Tuhin Khan @tuhinkhan531996 Channel on Telegram

Tuhin Khan

@tuhinkhan531996


Official Telegram channel of Tuhin Khan

Tuhin Khan Telegram Channel Promotion (English)

Are you a fan of Tuhin Khan and want to stay updated with all his latest news, updates, and exclusive content? Look no further than the official Telegram channel of Tuhin Khan! With the username @tuhinkhan531996, this channel is your one-stop destination for everything related to this talented individual. Tuhin Khan is a renowned personality in the industry, known for his work in various fields such as music, acting, and social activism. By joining this Telegram channel, you will get access to behind-the-scenes glimpses, live Q&A sessions, exclusive announcements, and much more. Stay connected with Tuhin Khan and be a part of his journey by joining his official Telegram channel today!

Tuhin Khan

28 Dec, 18:42


‘প্রোক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক’ ঘোষণা হবে ৩১ ডিসেম্বর। অর্থাৎ, জুলাইয়ের অভ্যুত্থানকে একটা লিখিত ঘোষণার মাধ্যমে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের ইশতেহার হবে এই ঘোষণাপত্র; এতে জুলাই অভ্যুত্থানের গণআকাঙ্ক্ষা খোদাই করা হবে। বাঙলাদেশের জন্য এইটা একটা হিস্ট্রিকাল মোমেন্ট।

কিন্তু সেকেন্ড রিপাবলিক কী?

এর আগে ফ্রান্স (১৮৪৮), স্পেন (১৯৩১) ও অস্ট্রিয়ায় (১৯৪৫) সেকেন্ড রিপাবলিক ঘোষিত হইছিল। একটা রাজনৈতিক ব্যবস্থা বা বন্দোবস্ত যখন অকার্যকর হয়ে পড়ে, তখন গণআন্দোলন বা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সেটা বাতিল হয়ে যায়। নয়া বন্দোবস্ত লাগে। সেই বন্দোবস্তের ঘোষণাই মূলত সেকেন্ড রিপাবলিকের ঘোষণা।

প্রোক্লেমেশন অব রিপাবলিকের কিছু তাৎপর্য ও বৈশিষ্ট্য আছে।

১. প্রোক্লেমেশন থেকেই অভ্যুত্থান বা বিপ্লব-পরবর্তী সরকার বৈধতা পায়। তাই এটি ঘোষণা করে একটা অফিশিয়াল বা অথরিটিসম্পন্ন বডি। তথা বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা সরকার বা সরকারপ্রধান বা রেভ্যুলেশনারি বডি।

২. এই ঘোষণার আইনি ও প্রতীকী স্ট্যাটাস থাকাটা জরুরি। তথা এই ঘোষণা কন্সটিটিউশনের পার্ট হয় এবং এর মাধ্যমে কন্সটিটিউশন পুনর্গঠিত হয়। একটা নতুন কন্সটিটিউশনের সূচনা হয়।

৩. এই ঘোষণা হয় ফরমাল, লিখিত ও পাবলিক।

৪. এই ঘোষণা একটা নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সূচনা ঘটায়। পূর্ববর্তী ব্যবস্থার সাথে একটা উল্লেখযোগ্য ছেদ ঘটায়। ফ্রান্স ও স্পেনের ক্ষেত্রে এইটা ছিল মনার্কি থেকে গণতন্ত্রের দিকে যাত্রা। বাঙলাদেশের ক্ষেত্রে ফ্যাশিবাদ বা স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে গণতন্ত্রের দিকে যাত্রা।

ফ্রান্স ও স্পেনের সেকেন্ড রিপাবলিকের ঘোষণায় এই সবগুলা উপাদানই পাওয়া যায়। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকের ঘোষণায় কি সেগুলা পাওয়া যাচ্ছে/যাবে? সে প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে।

ঐতিহাসিকভাবে সেকেন্ড রিপাবলিকের কিছু পজেটিভ ও নেগেটিভ অভিজ্ঞতা আছে। যেমন:

১. পূর্ববর্তী রেজিমের পতন
২. সংস্কার ও আধুনিকায়ন-প্রবণতা। ফ্রান্স ও স্পেনের সেকেন্ড রিপাবলিক সেক্যুলারিজম প্রতিষ্ঠার লড়াইও ছিল বটে। এক্ষেত্রে বাঙলাদেশের কনটেক্সট ভিন্ন। বাঙলাদেশে এটি মূলত সেক্যুলারিজমকে রিডিফাইন করার মাধ্যমে একটি রিকনসিলিয়েশনের লড়াই।

৩. বিভিন্ন মতাদর্শিক বর্গের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই। ফ্রান্সে এই লড়াইটা হইছিল মনার্কিস্ট, লিবারাল ও সোশালিস্টদের মধ্যে। স্পেনে কনজার্ভেটিভ, অ্যানার্কিস্ট ও কম্যুনিস্টদের মধ্যে।

৪. এক্সটার্নাল প্রেশার ও ইন্টার্নাল কোন্দলের ফলে সেকেন্ড রিপাবলিক খুবই ভঙ্গুর দশায় থাকে এবং ক্ষণস্থায়ী হয়। ফ্রান্সে সেকেন্ড রিপাবলিকের পর সেকেন্ড এম্পায়ার ফিরে আসছিল; স্পেনের সেকেন্ড রিপাবলিকের অবসান ঘটছিল স্বৈরশাসক জেনারেল ফ্রাঙ্কোর উত্থানের মধ্য দিয়া।

৫. সেকেন্ড রিপাবলিকের ঘোষণা পূর্ববর্তী রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে নানাভাবে রদ করে। সাংবিধান বাতিল হয়, আগের ভ্যালু-ব্যবস্থা বাতিল হয়, নতুন জাতীয় আকাঙ্ক্ষার জন্ম হয় এবং সে-অনুযায়ী রাষ্ট্র ও সমাজ পুনর্গঠিত হয়।

বাঙলাদেশ একটা ঐতিহাসিক সময়ের সন্ধিক্ষণে দাঁড়ানো। বাঙলাদেশের সেকেন্ড রিপাবলিক কেমন হবে? কী হবে এর ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা? উত্তর দেওয়া কঠিন। যদি এটি সত্যিকারার্থে একটি প্রোক্লেমেশন হয়ে ওঠে, জুলাই অভ্যুত্থানের গণআকাঙ্ক্ষাকে সামগ্রিকভাবে ধারণ করতে পারে এবং জুলাই অভ্যুত্থানের বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতামূলক চুক্তি হয়ে উঠতে পারে, তাহলে আমরা সেকেন্ড রিপাবলিকের নেগেটিভ অভিজ্ঞতাগুলা এড়াইতে পারব। সেক্ষেত্রে এই প্রোক্লেমেশনের মাধ্যমেই নতুন বাঙলাদেশের সূচনা হবে। যদি তা না হয়, তাইলে কী হবে বলা মুশকিল।

হোপ ফর দ্য বেস্ট। দেখা হবে, ৩১ ডিসেম্বর।

Tuhin Khan

22 Dec, 06:24


অন ‘আমার দেশ’
*

প্রথমত, ১৩ সালের যে ‘শাপলা’, তার অন্তত মেজর একটা অংশ আর ‘আমার দেশ’র সাথে পলিটিকালি সেভাবে নাই বা থাকবে না। ১৩-তে ছিল, কারণ ওইটা ছিল অনেকের রাজনৈতিক অস্তিত্বের কোশ্চেন। দেশের প্রধান দুইটা পলিটিকাল স্পেক্ট্রামের একটার নেতৃত্ব দিচ্ছিল বলা চলে, আমার দেশ। এখন ব্যাপারটা তা না। ফলে আমার দেশ ১৩ সালের মত অতটা ‘এক্সেপ্টেড’ ও ‘আনচ্যালেঞ্জড’ থাকবে না।

দ্বিতীয়ত, আমার দেশ যে ধরনের সাংবাদিকতা কইরা চমক তৈরি করছিল ১৩ সালে (ইথিক্সের আলাপ বাদ দিলে, ধরন ও রাজনৈতিক কার্যকারিতা বিবেচনায় ওই সময়ে আমার দেশের ওই সাংবাদিকতা একটা বড় চমকই ছিল বলা চলে), ওই ধরনের সাংবাদিকতার জায়গাটা দখল করে নিছে ইউটিউব, সিটিজেন জার্নালিজম ও সোশাল মিডিয়াভিত্তিক জার্নালিজমের একটা বিপুল কারেন্ট। ফলে ‘আমার দেশ’ এখন আর তার আগের ‘চমক’টা ধইরা রাখতে পারবে না। যেমন, আজকের আমার দেশের যে হেডলাইন নিয়া এত আলাপ, নানাসূত্রে সোশাল মিডিয়া সচেতন জনতা সেইটা আগস্ট মাস থেকেই প্রায়, জানে। এমনকি কোনো কোনো বাইটভিত্তিক মিডিয়া এটা নিউজেও আনছে।

তৃতীয়ত, জুলাই অভ্যুত্থান ‘আমার দেশ’র জন্য একটা ডিলেমা তৈরি করছে। মানে এই: ‘আমার দেশ’র পলিসিগত বড় জায়গাটাই ছিল আওয়ামি ও ভারতবিরোধিতা। জুলাই অভ্যুত্থানের পর যে নেতৃত্ব দেশ চালাচ্ছেন, তারাও ঘোষিতভাবে আওয়ামি ও ভারতবিরোধি অবস্থানে আছেন। ফলে আমার দেশের এখন আর কোনো ইউনিক স্টেক নাই এক্ষেত্রে। বরং স্টেট অথরিটি রেটোরিকালি ও বাস্তবে আওয়ামি ও ভারতবিরোধি হওয়ায়, আমার দেশ’র অনেক কাজকে ক্ষেত্রবিশেষে ‘অতিবিপ্লবী’, ‘হঠকারী’ ও ‘স্যাবোট্যাজিং’ মনে হইতে পারে জুলাই অভ্যুত্থানের সরকার, ছাত্রনেতৃত্ব ও অন্য অনেক স্টেকহোল্ডারের কাছে। জাস্ট লাইক পিনাকী ভট্টাচার্য অ্যান্ড পি আলো সাগা৷

চতুর্থত, জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতৃত্বের সাথে আমার দেশ’র সম্পর্কটা ঠিক কেমন? মানে, পার্সোনাল সম্পর্ক না। মতাদর্শিক বা ভাবাদর্শিক সম্পর্কের কথা কইছি। ধরা যাক, পুনঃপ্রকাশিত ‘আমার দেশ’ পত্রিকার পয়লা কপিটাতে কি ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’র কারুর লেখা কি ছাপা হইছে? বা তাদের সম্পর্কে কোনো নিউজ? বা ছাত্র উপদেষ্টাদের লেখা? যদ্দুর জানি, না। ছাত্র প্রতিনিধি হিশাবে সাদিক কায়েম আর নুসরাত তাবাসসুমের লেখা ছাপা হইছে। এটা আমার দেশ’র কনশাস ডিসিশন হইতে পারে, আবার লিমিটেশনও হইতে পারে। জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতৃত্ব আমার দেশ’র ভাবাদর্শিক বলয়ে নাই, এটা পষ্ট। ফলে জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়া জন্ম নেওয়া তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশরেই আমার দেশ নিজেদের দিকে আর টানতে পারবে না হয়ত।

পঞ্চমত, আই লাভ মাহমুদ ভাই সো মাচ। মাহমুদ ভাই ওয়াজ মাই চাইল্ডহুড হিরো। মাহমুদ ভাইর অদ্ভুত সাহস, ঋজু উচ্চারণ, হিরোইক প্রেজেন্স— সবই ভালো লাগে। বাট ইভেন মাহমুদ ভাই হ্যাজ লিমিটেশনস। ‘পলিটিকাল হিস্ট্রি অব বেঙ্গল’ বইতে মাহমুদ ভাই যে মুসলিম জাতিবাদের লাইন নিছেন, তার মাশুল হিশাবে অনেক টেক্সটবুক ফ্যাশিস্টকে সাথে নিয়া কাজ করতে হইছে মাহমুদ ভাইয়ের, এখনও হচ্ছে। বিএনপিকে ও জুলাইয়ের ছাত্রনেতৃত্বকে কিছুটা দূরেও ঠেলতে হইছে। মাহমুদ ভাই হয়ত এইটারে গুরুত্বপূর্ণ ভাবেন না, বাট আমার দেশ’র ভবিষ্যতের জন্য এইটা গুরুতর। মাহমুদ ভাই তো আর চিরকাল থাকবে না। এরপর আমার দেশ’র লিগাসি কী হবে— সেটা নির্ধারিত হবে আগামী ৫ বছরে।

