেদের সুন্দর, সুখময় দাম্পত্য জীবনের জন্য সর্বদা আল্লাহর দরবারে দু‘আ করতে থাকবে। শরীয়তের আওতায় থেকে স্ত্রী নিজেকে সবসময় সাজিয়ে গুছিয়ে রাখবে। যাতে স্বামী তার রূপ-লাবণ্যে, সৌন্দর্যে এবং ব্যবহারে আকৃষ্ট হয়ে অন্য সব কিছু ভুলে যায় এবং দ্বীনদার হওয়ার চেষ্টা করে।

স্বামীর সাংসারিক কাজে ত্রুটি না ধরে আন্তরিকভাবে তার খেদমত ও সহযোগিতা করবে, তার আয়-উন্নতির ব্যাপারে সহযোগিতা করবে, কোন জিনিসের দাবী করবে না, বেহুদা খরচ করবে না। স্বামী প্রদত্ত প্রত্যেক জিনিসের প্রতি খুশী থেকে তার শুকরিয়া আদায় করবে এবং তার পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের খেদমত করে দু’আ নিতে থাকবে।

উপরোক্ত কাজগুলো ইন্‌শাআল্লাহ ফলদায়ক হবে এবং ধীরে ধীরে স্বামী দ্বীনের দিকে ও স্ত্রীর দিকে আকৃষ্ট হতে থাকবে। এরপরও যদি ফল না হয়, স্বামীর বদ-দ্বীনী বাড়তে থাকে, তাহলে নিজের ও সন্তানদের আখিরাতের চিন্তায় মুরব্বীর মাধ্যমে স্বামী থেকে খোলা তালাক গ্রহণ করে তার থেকে পৃথক হয়ে যাওয়ার অবকাশ রয়েছে।

উল্লেখ্য, এ ব্যাপারে অনেক মূর্খ মহিলা যাদু-টোনা, তাবীজ-কবজের মাধ্যমে স্বামীকে নিজের মুঠের মধ্যে রাখতে চেষ্টা করে, এটা জঘন্য অপরাধ। কারণ, পুরুষদেরকে আল্লাহ তা‘আলা তুলনামূলক জ্ঞান বুদ্ধি বেশি দিয়েছেন, তার অভিজ্ঞতাও বেশী। সুতরাং, সে স্বাধীনভাবে মুরব্বীদের পরামর্শে চললে তার নিজের, বিবি বাচ্চাদের সকলের উন্নতি হবে। সংসারে শান্তি আসবে।

আর যদি অবৈধ পন্থায় তার স্বাধীনতা হরণ করে তাকে বেকুব বা গর্দভ বানিয়ে রাখা হয়, তাহলে এ ধরনের অকেজো স্বামী নিজ স্ত্রীর গোলামী করলেও তার দ্বারা স্ত্রীর নিজেরও কোন কল্যাণ হবে না; বরং ভবিষ্যতে মারাত্মক বিপদে পড়তে হবে।

সারকথা, স্বামীর স্বাধীনতা হরণ করাও নাজায়েয এবং যাদু টোনা করাও হারাম কাজ। আর কোন কোন অবস্থায় কুফরী কাজ। সুতরাং, কোন অবস্থাতেই স্বামীকে বশ করার জন্য এ সব হারাম কাজ করে নিজের আখিরাত বরবাদ করবে না। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, ৪/ ৮৭, ৬/ ১৯৮)

আল্লাহ তা‘আলা সকল দম্পতিকে তাঁর হুকুম এবং প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের তরীকা মত চলে দুনিয়া ও আখিরাতে কামিয়াব হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন।

উৎসঃ ইসলামি যিন্দেগী

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

20 Oct, 02:24


স্বামীর আহ্বানে যখন তখন সাড়া দেয়া কি স্ত্রীর জন্য জরুরী?
-মুফতি সাঈদ আল হাসান
━━━━━ • ✿ • ━━━━

বংশ পরম্পরা রক্ষা, গোনাহ থেকে হিফাজত, অর্ধেক দিন পুরো করা এবং পরস্পর সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করা ইত্যাদি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কারণে আল্লাহ তাআলা নারী পুরুষের মাঝে বিবাহ বন্ধনের ব্যবস্থা রেখেছেন।যারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে, সেই স্বামী-স্ত্রীকেও আল্লাহ তা’আলা অনেক মর্যাদা দান করেছেন।

সংসার সুখময় রাখবার জন্যে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপরেই বেশ কিছু হক নির্ধারণ করে দিয়েছেন এবং উভয়কেই নিজ নিজ হক পরিপূর্ণ পালনে নির্দেশ দিয়েছেন। স্ত্রীর উপর তেমনই একটি হক হল, স্বামীর যৌন তাকাজা পুরো করা।কাজেই শরীয়ত সমর্থিত কোন ওজর না থাকলে স্বামীর এই তাকাজা পূরণ করা স্ত্রীর জন্যে জরুরী।
শরয়ী কোন ওজর দেখা দিলে তখন এই কাজে বিরত থাকতে সমস্যা নেই।

*** শরয়ী ওজর তথা দৈহিক মিলনে নিষেধাজ্ঞার দুটি বড় উদাহরণ হল হায়েজ ও নেফাস। এ ২টি জারি অবস্থায় সহবাস জায়েজ নয়। বরং নিষিদ্ধ ও হারাম।

এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনের সূরা বাকারার ২২২ নং আয়াতে বলেছেন-

وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ ۖ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ ۖ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطْهُرْنَ ۖ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ [٢:٢٢٢]

আর তারা আপনার কাছে হায়েয (ঋতু)সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দিন, এটা অশুচি। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক। ততোক্ষণ পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না, যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়ে যায়। যখন তারা উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যাবে, তখন তাদের কাছে গমন কর, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে, তাদেরকে পছন্দ করেন। [সূরা বাকারা-২২২]

এ আয়াত দ্বারা আমরা বুঝতে পারি, হায়েজ ও নেফাস ছাড়া যেকোনো অবস্থায় সহবাস করা যাবে।

তবে স্ত্রীর মত স্বামীরও একটি দায়িত্ব হল, স্ত্রীকে কোনরূপ কষ্ট না দেয়া বা জোর জবরদস্তি না করা। স্বামীর ইচ্ছে জাগলেই স্ত্রীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়া গোনাহের কাজ। স্ত্রীও তো মানুষ, তার তো মানসিক প্রস্তুতির দরকার আছে। অতএব যেদিন তাকাজা পূরণের ইচ্ছে করবে, সেদিন স্বামী আগে থেকেই স্ত্রীকে জানিয়ে রাখবে। যেন স্ত্রী সমস্ত ব্যস্ততা থেকে মুক্ত হয়ে নিজেও মানসিকভাবে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে পারে।পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজন থাকলে সেটাও করে নিতে পারে।

আর একান্তই যদি স্ত্রী মানসিকভাবে প্রস্তুত না থাকে,তবে স্বামী কর্তৃক জোর করা ঠিক হবে না। স্ত্রীর উচিত, স্বামীকে বুঝিয়ে বিরত রাখা বা ভিন্ন উপায়ে স্বামীর তাকাজা পূরণ করা। তবে, ভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে গিয়ে কোনভাবেই শরীয়ত নিষিদ্ধ পদ্ধতিতে তাকাজা মেটানো যাবে না।
শরীয়ত নিষিদ্ধ একটি পদ্ধতি হল, পায়ুপথে সহবাস করা। স্বামীর যতই চাহিদা থাকুক, কোনভাবেই পেছনের রাস্তায় সহবাস করা যাবে না। স্বামী যদি পেছন পথে সহবাসের জন্য জোরাজুরি করেন, তবুও কোনভাবেই স্ত্রী তার ডাকে সাড়া দিবে না। এটা হারাম ও স্ত্রীর স্বাস্থ্যের জন্যেও মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। এক্ষেত্রে স্বামীর আদেশ অমান্য করাও জায়েজ।কারণ, স্রষ্টার আদেশ অমান্য করে সৃষ্টির আদেশ পালন করা জায়েজ নয়।

(অসম্পূর্ণ)
বিস্তারিতঃ মাসিক আদর্শ নারী

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

19 Oct, 02:16


গুনাহে পতিত হওয়ার কারণসমূহ
━━━━━━ • পর্ব - ০৫ • ━━━━━━

এ কারণেই আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো সাথে বন্ধুত্ব স্থাপনকারী কিয়ামতের দিন একে অপরের শত্রুতে পরিণত হবে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন:

اَلْاَخِلَّاۤءُ يَوْمَٮِٕذٍۢ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ اِلَّا الْمُتَّقِيْنَ

"বন্ধুবর্গ সেদিন একে অপরের শত্রু হবে, তবে খোদাভীরুরা নয়।" (সূরা যুখরুপ; আয়াত ৬৭)

অতএব আমরা সত্যবাদী ও নেককারদের সংশ্রব গ্রহণ করব। মিথ্যাবাদী ও ভ্রান্ত এবং অসৎলোকদের থেকে দূরে অবস্থান করব। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা সত্যবাদীদের সাথে থাকার আদেশ দিয়েছেন। সূরা তাওবার ১১৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন:

يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَكُوْنُوْا مَعَ الصّٰدِقِيْنَ

হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সংশ্রব গ্রহণ কর।

সুতরাং আমরা সৎলোকের সংশ্রব গ্রহণ করব এবং বদলোক থেকে দূরে থাকব।

০৫। উদাসীনতা

আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা ও আখিরাতের ব্যাপারে উদাসীন ও বেখবর থাকলে তা গুনাহে নিমজ্জিত করে, অন্তরকে বিনষ্ট করে এবং ওয়াসওয়াসা ও খারাপকাজের দিকে টেনে নিয়ে যায় এবং গায়েবের ব্যাপারে পরিপূর্ণ জ্ঞানী আল্লাহ তাআলা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।

অতএব উদাসীন ক্বলব তার দায়িত্ব ও কর্তব্যের ব্যাপারে বেখবর থাকে। আর মানুষের অন্তর যখনই আল্লাহর জিকির থেকে গাফেল হয়ে যায় উদাসীন হয়ে তখনই শয়তান তার মাঝে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়ে যায়। তার পেছনে লেগে থাকে ও তার জন্য অসৎ সঙ্গী হয়ে যায়; যে তার খারাপ জিনিস ও বিষয়গুলোকে সুন্দর ও সুশোভিত করে তার কাছে মেলে ধরে। আল্লাহ তাআলা বলেন:

وَمَنْ يَّعْشُ عَنْ ذِكْرِ الرَّحْمٰنِ نُقَيِّضْ لَهٗ شَيْطٰنًا فَهُوَ لَهٗ قَرِيْنٌ

যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে চোখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী। (সূরা যুখরুপ; আয়াত ৩৬)

মানুষ গুনাহে নিপতিত হয়ে থাকে কেবল আল্লাহ থেকে গাফেল থাকার কারণে, আল্লাহর আদেশ এর ব্যাপারে গাফেল থাকার কারণে, দুনিয়া ও আখিরাতে পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার শাস্তির ব্যাপারে গাফেল থাকার কারণে। আর যারা আল্লাহ তাআলা ও তার সাথে সাক্ষাত লাভের ব্যাপারে গাফেল থাকে, পরকালীন জীবন ছেড়ে পার্থিব জীবন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে, আল্লাহ তাআলার জাগতিক নিদর্শন ও কুরআনের নিদর্শনের ব্যাপারে গাফেল থাকে তাদের প্রত্যাবর্তন স্থলই হলো জাহান্নাম। কেননা তারা কুফরি করেছে এবং স্বীয় রবের নিদর্শনাবলীর ব্যাপারে গাফলতি করেছে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন:

اِنَّ الَّذِيْنَ لَا يَرْجُوْنَ لِقَآءَنَا وَرَضُوْا بِالْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَاطْمَاَنُّوْا بِهَا وَالَّذِيْنَ هُمْ عَنْ اٰيٰتِنَا غٰفِلُوْنَۙ. اُولٰٓٮِٕكَ مَاْوٰٮهُمُ النَّارُ بِمَا كَانُوْا يَكْسِبُوْنَ

