Glimpses of Quran @glimpsesofquran Channel on Telegram

Glimpses of Quran

@glimpsesofquran


এই চ্যানেলে কুরআনুল কারিমের আলংকারিক সৌন্দর্য, শব্দশৈলী, সুশোভিত বাক্যবিন্যাস নিয়ে আলোচনা হবে।

Glimpses of Quran (Bengali)

কুরআনুল কারিম, ইসলামের পবিত্র বই, প্রতিটি মুসলিমের জীবনে অদ্ভুত গুরুত্ব রাখে। আমাদের দ্রুত পেত্থারি ওয়াইফাইনে এই পবিত্র বইর মহান আলংকারিক সৌন্দর্য, শব্দশৈলী এবং সুশোভিত বাক্যবিন্যাস নিয়ে 'Glimpses of Quran' চ্যানেলে ধারাবাহিক আলোচনা হচ্ছে। এখানে আপনি কুরআনের গভীর সাগর থেকে আলোকপ্রাপ্ত করতে পারবেন। কুরআনের রহস্যময় সত্য, প্রেমানুগ নীতি, সন্তুষ্টির বৃদ্ধি - সবকিছুই এখানে আলোচনা করা হবে। 'Glimpses of Quran' এ যোগ দিন এবং আপনার পথে কুরআনের আলোচনার সাথে চলুন।

Glimpses of Quran

01 Oct, 12:41


আপনি কি হতাশ?

তবে ভাবুন এই আয়াত পরিবর্তনের সাধ্য কার আছে?

‏[كَتَبَ اللَّهُ لَأَغْلِبَنَّ أَنَا وَرُسُلِي إِنَّ اللَّهَ قَوِيٌّ عَزِيزٌ ]

- আল্লাহ তায়ালা লিখে দিয়েছেন যে, অতিঅবশ্যই আমি এবং আমার রাসূল বিজয়ী হবো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা শক্তিশালী ও মহাপরাক্রমশালী।

এই উত্তরাধিকার কে ছিনিয়ে নিতে পারে? ‏

‏[وَأَوْرَثْنَا الْقَوْمَ الَّذِينَ كَانُوا يُسْتَضْعَفُونَ مَشَارِقَ الْأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا]

- আমি সেই জাতিকে পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকার প্রদান করেছি - যাতে আমি বরকত প্রদান করেছি - যাদেরকে দূর্বলজ্ঞান করা হতো।

এই কালিমা পিছিয়ে দেবে এমন সাধ্য কার?

‏[وَلَقَدْ سَبَقَتْ كَلِمَتُنَا لِعِبَادِنَا الْمُرْسَلِينَ إِنَّهُمْ لَهُمُ الْمَنْصُورُونَ * وَإِنَّ جُندَنَا لَهُمُ الْغَالِبُونَ ]

আমার বিধান সাব্যস্ত হয়ে আছে আমার প্রেরিত বান্দাদের জন্য এই মর্মে যে, তারা হবে সাহায্যপ্রাপ্ত আবার আমার সেনাবাহিনীই হবে বিজয়ী।

Glimpses of Quran

19 Sep, 14:02


আল কুরআনের দারস ০১ - প্রি অর্ডার ঘোষণা!

আমি আপনাদের সবসময় দুটো কথা বলি। তার মধ্যে একটি হলো, আমাদের এই আল-কুরআনের দারস নিছক কোনো তাত্ত্বিক আয়োজন নয়। ফিলোসোফিক কিংবা দর্শনগত কোনো আয়োজন নয়। আবার বাস্তবতাবিবর্জিত আয়োজনও নয়। আপনি বাংলাদেশের অধিকাংশ মাহফিল কিংবা বড় বড় সমাবেশগুলোতে উত্তেজনা, আবেগ, জোশ অনেক কিছুই পাবেন। কিন্তু বাস্তবসম্মত কাজের কোনো রূপরেখা কিংবা জামাআবদ্ধ হওয়া, চিন্তার পুর্নগঠন করা, বাস্তব কর্মসূচি প্রদান করার মতো কোনো উদ্যোগ নেই, পাবেন না। আমি আশা করব, আমাদের আল-কুরআন দারসে আসা প্রত্যেক ভাই দারসের প্রতিটি কথা তাদের বাস্তবজীবনে ধারণ করবে। এখানে লক্ষ জনতার সমাবেশ নেই। আবার সংখ্যা একদম কমও নয়। আপনাদের প্রত্যেকের পেছনে একেকটি জামাআহ বা জনশক্তি রয়েছে আশা করি। ইনশাআল্লাহ আপনারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ এলাকায় বা স্থানে আমাদের চিন্তা ও চেতনার প্রতিনিধিত্ব করবেন। আমাদের এই কুরআনের দারসের সাথে আপনারা যারা সম্পৃক্ত আছেন-আপনারা এই দারসকে, এই আয়োজনকে, এই দীনি আঞ্জামকে, এই দীনি সম্পর্কগুলোকে তাত্ত্বিক অথবা নিছক বিনোদন অথবা গতানুগতিকভাবে নিচ্ছেন, নাকি একে বাস্তবিকভাবে নিচ্ছেন, সেটাই মুখ্য বিষয়। এ জন্য আমাদের প্রতিটি আলোচনা হয়তো আমরা আপনাদেরকে খুব ভালোভাবে বোঝাতে পারি না, যা আমাদের বিভিন্ন দুর্বলতার কারণ। কিন্তু আপনাদেরকে এই আলোচনা শুনে বুঝে নিতে হবে এবং বাস্তবিক জীবনে আপনাদেরকে দারসুল কুরআনের বিষয়গুলো নিয়ে আসতে হবে।

আল-কুরআনের দারস - এক জীবন্ত আন্দোলন। এটা নিছক কোনো আয়োজন নয়, ফ্যান্টাসিও নয়। শাইখ বারংবার তাঁর দারসে এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, যেন আমরা স্রেফ সুখপাঠ্যে বিভোর না হয়ে যাই, যেন হারিয়ে না যাই এক কল্পিত জগতে। এই দারসের মাকসাদই ছিল জাগরণ। শাইখ তাঁর দারসে বারবার সেই আজান দিয়েছেন। এই দারসের পরতে পরতে আমরা তা খুঁজে পাব ইনশাআল্লাহ। 

বই: আল কুরআনের দারস ০১
মূল: মুফতি হারুন ইজহার
প্রকাশক: Chintapotro Prokashon - চিন্তাপত্র প্রকাশন
পৃষ্ঠাসংখ্যা: ১৭৬
মুদ্রিতমূল্য: ৩০০৳
প্রি অর্ডার মূল্য: ২১০৳ (৩০% ছাড়ে)
কভার: পেপারব্যাক
সম্ভাব্য প্রকাশকাল: ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রি অর্ডার করতে 01779053767 (Bkash/nagad - personal) এই নাম্বারে ২৬০৳ (কুরিয়ার ফি ৫০৳ সহ) পাঠিয়ে কমেন্টে দেয়া গুগল ফর্মটি পূরণ করুন অথবা নক করুন আমাদের ইনবক্সে।