বাঙলাদেশের পলিটিকাল স্পেক্ট্রামের যে অংশটারে মাথায় নিয়া মাহমুদ ভাই উনার পত্রিকার ভাবাদর্শিক ও ব্যবসায়ী মডেল সাজাইছেন, দুঃখের বিষয় হইল, এদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের ফ্যাশিস্ট প্রবণতা সর্বজনবিদিত। ফলে সেক্যুলারদের তরফে ‘পলিটিকালি কারেক্ট’ থাকার চাপ তো আছেই, পাশাপাশি নিজের পক্ষের এই ফ্যাশিস্টরাও মাহমুদ ভাইকে চাপে রাখা শুরু করবেন, যদি মাহমুদ ভাই ভাবাদর্শিক ও ব্যবসায়িক দিক দিয়ে এদের উপর পুরাপুরি নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।

ষষ্ঠত, মাহমুদ ভাইয়ের অনেক ব্যক্তিগত রাজনৈতিক হিশাব-নিকাশ বাকি এখনও। মাহমুদ ভাইকে আমি যদ্দুর চিনি, উনি এই হিশাবগুলা ভোলেন নাই। এবং উনি এই হিশাবের খাতাগুলা আস্তে আস্তে খুলবেন। বাঙলাদেশের বর্তমান সিচুয়েশনে, মাঠে অ্যাক্টিভ বা অ্যাক্টিভ হইতে চাওয়া রাজনৈতিক দলগুলার সাথে সেই হিশাব-নিকাশগুলা আদৌ মিলবে না ক্ল্যাশ করবে— তাও এক বড় বিবেচনা।

দীর্ঘ ১১ বছর পর আমার দেশ’র পুনঃপ্রকাশ উপলক্ষে এই ছিল আমার টেক। আমার দেশ’র জন্য রইল আমার উৎকণ্ঠামিশ্রিত অশেষ শুভকামনা।

Tuhin Khan

19 Dec, 16:33


ওয়াজেদ সীমান্ত হত্যায় জড়িত ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

গণ-অভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের হুমকিদাতা নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে। অভিযান চলমান আছে, কেউ হুমকি পেলে নিকটস্থ থানায় জিডি করুন।

ফ্যাসিবাদীদের টেররিজমের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।

Tuhin Khan

10 Dec, 05:12


Geopolitics isn’t a linear thing to explain or understand. There are many macro and micro-level political and ideological equations, relations, and settlements, that make up a geopolitical eco-system. You can cheer with the people, and you can celebrate the fall of a dictator. But geopolitics is a harsh thing. It isn’t any fantasy.

What was the geopolitical settlement of Syria before Asad’s fall? Let’s take a bird’s eye view.

Palestine has always had a very close relationship with Syria. Syria became a state sponsor of Hamas in the 1990s. After American and Israeli pressure led Jordan to expel Hamas’s exiled political leadership in 1999, the group relocated its external headquarters to Damascus in 2001 after a brief period in Qatar. In Damascus, Hamas was allowed to train militants on Syrian soil, while its exiled political leadership used the Syrian Ministry of Information for press conferences. This support was a key reason Syria has remained on the U.S. State Department’s “state sponsors of terrorism” list for many years.

But in 2011, Hamas leadership expressed support for anti-Assad rebels. So their good relationship turned into a bitter one and by 2012, the Hamas politburo left Syria for Egypt and Qatar. Later, Iran and Hizbollah tried to reconcile between the two countries, but their relationship has never been like before. In the meanwhile, the Gulf states took it as an opportunity to bring Assad and Syria on their side.

So there was a bitter relationship between Assad and Hamas (not Palestine as such). So after the Al-Aqsa Flood, Syria condemned Israel and showed solidarity with Palestine, without mentioning Hamas. But does it mean that Assad’s Syria wasn't of any importance to Palestine?

No. There was a rift between Hamas and Assad, but Syria was important for other reasons. There were Hezbollah and Iran-backed fighters. Syria permitted Iran and Hizbollah to use Syrian soil to create a strong axis around Israel and fight against them. Syria shares a border with Israel; so the presence of Iran-backed militias in Syria was a serious threat to Israel. It wasn't Assad, but Assad’s permission for Iran to use Syria’s soil to fight Israel, which was very crucial for Palestinians.

Now, what about the relationship between rebels and Israel? We can think that these AQ-influenced rebel groups will surely be hostile to Israel. But there are some things: 1. There are many democratic liberal forces among the rebel groups; 2. The Jihadi groups showed their willingness to be moderated. 3. There are the U.S., Turkey, and Gulf states. So, how was their relationship with Israel?

We don’t know much. But listen to the former spokesperson of FSA, the group that is leading this war with HTS: “We call on the Israeli leadership to launch intensive attacks against the positions and troops of the Iran-backed militias in Syrian territory. It will be necessary to strike sites in Homs, Damascus, and on the Lebanon border. This will help rid Syria’s territory of the Lebanese presence and Hezbollah’s weapons and the octopus tentacles of Iran.”

‘Operation Good Neighbour’ was conducted by Israel to send humanitarian aid to war-affected Syrian people. Throughout this operation, Israel reported to have supplied Syrian rebels with cash, weapons, and other aid throughout the operation, an allegation it would admit to in 2019.

But what will be the position of HTS and other Jihadi leaders? Especially after Assad’s fall? Yet to see. I depicted a speculative picture in my previous piece on Syria.

So this is the geopolitical scenario. Assad isn’t the fact here. The fact is Assad’s good relationship with Iran and Iran’s open access to Syrian soil. Without that access now, what will be the scenario of Syrian foreign policy? And will it be in favor of Palestine? Let’s see!

Tuhin Khan

08 Dec, 20:48


I was nearly sure that, after the fall of Damascus, Israel will take advantage. It happened, and Israel took over a large territory of Syrian part of Golan Heights. And this is what I think will happen next:

U.S., Turkey, Russia, Iran and other Arab countries will try their best to avoid escalation. In this case, Israel will act as the ‘bad-cop’ who will legitimize the urge for de-escalation. People don't want Asad back, so they don't want anything by which the ‘Asad was good’ feeling will come back in the region. So, they may stand with de-escalation proposal of the whole world.

In the meantime, U.S. and Turkey will try to choose a favorable ally in Syria. Julani of HTS is the de-facto leader of Syria right now. His departure from AQ to HTS, and his moderated ideological position from global Jihad to national struggle is being seen as his willingness to stop the war and establish peace. But U.S. had a bad relation with Julani in the past. So U.S. will try to negotiate with him and bring him in their favorable position. At the same time, U.S. will keep pressurizing him by other possibilities, which is clear from Biden’s recent speech (in the comment section). And there are plenty of other options in Syria.

So in the face of the U.S. pressure, the Israeli attack, the Arab world’s urge and the economic situation in Syria, Julani may negotiate with the U.S. to consolidate his power against other political and military fractions in Syria. He will try to be the popular leader of the country.

Iran will try to bring the new leadership in its axis, but it will be a tough game. Partly because of the U.S., Turkey and its Arab allies, and partly because of Iran’s role in the Syrian war. So, if the new Syrian government wants to find its new ally, it is most likely to be the U.S. and its allies. And what will be the fate of Rojava and Kurdis? We never know. U.S. and Turkey aren't on the same page about them, so their fate is still uncertain.

And all of these will happen only if al-Julani can consolidate his power over the whole country. And what if these speculations are wrong? What if Julani declares war on America and Israel? What if the war breaks out in Iraq and Lebanon? What if Iran and Russia take this situation as an opportunity? What if AQ, Daesh and other hostile fractions of Syrian war stand against al-Julani? What if the negotiation process between U.S. & al-Julani fails? We never know.

All we know for now is that, Syria is free. And Israel occupied another piece of land from the birthplace of the new Syrian leader ‘al-Golani’.

Tuhin Khan

08 Dec, 04:53


History is changing everywhere, but apparently not against the U.S. What is happening in Syria is a new settlement in the Middle East. This new settlement isn't a risk only for Iran and Iran-backed political cum military infrastructure in Lebanon, Syria, Iraq and Palestine. Surely Iran and Russia-backed Middle Eastern settlement is the primary opponent of this new settlement. But there are others.

The ongoing war against Asad is leading mainly by two military groups: FSA (Free Syrian Army) and HTS (Haiat Tahri al-Sham). The former is a coalition of predominantly democratic forces; the later is a coalition of AQ-splinter groups. Therer are many other groups including SDF & other Kurdish forces. The map of the country is still shattered between various armed groups— mainly neo-islamist forces, democratic forces, and Kurdish forces. And there are AQ & Daesh. So it’s never an easy task for current syrian opposition groups to find a middle path or national reconciliation. There are many power bases in Syria right now. The country’s map is shattered.

So, what can happen? The Syrian war will directly affect the palestinian struggle, at least, its current set-up. With almost zero control in Syria, Iran will lose its control over Iraq & Lebanon, which will be a favourable situation for Israel. Israel is currently shelling on the Syria-Iraq border, and supposedly gathering their troops in Golan Heights. But what does this war and its anticipated aftermath mean to the Arab States which are currently the allies of U.S.?

The five Arab countries, namely, Saudi Arabia, Egypt, Jordan, Qatar & Iraq, along with Iran, Russia and Turkey, signed a joint statement demanding the political solution and calling for the implementation of UN Security Council resolution 2254 to end the fighting in Syria. Cause if this war spread to Iraq and Lebanon, this will be a mass for also the anti-Iranian american friends in ME. So they’re trying to stop this war and find a political solution.

So, the situation is very volatile. One thing is clear: Asad’s setback is only the beginning. Syria is heading to a very long war, I guess. A quick national reconciliation seems almost impossible at this stage. If the Arab allies of ME can handle this situation successfully, they eventually can manage the palestine issue very easily, and they also can head towards the Abraham Accord, the so-called ‘deal of the century’ of Trupm.

Whatever happens, the ME is going to enter in a new political settlement. And as for now, I see it as a win for U.S. in ME. The rest is hidden in the mystery of future.

Tuhin Khan

12 Oct, 11:52


See you. Not for mind.

Tuhin Khan

06 Oct, 18:16


1.

I have shared a long history of engaging in conversations and close companionship with Mahfuz Abdullah. Over nearly seven to eight years of collaboration and joint struggle, our thoughts and experiences have undergone complex interactions. It was never a simple, linear, or uniform process. Our unity in ideas and actions, as well as our differences in thoughts and personal stances, have all contributed to a multifaceted and multilayered, yet coherent, clear, and transparent understanding. This dynamic has been one of honesty, mutual respect, and practical value. It can be metaphorically described as a blend of roses and thorns, combining both aesthetics and pragmatism.

The intricate process of our friendship and mutual understanding holds deep personal significance for me, as well as for both of us. Mahfuz Bhai (Brother) likely shares the same sentiment. Even in the face of the evolving political reality of our country, this process of mutuality continues and will persist.

2.

Recently, however, I have noticed a troubling trend in the discussions surrounding Mahfuz Abdullah's thoughts. Propaganda and ideological narratives have emerged, which seem to obstruct his work as a key figure in the newly-formed government of Bangladesh. These efforts unjustly undermine both the revolution and its achievements, while also creating an environment of insecurity and discomfort around Mahfuz as an individual. This has become a source of concern for us all.

The Awami fascist camp spreads propaganda accusing him of being associated with Hizb ut-Tahrir, while the Islamist fascist camp brands him as anti-religious, a follower of Lalon, an atheist, and a heretic. This joint attack by these malicious factions is attempting to obscure the true essence of Mahfuz's thinking. We stand firmly with Mahfuz Abdullah against all such propaganda.

3.

But why has Mahfuz Abdullah fallen into this predicament? This is something we must understand. Before the July revolution, no one could identify any central leader or character behind the movement. The fundamental philosophy and aspirations of the movement belonged to the people and their collective ownership. The lack of a centralized leadership was also a factor in its success. However, after the revolution, we saw various stakeholders being marginalized, while Mahfuz Abdullah was presented by the media, civil society, and even the Chief Advisor as the "mastermind" behind the revolution.

Mahfuz’s contribution to the movement is evident to all. Yet, by casting him as a mastermind, the establishment has placed him in a position of confrontation with various stakeholders. Terms like "mastermind" and "meticulously designed" have shrouded him in mystery, creating the perception that he orchestrated the revolution like a magician working behind the scenes. As a result, his personal life, thoughts, and actions have taken center stage, overshadowing the collective spirit and aspirations of the revolution. The establishment has successfully created a situation where controlling Mahfuz’s thoughts seems to equate to controlling the revolution itself.