অবশ্যই যেসব লোক আমার সাক্ষাৎ লাভের আশা রাখে না এবং পার্থিব জীবন নিয়েই উৎফুল্ল রয়েছে, তাতেই প্রশান্তি অনুভব করেছে এবং যারা আমার নির্দশনসমূহ সম্পর্কে বেখবর। এমন লোকদের ঠিকানা হলো জাহান্নাম সেসবের বদলা হিসাবে যা তারা অর্জন করছিল। (সূরা ইউনুস; আয়াত ৭-৮)

আল্লামা ইবনুল জাওযি রহিমাহুল্লাহ বলেন: গাফলতি উদগত হওয়ার ক্ষেত্রে বড় হলো দুটি জিনিস। একটি হলো পেট ভরে খাওয়া, আরেকটি হলো পেট ভরে যারা খায় তাদের সাথে চলাফেরা করা। অতএব যদি তুমি গাফলতি ও উদাসীনতা থেকে মুক্তি ও পরিত্রাণ পেতে চাও তাহলে তোমার জন্য আবশ্যক হলো ক্ষুধার্ত থাকা।

তিনি বলেন: বান্দার ওপর দুটি জিনিস থেকে ক্ষতিকারক আর কোন কিছু নেই। সেই দুটি হলো, আল্লাহর জিকির থেকে গাফেল থাকা এবং আল্লাহর আদেশের মুখালাফাত করা বিরোধিতা করা।

আর উদাসীনতা ও গাফলতি কল্যাণ থেকে মাহরুম করে আর গুনাহ ক্ষতিকে আবশ্যক করে। গাফলতি জান্নাতের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয় আর গুনাহ ও পাপাচার জাহান্নামের দরজা উন্মুক্ত করে।

ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রহিমাহুল্লাহ বলেন, কোন সন্দেহ নেই যে, কলবের মাঝে মরিচা পড়ে যেভাবে তামা, সোনা ইত্যাদির মাঝে মরিচা পড়ে। আর 'অন্তরের মরিচা দুই কারণে হয়; গাফিলতি ও গোনাহ। আবার মরিচা দূরও হয় দুই জিনিসে; জিকির ও ইস্তেগফারে।

✦✦ অসম্পূর্ণ | পরবর্তী পর্ব...✍️

🔰 গুনাহ থেকে ফিরে আসুন | পৃষ্ঠা-১০১

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

18 Oct, 07:26


পাপ কাজে দুনিয়ার ক্ষতি
════ •⊰❂⊱• ═══

নেক কাজ করার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে-আল্লাহ তা‘আলাকে সন্তুষ্ট করা ও আখিরাতের সুখ লাভ করা এবং পাপকাজ হতে বেঁচে থাকার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে আখিরাতের আযাব ও খোদার গযব হতে মুক্তিলাভ করা। কিন্তু আজকাল সাধারণত লোকেরা দুনিয়ার লাভ লোকসানটাকেই বেশি বুঝে। তাই পাপ করলে দুনিয়াতে কি কি ক্ষতি হয় এবং নেক কাজ করলে দুনিয়াতে কি কি লাভ হয়, তার কিছু বর্ণনা এখানে দেয়া হল। আশা করা যায় যে, লোকেরা অন্তত দুনিয়ার লাভের আশায় কিছু নেক কাজ করবে এবং দুনিয়ার লোকসানের ভয়ে পাপ কাজগুলো ত্যাগ করবে।

পাপ করার দরুন যেসব ক্ষতি হয় তা নিম্নরূপঃ

❒ দ্বীনী ইলম হতে মাহরূম ও বঞ্চিত থাকতে হয়।
❒ কামাই রোযগারের বরকত উঠে যায়।
❒ খোদার প্রতি মুহাব্বত থাকে না।
❒ সৎলোকের কাছে যেতে ইচ্ছা হয় না।
❒ কাজে-কর্মে অনেক বাধা-বিঘ্ন এসে পড়ে।
❒ অন্তর কাল হয়ে যায়।
❒ হৃদয়ের বল থাকে না।
❒ নেক কাজ হতে মাহরূম থাকতে হয়।
❒ হায়াত কাটা যায়।
❒ এক গুনাহের পর অন্য গুনাহ সংঘটিত হতে থাকে, তওবা করবার ইচ্ছা ক্রমশ কমজোর হতে থাকে।
❒ কিছু দিন পর পাপের প্রতি যে একটা ঘৃণা ছিল, সেটাও চলে যায়।
❒ মন্দ কাজে নমরূদ, শাদ্দাদ, ফিরআউন, আবু জাহল প্রমুখ আল্লাহর দুশমনদের উত্তরাধিকারী ও সহগামী হতে হয়।
❒ আল্লাহর নিকট মান-সম্মান কিছুই থাকে না।
❒ অন্যান্য জীবজন্তু পাপের দরুন কষ্ট পেয়ে পাপীর প্রতি লা‘নত করে।
❒ জ্ঞান-বুদ্ধি হ্রাস পেতে থাকে।
❒ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বদ দু‘আর ভাগী হতে হয়।
❒ ফেরেশতাদের নেক দু‘আ হতে মাহরূম থাকতে হয়।
❒ দেশের শস্য-ফসলাদিতে বরকত থাকে না।
❒ শরম-ভরম চলে যায়।
❒ আল্লাহ তা‘আলার ভক্তি অন্তর হতে উঠে যায়।
❒ আল্লাহর নেয়ামত হতে মাহরূম হয়ে যায়।
❒ বালা-মুসীবত নাযিল হয়।
❒ তাঁকে প্রশংসাস্থলে নিন্দা করা হয়।
❒ শয়তান তার চিরসাথী হয়ে যায়।
❒ তার দিল পেরেশান থাকে।
❒ মৃত্যুকালে তার মুখ দিয়ে কালিমা বের হয় না।
❒ খোদা তা‘আলার রহমত হতে নিরাশ হয়ে অবশেষে তাওবা ব্যতিরেকেই তার মৃত্যু হয় ইত্যাদি।

উৎসঃ কিতাবুল ঈমান | ইসলামী জিন্দেগী

━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | AIF | IA
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

17 Oct, 02:20


ঈমান জাগানিয়া কাহিনী
-মাওলানা তারিক জামিল (পাকিস্তানী)
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

আমি পৃথিবীর অনেক গুলো রাষ্ট্রের মধ্যে, কয়েকটি রাষ্ট্র সফর করেছি, এর মধ্যে জর্ডান সফরের একটা অংশ তুলে ধরছি।

আমি আর আমার স্ত্রী যখন জর্ডানে পৌঁছে গেলাম, তখন তাবলীগ জামাতের আমীর সাহেব, আমাদেরকে তাদের বাসায় নিয়ে গেলেন। আমরা দুজনেই ভীষণ অবাক হলাম, মাত্র দু-কক্ষ বিশিষ্ট একটা ঘর, ঘরের মধ্যে এক পাশে কিছু থালা বাসন, তরকারির ঝুড়ি, একটা কাঠের উপর জড়ো করা কয়েকটি কাপড়, আর আরাম করার জন্য একটা মাদুর ও দুই খানা ইট।

আমার স্ত্রীকে এক কক্ষে আর আমাকে আরেক কক্ষে নিয়ে গেলেন। উনার মোট ছয়টি মেয়ে, যারা সবাই পরিপূর্ণ পর্দা করে, আর একটা খুব ছোট ছেলে বাচ্চা কোলে।

ছেলেটির বয়স যখন একদিন, তখনই তার মা, কালো একটা কাপড় দিয়ে বাচ্চার চোখ বেঁধে দুধ পান করায়। এখন ওর বয়স এক বছর, ওর যখন দুধ খাওয়ার নেশা চাপে, তখনই কালো কাপড়টা মায়ের হাতে তুলে দেয়। বোনদের সাথে কিতাবের উপর হাত দিয়ে পড়ার চেষ্টা করে।

আমার স্ত্রীকে খাবার দেওয়ার পর, তিনি এইসব দৃশ্য দেখে দোয়া না পড়েই খাবার মুখে দিতে গেলেন। ৪ বছরের পিচ্চি মেয়ে, আমার স্ত্রীর হাত চেপে ধরলেন, আর বললেন দোয়া না পড়লে খাবার খেতে দেবোনা।

এইসব দৃশ্য আমি খুব উপভোগ করছিলাম আর জুতা পায়ে দিচ্ছিলাম, পিচ্চি টা দৌঁড়ে এসে বললো, চাচা আপনিতো বাম পায়ের জুতা আগে পায়ে দিছেন, এখন খুলে আবার ভাল করে দোয়া পড়ে জুতা পায়ে দিন।

আমি চিন্তায় বিভোর হয়ে গেলাম, এটা কেমন মা, যার ৪ বছরের মেয়ে, আমার মতো মাওলানার ভুল ধরিয়ে দেয়। আমি আমির সাহেবের সাথে রাস্তায় বের হয়ে একটা গাড়িতে উঠলাম, ড্রাইভার মাতাল থাকার কারনে হঠাৎ এ্যাকসিডেন্ট করে গাড়িটি। এবং আমার চোখের সামনেই আমির সাহেব ইন্তেকাল করেন।

সবাই মিলে ধরাধরি করে লাশটা নিয়ে এলাম, উনার স্ত্রী, কন্যা লাশ দেখে দোয়া পড়লেন, যেখানে আমারই ইচ্ছা
করছে চিৎকার করে কান্না করতে, সেখানে উনার পরিবারের কারোরই কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম না।

আমার স্ত্রী এসে হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে বললেন, ভাবী ভাইয়ের দাফনের ব্যবস্থা করতে বলেছে দ্রুত!

আমি সবকিছু এনে দেখি, আমার স্ত্রী একা একা কান্না করছে, আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরে ভীষণ জোরে-জোরে কান্না শুরু করে দিলো, আমি তার মুখ চেপে ধরে আওয়াজ বন্ধ করলাম, বললাম কি হয়েছে? আমাকে বললো, ওগো আমাকে ক্ষমা করো, তোমার উপযুক্ত স্ত্রী আজও হতে পারিনি, ঐ দেখো, ভাইয়ের পরিবারের সবাই নামাজে দাঁড়িয়ে কান্না করছে, আল্লাহর কাছে তার মাগফেরাত কামনা করছে। ওগো এতো ধৈর্যশীলা পরিবার ও কি এখনো আছে। আমি আমার স্ত্রীকে সান্ত্বনা দিয়ে বাহিরে এসে, লাশের বাকিটুকু কাজ সমাধান করলাম।

রাতের বেলায় হঠাৎই ঘুম ভেঙ্গে গেলো কান্নার শব্দে। আস্তে-আস্তে উঠে গিয়ে দেখি, ভাবী সাহেবা তার ছয় মেয়েকে নিয়ে তাহাজ্জুদ সালাতে কান্না করছে। কি অবাক করা বিষয় এই ৪ বছরের বাচ্চা মেয়েও মায়ের সাথে সমানে দোয়া করে যাচ্ছে, মনোযোগ দিয়ে দোয়া করা শুনতে লাগলাম। এতো দারুণ দোয়া যে, শুনতে শুনতে কখন যে, আমার চোখের পানি দাড়ি ভিজে মাটিতে পড়ছিল, তা নিজেও জানিনা।

আল্লাহর কাছে বললেন, তার বিয়ের উপযুক্ত মেয়েকে যেন আল্লাহ দ্রুতই কোন ব্যবস্থা করে দেন। আর ও বললেন, ইয়া আল্লাহ আমাদেরকে উত্তম রিযিক দান করো।

আমি ফজরের সালাতের পরে একটু ঘুমিয়ে পড়লাম, ঘুম থেকে উঠে শুনি, শহরের নাম করা তিন জন হুজুর প্রচুর পরিমাণে মোহরানা নিয়ে, তার তিন মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে, উনি রাজি হওয়ায়, দুপুরে বিয়ে।

আমার খুব কান্না চলে আসলো, উনি কেমন রমনী, যে কিনা রাতের বেলায় দোয়া করতেই ভোর বেলায় ফল পেয়ে যান! আল্লাহ তায়ালা এধরনের পরিবার আমাদেরকেও দান করুন। আমীন!