যোগাযোগ: 01834054856 (Contact & what's app)

https://docs.google.com/forms/d/1H9wI1D5rhmG_T0-pI8YiOxHYB3NaenEP2BR-dw7bQPI/edit?usp=drivesdk

Glimpses of Quran

25 May, 14:36


মানুষের সাইকোলজি সবচেয়ে চমৎকারভাবে রিড করে একদম কোনোরকম আপত্তির সুযোগ না রেখে পরিষ্কার সিদ্ধান্ত দিয়েছে কুরআন। এই ব্যাপারটা কুরআন যত গভীর মনোযোগের সাথে পড়বেন ততবেশি বুঝতে পারবেন। মানুষের কামনা বাসনার মৌলিক জায়গাগুলো কুরআন একটা একটা করে ধরিয়ে দিয়েছে আর কী করতে হবে তা বলে দিয়েছে তার অনুকূলেই। একটা আয়াত দেখাই। বুঝতে পারবেন সহজেই...

মানুষের মধ্যে দুই কিসিমের মানুষ আছে। কেউ দুনিয়া চায় আর কেউ চায় আখিরাত। তো আল্লাহ তায়ালা কী করলেন। দুনিয়া ও আখিরাতের চাহিদা ও প্রাপ্তিকে এক লাইনে বুঝিয়ে দিলেন। এমনকি আয়াতের শব্দ শৈলী ও ভাবেও কোনো অপূর্ণতা রাখেননি। আয়াতটা এই-

مَنۡ کَانَ یُرِیۡدُ الۡعَاجِلَۃَ عَجَّلۡنَا لَهٗ فِیۡهَا مَا نَشَآءُ لِمَنۡ نُّرِیۡدُ ثُمَّ جَعَلۡنَا لَهٗ جَهَنَّمَ ۚ یَصۡلٰىهَا مَذۡمُوۡمًا مَّدۡحُوۡرًا

-যে নশ্বর (দুনিয়া) চায় আমি সেখানে তাকে দ্রুত দিয়ে দেই। তবে যা আমি চাই যার জন্য চাই। তারপর তার জন্য নির্ধারণ করি জাহান্নাম। সেখানে সে ঝলসে যাবে নিন্দিত হয়ে বিতাড়িত অবস্থায়।

এই আয়াতকে যদি আরেকটু ইলাবোরেইট করি তাহলে কী পাই?

১. আল্লাহ তায়ালা চাইলে বলতে পারতেন 'মান কানা ইউরিদুদ দুনইয়া'। কিন্তু দুনিয়ার স্থায়ীত্বের কমতি বোঝাতে শব্দই ব্যবহার করেছেন আল আজিলাহ। যেটা নশ্বর। শেষ হয়ে যাবে। শুরুতেই আগ্রহ দমিয়ে দিচ্ছেন যেন আল্লাহর জন্য তৈরী করা বান্দা আল্লাহর কাছে রাখা চিরস্থায়ী নিয়ামতের তামান্না বাদ দিয়ে এই নশ্বরতার প্রতি ভোগবাদী মানসিকতার জালে ফেঁসে না যায়।

২. তবুও যদি সে চায় তবে তাকে দ্রুত দিয়ে দেবেন। আজ্জালনা'র মূল অর্থ সময় এগিয়ে নিয়ে আসা। অর্থাৎ তার তাকদীরে আল্লাহ তায়ালা যতটুকু দুনিয়া রেখেছিলেন এবং যে পরিমাণটা সে সারাজীবন ধরে পেতো সেটা আল্লাহ তায়ালা তার উন্মত্ত চাহিদার কারণে আগেভাগে দিয়ে দেবেন। তার নসীবের বেশি কিন্তু সে পাবে না। সারাজীবনে সে কামাই করতে পারতো এক কোটি টাকা। কিন্তু তার দৌড়ঝাঁপ তাকে ত্রিশ বছরেই এক কোটি টাকা এনে দেবে কিন্তু দুনিয়ার প্রতি তার অদম্য চাহিদা তাকে আল্লাহ থেকে বহুদূরে সরিয়ে নেবে।

৩. তবে এখানেও আছে কথা। কেউ কি চাইলেই পেয়ে যাবে নাকি? মোটেও না। আল্লাহ তায়ালা যার জন্য ফায়সালা করবেন। যতটুকু ফায়সালা করবেন। এরচেয়ে বেশি এক কড়িও বেশি কেউ পাবে না। কোনো বান্দাকে আল্লাহ তার চাহিদা সত্ত্বেও অভাবের নিয়ামত দিয়ে তাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবেন। কাউকে কিছুটা দিবেন। কিন্তু যে সবটা পেয়ে যাবে সবকিছু ভুলে ভোগের ফাঁদে আটকে যাবে তার আর রক্ষে নেই।

جَعَلۡنَا لَهٗ جَهَنَّمَ ۚ یَصۡلٰىهَا مَذۡمُوۡمًا مَّدۡحُوۡرًا

-তার জন্য জাহান্নাম রেখে দিলাম। সেখানে সে ঝলসে যাবে অপমানিত ধিকৃত হয়ে।

এবার আখিরাতের চাহিদার পালা। আল্লাহ তায়ালা বলছেন-

وَ مَنۡ اَرَادَ الۡاٰخِرَۃَ وَ سَعٰی لَهَا سَعۡیَهَا وَ هُوَ مُؤۡمِنٌ فَاُولٰٓئِکَ کَانَ سَعۡیُهُمۡ مَّشۡکُوۡرًا

- আর যে আখিরাত চায় এবং মুমিন অবস্থায় আখিরাত পেতে দৌড়ঝাঁপ করে তবে তাদের সব চেষ্টা-দৌড়ঝাঁপ হবে পুরষ্কার যোগ্য।

তবে কি সে দুনিয়া একেবারেই পাবে না? দ্য ফাইনাল বস আয়াত পরেরটা।

کُلًّا نُّمِدُّ هٰۤؤُلَآءِ وَ هٰۤؤُلَآءِ مِنۡ عَطَآءِ رَبِّکَ ؕ وَ مَا کَانَ عَطَـآءُ رَبِّکَ مَحۡظُوۡرًا

- দুনিয়ার পাগল আর আখিরাতের পাগল উভয় দলকেই তোমার মালিকের দান থেকে আমি দিই। তোমার মালিকের দান তো বন্ধ হওয়ার নয়।