This has led to two outcomes: on one side, the League, the A-Team, and Taslima Nasreen have found a convenient target to undermine the revolution; on the other side, various societal groups seek to project their own desires onto Mahfuz’s thinking. When they fail to find such reflections, they turn against him.

4.

Mahfuz Bhai has, to some extent, failed to deconstruct this narrative. The ideas he advocates are not new, nor are they cause for alarm. Since 2013, these ideas have grown through the collective political, social, literary, and cultural activities of a large generation. What Mahfuz is calling for is a Bangladesh where all people can coexist harmoniously, where the existing evil binaries in society are resolved. Ultimately, he advocates for a state built on Bangladesh’s own history, traditions, and aspirations.

Tuhin Khan

05 Oct, 10:34


‘তো ‘শাহবাগি’ শব্দেরও এই ধরনের র‍্যাডিকাল অর্থান্তর ঘটছে গেল কয়েক বছরের অনলাইনকেন্দ্রিক কালচারাল ক্যাচালের সূত্র ধইরা। এই অর্থান্তর প্রক্রিয়া এখন প্রায় পিকে। অতি দ্রুতই আমরা এই শব্দের অন্যতর অর্থের জগতে প্রবেশ করব। সো, ওয়েলকাম টু দ্য এরা অব পোস্ট-শাহবাগিজম।’

২০২৩ সালে, ফ্যাসিস্ট পতনের আগেই লেখছিলাম এই বাক্য। দেশে ফ্যাসিবাদবিরোধীদের মধ্যে সম্ভবত আমিই প্রথম ‘সংস্কারপন্থী শাহবাগি’ উপাধি পাই। এরপর আরো অনেকে। ‘শাহবাগি’ শব্দের কালচারাল পলিটিক্স নিয়া এরপর আমি সতর্ক হই। ‘শাহবাগি’ শব্দের মধ্যে মুহূর্মুহু অর্থান্তর ঘটায়ে, একটা বড় গ্রুপ যে এইটারে নিজেদের ইথিকো-পলিটিকাল কল্পনার পক্ষে কালচারাল ওয়রের উইপন হিশেবে ইউজ করতেছেন, এবং এই প্রক্রিয়ায় যে একদিন শাহবাগের প্রত্যক্ষ অপোনেন্ট জামায়াতও শাহবাগি হবে— সেই ভবিষ্যতবাণী করি। ফ্যাসিস্টের পতনের পর সেই বাস্তবতা এখন আমাদের চোখের সামনে।

‘শাহবাগ-শাপলার বাইরে বাঙলাদেশরে ভাবতে পারা লাগবে’— বহু আগেই লেখছিলাম এই কথা৷ জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়া আমরা এইটা বাস্তবে কইরাও দেখাইছে, বিশেষত আগস্টের ২ তারিখে, দ্রোহযাত্রায়। অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়া ছাত্রনেতারাও বারবার এই কথাটিই নানাভাবে বলার চেষ্টা করছেন ও করতেছেন। এবং বাঙলাদেশরে শাহবাগ-শাপলার ওই কালচারাল ও ইথিকো-পলিটিকাল ফ্রেমের বাইরে ভাবতে না পারলে, দেশে ক্রমাগত নতুন নতুন শাহবাগ আর শাপলাই কেবল উৎপাদিত হবে। সেটা বাঙলাদেশের জন্য মোটেই ভালো হবে না।

সেজন্য আমি ফ্যাসিস্ট-পতনের পরবর্তী সময়টারে বলতে চাই ‘পোস্ট-শাহবাগ-শাপলা’ টাইম। সেটা ‘পোস্ট-ইডিওলজি’ অর্থে না, বরং পুরানা ইডিওলজিকাল সেটাপ ও ফর্মেশনের ভাইঙা পড়া অর্থে।

২০২৩ সালে যা যা লেখছিলাম ‘শাহবাগি’ শব্দের ব্যাপারে, তা আজকের বাঙলাদেশের আলোকে আরেকবার মিলায়ে নেন। লিংক দেওয়া থাকলো কমেন্টে।

Tuhin Khan

23 Sep, 10:54


গত ১৬ বছরে ক্যাম্পাসে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করেছে, হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়েছে শুধুমাত্র ২০১৭ সালের একটি ঘটনার। মামলা না করে যদি বিচার চাওয়া হয় তাহলে কিসের ভিত্তিতে বিচার হবে?

গত ১৬ বছরের ভিক্টিমদের সুনির্দিষ্ট তথ্য, হামলা কিংবা নির্যাতনের বিস্তারিত, অভিযুক্তের নিপীড়নের বিবরণসহ মামলা করার আহ্বান জানাচ্ছি।

বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সদস্যরাও ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন, আপনারাও মামলা করুন যাতে করে কোন অপরাধী আবারও পুনর্বাসনের সুযোগ না পায়। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মামলায় কারো নাম না দেওয়ার অনুরোধ থাকবে।

Tuhin Khan

18 Sep, 21:26


বিগত ১০ বছরের ইতিহাসে ঢাবিতে কোনো আবাসিক হলের মধ্যে কেউ খুন হয় নাই, কোনো লাশ পড়ে নাই। আজ সেটা হইল। রাজনীতিহীন ক্যাম্পাসের এইসব খুন কি ‘অরাজনৈতিক’? এসব ‘অরাজনৈতিক’ খুন কি একটু কম খারাপ? এসব খুনের কোনো বিচার বা শাস্তি চাওয়া যাবে না?

‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ নামে কারা খুন করলো মানসিক ভারসাম্যহীম একটা মানুশরে? তাও খুনের আগে ভাত খাওয়াইছে লোকটারে। আবরারকে ঘিরে যেভাবে খুনি ছাত্রলীগ বসেছিল রুমের মধ্যে, ঠিক সেভাবে রক্তাক্ত লোকটারে ঘিরে বসে আছে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’রা— ছবিতে দেখলাম। এই ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’দের বিচার কীভাবে হবে? ক্যাম্পাসে কি প্রক্টর নাই? অবশ্য আজকাল নাকি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমেই ক্যাম্পাসের নানা বিচারকার্য সম্পাদন করছেন প্রক্টরিয়াল টিম, শুনলাম। কী আর করা!

এই খুনের বিরুদ্ধে আমাদের কথা বলা লাগবে। ক্যাম্পাসে খুনাখুনি শুরু করল কারা? ওদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা লাগবে। ঢাবি ক্যাম্পাসে বহিরাগত নিষিদ্ধের প্রথমদিনই যারা এই ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসে অংশ নিল, ঢাবির শিক্ষার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন আশা করি।

Tuhin Khan

18 Sep, 11:34


দেশে আর্মি নামানো, ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা আর এখন এই মোবাইল কোর্ট দিয়ে বহিরাগত খেদানোর প্রকল্প— সবগুলাই একটি সুতায় বান্ধা। এই সুতাটির নাম ‘বিরাজনীতিকিকরণ’। পাবলিক স্পেসগুলা থেকে পাবলিকরে খেদায়ে দেওয়া— এইটা বিরাজনীতিকিকরণের একটা প্রধানতম লক্ষণ। মূলত জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃস্থানীয় শক্তিটারে সুশীল স্টাব্লিশমেন্ট ও আরবান মিডল ক্লাশের উপযোগী একটা শক্তি হিশেবে গড়ে তোলা এবং এর মাধ্যমে দেশে একটি ‘রাজনীতিবিরুদ্ধ’ রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার প্রক্রিয়া হিশেবেই এই কাজগুলা করা হচ্ছে। আর্মি, সিভিল সোসাইটি, মিডিয়া ও বর্তমান সরকার এই প্রক্রিয়াটির সাথে নানামাত্রার সম্মতিসহ যুক্ত আছেন। প্রক্রিয়াটি কতটুকু সফল হবে, তা এখনও সন্দেহের উর্ধ্বে নয়। কিন্তু ব্যর্থ হইলে তা যে দেশে আরেকটা বাজে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করবে, এটা নিশ্চিত।

ফলে পরিস্থিতিটা খুব নাজুক। ঢাবি সবসময় দেশকে রাজনৈতিক সংকট বা বিরাজনীতিকিকরণের হাত থেকে রক্ষা করছে। আওয়ামি আমলে ক্যাম্পাসগুলাতে যে বিরাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করছিল ছাত্রলীগ, সেটারেও নয়া রাজনীতির মাধ্যমে রুখে দিছিল শিক্ষার্থীরা। এখন, এই নয়া ১/১১ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে তারা কীভাবে রুখে দাঁড়াবে, সেটাই দেখার বিষয়।

Tuhin Khan

09 Sep, 05:55


অন কাওয়ালি
*

১.
‘কাওয়ালি’ মূলত উপমহদেশের চিশতিয়া ঘরানার সুফিদের আবিষ্কৃত ‘সামা’ বা ‘ওজদ’ সংগীতের একটা ধরন। মহান সুফি মাহবুবে এলাহি খাজা নিজাউদ্দিন আউলিয়ার একান্ত শাগরেদ, মুঘল ভারতের শ্রেষ্ঠ সংগীতজ্ঞ আমির খসরু এই ঘরানার প্রবর্তক। যদিও আমির খসরুর উদ্ভাবিত ঘরানার নাম ছিল ‘কওল’ বা ‘কথামালা’। কাওয়ালির চাইতে তুলনামূলক গুরুগম্ভীর কমপোজিশন ও সীমিত বিষয়বস্তু (প্রধানত আল্লাহ-রাসুলের বন্দনা, কিছু মারেফতি তত্ত্ব) ছিল এই গানের বৈশিষ্ট্য। সংগীতের ইতিহাস যারা লিখছেন, তাদের অনেকেই মনে করেন যে, উপমহাদেশে হামদ-নাতের ধারাটি আসছে এই ‘কওল’ ঘরানা থেকেই।

খসরুর দুই খাস শিষ্য, যাদের সাথে নিয়া আলাউদ্দিন খিলজির দরবারে খসরু হারায়ে দিছিলেন দক্ষিণ ভারতের শ্রেষ্ঠ সংগীতজ্ঞ নায়েক গোপালরে, পাইছিলেন ‘ভারতের শ্রেষ্ঠ সংগীতজ্ঞ’ বা ‘নায়েক’ উপাধি, সেই সাম্মাত ও নিয়ায মূলত কওলরে ডেভেলপ করেন কাওয়ালিতে। কাওয়ালি তুলনামূলক কম ‘গুরুগম্ভীর’; স্বরগ্রামের মুহূর্মুহু উঁচানিচা কম্পন এবং মূল বিষয়টারে ফোকাস কইরা তালে তালে গাওয়া কোরাস বা ধুঁয়া এই গানের প্রধান বৈশিষ্ট্য। একসময় চিশতি তরিকার সুফিদের খানকায় হইত কাওয়ালি, সামা সংগীতের একটা ধরন হিশাবে। পরে এটা আর খানকায় সীমিত থাকে নাই। ভাব, বাণী, গাওয়ার ধরন ও বৈঠকী ঢঙয়ের কারণেই, খুব দ্রুত এই গান বেশ পপুলারিটি পায়, এবং উপমহাদেশের কালচারের অংশ হয়ে যায়।

কাওয়ালির ভাষা মূলত উর্দু, ফার্সি ও পাঞ্জাবির একটা মিক্সচার। সাথে অন্যান্য রেজিওনাল ভাষায়ও কাওয়ালি আছে, সেগুলা অত রিচ না। ট্রাডিশনাল কাওয়ালির কিছু রীতি ছিল। কাওয়ালি শুরু হইত সাধারণত হামদ ও নাতের মাধ্যমে। তারপর হযরত আলি মাওলা বা কোন একজন বুজুর্গের মানাকেব বা চরিত্র নিয়া আরেকটা নাত গাওয়া হইত। শিয়া সুফিদের খানকায় এরপর কারবালার ঘটনা স্মরণে মর্সিয়া হইত, যা সুন্নিদের খানকায় হইত না। এরপর মূল কাওয়ালি জলশা শুরু হইত।

সুফিদের খানকায় প্রবর্তিত কাওয়ালি বা সামার মূল উদ্দেশ্য ছিল মূলত তাল ও সুরের সাথে একাত্ম হয়ে, খোদার এশকে ফানা হয়ে যাওয়া। সুর করে করে সশব্দ যিকিরের সময় যেমন অনেক বুজুর্গের হাল চড়ে যেত, কোরআনের নির্দিষ্ট আয়াত শুনে কাঁদতে কাঁদতে যেমন বেহুঁশ হয়ে পড়তেন অনেক পির ও দরবেশ, সামার ব্যাপারটাও ছিল এমন।