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

16 Oct, 02:16


দানের এক অপূর্ব দৃষ্টান্ত
━━━━━ • ✿ • ━━━━━

একদা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক (রাহঃ) হজ্ব করতে মক্কা নগরীতে গমন করেন। হজ্বের বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালনের এক পর্যায়ে তিনি হেরেম শরীফে কিছুটা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। হঠাৎ তিনি স্বপ্নে দেখেন যে, দু'জন ফিরিস্তা একে অপরকে লক্ষ্য করে বলছে, আচ্ছা বলুন তো এ বছর কতজন লোক হজ্ব করতে এসেছে এবং তাদের মধ্যে কত জনের হজ্ব কবুল হয়েছে?

জবাবে অপর ফিরিস্তা বললেন, এ বছর মোট ছয় লক্ষ লোক হজ্ব করতে এসেছে। কিন্তু তাদের মধ্যে একজনের হজুও কবুল হওয়ার নিশ্চয়তা নেই। তবে মহান আল্লাহ তায়ালা এমন একজন লোকের পক্ষ থেকে নিশ্চিতভাবে হজ্ব কবুল করে নিয়েছেন যিনি মক্কায় হজ্ব করতে আসার প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কোন এক কারণে আসতে পারেনি। সে সৌভাগ্যশীল ব্যক্তির নাম হচ্ছে আলী ইবনে মোয়াফেক দামেস্কী। আল্লাহ্ তা'য়ালা তার সম্মানার্থে এবারের সকল হাজীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।"

অতঃপর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক (রাহঃ) এর তন্দ্রাচ্ছন্নতা কেটে গেল। এবার তিনি সেই ভাগ্যবান ব্যক্তি আলী ইবনে মোয়াফেকের সাথে সাক্ষাত করার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠলেন। কেননা তখন তাঁর মনে শুধু একটি কথাই বারবার ধ্বনিত হচ্ছিল যে, সেই ব্যক্তি এমন কি কাজ করেছে যার বদৌলতে হজ্ব করতে না আসতে পারা সত্ত্বে ও আল্লাহ তায়ালা তাঁর হজ্ব কবুল করে নিয়েছেন এবং তার সম্মানার্থে সকলকে ক্ষমা করে দিয়েছেন?

যা হোক, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক (রাহঃ) তখনই দামেস্কের পথে রওয়ানা হলেন এবং বহু চড়াই-উৎরাই পার হয়ে অনেক কষ্ট স্বীকার করে দামেস্কে পৌঁছে বেশ খোঁজাখুঁজির পর আলী ইবনে মোয়াফেকের সাক্ষাত লাভ করতে সক্ষম হলেন। তিনি তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বললেন, আমার নাম আলী ইবনে মোয়াফেক। আমি মানুষের জুতা সেলাই করে থাকি। গোষ্টিগত দিক থেকে আমি মুচি।'

এবার আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক (রাহঃ) তার স্বপ্নের সম্পূর্ণ ঘটনা আলী ইবনে মোয়াফেকের নিকট বর্ণনা করে বললেন, ভাই! আপনি এমন কি আমল করেছেন, যার ফলে আল্লাহ পাক আপনাকে এতবড় সম্মান দান করেছেন?

আলী ইবনে মোয়াফেক হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক (রাহঃ) এর পরিচয় জানতে চাইলেন। তিনি তাঁর পরিচয় পেশ করলে আলী ইবনে মোয়াফেক সাথে সাথে বেহুঁশ হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন।

বেশ কিছুক্ষণ পর তার হুঁশ ফিরে এলে তিনি বলতে লাগলেন-

আজ ত্রিশ বছর যাবৎ আমি আমার অন্তরের মনি কোঠায় মক্কা শরীফ গমন করে হজ্ব করার তীব্র আকাংখা সযত্নে লালন করে আসছি। কিন্তু আমি একজন অসহায় গরীব মানুষ। হজ্ব করার মত এত টাকা আমার নিকট নেই। তার পরেও বহু কষ্টে দীর্ঘদিন যাবৎ কিছু টাকা সংগ্রহ করে এবার হজ্বে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করি। আমার স্ত্রী তখন ছিল গর্ভবতী। সে পাশের বাড়ীর রান্না করা গোশতের সুঘ্রাণ পেয়ে ঐ গোশত খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। বারবার আমার স্ত্রী আমার কাছে ঐ গোশত খাওয়ার তীব্র আগ্রহ প্রকাশ করলে আমি সে বাড়ী গিয়ে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে আমার কথা ব্যক্ত করি। কিন্তু সে বাড়ীর বিধবা মহিলা আমাকে বললো, ভাই! এ গোশত আমাদের জন্য হালাল হলেও আপনাদের জন্য হালাল নয়।

এর কারণ জানতে চাইলে মহিলাটি বললো, আজ ৭ দিন যাবত আমি ছেলে-মেয়ে নিয়ে না খেয়ে আছি। ক্ষুধার তাড়নায় আমাদের প্রাণ বাহির হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাই শেষ পর্যন্ত উপয়ান্তর না দেখে আমি পথের পাশে পড়ে থাকা একটি মরা গাধা দেখে তা থেকে কিছু গোশত কেটে এনে আজ পাকাচ্ছি।

এ কথা শুনে আমার দুচোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠলো। আমার পক্ষে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা কিছুতেই সম্ভব হলো না। আমি তাড়াতাড়ি বাড়ী এসে আমার হজ্বের জন্য জমানো সকল টাকা এনে ঐ বিধবা মহিলার হাতে দিয়ে বললাম, এই নিন। এই টাকাগুলো দিয়ে আপনি আপনার সন্তানদের খোর-পোষের ব্যবস্থা করুন। এটাই আমার হজ্ব।

পূর্ণ ঘটনা শ্রবণ করার পর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক (রহ.) বললেন, আমার স্বপ্ন সম্পূর্ণ সঠিক। ফিরিশতা ঠিকই বলেছেন। আপনার এই দানের প্রতি খুশি হয়েই আল্লাহ তায়ালা আপনাকে এতবড় সম্মান ও মর্যাদা দান করেছেন এবং আপনার আমলনামায় একটি মকবুল হজ্বের ছাওয়াব লিখে দিয়েছেন।

প্রিয় পাঠক! আমরাও কি পারি না গরীব দুঃখী ও অভাবীদের প্রতি আলী ইবনে মোয়াফেকের মত বদান্যতার হাত প্রসারিত করতে?

উৎসঃ যে গল্পে হৃদয় গলে-১ | পৃষ্ঠা-৯২

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

12 Oct, 02:06


পারিবারিক শান্তির জন্যে একটি দামি আমল
▣ HD Image | ▣ Text

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

08 Oct, 02:02


আজকের শাসকরা যদি এমন মহানুভব হতেন!
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

ঐতিহাসিক কাদেসিয়ার ময়দানে প্রচন্ড লড়াই চলছে। দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রাঃ) যুদ্ধের ফলাফল জানার জন্য সর্বদা ব্যাকুল হয়ে আছেন। তাই তিনি প্রতিদিন ফজরের নামাযের পর মদীনার বাইরে এসে সংবাদের অপেক্ষায় থাকেন।

একদিনের ঘটনা। তিনি অন্যান্য দিনের মত আজও মদীনার বাইরে এসে সংবাদের অপেক্ষায় ছিলেন। এমন সময় হঠাৎ দেখতে পেলেন, একজন লোক উটে চড়ে দ্রুত মদীনার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কাদেসিয়ার মুসলিম সেনাপতি হযরত সা'দ বিন আবি ওয়াক্কাছ (রাঃ) কর্তৃক প্রেরিত এই দূতকে দেখে হযরত উমর (রাঃ) ভাবলেন, এ লোকটি হয়তো কাদেসিয়ার সংবাদ নিয়ে এসেছে। তাই তিনি সংবাদ জানার প্রবল আগ্রহ নিয়ে উটের পিছনে দৌঁড়ে চলতে চলতে লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন, ভাই! কাদেসিয়ার খবর কি? সে উত্তরে বললো, আল্লাহ তায়ালা সেখানে মুসলমানদের বিজয় দান করেছেন।

এতটুকু জানতে পেরে হযরত উমর (রাঃ) অত্যন্ত খুশি হলেন এবং সীমাহীন কৌতূহলসহ লোকটির নিকট আরও কিছু জানতে চাইলেন।

লোকটি উত্তর দিতে দিতে মদীনার দিকে অগ্রসর হচ্ছিল আর আমীরুল মুমেনীন হযরত উমর (রাঃ) তার পিছনে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে কাদেসিয়ার বিভিন্ন সংবাদ জিজ্ঞাসা করছিলেন। লোকটি অবশ্য কল্পনাও করতে পারেনি যে, যাকে সংবাদ দেওয়ার জন্য সে দ্রুত উট নিয়ে মদীনায় যাচ্ছে তিনিই তার পিছনে দৌড়াচ্ছেন।

বেশ কিছুক্ষণ এভাবে চলার পর মদীনার প্রবেশ পথে লোকটি দেখলো তার পিছনে পিছনে দৌঁড়ে আসা লোকটিকেই লোকজন আমীরুল মুমেনীন বলে সম্বোধন করছে। এতে লোকটি অত্যন্ত ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়লো এবং কাঁদো কাঁদো স্বরে ভয় মিশ্রিত কণ্ঠে হযরত উমর (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললো, হে মহানুভব আমীরুল মুমেনীন! আপনি দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমি আপনাকে চিনতে না পেরে আপনার সাথে বেয়াদবী করে ফেলেছি। আপনি আমাদের আমীরুল মুমেনীন হওয়া সত্ত্বেও আমি আপনার সাথে একজন সাধারণ লোকের মত আচরণ করেছি।

কথাগুলো বলতে বলতে লোকটি এক লাফে উট থেকে নেমে যেতে চাইলে উমর (রাঃ) তাঁকে বাধা দিয়ে বললেন, তুমি উটের উপরই বস। নামার প্রয়োজন নেই। আর তুমি আমার সাথে কোন অপরাধ করনি যে, আমার নিকট ক্ষমা চাইতে হবে। আমিও ঠিক তোমার মত একজন সাধারণ মানুষ। তোমার আর আমার মধ্যে কোন পার্থক্য আছে বলে আমি মনে করিনা।

প্রিয় পাঠকবৃন্দ! আজকাল কোন বাদশাহ বা নেতা তো দূরের কথা সামান্য বিত্তশালী লোকও কি এমন আছে যে, সাধারণ একজন লোকের সাথে এমন সুমধুর আচরণ করতে পারেন? ক্ষমতার মসনদে বসেও এমন বিনয় সুলভ কথা বলতে পারেন? সত্যি কথা বলতে কি, যাদের নাম নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি এবং প্রতি ক্ষেত্রে তাদের মত বরকত পাওয়ারও আশা করি; কোন একটা কাজও কি আমরা তাঁদের মত করি? যদি করতাম, তাহলে বিজয় ও সফলতা অবশ্যই আমাদের পদ চুম্বন করতে বাধ্য হত। হে খোদা, তুমি আমাদেরকে সাহাবায়ে কেরামের পদাংক অনুসরণ করার তৌফিক দান কর। আমীন।

