Toha @toha_mh Channel on Telegram

Toha

@toha_mh


Official Telegram Channel of Mozammel Hossain Toha

Toha (English)

Are you a fan of Mozammel Hossain Toha and want to stay updated on all his latest news and updates? Look no further than the official Telegram channel, Toha! This channel is your one-stop destination for all things related to Mozammel Hossain Toha. From exclusive behind-the-scenes content to personal insights and stories, Toha has it all

Who is Mozammel Hossain Toha? He is a renowned figure in the industry known for his talent and dedication. With a strong passion for his craft, Toha has captured the hearts of many with his work

What is Toha? Toha is the official Telegram channel where fans can connect with Mozammel Hossain Toha on a more personal level. Get access to exclusive content, updates on upcoming projects, and a glimpse into the life of this talented individual

Whether you're a long-time fan or new to the world of Mozammel Hossain Toha, Toha is the perfect place to stay in the loop. Join the channel today and be a part of the Toha community! Stay connected, stay informed, and stay inspired with Toha.

Toha

13 Feb, 15:22


ইট লুকস লাইক সীজফায়ার ডিল ইজ ব্যাক। সো, কী ঘটেছে, কীভাবে ঘটেছে?

১। ইসরায়েল সীজফায়ারের শর্ত পূরণ না করায় হামাস বন্দী বিনিময় স্থগিত করে। তারা পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করে, তারা সীজফায়ার মেনে চলতে খুবই আগ্রহী, কিন্তু ইসরায়েলকেও অবশ্যই শর্ত মানতে হবে। তারা ঘোষণাটা দেয় সোমবারে, যেন ইসরায়েল পরবর্তী শনিবারের আগে শর্ত পূরণ করার মতো যথেষ্ট সময় পায়।

২। হামাসের এই ঘোষণার সাথে সাথে ইসরায়েলের প্রপাগান্ডা মেশিন পুরোদমে কাজ শুরু করে দেয়। পশ্চিমা গণমাধ্যমে সাধারণ মানুষকে এবং প্রাইভেটলি পশ্চিমা রাজনীতিবিদদেরকে তারা বোঝাতে শুরু করে, এটাই হামাসের চরিত্র। হামাস কখনোই যুদ্ধবিরতি চায় না। কাজেই পুনরায় যুদ্ধ শুরু করে তাদেরকে নির্মূল করাই একমাত্র সমাধান। হামাস যে ইসরায়েলের শর্তভঙ্গের কারণে বন্দী বিনিময় স্থগিত করেছিল, সেটা তারা পুরোপুরি চেপে যায়।

৩। এরকম পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহু ট্রাম্পের সাথে দেখা করে এবং তাকে ভুজুং ভাজুং বুঝ দেওয়ায়। ফলে ট্রাম্প আল্টিমেটাম দেয় - শনিবারের মধ্যে হামাস যদি "সকল বন্দী"কে মুক্তি না দেয়, তাহলে "লেট অল হেল ব্রেক লুজ। সোজা কথায়, সে ইসরায়েলকে পুনরায় গণহত্যা চালানোর লাইসেন্স দেয়।

বাকিটুকু কমেন্টে...

Toha

12 Feb, 18:02


এর আগেরবারও ট্রাম্প এমনসব পদক্ষেপ নিয়েছিল, সারা জীবন ফিলিস্তিনিদের স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে আমেরিকা আর ইসরায়েলের দালালি করে আসা মাহমুদ আব্বাস পর্যন্ত ট্রাম্পকে অভিশাপ দিয়ে বলেছিল, "ইয়াখরাব বেইতাক!" অর্থাৎ, আল্লাহ তোমার ঘর ধ্বংস করুক।

বলাই বাহুল্য, স্ক্রিনশটটা আমার বই "দ্য রোড টু অপারেশন আল আকসা ফ্লাড" থেকে নেওয়া। বই থেকে আরেকটা অংশ কোট করি:

//আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতায় না গিয়ে, এককভাবে জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তর করার মধ্য দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সঙ্কটকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যান। মাহমুদ আব্বাস পর্যন্ত ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন এবং ট্রাম্পের সাথে কথার মাঝখানে ফোন কেটে দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।//

এবারও ট্রাম্প সেরকম কাজই করছে এবং সবাইকে ক্ষেপিয়ে তুলছে। মিসরীয় মিডিয়া জানিয়েছে, সিসি ট্রাম্পের সাথে হতে যাওয়া মিটিং বাতিল করেছে। গাযার ব্যাপারে ট্রাম্প তার অবস্থান পরিবর্তন না করলে সিসি তার সাথে মিটিংয়ে বসবে না।

বাকিটুকু পড়ুন কমেন্টে...

Toha

11 Feb, 18:32


পশ্চিম তীরের হেবরনের অধিবাসী এই ভদ্রলোকের নাম ইয়াসের আল-শারবাতি। শুহাদা আল-আকসা ব্রিগেডের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ২০০১ সালে তাকে আটক করা হয়। বিচারে তিন তিনটা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তার ঘরে ছিল স্ত্রী আর ছোট ছোট তিন ছেলে - মাজদ, আহমেদ, নাহিল। রায়ের পর তাদের সাথে তার দেখা-সাক্ষাৎ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

২৩ বছর পর গত সপ্তাহে মুক্তি পাওয়ার পর সাক্ষাৎকারে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন:

বহু বছর পর কারাগারে আমার সাথে তরুণ এক বন্দীর দেখা হয়। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, তোমার বাড়ি কোথায়?

সে উত্তর দেয়, আল-খালিল (হেবরন)।

- তোমার নাম?

- আহমেদ আল-শারবাতি।

এরপর সেই তরুণ আমার চোখে চোখ রেখে বলে, আমাকে চিনতে পারছ না, বাবা?

ছেলের পরিচয় পাওয়ার পর ইয়াসের ছুটে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন তিনি। কারণ সেলের একপাশের দেয়ালে তাকে, অন্যপাশের দেয়ালে তার ছেলেকে হাতে-পায়ে শেকল দিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। আর তাদের দুজনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে মজা দেখছিল ইসরায়েলি প্রিজন গার্ডরা।

Toha

11 Feb, 14:58


চমত্‍কার একটা পডকাস্ট। দুটো অংশ তুলে দিচ্ছি।

রোরি স্টুয়ার্ট: আপনি কি এখনও নিজেকে বিপ্লবী মনে করেন?

আহমেদ আল-শারা': আমি বিশ্বাস করি, বিপ্লবী মানসিকতা দিয়ে দেশ গঠন করা যায় না। দেশ গঠন এবং সমাজ পরিচালনার জন্য ভিন্ন ধরনের মানসিকতা প্রয়োজন। আমার দৃষ্টিতে সরকার উত্‍খাতের সাথে সাথেই বিপ্লব শেষ হয়ে গেছে।

এখন আমরা নতুন একটা পর্যায়ে প্রবেশ করেছি, যেখানে দেশের পুনর্গঠন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য প্রচেষ্টা, প্রতিবেশী দেশগুলোকে আশ্বস্তকরণ এবং পশ্চিমা দেশগুলোর পাশাপাশি আঞ্চলিক দেশগুলোর সাথে সিরিয়ার কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপনের কাজ গুরুত্বপূর্ণ।

---

পরবর্তী অংশ কমেন্টে।

Toha

11 Feb, 07:00


গাযার ভবিষ্যত আবারও অনিশ্চয়তার দিকে।

সীজফায়ার ডিলের অনেক শর্তই ইসরায়েল মানেনি। ১২ হাজার ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার কথা ছিল, দিয়েছে মাত্র ৮,৫০০। দিনে ৫০ ট্রাক জ্বালানি প্রবেশ করতে দেওয়ার কথা ছিল, দিয়েছে মাত্র ১৫ ট্রাক।

তার উপর দ্বিতীয় ফেজের যে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল গত সপ্তাহ থেকে, এখন পর্যন্ত নেতানিয়াহু সে ব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না। উল্টো ট্রাম্পকে সাথে নিয়ে তার বিরুদ্ধেই কথা বলছে।

ফলে গতকাল হামাস বন্দী বিনিময় আপাতত স্থগিত করেছে। আরও যে তিনজন ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল, শর্তগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে।

ওদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প গাযার এথনিক ক্লিনজিংয়ের পক্ষে তার অনড় অবস্থান ধরে রেখেছে। মিসর, জর্ডান, সৌদি - প্রত্যেকে তার এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করছে।

তারপরেও ট্রাম্প একের পর এক বক্তব্য দিয়েই যাচ্ছে - গাযাবাসীকে সে গাযায় ফিরতে দিতে চায় না। তাদের জন্য মিসর, জর্ডান এবং আশেপাশের অন্যান্য দেশে বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে চায়। আর গাযার মালিকানা এবং দায়িত্ব সে গ্রহণ করতে চায়, যেন সেটাকে সম্পূর্ণ নতুন করে গড়ে তুলতে পারে (তার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, ইসরায়েলের জন্য)

এটা বাস্তবায়িত হওয়া খুবই কঠিন। মিসর এবং জর্ডান রাজি হবে না। গাযাবাসী তো রাজি হবেই না। সৌদি আরবও এই প্রস্তাবের প্রচণ্ড বিরোধী। ফলে শেষ পর্যন্ত এটা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা এখন পর্যন্ত নাই বললেই চলে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ট্রাম্প গোঁ ধরে বসে থাকলে গাযাবাসী উত্তরেও পুরোপুরি ফিরতে পারবে না। তাদেরকে অনিশ্চিয়তার মধ্যে আগামী চার বছর শরণার্থীর উপর শরণার্থী হয়ে কাটাতে হবে।

সর্বশেষ হামাস বন্দী বিনিময় স্থগিত করার পর ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছে, শনিবার দুপুর বারোটার মধ্যে যদি "সব বন্দীকে" একসাথে ফিরিয়ে দেওয়া না হয়, তাহলে "লেট অল হেল ব্রেক আউট"।

===

বাঙালিদের মধ্যে ট্রাম্পের প্রচুর ফ্যান। ট্রাম্প নাকি যুদ্ধ পছন্দ করে না। অথচ ৭ অক্টোবরের পেছনে ট্রাম্পের গত টার্মের একাধিক পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বইয়ে বিস্তারিত আলাপ করেছি। একটা চ্যাপ্টারই আছে বইয়ে: "গাযা থেকে জেরুজালেম: ট্রাম্পের ধ্বংসাত্মক নীতির প্রভাব"।

Toha

08 Feb, 17:52


এর আগে হামাস যে ইসরায়েলি বন্দীদেরকে মুক্তি দিয়েছিল, তারা সবাই ছিল হাসিখুশি, নাদুস-নুদুস। আজ দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র।

আজ যে তিনজন বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হলো, তাদের মুখে হাসি নাই। এবং পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, তারা খুব একটা আরামেও ছিল না। খাবার-দাবারের কষ্টে ছিল।

এই পার্থক্যের কারণ হচ্ছে, আগের বন্দীরা ছিল সিভিলিয়ান এবং নারী সৈন্য। আজকের তিনজন হচ্ছে পুরুষ যোদ্ধা।

হামাস পরিষ্কারভাবেই ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরির বন্দীদেরকে ভিন্ন ভিন্নভাবে ট্রিট করেছে। সিভিলিয়ান এবং নারী সৈন্যদের তারা সর্বোচ্চ যত্নে রেখেছে। কিন্তু পুরুষ যোদ্ধাদের প্রতি বাড়তি কোনো যত্ন নেয়নি।

আশা করা হচ্ছে, আজকের বন্দীদের এই দশা দেখার পর বাকি বন্দীদের আত্মীয়-স্বজনরা যত দ্রুত সম্ভব বাকিদের মুক্তির ব্যবস্থা করার জন্য নেতানিয়াহুর সরকারের উপর চাপ বৃদ্ধি করবে।

===

হামাস সম্পর্কে আগ্রহী হলে আমার বইটা পড়তে পারেন। যদিও পুরো বইটা হামাসকে নিয়ে না, কিন্তু বইয়ের অন্তত তিনটা চ্যাপ্টার জুড়ে হামাসের উত্থানের পটভূমি, রাজনীতি, জনপ্রিয়তা, নির্বাচনে জয়লাভের রহস্য ইত্যাদি উঠে এসেছে।

https://www.rokomari.com/book/453932/the-road-to-operation-al-aqsa-flood

Toha

08 Feb, 07:06


রকমারিতে চলে এসেছে।

https://www.rokomari.com/book/453932/the-road-to-operation-al-aqsa-flood

Toha

08 Feb, 06:38


নিঝুম মজুমদার আর ইমরান সরকারের স্ট্যাটাস দেখে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, এরা মনেপ্রাণে চাইছে মানুষ গিয়ে গাজীপুরে আক্রমণ করুক, বড় ধরনের সংঘর্ষ শুরু হোক।

গাজীপুরে নিশ্চয়ই তারা যুদ্ধ করে জেতার আশা করে না। সেই ক্ষমতা তাদের নাই। তাদের আশা বা পরিকল্পনা অন্য কোনো জায়গায়।

আনফরচুনেটলি ছাত্রনেতারা তাদের সেই ফাঁদে পা দেওয়ার মতো কথাবার্তা বলছে। নিজেরাই দলবেঁধে গাজীপুরে যাওয়ার কথা বলছে। আইন হাতে তুলে নেওয়ার কথা বলছে।

অথচ উচিত কাজ হবে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সরকারের উপর এমন চাপ সৃষ্টি করা, যেন সরকার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পাল্টাতে বাধ্য হয়, আইনশৃঙ্খলার ব্যাপারে কঠোর হতে বাধ্য হয়, অভিযান চালিয়ে প্রকাশ্যে বিচরণ করা খুনীদের এবং তাদের সহযোগীদের আটক করতে বাধ্য হয়।

এগুলো পুলিশ/সেনাবাহিনীকে দিয়েই করাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই। বাংলাদেশ সিরিয়া না যে এখানে বিদ্রোহীদের ১৩ বছর ধরে মুক্তাঞ্চল শাসন করার অভিজ্ঞতা আছে, সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে সব বিলুপ্ত করে নিজেরাই সব নিয়ন্ত্রণ করবে।

বাংলাদেশে আন্দোলন চলেছে মাত্র ৩৬ দিন। ছাত্রজনতার এখানে শুধু ধ্বংস করার অভিজ্ঞতাই তৈরি হয়েছে, গঠন করার অভিজ্ঞতা তৈরি হয়নি। তারা সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিতে গেলে কেবল চরম বিশৃঙ্খলারই সৃষ্টি হবে। যেটা সিরিয়াতে প্রথমদিকে হয়েছে।

এখন সময় উত্তেজনা ছড়ানোর না। ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে সরকারকে দিয়ে কাজ করানোর।

Toha

06 Feb, 18:11


মিসরের রাফাহ বর্ডার ক্রসিং থেকে পূর্ব দিকে যাত্রা শুরু করে সামান্য একটু উত্তরে বাঁক নিয়ে সোজা ইসরায়েলের এরেজ বর্ডার ক্রসিং (Erez Crossing) পর্যন্ত এগিয়ে গেছে মাঝারি আকারের একটা পিচঢালা সড়ক। উত্তর-দক্ষিণ বরাবর সম্পূর্ণ গাযা ভূখণ্ডের বুক চিরে এগিয়ে যাওয়া এই সড়কটার নাম তারীক্ব সালাহউদ্দিন (طريق صلاح الدين), তথা সালাহউদ্দিন রোড।

দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই; কিন্তু এই সড়কটা হচ্ছে বিশ্বের প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর মধ্যে একটা। গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর অবস্থান দুই মহাদেশের সংযোগস্থলে। গত চার হাজার বছরের অধিকাংশ সময় জুড়ে সড়কটা ব্যবহৃত হয়ে এসেছে আফ্রিকার সাথে এশিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক এবং সামরিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে।

কোনো ভূখণ্ডের ভাগ্য কীরকম হবে, তার অনেকটাই নির্ভর করে সেই ভূখণ্ডের ভৌগোলিক অবস্থানের উপর। আফ্রিকা মহাদেশের একেবারে উত্তর-পূর্বে এবং এশিয়া মহাদেশের একেবারে পশ্চিমে অবস্থিত হওয়ায় প্রাচীনকাল থেকেই গাযা ছিল ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নীলনদের অববাহিকায় গড়ে ওঠা মিসরীয় সভ্যতার সাথে ইরাক এবং শাম অঞ্চলের সভ্যতাগুলোর যে হাজার বছরের সংঘর্ষ, তাতে গাযার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখাটা ছিল উভয় পক্ষের জন্যই কৌশলগতভাবে অত্যন্ত জরুরি।

হাজার বছর ধরে আঞ্চলিক পরাশক্তিগুলো গাযাকে ব্যবহার করে এসেছে দাবার ঘুঁটি হিসেবে– প্রতিপক্ষের উপর আক্রমণের সময় সম্মুখ ঘাঁটি হিসেবে, কিংবা প্রতিপক্ষের আক্রমণকে প্রতিহত করার সময় নিজেদের সাম্রাজ্যের সর্বশেষ রক্ষাকবচ হিসেবে। গত চার হাজার বছরে গাযার মালিকানা পরিবর্তিত হয়েছে অসংখ্যবার। বিভিন্ন সময় গাযা নিয়ন্ত্রণ করেছে মিসরীয়রা, পলেষ্টীয়রা, অ্যাসিরীয়রা, ব্যাবিলনীয়রা, পারসিকরা, গ্রিকরা, রোমানরা, বাইজেন্টাইনরা, আরবরা, অটোমান তুর্কিরা, এবং সবশেষে ব্রিটিশ দখলদারিত্বের পূর্বে আবারও আরব-মুসলমান ফিলিস্তিনিরা।

ফারাওদের শাসনামলে অন্তত ষোলো জন ফারাও বিভিন্ন সময় গাযায় বসবাস করেছেন। সালাহউদ্দিন রোড, বা তৎকালীন Via Maris ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় গাযা জয় করেছেন ফেরাউন হিসেবে খ্যাত মিসরীয় ফারাও দ্বিতীয় রামেসিস, ব্যাবিলনীয় সম্রাট দ্বিতীয় নেবুচাদনেজার, পারস্যের সম্রাট সাইরাস দ্য গ্রেট, মেসিডোনিয়ার শাসনকর্তা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট, প্রখ্যাত সাহাবি আমর ইবনুল আস, কুর্দি বীর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবি, মঙ্গোলীয় শাসনকর্তা হালাকু খান, ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট, প্রমুখ। সুলতান সালাহউদ্দিনের সম্মানেই পরবর্তীতে এই Via Maris-এর ফিলিস্তিনি অংশের নামকরণ করা হয় সালাহউদ্দিন রোড।