২.
কাওয়ালি আমাদের রেজিস্ট্যান্সের প্রতীক হয়ে ওঠে ঢাবিতে কাওয়ালি অনুষ্ঠানে হামলার মধ্য দিয়া। আমি ও আমার বন্ধুরা ওইদিন সন্ধ্যায়, এবং পরদিন সকালে, এই হামলার প্রতিবাদে মিছিল করি। সেখানে আমরা কালচারাল বহুত্ব ও মুক্তির কথা কই। আগেপড়ে সিলসিলা কাওয়ালি ব্যান্ডও ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয় টিএসসিতে।

লক্ষনীয় যে, ওই কাওয়ালি অনুষ্ঠানের আয়োজকরা কালচারাল বৈচিত্র্য উদযাপনের কথা বলছিলেন তখন। আয়োজক নেহাল মুহাম্মদ সেসময় অনুষ্ঠানে বাদ্য-বাজনার উপস্থিতিরে সেলিব্রেট করছিলেন। প্রতিক্রিয়ায় একদল ইসলামিস্ট এই আয়োজনের বিরোধিতা করছিলেন। তাদের মতে এটা ছিল ‘শাহবাগি আয়োজন’। তাদের কেউ কেউ হামলার পর আলহামদুলিল্লাহও পড়ছেন।

যে রেজিস্ট্যান্সের জায়গা থেকে কাওয়ালিরে আমরা সামনে আনি, সেটা ছিল কালচারাল প্লুরালিটির লড়াই, কালচারাল আধিপত্যের না। এটা মাথায় রাখা লাগবে।

৩.
এখন ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে যে কাওয়ালি হইতেছে, সেগুলার ব্যাপারে আমার কয়েকটা অবজার্ভেশন:

১. এগুলা রেজিস্ট্যান্স সিম্বল ও কালচারাল বহুত্বের চর্চার জায়গা থেকে কাওয়ালির যে গুরুত্ব তৈরি হইছিল, সেখান থেকে হচ্ছে না। বরং, একটা ‘ইসলামি ভাবধারা’ তৈরির জায়গা থেকে হচ্ছে। ফলত এখানে ‘কাওয়ালি’র আদি ও আশল প্রাক্টিসগুলা বাদ দিয়া, বাদ্যযন্ত্র বাদ দিয়া, এক ধরনের সহি ‘ইসলামাইজড’ কাওয়ালির (যা মূলত ইসলামি সংগীতেই সীমিত হয়ে থাকতেছে আদতে) চর্চা হচ্ছে। এবং একারণেই কিনা জানি না, কাওয়ালি আসরগুলা থেকে মাজারে মাজারে হামলার কোনো প্রতিবাদ করা হচ্ছে না। অথচ মাজারে হামলার বিরুদ্ধে সবচাইতে শক্তিশালী কালচারাল রেজিস্ট্যান্স হইতে পারত মাজারে মাজারে কাওয়ালি।

২. কাওয়ালি মূলত হিন্দুস্তানি কালচার যতটা, অতোটা বঙ্গের কালচার না। কাওয়ালির রুহ হইল পাঞ্জাবি, উর্দু ও ফার্সি ভাষা। বাঙলায় উর্দু-ফার্সি শব্দ আর সুর-তানগুলা প্রয়োগ কইরা কাওয়ালির একটা সফল আবহ তৈয়ার করছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। তথাপি কাওয়ালি মূলত মোগল হিন্দুস্তানেরই জিনিশ।

এখন যে কাওয়ালি আসরগুলা হচ্ছে, সেখানে এই হিন্দুস্তানি মোগলাই কালচার হিশেবে কাওয়ালি প্রাক্টিসের ব্যাপারটাও দেখা যাচ্ছে। এবং আয়োজনের ধরনে, বাঙলার কালচারাল ধারাগুলার সাথে কাওয়ালির একটা কৃত্তিম বিরোধ তৈয়ার করা হচ্ছে এভাবে যে, (বাদ্যহীন) কাওয়ালি ইসলামি ও হিন্দুস্তানি মোঘল কালচার, ফলত মোসলমানের; আর বাঙলা গানের কাওয়ালিটাইপ ধারাগুলা ‘ইসলামি’ না, উপরন্তু বাঙলা, ফলে মোসলমানের কালচার থেকে দূরের। কেউ মুখে বলতেছে না মেবি, বাট এই প্রিমাইজটা আছে আরকি ইনহেরেন্টলি।

Tuhin Khan

03 Sep, 19:06


যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হইতেছে ৪ তারিখ। অবৈধ অস্ত্র ও অর্থসম্পদ উদ্ধারের লক্ষ্যে পরিচালিত হবে এই অভিযান। এই অভিযানে কী কী করা হচ্ছে বা হবে— সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখা জরুরি। এই অভিযান ‘সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ দমন’র নামে ‘বিএনপি দমন’ কর্মসূচিতে পরিণত হয় কিনা, সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি। পাশাপাশি এই অভিযানের আফটার ইফেক্ট কী হয়, সেটাও অ্যাসেস করতে পারতে হবে আমাদের।

সাংবাদিক নেতারা সরকারকে ২ বছর থাকার পরামর্শ দিছেন। আমরা ভুলতেই পারছি না যে, এই নেতাদের একটা অংশ ১/১১-র কুশীলব। এরা বাঙলাদেশের রাজনীতি নিয়া কী ভাবে, আমরা জানি। আমরা নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলছি বটে, কিন্তু সেই বন্দোবস্ত কী হবে? তার কোনো ক্লিয়ার রূপরেখা কিন্তু এখনও আমাদের সামনে নাই। ফলে, নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষারে কোনো গ্রুপ যেন গণবিরোধী কোনো রাজনৈতিক বন্দোবস্তে পরিণত করতে না পারে, সেদিকে হুঁশিয়ার থাকা লাগবে।

বাঙলাদেশ আমাদের। এই দেশের সার্বভৌমত্ব আমাদেরই রক্ষা করা লাগবে। রাজনীতি মাইনাস, ১/১১, জরুরি অবস্থা, সেনাশাসন বা চরমপন্থী রাষ্ট্রব্যবস্থা— নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ফাঁক ফোকর দিয়া এরা মাথা তুইলা দাঁড়াইতে চাইতে পারে নিঃসন্দেহে। এবং এই সিচুয়েশনরে কাজে লাগায়ে বাঙলাদেশের সার্বভৌমত্বরে হুমকির মুখ ফেলে দিতে পারে মাকসুদের মত প্রোপাগান্ডিস্টরা।

হঁশিয়ার হোন, নজর খোলা রাখেন। ইনকেলাব জিন্দাবাদ।

Tuhin Khan

03 Sep, 16:11


একজন জিগাইতেছিলেন যে, ১৯৯১ আর ২০২৪'র ইনটেরিম গভর্মেন্টের মধ্যে মেজর ডিফরেন্সটা কি? তখন বললাম, ৯১-এ সরকার ছিল ৩ মাসের - এইটা সবাই জানতো, এবং এইটা নিয়া কারো কোন দ্বিমত ছিল না, এইবার এইটা নাই... আপনি ঢাকা থিকা চিটাগাং যাবেন, কিনতু কদ্দিনে যাবেন, কেমনে যাবেন - জানেন না! এইটা কোন ভালো জিনিস না

সেকেন্ড হইতেছে অইটা ফর্মড হইছিল পলিটিকাল দলগুলার ব্যাক-আপে, জাতীয় পার্টি বাদে সব পলিটিকাল দলগুলা ডিসিশান নিয়া এইটা বানাইছিল, আলাপ-আলোচনার ভিতর দিয়া; আর ২০২৪-এ ছাত্র-জনতার যেই ফোর্সটা অবৈধ সরকার'কে হঠাইছে, তারা এর ফর্মুলেশনে আছে, পলিটিকাল দলগুলাও আছে, কিনতু তারাই মেইন ফোর্স না...

থার্ড হইতেছে, ১৯৯১-এ কাজ ছিল জাস্ট ইলেকশন করা, গর্ভমেন্টে এতো চেইঞ্জের দরকার পড়ে নাই, পুলিশও এতো গুলি চালায় নাই, এতো বড় গনহত্যা হয় নাই; জাস্ট ফেয়ার ইলেকশনের দাবিতে স্বৈরাচার'রে সরানো হইছে; এখন একটা সিসটেম দাঁড়ায়া আছে, যেইটারে না সরায়া ইলেকশন করাটা তেমন কিছু মিন করবে না; যার ফলে সমস্যার এক্সটেন্ড'টা আরো বেশি...

এই ডিফরেন্সগুলা আছে

কিনতু একইসাথে ২০০৭ সালের ১/১১'র গভর্মেন্টের সাথেও মিল-অমিলের কিছু জায়গা আছে... ফার্স্ট ঘটনা হইতেছে অই সরকারের ব্যাক-আপে মিলিটারি ছিল, এইখানেও মিলিটারি আছে একটা সহযোগি ফোর্স হিসাবে, এইখানে টেনশনের জায়গাটা আছে, এক্সপ্লোরড না করলেও পুরাপুরি

সেকেন্ড হইতেছে, ১/১১'র গভর্মেন্টও কিছু পলিটিকাল চেইঞ্জ করতে চাইতেছিলেন, যেইটা উপর থিকা চাপানো ঘটনা ছিল, এবং আখেরে গিয়া বাংলাদেশের পলিটিকাল জায়গাটারে নেগেটিভলিই ইমপ্যাক্ট করছিল; ইকনোমিক ও কালচারাল এলিট-শ্রেনি মিলিটারির লগে মিইলা নিজেদের স্বার্থই হাসিল করতেছিল; ইউনুস-সরকারও এলিট-শ্রেনিরই রিপ্রেজেন্টেটিভ - এই মিলটাও আছে...

থার্ড, উনারাও দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে চাইতেছিলেন, এখনো ২ বছরের আলাপ উঠতেছে, যেইটা আমি মনে করি তাদেরকে আরেকটা ১/১১'র দিকেই ঠেইলা দিবে, আরেকবার

Tuhin Khan

02 Sep, 22:22


চিহ্নিত আওয়ামি আসামীরা ধরা পড়ার পরেও পালায়ে যাচ্ছে। চিহ্নিত আওয়ামি ব্যবসায়ীরা সরকারের উচ্চমহলে ‘জাতীয় বুর্জোয়া’ হওয়ার আশায় ঘোরাফেরা করতেছেন। তাইলে সকল লীগাররা কি কেবল শ্রমিক শ্রেণীতে আইসা জুটলো?

সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরে যৌথ অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হইছে ভালো কথা৷ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শ্রমিক নেতাদের সাথে কি বসা হইছিল? কেবল বিজিএমইএ আর বিকেএমইএ’র সাথে মিটিং কইরাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানে কী? তাইলে কি মালিকপক্ষে কোনোই লীগ নাই? সব লীগ কেবলই শ্রমিকপক্ষে?

শ্রমিকদের দাবিগুলা আপনারা কেউ জানেন আদৌ? দেখছেন? দাবিগুলা দেখি:

১. যারা আন্দোলন করছেন, তাদের যেন চাকুরিচ্যুত করা না হয়
২. যারা চাকরি করছেন, তাদের অন্তত ১০ বছরের চাকরির নিশ্চয়তা
৩. হাজিরা বোনাস ৩০০ টাকার পরিবর্তে ৮০০ টাকা করা
৪. প্রমোশনের ক্ষেত্রে চাকরির বয়স কমপক্ষে ৩ বছর ও যোগ্যতা অনুসারে হওয়া
৫. শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করা
৬. শ্রমিক নিয়োগে নারী-পুরুষের সমানুপাতিক হারে নিয়োগ

এই দাবিগুলা কি অযৌক্তিক? এগুলা বরং জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটিজাত দাবি। এসব দাবিতে মাঠে নামায় কারখানা বন্ধ কইরা দিয়া যৌথবাহিনীর অভিযান— এটা আদৌ কোনো ভালো লক্ষণ বা সল্যুশন না। এটা অশনিসংকেত।

শ্রমিক নেতাদের সাথে বসেন। তাদের কথা শোনেন। তাদের যৌক্তিক দাবি পূরণ করেন। চা শ্রমিক, গার্মেন্টস শ্রমিক, কৃষক— এদের জীবনই এদেশে সবচে মানবেতর। জুলাই অভ্যুত্থানের ফলে তাদের জীবনে কোনো পরিবর্তন না আসলে, এই অভ্যুত্থান অর্থহীন। ফলত, সাংবিধানিকভাবে শ্রমিকশ্রেণীর স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন। তারা এই অভ্যুত্থানের পার্ট। তাদের উপর জুলুম কইরেন না।

Tuhin Khan

30 Aug, 03:54


১.
জুলাই রেভ্যুলুশন কি নির্ধারিত কোনো ছকে আঁকা আন্দোলন ছিল? কোনো একক মতাদর্শের গ্র‍্যান্ড ন্যারেটিভজাত বিষয় ছিল? এর সহজ উত্তর: না।