তো লাভ কী হলো? এবার বলুন আপনি কোন দলের হবেন? তাকদীরের কিছুমাত্রও এদিক সেদিক নড়চড় হবে না। যা পাওয়ার তা-ই পাবেন কিন্তু হারাম উপায়ে আরেকজনের হক্ব মেরে আখিরাতকে ভুলে গিয়ে একটু আগেভাগে পেয়ে যাবেন। কিন্তু সেই পাওয়ায় কোনো শান্তি থাকবে না। এইজন্যই রাসূলে আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নসীহত করেছেন কিয়ামত পর্যন্ত আনেওয়ালা উম্মতকে।

مَنْ كَانَتِ الدُّنْيَا هَمَّهُ فَرَّقَ اللَّهُ عَلَيْهِ أَمْرَهُ وَجَعَلَ فَقْرَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ وَلَمْ يَأْتِهِ مِنَ الدُّنْيَا إِلَّا مَا كُتِبَ لَهُ وَمَنْ كَانَتِ الْآخِرَةُ نِيَّتَهُ جَمَعَ اللَّهُ لَهُ أَمْرَهُ وَجَعَلَ غِنَاهُ فِي قَلْبِهِ وَأَتَتْهُ الدُّنْيَا وَهِيَ رَاغِمَةٌ

- যে লোকের পেরেশানিই হয় দুনিয়া তার রিযিককে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতিকূলে বিক্ষিপ্ত করে দেন (তাকে ছুটাছুটি করতে হয়)। তার চোখের সামনে তার অভাব রেখে দেন। অথচ দুনিয়া সে ততটাই পাবে যতটা তার নসীবে আছে। আর যার জিন্দেগির মাকসাদ আখিরাত আল্লাহ তায়ালা তার রিযিক জমা করে দেন। তার ক্বলব প্রাচুর্যে ভরে দেন। আর দুনিয়া তার কাছে এমনভাবে আসে সে ততটা চাচ্ছেও না। [ইবনে মাজাহ]

তো এখন কি দৌড়াদৌড়ি করবেন নাকি এক জায়গায় বসে থাকবেন আপনার ইচ্ছা...

Glimpses of Quran

21 May, 13:56


কুরআন পড়ার সময় নবীদের দুআগুলো খেয়াল করেছেন কখনো?

আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের দুআগুলো তাদের মতই ছিলো অনন্য। আপনি যদি কুরআন থেকে নবীদের দুআগুলো একত্রিত করেন তবে একটা চমৎকার বৈশিষ্ট্য খেয়াল করবেন। আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম আল্লাহর কাছে সরাসরি নিজেদের চাহিদাগুলো উপস্থাপন না করে দীলের আকুতি আল্লাহর দিকে সোপর্দ করতেন। কারণ, বান্দা নিজের জন্য কী পছন্দ করবে তার চেয়ে তো আল্লাহর পছন্দ আরো বেশি উত্তম হবেই। একটা উদাহরণ দেয়া যাক...

সায়্যিদুনা যাকারিয়া আলাইহিস সালামের সন্তান হচ্ছিলো না। তিনি আল্লাহর কাছে দুআ করতে বসলেন। কিন্তু দুআয় একথা বললেন না যে, হে আল্লাহ! আমাকে একটা ছেলে দেন। বরং কী বললেন দেখুন,

وَ زَکَرِیَّاۤ اِذۡ نَادٰی رَبَّهٗ رَبِّ لَا تَذَرۡنِیۡ فَرۡدًا وَّ اَنۡتَ خَیۡرُ الۡوٰرِثِیۡنَ

-আর স্মরণ করুন যাকারিয়্যার কথা, যখন সে তার মালিককে ডেকে বলেছিল, মাওলা! আমাকে একা ছেড়ে দিও না, যদিও তুমি উত্তরাধিকারী হিসেবে শ্রেষ্ঠ।

কত সুন্দর করে চাওয়া! মালিক তুমি নিজেই তো আমার হয়ে আছোই। তবুও আমার একটা সন্তান নেই। আমার একাকীত্ব দূর করে দাও। সরাসরি কিন্তু বলেননি। কারণ, সন্তানহীনতা এটাও তো আমার মালিকের ফায়সালা। মালিক জানেন আমার কী দরকার। আমি শুধু চাই আমার মালিক আমার দীলের তামান্নাটুকু পুরা করে দিক। আল্লাহ তায়ালা পুরা করে দিলেন।

فَاسۡتَجَبۡنَا لَهٗ ۫ وَ وَهَبۡنَا لَهٗ یَحۡیٰی وَ اَصۡلَحۡنَا لَهٗ زَوۡجَهٗ ؕاِنَّهُمۡ کَانُوۡا یُسٰرِعُوۡنَ فِی الۡخَیۡرٰتِ وَ یَدۡعُوۡنَنَا رَغَبًا وَّ رَهَبًا ؕوَ کَانُوۡا لَنَا خٰشِعِیۡنَ

-আমি তার দুআ কবুল করলাম। তাকে ইয়াহইয়াকে দান করলাম। তার স্ত্রীর বন্ধ্যাত্বও দূর করে দিলাম। এরা সবাই নেকীর কাজে প্রতিযোগিতা করতো। বড় ভয় ও আশা নিয়ে আমাকে ডাকতো। আমার প্রতিও ছিলো খুবই বিনয়াবনত।

শুধু সন্তান চাইলে সন্তান পাওয়া যেত। কিন্তু দুআয় ছিলো মালিকের অবারিত রহমতের উপর নিজের তামান্না সোপর্দ করার মত কথা। তাই আল্লাহ পাক এক নিয়ামতের জায়গায় দুই নিয়ামত দিলেন। সন্তানও দিলেন এবং স্ত্রীর বন্ধ্যাত্বও দূর করে দিলেন আজীবনের জন্য।

আবার সায়্যিদুনা মূসা আলাইহিস সালামের দুআটাও দেখুন। মিশর থেকে পালিয়ে মাদায়েন এলেন। এসে কূপের ধারে গাছের তলায় বসে রইলেন। খাওয়ার জন্য খাদ্য দরকার। থাকার জন্য দরকার ঘর। কিন্তু মালিকের কাছে নিজের চাহিদাগুলো চাইলেন না। কারণ, প্রয়োজন চাইলে পুরা হবে কিন্তু মালিকের দানের মাঝে আরো কিছু বাকী থেকে যাবে। তাই তিনি বললেন,

رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنْزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ

-মালিক! তুমি যা আমাকে দিবে তাই-ই আমার দরকার।

চাইতে হলে এভাবে চাইতে হয়। আমি ভাবি আমার দরকার শুধু এটা বা ওটা। কিন্তু আমার মালিক জানেন আমার আসলে কী লাগবে আর আমি চাচ্ছিটা কী। আল্লাহ তায়ালা মূসা আলাইহিস সালামকে খাদ্য ও ঘরের বন্দোবস্ত তো করে দিলেনই। সাথে একটা বিবিও দান করে দিলেন।

আল্লাহ তায়ালার কাছে এভাবে চাওয়ার তাওফিক আমাদের হোক। আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের মত চাওয়া।

Glimpses of Quran

31 Mar, 22:13


সুলায়মান ইবনে ইয়াসার রহ. বলেন, উসমান ইবনে আফফান রাদ্বি. ইশার নামাজের পর নফলে দাঁড়াতেন। এক রাকআতে পুরো কুরআন শেষ করতেন। সুবহানাল্লাহ!