যুদ্ধ, অবরোধ কিংবা গণহত্যা গাযাবাসীর ভাগ্যে নতুন কিছু না। হাজার বছরের ইতিহাসে আক্রমণকারী বিভিন্ন বাহিনীর অভিযানে গাযা ধ্বংস হয়েছে অসংখ্যবার। এর অধিবাসীদেরকে বাড়িঘর ছেড়ে পাড়ি জমাতে হয়েছে আশেপাশের জনপদগুলোতে। কিন্তু এরপর যুদ্ধ শেষে আবারও তারা ফিরে এসেছে নিজ নিজ ভিটেমাটিতে। ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে দাঁড়িয়ে গাযাকে পরিণত করেছে সমৃদ্ধশালী নগরীতে।

এরকম একটা বড় আকারের হত্যাযজ্ঞ ঘটেছিল খ্রিস্টপূর্ব ৩৩২ সালে; আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের বাহিনীর হাতে। সে সময় আলেকজান্ডারের বাহিনী ১০০ দিন পর্যন্ত গাযা অবরোধ করে রাখে। যুদ্ধে গাযাবাসীর আক্রমণে আলেকজান্ডার আহত হলে তার বাহিনী প্রতিশোধের উন্মত্ততা নিয়ে গাযার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। গাযার প্রতিটা সন্দেহভাজন পুরুষ যোদ্ধাকে হত্যা করা হয় এবং তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়। গাযা থেকে ছয় জাহাজ ভর্তি ধন-সম্পত্তি লুট করে মেসিডোনিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।

আলেক্জান্ডারের এই গাযা অভিযান আরও দুটো কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথমত, এই যুদ্ধেই প্রথমবারের মতো গাযার মাটির নিচে টানেল, তথা সুড়ঙ্গ খননের ইতিহাস জানতে পারা যায়। গাযার নরম মাটি টানেল তৈরি করার জন্য উপযুক্ত হওয়ায় এই যুদ্ধে উভয়পক্ষই টানেল তৈরি করে সেখান থেকে একে অপরের উপর আক্রমণ করে। আর দ্বিতীয়ত, এই যুদ্ধেই প্রথমবারের মতো স্থানীয় গাযাবাসীর পাশাপাশি আরব ভাড়াটে সৈন্যরা গাযার প্রতিরোধে অংশগ্রহণ করে।

গাযার সাথে আরবদের সম্পর্ক অনেক পুরাতন। কারণ গাযা শুধুমাত্র সামরিক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। একইসাথে গাযা ছিল আফ্রিকার সাথে মধ্যপ্রাচ্যের, এবং আরব উপদ্বীপের সাথে ইউরোপের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্কের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। অন্তত খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ সাল থেকেই ইয়েমেনের বণিকরা মসলা এবং মূল্যবান পাথর বিক্রি করার জন্য গাযায় যাতায়াত করত। আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর টলেমির শাসনামলে গাযা যখন নতুন করে সমৃদ্ধি লাভ করে, তখন গাযার সমুদ্র বন্দর পরিণত হয় ইয়েমেন, পেত্রা এবং আরব উপদ্বীপের বণিকদের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক গন্তব্যে।

Toha

06 Feb, 18:11


ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে, পঞ্চম শতাব্দীর শেষের দিকে আরব উপদ্বীপ থেকে গাযা হয়ে সিরিয়া পর্যন্ত আসা যাওয়া করা বাণিজ্যিক কাফেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাফেলাটা ছিল মক্কার কুরাইশ গোত্রের নেতা হাশিম ইবনে আবদে মানাফের কাফেলা। এই হাশিমই মক্কার প্রধান ধর্মীয় উপাসনালয় কাবা ঘরে হজ পালন করতে যাওয়া অতিথিদের আপ্যায়ন করার উদ্দেশ্যে বছরে দুটো বাণিজ্যিক কাফেলার প্রচলন করেছিলেন। একটা ছিল ইয়েমেনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা শীতকালীন কাফেলা, আর অন্যটা ছিল গাযা হয়ে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা গ্রীষ্মকালীন কাফেলা। পবিত্র কুরআনের ভাষায়, রিহলাতাশ্‌ শিতায়ি ওয়াস্‌ সাইফ (رِحْلَةَ الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ)। অর্থাৎ, শীত এবং গ্রীষ্মকালীন সফর।

আনুমানিক ৪৯৭ খ্রিস্টাব্দে এরকম একটা সফর থেকে ফেরার পথেই হাশিম ইবনে আবদে মানাফ গাযায় মৃত্যুবরণ করেন। সে সময় তার মৃত্যুর স্থানটা খুব একটা গুরুত্ব না পেলেও পরবর্তীতে সেটা মুসলমানদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কারণ এই হাশিম ছিলেন ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর প্র-পিতামহ। ইসলামি সাহিত্যে গাযার পরিচয় তাই শুধু গাযা হিসেবে না; বরং গায্‌যাতু হাশিম (غزة هاشم), তথা হাশিমের গাযা হিসেবে।

এর আগে হাজার বছর ধরে গাযার অধিবাসীরা ছিল প্রধানত ইহুদি এবং পৌত্তলিক। কিন্তু ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবের প্রাক্কালে, বাইজেন্টাইন শাসনামলে গাযার অধিকাংশ অধিবাসীই ছিল খ্রিস্টধর্মের অনুসারী। মূলত ৩১৩ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট কনস্টান্টিন যখন খ্রিস্টধর্মকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে মর্যাদা দেন, তখন থেকেই গাযাসহ রোমান সাম্রাজ্যের অধীনস্থ এলাকাগুলোর অধিবাসীরা খ্রিস্টান হয়ে উঠতে শুরু করে।

সপ্তম শতাব্দীর শুরুর দিকে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সাথে পারস্য সাম্রাজ্যের দ্বন্দ্ব যখন প্রকট হয়ে উঠতে শুরু করে, গাযার নিয়ন্ত্রণ যখন একবার পারস্যের সম্রাট খসরুর হাতে, আরেকবার বাইজেন্টাইন সম্রাট হিরাক্লিয়াসের হাতে হস্তান্তরিত হতে থাকে, ঠিক এমন সময় আরবের মরুর বুকে ইসলাম নামে নতুন একটা ধর্ম বিস্তার লাভ করতে শুরু করে। এবং এর মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই, খলিফা উমর (রা)-এর শাসনামলে, ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম সেনাবাহিনী গাযা জয় করে নেয়।

গাযার অধিবাসীদের বড় একটা অংশ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই স্বেচ্ছায় নতুন এই ধর্মটা গ্রহণ করে নেয়। পরবর্তী প্রায় চৌদ্দশ বছর ধরে খুব অল্প কিছু সময়ের ব্যতিক্রম ছাড়া গাযা মুসলমানদেরই বিভিন্ন সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে থাকে। বর্তমানে আমরা যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আরবি ভাষাভাষী গাযাকে চিনি, সেটা মূলত এরই ধারাবাহিকতা।

--- বইয়ের প্রথম কয়েক পৃষ্ঠা। বইটা প্রকাশিত হচ্ছে আগামীকাল। পড়ার আমন্ত্রণ রইলো।

বই: দ্য রোড টু অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড
প্রকাশক: গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স
পৃষ্ঠাসংখ্যা: ২৪৮
মূল্য: ৩২০ টাকা (মেলায় ২৮৫ টাকা)

Toha

06 Feb, 16:42


আসছে আগামীকাল...

Toha

06 Feb, 08:20


আয়নাঘর "ভাঙা"র দাবি যারা করছে, তারা কী মীন করছে জানি না। কিন্তু আমার মতে আয়নাঘর না, বরং আয়নাঘরের পেছনে যে ডীপ স্টেট সেটাকে ভাঙা অন্য যেকোনো কাজের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

না, আমি মনে করি না ৩২ নম্বর "না ভেঙে" আয়নাঘর ভাঙা উচিত ছিল। মুজিেবের মূর্তি ভাঙার মতো ৩২ নম্বর ভাঙাও ঠিক আছে। ফ্যাসিবাদের সিম্বল ভেঙে ফেলাই নিয়ম।

কিন্তু এগুলো হচ্ছে সিম্বলিক কাজ কারবার। প্রচুর উত্‍সাহী মানুষ পাওয়া যায়, প্রচুর বাহবা পাওয়া যায়, আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়, কিন্তু দিন শেষে খুব বেশি কাজের কাজ হয় না।

হাসিনার যেভাবে পতন হয়েছে, তাকে ৩২ নম্বর না ভাংলেও হাসিনার পক্ষে ফিরে আসা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু যেটা খুবই সম্ভব, এবং যেটা মোস্ট প্রবাবলি হবেই, দুই-পাঁচ-দশ বছর পর, সেটা হচ্ছে হাসিনার আমলের ডীপ স্টেটের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়া।

মোবারকের পতনের পর মোবারকের ফ্যামিলির কেউ ফিরে আসেনি। মোবারকের আত্মীয়-স্বজন, মন্ত্রী-এমপি, বা আমলারা কেউ ক্যু করেনি। করেছে ডীপ স্টেট। সেনাবাহিনীর লোকজন।

গাদ্দাফির পতনের গাদ্দাফির বাসভবন গুঁড়িয়ে ময়লা ফেলার ভাগাড়ে পরিণত করা হয়েছিল। গাদ্দাফির আমলের জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত, সংবিধান - সব বাতিল করে গাদ্দাফির নাম-ঠিকানা মুছে ফেলা হয়েছিল। তারপরেও "ক্যু" হয়েছে। গাদ্দাফির ফ্যামিলির কেউ করেনি। ইনফ্যাক্ট তার একসময়ের শত্রুই করেছে। কিন্তু সেটা করেছে সেনাবাহিনীকে সাথে নিয়ে।

গত ১৫ বছর হাসিনা একা ফ্যাসিবাদ কায়েম করে নাই। নির্বাচনে কারচুপি, ওয়ার অন টেরর অপারেশন, গুম-খুন-ক্রসফায়ার সবকিছুতে তার সঙ্গী ছিল সেনাবাহিনীর লোকজন। অথচ ছয় মাস পরেও এই ফ্রন্টে বলতে গেলে কোনো পরিবর্তনই হয় নাই। যেই আয়নাঘর তথা গুম ছিল ফ্যাসিবাদ কায়েমের প্রধান অস্ত্র, সেই আয়নাঘরের কুশীলবরা এখনও ঠিক আগের মতোই শক্তিশালী অবস্থানে আছে।

এগুলোকে ইনট্যাক্ট রেখে, এই কুশীলবদের ক্ষমতার কাঠামো না ভেঙে, এগুলোর সাথে জড়িত অফিসারদের প্রত্যেকের নাম-পরিচয় প্রকাশ না করে, প্রত্যেকের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত না করে আপনি যতই ৩২ ভাঙেন, যতই সংস্কার করেন, যতই সংবিধান বাতিল করেন, কিছুই আসবে-যাবে না। দুই বছরের জায়গায় পাঁচ বছর লাগবে বড়জোর।

ইন্টারেস্টিংলি অন্য সব বিষয়ে ছাত্রনেতাদেরকে প্রচুর সোচ্চার দেখা গেলেও এই ব্যাপারে তারা মোটামুটি নীরব। নেত্রনিউজের রিপোর্টের পরেও ফেসবুকে দুই-একটা স্ট্যাটাস ছাড়া তেমন কোনো উচ্চবাচ্চ নাই। এটা কি ভয়, নাকি কোনো ধরনর ম্যানিপুলেশন, নাকি কোনো ধরনের সমঝোতা, জানা নাই। তবে আশঙ্কা হচ্ছে, এই ফ্রন্টেই তারা সবচেয়ে বড় মারটা খাবে।

মুরসিও সিসিকে বিশ্বাস করেছিল। তানতাউইকে সরিয়ে সিসিকে প্রমোশন দিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বানিয়ে মনে করেছিল কাজ শেষ। মনোযোগ দিয়েছিল আমলাতন্ত্র আর আইন-কানুনের দিকে। এরপর সেই সিসির হাতেই সে সবচেয়ে বড় মারটা খেয়েছে।

Toha

05 Feb, 06:16


দ্য ইকোনমিস্ট: আমি কি জানতে পারি, এমন কোনো রাজনৈতিক নেতা আছেন যিনি আপনার জন্য অনুপ্রেরণা বা আদর্শ? জর্জ ওয়াশিংটন? মোহাম্মদ বিন সালমান? আপনি কাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখেন?

আহমেদ আল-শারা: সিরিয়ার পরিস্থিতি ব্যতিক্রমী, এবং প্রতিটি দেশ একটি স্বতন্ত্র পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায়। রাজনৈতিক সমাধানগুলোর উদ্ভব হওয়া উচিত চলমান ঘটনাবলি থেকে, তাই অন্য দেশের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা আমদানি করে সিরিয়ার পরিস্থিতির ওপর প্রয়োগ করা আমি সঠিক নীতি মনে করি না। আমি ইতিহাস পড়েছি সব প্রসঙ্গে—আরব, আন্তর্জাতিক এবং ইসলামী; এবং সব অঞ্চল থেকে—পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ। আমরা বিশ্বের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করেছি, বিশেষ করে গত একশ বছরে সংঘটিত ঘটনা যেমন প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তাছাড়া, আরব অঞ্চলও বহু সংকটের মধ্য দিয়ে গেছে। তাই এই অঞ্চল শিক্ষায় সমৃদ্ধ, এবং ইতিহাস শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ। আমরা সেসব থেকে উপকৃত হব এবং একই সঙ্গে বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে স্বাধীন মনোভাব বজায় রাখার চেষ্টা করব, অন্য দেশের অভিজ্ঞতা থেকে উপকার নেওয়ার পাশাপাশি। আপনি যেসব ব্যক্তিত্বের নাম উল্লেখ করেছেন, তারা তাদের নিজ নিজ দেশ পরিচালনায় সফল ছিলেন, কিন্তু সিরিয়ার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।

Toha

04 Feb, 18:05


সিরিয়ার নতুন "ফার্স্ট লেডি"। জোলানির বউ। লাতিফা দ্রুবি।

Toha

04 Feb, 08:11


এক বাংলাদেশী ভাইয়ের (সম্ভবত পশ্চিমা পাসপোর্টধারী) আল-আকসা মসজিদ সফরের দৃশ্য দেখে মাথায় এলো, হামাসের প্রায় কোনো নেতা জীবনে আল-আকসা মসজিদে যাওয়ার সুযোগ পায়নি।

শুধু হামাস না, ফাতাহ'র নেতারাও আল-আকসায় প্রবেশ করতে পারে না। যেই মাহমুদ আব্বাস সারা জীবন ইসরায়েলের দালালি করে এসেছে, তাকেও ইসরায়েল আল-আকসায় প্রবেশ করার অনুমতি দেয় না।

আপনি যদি খুব বেশি ডিটেইলে না যান, তাহলে আপনার মনে হতে পারে, পশ্চিম তীরের অন্তত বেশ কিছু অংশ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু বাস্তবে অসলো অ্যাকর্ড অনুযায়ী পশ্চিম তীরের যে ৩৮% এলাকায় (Area A এবং Area B) ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সীমিত নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয়েছিল, সেটা নিরবিচ্ছিন্ন কোনো এলাকা ছিল না। সেটা ছিল ১৬৫টা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিচ্ছিন্ন শহর (Area A) এবং গ্রামের (Area B) সমষ্টি, যেগুলো পুরোপুরি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকা Area C দ্বারা বেষ্টিত।

মানচিত্র দেখলে আপনার মনে হবে, বিশাল Area C-এর সমুদ্রের উপর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ১৬৫টা দ্বীপ ভাসছে। এই দ্বীপগুলোর একটা থেকে আরেকটায় যেতে হলে ইসরায়েলের অনুমতি নিয়ে, ইসরায়েলি চেকপয়েন্ট পাড়ি দিয়ে, অনর্থক হয়রানির শিকার হয়ে এরপর যেতে হয়। খোদ মাহমুদ আব্বাস ইসরায়েলের অনুমতি ছাড়া রামাল্লা থেকে জেনিনে, বা জেনিন থেকে কুদসে যেতে পারে না।

দীর্ঘ সময় পিএলও'র পক্ষে থাকার পরেও এডওয়ার্ড সাঈদ এমনি এমনি অসলো অ্যাকর্ডকে "ফিলিস্তিনি ভার্সাই" হিসেবে আখ্যায়িত করেননি। যেই মাহমুদ দারউইশ পিএলও'র নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন, যিনি ১৯৮৮ সালের ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র রচনা করেছিলেন, অসলোর প্রতিবাদে এমনি এমনি তিনি পিএলও থেকে পদত্যাগ করেননি।

অসলো ছিল ফিলিস্তিনিদের প্রথম আত্মসমর্পণ। অসলোর পেছনের প্রেক্ষাপট, অসলোর ব্যর্থতা এবং এই ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে হামাসের উত্থান - ফিলিস্তিনের বর্তমান সঙ্কট বোঝার জন্য এগুলো বোঝা জরুরী। "দ্য রোড টু আল আকসা ফ্লাড" বইয়ে ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় এগুলো নিয়েও সংক্ষেপে আলোচনা করেছি।

Toha

03 Feb, 18:20


কুতাইবা মোহাম্মদ। পশ্চিম তীরের নাবলুস শহরের অধিবাসী। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৩৩ বছর জেল খেটেছেন। সর্বশেষ গ্রেপ্তার হয়েছেন ২০০০ সালে। ৩৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল সেবার। ২৫ বছর পর গত পরশুদিন ঘরে ফিরে এসেছেন। মুক্তি পেয়ে স্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ভালোবাসা প্রকাশ করছেন।

Toha

02 Feb, 16:44


ভদ্রমহিলার নাম লাতিফা (উম্ম নাসের আবু হামিদ)। পশ্চিম তীরের রামাল্লার বাসিন্দা। তার এক ছেলে শহিদ, আর চার ছেলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত।

রামাল্লা হচ্ছে আব্বাসের প্যালেস্টিনিয়ান অথরিটির হেডকোয়ার্টার। সেখানে বসেই এই ভদ্রমহিলা ২০২২ সালে একটা ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছিলেন। পশ্চিম তীরের ফাতাহ সরকারের উদ্দেশ্যে না। গাযার হামাসের মিলিটারি উইংয়ের প্রধান মোহাম্মদ দেইফের উদ্দেশে।

সেখানে দেইফের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, ৩০-৩৫ বছর ধরে তিনি ছেলেদেরকে দেখেন না। দেইফ যেন তার ছেলেদেরকে ফিরিয়ে এনে দেন।

দেইফ শহিদ হয়েছেন। কিন্তু তার উত্তরসূরীরা গত পরশুদিন তার তিন ছেলেকে মুক্ত করে এনেছে। (বড় ছেলে নাসের আবু হামিদ ২০২৩ সালে কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে।)

Toha

02 Feb, 14:06


বই উপহার!!! গিভ অ্যাওয়ে!!!