এই আন্দোলন শুরু হয় কোটা সংস্কারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ থেকে। এবং তখন অলমোস্ট কেউই ভাবে নাই যে এটা এক দফার দিকে যাবে। জুলাই রেভ্যুলুশন সাক্সেসফুল হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল ২ টা:

১. বিশেষ কোনো ‘বিপ্লবী ইশতেহার’ বা ‘মতাদর্শিক মাস্টারপ্ল্যান’র অনুপস্থিতি। যদি সেরকম কিছু থাকতো, তাইলে এই অভ্যুত্থানে পাবলিক পার্টিসিপেশন এত ব্যাপক হইত না।
২. ম্যাসিভ ম্যাসাকারজাত গণরোষ ও দীর্ঘদিনের লালিত গণআকাঙ্ক্ষার তীব্র বিস্ফোরণ।

যখন কার্ফ্যু জারি হইল, তখন যাত্রাবাড়ির ছাত্র-জনতা কিন্তু কারুর নির্দেশনা মেনে রাস্তায় থাকে নাই। কার্ফ্যুর পর কিন্তু সমন্বয়করা ৮ দফা আর ৯ দফা নিয়া দীর্ঘদিন ডিলেমায় ভুগছেন, কোনটারে ঔন করবেন এই মর্মে। পরবর্তীতে গণআকাঙ্ক্ষাই ৯ দফারে মেইনস্ট্রিম করে তুলছিল। এমনকি ছাত্র-জনতা ১ দফা ঘোষণা করছিল সমন্বয়কদের একদিন আগেই। ২ আগস্ট শুক্রবার সারাদেশের সর্বত্র ১ দফার ঘোষণা শুরু হয়ে যায়। সেদিন প্রেসক্লাব থেকে শহিদ মিনারের দ্রোহযাত্রায় যে মানুশের ঢল নামে, সেই ঢলই ঢাবির কার্ফ্যু পরিস্থিতিটারে নাই করে ফ্যালে। ওই ঢল মূলত গণ-আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ছিল। স্যালুট দেওয়া যে রিকশাওয়ালার ছবি এই অভ্যুত্থানের একটা সিম্বল হয়ে উঠছে, সেটা ওই দ্রোহযাত্রা থেকেই তোলা হইছিল।

ফলত চাকরিতে বৈষম্যের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া এই আন্দোলন মূলত কোনো একরৈখিক বা পরিকল্পিত ছক মাইনা আগায় নাই। কোনো একক মতাদর্শ বা ব্রেইন এই আন্দোলনের জন্ম দেয় নাই। বরং এই আন্দোলনটারে ইনিশিয়েট করছে একটা নতুন ‘ভাষা ও চিন্তাব্যবস্থা’, যা গত ১০ বছর যাবত আরবান এরিয়ায়, প্রধানত ক্যাম্পাসগুলাতে ও সোশাল মিডিয়ায়, তৈরি হইছে। এবং এই পরিস্থিতি তৈরিতে অবদান রাখছেন অসংখ্য মাথা ও মনন। অসংখ্য ফর্ম ও কন্টেন্ট। অসংখ্য সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক অ্যাক্টিভিজম।

ফলে বলা যায় যে, এই আন্দোলনে কোনো ব্যক্তি না, বরং ওই নতুন ‘ভাষা, চিন্তা ও চিহ্নব্যবস্থা’টিই ছিল প্রধান নিয়ামক। এই রেভ্যুলুশনরে কোনো একজন ব্যক্তি বা তার ব্যক্তিগত চিন্তার উৎপাদন ভাবলে, এই অভ্যুত্থানের মেইন অ্যাসেন্সটাই আমরা মিস করব। নুরের হাত ধইরা আওয়ামি আমলেই তৈরি হওয়া ‘পোস্ট-ইডিওলজিকাল’ রাজনীতিব্যবস্থা, যা মূলত অধিকারভিত্তিক রাজনীতিতেই নিজেরে সীমিত করে রাখছিল, তা গণআকাঙ্ক্ষার ভেতরে হজম হয়েই এই অভ্যুত্থানে পরিণত হইছে।

২.
ঢাবিসহ সারাদেশের ভার্সিটিগুলায় যখন একজন শিক্ষকও ছাত্রদের পক্ষে দাঁড়ানোর মত ছিল না, ঠিক সেই মুহূর্তে শিক্ষক নেটওয়ার্ক ছাত্রদের পাশে দাঁড়ায়। ১৭ জুলাই ক্যাম্পাস বন্ধের বিরুদ্ধে তারা প্রথম প্রোগ্রাম করে। কার্ফ্যু শিথিল হওয়ার পর সারাদেশের ছাত্ররা যখন কিছুটা বিহ্বল, পুলিশ, র‍্যাব ও আর্মির হামলার ভয়ে দিশাহারা, তখন আবারও দৃশ্যপটে আসে শিক্ষক নেটওয়ার্ক। ঢাবিতে, জাবিতে, রাবিতে, চবিতে তারা পরম সাহসের সাথে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায়। শিক্ষক নেটওয়ার্কের ছত্রছায়াতেই তখন ক্যাম্পাসগুলাতে আবার দানা বাঁইধা ওঠে ছাত্রদের আন্দোলন।

কিন্তু এখন এসে দেখতেছি, শিক্ষক নেটওয়ার্ককে প্রশবিদ্ধ করা হইতেছে৷ সেসময় শিক্ষক নেটওয়ার্কের প্রোগ্রামের ছবিতে যেসব পোলাপান লাভ রিএক্ট দিত, এখন দেখতেছি তাদেরই একদল শিক্ষক নেটওয়ার্করে ‘বাম’, ‘শাহাবাগি’ ইত্যাদি বলতেছে। অনেকে আবার এই শিক্ষক নেটওয়ার্ক ‘ভেঙে ফেলা’র আওয়াজও তুলছেন! হাউ ফানি!

শিক্ষক নেটওয়ার্ক যে এই আন্দোলনের স্টেকহোল্ডার, শহিদ মিনারের দ্রোহযাত্রা যে এই অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান একটা ঘটনা, কার্ফ্যুর সময় হাসনাত-সারজিসের ৮ দফার বিপরীতে আব্দুল কাদেরের ৯ দফাই যে আন্দোলনটারে বাঁচায়ে দিছিল, যাত্রাবাড়ির ছাত্র-জনতা যে কার্ফ্যু না মাইনা কোনো মাস্টারপ্ল্যান ছাড়াই রাস্তায় পইড়া ছিল— এগুলারে খুব সিস্টেমেটিক্যালি এখন অস্বীকার করা হইতেছে। অ্যাসেমেট্রিক, বিশেষ কোনো ইডিওলজিহীন এই স্বতস্ফূর্ত আন্দোলনরে এখন একটা ছদ্ম-ইডিওলজির মুখোশ পরায়ে, এর স্কোপ ও স্টেক সীমিত করে ফেলা হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর এই অভ্যুত্থানের ন্যারেটিভ নির্মাণ একটা সরকারপক্ষীয় ও ক্ষমতাসম্পর্কের সাথে যুক্ত বিষয় হয়ে দাঁড়াইছে যেনবা। যদিও সেই সরকার মোটেই বিপ্লবী সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে না। অথচ তার সামগ্রিক আচরণ ও উচ্চারণ বিপ্লবী সরকারের মতই নিরঙ্কুশ ও সার্বভৌম ধরনের। এ পরিস্থিতি অস্বস্তিকর।

৩.
এই পরিস্থিতিটাই মূলত কোনো একটা অভ্যুত্থানের বহুমাত্রিক ও সামগ্রিক ন্যারেটিভ, স্পিরিট ও ইতিহাস নির্মাণের পথে ইমিডিয়েট ও প্রধানতম সঙ্কট। মুক্তিযুদ্ধের পরেও ঠিক তাই হইছিল। বঙ্গবন্ধু আর (বাকিটা কমেন্টে)

Tuhin Khan

28 Aug, 05:25


১.
হঠাৎ পাওয়া ক্ষমতা বা ক্ষমতার বোধ মানুশরে অসহিষ্ণু, ইন্সেনসিটিভ ও জালিম করে তোলে। অ্যাবসলুট পাওয়ার করাপ্টস অ্যাবসলুটলি। ক্ষমতা আপনারে করাপ্ট করছে কিনা, কীভাবে বুঝবেন? যদি দেখেন ক্ষমতার কারণে আপনার মোরাল ভ্যালুগুলা আর আগের জায়গায় থাকছে না, পারতেছে না থাকতে, আপনার চিন্তা ও দর্শনের ইন্টিগ্রিটিরে আপনার ক্ষমতা ওভারপাওয়ার করে ফেলছে, তাইলে ভাববেন, ক্ষমতা আপনারে ব্যবহার করছে, আপনি ক্ষমতারে না।

২.
লেবাস, রিচুয়াল, ভার্চু সিগনালিং— এগুলা খুব বাজে ব্যাপার। আওয়ামি ফ্যাসিবাদে আমরা দেখছি, একটা মুজিব কোট আর একটা ‘জয় বাংলা’ দিয়াই মানুশ তার ইনকম্পিটেন্সি ঢাইকা ফেলত। এসবের দিন শেষ হওয়া উচিত।

ঢাবি ভিসির নামাজ পড়ানোর দৃশ্যটা খুব সুন্দর। ছাত্ররা তার ওস্তাদের পেছনে নামাজ পড়তেছেন, এ দৃশ্য সত্যি খুব আনন্দের৷ এটা ছাত্র-শিক্ষকের হৃদ্যতাও বাড়াবে।

কিন্তু এ ধরনের ঘটনারে একটা ইডিওলজিকাল ওয়রের উদ্দেশ্যে প্রচার করতে থাকা, এবং সেটারে পুঁজি করে নানাপক্ষের একে অপররে উস্কানি দিতে থাকা, একটা ভুল প্রচারের রাজনীতি।

আগেই বলছিলাম যে, পপুলিজমের ভূত নিয়াজ স্যারের ঘাড়ে চাইপা বসতে পারে। এই যে ভার্চু সিগনালিং, যে ভিসি স্যার তো নামাজি, এটা একটা স্যুডো পপুলিজম ও ইমোশন তৈরি করবে তারে ঘিরে। আর বাঙালি ইমোশনাল হইলে আশল কাজগুলার দিকে নজর দেয় কম। তারে একটা পদ্মাসেতু দেখায়ে ১০ টা পদ্মাসেতুর টাকা লুট করা যায়। মতাদর্শিকভাবে জেতার জন্য সে তার অধিকার সাসপেন্ড করতেও রাজি হয়ে যায়। একারণেই ফ্যাশিবাদ আসছিল এদেশে।

ফলত, নিয়াজ স্যার প্রশাসনিকভাবে কী কী করবেন বা করলেন, দেখা যাবে এগুলা নিয়া আলাপ কম। বা নাই। বা কেউ তুললে তারে বাঁকা চোখে দেখা হবে। গোশল করে আসতেও বলা হইতে পারে। কেবল স্যারের নামাজ-কালাম নিয়েই দেখা যাবে আলাপ হচ্ছে। একজন প্রশাসক হয়া উঠবেন দুইটা গ্রুপের মতাদর্শিক লড়াইয়ের ক্ষেত্র।

নতুন ভিসিকে কাজ কর‍তে দিন। কাজের হিশাব নিন। কাজে সহায়তা করুন। তারে ঘিরে স্যুডো পপুলিজম, ভার্চু সিগনালিং আর ইমোশনের বাবল বানাবেন না। তাতে ওনার কাজের পরিবেশ ব্যাহত হবে; আমাদেরও অভ্যেস চেঞ্জ হবে না। ইসলামি লেবাস বা মুজিব কোট বা প্রগতিশীলতা— এসব যেন আমাদের চোখরে ব্লার করতে না পারে, আমরা যেন সঠিক লোকের কাছে সঠিক প্রশ্ন করতে পারি এবং সঠিক জিনিশ পাই, ওই রাজনৈতিক সচেতনতাটা বরং জরুরি।

৩.
‘রাজাকার’ ও ‘শাহাবাগি’ শব্দ দুটো আপনাদের জন্য তাজা শিক্ষা। শিক্ষা নেন। এত দ্রুত ভুইলেন না। যত্রতত্র ’লীগের দালাল’ বা ‘ফ্যাশিস্ট’ শব্দের ব্যবহার বন্ধ করেন। নইলে ওই শব্দবন্ধগুলো অর্থহীন হয়ে যেতে টাইম লাগবে না। অনেক অনেক রক্তের বিনিময়ে এই ফ্যাশিবাদ তাড়াইছি আমরা। এত তাড়াতাড়ি ওদের বিরুদ্ধে আমাদের সম্মিলিত ঘৃনা ও প্রতিরোধকে অর্থহীন করে তুইলেন না।