ইবনে সিরীন রহ. থেকে বর্ণিত, সাহাবি তামিম আদ দারী রাদ্বি. ও এক রাকআতে এক খতম তিলাওয়াত করতেন।

ক্বাতাদা রহ. সাধারণত সাতদিনে এক খতম তিলাওয়াত করতেন। রমাদ্বান এলে প্রতি তিনদিনে একখতম পড়তেন। শেষ দশদিনে প্রতিরাতে একখতম দিতেন। ইমাম শাফেয়ী রহ. রমাদ্বানে নামাজের বাইরে ষাটখতম কুরআন তিলাওয়াত করতেন। নামাজে তো আরো করতেনই। ইমাম আবু হানিফা রহ. ও তাই করতেন।

-হিলইয়াহ, ফাতহুল বারী, সিয়ারু আলামিন নুবালা

ইয়াহইয়া আল ইয়ামানী বলেন, আবু বকর ইবনে আইয়াশ রহ. এর ইন্তিকালের সময় ঘনিয়ে এলে তার বোন কান্না শুরু করলেন। তিনি বোনকে লক্ষ্য করে বললেন, কাঁদছো কেন? ঘরের ঐ কোণাটায় দেখো। ঐ কোণায় বসে বসে তোমার ভাই আঠারো হাজার খতম কুরআন তিলাওয়াত করেছে।

চিন্তা করেছেন! আঠারো হাজারো খতম!

- তারতিবুল আফওয়াহ বিযিকরি মান ইয়াযিল্লুহুমুল্লাহ: ড. সাঈদ হোসাইন আল আফফানী (১৩০/০২)

শাদ্দাদ ইবনে আওস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

উসমান রাদ্বি. এর যুগে রমাদ্বান মাসে তিনি এত দীর্ঘসময় ধরে তারাবীহ পড়াতেন যে, লোকজন দাঁড়াতে দাঁড়াতে ক্লান্ত হয়ে লাঠিতে ভর দিত।

-বায়হাকী সুনানে কুবরা (৪৩৯৩)

রমাদ্বান মাস কুরআন পাঠের মুবারক মাস। মুসলিম শাসনামলে খলিফারাও কুরআন পাঠে মুয়াযাবাত করতেন। উমাভী খলিফা ওয়ালিদ ইবনে আবদিল মালিক প্রতি তিনদিনে একখতম কুরআন পাঠ করতেন। আব্বাসী খলিফা মামুন রমাদ্বানে এতবেশি কুরআন তিলাওয়াত করতেন যে, তার গলা বসে যেত। স্বর ভেঙ্গে যেত। হাজ্জাজ বিন ইউসুফের মত কঠিনপ্রাণ শাসকও রমাদ্বানে কুরআন পাঠে মনোনিবেশ করত। কখনো কখনো যুদ্ধকেন্দ্রিক ব্যস্ততা থাকলে একজন হাফিজ নিয়োগ দিত তাকে পুরো রমাদ্বানজুড়ে তিলাওয়াত করে শোনানোর জন্য।

-তারীখে বাগদাদ, তারীখে ইবনে আসাকির

সিয়ারু আলামিন নুবালা থেকে শুরু করে তারীখে বাগদাদ এবং ইবনে আসাকির খুললেই এগুলো ভুরি ভুরি পাওয়া যায়। অহেতুক তর্ক কেন। বুনিয়াদ থেকে দলীল পেশ করলেই হয়ে যায়...

Glimpses of Quran

16 Mar, 21:48


দুনিয়ার সবাই যদি কোনো হককে এড়িয়ে চলে সেটা তবুও হক থাকবে। শুধু যদি একজনও একে আঁকড়ে ধরে টিকে থাকে আল্লাহ তায়ালা তাকেই সাহায্য করবেন। বিজয় তাকে দান করবেন। সূরা ফাতাহ এই শিক্ষা আমাদেরকে দেয়। সূরা ফাতাহ যখন নাযিল হয় তখন সাহাবায়ে আজমায়ীনের মনে দুঃখ। বিষন্নতা ছেয়ে ফেলেছে সবাইকে। সবাই নিজেদের পরাজিত মনে করছিলেন। আল্লাহ তায়ালা বাস্তবতার সম্পূর্ণ বিপরীত আয়াত নাযিল করে বললেন,

ইন্না ফাতাহনা লাকা ফাতহান মুবিনা। আমি আপনাকে বড় বিজয় দিলাম। একেবারে ফাতহে মুবিন। আবার এও বলে দিলেন যে, এই বিজয়ে আপনাকে কষ্ট করতে হবে না। বড় বিজয়ও দিলাম আমি আবার সাহায্যও থাকবে আমার। এই সাহায্য আবার যেনতেন না। 'নাসরান আযিযা' দিবো। অপ্রতিরোধ্য সাহায্য। এরপর পুরো সূরা জুড়ে আল্লাহ তায়ালা ফাতহে মুবিনের নকশা দেখালেন। সাথে সাথে নাসরে আযিয দেনেওয়ালা জাতে পাকের সিফাত বয়ান করলেন। যাদের তাক্বত বাড়িয়ে দিয়ে যমিনের বুকে ফাতহে মুবিন কায়েম করাবেন তাদের দীলের হালত পরিবর্তন করার জন্য সুকুন নাযিল করলেন। সেই সুকুন যেন তাদের ঈমান বাড়ায়। ঈমান বাড়লে আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় ঝাঁপ দেয়া সহজ হবে। ঝাঁপ দিলে নাসরে আযিয আসবে। নাসরে আযিয আসলে ফাতহে মুবিন হবে।

ইজি ক্যালকুলেশন!