বইয়ের প্রচ্ছদ সম্পর্কে কমেন্ট করেই আপনি পেতে পারেন বই উপহার! কী করতে হবে? খুব বেশি কিছু না। প্রচ্ছদের একটা ছোটো ব্যাখ্যা দিতে হবে।

সেটা হতে পারে প্রচ্ছদের কোন এলিমেন্ট দিয়ে কী বোঝানো হয়েছে, প্রচ্ছদ দেখে আপনার কী মনে হচ্ছে, অথবা প্রচ্ছদে আরও কোনো এলিমেন্ট যুক্ত করলে ভালো হতো কি না, এরকম কিছু।

প্রকাশের পরপরই কমেন্টকারীদের মধ্য থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ১০ জনের ঠিকানায় বই পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

বই: দ্য রোড টু অপারেশন আল আকসা ফ্লাড
প্রকাশনী: গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স
মেলায় স্টল: ৫১৭, ৫১৮
পৃষ্ঠাসংখ্যা: আনুমানিক ২২০
মূল্য: আনুমানিক ২৬০-২৭০
প্রকাশের তারিখ: মেলার প্রথম সপ্তাহে

Toha

02 Feb, 13:41


১৭ বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে প্রথমবারের মতো নিজের ৯ বছরের সন্তানের চেহারা দেখলেন আলি নাজ্জাল।

ভাবছেন, ১৭ বছর ধরে কারাগারে থাকলে ৯ বছরের সন্তান আসলো কোথা থেকে? এটাকে ফিলিস্তিনিরা বলে "লিবারেটেড স্পার্ম"-এর মাধ্যমে সন্তানের জন্মদান।

যাবজ্জীবন বা দীর্ঘ কারাদণ্ড পাওয়া ফিলস্তিনি বন্দীদের অনেকেই সুযোগ পেলে বিশ্বস্ত মাধ্যমে নিজেদের বীর্য পাচার করে স্ত্রীদের কাছে। এরপর কৃত্রিম উপায়ে সেই বীর্য স্থাপন করা হয় তাদের স্ত্রীদের গর্ভে। ফিলিস্তিনে এটা মোটামুটি প্রচলিত একটা প্র্যাকটিস।

ফিলিস্তিনের রক্ষণশীল সমাজেও গত দুই দিনে ২০-২৫ বছর পর মুক্তি পাওয়া অনেক বন্দীই ক্যামেরার সামনেই তাদের স্ত্রীদের জড়িয়ে ধরেছে, প্রকাশ্যে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে এই দীর্ঘ সময় তাদের অপেক্ষায় থাকার জন্য; তাদের ঘর-সংসার সামলানোর জন্য, সন্তান এবং বাবা-মাকে দেখাশোনা করার জন্য।

৭৭ বছর ধরে ফিলিস্তিন যুদ্ধে যে পরিমাণ ট্র্যাজেডি আছে, সেটা বিরল।

তারপরেও যে তারা হাসি মুখে তাদের ভাগ্য মেনে নিচ্ছে, পরিবারের সবার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পরমুহূর্তেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে, আগের চেয়েও বেশি মনোবল নিয়ে মাতৃভূমি না ছাড়ার কথা বলছে, এটা জাস্ট অবিশ্বাস্য।

Toha

01 Feb, 20:42


এই ছবি দেখেই চেতনাবাজরা যেভাবে ক্ষেপে গেছে, তাতেই বোঝা যাচ্ছে, এটা যথেষ্ট না।

ট্র্যাশ বিনে হবে না। বড় এক বা একাধিক ডাম্পস্টার লাগবে। সেখানে এই সাইকো খুনীর এই ছবি বড় করে সাঁটানো থাকবে। আর পুরো বইমেলার সব ময়লা-আবর্জনা সেখানে ফালানো হবে।

ফ্যাসিস্টের প্রতি সিম্প্যাথি জন্মানোর আগেই সেটাকে কবর দিতে হবে।

Toha

01 Feb, 18:25


জাকারিয়া জুবেদি নামটা অনেকেরই শোনার কথা। ২০২১ সালে যে ছয়জন ফিলিস্তিনি সিনেমার কাহিনীর মতো "চামচ" দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ইসরায়েলের ম্যাক্সিমাম সিকিউরিটি প্রিজন থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, জাকারিয়া ছিল তাদের লিডার।

জাকারিয়া ছিল ফাতাহ থেতে বেরিয়ে যাওয়া কাতাএব শুহাদা আল-আকসা ব্রিগেডের একজন কমান্ডার। জেনিন শরণার্থী শিবিরে তার দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস আছে। তার মা, ভাই (কুদস ফোর্সের লিডার), ছেলেসহ পরিবারের আট সদস্যকে ইসরায়েল হত্যা করেছে। তাকেও টার্গেট করা হয়েছিল, কিন্তু ভাগ্যক্রমে সে বেঁচে গেছে।

ইসরায়েল তো বটেই, তার বিদ্রোহ থামাতে না পেরে আব্বাসের প্যালেস্টিনিয়ান অথরিটিও তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। ফাতাহর নেতৃবৃন্দের অনুরোধে বার বার সে অস্ত্র নামিয়ে রেখেছে, কিন্তু ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাবে আবারও অস্ত্র হাতে তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে।

২০২১ সালে জেল ভেঙে পালানোর কয়দিন পরেই ইসরায়েল তাকে আবারও আটক করে। এর পরপরই আবু উবায়দা এক ভিডিও বার্তায় তাকে এবং ফিলিস্তিনি জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিল - যে বন্দীরা মাটির নিচ থেকে (সুড়ঙ্গ দিয়ে) মুক্ত হয়ে সারা বিশ্বকে বার্তা দিয়েছে, আমরা কথা দিচ্ছি, শীঘ্রই আমরা মাটির উপর থেকে তাদেরকে মুক্ত করে আনব।

সে সময়ের হামাসের শীর্ষনেতাদের প্রায় সবাই - সিনওয়ার, দেইফ - আরও মাস ছয়েক আগেই শাহাদাত বরণ করেছেন। কিন্তু আবু উবায়দাসহ বাকি যে লিডারশিপ এখনও বেঁচে আছেন, ঠিকই তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। গতকাল সীজফায়ার ডিলের অধীনে জাকারিয়া জুবেইদিকে তারা ছাড়িয়ে এনেছেন।

Toha

01 Feb, 15:55


প্রতিদিন যে পরিমাণ মানবিক দুর্দশার কাহিনী আসছে গাযা থেকে, সহ্য করা কঠিন।

এই লোকটা জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ছিল। ইসরায়েল সেখানে পাশাপাশি দুই সারি ক্যাম্পের উপর বম্বিং করলে সে গিয়ে দেখে মানুষের শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে আছে, তার মধ্যে শুধু এই বাচ্চাটা বেঁচে আছে। বাচ্চাটাকে সে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

এরপর থেকে বাচ্চাটা তার সাথেই আছে। বাচ্চাটা এখন তাকেই বাবা বলে ডাকে। কিন্তু বাচ্চাটাও জানে না, সেও জানে না, বাচ্চাটার আসল বাবা-মা কে, তারা কোথায় আছে। এখন গাযার উত্তরে ফিরে এসে সে বাচ্চাটার আত্মীয়-স্বজনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

Toha

01 Feb, 09:57


Do you think that when you burned me
And danced like a devil over my remains
And left me to the winds to scatter
As kohl for the sun's eye in the desert.

Do you think that you have obliterated my identity
And erased my history and my beliefs
You try in vain... There is no end to a revolutionary
I am like the resurrection, one day I will come.
I am like the resurrection, one day I will come.

সৌদি কবি মাহদাল মাহদি আস-সুকুর-এর লেখা কবিতা আবৃত্তি করছে নর্থ গাযায় ফিরে যাওয়া এক ফিলিস্তিনি শিশু।

Toha

31 Jan, 20:22


এই লোক হচ্ছে আতেফ নাজিব, বাশার আল-আসাদের কাজিন। বলা যায়, এর কারণেই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল।

আতেফ নাজিব ছিল দেরা প্রভিন্সের সিকিউরিটি চীফ। দেরার স্কুল ছাত্ররা যখন দেয়ালে গ্রাফিতি এঁকেছিল - "এবার তোমার পালা, ডাক্তার", তখন এর বাহিনী তাদেরকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল, অবর্ণনীয় টর্চার করেছিল।

ছেলেদের বাবারা যখন ছেলেদেরকে ছাড়ানোর জন্য তাকে অনুরোধ করতে গিয়েছিল, তখন সে বলেছিল, "ওদের কথা ভুলে যাও। বাসায় গিয়ে নতুন সন্তান পয়দা করো। আর সেটা না পারলে তোমাদের স্ত্রীদেরকে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও।"

তার এই বক্তব্য দেরাবাসীকে প্রচণ্ড ক্ষেপিয়ে তোলে। সেই শুক্রবারে তারা বিশাল মিছিল বের করে। ঐ মিছিলে আতেফের বাহিনী গুলি চালালে যে পাল্টাপাল্টি সহিংসতা শুরু হয়, সেটাই শেষ পর্যন্ত গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়।

আজ এই আতেফ নাজিবকে লাতাকিয়া প্রভিন্স থেকে আটক করা হয়েছে।

Toha

31 Jan, 16:31


এটা হচ্ছে মোহাম্মদ দেইফ (আবু খালেদ)-এর ছেলে খালেদ।

আল-জাজিরার সাংবাদিক: বাবাকে শেষ কবে দেখেছ? কী বলে গেছে তোমাকে?

খালেদ: বাবাকে শেষ দেখেছি অক্টোবরের ৬ তারিখে। বলেছে, আমি যেন লেখাপড়া চালিয়ে যাই, যেন কুরআন হিফয করি, যেন তাফসির পড়ি।

আর বলেছে, বাবা যদি শহিদ হয়, তাহলে আমাদেরকে ফিলিস্তিন স্বাধীন করতে হবে। আমরা যদি শহিদ হই, তাহলে আমাদের সন্তানদেরকে স্বাধীন করতে হবে।

Toha

31 Jan, 14:12


মিডিয়াতে আপনি রিপোর্ট দেখবেন, হামাসের আয় শত শত মিলিয়ন ডলার। তাদের নেতারা বিলাসবহুল জীবনযাপন করে।

মানে আছে, খালিদ ফারহান তার পডকাস্টে বলেছিল, হামাস হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী "সন্ত্রাসী সংগঠন"।

এই হচ্ছে গত ২২ বছর ধরে সেই সংগঠনের মিলিটারি উইংয়ের নেতৃত্ব দেওয়া আবু খালেদের (মোহাম্মদ দেইফ)-এর বাসা।

এতদিন পর্যন্ত তার বাসা কেউ চিনত না। তার স্ত্রীকে কেউ চিনত না। তার স্ত্রীর পরিচয় ছিল উম্ম ফাওয়াজ।

গতকাল দেইফের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী স্বনামে ফিরেছে - উম্ম খালেদ। আজ সাংবাদিকরা তার বাসায় যাচ্ছে সাক্ষাৎকার নিতে।

গিয়ে দেখতে পাচ্ছে, এই হচ্ছে তাদের লাইফস্টাইল। অ্যাভেরাজ গাযাবাসীর চেয়েও খারাপ।

এই হচ্ছে হামাস। এই হচ্ছে হামাসের নেতারা। এই হচ্ছে এত ধ্বংসযজ্ঞের পরেও তাদের জনপ্রিয়তা ধরে রাখার একাধিক কারণের একটা।

Toha

19 Jan, 17:11


যুদ্ধবিরতি বা সন্ধি বিষয়ে হামাসের অবস্থান নিয়ে একটা ইনফরমেশন দেই - আনলাইক পপুলার বিলিফ অ্যান্ড মিডিয়া প্রপাগান্ডা, হামাসের যে প্রতিরোধ সংগ্রাম, সেটা ইউটোপিয়ান বা মেসায়ানিক কোনো সংগ্রাম না।

পশ্চিমা মিডিয়ার বয়ান পড়লে আপনার মনে হবে, হামাসের কোনো স্ট্র্যাটেজি নাই, কোনো সুস্পষ্ট পলিটিক্যাল গোল নাই, তাদের কাজ শুধু এলোপাথাড়ি রকেট মারা, আর এর মাধ্যমে গাযাবাসীর উপর ধ্বংসযজ্ঞ টেনে আনা।

বাস্তবতা হচ্ছে, অন্তত ১৯৯৪ সাল থেকেই হামাস বারবার ইসরায়েলকে হুদনার প্রস্তাব দিয়ে এসেছে। হুদনা (هدنة) হচ্ছে একটা ইসলামিক ধারণা, যার অর্থ সাময়িক শান্তি বা যুদ্ধবিরতি, যেটা কয়েক বছর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।

১৯৯৪ সালেই হামাসের কারাবন্দী নেতা শেখ আহমেদ ইয়াসিন ইসরায়েলকে প্রস্তাব দেন, ইসরায়েল যদি ফিলিস্তিনিদের উপর সব ধরনের আক্রমণ বন্ধ করে, যদি ১৯৬৭ সালের পূর্বের সীমানায় ফেরত যায়, যদি বন্দী সব ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়, এবং যদি দখলকৃত এলাকায় নির্মিত সবগুলো অবৈধ সেটলমেন্ট বিলুপ্ত করে, তাহলে হামাস ইসরায়েলের উপর সব ধরনের আক্রমণ স্থগিত করার মধ্য দিয়ে তাদের সাথে ১৫, ২০ বা ৩০ বছর মেয়াদী শান্তিচুক্তি করতে রাজি আছে।

অর্থাৎ, অসলো চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার মাত্র এক বছরের মাথায়ই শেখ ইয়াসিন কার্যত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান মেনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। পার্থক্য ছিল, পিএলও যেখানে চতুর্দিক থেকে ইসরায়েল দ্বারা বেষ্টিত পশ্চিম তীরের মাত্র ১৮% এলাকার সীমিত নিয়ন্ত্রণের বিনিময়েই ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দিয়েছিল, সেখানে হামাসের প্রস্তাবিত হুদনায় ১৯৬৭ সালে দখল হওয়া সম্পূর্ণ ভূমির নিয়ন্ত্রণের দাবি করা হয়।

হামাসের এই হুদনার প্রস্তাব ছিল জাতিসংঘের রেজুলেশনগুলোর সাথে পুরোপুরি কম্পাটিবল। তার উপর হামাসের এই প্রস্তাবে ইসরায়েলকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার, বা নীতিগতভাবে ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে মেনে নেওয়ার কোনো প্রশ্ন ছিল না। এটা ছিল নিছকই বাস্তবতার প্রয়োজনে নির্দিষ্ট একটা সময়ের জন্য করা একটা চুক্তি, যেই চুক্তির সময়সীমা অতিক্রান্ত হলে, অথবা প্রতিপক্ষের কারণে ভেঙে পড়লে আবার প্রতিরোধ শুরু করার সম্ভাবনা ছিল।

পরবর্তী ৩০ বছর ধরে এই ধরনের প্রস্তাব হামাস অনেকবার দিয়েছে। কখনও ১০ বছর মেয়াদী হুদনা, কখনও ২০ বছর মেয়াদী, কখনই, ৩০ বছর মেয়াদী। বলাই বাহুল্য, ইসরায়েল কখনোই হামাসের এই হুদনার প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। ফলে ফিলিস্তিন সঙ্কটও সমাধানের মুখ দেখেনি।

এবারও যদি সীজফায়ার ভেঙে পড়ে, পশ্চিমা গণমাধ্যম যেটাই বলুক, নিশ্চিত থাকতে পারেন, সেটা ইসরায়েলের কারণেই ভেঙে পড়বে। হামাসের কারণে না।

--- প্রথম এবং লাস্ট প্যারাটা বাদে হুদনা সংক্রান্ত বাদবাকি অংশ আমার আপকামিং বই "দ্য রোড টু অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড" থেকে নেওয়া।

Toha

15 Jan, 19:28


হামাস এবং ইসরায়েল সীজফায়ারে সম্মত হয়েছে। এই নিউজের পর গাযার শিশুদের একাংশের শ্লোগান কী?