Tuhin Khan

28 Aug, 02:15


হিযবুত তাহরিরের কন্সটিটিউশনাল খসড়া পড়ে যেটা বুঝলাম, তাদের প্রস্তাবিত খেলাফতে তিন কারণে খলিফার অপসারণ ঘটতে পারে:

১. মৃত্যু
২. পদত্যাগ
৩. অপসারণ

অর্থাৎ, অপসারণ ছাড়া খলিফার আমৃত্যু ক্ষমতায় থাকার সুবিধা থাকতেছে। তার সর্বময় ক্ষমতার নির্দিষ্ট কোনো মেয়াদ নাই। অপসারণের গ্রাউন্ড কী কী এবং সেটা কীভাবে হবে? তাদের কন্সটিটিউশান মোতাবেক:

১. যদি স্টেট লিডারশিপের কোনো শর্ত তার মধ্যে হঠাৎ মিসিং দেখা যায়, যেমন সে যদি হঠাৎ মুরতাদ, পাগল বা ঘোর পাপী হয়ে পড়ে;
২. খেলাফতের দায়িত্ব পালনে যে-কোনো কারণে অযোগ্যতার প্রমাণ দেয়;
৩. যদি সে কোনো ক্ষমতার অধীনে এসে, তাদের চাপে বাধ্য হয়ে, শরিয়ার নিয়মে স্বাধীনভাবে খেলাফত চালাতে ব্যর্থ হয়—

তাহলে তারে রিমুভ করা যাবে। তবে এই রিমুভালের ক্ষমতা থাকবে কেবল ‘মাজালিম’ (ইনজাস্টিস প্রিভেনশন) কোর্টের জাজের। এই জাজরে আবার নিয়োগ দেবে খলিফা নিজেই অথবা খলিফার নিয়োগকৃত চিফ জাস্টিস। কেবল মুসলিমরা খলিফারে অ্যাকাউন্টেবল করে নানা দাবিদাওয়া আদায়ের জন্য ইসলামি শরিয়া ও আকিদার ভিত্তিতে পার্টি করতে পারবে। তবে তারা খলিফাকে রিমুভের আন্দোলন করতে পারবে না। করলে বিদ্রোহী সাব্যস্ত হবে।

ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াটা কেমন হবে? তাদের কন্সটিটিউশান মোতাবেক:

১. একজন অন্তর্বর্তীকালীন খলিফা নিযুক্ত হবে। তার কোনো এক্সিকিউটিভ পাওয়ার থাকবে না।
২. সে কোর্টের অর্ডারে খলিফা ক্যান্ডিডেট আহ্বান করবে। ক্যান্ডিডেট হতে পারবে কেবল পুরুষ, মুসলিম, স্বাধীন, ন্যায়বান, যোগ্য, সুস্তমস্তিষ্কসম্পন্ন ও প্রাপ্তবয়স্ক লোকেরা।
৩. ক্যান্ডিডেটদের শুরা কাউন্সিল ২ দফায় শর্ট লিস্ট করবে, নিজেদের ভোটের ভিত্তিতে। প্রথমে ৬ জন, তারপর ৬ জন থেকে ২ জন।
৪. ওই ২ জনরে ভোট দেওয়ার জন্য ইলেকশন আহ্বান করা হবে। ভোট দিতে পারবে কেবল মুসলিমরা।
৫. সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্তই খলিফা হবেন এবং তার হাতে সবাই শপথ নেবেন। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন খলিফার দায়িত্ব শেষ হবে।

এখন, শুরা কাউন্সিল কীভাবে হবে? প্রত্যেকটা প্রভিন্সের জনসংখ্যা অনুপাতে ওই এলাকার প্রভিনশিয়াল কাউন্সিল মেম্বারস নির্বাচিত হবে। এদের ভোটে নির্বাচিত করবে ওই এলাকার জনগণ। এই নির্বাচিত প্রোভিনশিয়াল কাউন্সিলররা একটা উম্মাহ কাউন্সিল নির্বাচন করবে। মুসলিম-অমুসলিম, নারী-পুরুষ যে কেউ এসব কাউন্সিলের মেম্বার হইতে পারবে। তবে উম্মাহ কাউন্সিলে অমুসলিমদের ক্ষমতা থাকবে শুধু তাদের উপর অত্যাচার হলে তার প্রতিকার দাবি ও কোথাও ইসলামি আইনের লঙ্ঘন হলে তা জানানো। এই দুই কাউন্সিলের মেয়াদ কন্সটিটিউশানে অনির্ধারিত।

এই মোটামুটি সিস্টেম। এই সিস্টেমের ব্যাপারে আমার কিছু পর্যবেক্ষণ এবার বলি:

১. সার্বভৌম খলিফার ক্ষমতা মেয়াদহীন। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে তাকে অপসারণের ক্ষমতা কেবল মাজালিম কোর্টের। সেই কোর্টের জাস্টিসকে আবার নিয়োগ দেবেন স্বয়ং খলিফা বা খলিফারই নিয়োগ দেওয়া চিফ জাস্টিস। কেবল মুসলিম পাবলিক খলিফার বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য পার্টি বানাতে পারবে; কিন্তু তাদের বিদ্রোহী সাব্যস্ত করা হলে কী হবে, তা বলা নাই। ফলত এই সিস্টেমে পাবলিকের স্টেক প্রায় নাই বললেই চলে৷ ক্ষমতা হস্তান্তরের একমাত্র উপায় কোর্ট। কিন্তু এটা ইসলামের ক্লাসিকাল খেলাফত সিস্টেমের সাথে মেলে না। ওইসব খেলাফতে কোর্টের হাতে এই ক্ষমতা ছিল না। এটা গণতান্ত্রিক সিস্টেম থেকে এডপ্ট করা।

২. খলিফা নিয়োগপ্রক্রিয়ায় পাবলিকের অংশগ্রহণ সেকেন্ডারি। অন্তর্বর্তীকালীন খলিফা আইডিয়াটাও গণতান্ত্রিক সিস্টেম থেকে এডপ্ট করা। শুরা কাউন্সিল এক্ষেত্রে সবচে বেশি পাওয়ার হোল্ড করে, যেটা বেসিকালি ইরানের শিয়া থিওক্রেটিক সিস্টেম। শুরা কাউন্সিলে খলিফা নির্বাচনের ভোটাধিকার আবার অমুসলিমদের থাকবে না। তবে নারীদের থাকবে। পাবলিক কাউন্সিলের নির্ধারিত দুইজনের একজনরে ভোট দিতে বাধ্য থাকবে।

৩. শুরা কাউন্সিল নির্বাচন করবে প্রাদেশিক কাউন্সিল মেম্বাররা। তারা নির্বাচিত হবে ভোটে। ফলত এই সিস্টেমটাও গণতন্ত্রের একটা অ্যাডাপ্টেশান। ক্ল্যাসিকাল খেলাফতে এই সিস্টেম ছিল না। তবে এই দুই কাউন্সিলেরই মেয়াদ অনির্দিষ্ট।

৪. সকল ক্ষেত্রে অমুসলিমদের প্রায় কোনো রাজনৈতিক অধিকারই নাই। তারা শুরায়ও থাকবে কেবল অত্যাচারের ও ইসলামি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে।

৫. নারীদের ভোটাধিকার আছে, তবে খলিফা হওয়ার অধিকার নাই। যদি একজন নারী ভোটার ও কাউন্সিলর হইতে পারেন, শুরার সদস্য হইতে পারেন, এমনকি চিফ জাস্টিসও হইতে পারেন (তাহরিরের কন্সটিটিউশান মোতাবেক), তাইলে খলিফা কেন নয়? মাজালিম কোর্টের জাস্টিস হয়া খলিফারে রিমুভ করার ক্ষমতা একজন নারী যদি পাইতে পারেন, তাইলে খলিফা কেন হইতে পারেন না? এর যৌক্তিক কোনো উত্তর আমি খুঁজে পাই নাই। ক্ল্যাসিকাল খেলাফতগুলোতে কিন্তু নারী শাসকের উদাহরণ পাওয়া যায়।

Tuhin Khan

26 Aug, 01:22


ঢাবির আইআরের শিক্ষক তানভির হাবিব ২০২২ সালের শেষদিকেও বাঙলাদেশরে ফরেন পলিসির ক্ষেত্রে একটা মিডল গ্রাউন্ডে থাকার পরামর্শ দিচ্ছিলেন; ‘হেজিং’ এর কথা বলছিলেন। কিন্তু হঠাৎ এমন কী ঘটলো যে, বিউপির টিচার ও আর্মির সাবেক সিভিলিয়ান ইন্সট্রাক্টর এই ভদ্রলোক এসব লিখতেছেন? এই লেখায় উনি ইউএস নেভিরে লিটারেলি বে অব বেঙ্গলের দখল নেওয়ার আহ্বান জানাইছেন। বাঙলাদেশ নেভির লজিস্টিক্স ও মাতারবাড়ি পোর্ট ব্যবহার কইরা ইন্দো-প্যাসিফিকে ইউএসরে আগায়ে থাকার সাজেশন দিচ্ছেন উনি। এমনকি যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও যে ইউএস মাতারবাড়ি বন্দর ইফেক্টিভলি ব্যবহার করতে পারে, সেই সম্ভাবনার কথাও বলতেছেন।

এগুলা কি ওনারে দিয়ে লেখাচ্ছে কেউ? ভদ্রলোকের সাথে পারিবারিক ও পেশাগতভাবে আর্মির একটা কানেকশন আছে দেখলাম। ইন্ডিয়ায় পড়াশোনা করছেন ইন্ডিয়ান ইকোনমি, গভমেন্ট ও পলিটিক্স নিয়া। কাকতাল কিনা জানি না, এই আর্টিকেলের প্রচ্ছদে ব্যবহৃত ছবিটা এ বছরের মার্চে বঙ্গোপসাগরে ভারত-আমেরিকার যৌথ মহড়ার ছবি। লেখক বাঙলাদেশরেও এই ইউএস-ইন্ডিয়া মহড়ায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। ইউএসরে বাঙলাদেশের পোর্ট ও নেভাল সাপোর্ট ব্যবহারের লোভ দেখাচ্ছেন।

এই লোকগুলা কেন ও কাদের ইশারায় এ ধরনের লেখাজোকা করছেন, তার হদিশ করা দরকার। এ ধরনের এগ্রেসিভ ফরেন পলিসি সাজেশন ওনারা কার বা কার কার সুবিধার জন্য দিচ্ছেন, তা নিয়া ভাবা দরকার। একটা অ্যাগ্রেসিভ ফরেন পলিসির দিকে ঠেইলা দেওয়ার কারণে যদি এ দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হয়, কিংবা ফ্যাসিবাদ কামব্যাক করার সুযোগ পায়, তাইলে এদেরও দায় নিতে হবে।

Tuhin Khan

25 Aug, 22:40


The standoff between the Ansar forces and the students and general public is a troubling sign. If the law enforcement agencies of the country become weakened, fearful, and disorganized through this process, it will have detrimental consequences for the future, as we've already seen with the Border Guard Bangladesh (BGB). The government needs to reach a concrete decision regarding the demands of the Ansar.

Currently, various groups are heading to the Secretariat with their demands, and the coordinator, Hasnat Abdullah, is being compelled to go there to address these demands. After he gets stuck, the students and the public also feel the need to go there. This cycle is vicious, perpetuating a state of conflict and resulting in ongoing restrictions. A new muscle power is also emerging, centered around the Dhaka University campus. Though it appears political, due to the lack of effective politics, it is currently 'apolitical.' How this apolitical muscle power will undergo political transformation is something to watch closely.

There has been a rapid increase in promotions within the Secretariat. Perhaps this is expected. However, it has not led to the decentralization of power. The bureaucrats remain at the core of power, as usual.

The newly formed government has not yet taken visible steps to close the path to a constitutional counter-revolution. The vicious cycle of oligarchs remains largely intact. However, on the ground, counter-revolutionary situations are continually emerging, and it is the strength of the students and the general public that is being used to counter them. Is this process leading to the political transformation of this strength? If so, that would be good. But it must be remembered that many parties are lurking, waiting to exploit this process for their own ends.

Using the Ansar to stage a counter-revolution is not a logical plan. The counter-revolutionary games are interconnected. The playground of Awami fascism is multifaceted. The power circle of oligarchs, bureaucrats, and the military remains as strong as ever. I pray that the newly formed government and the power of the students and the public are not merely used to keep that circle intact.