রমাদ্বান মাসে আল্লাহর কুরআনে ডুব দিন। এরকম বহু ক্যালকুলেশন মিলে যাবে। যেগুলো ছিলো খিলাফুল ওয়াক্বিই - বাস্তবতার বিপরীত।

Glimpses of Quran

03 Mar, 12:33


রামাদ্বান আসছে। কুরআন তুলে নিন। কুরআন পরিত্যাগ করবেন না। কুরআনের আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করুন। অর্থে তাদাব্বুর করুন। তাফসীরে মন দিন। কুরআন নিয়ে বাঁচুন। কারণ, কুরআন যাবতীয় মনরোগের পথ্যি।

ইবনে মাসউদ রাদ্বিঃ বলেছেন, নিঃসন্দেহে এই হৃদয়সমূহ হলো পাত্র। কুরআন দিয়ে পূর্ণ করো তা। কুরআন বিনে আর কিছু রেখো না সেথায়।

সুতরাং, সবসময় কুরআন দিয়েই আপনার আক্বল ও ক্বলব পূর্ণ করে রাখুন।

হে আল্লাহ! কুরআনকে আমাদের হৃদয়ের বসন্ত বানিয়ে দিন।

Glimpses of Quran

03 Mar, 00:24


জোনায়েদ বাগদাদী রহ. এর একটা ঘটনা আছে। এক কাঠমিস্ত্রী ছিলো সেসময়। সে মারা গেলে বাগদাদী রহ. এক অলৌকিক স্বপ্ন দেখেন। তাঁর স্বপ্নে তাকে জানানো হচ্ছিলো এক কাঠমিস্ত্রী মারা গেছে অমুক এলাকায়। জানাযা যেন তিনি পড়ান। বাগদাদী গেলেন। জানাযা পড়লেন। নিতান্তই সাধারণ কাঠমিস্ত্রী। তিনি জানতে চাইলেন কী এমন বৈশিষ্ট্য ছিলো এই কাঠমিস্ত্রীর যেটার কারণে তাকে স্বপ্নে এই ব্যক্তির জানাযা পড়াতে বলা হয়েছে!

তার পরিবারের লোকজন জানালো, তেমন কিছুই নয়। কাঠমিস্ত্রী অশিক্ষিত ছিলো। কুরআন পড়তে পারতো না। তবে কুরআনের প্রতি ছিলো অসীম ভালোবাসা। প্রতিদিন কাজ থেকে ফিরে এসে তাক থেকে কুরআনটা নামিয়ে বুকে চেপে ধরতো। চুমু খেতো। কুরআন খুলে আঙ্গুল দিয়ে আয়াতগুলো স্পর্শ করে বলতো,

'হে আল্লাহ! আমি পড়তে পারছি না তুমি কী বলেছো। তবে এটাও সত্যি বলেছো, ওটাও সত্যি বলেছো।'

এভাবে বলতো আর কাঁদতো। এরপর আবার কুরআনটা তুলে রাখতো। জোনায়েদ বাগদাদী রহ. এবার বুঝলেন কেন তাকে স্বপ্নটা দেখানো হয়েছিলো।

এই যে ছবিটা এটা ড. সালাহের পোস্ট থেকে নেয়া। এক বৃদ্ধ মেট্রোতে বসে পুরোটা সময় সূরা কাহাফের প্রথম পাতা খুলে তাকিয়ে আছে আর হাসছে। জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, তিনি পড়তে সাতবছর আগে সূরা কাহাফ শুনে ঈমান এনেছিলেন। তিনি কুরআন পড়তে পারেন না আরবী পড়তে না পারায়। তবে শুনে শুনেই গত চারবছরে সূরা কাহাফ মুখস্থ করে ফেলেছেন। সুবহানাল্লাহ। তো তিনি পড়তে না পারলেও খুলে তাকিয়ে থাকেন এভাবে। দীলে সুকূন লাভ করেন। আহা!

এই জীবন কুরআনের। এই কুরআন জীবনের।

Glimpses of Quran

02 Feb, 15:42


সূরা বাকারায় একটা আয়াত আছে:

رب اجعل هذا بلدا آمنا

হে আমার রব! আপনি একে এক নিরাপদ ভূমি বানিয়ে দিন।

আবার সূরা ইবরাহীমে আছে:

رب اجعل هذا البلدا آمنا

হে রব! আপনি এই ভূমিকে নিরাপদ করে দিন।

দুটোই ইবরাহীম আলাইহিস সালামের দুআ। কিন্তু একটাতে বলা হয়েছে অনির্দিষ্ট ভূমিকে নিরাপদ করার কথা। আরেকটাতে সুনির্দিষ্ট। কারণ কী?

প্রথম দুআ ছিলো কাবা পুনঃনির্মাণের আগে। যখন সেখানে জনপদ ছিলো না। দ্বিতীয়টি বসতি গড়ে উঠার পর যেন এই অঞ্চলকে নিরাপদ করা হয় সেই দুআ।

Glimpses of Quran

08 Dec, 13:51


একটি আয়াত ও কয়েকটি হিকমাহ...

Glimpses of Quran

01 Nov, 17:30


-ওরা তারা, যারা ঘরে বসে স্বীয় নিহত ভাইদের সম্বন্ধে বলে, যদি তারা আমাদের কথা মান্য করতো তাহলে নিহত হতো না। আপনি বলুন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে নিজেদেরকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করো।

আবার এই বিপর্যয়কে যেন সামগ্রিক ও মৌলিক পরাজয় বিবেচনা করে মুসলমানরা যেন হতোদ্যম না হয়, তাই বলেছেন,

ثُمَّ اَنۡزَلَ عَلَیۡکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ الۡغَمِّ اَمَنَۃً نُّعَاسًا یَّغۡشٰی طَآئِفَۃً مِّنۡکُمۡ ۙ وَ طَآئِفَۃٌ قَدۡ اَهَمَّتۡهُمۡ اَنۡفُسُهُمۡ یَظُنُّوۡنَ بِاللّٰهِ غَیۡرَ الۡحَقِّ ظَنَّ الۡجَاهِلِیَّۃِ ؕ یَقُوۡلُوۡنَ هَلۡ لَّنَا مِنَ الۡاَمۡرِ مِنۡ شَیۡءٍ ؕ قُلۡ اِنَّ الۡاَمۡرَ کُلَّهٗ لِلّٰهِ ؕ یُخۡفُوۡنَ فِیۡۤ اَنۡفُسِهِمۡ مَّا لَا یُبۡدُوۡنَ لَکَ ؕ یَقُوۡلُوۡنَ لَوۡ کَانَ لَنَا مِنَ الۡاَمۡرِ شَیۡءٌ مَّا قُتِلۡنَا هٰهُنَا ؕ قُلۡ لَّوۡ کُنۡتُمۡ فِیۡ بُیُوۡتِکُمۡ لَبَرَزَ الَّذِیۡنَ کُتِبَ عَلَیۡهِمُ الۡقَتۡلُ اِلٰی مَضَاجِعِهِمۡ ۚ وَ لِیَبۡتَلِیَ اللّٰهُ مَا فِیۡ صُدُوۡرِکُمۡ وَ لِیُمَحِّصَ مَا فِیۡ قُلُوۡبِکُمۡ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوۡرِ

-তারপর তিনি তোমাদের উপর দুশ্চিন্তার পর নাযিল করলেন প্রশান্ত তন্দ্রা, যা তোমাদের মধ্য থেকে একদলকে ঢেকে ফেলেছিলো, আর অপরদল নিজরাই নিজেদেরকে চিন্তাগ্রস্ত করেছিলো। তারা আল্লাহ সম্পর্কে জাহিলী ধারণার মত অসত্য ধারণা পোষণ করছিলো। তারা বলছিলো, ‘আমাদের কি কোনো বিষয়ে অধিকার আছে? বলুন, ‘নিশ্চয় সব বিষয় আল্লাহর’। তারা তাদের অন্তরে লুকিয়ে রাখে এমন বিষয় যা তোমার কাছে প্রকাশ করে না। তারা বলে, ‘যদি কোনো বিষয়ে আমাদের অধিকার থাকত, তাহলে আমাদেরকে এখানে হত্যা করা হত না’। বলুন, ‘তোমরা যদি তোমাদের ঘরে থাকতে তাহলেও যাদের ব্যাপারে নিহত হওয়া অবধারিত রয়েছে, অবশ্যই তারা তাদের নিহত হওয়ার স্থলের দিকে বের হয়ে যেত। আর যাতে তোমাদের মনে যা আছে আল্লাহ তা পরীক্ষা করেন এবং তোমাদের অন্তরসমূহে যা আছে তা পরিষ্কার করেন। আর আল্লাহ তোমাদের অন্তরের বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত’।

সবমিলিয়ে কী বোঝা গেল বলুন তো!

আসলে এই যে ফি-লি- [স্তি] ন, ح মা [স] ও গ|য|র মুজাহিদীনদের সংগ্রামকে যারা এই দৃষ্টি থেকে বিবেচনা করছে যে, তাদের প্রাথমিক হামলা ও নিজেদের স্বল্প শক্তির উপর ভরসা করাটা ভুল হয়েছে, বেঘোরে মারা পড়ছে এবং এটাই তাদের পরাজয় তবে তারা বস্তুবাদী বিপর্যয় ও সামরিক পরাজয়কে মনস্তাত্ত্বিক জয়ের উপর প্রাধান্য দিচ্ছে, যেটা খোদ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাও দেননি। আমরা যেভাবে বিষয়টাকে দেখছি, আল্লাহ তায়ালা ঠিক তার উল্টোভাবে উপস্থাপন করেছেন। কারণ, মুসলমানদের জীবনে সেটাই বিপর্যয়, যেটা আল্লাহ বিপর্যয় হিসেবে চিত্রায়িত করেছেন। আর আমরা যেটাকে বিপর্যয়ের মাপকাঠিতে ফেলছি, সেটা মূলত আল্লাহর সুন্নাহ। আল্লাহর সুন্নাহতে কোনো বস্তুবাদী অগ্রগতির দীর্ঘসুত্রতা নেই। বরং, আল্লাহ তায়ালা এই সামরিক জয় পরাজয়ের শৃঙ্খলা বজায় না রাখলে দুনিয়াটাই ধ্বংস হয়ে যেত।

وَ لَوۡ لَا دَفۡعُ اللّٰهِ النَّاسَ بَعۡضَهُمۡ بِبَعۡضٍ ۙ لَّفَسَدَتِ الۡاَرۡضُ وَ لٰکِنَّ اللّٰهَ ذُوۡ فَضۡلٍ عَلَی الۡعٰلَمِیۡنَ
-যদি আল্লাহ মানবজাতির একদলকে অন্যদল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে পৃথিবী বিপর্যস্ত হয়ে যেত, কিন্তু আল্লাহ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের প্রতি অনুগ্রহশীল।

তাই বলে কি আমাদের বিজয় হবে না? হবে অবশ্যই। সেই বিজয়ের সুত্র নিয়ে পরের পোস্টে আলোচনা করব ইনশা আল্লাহ।

Glimpses of Quran

01 Nov, 17:30


উহুদের দিনের ঘটনা। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর নেতৃত্বে পঞ্চাশজন তীরন্দাজকে উহুদের সেই গিরিপথের পাহারায় রেখেছিলেন, যেদিক থেকে হামলা হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। যুদ্ধের একপর্যায়ে মুশরিকরা একপ্রকার ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে তীরন্দাজরা দ্বিধায় পড়ে যান। অবশেষে বারোজন ব্যতীত বাকীসবাই নেমে পড়েন। ঠিক তখুনিই মুশরিকরা ফিরে এসে মুসলমানদের উপর পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে বিপর্যয়ে ফেলে দেয়।

এই যে বিপর্যয়, আসলেই কি বিপর্যয়? যে কোনো যুদ্ধের বিপর্যয় দুই রকম হতে পারে। ফলাফলগত ও মনস্তাত্ত্বিক। ফলাফলগত বিপর্যয়ের সাথে সমরবিদ্যা, পরিকল্পনা, রসদ ও সেনাদলের সম্পর্ক থাকে। এই বিপর্যয়ের সাথে বস্তুবাদ জড়িত থাকে। যুদ্ধের পরিস্থিতির উঠানামায় অনেক হিসেব নিকেশ পাল্টে যায়, ফলে বহু প্রশিক্ষিত, ওয়েল প্ল্যানড বাহিনীও পরাজিত হতে পারে। এই পরাজয়ের সাথে ঈমান ও ইসলামের সম্পর্কের বিশেষ কোনো মৌলিকত্ব নেই। উদাহরণ, কুরআনের ঘটনায় বিদ্যমান তালুত জালুতের যুদ্ধের ঘটনায় আল্লাহ জাল্লা শানুহু বলেছেন,

كَم مِّن فِئَةٍ قَلِيلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةً كَثِيرَةً بِإذْنِ اللَّهِ
-কত মুষ্টিমেয় বাহিনী আল্লাহর হুকুমে প্রবল সংখ্যক বাহিনীকে পরাজিত করেছে!