হোত্ত আস-সেইফ এক্ববাল আস-সেইফ,
ওয়া অ্যাহনা রেজাল মোহাম্মদ দেইফ।

অর্থাৎ,

তলোয়ারের জবাব তলোয়ার হোক,
আমরা মোহাম্মদ দেইফের লোক।

৪৬ হাজার মানুষের মৃত্যুর পর, গাযা ভূখণ্ড উন্মুক্ত কবরস্থানে রূপান্তরিত হওয়ার পর আকসা ফ্লাডকে ডিফেন্ড করা হয়তো অনেকের জন্যই কঠিন। অনেকেই বলতে চায়, আকসা ফ্লাডের সিদ্ধান্ত ভুল ছিলম আকসা ফ্লাড না হলেই ফিলিস্তিনিদের জন্য ভালো হতো।

কিন্তু হাজার মাইল দূরে নিরাপদে বসে বিশ্ববাসী এরকম মনে করলেও জরিপ বলে, ফিলিস্তিনিরা সেরকমটা মনে করে না। কারণ তাদের জীবন আগেও হেল ছিল। সেজন্যই এত মৃত্যুর পরেও তারা সেই কাসসাম ব্রিগেডের প্রধান মোহাম্মদ দেইফের নামেই শ্লোগান দেয়।

আকসা ফ্লাড কেন অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল, ইতিহাস এবং রাজনীতির আলোকে তার বিস্তারিত বিশ্লেষণ পাবেন আমার আগামী বইয়ে। ইনশা আল্লাহ, আসছে শীঘ্রই।

Toha

14 Jan, 11:21


মনে হচ্ছে, গাযা সীজফায়ার ডিল সন্নিকটে। এর আগেও একাধিকবার এরকম নিউজ শোনা গিয়েছিল। কিন্তু এবারেরটা ভিন্ন।

এখন পর্যন্ত খুব বেশি ডিটেইলস আসেনি। কিন্তু ইসরায়েলি মিডিয়া অনুযায়ী এটা সেই একই ডিল, যেটা ইসরায়েলি নেগোশিয়েটিং টিম কাতারের মধ্যস্থতায় মে মাসে প্রস্তুত করেছিল, হামাসকে দিয়েছিল, এবং কয়েক রাউন্ড আলোচনার পর হামাসও একমত হয়েছিল। কিন্তু নেতানিয়াহু এবং তার রাইট উইং এক্সট্রিমিস্ট মিনিস্টাররা (বেন-গভির গং) রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ডিলটা ভেস্তে গিয়েছিল।

সেই একই নেতানিয়াহু সেই একই ডিলে এবার কেন রাজি হচ্ছে? কারণ গত এক বছর ধরে বাইডেন তার উপর যথেষ্ট চাপ প্রয়োগ করেনি। এবার ট্রাম্প সেই চাপ প্রয়োগ করছে। নির্বাচিত হওয়ার পরপরই ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে জানিয়ে দিয়েছিল - যা করার এই কয় মাসের মধ্যে করো, আমি ক্ষমতা গ্রহণের পর এই যুদ্ধের আর কন্টিনিউয়েশন চাই না।

এটুকু পড়েই ট্রাম্পকে হিরো ভাবার কোনো কারণ নাই। গত টার্মে ট্রাম্প যেভাবে সকল পক্ষের মতামত অগ্রাহ্য করে, পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্টদের ধারাবাহিকতা ভঙ্গ করে একপাক্ষিকভাবে রাজধানী জেরুজালেমে নিয়ে গিয়েছিল, ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি প্রকাশ করেছিল, এবং আব্রাহাম অ্যাকর্ডস বাস্তবায়ন করেছিল, ৭ অক্টোবরের বাস্তবায়নের পেছনে সেগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। আমার আপকামিং বইয়ের পুরো একটা অধ্যায় জুড়ে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলাপ করেছি।

তবে তা সত্ত্বেও এবারের বাস্তবতা হচ্ছে, এবার ট্রাম্প টিমের একজনের সাথে বৈঠকের পরেই নেতানিয়াহু ডিলের ব্যাপারে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে। এবং অলরেডি ইসরায়েলি মিডিয়াতে রিপোর্ট আসছে, ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ডিলের ব্যাপারে রাজি করিয়েছে এই শর্তে যে প্রাথমিক মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই ইসরায়েল আবার সীজফায়ার ভঙ্গ করতে পারবে।

সীজফায়ারের বিরোধিতা এখনও আছে। বেন-গভির ঘোষণা দিয়েছে, ডিল হলে সে পদত্যাগ করবে। স্মট্রিচকেও সে এই ব্যাপারে আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু আপাতত মনে হচ্ছে নেতানিয়াহু তাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও ডিলে রাজি হতে পারে।

ডিল অনুযায়ী প্রাথমিক পর্যায়ে হামাস ৩৩ জন জিম্মিকে (জীবিত এবং মৃত) মুক্তি দিবে, বিপরীতে ইসরায়েল কয়েকশত (সংখ্যা এখনও জানা যায়নি, তবে এদের মধ্যে হাই প্রোফাইলও থাকবো) বন্দীকে মুক্তি দিবে। ইসরায়েলি বাহিনী গাযার ভেতর থেকে পুরোপুরি উইথড্র করে বাফার জোনে (এবং সম্ভবত ফিলাডেলফি করিডোরো) ফেরত যাবে, গাযাবাসীকে নর্থ গাযায় তাদের বাড়িঘরে ফিরতে দিবে। বাফার জোন থেকেও তারা উইথড্র করবে কি না, বা কবে করবে, এগুলো এখনও ফাইনাল হয়নি।

যদিও ৪৬ হাজার মানুষের মৃত্যুর পর কোনো ধরনের ডিলকেই বিজয় বলা সম্ভব না, কিন্তু সোয়া এক বছরের যুদ্ধের পর এরকম একটা ডিলের শর্ত মূলত ইসরায়েলেরই পরাজয়। আপাতত ডিলের ঘোষণা এবং ডিটেইলসের জন্য অপেক্ষা করাই ভালো, কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীে বক্তব্য অনুযায়ী যেটা খুব শীঘ্রই আসতে পারে।

Toha

13 Jan, 19:23


শিবিরের রগকাটা বিষয়ে পিনাকী ভট্টাচার্যের নিজের ওয়েব সাইটে ২০১৮ সালে লেখা পোস্ট। ভেরি ইন্টারেস্টিং।

আজকের পোস্টে একজনের কমেন্টের রিপ্লাইয়েও উনি বলেছেন, জামিলকে শিবির হত্যা করেছে। কিন্তু কোপানো বা রগ কাটার ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করেননি।

আপনি যদি শিবির হয়ে থাকেন, এবং এই কোপানোর সাথে জড়িত বা অজড়িত থাকেন, তাহলে তাসনিম খলিল বা পিনাকী ভট্টাচার্যের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

Toha

13 Jan, 10:39


ছোটকালে আমার ধারণা ছিল, শিবিরের আন্ডারগ্রাউন্ড ল্যাবরেটরি আছে। তারা মানুষজনকে ধরে সেসব ল্যাবে নিয়ে যায়, এরপর আল্লাহু আকবার বলে রগ কেটে ছেড়ে দেয়। অনেস্ট কনফেশন।

মাঝখানে কয়েক বছর ঐ বিশ্বাসে চিড় ধরছিল। বুঝতে পারছিলাম, রগ কাটা বলতে মূলত মারামারির সময় হাতে-পায়ে কোপ দেওয়াকেই বোঝায়। মানে পা কাটলে তো রগও কাটা পড়ে!

কিন্তু ইদানীং আবার যেভাবে রগ কাটার টপিকটা আলোচিত হচ্ছে, তার উপর শিবির যেভাবে সায়েন্স ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করছে, সেই ফেস্টিভ্যালে আবার যেভাবে স্মার্ট হুইল চেয়ারের এক্সিবিশন করছে, ইয়ে মানে, তাতে আন্ডারগ্রাউন্ড সিক্রেট সায়েন্স ল্যাব থাকার সম্ভাবনাটা উড়িয়ে দিতে পারছি না 😎

আপনি যদি শিবিরের আন্ডারগ্রাউন্ড সিক্রেট ল্যাবের অপারেশন ভেইঙ্কাটের সদস্য হয়ে থাকেন, তাহলে ফেক আইডি থেকে নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে এবং স্পাই স্টোরিজ এর ভবিষ্যত কোনো ইস্যুতে এই কাহিনী ইনক্লুড করতে আগ্রহী।

Toha

12 Jan, 09:55


এই হচ্ছে সভ্যতা। এই হচ্ছে সভ্য রাষ্ট্রের সভ্য নাগরিকের নমুনা।

জার্মানির গোয়েন্দারা একাধিক প্রো-রেপ টেলিগ্রাম গ্রুপের সন্ধান পেয়েছে, যার মধ্যে একটাতে ৭০ হাজার পর্যন্ত সদস্য ছিল।

এই গ্রুপগুলোতে পুরুষরা তাদের ধর্ষণের কাহিনী বর্ণনা করত, ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করত, একে অন্যকে ধর্ষণের টিপস দিত, ধর্ষণ করার জন্য চেতনানাশক ওষুধ কোথায় পাওয়া যাবে, সেই ঠিকানাও শেয়ার করত।

এদের ধর্ষণের শিকার ছিল এদের স্ত্রী, বোন, এমনকি মাও। ডোমিনিক পেলিকট নামে ফ্রান্সের এক লোকের কথা রিপোর্টে এসেছে, যে তার স্ত্রীকে অচেতন করে নিজেও ধর্ষণ করত, অন্যদেরকে দিয়েও ধর্ষণ করাতো। কয়েক বছর ধরে সে তার স্ত্রীকে মোট ৫০ জনকে দিয়ে ধর্ষণ করিয়েছে।

কিন্তু ইউরোপীয়রা এতই সভ্য, তাদের আইন-কানুন এতই মানবিক যে এই অপরাধের জন্য মৃ**ণ্ড তো দূরের কথা, তার যাবজ্জীবনও হয়নি। আদালতের রায়ে তার ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।

এই সভ্যরাই আবার পুরা দুনিয়াকে সভ্যতার ছবক দেয়।

(অ্যাংগ্রি রিয়েক্ট না দিতে অনুরোধ করা হলো)

Toha

02 Jan, 06:15


হামাসের আল-আকসা ফ্লাড অপারেশনের অন্যতম একটা লক্ষ্য ছিল ফিলিস্তিন সঙ্কট সমাধান করা ছাড়াই মধ্যপ্রাচ্য যে "শান্তিময়" হয়ে উঠেছিল, সেই মিথ্যা শান্তির মুখোশ উন্মোচন করে দেওয়া। মধ্যপ্রাচ্যকে যুদ্ধে টেনে আনা, এবং বোঝানো, ফিলিস্তিনিদেরকে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ রেখে কোনো শান্তি স্থায়ী হবে না।

হামাসের এই লক্ষ্য পরিষ্কার বোঝা যায় মোহাম্মদ দেইফের বক্তব্য থেকে। দেইফ শুধু গাযাবাসীকে না, পশ্চিম তীরবাসীকেও যা কিছু আছে, সব নিয়ে শত্রুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছিল। অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্সকে তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিল।

কিন্তু জোলানি এখন বলছে, তারা যে এই মুহূর্তে সিরিয়াতে অপারেশন চালিয়েছে, এর কারণ ছিল, মধ্যপ্রাচ্য একটা বড় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে যাচ্ছিল।

তাদের কাছে তথ্য ছিল, ইসরায়েল সিরিয়া আক্রমণ করতে যাচ্ছে। সেটা করলে ইরান এই যুদ্ধে সিরিয়ার পক্ষে, ইসরায়েলের বিপক্ষে জড়িয়ে পড়ত, ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দিলে তুরস্কও ইরানের পক্ষে যোগ দিতে বাধ্য হতো, ফলে রাশিয়া-আমেরিকাও জড়িয়ে পড়ত, তেহরানে আক্রমণ হতো, বিপরীতে অ্যাক্সিসের বিভিন্ন ঘাঁটি থেকে গালফে আক্রমণ হতো ...

তার বক্তব্য অনুযায়ী, তাদের এই অপারেশন মধ্যপ্রাচ্যকে বড় ধরনের যুদ্ধ থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। "আগামী ৫০ বছরের জন্য গালফের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।"

সিরিয়ানদের মুক্তির জন্য, বাশারের পতন ঘটানোর জন্য তাদের বিদ্রোহ সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত। কিন্তু এই যে ধরেন, ইয়াহইয়া সিনওয়ারের মতোই আপনারা যারা চেয়েছিলেন ইরান এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক, সেই সাথে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোও জড়িয়ে পড়ুুক, এবং এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের পতন ঘটুক, বিপরীতে জোলানি যে তার নিজের দাবি অনুযায়ীই সেই সম্ভাবনা ধ্বংস করে দিয়েছে, এটাকে আপনারা কীভাবে দেখছেন?

Toha

01 Jan, 18:58


ইস্তাম্বুল। ১ জানুয়ারি, ২০২৫।

Toha

01 Jan, 14:14


সিরিয়ানদের ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন।

Toha

01 Jan, 09:09


২০২৪ সালটা মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতাকে এমনভাবে পাল্টে দিয়েছে, যেটা আমরা হয়তো এখন বুঝতে পারছি না। আরও পাঁচ-দশ-পনের বছর পরে বুঝতে পারব।

শুরুটা হয়েছিল ২০২৩ সালেই। কিন্তু সেই যুদ্ধ যদি ২০২৪ সালের শুরুতে এসে থেমে যেত, তাহলেও পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত। কিন্তু সেটা হয়নি। যুদ্ধ কন্টিনিউ করেছে। এবং পশ্চিমা বিশ্ব তো বটেই, আরব এবং মুসলিম বিশ্বের নীরবতার মধ্য দিয়েই কন্টিনিউ করেছে।

প্রতিরোধ করে গেছে শুধুমাত্র দুইটা শক্তি - হেজবুল্লাহ এবং হুথিরা। অবশ্যই তাদের পৃষ্ঠপোষক ইরানের সমর্থনে। এবং বছরের শেষের দিকে এসে তারা তাদের সেই প্রতিরোধের মূল্যও পেয়েছে।

হেজবুল্লাহ পরাজিত বা ধ্বংস হয়েছে বলা যাবে না, তবে নিশ্চিতভাবেই তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের প্রধান নেতা তো বটেই, টপ কমান্ডারদের অনেকেই নিহত হয়েছে।

তারা ইসরায়েলকে উইথড্র করতে বাধ্য না করেই এমন সব শর্তে সীজফায়ারে রাজি হয়েছে, যেই শর্তগুলো পরাজয়েরই লক্ষণ। এবং সেই সীজফায়ার কার্যকর হতে না হতেই তাদের প্রধান সাপ্লাই রুট ধ্বংস হয়ে গেছে। বাশারের পতন ঘটেছে।

২০২৪ ছিল মূলথ অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্সের ধ্বংসের বছর। এ কথা সত্য যে সিরিয়া দীর্ঘদিন ধরেই অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্সের সদস্য হিসেবে কোনো ভূমিকা রাখছিল না। পুরো গাযা যুদ্ধে সিরিয়ান বাহিনী একটা গুলিও ছোঁড়েনি। বরং আসাদ সরকার আমেরিকার সাথে, আরব আমিরাতের সাথে আর্থিক সহায়তার বিনিময়ে ইরানের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার ব্যাপারে গোপনে আলাপ করছিল।

বাট তারপরেও বাশারের পতন অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্সের জন্য সিরিয়াস ব্লো। মোরালি এবং স্ট্র্যাটেজিক্যালি। হেজবুল্লাহ'র কাছে অস্ত্র সাপ্লাই দেওয়া এখন ইরানের জন্য অনেক কঠিন হয়ে যাবে। তাছাড়া সিরিয়াতে কট্টর ইরানবিদ্বেষী, শিয়াবিদ্বেষীরা ক্ষমতায় আসায়, এবং তাদের সাথে গালফের সুন্নি আরব রাষ্ট্রগুলোর সুসম্পর্ক গড়ে ওঠায়ও ইরান প্রচণ্ড ব্যাকফুটে থাকবে।

এক্ষেত্রে আহমেদ আল-শারার সাম্প্রতিক বক্তব্য-বিবৃতি লক্ষ্যণীয়। সে সবার সাথে সহাবস্থান, সুসম্পর্ক নিয়ে কথা বলছে। একমাত্র ইরানের বিরুদ্ধে তার অবস্থান পুরোপুরি হার্ডলাইনে। বিপরীতে সে পশ্চিমের সাথে তো বটেই, গালফের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।

সে প্রথম ফুল লেংথ আরবি সাক্ষাত্‍কার আল-জাজিরার সাথে দেয়নি; দিয়েছে সৌদি চ্যানেল আল-আরাবিয়ার সাথে। জোলানির পররাষ্ট্রমন্ত্রির সৌদি আরব সফরে যাওয়ার ব্যাপারেও কথা শোনা যাচ্ছে।

সব মিলিয়ে ইরাক যুদ্ধের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে যে শিয়া ক্রিসেন্টের ডমিন্যান্স ছিল, ২০২৪ এসে সেই ভারসাম্য অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। দীর্ঘ ২১ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইরান ব্যাকফুটে চলে গেছে। সুন্নি রাষ্ট্রগুলো পুনরায় শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

এর প্রভাব ভবিষ্যতে ঠিক কীভাবে পড়বে, এখনও বলা মুশকিল। এই সুন্নি গালফ স্টেটগুলোর মধ্যে এবং সেই সাথে তুরস্কের মধ্যে ইসলামপন্থা এবং গণতন্ত্র নিয়ে বিপরীতমুখী অবস্থান আছে। ফলে এদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ অনিবার্য। কিন্তু বিপরীতে ইরানের রেজিস্ট্যান্সের অ্যাক্সিসের দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে এই সংঘর্ষের প্রকৃতি নিশ্চিতভাবেই আর আগের মতো থাকবে না।

আপাতত ‌অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্সের দুর্বল হয়ে পড়াকে ক্ষতিকর মনে হলেও দীর্ঘমেয়াদে সেটা লাভজনকও হয়ে উঠতে পারে। সিরিয়ার বিদ্রোহীদের পক্ষে তুরস্কের স্ট্রং ব্যাকিং থাকায় সৌদি-আমিরাত এককভাবে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে পারবে না।

অন্যদিকে ইরানভীতি কমে গেলে সৌদি-আমিরাতের আমেরিকা-ইসরায়েলের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতাও কমে আসতে পারে। একইসাথে বাশারের পতন মিসর এবং জর্ডানসহ অন্যান্য আরব রাষ্ট্রেও বিদ্রোহকে অনুপ্রাণিত করতে পারে।

২০২৪ সালে বাশারের যে পতন ঘটতে পারে, সেটা কেউ অনুমান করতে পারেনি। অথচ সেটাই ঘটেছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভবিষ্যতে কী ঘটবে সেটা অনুমান করা অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু ২০২৪ সাল যে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিকে পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে, সেটা পরিষ্কার। ২০২৪ সালের আগের মধ্যপ্রাচ্য এবং পরের মধ্যপ্রাচ্য নিশ্চিতভাবেই এক হবে না।