Tuhin Khan

25 Aug, 13:53


পরিস্থিতি নিয়া কয়েকটা নোকতা
*

১.
৫ আগস্টের আগেপরে দেশের অনেকগুলা জেলে অস্থিরতা তৈরি হইছিল। পুলিশের দেওয়া তথ্য মোতাবেক, হাই সিকিউরিটি অনেক চরমপন্থী এসব ঘটনায় অস্ত্রসহ পলাতক। এসব অস্ত্র উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হইছে কিনা, আমরা জানি না।

গণঅভ্যুত্থানের পর জামায়াত ও কওমিদের নানা তৎপরতা দেখা যাইতেছে। অনেক সোশাল ওয়ার্ক তারা করতেছেন। কিন্তু এসবের ফাঁকতালে চরমপন্থী গ্রুপগুলার রি-সার্ফেসিং পরিস্থিতি তৈরি হইছে। এই গোষ্ঠীতে পুরান চরমপন্থীরা যেমন আছে, ঠিক তেমনি আওয়ামি ফ্যাশিবাদের বেনিফিশিয়ারি, গণতন্ত্রবিরোধী নিও সালাফিরাও আছে। এদের নানাবিধ তৎপরতা চোখে পড়তেছে। ওয়ার অন টেররজাত আওয়ামি ফ্যাসিবাদের মধ্যে কওমি, জামাতি ও সালাফিদের মধ্যে যে ডায়নামিক মিথিস্ক্রিয়া হইছে, সেখান থেকে ঠিক কী ধরনের পলিটিকাল থিওলজি ও রাষ্ট্রচিন্তা উদ্ভুত হয়, তা দেখা দরকার।

২.
কাছাকাছি সময়েই পেন্টাগন তথা আমেরিকার ডিফেন্স ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে জানাইছে: ‘মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গড়ার মতো পারস্পরিক মূল্যবোধ ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক কাজের জন্য প্রস্তুত রয়েছি।’ আবার, পেন্টাগন সহিংসতা পরিহার ও মানবাধিকার রক্ষার কথাও বলছে।

৩.
মানবাধিকার ও সহিংসতা প্রশ্নে আরেক প্রস্থ চমক সহকারে জাতিসংঘের তদন্ত টিম এই মুহূর্তে ঢাকায়। আর তখনই এক নাটুকে গ্রেফতারের পর আদালত চত্বরে গণধোলাইয়ে আহত হয়ে আইসিউতে ভর্তি শামসুদ্দিন মানিক। একের পর এক নাটুকে গ্রেফতার চলতেছে। আর প্রত্যেকটা বিচারপ্রক্রিয়াই আইনিভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হইতেছে মারাত্মকভাবে। মামলাগুলা দুর্বল থেকে যাচ্ছে। এসব নিয়া আমেরিকাপন্থী মানবাধিকার কর্মীরা কথাবার্তা বলতেছেন। আবার অনেক থানায় মামলা নেওয়াই হচ্ছে না। এ নিয়া গভমেন্টের অবস্থানও খুব দুর্বল।

৪.
ক্যাম্পাসগুলাতে এখন ত্রাণ কর্মসূচি চলতেছে। ‘অরাজনৈতিক গণ-অভ্যুত্থানে’র পর ত্রাণ কর্মসূচির ভিতর দিয়াই এখন চলতেছে রাজনীতি৷ ব্যানার ওঠানো ও নামানোর রাজনীতি। ফান্ড ও তহবিলের রাজনীতি। এনজিওগুলার রাজনীতি। অরাজনীতির এই রাজনীতি অনেক গভীর। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গড়ে উঠতেছে রিয়েল পলিটিক্সহীনতার এই ভ্যাকুয়ামে।

‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থী সমাজ’ নামের একটা সংগঠন দেখলাম ১০০ ‘হিজাববিরোধী’ শিক্ষকের লিস্ট করছে। হিজাববিরোধিতা ইসলামফোবিক আচরণ নিঃসন্দেহে, কিন্তু ফৌজদারি অপরাধ না। ওনাদের সকলের ‘হিজাববিরোধিতা’র ধরন এক কিনা, বা কেমন, তা নিশ্চিত না। আবার কিসের ভিত্তিতে এই শিক্ষার্থীরা ওনাদের নানামাত্রার শাস্তি দাবি করতেছেন, তাও অনির্দিষ্ট। এসব শিক্ষকের মধ্যে বেশকিছু আওয়ামি দালাল থাকায়, এসব লিস্টের রাজনীতিটা নিয়া কথা বলতে অনেকে ইতস্তত করতেছেন।

৫.
গভমেন্ট তার ভিশন প্রকাশ করছে না। কতদিনের মধ্যে কী কী সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাবে এই সরকার— তা অস্পষ্ট। ফলে রাজনৈতিক দলগুলা তাদের সংস্কারবিরোধী কর্মকাণ্ডের জাস্টিফিকেশান তৈরির সুযোগ পাইতেছে। নানা ঘটনায় এই ধারণা এখন জনপ্রিয় যে, এই সরকার পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য যথেষ্ট ফাংশনাল না।

৬.
ফলত, আর্মির এই গভমেন্টে কী কী স্টেক, তা নিয়া প্রশ্ন উঠছে। আর্মিরও খুব মাল্টিলেয়ার্ড অ্যাক্টিভিটি চোখে পড়তেছে এই সময়ে। আর্মি কাদের সিক্যুরিটি দিছিল, তার কোনো লিস্ট এখনও আমরা পাই নাই। ফলে আর্মির গ্রেফতার কর্মসূচি নিয়া নানা সন্দেহ তৈরি হইছে। সেনা কনভেনশন হলের প্রোগ্রামে চরমপন্থীরা উপস্থিত হচ্ছে। আর্মির প্রতি ব্যবসায়ীদের এক ধরনের নির্ভরতা নজরে পড়তেছে। আর্মি দ্বৈত স্টেট চালাচ্ছে কিনা, সেটা বোঝার চেষ্টা করতেছে জনগণ।

৭.
ব্যবসায়ী ও এনজিওগুলার রোল এই পরিস্থিতিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এদেরকেই প্রমোশন দিয়ে ‘জাতীয় বুর্জোয়া’ গড়ে তোলা হচ্ছে কিনা, সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

৮.
রাষ্ট্রের সভ্যতাগত রুপান্তরের আলাপ তুলছেন কেউ কেউ। ‘সভ্যতাগত রাষ্ট্র’ বা ‘সিভিলাইজেশনাল স্টেট’র আলাপটা ভালো বটে; তবে এরমধ্যে ফ্যাশিজমের ভূতও লুকায়ে আছে। রাশিয়া, চিন বা ইন্ডিয়ার সিভিলাইজেশনাল মডেল আছে। আবার ইউরোপের ফেডারেশন মডেলও আছে। সভ্যতাগত রুপান্তরের ক্ষেত্রে আমরা কোনপথে আগাইতে চাই, সেটা এই মুহূর্তে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তবে আমরা যদি একটা মাল্টি-এথনিক, মাল্টি-কালচারাল ও মাল্টি-রিলিজিয়াস সভ্যতাগত রাষ্ট্র তৈরি করতে পারি, এবং বাঙলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এর প্রাক্টিস শুরু করতে পারি, সেটা বেটার। সেক্ষেত্রে পাহাড়, রোহিঙ্গা ও বিহারি প্রশ্নগুলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু নিও লিবারেল পুঁজি ও আর্মি-প্রভাবিত ‘রাষ্ট্রের সভ্যতাগত রূপান্তর’ ঠিক কেমন হবে, তা সামনের দিনগুলিতে দেখার বিষয়।

৯.
এই সিচুয়েশনে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানরে ব্যর্থ করে দিতে আওয়ামি ফ্যাশিস্টদের সহযোগিরাও নানাভাবে অ্যাক্টিভ। কোনো একটা মহল তাদের হাতে নানাবিধ অস্ত্র তুইলা দেওয়ায় বেশ সক্রিয় আছে। পুরান ও পরাজিত ইডিওলজিকাল লড়াইগুলারে আবারো সামনে আনা হচ্ছে। বুইঝা না বুইঝা এসবে ঘি ঢালছেন অনেকেই।

Tuhin Khan

24 Aug, 19:49


১.
আমি চাই সবাই সামনে আসুক। ইসলামি চিন্তার পুনর্গঠনের কাজটাও আমাদের এখন শুরু করা লাগবে। কী ধরনের ‘ইনক্লুসিভ’ সোসাইটি চায় ইসলামিস্টরা, কেমন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রপোজ করে— আমরা এখন তা দেখব। শুধু চ্যারিটি আর সোশাল ওয়ার্ক দিয়া রিয়েল পলিটিক্সটা ধরা একটু মুশকিল। ফলত রিয়েল পলিটিকাল গেইমটা শুরু হওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে জামায়াত, কওমি, বাঙলাদেশ আর্মি ও বর্তমান গভমেন্ট কী ধরনের ভূমিকা পালন করে, সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

২.
আওয়ামি আমলের বেনিফিশিয়ারি নিও সালাফি ইসলামিস্টরা কী ধরনের রাজনৈতিক চিন্তা প্রপোজ করতেছে, তাও বোঝার চেষ্টা করতেছে জনগণ। এদের ঘাড়ে চড়ে আওয়ামি ফ্যাসিবাদের ভূত কোন কোন পথে সওয়ার হইতে পারে— তা বোঝা দরকার।

৩.
জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটরে ক্যারি কইরা একটা পোস্ট-ইডিওলজিকাল পরিসর তৈরির কথা বলছি আমরা। এই পোস্ট ইডিওলজিকাল পরিস্থিতিটা আওয়ামি আমলের মধ্যেই তৈরি হয়ে গেছিল আশলে। স্রেফ কাঠামোটা ভাইঙা পড়া বাকি ছিল। তবে ওয়র অন টেররের গর্ভে জন্ম নেওয়া আওয়ামি ফ্যাসিবাদ রাজনীতিরে ‘অসম্ভব’ কইরা তোলার মাধ্যমে ক্ষতিকর ইডিওলজিকাল এলিমেন্টগুলারে তার ফ্যাসিবাদি সিস্টেমের মধ্যেই নারিশ করছে নানাভাবে।

তাই এই পরিস্থিতি একটা চ্যালেঞ্জও বটে। পোস্ট-ইডিওলজিকাল পরিস্থিতিটারে আমরা নয়া বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষায় পুনর্গঠিত করব, নাকি উপনিবেশ ও মডার্নিজমের গর্ভে জন্ম নেওয়া পুরান ইডিওলজিকাল দ্বন্দ্বগুলাই আবার প্রধান হয়া উঠবে, — সেই লড়াইটাও আমাদের করতে হবে। আর ইসলামি চিন্তার পুনর্গঠন এই লড়াইয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

৪.
পোস্ট-ইডিওলজিকাল পুনর্গঠন এই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম ঘোষিত স্পিরিট। ফ্যাসিবাদের সহায়ক ইডিওলজিগুলারে আমাদের হারাইতে হবে।

Tuhin Khan

22 Aug, 23:01


বন্যা-পরিস্থিতি নিয়া ইন্ডিয়ান হাই কমিশনারের সাথে মিটিং হইছে প্রধান উপদেষ্টার। এই মিটিংয়ের সূত্র ধইরা কয়েকটা কমেন্ট:

১. মি. ভার্মা বলছেন, ভারত ইচ্ছা কইরা বাঁধ খোলে নাই। ‘অটো’ খুইলা গেছে। এটা একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। জনগণ এই উত্তরে সন্তুষ্ট না, বলাইবাহুল্য। কিন্তু জনগণের সরকার কী এই উত্তরের বিপরীতে পালটা কোনো বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারছে? পারা উচিত। নইলে তাদের বক্তব্যই প্রতিষ্ঠা পাবে। জনগণের ক্ষোভও মাঠে মারা যাবে। মজার ব্যাপার, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারও বন্যা পরিস্থিতি নিয়া এই সুরেই কথা বলতেছে। সরকারের সুরও সেরকমই কিনা— আমরা বোঝার চেষ্টা করছি।

২. প্রধান উপদেষ্টা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠকের মতো একটা আলোচনার মডেল প্রস্তাব করছেন, বন্যার মত দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণে। ‘পতাকা বৈঠক’ শব্দটা আমাদের কাছে ট্রমার মতো; কারণ এই বৈঠকে বেসিক্যালি কিছুই হয় নাই গত ১৫ বছর। আশা করি, প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাবিত মডেল সেরকম হবে না।