উৎসঃ যে গল্পে হৃদয় গলে-১ | পৃষ্ঠা-৯১

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

07 Oct, 02:15


গুনাহে পতিত হওয়ার কারণসমূহ
━━━━━━ • পর্ব - ০৪ • ━━━━━━

ইমাম গাযযালী রহিমাহুল্লাহ বলেন, জেনে রাখ, কলব হলো দূর্গের মত। আর শয়তান এমন শত্রু, যে দূর্গের ভেতর প্রবেশ করতে চায়। তারপর সে তাদেরকে পরিচালিত করে কর্তৃত্ব করতে চায়। আর দূর্গ রক্ষা করা যাবে না যদি দূর্গের ফটক, প্রবেশপথ এবং ছিদ্রের স্থানগুলোতে পাহারাদারি না করা হয়। আর ফটক ও দরজার পাহারাদারি সে করতে পারবে না, যে তা না জানে। সুতরাং ক্বলবকে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে রক্ষা করা আবশ্যক এবং প্রত্যেক মুকাল্লিফ ব্যক্তির জন্য ফরজে আইন। আর যে জিনিস ব্যতীত ওয়াজিব পর্যন্ত পৌঁছা যায় না তা অর্জন করাটাও ওয়াজিব। শয়তানকে কলবের ভেতরে প্রবেশ করা থেকে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না তার প্রবেশপথের ব্যাপারে অবগত না হওয়া যায়। সুতরাং প্রবেশপথ জানাটাও ওয়াজিব। আর শয়তান ক্বলবে প্রবেশ করার পথ ও রাস্তা হলো বান্দার অভ্যাস, স্বভাব বা দোষগুণ। আর সেগুলো অনেক। তন্মধ্যে কিছু নিম্নবর্ণিত-

ক্রোধ ও শাহওয়াত: মানুষ যখন রাগান্বিত হয় তখন শয়তান তাকে নিয়ে খেলাধুলা করে, যেমনিভাবে ছোট বাচ্চারা বল নিয়ে খেলাধুলা করে।

লোভ-লালসা: বান্দা যখনই কোনো জিনিসের লোভ করে বা কোনো জিনিসের প্রতি লালায়িত হয় তখনই তার লোভ তাকে অন্ধ ও বধির করে দেয়। তাই শয়তান লোভীকে তার শাহওয়াত তথা কামনা-বাসনার দিকে পৌঁছার প্রতিটি জিনিসকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ পায়, যদিও তা গর্হিত ও ফাহেশা কাজ হয়ে থাকে।

খাবারে পরিতৃপ্ত হওয়া/পেট ভরে খাওয়া: খানা স্বচ্ছ হালাল হওয়া সত্ত্বেও পরিতৃপ্ত হয়ে আহার করলে শাহওয়াত শক্তিশালী হয়ে যায়। আর এটিই হলো শয়তানের অস্ত্র।

কোনো কাজের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করা এবং ধীরস্থিরতা ও সাবধানতা অবলম্বনকে পরিহার করা: যখনই কোনো কাজের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ার আশ্রয় নেওয়া হয় শয়তান তখন মানুষের মাঝে তার অনিষ্টতার আমদানি করে থাকে। অথচ তা ব্যক্তি জানতেও পারে না। বুঝতেও পারে না।

কৃপণতা করা ও দারিদ্রের ভয় করা: কেননা, কৃপণতা এবং দারিদ্রের ভয় করার কারণে ব্যক্তি দান ও খরচ করতে বাঁধাগ্রস্ত হয়। এগুলো তাকে জমিয়ে পঞ্জিভূত করে রাখতে উদ্বুদ্ধ করে।

❍ মত-পথ ও মাজহাব এবং নিজের খেয়াল খুশির ব্যাপারে পক্ষপাতিত্ব করা। বিরোধীদের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করা। তাদের দিকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে চাওয়া। এগুলো এমন বিষয়, যা ইবাদতকারী ও ফাসাদকারী সকলকে ধ্বংস করে দেয়।

❍ মুসলিমদের ব্যাপারে বদধারণা বা কৃধারণা পোষণ করা, অতএব এর থেকে দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি।

ক্বলবের ভেতর শয়তান প্রবেশ করার এসকল দরজা ও ফটকগুলো বন্ধ করাটা মানুষের জন্য জরুরি। আর জিকরুল্লাহ এসকল দরজা ও ফটক বন্ধ করতে সাহায্য করে।

সুতরাং আমরা বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করব। সর্বাবস্থায় জিকির করলে শয়তানের চক্রান্ত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। নেক আমল করার প্রতি মন আকৃষ্ট হবে।

০৪। খারাপ বন্ধু-বান্ধব ও সহপাঠি

গুনাহে লিপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তারকারী বিষয়ের মাঝে অন্যতম হলো খারাপ বন্ধু ও অসৎ সঙ্গ। কেননা, খারাপ সঙ্গী তার সৎ সঙ্গীর সামনে পাপ ও গর্হিত কাজগুলোকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে। আর মানুষ তার সাথির দ্বারাই প্রভাবিত হয়। আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: যেমন-

আবু মুসা আশআরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীসে রয়েছে। তিনি বলেন:

"সৎ সঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর দৃষ্টান্ত সুগন্ধি বিক্রেতা ও হাপরে ফুতকারকারী ব্যক্তির ন্যয়। সুগন্ধি বিক্রেতা হয়ত সে তোমাকে কিছু সুগন্ধি দিবে অথবা তুমি তার কাছ থেকে সুগন্ধি ক্রয় করবে কিংবা তুমি তার কাছ থেকে উত্তম ঘ্রাণ পাবে। আর হাপরে ফুতকারকারী হয়ত সে তোমার কাপড়কে জালিয়ে দেবে অথবা তুমি তার কাছ থেকে পাবে দুর্গন্ধ।

সুতরাং খারাপ ব্যক্তির সাহচর্য কামারের কাছে সাহচর্য গ্রহণের মত, যে হাপরে হাওয়া ভরে যাতে সে লোহার তৈজসপত্র ইত্যাদি বানাতে পারে। তার আগুন থেকে কেবল তুমি খারাপ জিনিসই পাবে। হাপরের কাছে গেলে, তার আগুন তোমার কাপড়কে জালিয়ে দেবে। অথবা তার থেকে তুমি ধুয়া ও বিশ্রী গন্ধ পাবে। আর ফাসাদপ্রবন ও খারাপ লোকের সাহচর্য হয়ত তোমাকে খারাপকাজে অভ্যস্ত করে তুলবে, অথবা তোমাকে খারাপের দিকে পরিচালিত করে নিয়ে যাবে, কিংবা তুমি তার কাছ থেকে এমন কিছু শুনবে যা ক্ষতিকর ও উপকারহীন। ফলে শয়তান তোমাকে বেষ্টন করে নেবে যেভাবে তাদেরকে বেষ্টন করে নিয়েছে। অথবা কমপক্ষে লোকেরা তোমাকে তাদের দলে ও তাদের অনুসরণকারীদের মধ্যে ফেলে দেবে, তাদের মধ্যে গণ্য করবে যদিও তুমি তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নও, তাদের তরিকা ও পথ অবলম্বনকারী নও। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে রহম করেন যারা নেককার সালেহীন ও আহলুল খায়রকে ভালবাসে এবং তাদের সাহচর্য গ্রহণ করে এবং পাপি ও আহলুশ শারকে অপছন্দ করে এবং তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখে।

✦✦ অসম্পূর্ণ | পরবর্তী পর্ব...✍️

🔰 গুনাহ থেকে ফিরে আসুন | পৃষ্ঠা-১০১

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

06 Oct, 02:08


ইস্তিগফারের উপকারিতা
━━━━ • ✿ • ━━━━

১। অধিক ইস্তিগফারের কারণে প্রচুর বর্ষণ হয়। বাগান ও শস্যে ভালো ফসল হয়। নদী-নালা থাকে জীবন্ত।

২। ইস্তিগফারকারীকে আল্লাহ উত্তম সন্তান, সম্পদ ও জীবিকার দ্বারা সম্মানিত করেন।

৩। দীন পালন সহজ হয়। এবং কর্মজীবন হয় সুখের।

৪। আল্লাহ ও বান্দার মাঝে যে দূরত্ব আছে, তা ঘুচে যায়।

৫। ইস্তিগফারকারীর কাছে দুনিয়াকে খুব তুচ্ছ করে দেয়া হয়৷

৬। মানব ও জীন শয়তান থেকে তাকে হিফাযত করা হয়৷

৭। দীন ও ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করা যায়।

৮। আল্লাহর ভালোবাসা অর্জিত হয়।

৯। বিচক্ষণতা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।

১০। দুশ্চিন্তা, পেরেশানি দূর হয়।

১১। বেকারত্ব দূর হয়।

১২। আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য অর্জিত হয়।
তার তাওবার কারণে আল্লাহ আনন্দিত হন।

১৩। মৃত্যুর সময় ফেরেস্তারা তার জন্য সুসংবাদ নিয়ে আসে৷

১৪। হাশরের মাঠে মানুষ যখন প্রচন্ড গরম ও ঘামের মধ্যে থাকবে, তখন ইস্তিগফারকারী থাকবে আরশের ছায়াতলে।

১৫। কিয়ামতের দিন মানুষ যখন অস্থির থাকবে, ইস্তিগফারকারী তখন ডানপন্থী মুত্তাকিনদের দলে থাকবে।

১৬। মন্দ কজ থেকে বেচে থাকা যায়।

১৭। আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণও তার জন্য দু'আ করেন।

উৎসঃ নাযরতুন নাঈম ফি মাকারিমি আখলাকির রাসূলঃ ২/৩০২

• ────── ✾ ────── •
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | AIF | IA
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

03 Oct, 02:26


গুনাহে পতিত হওয়ার কারণসমূহ
━━━━━━ • পর্ব - ০৩ • ━━━━━━

০৩। শয়তান

শয়তানের কুমন্ত্রণা ও বনি আদমকে বিভ্রান্ত করার কঠিন পদক্ষেপের ব্যাপারে কোনো মুসলিম অজানা নয়। আর এই ধারাবাহিকতা তখন থেকেই চলে আসছে, যখন তাকে আমাদের পিতা আদমকে সিজদা করার জন্য আদেশ করা হয়েছিল। তখন সে অহংকার করে ঔদ্ধত্ত হয়ে নিজেকে আদম আলাইহিস সালাম-এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে প্রমাণ করার ঘৃণ্য প্রয়াস চালিয়েছিল। অথচ সে আল্লাহর আদেশকে অমান্য করেছিল। এ ব্যাপারে কুরআন মাজিদে বর্ণিত আছে-

‌قَالَ مَا مَنَعَكَ اَلَّا تَسْجُدَ اِذْ اَمَرْتُكَ‌ ؕ قَالَ اَنَا خَيْرٌ مِّنْهُ‌ ۚ خَلَقْتَنِىْ مِنْ نَّارٍ وَّخَلَقْتَهٗ مِنْ طِيْنٍ

আল্লাহ বললেন, আমি যখন নির্দেশ দিয়েছি তখন তোকে কিসে সিজদা করতে বারণ করল? সে বলল আমি তার চাইতে শ্রেষ্ট। আপনি আমাকে আগুন দ্বারা সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা। (সূরা আ'রাফ; আয়াত ১২)

ফলে সে আল্লাহর হুকুম লঙ্ঘনের কারণে বিতাড়িত হওয়ার যোগ্য এবং অভিশপ্ত হলো। যেমন আল্লাহ তাআলা কালামে পাকের মাঝে বলেন-

قَالَ اخْرُجْ مِنْهَا مَذْءُوْمًا مَّدْحُوْرًا ‌ؕ لَمَنْ تَبِعَكَ مِنْهُمْ لَاَمْلَــٴَــنَّ جَهَنَّمَ مِنْكُمْ اَجْمَعِيْنَ

বের হয়ে যা এখান থেকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে। তাদের যে কেউ তোর পথেচলবে, নিশ্চয় আমি তোদের সবার দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করে দিব। (সূরা আ'রাফ; আয়াত ১৮)

আল্লাহর দুশমন আরও বেশি পরিমাণ ঐদ্ধত্ত হলো। বাড়াবাড়ি করল। বনি আদমকে বিভ্রান্ত করতে ও তাদের মাঝে ফাসাদ ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে ঘোষণা দিয়ে দিল। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হচ্ছে-

قَالَ رَبِّ بِمَاۤ اَغْوَيْتَنِىْ لَاُزَيِّنَنَّ لَهُمْ فِى الْاَرْضِ وَلَاُغْوِيَـنَّهُمْ اَجْمَعِيْنَۙ. اِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِيْنَ

সে বললঃ হে আমার পলনকর্তা, আপনি যেমন আমাকে পথ ভ্রষ্ট করেছেন, আমিও তাদের সবাইকে পৃথিবীতে নানা সৌন্দর্যে আকৃষ্ট করব এবং তাদের সবাইকে পথভ্রষ্ঠ করে দেব। আপনার মনোনীত বান্দাদের ব্যতীত। (সূরা হিজর; আয়াত ৩৯-৪০)

ঐ সময় থেকে শয়তানের একমাত্র কাজ হলো বনি আদমকে বিভ্রান্ত করা। বিভিন্ন বাহানা ইত্যাদির মাধ্যমে আদমসন্তানকে সত্যপথ সিরাতুল মুস্তাকিম থেকে বিচ্যুত করে জাহান্নামের পথে নিয়ে যাওয়া। এ কারণে মাওলায়ে কারীম শয়তানের ষড়যন্ত্র ও কূটচাল হতে আমাদেরকে বেঁচে থাকার ব্যাপারে সাবধান করে দিয়েছেন এবং তার অনুসরণ করা থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

يٰبَنِىْۤ اٰدَمَ لَا يَفْتِنَـنَّكُمُ الشَّيْطٰنُ كَمَاۤ اَخْرَجَ اَبَوَيْكُمْ مِّنَ الْجَـنَّةِ يَنْزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْءاٰتِهِمَا ؕ اِنَّهٗ يَرٰٮكُمْ هُوَ وَقَبِيْلُهٗ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ‌ ؕ اِنَّا جَعَلْنَا الشَّيٰطِيْنَ اَوْلِيَآءَ لِلَّذِيْنَ لَا يُؤْمِنُوْنَ

হে বনী-আদম শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে; যেমন সে তোমাদের পিতামাতাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছে এমতাবস্থায় যে, তাদের পোশাক তাদের থেকে খুলিয়ে দিয়েছি যাতে তাদেরকে লজ্জাস্থান দেখিয়ে দেয়। সে এবং তার দলবল তোমাদেরকে দেখে, যেখান থেকে তোমরা তাদেরকে দেখ না। আমি শয়তানদেরকে তাদের বন্ধু করে দিয়েছি, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না। (সূরা আ'রাফ; আয়াত ২৭)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন-

يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّبِعُوْا خُطُوٰتِ الشَّيْطٰنِ‌ ؕ وَمَنْ يَّتَّبِعْ خُطُوٰتِ الشَّيْطٰنِ فَاِنَّهٗ يَاْمُرُ بِالْـفَحْشَآءِ وَالْمُنْكَرِ‌

হে ঈমানদারগণ, তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। যে কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তখন তো শয়তান নির্লজ্জতা ও মন্দ কাজেরই আদেশ করবে। (সূরা নূর; আয়াত ২১)

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন-

اِنَّ الشَّيْطٰنَ لَـكُمْ عَدُوٌّ فَاتَّخِذُوْهُ عَدُوًّا ؕ اِنَّمَا يَدْعُوْا حِزْبَهٗ لِيَكُوْنُوْا مِنْ اَصْحٰبِ السَّعِيْرِؕ

শয়তান তোমাদের শত্রু; অতএব তাকে শত্রু রূপেই গ্রহণ কর। সে তার দলবলকে আহবান করে যেন তারা জাহান্নামী হয়। (সূরা ফাতির; আয়াত ৬)

আর শয়তান মানুষের ক্বলবে প্রবেশ করে তাকে ওয়াসওয়াসা দেবার জন্য প্রবেশপথ রয়েছে।

✦✦ অসম্পূর্ণ | পরবর্তী পর্ব...✍️

🔰 গুনাহ থেকে ফিরে আসুন | পৃষ্ঠা-১০১

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

01 Oct, 02:16


আমাদের আমলের মিছাল (দৃষ্টান্ত)
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

যে সমস্ত আমল আমরা আল্লাহর দরবারে পেশ করি তার মিছাল তো হলো সেই গ্রাম্য ব্যক্তির কলসভরা পানির মত! দেহাতি যাচ্ছে বাগদাদে বাদশার দরবারে। ভাবছে, বাদশাহর জন্য কি তোহফা নেয়া যায়! শেষে ভাবলো, বাগদাদের বাদশাহ আমাদের গ্রামের এমন মিঠা পানি কোথায় পাবে, চলো এককলস পানি নিয়ে যাই! এত দূরের পথ যেতে যেতে ধুলোবালি পড়ে পড়ে সেই পানি গেলো পচা-গান্দা হয়ে। বাদশাহর দরবারে সালাম পেশ করে দেহাতি বলে, জাহাঁপানাহ! আমাদের গাঁয়ের ছোট নদী, তার পানি যেমন ছাফ তেমন মিঠা। তাই আপনার জন্য এককলস পানি তোহফা এনেছি। বাদশাহ দেখেন, পানি যেমন গাদলা তেমন দুর্গন্ধওয়ালা। তবু তিনি খুশি যাহির করে তোহফা কবুল করলেন, যাতে বেচারা দেহাতি মনে কষ্ট না পায়। তারপর বাদশাহ ঐ মটকা ভরে সোনা-চাঁদি দান করলেন, আর লোকদের বললেন, তাকে দজলানদীর কিনার দিয়ে নিয়ে যাও। দজলা নদীর পানি দেখে দেহাতি তো হয়রান! মটকা-ভরা সোনা-চাঁদি তাহলে মটকা-ভরা পানির বদলা নয়! শুধু বাদশাহর দান ও মেহেরবানি! সব কারিশমা মুহব্বতের! এ ঘটনা বয়ান করে হযরত থানবী (রাহ.) বলেন, ঐ দেহাতি আসলে তো উপযুক্ত ছিলো কঠিন শাস্তির, কিন্তু বাদশাহ মটকা-ভরা পানির বদবূ দেখেননি, দেখেছেন দেহাতির দিলভরা মুহব্বত। বেচারা তুচ্ছ গান্দা জিনিস এনেছে, কিন্তু মুহব্বতের সঙ্গে এনেছে। বেচারার কাছে ঐ পচা-গান্দা পানি ছাড়া আছেই বা কী! সুতরাং সে এনেছে তার মত, আমি দান করবো আমার মত! তো দুনিয়ার এক মামুলি বাদশাহ যখন ইখলাছ ও মুহব্বতের এত কদর করেন তখন সকল বাদশাহের বাদশাহ যিনি তাঁর কাছে ইখলাছ ও মুহব্বতের কত দাম হতে পারে! আমাদের আমল তো ঐ দেহাতির পচা পানির চেয়েও গান্দা। আমাদের আমলের বদলা তো হওয়ার কথা আযাব ও শাস্তি। কিন্তু দেখুন দয়াময়ের দয়া! বান্দা যদ্দুর পেরেছে পচা-গান্দা আমল করেছে, কিন্তু ইখলাছ ও মুহব্বতের সঙ্গে করেছে। তাই তিনি পচা-গান্দা ইবাদতের ‘মটকা’ কবুল করে নিলেন এবং তা ভরে দিলেন ছাওয়াব দ্বারা, জান্নাতের সোনা-চাঁদি দ্বারা! কত মেহেরবান তুমি হে আল্লাহ! কত অসীম তোমার দয়া ও রহমত হে আল্লাহ! তাই তো কোরআনে ইরশাদ হয়েছে- يبدل الله سيئاتهم حسنات (আল্লাহ তা‘আলা তাদের সাইয়েআতকে হাসানাত দ্বারা (মন্দ আমলকে নেক আমল দ্বারা) বদল করে দেবেন। খোলাছা তো খোলাছা কালাম এই যে, আমরা যেন আমল করতে থাকি এবং আল্লাহর রহমতের উপর ভরসা করতে থাকি, আর নিজের নফসানিয়াতের কারণে ভয় করতে থাকি এবং ইস্তিগফার করতে থাকি; তাহলে আল্লাহ তা‘আলা মাফ করবেন, কবুল করবেন এবং রহম করবেন। আরো মুখতছর কথা হলো, আমলের উপর ‘নায’ না করি, আবার আমল থেকে ‘বে-নেয়ায’ না হই, বরং আল্লাহর দরবারে টুটা-ফাটা আমলের ‘নেয়ায’ পেশ করতে থাকি। ইনশাআল্লাহ তিনি মানযিলে মাকছূদে পৌছে দেবেন।

❑❑ Source Link

━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | AIF | IA
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

30 Sep, 02:02


সুফিতন্ত্রের যাচাই-বাছাই
━━━━ • পার্ট - ০২ • ━━━━

এ ধরনের কথা যারা বলে, তুমি তাদের থেকে বেঁচে থাকো। তাদের কথা শুনে বিভ্রান্ত হয়ো না। অবশ্য তারা কিছু 'সালাফ'-এর দুনিয়াবিমুখতা দিয়ে এ ব্যাপারে উদাহরণ দিতে চায়। কিন্তু সেই অবস্থা এখন আর নেই। মানুষের আচরণ, মানুষের ধৈর্য একেবারে পাল্টে গেছে। সুতরাং মূর্খ সুফিদের বিরোধিতা যেন তোমাকে উদ্বিগ্ন না করে। যেমন, আবু বকর আল-মারুজি বর্ণনা করেন, কথাপ্রসঙ্গে আহমদ ইবনে হাম্বল রহ.-কে একবার বিয়ের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করতে শুনলাম। এ কথা শুনে আমি তাকে বললাম, হজরত ইবরাহিম ইবনে আদহাম রহ. বলেছেন...। আমি কথাটি শেষ করার আগেই আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. আমাকে ধমক দিয়ে বলে উঠলেন, কী বলো, আমি তোমার কাছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবিদের অবস্থা বর্ণনা করছি আর তুমি নিয়ে আসছ নব আবিষ্কৃত পথ? চুপ করো।ভালোভাবে জেনে রাখো, কোনো ব্যক্তি যদি জীবনযাপনের আবশ্যক উপকরণগুলো স্বেচ্ছায় ব্যবহার না করে বলে, আমি খাব না, পান করব না, রোদের তাপ থেকে দূরে সরে যাব না কিংবা ঠান্ডায় উষ্ণতার আশ্রয় নেব না, সর্বসম্মতিক্রমে সে ব্যক্তি গোনাহগার হবে। এমনিভাবে যার অধীনে পরিবার-পরিজন রয়েছে, সে যদি বলে, আমি উপার্জন করব না। তাদের রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহ তা'আলার ওপর। এরপর যদি পরিবারের লোকদের ক্ষুধার্ত থাকতে হয় কিংবা আর্থিক কষ্ট করতে হয় তাহলে সেই লোক গোনাহগার হবে। যেমনটি হাদিসে এসেছে-

كفى بالمرء إثما أن يضيع من يقوت

মানুষের গোনাহগার হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, নিজের সক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।

জেনে রেখো, গুরুত্বের সাথে উপার্জন করা নিজের হিম্মত ও মনোবল বাড়িয়ে দেয়, অন্তরকে মুক্ত ও প্রফুল্ল রাখে, মাখলুকের ওপর কোনো আশা করতে হয় না। তাছাড়া তোমার নিজের মানবিক স্বভাব-তবিয়তের একটা অধিকার আছে। তার বৈধ চাহিদাগুলো পূরণ করা উচিত। শরিয়ত এ ক্ষেত্রে আমাদের জন্য বর্ণনা করেছে-

إن لنفسك عليك حقا وإن لعينك عليك حقا

তোমার ওপর তোমার নফসের অধিকার রয়েছে। অধিকার রয়েছে তোমার চোখের।

নতুবা অর্থহীন লোকদেখানো দুনিয়াবিমুখতার উদাহরণ হলো সেই কুকুরের মতো, যে রাতের অন্ধকারে কাউকে চেনে না। যাকে দেখে তার সাথেই হাঁটতে শুরু করে। ঘেউ ঘেউ করে। লোকটি যদি কোনো রুটির টুকরো ছুড়ে মারে তখন চুপ হয়ে যায়।

এই নীতিগুলো ভালোভাবে বুঝে নাও। একটি সুন্দর জীবনযাপনের জন্য ভারসাম্যপূর্ণ এই বুঝাটা খুবই জরুরি।

🔰 হৃদয়ের দিনলিপি | পৃষ্ঠা-১২৪

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

30 Sep, 02:02


সুফিতন্ত্রের যাচাই-বাছাই
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

চিন্তা করে দেখলাম, মানুষের সম্পদ সংরক্ষণ করাও একটি আবশ্যক কর্তব্য। অথচ এদিকে মূর্খ সুফিরা বলে বেড়ায়, হাতে যা আছে তা দান করে আল্লাহর ওপর ভরসা করো।

এটি আমাদের শরিয়তে বৈধ নয়। কারণ, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাব ইবনে মালিক রা.-কে বলেছিলেন-

أمسك عليك بعض مالك

তুমি নিজের কাছে তোমার কিছু সম্পদ রেখে দাও (সম্পূর্ণ দান করো না)।

এবং সাদ রা.-কে বলেছিলেন-

لأن تترك ورثتك أغنياء خير من أن تتركهم عالة يتكففون الناس.