Toha

31 Dec, 19:07


একটা মুভি। আরেকটা বাস্তব।

Toha

31 Dec, 18:48


২০২৪ সালটা মোটামুটি সবদিক থেকেই ভালো গেল, আলহামদুলিল্লাহ।

বছরের মাঝামাঝি লম্বা একটা ছুটি কাটালাম ফ্যামিলির সাথে।

ছুটি শেষ হতে না হতেই দেশে আন্দোলন শুরু হয়ে গেল। বিদেশে বসেই উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, আর আশা-নিরাশায় উত্তাল একটা সময় কাটলো।

যেটা আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেখতে পাবো বলে ভাবিনি, সেই হাসিনার পতন দেখার সৌভাগ্য হলো।

দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল, এবার সেটা সফল না হলেও পরেরবার যে অন্তত আগের দুইবারের মতো লুকিয়ে যেতে হবে না, সেটা নিশ্চিত হলো।

জুলাই-আগস্টের উত্তাল সময়ের পরেও শত ব্যস্ততার মধ্যেও আকসা ফ্লাড নিয়ে বইয়ের কাজ শেষ হলো।

আগামী বছরটাও যেন ভালো যায়, সেই দোয়াই করি। নিজের জন্য, দেশের জন্যও। ২০০০ শহিদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া দ্বিতীয় বাংলাদেশ যেন পথ না হারায়।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে, বিভিন্ন মতাদর্শের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকবেই। দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজিও থাকবে। কিন্তু যেই ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছিল, গুমখুনের রাজত্ব জেঁকে বসেছিল, সেরকম কিছু যেন আর ফেরত না আসে।

Toha

31 Dec, 09:08


নিউজ: নেতানিয়াহু ক্যানসারে আক্রান্ত।
বিজয় প্রসাদ: নেতানিয়াহুর ক্যানসার হওয়া সম্ভব না। কারণ সে নিজেই ক্যানসার।

Toha

30 Dec, 19:20


https://mhtoha.com/rise-of-assad-dynasty/

Toha

30 Dec, 17:45


বাশার আল-আসাদও বক্তব্য দিছে, তার রাশিয়ায় পালানোর ইচ্ছা ছিল না। সে রাশিয়ান ঘাঁটিতে গেছিল, রাশিয়ানরা নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে সাথে নিয়ে পালাইছে।

Toha

30 Dec, 07:15


//প্রতিটি গল্পেই একাধিক মুহূর্ত আছে যখন চোখে পানি ধরে রাখা সম্ভব হয় না। জুলাই বিপ্লবের পরোক্ষ অভিজ্ঞতা আর আসাদের পতনের দিনই বই পড়া শুরুর জন্য হয়ত প্রতিটি ঘটনার মধ্যেই অনেক মিল পাচ্ছিলাম। নি:সন্দেহে ২০২৪ সালে পড়া সেরা বই। নতুন সিরিয়ার নতুন গল্পগুলো যেন আনন্দের হয়, সিরিয়ার সেই গল্পগুলোর অপেক্ষায় থাকব!//

Toha

29 Dec, 20:50


ইলিয়াসের এর আগের ভিডিওতে ফ্যাক্ট প্রায় কিছুই ছিল না। ম্যাক্সিমামই ছিল স্পেকুলেশন এবং থিওরি। কিন্তু এবারের ভিডিওতে সে সত্যি সত্যিই ফ্যাক্ট, বা সরাসরি সাক্ষ্য/স্বীকারোক্তি হাজির করছে।

প্রথম আলোর ইতিহাসে এটা সম্ভবত তাদের ক্রেডিবিলিটির বিরুদ্ধে সবচেয়ে সিরিয়াস অ্যালিগেশন। তাদের সাংবাদিক আসলেই জজ মিয়াকে ২ লাখ দিছে কি না, কেন দিছে, সেই টাকা ঐ সাংবাদিক কোথায় পাইছে, এবং ঐ টাকার কারণে জজ মিয়ার ন্যারেটিভের দায় প্রথম আলোর উপর কতটুকু বর্তায় - এইসব ব্যাপার এড়িয়ে না গিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য প্রথম আলোর উপর চাপ সৃষ্টি করা উচিত।

Toha

25 Dec, 12:43


এইচটিএস-এর পূর্ণরূপ হাইআত তাহরির শাম। কিন্তু এই লোক বলছে হাইআত "তাসলিব" শাম। তাসলিব শব্দটা সালিব, তথা খ্রিস্টানদের ক্রুশ থেকে এসেছে।

এই ট্যাগের কারণ কী? কারণ হচ্ছে, বড়দিন উপলক্ষ্যে সিরিয়ার কোন এক এলাকায় এক উগ্রপন্থী খ্রিস্টানদের ক্রিসমাস ট্রি পুড়িয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এইচটিএস-এর কর্মকর্তা সেখানে গেছে। সে খ্রিস্টানদেরকে আশ্বস্ত করেছে, অপরাধীর কঠোর শাস্তির নিশ্চয়তা দিয়েছে, এবং বক্তব্যের শেষে সে একটা ক্রিসমাস ট্রি উঁচু করে ধরেছে।

এখন এইচটিএস এমনিতেই সকল সিরিয়ানদের জন্য বড়দিনের সরকারি ছুটি বাতিল না করায় অনেকে তাদের উপর অসন্তুষ্ট ছিল। তার উপর ক্রিসমাস ট্রি উঁচু করে ধরায় যে আরও ক্ষেপবে, সেটা তো বলাই বাহুল্য।

যেটা গতকালও বলেছি, এইচটিএস অস্বাভাবিক রকমের প্র্যাগমাটিজম দেখাচ্ছে। কিন্তু সেটা এত দ্রুত এবং বেশি মাত্রার হয়ে যাচ্ছে যে তাতে পশ্চিমা স্যাংশন উঠাতে পারলেও ততদিনে নিজেদের প্রাক্তন সঙ্গীদেরকে হাতছাড়া করার ঝুঁকি রয়ে যাবে।

Toha

25 Dec, 06:45


সিরিয়ার বিদ্রোহীরা নিজেদেরকে বিলুপ্ত করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে যেতে সম্মত হয়েছে। এত দ্রুত এরকম একটা ডিসিশন বেশ প্রশংসনীয়। কিন্তু এটা সফল হবে কি না, সেটা নির্ভর করবে এর ডিটেইলসের উপর। এর আগে লেবানন এবং ইরাকে তো বটেই, লিবিয়াতেও এটা সফল হয়নি।

এসব দেশে, বিশেষ করে লিবিয়াতে যেটা হয়েছে, বিদ্রোহীদেরকে প্রতিরক্ষা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেটা প্রফেশনাল আর্মির স্ট্রাকচারে না; বরং বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর স্ট্রাকচার অনুযায়ী।

অর্থাত্‍ একেকটা বিদ্রোহী গ্রুপকে একেকটা কাতিবা বা ব্রিগেড/ব্যাটালিয়ন হিসেবে রিক্রুট করা হয়েছে। জাস্ট তাদেরকে আনুষ্ঠানিক ইনিফর্ম দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্রীয় অর্থে কেনা অস্ত্রশস্ত্র এবং ইকুয়েপমেন্ট/ভেহিকেল দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্রীয় বেতন কাঠামোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে; কিন্তু বাস্তবে তাদের আনুগত্য আগের মতোই রাষ্ট্রের চেয়ে বরং যে আদর্শকে কেন্দ্র করে তাদের গ্রুপটা তৈরি হয়েছিল, সেটার প্রতিই রয়ে গেছে।

ফলে লিবিয়াতে আমরা যেটা দেখেছি, ইস্টার্ন লিবিয়ার কথা সম্পূর্ণ বাদ দিলেও, শুধুমাত্র ত্রিপোলির বিদ্রোহীদেরই একেকটা গ্রুপ, যারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিরক্ষা বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ, তাদের মধ্যেই দুই দিন পর পর যুদ্ধ লেগে যায়।

ত্রিপোলিতে যে গত এত বছরে এতগুলো যুদ্ধ হয়েছে, মাল্টিপল সরকার গঠিত হয়েছে, সেইসব সরকারকে বিভিন্ন বিপরীতপন্থী গ্রুপ সাপোর্ট দিয়েছে, তাদের কেউই রাষ্ট্রীয় কাঠামোর বাইরে কেউ না। সবাই সরকারের কোনো না কোনো মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ, এবং রাষ্ট্রীয় বেতনভোগী।

এসব সশস্ত্র বাহিনীগুলোর হাতে এত বেশি অস্ত্রশস্ত্র, এবং তাদের অনেকের পেছনে আবার সেই এলাকার ট্রাইবাল সাপোর্টও এত স্ট্রং, পুরো সিস্টেমকে বিলুপ্ত না করে কোনো একটা বা দুইটা বাহিনীকে বিলুপ্ত করা বা বেতন বন্ধ করে দেওয়া প্রায় অসম্ভব।

সিরিয়া এই সমস্যা ট্যাকল করতে পারবে কিনা, কীভাবে পারবে, তারাও কি বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর আদর্শ এবং স্ট্রাকচার বজায় রেখেই তাদেরকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনবে, নাকি সব ভেঙেচুরে প্রফেশনাল আর্মি গঠন করতে পারবে, সেটা করতে চাইলে আদর্শিক গ্রুপগুলোর রিঅ্যাকশন কী হবে, এই সব কিছুই অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার হবে।

Toha

21 Dec, 18:26


সিরিয়ার নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্পর্কে তার পিএইচডি শিক্ষক

Toha

19 Dec, 06:00


বিবিসি: তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন যে আপনারা কোনো ধরনের খিলাফত প্রতিষ্ঠা করবেন না, বা সিরিয়াকে আফগানিস্তানের মতো রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করবেন না? কারণ আপনি জানেন অনেকে হয়তো ভাবতে পারে যে আপনারা হয়তো ছাত্রদের মতোই আচরণ করবেন?

আহমেদ আল-শারা: সিরিয়ার সাথে ছাত্রদের প্রচুর পার্থক্য আছে। আমাদের শাসনপদ্ধতি ভিন্ন। আফগানিস্তান হচ্ছে ট্রাইবাল কমিউনিটি। সিরিয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন। দুই দেশের মানুষ একভাবে চিন্তা করে না। সিরিয়ার সরকার এবং শাসনপদ্ধতি নির্ধারিত হবে সিরিয়ার ইতিহাস এবং সংস্কৃতি অনুযায়ী।

Toha

18 Dec, 23:32


যুদ্ধের সময় ঐ রিলেটেড নিউজে ফেসবুকে এনগেজমেন্ট প্রচুর বেড়ে যায়। কিন্তু বিবিসি একটা গবেষণায় দেখিয়েছে, ৭ অক্টোবরের পর ফেসবুক ফিলিস্তিনি নিউজ সাইটগুলোর রিচ এত কমিয়ে দিয়েছে যে, এনগেজমেন্ট বাড়ার পরিবর্তে উল্টো ৬০% কমে গেছে।

Toha

18 Dec, 17:56


বাশারের পতন থেকে আরেকটা শিক্ষা হলো, আপনি যদি বিদেশী প্রভুর উপর নির্ভরশীল হন, তাহলে আজীবন আপনাকে সেই প্রভুকেই চেটে যেতে হবে। প্রভুকে অসন্তুষ্ট করতে গেলেই আপনি বিপদে পড়বেন।

বাশার সেটা মনে রাখে নাই। সে টিকে ছিল ইরান আর রাশিয়ার দয়ায়। কিন্তু সেটা সে ভুলে গিয়েছিল। বাপের মতো সেও ম্যাক্সিমালিস্ট অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করছিল। ইরান এবং রাশিয়ার রিকোয়েস্ট বারবার রিকোয়েস্ট সত্ত্বেও সে তুরস্কের সাথে ছাড় দিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি হয় নাই। উল্টা আরব আমিরাত আর সৌদি আরবের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছিল, যারা হচ্ছে ইরানের শত্রু।

সে ভুলে গিয়েছিল, সবার সাথে সম্পর্ক রেখে, সবার সাথে দর কষাকষি করে নিজের জন্য সর্বোচ্চটা আদায় করা স্বাধীন এবং শক্তিশালী নেতাদের ক্ষেত্রেই মানায়। প্রভুর দয়ায় টিকে থাকা অজনপ্রিয় শাসকের ক্ষেত্রে মানায় না।

কারণ ঐ গেম ব্যাকফায়ার করলে প্রভু যদি এগিয়ে না আসে, তাহলেই তার খেল খতম হয়ে যাবে। এবং সেটাই হয়েছে।

Toha

18 Dec, 05:37


আমিন!

Toha

17 Dec, 19:21


অ্যাকর্ডিং টু রিপোর্টস, গত কয়েকদিনে:

১। রাশিয়া সিরিয়া থেকে তাদের ন্যাভাল অ্যাসেটস সরিয়ে লিবিয়ার দিকে মুভ করছে। পুতিন হাফতারের উপর চাপ দিচ্ছে বেনগাজিতে রাশিয়াকে একটা পোর্ট দেওয়ার জন্য

২। বিপরীতে লিবিয়াতে অবস্থিত প্রায় ১০০০ সিরিয়ান মার্সেনারিকে তুরস্ক ফিরিয়ে নিয়ে গেছে কুর্দি এলাকায় অভিযানের প্রস্তুতি হিসেবে।

Toha

17 Dec, 15:43


বাশারের পতনের পর থেকে যে প্রশ্নটা অনেকের মাথায়ই আসছে, সেটা হচ্ছে সিরিয়ার রাজনীতির ভবিষ্যত কী হবে? সেখানে কি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে, নাকি শরিয়াতন্ত্র টাইপের কিছু একটা প্রতিষ্ঠিত হবে?

এ কথা সত্য যে নিজেদের জীবন বাজি রেখে যারা যুদ্ধ জয় করে, ভবিষ্যত নির্মাণে তাদের ইচ্ছারই সবচেয়ে বেশি প্রতিফলন ঘটা স্বাভাবিক। সে হিসেবে আফগানিস্তানের মতো সিরিয়াতেও যেহেতু প্রধানত ইসলামপন্থী যোদ্ধাদের বিজয় হয়েছে, তাই সেখানেও গণতন্ত্র না এসে ইসলামিক কোনো এক ধরনের শাসনব্যবস্থা আসার পক্ষেই জোরালো অবস্থান দেখা যেতে পারে।

কিন্তু একইসাথে এটাও সত্য, সিরিয়া এবং আফগানিস্তান এক না। সিরিয়ার আন্দোলনটা শুরুই হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য। পরবর্তীতে সেখানে ইসলামপন্থী যোদ্ধারা নেতৃত্ব দিয়েছে ঠিকই; কিন্তু ২০১১ থেকে অন্তত ২০১২ সালের শেষ দিক পর্যন্ত সেখানে বাশারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল গণতন্ত্রপন্থীরা।

তারা এমনকি লিবারেটেড এরিয়াগুলোতে "তানসিক্বিয়া" তথা লোকাল কোর্ডিশন কমিটি (LCC) গঠন করে অনেকটা গণতান্ত্রিকভাবেই এলাকাগুলো পরিচালনা করেছিল। অনেক এলাকায় তারা সরাসরি নির্বাচনেরও আয়োজন করেছিল।

ইনফ্যাক্ট, ২০১১ সালেরও শত বছর আগে, ইউরোপেরও অনেক দেশে যখন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি, তখনই সিরিয়ান আরবরা উদ্যোগ নিয়েছিল সময়ের তুলনায় অনেক আধুনিক একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার। সেসময় সিরিয়ার নির্বাচিত জনপ্রতিধিরা এমন একটি সংবিধান রচনা করেছিলেন, শত বছর পরেও বিশ্বের অনেক দেশের জন্য যা ঈর্ষণীয় হয়ে আছে।

সেই সংবিধানে বিলাদ আল-শাম তথা বৃহত্তর সিরিয়াকে ঘোষণা করা হয়েছিল একটি গণপ্রতিনিধিত্বমূলক রাজতন্ত্র হিসেবে, যেখানে রাজার ক্ষমতা ছিল খুবই সীমিত এবং অধিকাংশ ক্ষমতা ছিল নির্বাচিত সংসদের হাতে ন্যস্ত।

কামাল আতাতুর্কের তুর্কি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠারও তিন বছর আগে রচিত সিরিয়ার এই সংবিধান ছিল একটি ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান। এই সংবিধানে কোনো রাষ্ট্রধর্ম ছিল না। বরং সকল ধর্মের নাগরিকদের জন্য সেখানে ছিল সমানাধিকার।

ধর্ম বিষয়ে সেখানে কেবল বলা ছিল, রাজার ধর্ম হতে হবে ইসলাম। অথচ যে সংসদ সদস্যরা এই সংবিধান পাশ করেছিলেন, তাদের অধিকাংশ সদস্যই ছিলেন অটোমান আমলের রক্ষণশীল নেতা। এবং সেসময় সংসদের প্রেসিডেন্ট, যার উদ্যোগেই মূলত এই সংবিধান আলোর মুখ দেখেছিল, তিনি ছিলেন সে সময়ের আরব বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ইসলামিক স্কলার রাশিদ রিদা।

এমনকি খোদ আমেরিকায়ও যখন নারীরা ভোটাধিকার পায়নি, তখন এই সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত করার সময় সিরিয়ান আরব কংগ্রেসের সদস্যরা সিরিয়ান নারীদেরকে ভোটাধিকার দেওয়ার সম্ভাবনা যাচাই করেছিলেন।

শেষপর্যন্ত সমাজের প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় ঐ মূহুর্তে নারীদেরকে ভোটাধিকার না দিলেও তারা সংবিধানের ঐ ধারার জন্য এমনভাবে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ শব্দ নির্বাচিত করেছিলেন, যেন যেকোনো মুহূর্তে নারীদেরকে ভোটাধিকার দিতে কোনো সমস্যা না হয়।

সিরিয়ার এই সংবিধান যদি কার্যকর হতে পারত, তাহলে তার ধারাবাহিকতায় আজ হয়তো আমরা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি আরব বিশ্ব দেখতে পেতাম, যে বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রই হতো গণতান্ত্রিক। কিন্তু সেটি যে হয়নি, তার কারণ আর কিছুই না; ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক স্বার্থ এবং পরবর্তীতে জোরপূর্বক শাসন করা একের পর এক স্বৈরতন্ত্র।