৩. ভারতের বিরুদ্ধে বাঙলাদেশের জনগণের এই মুহূর্তের যে ক্ষোভ, যে ‘সন্দেহ’, তা কেবলই বাঁধকেন্দ্রিক না। এর গভীর রাজনৈতিক মনস্তত্ত্ব আছে। সেটা হইল, শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান। ফলত, খুনি শেখ হাসিনাকে বাঙলাদেশে ফিরায়ে আনা দুই দেশের সম্পর্ক জোরদারের জন্য খুবই জরুরি। সে বিষয়ে কোনো তৎপরতা গভমেন্টের তরফে আছে কিনা, জানি না।

৪. পানির ন্যায্য হিস্যার ইস্যুগুলি সলভ করার লক্ষ্যেও ইন্ডিয়ার সাথে অতি দ্রুত কাজ শুরু করার কথা বলছেন প্রধান উপদেষ্টা। আমরা আশা করব, প্রক্রিয়াটা অত্যন্ত দ্রুত শুরু হবে, এবং আমরা, মানে জনগণ, এই প্রক্রিয়াটার অগ্রগতিমূলক আপডেটগুলা নিয়মিত পাইতে থাকব।

৫. ইন্ডিয়াসহ অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে ফ্যাশিস্ট আ. লীগের প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য যেসব চুক্তি হইছে, সেগুলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত কইরা দেওয়া লাগবে, অনতিবিলম্বে। এরমধ্যে দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তিগুলা বাতিল করা লাগবে।

৬. সার্ক ও বিমসটেকরে সচল ও কার্যকর করার কথা বলছেন প্রধান উপদেষ্টা। এটা হওয়া খুবই জরুরি। অনতিবিলম্বে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।

৭. ইন্ডিয়া যদি বাঙলাদেশের স্বার্থবিরোধী অবস্থান নিতে চায়, তাইলে বাঙলাদেশের জনগণ বইসা থাকবে না। সেক্ষেত্রে এই গভমেন্টের অবস্থান কী হচ্ছে বা হবে— জনগণ সেটা নিবিড় পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখতেছে, রাখবে।

Tuhin Khan

20 Aug, 01:28


৩৬ জুলাই (৫ আগস্ট)
*

আগের রাতে শহিদ মিনারে দুইটা লাশ পইড়া ছিল। ডিএমসিতে লাশ দুইটা ফেরত দিতে নিয়া যাওয়ার পথে পুলিশ গুলি শুরু করল। কোনোমতে প্রাণ বাঁচায়ে আজিমপুর এক বন্ধুর বাসায় আত্মগোপন করলাম। সারারাত কাটলো আতঙ্কে, উদ্বেগে। আম্মা ফোন দিয়া বললেন, কাল বাইরে যাইস না। বোন ফোন দিয়া বললো, কাল বাইরে নামিস না। অনেকে ফোন দিল, মেসেজ দিল। সান্ত্বনা দিল, সাহস দিল, ভয় দেখাইল।

আমি ডিটারমাইন্ড ছিলাম। যা হয় হবে। মনে মনে ভাবলাম, যদি কালও গুলি চলে, তাইলে আমাদেরও সশস্ত্র হইতে হবে। এছাড়া উপায় নাই। মোবাইলের ওয়ালপেপারে নিজের নাম-ঠিকানা লেইখা নিলাম। তারপর নির্ঘুম একটা রাত।

সকালে উইঠা নানা জায়গায় খোঁজখবর নিলাম। শাহবাগে মানুশ। উত্তরায় মানুশ। যাত্রাবাড়িতে মানুশ। গুলি চলতেছে কোথাও কোথাও, কোথাও আর্মি বাধা দিতেছে। তবু মানুশ নেমে আসছে। বাধভাঙা ঢলের মত ওরা আসতেছে চারিদিক থেকে। মিরপুর থেকে। নারায়ণগঞ্জ থেকে। সাভার থেকে। আল্লাহ ভরসা! বেরোয়ে পড়লাম।

পথে সতর্কতা। বিডিআর ৩ নম্বর গেট হইয়া নিউমার্কেট মোড়ে আইসা দাঁড়াইলাম। এরমধ্যে খবর পাইলাম, আর্মি চিফ ভাষণ দেবেন ২/৩ টায়। কী বলবেন, তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করতেছে।
মিছিল হচ্ছে নিউমার্কেটে। ছাত্রজনতার মিছিল। বিজিবির তিনটা গাড়ি মিছিলের মুখে রাস্তা ছাইড়া ব্যারাকের পথ ধরল। তাইলে কি সুসংবাদ? আগায়ে গেলাম মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের দিকে। ওখানে পুলিশ কেন এখনও? এই বাহিনীটাই এখন পর্যন্ত গুলি চালায়ে যাচ্ছে। ওদের মুখোমুখি হওয়া কি উচিত হবে? কাঁটাবনের রাস্তায় ঢুইকা গেলাম।

কনকর্ডের সামনে দেখলাম আর্মির ব্যারিকেড। লোকজন ব্যারিকেড খুইলা দেওয়ার অনুরোধ করতেছে। ততখনে অনেক জায়গায় আর্মির ব্যারিকেড খুইলা দেওয়ার খবর পাচ্ছিলাম। উত্তরায়, মিরপুরে, যাত্রাবাড়িতে। ওরা নাকি ঢলের মত আসতেছে শাহবাগে, যাইতেছে গণভবনের দিকে। তাইলে এখানে ব্যারিকেড কেন? আমরা আর্মিদের সামনে শ্লোগান দিতে থাকলাম। ব্যারিকেড খুইলা দেওয়ার অনুরোধ জানাইতে থাকলাম। এক পর্যায়ে আর্মি ব্যারিকেড খুইলা দিল। আর সেই মুহূর্তেই খবর আসলো, শেখ হাসিনা পালায়ে গেছে।

আর্মির ব্যারিকেড ভাইঙা বেশিদূর আগাইতে পারলাম না আর। অটোমেটিক হাঁটু ভাইঙা পইড়া গেলাম রাস্তায়। চোখ তখন ঝাপসা। এলোমেলো অশ্রু গড়াচ্ছে দুই চোখে। ঝরঝর করে কানতেছে আমার ব্যাটেলফিল্ডের কমরেডরা। ওরা আমারে ধরে আছে, কাঁটাবন মোড়ের রাস্তায়। আমরা সেজদায় পইড়া আছি সবাই। চোখের পানিতে ভিজে যাইতেছে ঢাকার রাজপথ।

তারপর ১ ঘন্টা শুধু আকাশ-বাতাস কাঁপায়ে শ্লোগান দিলাম:

এই মুহূর্তে খবর এলো
খুনি হাসিনা পালিয়ে গেল
এই মুহূর্তে খবর এলো
বাঙলাদেশ স্বাধীন হলো

শাহবাগ থেকে টিএসসি হয়ে সোশাল সাইন্সের চত্বর। আমার প্রিয় ক্যাম্পাস। আমার রঙিন যৌবন অর্থহীন হয়ে গেছে এই ক্যাম্পাসে, ছাত্রলীগের দাসত্বের মুখে মাথা নোয়ায়ে থাকতে থাকতে। আমার জীবনের কী মূল্যবান দিনগুলা কাইটা গেছে এই স্বৈরাচারের গুলি আর গোলামির ভার বইতে বইতে। আমরা বন্ধুরা আফসোস করতাম, আহারে, আমাদের পুরাটা যৌবন কাইটা গেল একটা ফ্যাসিস্ট রেজিমের আন্ডারে, এরচাইতে দুঃখের আর কী হইতে পারে!

কিন্তু ওইদিন, বিজয় মিছিল নিয়া যখন মধুর সামনে আইসা দাঁড়াইলাম, মনে হইল: এরকম স্বার্থক, সুন্দর, সোনালি যৌবন কয়জন পায়! একটা ফ্যাসিস্ট রেজিমরে হারায়ে দিছি আমরা। কত শত নির্ঘুম রাতের বদলা নিছি। কত হাজারো অত্যাচারের প্রতিশোধ নিছি। আমরা পারছি। এই যৌবন বিজয়ের রঙে রঙিন হইল আজ! আমাদের মত ভাগ্যবান প্রজন্ম আর কয়টা আছে!

পরিচিত সকলের সাথে দেখা হইতে থাকল আস্তে আস্তে। পুরানা স্মৃতিগুলা ফিরা আসলো। হাজার লাশের মিছিল পার হয়া আজ এইখানে এসে পৌঁছছি আমরা। যারা চলে গেছে, তারা কি ফিরবে আর? যেকোনো স্বজনরে, বন্ধুরে জড়ায়ে ধরার পর কেবল এই কথাটাই বুকে বাজতেছিল, আজ যদি অমুক থাকত! আজ যদি তমুক বাঁইচা থাকত! ঝরঝর করে পানি পড়ে চোখ থেকে। কে এম রাকিবরে জড়ায় ধরে কানলাম অনেক্ষণ। কোনো সম্বরণের চেষ্টা আমি করি নাই।

কেন করব? ফ্যাসিস্ট হাসিনামুক্ত দেশ আর ছাত্রলীগমুক্ত ক্যাম্পাস— আজীবন এরচাইতে বড় কোনো স্বপ্ন কি আমরা দেখতে পারছি? সেই স্বপ্ন আজ সত্যি। ফলে আজ তো কান্দারই সময়! এই কান্না আমরা ১৫ বছর জমায়ে রাখছিলাম। আমাদের বুকের ভেতর কান্না জমতে জমতে বরফ হয়া গেছে, বাষ্পের মত দীর্ঘশ্বাস হয়া উইড়া গেছে। সেই বরফ গলার আজই তো সময়, সেই বাষ্পের জল হয়ে ঝরার এই তো মোক্ষম ওয়াক্ত! এই আমাদের আনন্দের কান্না, বিজয়ের কান্না। যাদের পেছনে ফেলে আসছি, তাদের আর না ফিরা পাওয়ার কান্না। এই কান্নার কোনো সংজ্ঞা নাই আশলে। এই কান্না হারানো যৌবন ফিরা পাওয়ার কান্না, এই কান্না হারানো দেশ ফিরা পাওয়ার কান্না।

(বাকিটা কমেন্টে)

Tuhin Khan

17 Aug, 20:48


কেবল শনির আখরার একটা হাসপাতালেই ক্রিটিক্যালি ইঞ্জুর্ড পেশেন্ট পাওয়া গেছে ২০০ জন। আমার কিছু কাছের ছোটভাই, যারা শনির আখরা ব্যাটেলফিল্ডের প্রত্যক্ষদর্শী, তারা এই সার্ভে রিপোর্ট জানাইছেন। যদি কেবল রাজধানীর একটা হাসপাতালের এই অবস্থা হয়, তাইলে সারা বাঙলাদেশের কী অবস্থা? ভাবতে পারেন?

জুলাই রেভ্যুলুশনে আহত হওয়া হাজারো মানুশের আর্তনাদ আর আহাজারিতে হাসপাতালের কোরিডোরগুলা বিষন্ন হয়ে উঠছে। শত শত পরিবার বিমর্ষ বদনে তাদের প্রিয় ছেলে বা মেয়েটার সুস্থ হয়ে ওঠার কিংবা মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুজারতেছেন। অনেকগুলা পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তিটা চিরদিনের জন্য অক্ষম হয়ে পড়ায় তাদের প্রতিদিনের হাত খরচাটা চালানোর মত অবস্থাও আর নাই। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই আহতদের না কোনো পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হইছে, আর না পরিবারগুলোর যথাযথ ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যবস্থা গৃহীত হইছে।

প্রতিদিনই আহতদের মধ্যে কেউ না কেউ মারা যাচ্ছেন, চিরদিনের জন্য পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়তেছেন। অনেকেই যোগাযোগ করতেছেন একটু সাহায্যের জন্য। কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারছি না। জুলাই রেভ্যুলুশনের শহিদদের তো আমরা আর ফিরা পাব না। কিন্তু যারা এখনও বাঁইচা আছেন, তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, আক্রান্ত ফ্যামিলিগুলার অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা— এটাই কি এই সরকার ও তার পরামর্শদাতাদের প্রথম কাজ হওয়া উচিত ছিল না? ছিল বোধহয়।

সরকারকে আহ্বান জানাব, এ ব্যাপারে অবিলম্বে উদ্যোগ নিন। আহতদের চিকিৎসাসেবা ফ্রি করে দেওয়ার পাশাপাশি, আক্রান্ত পরিবারগুলার অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিন। মৃত্যুর এই মিছিল বন্ধ করতে না পারলে আমাদের অভ্যুত্থানটি অঙ্কুরেই একটি বিমর্ষ ও বিষন্ন উপাখ্যানে পরিণত হবে। সেটি কিছুতেই হইতে দেওয়া উচিত হবে না।