তুমি তোমার পরিবারকে নিঃস্ব অবস্থায় রেখে যাবে আর তারা মানুষের দুয়ারে চেয়ে বেড়াবে-এর চেয়ে তুমি তোমার উত্তরাধিকারীদের স্বচ্ছল অবস্থায় রেখে যাওয়াই ভালো।

এখন কোনো মূর্খ যদি এসে প্রশ্ন উঠায়- তবে যে হজরত আবু বকর রা. তার সকল সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান করে দিয়েছিলেন! এর কী উত্তর হবে?

উত্তরে আমরা বলব, হজরত আবু বকর রা. ছিলেন এক মহৎ হৃদয়ের মানুষ এবং ছিলেন একজন দক্ষ ব্যবসায়ী। তিনি তার সকল সম্পদ দিয়ে দিলেও তার জন্য সম্ভব ছিল কারও থেকে ঋণ করে ব্যবসার মাধ্যমে জীবনযাপন করতে পারা। যার এ ধরনের ধৈর্য, হৃদয়, সক্ষমতা ও দক্ষতা রয়েছে, তার জন্য আমি সকল সম্পদ দান করে দেওয়াও কিছু মনে করি না। কিন্তু এটা তার জন্য অবশ্যই নিন্দনীয় হবে, যার জীবনযাপনের আর কোনো মাধ্যম ও পুঁজি নেই। কারণ, তখন সে নিজের সম্পদ হারিয়ে অন্যের ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। মানুষের দয়া অনুগ্রহ ও সহানুভূতির ওপর চলতে বাধ্য হবে। তার অন্তর তখন সর্বক্ষণ মাখলুকের দিকে ঝুঁকে থাকবে। তাদের মাঝেই তার আশা-নিরাশা ঘুরপাক খেতে থাকবে। যখনই কেউ তার দরজায় কড়া নাড়বে, তার অন্তর প্রত্যাশার চাপে তিরতির করতে থাকবে, এই বুঝি রিজিক এসে গেল। কেউ বুঝি কিছু নিয়ে এলো। নাউজুবিল্লাহ। সক্ষম কোনো ব্যক্তির জন্য এটি খুবই কুৎসিত একটি বিষয়।

আর যে ব্যক্তি উপার্জনে সক্ষম নয়, তার সকল সম্পদ দান করা তো আরও খারাপ, অবৈধ। কারণ, এরপর তাকে সব সময় মানুষের হাতের দিকে চেয়ে থাকতে হবে। তাদের দয়া-অনুগ্রহের ওপর নির্ভর করতে হবে।

এটি একটি অপদস্থতার পথ। কখনো কখনো এটিকে দুনিয়াবিমুখতা বলে সুশোভন করার চেষ্টা করা হয়। অথচ আসলেই এটি একটি অপদস্থতার পথ। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম লাঞ্ছনার অবস্থা হলো, তারা ফকির মিসকিন ও নিঃস্বদের সাথে জাকাতের সম্পদে ভিড় বাড়িয়ে দেবে। তুমি প্রথম যুগের অবস্থার দিকে তাকাও। সেখানে এমন কাউকে পাবে না, যেমনটি আজকের যুগের মূর্খ সুফিগুলো করে বেড়ায়। আগেই উল্লেখ করেছি, তারা নিজেরা উপার্জন করেছেন এবং পরবর্তীদের জন্য সম্পদ রেখে গেছেন।

তাছাড়া প্রথম যুগের দিকে তাকিয়ে দেখো, সেখানে কেউ তাদের নিজেদের জন্য 'সুফি' পরিভাষা ব্যবহার করেননি। তাই শরিয়তে যে ধরনের আচরণ ও পরিভাষা বিদ্যমান ছিল না, সে ধরনের বিষয় থেকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। নিশ্চয় আমাদের এই দ্বীন অসম্পূর্ণ নয় যে, নতুন কোনো বিষয় এসে তাকে পূর্ণতা দান করবে।

জেনে রেখো, মানুষের শরীর হলো একটি জীবন্ত বাহনের মতো। তাকে খাইয়ে-পরিয়ে রাখতে হয়। তার পরিচর্যা করতে হয়। কিন্তু তুমি যদি এ ব্যাপারে অবহেলা করো তাহলে বুঝতে হবে, তুমি নবী ও সাহাবিদের জীবন ও জীবনাচার সম্পর্কে সামান্যতমও অবগত নও।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন খুবই প্রিয় ও বিখ্যাত সাহাবি হজরত সালমান ফারসি রা.। তাকে দেখা যেত যে, তিনি খাবার কাঁধে নিয়ে ঘুরতেন। তাকে একবার প্রশ্ন করা হলো, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একজন সাহাবি হয়ে আপনি এমন কাজ করেন?

জবাবে তিনি বললেন-

إن النفس إذا أحرزت قوتها اطمأنت.

নফস যখন তার খাদ্য সম্পর্কে নিশ্চিন্ত হয়, তখন সে শান্ত থাকে। বিখ্যাত তাবেয়ি হজরত সুফিয়ান সাওরি রহ. বলেন-

إذا حصلت قوت شهر فتعبد.

তোমার যদি অন্তত একমাসের খাদ্য জমা থাকে তাহলে তুমি অধিক নফল ইবাদতে সময় দিতে পারো।

আবার কিছু লোক আছে, নিছক কথার দাবি ছাড়া তাদের কোনো দলিল নেই। তারা বলে, এটা তো আল্লাহ তাআলার 'রাজ্জাক' হওয়ার ক্ষেত্রে সন্দেহ পোষণ করা কিংবা তার ওপর 'তায়াক্কুল'-এর বিরোধী কথা।

✦✦ অসম্পূর্ণ | বাকী অংশ...✍️

🔰 হৃদয়ের দিনলিপি | পৃষ্ঠা-১২৪

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

29 Sep, 02:27


হাদীসে বর্ণিত একটি গুরুত্বপূর্ণ দুআ

أَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ خَطِيْئَتِيْ وَجَهْلِيْ وَإِسْرَافِيْ فِيْ أَمْرِيْ، وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّيْ، أَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لِيْ هَزْلِيْ وَجِدِّيْ وَخَطَاىَ وَعَمْدِيْ، وَكُلُّ ذَلِكَ عِنْدِيْ

হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার ভুল-ত্রুটিজনিত গুনাহ, আমার অজ্ঞতা, আমার বাড়াবাড়ি এবং আর যা আপনি আমার চেয়ে বেশি জানেন। হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার হাসি-ঠাট্টামূলক গুনাহ, আমার প্রকৃত গুনাহ, আমার অনিচ্ছাকৃত গুনাহ এবং ইচ্ছাকৃত গুনাহ, আর এসব গুনাহ যা আমার মধ্যে আছে। (সহীহ বুখারী: ৬৩৯৯)

উৎসঃ গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার ৭০ টি আমল ও কৌশল | পৃষ্ঠা-৪

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

29 Sep, 01:50


প্রয়োজনীয় কাজে নারীদের সম্মুখীন হওয়া
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

এক ব্যক্তি লিখেছে,

'কিছু জায়গা এমন আছে যেখানে পুরুষকে নারীদের সম্মুখীন হতে হয়। যেমন নারীদের ব্যবহার্য জিনিষ-পত্র বিক্রেতা, অলঙ্কার ব্যবসায়ী, হাসপাতালের ডা. কমকর্তা কর্মচারীদের ক্ষেত্রে যা হয়। এসব ক্ষেত্রে বদনজর থেকে বাঁচার উপায় কি হতে পারে জানালে কৃতজ্ঞ হব।'

এ জাতীয় লোকেরা আসলেও বড় বিপদে থাকে। কারণ সর্বদাই তাদেরকে নারীদের সম্মুখীন হতে হয়। যার কারণে বদনজর থেকে বাঁচা কঠিন হয়। তবে আল্লাহ মানুষকে এমন কোন কাজের নির্দেশ দেননি যার উপর আমল করা অসম্ভব।

প্রথম কথা এটা বুঝে নাও যে, কোন নারীকে এমনিতেই শুধু দেখা এবং তার প্রতি দৃষ্টি দেয়া মূলত গোনাহের কাজ ছিল না। বরং দৃষ্টি দেয়া তখন গোনাহ যখন তা ভোগ করার উদ্দেশ্যে হয় বা বাস্তবে ভোগ করা হয়। এ কারণেই যদি কোন কাজের ক্ষেত্রে পর নারীর সাথে কথা-বার্তার প্রয়োজন দেখা দেয় এবং তাতে ভোগের ইচ্ছা না থাকে এবং কার্যতও ভোগ না করে তাহলে এই দেখা হারাম নয়। কিন্তু এটা নির্ণয় করা যেহেতু কঠিন কাজ যে, কোথায় ভোগের ইচ্ছা আছে আর কোথায় নেই কিংবা কার্যত কখন ভোগ হয়ে যাচ্ছে আর কখন হচ্ছে না, এজন্য সরাসরি বেগানা নারীদের দিকে তাকাতেই নিষেধ করে দেয়া হয়েছে। এবং একারণেই কুরআনে কারীমেও চোখ অবনত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কারণ জায়েয নাজায়েয ক্ষেত্র নির্ণয় যেহেতু অনেক কঠিন তাই সহজ উপায় হল কখনো সেদিকে দৃষ্টিই ওঠাবে না।

❏❏ ইচ্ছা করে তাকাবে না

যেসব লোককে প্রায়ই নারীদের, সম্মুখীন হতে হয় তাদের প্রতি প্রথম নির্দেশ হল, তোমরা দৃষ্টি অবনত রাখ। কারণ তাদের সঙ্গে জরুরী কাজ সারার জন্য তাকানো জরুরী নয়। অনেক মানুষকে আমি নিজে দেখেছি তারা কাজ করতে থাকেন কিন্তু তাদের দৃষ্টি উপরে ওঠে না। দৃষ্টি নিচে রেখেই তারা কাজ সেরে নেন। যদি অগত্যা কখনও দৃষ্টি উঠাতেই হয় তবে তা ভোগ থেকে অবশ্যই মুক্ত রাখবে। আর আল্লাহর কাছে দোয়া করবে; হে আল্লাহ, আমাকে হেফাজত করুন। আর যদি কখনো ভোগের ইচ্ছা এসে যায় তবে সঙ্গে সঙ্গে তাওবা ও ইস্তেগফার করবে।

📚 ইসলাহী মাজালিস | পৃষ্ঠা-১০৮

• ────── ✾ ────── •
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | AIF | IA
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

28 Sep, 10:05


ঠাট্টা-বিদ্রুপের ভয়াবহ পরিণাম
━━━━━ • পার্ট - ০২ • ━━━━━━

আল্লাহ তায়ালা তো বান্দার সব আমলই সর্বদা প্রত্যক্ষ করছেন। তাইতো ইরফানের দেয়া সকল উপহাস ও ব্যঙ্গ বিদ্রূপকে রশিদ অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে মেনে নিলেও তিনি হয়তো তা সইতে পারেন নি। ফলে ইরফানকে এমন এক মারাত্মক দূর্ঘটনার শিকার হতে হল যার কারণে মৃত্যু পর্যন্ত কোন দিন সে সমাজে মাথা উঁচু করে হাঁটতে পারেনি।