মূল বিষয়টা হচ্ছে, আফগানিস্তানের ইতিহাস এবং সিরিয়ার ইতিহাস এক না। এবং সে কারণেই সিরিয়ার ভবিষ্যত নির্মাণে আগামী দিনগুলোতে বিজয়ী ইসলামপন্থী যোদ্ধাদের ইচ্ছার প্রতিফলন যেমন থাকবে, তেমনি এই ইতিহাসের ধারাবাহিকতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বিজয়ী যোদ্ধাদের চাওয়া-পাওয়া বাদ দিয়ে যদি পশ্চিমা ফর্মূলা অনুসরণ করতে বাধ্য করা হয়, তাহলে যেমন শুরুতেই সহিংসতা ফিরে আসবে, তেমনই এই দীর্ঘকালীন ইতিহাসকে অগ্রাহ্য করে যদি নতুন কোনো একদলীয় বা এক-গ্রুপীয় শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে দীর্ঘমেয়াদে সেটাও সিরিয়ার জন্য ক্ষতিকর হবে।

Toha

17 Dec, 08:36


বাশারের পতনের পর থেকে লিবিয়ানদের কথাবার্তায় কিছুটা উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাশিয়া তেমন কোনো প্রচেষ্টা ছাড়াই মধ্যপ্রাচ্যে তাদের প্রধান ঘাঁটির পতন ঘটতে দিয়েছে - এটা অনেকের কাছেই বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না।

লিবিয়ানদের সন্দেহ, পর্দার আড়ালে হয়তো রাশিয়া, তুরস্ক এবং আমেরিকার মধ্যে কোনো ধরনের ডিল হয়েছে। এবং এক্ষেত্রে সম্ভাব্য ডিল একটাই হতে পারে - রাশিয়া সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিবে, বিনিময়ে লিবিয়াতে তারা শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলবে।

আসলেই যদি এটা হয়, তাহলে গত চার-বছর ধরে লিবিয়াতে যে স্ট্যাটাস কো বজায় ছিল, সেটা হয়তো আর বেশিদিন থাকবে না।

Toha

13 Dec, 14:20


বেন আলি পালাইছিল। মোবারক পালাইছিল। সালেহ পালাইতে গিয়ে মারা পড়ছিল।

এই বছর হাসিনা পালাইছে। বাশারও পালাইছে।

একমাত্র স্বৈরাচার, যে পালায় নাই, সে হচ্ছে গাদ্দাফি।

ত্রিপোলির পতনের আগেরদিন পর্যন্ত সে ত্রিপোলিতে ছিল। এরপর ফিরে গেছে নিজের জন্মস্থান সিরতে।

চারপাশ থেকে বিদ্রেহীরা ঘিরে রাখছিল। উপর থেকে ন্যাটো রাতদিন বম্বিং করছিল। এরমধ্যেও মাত্র ৩০০ স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধা নিয়ে শেষ পর্যন্ত সে লড়াই করে গেছে। এরপর ন্যাটোর বিমান হামলায় আহত হইছে। বিদ্রোহীদের হাতে অস্ত্রসহ ধরা পড়ছে। শেষে গুলি খেয়ে মারা গেছে।

গাদ্দাফিও স্বৈরাচার ছিল। তার হাতেও প্রচুর মানুষের রক্তের দাগ আছে। কিন্তু তারপরেও সব স্বৈরাচার যে এক না, গাদ্দাফি সেটা প্রমাণ করে গেছে।

বিদ্রোহের শুরুতেই গুজব উঠছিল, গাদ্দাফি ভেনেজুয়েলায় পালায় গেছে। দুই দিন পর গাদ্দাফি ভাষণ দিয়ে বলছে - আমার দাদা (ইতালির বিরুদ্ধে) লিবিয়ার প্রথম শহিদ (কিছুটা অতিরঞ্জন), তার কবর লিবিয়ার মাটিতে। আর আমি ভেনেজুলায় পালাবো? ওয়াল্লাহে? হাহ!

গাদ্দাফিই সেই স্বৈরাচার, যার মুখে মানায় - গাদ্দাফি পালায় না।

Toha

12 Dec, 16:07


দীর্ঘ অবরোধ শেষে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে আলেপ্পো ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তে শহরের দেয়ালে স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ছেলেটা লিখেছিল:

"যে (মেয়েটি) অবরোধে আমার সঙ্গী (অংশীদার) ছিল, তার প্রতি: ভালোবাসি তোমায়।"

গতকাল আট বছর পর তারা আলেপ্পোতে ফিরে এসেছে।

Toha

11 Dec, 19:08


সিরিয়া নিয়ে সিম্পল কয়েকটা ফ্যাক্ট:

১। ২০১১ সালের আগ পর্যন্ত সিরিয়ান সেনাবাহিনীকে আমেরিকা এবং ইসরায়েল হুমকি মনে করত।

আমেরিকান নিওকনরা যে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, এবং সবশেষে ইরান আক্রমণ করতে চায়, এটা প্রচুর লিকড ডকুমেন্টে এসেছে। মিসর, জর্ডান বা গালফ কান্ট্রিগুলো যে এই লিস্টে ছিল না, তার কারণ এরা আমেরিকার নিয়ন্ত্রণেই ছিল। বাকিরা হুমকি ছিল বলেই আক্রমণের প্রসঙ্গ উঠছিল।

২। আরব বসন্তের সময় শুরুর দিকে আমেরিকা-ব্রিটেন সরাসরি বাশারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করেছে। আন্দোলন যখন শান্তিপূর্ণ, তখন থেকেই সিআইএ এবং এমআইসিক্সের গোয়েন্দারা সক্রিয় হয়েছে, সৌদি আরব লেবানিজ বিজনেসম্যানদেরকে দিয়ে টাকা ঢেলেছে। এরপর সিআইএ তুরস্ক এবং জর্ডানে বিদ্রোহীদেরকে ট্রেনিং দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে। উদ্দেশ্য পরিষ্কার। বাশারকে ক্ষমতাচ্যুত করা, সিরিয়ান সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করা।

৩। গৃহযুদ্ধের মাঝামাঝি গিয়ে, মিসর এবং লিবিয়ার পরিণতি দেখে, আমেরিকা তার ভুল বুঝতে পারে। তারা বাশারকে সরানোর নীতি থেকে সরে এসে যুদ্ধ টিকিয়ে রাখার নীতি গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে আইএসের উত্থান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আইএসকে দমন করতে গিয়ে আমেরিকা বাশারকে নেসেসারি ইভিল হিসেবে মেনে নিতে শুরু করে

৪। আগে সিরিয়ান সেনাবাহিনীকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করলেও গৃহযুদ্ধ স্টেলমেট অবস্থায় পৌঁছার পর, সিরিয়ান বাহিনী দুর্বল হয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েল সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়। তারা এই স্টেলমেট বজায় রাখার পক্ষে কাজ করে। সিরিয়াতে তারা নিয়মিত বম্বিং করে, কিন্তু সবগুলোই ইরানিয়ান বাহিনীর উপর। আসাদের বাহিনীর উপর তাদের বিমান হামলার রেকর্ড নাই বললেই চলে।

৫। সময়ের সাথে সাথে বাশারের সাথে মিডল ইস্টে আমেরিকা এবং ইসরায়েলের প্রধান মিত্র, তথা আমিরাতের সুসম্পর্ক তৈরি হতে থাকে। প্রতিদানে ফিলিস্তিন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর লেবানন, ইরাক, ইয়েমেন, ইরান থেকে ইসরায়েলো অ্যাটাক হলেও সিরিয়ান ফ্রন্ট ছিল সম্পূর্ণ নীরব। বাশার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একটা গুলিও ছোঁড়েনি।

৬। বিপরীতে গৃহযুদ্ধের দীর্ঘ এক যুগে সিরিয়ার বিদ্রোহীরাও কখনোই ইসরায়েলের জন্য থ্রেট হয়ে ওঠেনি। আমেরিকা জোলানির মাথার মূল্য ঘোষণা করলেও জোলানি ইদলিবে প্রকাশ্যে চলাচল করা সত্ত্বেও তাকে মারার চেষ্টা করেনি। নাসরাল্লাহকে যে ইসরায়েল হত্যা করেছে, জোলানিকে যে আমেরিকা করেনি, এটা একটা ইন্ডিকেশন যে আমেরিকা-ইসরায়েল নাসরাল্লাহকে থ্রেট মনে করলেও বাশার বা জোলানি কাউকেই গত একযুগ থ্রেট মনে করেনি।

৭। বিদ্রোহীরা জিতে যাওয়ায় এখন সমীকরণ পাল্টে গেছে। ইসরায়েল যে এখন গণহারে বম্বিং করছে, সিরিয়ার মিলিটারি ক্যাপাবিলিটি ধ্বংস করে দিচ্ছে, এ থেকেই পরিষ্কার, নতুন ক্ষমতায় আসা বিদ্রোহীদেরকে তারা ২০১১ পূর্ব আসাদ বাহিনীর চেয়েও অনেক বেশি থ্রেট মনে করে। বাশার ছিল তাদের পরিচিত শত্রু। কিন্তু এই বিদ্রোহীরা সম্পূর্ণ অপরিচিত। এদের কোন বাহিনী অস্ত্র পেলে কী করবে - তার কোনো নিশ্চয়তা নাই। সেজন্যই সেই সক্ষমতাই ইসরায়েল ধ্বংস করে দিচ্ছে।

উপসংহার: আগামী দুই-চার-পাঁচ বছর সিরিয়া থেকে ইসরায়েলের উপর কোনো ধরনের চাপ আসার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। কিন্তু সিরিয়া যদি স্টেবল হয়, যদি সুশাসন নিশ্চিত করতে পারে, যদি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদেরকে তৈরি করতে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। আগে নিজের দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং দেশকে শক্তিশালী করা জরুরী। এরপর অন্য দেশের দিকে নজর দেওয়ার পালা।

Toha

10 Dec, 15:32


বাশারের পতনে ফিলিস্তিনিদের মধ্যেও মিক্সড প্রতিক্রিয়া আছে। কিন্তু অধিকাংশ ফিলিস্তিনিই খুশি। কেন? নিচের সত্য ঘটনাটা পড়লে কিছুটা আঁচ করতে পারবেন।

এটা হচ্ছে দামেস্কের কাছাকাছি অবস্থিত ইয়ারমুক শরণার্থী শিবিরের ঘটনা, যেখানে ২০১১ সালের আগে ছয় লাখ ফিলিস্তিনি বসবাস করত। কিন্তু বাশারের সেনাবাহিনী কর্তৃক আরোপিত অবরোধ এবং কৃত্রিম দুর্ভিক্ষে কয়েক বছরের মধ্যেই সেটা পরিণত হয় জনমানশূন্য পরিত্যাক্ত ভূমিতে।

===

ইয়ারমুকের বাসা ছেড়ে আসার এক বছর পর, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে আইহামরা প্রথমবারের মতো তাদের অ্যাপার্টমেন্টে ঢোকার সুযোগ পায়। আইহামের অ্যাপার্টমেন্টটা মোটামুটি অক্ষতই ছিল, কিন্তু তার বাবার অ্যাপার্টমেন্টে থাকার মতো অবস্থা ছিল না। দূর থেকেই তারা দেখতে পাচ্ছিল, দেয়ালের গায়ে বিশাল বড় একটা গর্ত।

দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করার পর তারা বুঝতে পারে, শক্তিশালী একটা গ্রেনেড ঘরের ভেতরে এসে বিস্ফোরিত হয়েছিল। প্রচণ্ড আঘাতে কংক্রিটের একটা বীম ঝুলে গিয়েছিল, দেয়ালগুলোর উপর থেকে নিচ পর্যন্ত জায়গায় জায়গায় প্লাস্টার খসে পড়েছিল এবং জানালাগুলো সব ছিটকে খুলে গিয়েছিল। ভেতরে যদি কেউ থাকত, সে কোনোভাবেই বেঁচে থাকতে পারত না।

এরকম অ্যাপার্টমেন্টে থাকার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। ঠেলাগাড়িতে করে অক্ষত কিছু আসবাবপত্র এবং মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে তারা আবারও ইয়ারমুকে ফিরে আসে। আইহামের বাবা-মা তখনও সেই ওউদ ওয়ার্কশপেই থাকতেন; কিন্তু আইহাম, তেহানি আর ছোট্ট আহমেদ থাকত এক প্রতিবেশীর অ্যাপার্টমেন্টে। ইয়ারমুক ছেড়ে যাওয়ার সময় লোকটা তার বাসার চাবি আইহামকে দিয়ে গিয়েছিল।

ইয়ারমুকের দুর্ভিক্ষ ততদিনে চরম আকার ধারণ করেছিল। প্রতি সপ্তাহেই কেউ না কেউ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছিল। পত্রপত্রিকায় এদেরকে বলা হতো ‘শুহাদা আজ্‌-জৌ’ তথা ‘ক্ষুধার শহিদ’। ইয়ারমুক পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। যুদ্ধের আগে যেখানে ইয়ারমুকে সাড়ে ছয় লাখ মানুষের বসবাস ছিল, গণপ্রস্থান এবং মৃত্যুর পর সে সময় সেখানে মাত্র ১৮ হাজার মানুষ অবশিষ্ট ছিল।

অন্য সবার মতো আইহামদেরও খাবার-দাবার শেষ হয়ে এসেছিল। তাদের শেষ সম্বল ছিল ইয়ারমুক ছেড়ে যাওয়া একজনের কাছ থেকে কিনে রাখা এক বস্তা চাল এবং এক বস্তা চিনি। সপ্তায় একদিন তারা অল্প একটু ভাত খেত। আর অন্য ছয় দিন খেত গবাদি পশুকে খাওয়ানোর জন্য ব্যবহৃত একধরনের হলুদ গাছের পাতা আর কবুতরের ডালের ফালাফেল। শুধুমাত্র আহমেদকে প্রতিদিন তার ছোট প্লেট ভর্তি করে ভাত এবং চিনি মেশানো পানি খাওয়ানো হতো।

গাছের পাতাগুলো ছিল প্রোটিনসমৃদ্ধ। কিন্তু সেগুলোতে সায়ানহাইড্রিক এসিডও ছিল, যা শামুকের জন্য বিষাক্ত। মানুষের জন্য সেটা কতটুকু ক্ষতিকর? কেউ জানত না। জানলেও কিছু করার ছিল না। সপ্তায় ছয় দিন, বারো বেলা এই অখাদ্য খেতে গিয়ে তাদের নাড়িভুঁড়ি উল্টে আসত, মাঝে মাঝে লাগাতার ডায়রিয়া হতো, কিন্তু তারপরেও এটাই ছিল তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।

সামান্য একটু খাবারের জন্য এমন কিছু নেই, যা তখন মানুষ করতে পারত না। অরুবা স্ট্রিট নামে একটা বাণিজ্যিক এলাকা তখনও চালু ছিল। সেখানে একটা সিগারেটের বিনিময়ে একটা ফ্ল্যাট স্ক্রিন টিভি বা ফ্রিজ বিক্রি হতো। একটা প্রচলিত গুজব ছিল, সেই বাজারে একটা কিডনি বিক্রি করলে ২৫ কেজি চাল পাওয়া যেত।

আইহামদেরকে অবশ্য সে পর্যন্ত যেতে হয়নি। কিন্তু মাসের পর মাস শুধু ফালাফেল, গাছের পাতা আর ঘাস খেতে খেতে তারাও পুষ্টিহীনতায় ভুগতে শুরু করেছিল। যুদ্ধের আগে যেখানে আইহামের ওজন ছিল ৬৫ কেজি, সেখানে সে সময় তার ওজন নেমে আসে মাত্র ৪৯ কেজিতে...