এবার আসি মনস্তাত্ত্বিক বিপর্যয়ের কথায়। বিপর্যয়ের এই প্রকারের সাথে ঈমান ও ইয়াকীনের সম্পর্ক আছে। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের অন্ধ আনুগত্য জড়িত। যদিও বা এই বিপর্যয়ের সাথে কোনো বস্তুবাদী ক্যালকুলেশন নাই, কিন্তু মনস্তাত্ত্বিক বিপর্যয় ঈমানক্ষয়িষ্ণু। তাই এই বিপর্যয়ের সাথে জয় পরাজয়ের সম্পর্ক নেই। বহু ফলাফলগত জয়ের পরেও মনস্তাত্ত্বিক পরাজয় ঘটতে পারে, আবার অনেক সামরিক পরাজয়ের পরও মনস্তাত্ত্বিক জয় হতে পারে। উদাহরণ, উহুদের সেই ঘটনা। আল্লাহ তায়ালার কাছে বস্তুগত জয় পরাজয়ের মূল্য নেই। বরং, মনস্তাত্ত্বিক জয়ই আল্লাহ তায়ালা চান। প্রমাণ হলো, উহুদের দিন গিরিপথে নিযুক্ত সাহাবীগণ সরে আসার ফলে সামরিক পরাজয় ঘটলেও আল্লাহ তায়ালা কুরআনের কোত্থাও একটা শব্দও এই প্রসঙ্গে বলেননি, তীরন্দাজ সাহাবীদের নিন্দা করেননি, পরাজয়ের কারণ হিসেবে পাহাড় থেকে নেমে আসাকে মৌলিকভাবে দায়ী করেননি। বরং, মনস্তাত্ত্বিক পরাজয়ের কারণকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন,

لَقَدۡ صَدَقَکُمُ اللّٰهُ وَعۡدَهٗۤ اِذۡ تَحُسُّوۡنَهُمۡ بِاِذۡنِهٖ ۚ حَتّٰۤی اِذَا فَشِلۡتُمۡ وَ تَنَازَعۡتُمۡ فِی الۡاَمۡرِ وَ عَصَیۡتُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَاۤ اَرٰىکُمۡ مَّا تُحِبُّوۡنَ ؕ مِنۡکُمۡ مَّنۡ یُّرِیۡدُ الدُّنۡیَا وَ مِنۡکُمۡ مَّنۡ یُّرِیۡدُ الۡاٰخِرَۃَ ۚ ثُمَّ صَرَفَکُمۡ عَنۡهُمۡ لِیَبۡتَلِیَکُمۡ ۚ وَ لَقَدۡ عَفَا عَنۡکُمۡ ؕ وَ اللّٰهُ ذُوۡ فَضۡلٍ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ

-উহূদের রণক্ষেত্রে) আল্লাহ তোমাদেরকে স্বীয় ওয়াদা সঠিকরূপে দেখালেন, যখন তোমরা আল্লাহর নির্দেশে কাফিরদেরকে নিপাত করছিলে, অতঃপর যখন তোমরা নিজেরাই (পার্থিব লাভের বশে) দুর্বল হয়ে গেলে এবং আদেশ সম্বন্ধে মতভেদ করলে এবং তোমাদেরকে তোমাদের আকাঙ্ক্ষিত বস্তু দেখানোর পর তোমরা অবাধ্য হলে, তোমাদের কেউ কেউ দুনিয়ার প্রত্যাশী হলে এবং কেউ কেউ পরকাল চাইলে, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে শত্রু থেকে ফিরিয়ে দিলেন তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য, আল্লাহ অবশ্য তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন, বস্তুতঃ আল্লাহ মু’মিনদের প্রতি অনুগ্রহশীল।

এবার আরো আগের ঘটনায় যাই। উহুদের যুদ্ধের পূর্বপ্রস্তুতি চলাকালে নবী ও সাহাবাদের পরামর্শ সভায় আল্লাহর নবীর ইচ্ছা ও সিনিয়র সাহাবাদের প্রস্তাব ছিলো, যুদ্ধটা মদীনায় হোক। মদীনার প্রবেশদ্বারে মুশরিকদের আটকে ফেলা হবে। মহিলারাও বাড়ির ছাদে উঠে পাথর মেরে শত্রুদলকে পেরেশানিতে ফেলতে পারবে। কিন্তু যুবক সাহাবাদের জযবার ফলে পরবর্তীতে আল্লাহর রাসূল উহুদ প্রান্তরে যাওয়ার ফয়সালা করেন। এই ঘটনা আমাদের সবার জানা। এই যে মদীনার ভেতর বা বাইরে যুদ্ধের ব্যাপারে যে মতানৈক্য হচ্ছিলো তার সাথে কিন্তু শরীয়াহর বিধানগত কোনো ব্যাপার ছিলো না। থাকলে আল্লাহর রাসূলের ইচ্ছাই প্রাধান্য পেত। মূলত এই মতামত ছিলো ওয়ার ট্যাক্টিসের অংশ। ফলে মদীনার বাইরে গিয়ে যুদ্ধ করতে হয়। গিরিপথের ঘটনা ঘটে এবং মুসলমানদের উপর ফলাফলগত বস্তুবাদী বিপর্যয় আসে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা এক্ষেত্রেও পুরো কুরআনের কোত্থাও একটা শব্দও এই বিষয়ে কিছুই বলেননি। উহুদের বিস্তারিত বিষয় নিয়ে বলেছেন কিন্তু একবারও সেই যুবক সাহাবীগণের নিন্দা করেননি, যারা বাইরে গিয়ে যুদ্ধ করতে চেয়েছিলো। বরং, সেইসব মুনাফিকদের নিন্দা করেছেন, যারা মুসলমানদের এই সামরিক বিপর্যয়কে বড় করে দেখছিলো এবং নিজেদেরকে বেশ বুদ্ধিমান ভাবছিলো। আল্লাহ তায়ালা বলছেন,

اَلَّذِیۡنَ قَالُوۡا لِاِخۡوَانِهِمۡ وَ قَعَدُوۡا لَوۡ اَطَاعُوۡنَا مَا قُتِلُوۡا ؕ قُلۡ فَادۡرَءُوۡا عَنۡ اَنۡفُسِکُمُ الۡمَوۡتَ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ

Glimpses of Quran

28 Oct, 01:40


আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَ کَاَیِّنۡ مِّنۡ نَّبِیٍّ قٰتَلَ ۙ مَعَهٗ رِبِّیُّوۡنَ کَثِیۡرٌ ۚ فَمَا وَهَنُوۡا لِمَاۤ اَصَابَهُمۡ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ وَ مَا ضَعُفُوۡا وَ مَا اسۡتَکَانُوۡا ؕ وَ اللّٰهُ یُحِبُّ الصّٰبِرِیۡنَ

আর কত নবী ছিল, যার সাথে থেকে অনেক আল্লাহওয়ালা লড়াই করেছে। তবে আল্লাহর পথে তাদের উপর যা আপতিত হয়েছে তার জন্য তারা হতোদ্যম হয়নি, তারা দুর্বল হয়নি এবং নত হয়নি। আর আল্লাহ ধৈর্যশীলদেরকে ভালবাসেন।