সেদিন ছিল পদার্থ বিজ্ঞানের ব্যবহারিক ক্লাসের দিন। ইরফান তার অন্যান্য সাথীদের নিয়ে বিজ্ঞানাগারে প্রবেশ করে রাসায়নিক দ্রব্য ও এসিড নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করছিল। এমন সময় হঠাৎ সে টেবিলের উপর রাখা গরম পানির পাত্রের সাথে ধাক্কা খেল। এতে পাত্রটি নীচে পড়ে গেল এবং ফুটন্ত পানি ছিটকে এসে তার চেহারায় পড়লো। সাথে সাথে দু'হাত দিয়ে ইরফান তার চেহারা ঢেকে ফেলল।

ইরফানকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলো। দেখা গেল, প্রচন্ড গরম পানি ফুটফুটে সুন্দর চেহারাটিকে সীমাহীন কুৎসিত কালো চেহারায় পরিণত করে দিল। ইরফানের আব্বা চেহারার স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনার জন্য বিপুল অর্থ খরচ করলেন। কিন্তু কিছুতেই কোন কাজ হলো না।

অহংকারী ইরফান তার এই চেহারা বিকৃতি কিছুতেই মেনে নিতে পারলো না। ফলে বাড়ীতে বসেই সময় কাটাতে লাগলো সে। এভাবে দু'বছর চলে গেল। ইতিমধ্যে সে শুনলো, রশিদ মেট্রিক পরীক্ষায় বোর্ডে প্রথম হয়েছে এবং তার অন্যান্য সাথীরাও কলেজে ভর্তি হয়েছে।

একদিন ইরফান তার পিতাকে বললো তাকে স্কুলে ভর্তি করে দিতে। তার কথা মত পিতা তাকে স্কুলে ভর্তি করে দিলেন। স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর ইরফান এবার কারো সাথে কথা বলে না। এমনকি বিরতির সময়েও ক্লাসের বাইরে যায় না। একদিন ক্লাস শেষে বইপত্র নিয়ে সে ক্লাসরুম থেকে বের হচ্ছিল। হঠাৎ তার কানে ভেসে এল "কে যেন বলছে, ভাই! এমন বিশ্রি চেহারা তো আর কোনদিন দেখিনি।" আরেকজন বলছে, "আমি তো এই কুৎসিত চেহারা দেখে ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম।" এ কথাগুলো শুনে ইরফানের মনে হলো, কে যেন তার হৃদয়ে একের পর এক বর্শার আঘাত করে চলেছে।

ইরফান আজ বুঝতে পারলো, কাউকে উপহাস কিংবা বিদ্রুপ করলে হৃদয়ে কি পরিমাণ ব্যথা অনুভূত হয়। সাথে সাথে সে এ-ও বুঝলো যে, আমার এই করুণ পরিণতি নিশ্চয়ই ঐ নবাগত কালো ছাত্রটিকে উপহাস ও ঠাট্টা বিদ্রুপেরই ফল। যাকে দেখে সে মিঃ নিগ্রো বলে সম্বোধন করতো। তাই পাঠক-পাঠিকা ভাইবোনদের নিকট লেখকের পক্ষ থেকে বিনীত অনুরোধ এই যে, কেউ গরীব কিংবা কালো হলে অথবা যে কোন দিক দিয়ে নীচু স্থরের হলে তাকে অহংকার বশতঃ তাচ্ছিল্যের চোখে না দেখি এবং তাকে নিয়ে কোনদিন কখনো যেন উপহাস না করি। আল্লাহ্ আমাদের তৌফিক দিন। আমীন। ছুম্মা আমীন।

🔰 যে গল্পে হৃদয় গলে-১ | পৃষ্ঠা-৮৩

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

28 Sep, 10:05


ঠাট্টা-বিদ্রুপের ভয়াবহ পরিণাম
━━━━━━ • ✿ • ━━━━━━

পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, "হে বিশ্বাসী বান্দাগণ! তোমাদের কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা সে উপহাসকারিনী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাকে মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম।"

এ আয়াত পূর্ববর্তী বুযুর্গ ও মনীষীদের অন্তরে অসাধারণ প্রভাব বিস্তার করেছিল। যেমন, হযরত আমর বিন শোরাহ বিল (রাহঃ) বলেন, কোন ব্যক্তিকে বকরীর স্তনে মুখ লাগিয়ে দুধ পান করতে দেখে যদি আমার হাসির উদ্রেক হয়, তবে আমি আশংকা করতে থাকি যে, না জানি আমিও এরূপ হয়ে যাই। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, কোন কুকুরকেও আমার উপহাস করতে ভয় লাগে। এ জন্য যে, আমিও কিনা আবার কুকুরে পরিণত হয়ে যাই (কুরতবী)

যা হোক, এবার আমরা ঠাট্টা ও ব্যাঙ্গ বিদ্রুপের করুণ পরিণতি সম্পর্কীয় একটি ঘটনা শুনি।

সুন্দর-সুশ্রী সুঠাম দেহের অধিকারী ফুটফুটে এক ছেলে। নাম ইরফান। পড়াশুনায় মোটামুটি ভাল। তার পিতা ইনকাম টেক্সের একজন উকিল। সেই সুবাদে অভাব কি জিনিষ তা কোনদিন সে টের পায়নি। কিন্তু তার একটি মারাত্মক দোষ এই ছিল যে, সে সর্বদা অহংকারবোধ নিয়ে চলাফেলা করত এবং গরীব ও মধ্যবিত্ত ছাত্রদের নিয়ে অহর্নিশ উপহাস ও ঠাট্টা বিদ্রুপ করে বেড়াত।

তার সাথে যোগ দিত আরো কয়েকজন ধনীর দুলাল। তারা সকলেই ছিল ইরফানের মতই অহংকারী। তবে ইরফান ছিল সেই দলের নেতা।

একদিন তাদের স্কুলে রশিদ নামের একটি নতুন ছাত্র ভর্তি হল। তার গায়ের রং ছিল অত্যন্ত কালো। ইরফানের কয়েকজন সাথী ছেলেটিকে দেখে দৌঁড়ে এসে তাকে বললো, "আমাদের স্কুলে একজন নতুন ছেলে ভর্তি হয়েছে। তাকে দেখে কেউ কেউ বলছে, সে নাকি আফ্রিকার জঙ্গল থেকে পলায়ন করে এসেছে।"

ইরফান তো সর্বদা এ জাতীয় সংবাদের অপেক্ষাই থাকে। সুতরাং সংবাদ পেয়ে আর দেরী নেই। সাথে সাথে সাথীদের নিয়ে ছুটল ছেলেটিকে দেখার জন্য। ছেলেটিকে দেখেই মনে হল, সে যেন বড় এক শিকার পেয়ে গেল। তাই সে প্রথমেই ছেলেটিকে "মিস্টার নিগ্রো" বলে সম্বোধন করল। (আফ্রিকার কাল বর্ণের লোকদেরকে নিগ্রো বলা হয়)।

ইরফানের এই প্রাথমিক সম্বোধন নবাগত ছাত্র রশীদের হৃদয়কে। মারাত্মক ভাবে আহত করলো। ব্যথায় ভারাক্রান্ত হয়ে উঠল তার হৃদয়- মন। শেষ পর্যন্ত এই ব্যথা তার দু'চোখকে অশ্রু-সজল করে তুললো। টপ। টপ করে দু'ফোটা অশ্রু ইরফানদের সামনেই গড়িয়ে পড়লো। কিন্তু এতে। তাদের মনে একটু দয়া-মায়া সৃষ্টি হয়নি। তারা একের পর এক বিভিন্ন।

বাক্যবানে রশিদের অন্তরকে চৌচির করতে লাগলো। কিন্তু তারা একটি বারের জন্যও চিন্তা করলো না যে, কালো কিংবা ফর্সা হওয়া মানুষের এখতিয়ারভূক্ত কোন জিনিষ নয়। এটা সম্পূর্ণ আল্লাহর ইচ্ছাধীন। তিনি যাকে যেমন চান তেমনই বানান।

যা হোক রশিদ এক পর্যায়ে কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো, ভাই আমার নাম তো রশিদ। আমাকে মিঃ নিগ্রো বলে সম্বোধন করছ কেন? তার কথায় ইরফান সহ উপস্থিত সবাই অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো। ইতিমধ্যে তাদের শ্রেণী শিক্ষক আফজাল সাহেব ক্লাসে প্রবেশ করে হাসির কারণ জিজ্ঞাসা করলে ইরফান এ কথা ও কথা বলে পাশ কাটানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু পাশের একটি ছোট ছেলে বলে উঠলো, স্যার সে মিথ্যা বলছে। রশিদ ভাই কালো হওয়ার কারণে তাকে নিয়ে ওরা হাসছিল। একথা শুনতেই আফজাল সাহেব বেত নিয়ে ইরফান কে মারার জন্য উদ্যত হলেন। কিন্তু রশিদ সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে দরদ মাখা কণ্ঠে বললো, " স্যার! অনুগ্রহ করে ইরফান ভাইকে ক্ষমা করে দিন।" এ কথায় স্যারের রাগ থেমে গেলে তিনি ইরফানকে ক্ষমা করে দিলেন।

এ আচরণের পর যেখানে রশিদের প্রতি ইরফানের ভালবাসা ও মমতা বৃদ্ধির কথা ছিল সেখানে শত্রুতা ও বিরোধীতা এসে ভীড় জমাল। কেননা সে যে এক চরম অহংকারী। তার কথা হল যার কারণে স্যার আমাকে মারতে আসলেন তার আর রক্ষা নেই। সুতরাং সে রশিদের চরম শত্রুতে পরিণত হল এবং সেদিন থেকে নিয়মিত তাকে' মিঃ নিগ্রো' বলে সম্বোধন করতে লাগলো।

রশিদ সীমাহীন ধৈর্যশীল ছেলে বিধায় ইরফানের এ আচরণে মনে দারুণ কষ্ট পেলেও কোন দিন সে এ ব্যাপারে স্যারের নিকট নালিশ করেনি। ফলে ইরফান দিন দিন আরো বেশী বেপরোয়া হয়ে গেল।

✦✦ অসম্পূর্ণ | বাকি অংশ...✍️

🔰 যে গল্পে হৃদয় গলে-১ | পৃষ্ঠা-৮৩

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | DOT | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

28 Sep, 02:15


গুনাহে পতিত হওয়ার কারণসমূহ
━━━━━━ • পর্ব - ০২ • ━━━━━━

☞ আসমায়ি বলেন: আমি জনৈক গ্রাম্য ব্যক্তিকে বলতে শুনেছি, যদি তোমার কাছে মুশকিল হয়ে পড়ে যে, তুমি জানতে পারছ না যে দুটি বিষয়ের কোনটি হিদায়াতের অধিক নিকটবর্তী, তখন তুমি তোমার কামনা-বাসনার নিকটবর্তী যা তার বিরোধিতা কর। কেননা, অধিকাংশ ভুল হয়ে থাকে নফসের কামনা-বাসনার অনুসরণের কারণে।

☞ জনৈক ব্যক্তি হাসান বসরি (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন হে আবু সা'দ! সর্বোত্তম জিহাদ কোনটা? তিনি বললেন: তোমার নফসের সাথে তোমার জিহাদ করা।

☞ আবু আলি সাকাফি বলেন, যার কামনা-বাসনা তাকে পরাজিত করে ফেলেছে তার আকল শেষ হয়ে গেছে।