... লেখাটা সত্য ঘটনা অবলম্বনে আমার লেখা বই "গল্পগুলো সিরিয়ার" থেকে নেওয়া।

Toha

19 Nov, 07:28


অনেকেই ইনবক্সে প্রশ্ন করেন, বিদেশে বসে আপনার বই কীভাবে পাবো? তাদের জন্য সুন্দর সমাধান নিয়ে এসেছে ইতি, বাংলাদেশ।

আমেরিকা, ইংল্যান্ড, সৌদি, আমিরাত, ভারত-সহ বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৩০টা দেশে যেকোনো বই অর্ডার করতে পারবেন। পৌঁছে যাবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে।

এই তিনটা বইয়ের কম্বিনেশনই যে অর্ডার করতে হবে, এমন না। যে কোনো একটা বা দুইটা, বা সাথে অন্য যেকোনো বইও অর্ডার করতে পারবেন। ওজন অনুযায়ী খরচ নির্ধারিত হবে। বিস্তারিত জানার জন্য ওদের পেজে নক দিতে পারেন।

Toha

02 Nov, 18:52


প্রথমে ২ ভাবছিলাম, বাট পরে ভেবে দেখলাম ১-ই ভালো হবে। রেন্ডমলি যদি আমাকে উগান্ডার ১ কোটি মানুষ, নাইজেরিয়ার ৫ কোটি মানুষ, পাপুয়া নিউগিনির ১০ লাখ মানুষ চেনে, তাহলে আমার কোনো লাভ নাই।

তারচেয়ে বাংলাদেশের ১ লাখ নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষ ফলো করলে তাদের কাছে নির্দিষ্ট কোনো মতাদর্শ প্রচার করা বা প্রোডাক্ট বিক্রি করা সহজ হবে।

উদাহরণ: ১ লাখ তিন গোয়েন্দা বা মাসুদ রানার ফ্যানকে যদি ফলোয়ার বানাতে পারি, তাহলে তাদের কাছে "স্পাই স্টোরিজ" বই বিক্রি করা সহজ হবে 😎

Toha

02 Nov, 09:07


লেবাননে যুদ্ধ করা বাংলাদেশীদেরকে নিয়ে টিবিএস একটা ফিচার করেছে। এরকম ছোটখাটো ফিচার অবশ্য বেশ কয়েকটা আছে। কিন্তু কারও উচিত বড় আকারে এটা নিয়ে কাজ করা।

এই টপিকটা নিয়ে আমার বেশ ইন্টারেস্ট ছিল। ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা Navid Hossain ভাইয়ের সাথে কিছুদিন কথাবার্তা হয়েছিল। উনি এরকম এক যোদ্ধার সাথে কথাও বলেছিলেন। তার গল্প আমার সাথে শেয়ার করেছিলেন। বেশ ইন্টারেস্টি। ঐ যোদ্ধার দাবি অনুযায়ী গেরিলা ক্যাম্পে আরাফাতের সাথেও তার দেখা হয়েছিল। আরাফাত সম্ভবত তার পিঠ চাপড়ে দিয়েছিল; মনে নাই পুরোপুরি।

এ ধরনের টপিক নিয়ে সিরিয়াস করার কাজ করার জন্য রাজনৈতিক পরিস্থিতিও অনুকূলে থাকা লাগে। গত সরকারের আমলে সেটা ছিল না। এক সাংবাদিক ফ্রেন্ডের সাথে কথা হয়েছিল, উনি জাসদের বড় কোন এক নেতার সাথে এই ব্যাপারে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন।

সেই নেতা সে সময় লেবাননে যোদ্ধা পাঠানোর সাথে জড়িত ছিল। কিন্তু গত সরকারের সময় এই ব্যাপারে কথা বলা তো দূরের কথা, উল্টো সে তাকে হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছিল। স্বৈরাচারের দোসর জাসদ নিশ্চিতভাবেই এখন আর ফিলিস্তিন কজকে ঔন করে না। বরং পারলে তাদেরকে জঙ্গি ট্যাগ দেয়।

বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে আছে। তারপরেও কেউ যদি এই টপিকটা নিয়ে জাস্ট মার্কেট ধরার জন্য না, সিরিয়াসলি একটা বড় আকারের বই লিখতে চায়, তাহলে তাকে প্রচুর কষ্ট করতে হবে। ফিল্ডে থাকতে হবে। প্রচুর ঘোরাঘুরি করতে হবে। গ্রামেগঞ্জে গিয়ে যোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার নিতে হবে।

সবচেয়ে বড় কথা, সাবেক এই গেরিলাদের অনেকেরই এখন অসহায় অবস্থা। তাদের সাক্ষাৎকার নিতে গেলে, ছবি সংগ্রহ করতে গেলে কিছু টাকা-পয়সাও খরচ করতে হবে। এত কষ্ট করার পর বই বিক্রি থেকে যে টাকা আসবে, তাতে পোষাবে না।

তারপরেও আমি স্বপ্ন দেখি, কেউ একজন এই টপিকটা নিয়ে বই লিখবে। এই স্মৃতিগুলোকে ইতিহাসে স্থান দিবে। এই যোদ্ধাদের অভিজ্ঞতা, তাদের অনুপ্রেরণা, তাদের অনুভূতি, তাদের পরবর্তী জীবন, এবং সবচেয়ে বড় কথা, তাদেরকে সেখানে পাঠানো রাজনীতিবিদদের আসল উদ্দেশ্য এবং পরবর্তী জীবনে তাদের পরিবর্তন - সবকিছুই তুলে ধরবে।

Toha

30 Oct, 18:16


এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনটা আমার কাছে মুসলমানদের জন্য অনেকটা সেই ক্লাসিক্যাল "ট্রলি প্রবলেম"-এর মতোই মনে হচ্ছে।

যারা জানেন না, ট্রলি প্রবলেম হচ্ছে একটা হাইপোথেটিক্যাল এথিক্যাল প্রবলেম, যেখানে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে একাধিক মানুষকে বাঁচাতে আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে একজনের নিশ্চিত ক্ষতি করবেন কি না।

সমস্যাটা এরকম, ধরেন, একটা ট্রলি (বা ট্রাম, বা ট্রেন) গতি হারিয়ে এমনভাবে এগিয়ে যাচ্ছে যে আপনি কিছু না করলে লাইনের উপর দাঁড়িয়ে থাকা পাঁচজন মানুষ নিশ্চিতভাবে মারা যাবে।

এখন, আপনি বসে আছেন কন্ট্রোল রুমে, যেখানে আপনার শুধু একটা লিভার টানার ক্ষমতা আছে। ঐ লিভার টানলে ট্রলিটা অন্য ট্র্যাকে চলে যাবে, ফলে ঐ পাঁচজন মানুষ বেঁচে যাবে, কিন্তু নতুন ট্র্যাকে দাঁড়িয়ে থাকা একজন মানুষ নিশ্চিতভাবে মারা যাবে।

এখন আপনি কী করবেন?
১। কিছুই করবেন না, ফলে ট্রলিটা পাঁচজনকে চাপা দেবে।
২। লিভারটা টেনে ট্রলিটাকে অন্য ট্র্যাকে নিয়ে একজনকে হত্যা করে পাঁচজনকে বাঁচিয়ে দিবেন।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে মোটামুটি নিশ্চিতভাবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। গতবার ট্রাম্পের আমলে জেরুজালেমে দূতাবাস সরিয়ে নেওয়া, আনরার ফান্ডিং কমিয়ে দেওয়া-সহ অনেকগুলো আনপ্রিসিডেন্টেড পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। এবার সম্ভবত আরও ভয়াবহ কিছু হবে। পশ্চিম তীরে চলমান এথনিং ক্লিনজিং আরও গ্রীন সিগন্যাল পাবে, জেরুজালেম এবং আকসার উপর আক্রমণ হবে, এবং এরফলে সম্ভবত সেখানেও গাযার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে।

কিন্তু তাই বলে কি হ্যারিসকে ভোট দেওয়া যায়, যেই বাইডেন-হ্যারিস এই গণহত্যায় পুরোপুরি শুধু সমর্থন না, অস্ত্র সরবরাহ, ভেটো প্রয়োগ-সহ সব ধরনের টুল ব্যবহার করে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছে?

সামি হামদি, ইয়াসির ক্বাদি এবং শাদি মাসরিদের মতো ইসলামিক স্কলার/অ্যাক্টিভিস্টরা কোনো পক্ষকেই ভোট না দিয়ে থার্ড পার্টি (গ্রীন পার্টিকে) ভোট দেওয়ার কথা বলছেন। যদিও এই থার্ড পার্টির জেতার সম্ভাবনা জিরো, কিন্তু অ্যাটলিস্ট এতে নিজের হাত রক্তে রঞ্জিত হবে না। অ্যাটলিস্ট এতে একটা ম্যাসেজ যাবে। এটা হচ্ছে অনেকটা ট্রলি প্রবলেমে কিছুই না করার মতো অবস্থান।

অন্যদিকে মেহদি হাসান - যদিও ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রচণ্ড ভোকাল, কিন্তু পরিষ্কারভাবেই ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে - তার বক্তব্য, এত বড় গণহত্যার পরেও মুসলমানদের কামালা হ্যারিসকেই ভোট দেওয়া উচিত, কারণ ট্রাম্প আরও খারাপ। এটা হচ্ছে অনেকটা ট্রলি প্রবলেমের পাঁচজনকে বাঁচানোর জন্য একজনকে হত্যা করার মতো অবস্থান।

যদিও আমাদের অবস্থানে কিছুই আসে-যায় না, দিন শেষে আমেরিকার মুসলমান সিটিজেনদের একটা বড় অংশ তাদের নিজেদের স্বার্থ বিবেচনা করেই ভোট দিবে, কিন্তু নীতিগতভাবে আমি নিজের হাত রক্তে রঞ্জিত না করারই পক্ষে। তাতে আরও বেশি রিস্ক থাকলেও।

Toha

22 Oct, 18:58


এক মতিভাইয়ের পরিবর্তে রিপোর্টটা যদি অন্য মতিভাই করত, তাহলে এই সুযোগে কন্সপিরেসির অভিযোগে চুপ্পুর পাশাপাশি ঐ মতিভাইকেও জয় বাংলা করে দেওয়া যেত। একটুর্জন্যপার্পেয়েগেল। স্যরি।

কেউ চাইলে ঐ মতিভাইয়ের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে এই মতিভাইয়ের ছবি পুড়িয়ে আসতে পারে। অতীতে এরকম ঘটনা অনেক ঘটেছে। সার্ফ এক্সেলের উপর ক্ষেপে গিয়ে ইন্ডিয়ানরা একসময় মাইক্রোসফট এক্সেলের রেটিং ১ করে দিছিল। কোন ক্লাসের বইয়ে যেন জোনায়েদ আল-বাগদাদীর ছবির জায়গায় আবু বকর আল-বাগদাদীর ছবি ছাপায় দিছিল। এরকম বিনোদনের দরকার আছে মাঝে মাঝে 😎

Toha

20 Oct, 16:59


আল-জাজিরা বিখ্যাত হয়ে ওঠার আগে, ছোটকালে আমাদের সবচেয়ে প্রিয় আরবি টিভি চ্যানেল ছিল সৌদি চ্যানেল mbc।

ইভেন আল-জাজিরা বিখ্যাত হওয়ার পরেও, নিউজ বাদে অন্য সব অনুষ্ঠান - গান, ধারবাহিক নাটক, মুভি, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান এবং সেই বিখ্যাত "মান সাইয়ারবাহ আল-মিলিয়ন" (Who Wants to be a Millionaire) এর জন্য mbc-ই ছিল সবচেয়ে প্রিয় চ্যানেল।

সেই mbc সিনওয়ারের মৃত্যুর পর সাম্প্রতিক সময়ে অ্যাসাসিনেটেড লিডারদেরকে নিয়ে একটা রিপোর্ট করেছে, যেখানে সিনওয়ার, হানিয়া, নাসরাল্লাহ-সহ রেজিস্ট্যান্সের লিডারদেরকে "এরহাবি" তথা সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করেছে।

সৌদি টিভি চ্যানেলগুলো - বিশেষ করে আল-আরাবিয়া শুরু থেকেই কৌশলে হামাস-হেজবুল্লাহকে দোষারোপ করে আসছিল, কিন্তু তারপরেও এরকম সরাসরি সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ এই প্রথম।

ঐ ঘটনার পর গতকাল ইরাকিরা বাগদাদে এমবিসির রিজিনাল অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে। এবং এরপর নিরাপত্তাহীনতার কারণে এমবিসির পাশাপাশি আরাবিয়াও ইরাক থেকে তাদের অফিস বন্ধ করে স্টাফদেরকে সরিয়ে নিয়েছে।

Toha

20 Oct, 10:05


২০২০ সালের লেখা। এই মুহূর্তে বাস্তবতা দেখেন: সিরিয়ার সাথে ইরান এবং হেজবুল্লাহর এক ধরনের শীতল সম্পর্ক চলছে। বরং সুসম্পর্ক চলছে সৌদি এবং আমিরাতের সাথে।

ফিলিস্তিন যুদ্ধে সিরিয়া বলতে গেলে কোনো অবদানই রাখছে না। এমনকি হেজবুল্লাহ আক্রান্ত হওয়ার পরেও না। একটু আগেই হোজবুল্লার এক কমান্ডারের সাক্ষাৎকার দেখলাম বাশারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ বক্তব্য দিচ্ছে - তাকে রক্ষার জন্য আমরা ৫০০০ যোদ্ধা হারিয়েছি, আর আমাদের বিপদে সে এখন চুপ করে আছে।

তবে আগের কারণগুলোর চেয়েও এই মুহূর্তে সিরিয়ার এই অবস্থানের প্রধান কারণ অর্থনৈতিক। সাম্প্রতিক সময়ে ইরান সিরিয়াতে ইনভেস্ট করা কমিয়ে দিয়েছে। বরং এগিয়ে এসেছে আরব আমিরাত। ওটাই বাশারের এখন বেশি দরকার - টাকা।

Toha

19 Oct, 10:49


ড্রোন টেকনোলজিটা যেভাবে গত কয়েক বছরে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতি পাল্টে দিয়েছে, সেটা এক কথায় অবিশ্বাস্য। হেজবুল্লাহর ড্রোন যে সরাসরি নেতানিয়াহুর বাসায় হিট করতে পারবে, এটা কে ভাবতে পেরেছিল?

গতকাল রাতে ইসরায়েলকে টার্গেট করে হেজবুল্লাহ শতাধিক ড্রোন ছেড়েছিল। এরমধ্যে তিনটা ড্রোন তারা ছাড়ে নেতানিয়াহুর উইকেন্ড হোমকে টার্গেট করে।

ইসরায়েল এই সংক্রান্ত নিউজের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে; কিন্তু আল-জাজিরা কনফার্ম করছে, দুইটা ড্রোন ইসরায়েল ইন্টারসেপ্ট করলেও তৃতীয়টা ঠিকই নেতানিয়াহুর বাসায় আঘাত করেছে। নেতানিয়াহু এবং তার স্ত্রী অবশ্য সে সময় বাসায় ছিল না।

আফসোস একটাই, ড্রোন টেকনোলজিতে শ্রেষ্ঠ দেশটা এই যুদ্ধে সরাসরি কন্ট্রিবিউট করতে পারছে না। করলে ড্রামাটিক রেজাল্ট দেখা যেত।

Toha

18 Oct, 17:15


আদর্শবিহীন, কাল্ট ফিগার কেন্দ্রিক রাজনীতির সাথে আদর্শভিত্তিক রাজনীতির বড় পার্থক্য হচ্ছে, কাল্ট ফিগার মারা গেলে আদর্শবিহীন রাজনীতি দুর্বল হয়ে পড়ে।

ফাতাহ'র কোনো আদর্শ ছিল না। কন্ট্রারি টু পপুলার বিলিফ, ফাতাহ ইনফ্যাক্ট "সেক্যুলার"-ও না। তারা জাস্ট মিক্সড আদর্শের দল। তাদের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্যরা ছিল। তাদের সদস্যদের মধ্যে খ্রিস্টান ছিল, সেক্যুলারও ছিল। কিন্তু তাদের প্রিন্সিপাল কোনো আদর্শ ছিল না।

ফাতাহ টিকে ছিল মূলত ইয়াসির আরাফাতের ইমেজের জোরে।আরাফাতের মৃত্যুর সাথে সাথে তাই ফাতাহ'র-ও মৃত্যু ঘটে গেছে। আরাফাতের মৃত্যুর মাত্র দুই বছরের মাথায় সংঘটিত জাতীয় নির্বাচনে ফাতাহ'র শোচনীয় পরাজয় ঘটেছে। বর্তমানে যে ফাতাহ টিকে আছে, সেটা মূলত আমেরিকা, ইসরায়েল আর ইউরোপের ব্যাকিংয়ে; স্বৈরাচার আবু মাজেনের সশস্ত্র গুন্ডাবাহিনীর দাপটে। সেগুলো সরিয়ে নিলে ফাতাহ'র ভরাডুবি নিশ্চিত।

বিপরীতে হামাস টিকে আছে তাদের আদর্শের জোরে। তাদের টপ লিডাররা একে একে সবাই মারা গেছে - শাইখ আহমেদ ইয়াসিন, ডঃ আব্দুল আজিজ আল-রানতিসি, সালাহ শাহাদা, ইয়াহইয়া আয়াশ, সালাহ আল-আরুরি, ইসমাঈল হানিয়া - প্রত্যেককে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও হামাসকে নির্মূল করা যায়নি। বরং তারা আরও জনপ্রিয় হয়েছে। আরও শক্তিশালী হয়েছে।

কারণ হামাস কখনোই ব্যক্তিকেন্দ্রিক দল ছিল না। তারা ছিল আদর্শকেন্দ্রিক দল। এবং আরব বিশ্বের সবচেয়ে গণতান্ত্রিক দল। যারা জনগণের সাথে মিশে থেকে জনগণের জন্য রাজনীতি করেছে। জনগণের চাহিদার সাথে মিল রেখে, কিন্তু একইসাথে আদর্শকে বিসর্জন না দিয়ে নিজেদেরকে অ্যাডাপ্ট করেছে।

সিনওয়ারের মৃত্যুতেও হামাসের সাময়িক ক্ষতি হবে নিশ্চিত; কিন্তু তারা নিশ্চিহ্ন হবে না। নির্মূল হবে না। যতদিন অকুপেশন থাকে, ততদিন রেজিস্ট্যান্স যদি সৎ থাকে, তাদেরকে নির্মূল করা যায় না।

Toha

18 Oct, 12:11


প্রথমে ট্যাঙ্ক থেকে শেল নিক্ষেপ করা হলো।
সঙ্গী চার যোদ্ধাই শাহাদাত বরণ করলেন।
বেঁচে রইলেন শুধু ইয়াহইয়া সিনওয়ার।

এরপর রকেট লঞ্চার থেকে মিসাইল নিক্ষেপ করা হলো।
সিনওয়ার গুরুতর আহত হলেন।
দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি হারিয়ে একটা সোফার উপর বসে পড়লেন।

এরপর তারা একটা ড্রোন প্রেরণ করল।
সিনওয়ারের ডান হাতের ক্ষতস্থান থেকে তখন রক্ত ঝরছে।
তার শরীর নিস্তেজ হয়ে আসছে।

এরমধ্যেও শরীরের সবটুকু শক্তি সঞ্চয় করে বাম হাত দিয়ে একটা লাঠি তুলে ছুঁড়ে মারলেন ড্রোনটার দিকে।
অবশেষে ইসরায়েলি স্নাইপারের গুলিতে শাহাদাত বরণ করলেন।

এরকম বীরের মতো মৃত্যুর বিবরণ কয়েক দশকে একবার পাওয়া যায়।
আর পাওয়া যায় সাহিত্যে, মহাকাব্যে।
ইয়াহইয়া সিনওয়ার আমাদের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া মহাকাব্যিক লড়াইয়ের সবচেয়ে সাহসী যোদ্ধা।
অমর মহানায়ক।

পেইন্টিং: Taz E Taiyaba

Toha

17 Oct, 17:51


রেজিস্ট্যান্সের পক্ষ থেকে এখনও স্বীকার করা হয়নি, কিন্তু অফিশিয়ালি অস্বীকারও করা হয়নি। আবু উবায়দা এই প্রসঙ্গে কিছুই না বলে বক্তব্য শেষ করেছেন। সম্ভবত তাদের কনফার্ম হওয়ার জন্য যোগাযোগ করতে সময় লাগছে।

তবে ছবি, ইসরায়েলের আত্মবিশ্বাসী ঘোষণা এবং প্রায় সব অ্যানালিস্টের সেটা মেনে নেওয়া থেকে বোঝা যাচ্ছে, ইয়াহইয়া সিনওয়ার সম্ভবত আসলেই শহিদ হয়েছেন।