-আলে ইমরান:১৪৬


এই দূর্বলতা, অক্ষমতা ও নতিস্বীকারের শব্দগুলোকে পুনঃপুন বলার মাধ্যমে কঠিন বিপদগ্রস্থতা বোঝানো হয়েছে। আপনি নিশ্চয় সাধারণ বিপদে পড়া ব্যক্তির জন্য বলবেন না যে, সে দূর্বল, অবসন্ন হয়েছে এবং নতিস্বীকার করেনি। এটার প্রয়োজন নেই। কারণ, সেটা ছোট বিপদ।

কিন্তু যখন মুসীবত অনেক বিশাল, চূড়ান্ত পর্যায়ের ও দীর্ঘ মেয়াদী হয় তখন আপনি এই মুসীবতে সবর করা ব্যক্তির ক্ষেত্রে বলবেন, সে সবর করেছে অথচ দূর্বল, অবসন্ন হয়েছে এবং নতিস্বীকার করেনি।

তো আল্লাহ তায়ালা এই শব্দগুলোর মাধ্যমে কাদেরকে বৈশিষ্ট্যময় করেছেন?

নবী ও তাদের অনুসারীদের। শুরুতে আধিক্য বোঝাতে বলা হয়েছে, কত নবীর সাথে আল্লাহ ওয়ালারা যুদ্ধ করেছে! অর্থাৎ, এখানে আল্লাহর দেয়া এই উদাহরণের অনুকূল ব্যক্তিবর্গের আধিক্য পাওয়া যায়।

এই আয়াতটা উহুদ যুদ্ধের প্রসঙ্গে নাযিল হয়েছে। যেন আল্লাহ তায়ালা এই আয়াতের মাধ্যমে নবী আলাইহিস সালামের সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের মনোবল কে দৃঢ় করতে পারেন। বোঝাতে চেয়েছেন, একা আপনি নন। আপনিই প্রথম আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তি নন। কঠিন, ভারী ও দীর্ঘমেয়াদী মুসীবতে আপনিই প্রথম আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তি নন। আক্রান্ত হয়ে দূর্বল অবসন্ন হয়ে পড়ার সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র হলো আল্লাহর রাস্তা। আর আল্লাহ তায়ালা বলছেন, তারা অবসাদগ্রস্ত হয়নি আল্লাহর রাস্তায়। এই আয়াতের এটাই হল উদ্দেশ্য।

Glimpses of Quran

24 Oct, 01:34


বালাগাতুল কুরআন ১০

আমাদের হৃদয় প্রশান্তকারী কিছু আয়াত আল্লাহ দিয়েছেন:

- ﴿‏يُدَبِّرُ الْأَمْرَ ﴾
-তিনি বিষয়াবলী পরিচালনা করেন।

- ﴿فَرِحينَ بِما آتاهُمُ اللَّهُ مِن فَضلِهِ﴾
-আল্লাহ আপন অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তাতে তারা খুশী।

- ﴿قُل لَّن يُصِيبَنَا إِلَّا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَنَا﴾
-আপনি বলুন, আল্লাহ যা আমাদের জন্য লিখে রেখেছেন তা ব্যতীত আর কিছুই কস্মিনকালেও আমাদেরকে আক্রান্ত করবে না।

- ﴿وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ﴾
-আমি তার শাহরগের চেয়েও কাছে।

- ﴿قُلِ اللَّهُ يُنَجّيكُم مِنها وَمِن كُلِّ كَربٍ﴾
-বলুন আল্লাহ তোমাদেরকে তা থেকে এবং সকল বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন।

- ﴿لا تَدري لَعَلَّ اللَّهَ يُحدِثُ بَعدَ ذلِكَ أَمرًا﴾.
-আপনি জানেন না, হয়তো আল্লাহ এরপর কোনো কিছু ঘটাবেন।

Glimpses of Quran

01 Sep, 13:34


বালাগাতুল কুরআন ০৯

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে সূরা বাকারায় পবিত্রতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে ইরশাদ করেন:

إن الله يحبُّ التوابين ويحبُّ المتطهرين.

নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।

তাওবাকারীগণের পাশাপাশি পবিত্রতা অর্জনকারীগণের কথা কেন আনা হলো? যেখানে দুটি আলাদা বিষয়। হিকমাহ হলো: আল্লাহ তায়ালা শারীরিক পবিত্রতা অর্জনের আগে মানসিক পবিত্রতার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। মনের পবিত্রতা অর্জন করলেই, গুনাহ থেকে নিজেকে পবিত্র রাখার ফলে মানুষ শারীরিক পবিত্রতা অর্জন করার তাওফিক নসীব হয়। যে গুনাহ থেকে পবিত্র না তার মন অপবিত্র। আর যার মন অপবিত্র সে শারীরিক পবিত্রতা অর্জনের সৌভাগ্য অর্জন করে ইবাদতের স্বাদ লাভ করতে পারে না।

Glimpses of Quran

02 Jun, 07:04


বালাগাতুল কুরআন ০৮

কুরআনের কিছু আয়াত দেখুন...

فَمَنْ أَبْصَرَ فَلِنَفْسِهِ
যে উপদেশ গ্রহণ করে সে তা নিজের জন্যই করে। (সূরা আনআম: ১০৪)

فَمَنِ اهْتَدَى فَلِنَفْسِهِ
যে হিদায়াতপ্রাপ্ত হয় তা তার নিজের জন্যই। (সূরা ইসরা: ১৫)

مَنْ عَمِلَ صَالِحًا فَلِنَفْسِهِ
যে নেক আমল করে তার নিজের জন্যই করে। (সূরা ফুসসিলাত: ৪৬)

مَنْ تَزَكَّى فَإِنَّمَا يَتَزَكَّى لِنَفْسِهِ
যে নিজেকে আত্মশুদ্ধ করে সে তো তার নিজেকেই করে। (সূরা ফাতির:১৮)

: مَنْ شَكَرَ فَإِنَّمَا يَشْكُرُ لِنَفْسِهِ
যে কৃতজ্ঞ হয় সে তা নিজের জন্যই হয়। (সূরা নামল:৪০)

وَمَنْ جَاهَدَ فَإِنَّمَا يُجَاهِدُ لِنَفْسِهِ
যে মুজাহাদা করে সে তো কেবলমাত্র তা তার জন্যই করে। (সূরা আনকাবুত: ০৬)

সুতরাং আমরা যদি মনে করি আমাদের আমল আল্লাহর প্রয়োজন তবে সেটা ভুল হবে। আল্লাহ আমাদের মুখাপেক্ষী নন, বরং আমরাই আমাদের আমলের বিষয়ে আল্লাহর মুখাপেক্ষী।