☞ বিশর হাফি হাসান আল ফাল্লাসকে বলেন, যে ব্যক্তি দুনিয়ার শাহওয়াতকে পায়ের নিচে ফেলবে শয়তান তার ছায়া থেকে পৃথক থাকবে। আর যার ইলম তার অন্তরের বাসনার ওপর বিজয়ী হয়েছে সেই হলো (প্রকৃত) ধৈর্যধারণকারী বিজয়ী। আর জেনে রাখ, তোমার কামনা-বাসনার মাঝেই রয়েছে সকল বিপদাপদ। আর এর প্রতিষেধক হলো কামনা-বাসনার বিপরীত চলা।

☞ কেউ বলেন, প্রত্যেক ব্যক্তিই তার সঠিক পথ ও অবস্থার ব্যাপারে জানে। কিন্তু সেই অন্ধ যে তার নফসকে অনুসরণ করে।

কল্যাণকামীরা তাকে মেহনত-মুজাহাদার পরামর্শ দেয়। কিন্তু সে তাদের নসিহত উপদেশ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। অথচ সে জানে ও দেখে।

তার নফস তাকে সঠিক পথ অবলম্বন করা থেকে অন্ধ করে রাখে, এবং সেটি ব্যতীত অন্য সকল কিছুর দোষত্রুটি অবগতি লাভ করে।

অতএব আমাদের জন্য নফসের কামনা-বাসনা থেকে গভীরভাবে বিরত থাকা উচিত এবং খাহেশাতের তরিৎ চাওয়া পাওয়া থেকে দূরে অবস্থান করা উচিত। কেননা, খাহেশাত জাহান্নামের পথ সুগম করে দেয়।

যে কেউ নফসের অনুসরণ করে সে কেবল নিজের মাঝে জিল্লতি ও অপমানই দেখতে পায়। আর কেউ যেন আহলুল হাওয়া অর্থাৎ প্রবৃত্তি পূজারীদের খপ্পরে না পড়ে। কেননা, তারা হলো দুনিয়ার নিকৃষ্ট মানুষ।

০২। জাহালত বা মূর্খতা

জাহালাত বা মূর্খতা মানে হলো, ইলমহীনতা। সুতরাং জাহালাত হলো, নিন্দনীয় ও দোষণীয় বস্তু। বান্দা যেসব কারণে গুনাহে নিমজ্জিত হলো, পাপের আঁধারে ঘুরপাক খায়, তা হলো আল্লাহ তাআলা ও তাঁর আনুগত্যের জন্য যা যা জরুরি-অত্যাবশ্যক তার ব্যাপারে অজানা থাকা। সুতরাং যেই ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্যতা করে সে জাহিল বা মূর্খ। যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন-

اِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللّٰهِ لِلَّذِيْنَ يَعْمَلُوْنَ السُّوْٓءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوْبُوْنَ مِنْ قَرِيْبٍ

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভুলবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে। (সূরা নিসা, আয়াত ১৭)

এই আয়াতের তাফসিরের ক্ষেত্রে সালাফদের উক্তি ও মতামত:

যুজাজ বলেন: এখানে আল্লাহ তাআলা বাণী জাহালত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো-অফুরন্ত স্বাদ এর বিপরীত নশ্বর স্বাদকে গ্রহণ করা।

ইবনু জারির তার সনদে মুজাহিদ থেকে রেওয়ায়াত করেন: প্রত্যেক ব্যক্তি যে আল্লাহর অবাধ্যতা করে সেই হলো মূর্খ ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ পর্যন্ত সে ঐ অবাধ্যতা থেকে বিরত না হয়, নিবৃত্ত না হয়।

অতএব জাহালত বা মূর্খতা ব্যক্তিকে অনেক পরিমাণে দুনিয়াবি ও দীনি মসিবতে আপতিত করে।

ইবনে হাযম রহিমাহুল্লাহ বলেন: যদি জাহালত না কমে তাহলে ব্যক্তি উলামায়ে কেরামের প্রতি হিংসাপরায়ন হয়ে উঠে।

অতএব আমাদেরকে জাহালত ও মূর্খতা থেকে বেঁচে থাকতে হবে এবং যেসব বিষয় জাহালত বৃদ্ধি করে এবং জাহালতের স্তরে নামিয়ে আনে সেগুলিকেও পরিহার করতে হবে।

✦✦ অসম্পূর্ণ | পরবর্তী পর্ব...✍️

🔰 গুনাহ থেকে ফিরে আসুন | পৃষ্ঠা-১০১

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

27 Sep, 03:07


গুনাহে পতিত হওয়ার কারণসমূহ
━━━━━━ • পর্ব - ০১ • ━━━━━━

গুনাহে নিপতিত করে এমন অনেক কারণ রয়েছে। যেগুলো সালাফ আলেমগণ তাদের রচনায় লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন। উম্মাহকে সেগুলোর ব্যাপারে সচেতন করেছেন। এবং সেগুলো থেকে উত্তরণের পথ বাতলে দিয়েছেন। নিচে পয়েন্ট আকারে প্রধান প্রধান কারণগুলো উল্লেখ করা হলো। যা পূর্ববর্তী আলেম ও দাঈদের বই পুস্তক ও রচনাবলী থেকে সংকলন করা হয়েছে।

০১। প্রবৃত্তির অনুসরণ

প্রবৃত্তির অনুসরণ বান্দাকে গুনাহ ও অবাধ্যতায় লিপ্ত করার সবচেয়ে বড় কারণের অন্যতম। নিজের খেয়ালখুশি মাফিক চলাকে প্রবৃত্তির অনুসরণ বলে।

প্রবৃত্তির অনুসরণ নিষেধের ক্ষেত্রে আল্লাহর বাণী সমূহ...

আল্লাহ তাআলার বাণী-
وَاصْبِرْ نَـفْسَكَ مَعَ الَّذِيْنَ يَدْعُوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَدٰوةِ وَالْعَشِىِّ يُرِيْدُوْنَ وَجْهَهٗ‌ وَلَا تَعْدُ عَيْنٰكَ عَنْهُمْ‌ ۚ تُرِيْدُ زِيْنَةَ الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا‌ ۚ وَ لَا تُطِعْ مَنْ اَغْفَلْنَا قَلْبَهٗ عَنْ ذِكْرِنَا وَاتَّبَعَ هَوٰٮهُ وَكَانَ اَمْرُهٗ فُرُطًا

আপনি নিজেকে তাদের সংসর্গে আবদ্ধ রাখুন যারা সকাল ও সন্ধ্যায় তাদের পালনকর্তাকে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে আহবান করে এবং আপনি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য কামনা করে তাদের থেকে নিজের দৃষ্টি ফিরিয়ে নেবেন না। যার মনকে আমার স্মরণ থেকে গাফেল করে দিয়েছি, যে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং যার কার্যকলাপ হচ্ছে সীমা অতিক্রম করা, আপনি তার অনুগত্য করবেন না। (সূরা কাহফ, আয়াত ২৮)

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন-
اَرَءَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ اِلٰهَهٗ هَوٰٮهُ ؕ اَفَاَنْتَ تَكُوْنُ عَلَيْهِ وَكِيْلًا

আপনি কি তাকে দেখেন না, যে তারা প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি তার জিম্মাদার-দায়িত্বশীল হবেন? (সূরা ফুরকান, আয়াত ৪৪)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আরও বলেন-
فَاِنْ لَّمْ يَسْتَجِيْبُوْا لَكَ فَاعْلَمْ اَنَّمَا يَـتَّبِعُوْنَ اَهْوَآءَهُمْ‌ ؕ وَمَنْ اَضَلُّ مِمَّنِ اتَّبَعَ هَوٰٮهُ بِغَيْرِ هُدًى مِّنَ اللّٰهِ‌ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا يَهْدِى الْقَوْمَ الظّٰلِمِيْنَ

অতঃপর তারা যদি আপনার কথায় সাড়া না দেয়, তবে জানবেন, তারা শুধু নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আল্লাহর হিদায়াতের পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে হতে পারে? নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা জালিম সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না। (সূরা কাসাস, আয়াত ৫০)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আরও বলেন-
يٰدَاوٗدُ اِنَّا جَعَلْنٰكَ خَلِيْفَةً فِى الْاَرْضِ فَاحْكُمْ بَيْنَ النَّاسِ بِالْحَقِّ وَلَا تَتَّبِعِ الْهَوٰى فَيُضِلَّكَ عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِ‌ ؕ اِنَّ الَّذِيْنَ يَضِلُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيْدٌۢ بِمَا نَسُوْا يَوْمَ الْحِسَابِ

হে দাউদ, আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি। অতএব তুমি মানুষের মাঝে ন্যায়সঙ্গতভাবে রাজত্ব করো এবং খেয়াল-খুশির অনুসরণ করো না। তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দেবে। নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয়, তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। কেননা, তারা হিসাব-দিবসকে ভুলে যায়। (সূরা ছোয়াদ, আয়াত ২৬)

এ প্রসঙ্গে কুরআনের অনেক আয়াত রয়েছে। বান্দার উচিত ও অবশ্য কর্তব্য হলো, এই সকল আয়াতগুলোকে নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করা। যাতে করে নিজেদের খেয়াল খুশি তথা কু-প্রবৃত্তির অনুসরণের ভয়াবহতার ব্যাপারে এবং কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করলে যেসব ধ্বংস, পথভ্রষ্টতা ও বিচ্যুতি হয়ে থাকে তা জানা যায়।

হাদীসের মাঝে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কু-প্রবৃত্তি হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন।

যেমন: হাদীসে এসেছে, যিয়াদ ইবনু ইলাক্বাহ (রহঃ) তাঁর চাচা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুআয় বলতেন-

اللهم إني أعوذ بك من منكرات الأخلاق والأعمال والأهواء والأدواء

হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে গর্হিত চরিত্র, গর্হিত কাজ ও কু-প্রবৃত্তি হতে আশ্রয় চাই।

এ ব্যাপারে আরও বিভিন্ন আছার বর্ণিত হয়েছে। আল্লামা ইবনুল জাওযী রহিমাহুল্লাহ যাম্মুল হাওয়া কিতাবে উল্লেখ করেছেন-

☞ মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: বাহাদুরি হলো শাহওয়াত পরিত্যাগ করা ও কু-প্রবৃত্তির অবাধ্য হওয়া।

☞ হযরত আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন: কোন মানুষ যখন সকালে উপনীত হয় তখন তার প্রবৃত্তি ও আমল একত্রিত হয়। সুতরাং যদি তার আমল তার নফসের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে তাহলে সেই দিন তার খারাপ, কিন্তু যদি অন্তরের কামনা-বাসনা তার আমলের অনুগামী হয় তাহলে সেই দিনটি হয় তার উত্তম দিন।

✦✦ অসম্পূর্ণ | পরবর্তী পর্ব...✍️

🔰 গুনাহ থেকে ফিরে আসুন | পৃষ্ঠা-১০১

─━━━━━━━━⊱✿⊰━━━━━━━─
আমাদের Telegram চ্যানেল সমূহ:
HA | IL | IA | IM | IIQ | IIS | IIA | SIB | SW | SA | IA | IA | HAI | WA1 | WA2 | WA3
কয়েকটি ইসলামী এন্ড্রয়েড Apps:
IJ | MB | MQ | AHM | KQ | SLT

ISLAMIC ARTICLE || ইসলামি আর্টিকেল

26 Sep, 02:16


কুদৃষ্টির ক্ষতি, পরিণাম এবং চিকিৎসা
-শায়খ যুলফিকার আহমাদ নকশবন্দী
❏ পর্ব-০১ | ❏ পর্ব-০২ | ❏ পর্ব-০৩
❏ পর্ব-০৪ | ❏ পর্ব-০৫ | ❏ পর্ব-০৬
❏ পর্ব-০৭ | ❏ পর্ব-০৮ | ❏ পর্ব-০৯
❏ পর্ব-১০ | ❏ পর্ব-১১ | ❏ পর্ব-১২
❏ পর্ব-১৩ | ❏ পর্ব-১৪ | ❏ পর্ব-১৫
❏ পর্ব-১৬ | ❏ পর্ব-১৭ | ❏ পর্ব-১৮
❏ পর্ব-১৯
❏ Full Article FB Link

2,978

subscribers

92

photos

72

videos