গত এক বছর ধরেই ইয়াহইয়া সিনওয়ার ছিলেন জীবন্ত শহিদ। এবার তিনি জাস্ট পরিণত হলেন মৃত শহিদে। এটুকুই পার্থক্য।

অন্তত সেই ২০১৭ সাল থেকেই তিনি শহিদ হওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। ইসরায়েল তাকে হত্যা করার জন্য খুঁজছে জানার পরেও প্রকাশ্য জনসভায় ইসরায়েলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে গাযার রাজপথে নির্ভয়ে হেঁটেছিলেন।

ইসরায়েল তার বাড়িতে বম্বিং করে ধ্বংস করে দেওয়ার পর সেই ধ্বংসস্তুপের উপর চেয়ারে বসে হাসিমুখে পোজ দিয়েছিলেন।

সিনওয়ার কখনোই শাহাদাতকে ভয় করেননি। তিনি ঘোষণা করেছিলেন, দখলদার বাহিনী আমাকে যে শ্রেষ্ঠ উপহারটা দিতে পারে, সেটা হচ্ছে শাহাদাত। অবশেষে সেই উপহারটাই তিনি অর্জন করেছেন।

এর আগে অনেক অনেক বড় নেতাকে আমেরিকা, ফ্রান্স, ইসরায়েল হত্যা করেছে। কিন্তু তারা সবাই মারা গেছে হয় দৈনন্দিন কাজকর্ম করা অবস্থায়, অথবা আত্মগোপনে থাকা অবস্থায়।

ইয়াহইয়া সিনওয়ারই সম্ভবত আমাদের জীবদ্দশায় দেখা একমাত্র জাতীয় নেতা, যিনি সশস্ত্র যুদ্ধ করতে করতে শহিদ হয়েছেন। তার গলায় ছিল কেফিয়্যাহ পেঁচানো, তার হাতের পাশে ছিল একে-৪৭ রাইফেল।

তিনি টানেলে বা বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিলেন না। ইসরায়েল তাকে টার্গেট করে হত্যা করেনি। তারা জাস্ট তিনজন গেরিলা যোদ্ধার আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছিল, যাদের একজন সিনওয়ার নিজে।

অধীনস্থ যোদ্ধাদের সাথে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে যুদ্ধ করতে করতে বীরের মতো শহিদ হওয়াই আল্লাহ তার ভাগ্যে রেখেছিলেন। যতদিন ফিলিস্তিনের নাম দুনিয়ার বুকে থাকবে, ততদিন শাইখ আইজুদ্দিন আল-কাসসামের মতো ইয়াহইয়া সিনওয়ারের এই লিজেন্ডও অমর হয়ে থাকবে।

Toha

07 Oct, 08:49


বই কম বিক্রি হলে অনেকে হতাশ হয়। বাস্তবতা হচ্ছে, সিরিয়াস অনেক বই-ই অনেক কম বিক্রি হয়। বেশি বিক্রি হয় কম সিরিয়াস ধরনের বই।

গাযা নিয়ে নরমান ফিঙ্কেলস্টাইনের একটা বই আছে - গাযা: অ্যান ইনকোয়োস্ট ইন্টু মার্টায়ারডম। ২০১৮ সালে প্রকাশিত বইটা ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে মাত্র ৩০০ কপি বিক্রি হয়েছিল। এরমধ্যে ১৫০ কপি ফিঙ্কেলস্টাইন নিজেই কিনেছিল বিভিন্নজনকে পাঠানোর জন্য।

অবশ্য এ কথাও সত্য, ফিঙ্কেলস্টাইনের সাক্ষাৎকার যতটা আকর্ষণীয়, যতটা মন্ত্রমুগ্ধকর, বই ততটাই নীরস। ফ্যাক্ট, ডেটা এবং রেফারেন্সের ভারে অতিভারী। তার বইটা পড়তে আমার ভয়াবহ রকমের কষ্ট হয়েছে। এবং শেষ পর্যন্ত পুরোটা পড়িও নাই। স্কিপ করে করে পড়েছি।

৭ অক্টোবর অ্যানিভার্সারি উপলক্ষে ফিঙ্কেলস্টাইনের তিন ঘণ্টার একটা সাক্ষাৎকার দেখলাম। তার ভাষ্য অনুযায়ী, দীর্ঘ একজীবন লেখালেখি করার পর শেষদিকে এসে গাযা নিয়ে সে পুরোপুরি হাল ছেড়ে দিয়েছিল।

সে মেনে নিতে শুরু করেছিল, ফিলিস্তিন ইস্যুটা পুরোপুরি চাপা পড়ে গেছে। তাদের ভাগ্য আর কখনোই বদলাবে না। হতাশ হয়ে ফিলিস্তিন বাদ দিয়ে সে অন্যান্য বিষয় নিয়ে লেখালেখি শুরু করেছিল।

কিন্তু এরপরেই ঘটে ৭ অক্টোবর। ফিঙ্কেলস্টাইনের ভাষায়, এরপর থেকে গত এক বছর ধরে সে গাযা নিয়ে কথা বলা, পড়াশোনা করা, আর লেখালেখি করা ছাড়া আর কোনো কাজ করেনি।

এই বৃদ্ধ বয়সেও দীর্ঘ রাত জেগে গাযাবাসীর জন্য অ্যাক্টিভিজম করাটাকে সে এমন পাগলামির পর্যায়ে নিয়ে গেছে, তার বিশ্বাস, যদি সমগ্র গাযাবাসীকেও নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হয়, তারপরেও সে থামবে না। সে হবে গাযার লাস্ট ভিক্টিম।

যে অল্প কয়েকজন মানুষ বিশ্বের সামনে নিরলসভাবে, ঠান্ডা মাথায়, অ্যাকাডেমিক রেফারেন্স ব্যবহার করে গাযাবাসীর দুর্দশা এবং আমেরিকা-ইসরায়েলের বর্বরতা তুলে ধরছে, নরমান ফিঙ্কেলস্টাইন নিঃসন্দেহে তাদের মধ্যে প্রথম সারিতে থাকবে। আল্লাহ তাকে দীর্ঘ হায়াত দান করুক।

Toha

06 Oct, 06:12


আগামীকাল ১ম বর্ষপূর্তি।

আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে ফিলিস্তিনিরা হেরে গেছে, গাযা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে, দ্বিতীয় নাকবা প্রায় সফল হয়ে গেছে; কিন্তু বাস্তবে এখনও যুদ্ধ শেষ হয়নি, বরং বিস্তৃত হয়েছে।

ওদের আল্ট্রা-রাইট যেদিকে যাচ্ছিল, বিশ্বরাজনীতি যেদিকে যাচ্ছিল, ৭ অক্টোবর না হলে ধীরে ধীরে ফিলিস্তিন ইস্যুটাই নন-ইস্যু হয়ে যেত। পশ্চিম তীরের অর্ধেককে অ্যানেক্স করে নেওয়া হতো, বাকি অর্ধেককে একাধিক গাযায় রূপান্তরিত করা হতো, এবং একপর্যায়ে আকসা ভেঙে ফেলা হতো।

এখনও সেই প্রক্রিয়া থামানো যায়নি; কিন্তু এই সঙ্কটের একটা সল্যুশন যে জরুরী, সেই আলোচনাটা আবার ফিরে এসেছে। আমাদের এক জেনারেশনের জন্য এক বছর খুবই কম সময়, তাই আমাদেরকে সহজেই হতাশা ঘিরে ধরে। কিন্তু ফিলিস্তিন যুদ্ধ চলছে ১০৭ বছর ধরে। দীর্ঘমেয়াদী ফলাফল বোঝার জন্য তাই এক বছর যথেষ্ট সময় না।

এই দিনের এই বিদ্রোহের ফলে, উন্মুক্ত কারাগার ভেঙে বন্দীদের বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টার ফলে যে অকল্পনীয় ত্যাগ তারা স্বীকার করেছে, তার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবেই হয়তো একদিন বিজয় আসবে। এটুকু স্বপ্ন আমাদেরকে দেখতেই হবে।

ছবি © ইয়েমেনি কার্টুনিস্ট কামাল শারাফ

Toha

05 Oct, 16:33


নিউজটা দুই-তিন দিন আগের। অনেকেই দেখেছেন হয়তো। আহমাদিনেজাদ দাবি করেছেন, ইরানের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স বিভাগের ইসরায়েল শাখার যে প্রধান, সে-সহ সেই ইউনিটের ২০ জনই ছিল আসলে ইসরায়েলের ডাবল এজেন্ট।

আহমাদিনেজাদের দাবি অনুযায়ী, ২০১৮ সালে তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচী সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু ডকুমেন্ট চুরি করে ইসরায়েলের হাতে তুলে দেয়, এবং এরফলেই ট্রাম্প ইরানের সাথে চুক্তি বাতিল করে। এবং সবকিছু সফলভাবে সম্পন্ন করার পর তারা পালিয়েও যেতে সক্ষম হয়।

সত্য হলে এটা হতে পারে কোল্ড ওয়ারের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের অন্যতম সেরা ডাবল ক্রস অপারেশন। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এবং এরপর স্নায়ুযুদ্ধের সময় এরকম ডজন ডজন ঘটনা ঘটেছিল। দেখা গেছে আমেরিকার কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা আসলে সোভিয়েত এজন্ট। অথবা ভাইসা ভার্সা।

আমার "স্পাই স্টোরিজ ২" বইয়ে স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের এরকম দুর্ধর্ষ এক ডাবল এজেন্টের কাহিনী বলা হয়েছে। এই ধরনের বিষয়ে আগ্রহী হলে পড়ে দেখতে পারেন।

Toha

04 Oct, 18:26


"কালিমা" খচিত পতাকা নিয়ে কিছু বলা যাবে না - হিযবুত তাহরির আর বাল্কায়েদা সমর্থকদের এই লজিকের সুযোগে এবার আইসিসের পতাকা নিয়েও মিছিল হয়েছে।

এখন সবই হবে। কিছুই বলা যাবে না। কিন্তু পরে যখন পুরা দুনিয়া মিলে বাঁশ দিবে, তখন ঠিকই "ওগুলো তো সব ইহুদি-খ্রিস্টানদের ষড়যন্ত্র ছিল" বলে দায় এড়ানো যাবে।

Toha

04 Oct, 18:24


কাকতালীয়ভাবে আজকে বিকেলেই এই বইটা পড়ছিলাম। অন্যান্য দেশে বিস্তারের অনেক আগে সেই ২০০৯ সালেই গাযায় এইসব সালাফি-জিহাদিরা "ইমারাত" প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। হামাস শুরুতেই এই আপদ বুঝতে পারে এবং ঝেঁটিয়ে তাদেরকে বিদায় করে।

হামাস বিভিন্ন ইসলামিক গ্রুপের সাথে একসাথে কাজ করেছে। তারা এমনকি বামপন্থী মার্ক্সিস্ট-লিনিনিস্ট গ্রুপগুলোর সাথে মিলেও জয়েন্ট অপারেশন রুম তৈরি করেছে। কিন্তু বিপুল জনসমর্থন থাকা সত্ত্বেও তারা নিজেরাও খেলাফত কায়েম করে নাই, শরিয়া প্রতিষ্ঠা করে নাই, এবং বাল্কায়েদার প্রতি অনুগত কোনো গ্রুপকেও স্পেস দেয় নাই।

প্রজ্ঞা জিনিসটা এমনি এমনি আসে না। দশকের পর দশক ধরে সংগ্রাম করার, রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে আসে।

Toha

03 Oct, 13:27


একটা ঘোষণা।

আমার অডিবল অ্যাকাউন্টে ৬ মাসের ক্রেডিট, অর্থাৎ ছয়টা অডিওবুক কেনার মতো টাকা আছে।

অ্যাকাউন্টটা আগামী সপ্তায় বন্ধ করে দিবো। কারো যদি অডিবল থেকে অডিও বই কেনার দরকার থাকে, তাহলে যোগাযোগ করতে পারেন। কম প্রাইসে দিবো।

Toha

02 Oct, 19:11


আপনার কাছে যদি মনে হয় গত ১৫ বছরে দেশে বাল্কায়েদা সমর্থকদের সংখ্যা বেড়ে গেছে, তাহলে এর জন্য আপনার যাদেরকে ক্রেডিট দেওয়া উচিত, তারা হচ্ছে আওয়ামী লীগ, ১৪ দলীয় জোট, বাম-সুশীল বুদ্ধিজীবি, জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার কবির এট অল ...

দেখেন, যেকোনো দেশে যখন ইসলামপন্থীদের স্বাভাবিক রাজনীতি করার অধিকার থাকবে না, সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক ইসলামিক দলকে ভার্চুয়ালি নিষিদ্ধ করে রাখা হবে, তাদের সদস্য সন্দেহে পেটানো হবে, সেই দেশের যুবকরা উগ্রপন্থী দলগুলোর রাজনীতিতেই যোগ দিবে। এটা যুগ যুগ ধরেই বিভিন্ন দেশে হয়ে এসেছে।

লিবিয়া-সিরিয়াতে মুসলিম ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ ছিল। লিবিয়াতে ইভেন দাড়ি রাখা পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিল, ইসলামিক বৈঠক করা নিষিদ্ধ ছিল, তিউনিসিয়ায় মসজিদে জামাতে নামাজ পড়লে পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো। ফলাফল কী হয়েছে? ১৪/১৫ সালে ইরাক-সিরিয়াতে সবচেয়ে বেশি যুবক গেছে লিবিয়া আর তিউনিসিয়া থেকে।

বিপরীতে মিসরের অবস্থা দেখেন। ষাটের দশকে এবং এরপর সত্তরের দশকের শেষের দিকে সেখানে মুসলিম ব্রাদারহুড নিষিদ্ধ থাকায় আশির দশকে তাদের অনেকে আফগানিস্তানে গিয়েছিল; কিন্তু মোবারকের আমলে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায়, তাদের সীমিতভাবে রাজনীতি করার সুযোগ থাকায় ১৪/১৫ সালে তাদের কাউকে ইরাক-সিরিয়াতে যেতে দেখা যায়নি।

এটাই হওয়ার কথা। তরুণদের একটা অংশ সব সময়ই ইসলামিক মুভমেন্টগুলোর দিকে আকৃষ্ট হবে। যদি গণতান্ত্রিকভাবে কোনো দলে যোগ দেওয়ার সুযোগ থাকে, তাহলে তাদের একটা বড় অংশ সেদিকেই ঝুঁকবে। দলগুলোও প্রকাশ্যেই নিজেদের আইডিওলজি, ভিশন অফার করে তাদেরকে রিক্রুট করতে পারবে।

কিন্তু যখন এই সুযোগ থাকবে না, যখন এই দলগুলোর উপর দমন-নিপীড়ন চলবে, তখন এই তরুণরা গোপনে, অনলাইনে আকীদার বড়ভাইদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে গোপন, নিষিদ্ধ, উগ্রপন্থী বিভিন্ন দলের দিকে ঝুঁকবে। বাংলাদেশেও অনেকের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে।

এটা থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে সমাজে ইসলামবিদ্বেষ হ্রাস করা। কোনো ধরনের ইসলামিক গ্রুপের উপর দমন-নিপীড়ন না করা। ইভেন সন্দেহজনক গ্রুপগুলোর উপরেও না। যতক্ষণ পর্যন্ত না আসলেই তাদের আইনগত কোনো অপরাধ পাওয়া যায়।

ধরেন এই যে বাল্কায়েদা সদৃশ পতাকা নিয়ে অনেকে মিছিল করছে, আমার মতে এটাতে কোনো কল্যাণ তো নাই-ই, বরং নেগেটিভ প্রপাগান্ডার কারণে ক্ষতির সম্ভাবনা আছে; কিন্তু তারপরেও এটার বিরুদ্ধে যেন শুধু সমালোচনাই থাকে। যেন জাস্ট পতাকা নিয়ে মিছিল করার কারণে কাউকে আটক করা না হয়, তুলে নিয়ে যাওয়া না হয়।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অবশ্যই উচিত এসব ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া - এদের পেছনে সন্দেহজনক কারও ইন্ধন আছে কি না, কোনো স্যাবোটাজের পরিকল্পনা আছে কি না, এসব বিষয়ে তদন্ত করা। কিন্তু কোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগ পর্যন্ত, বা নিশ্চিত কোনো পরিকল্পনা না পাওয়া পর্যন্ত যেন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হয়।

সমাজে যদি আইনের শাসন নিশ্চিত থাকে, কাউকে গোপনে কিছু করতে না হয়, যদি গণতান্ত্রিকভাবেই ইসলামিক দলের রাজনীতি করে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ খোলা থাকে, তাহলে দিন শেষে এই ধরনের গ্রুপ খুব বেশি পাত্তা পাবে না। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য এবং এই রাষ্ট্রের মুসলমানদের জন্য সেটাই তুলনামূলক বেটার সল্যুশন।

Toha

02 Oct, 16:27


ChatGPT-কে সকালবেলার পোস্টটা দিয়ে বললাম : "Could you review the following analysis and assess its accuracy? Are there any points where leading geopolitical or military analysts might disagree?"

সে এই উত্তর দিলো:

এই বিশ্লেষণটি বেশ তথ্যবহুল এবং বিভিন্ন উপাদানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এতে ইরান-ইসরায়েল সম্পর্ক, তাদের সামরিক ক্ষমতা, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অবস্থানের বিষয়গুলি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তবে এতে কিছু জায়গায় বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে, বিশেষ করে ইরানের প্রতিক্রিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে।

মূল বিষয় এবং কোথায় ভিন্নমত থাকতে পারে:

1. ইসরায়েল ও ইরানকে যুদ্ধে টেনে আনার চেষ্টা:

ইসরায়েলের ইরানকে যুদ্ধে টেনে আনার ইচ্ছা নিয়ে অনেক বিশ্লেষক একমত, বিশেষ করে যখন ইরান তার আঞ্চলিক প্রভাব (হেজবুল্লাহ, হুথিদের মাধ্যমে) বিস্তৃত করছে। তবে, কিছু বিশ্লেষক মনে করেন যে ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য ইরানের সরাসরি সামরিক সংঘর্ষ নয়, বরং তাদের প্রভাব ও সামরিক সক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করা।

2. আমেরিকার যুদ্ধ-প্রবণতা:

বিশ্লেষণে বলা হয়েছে যে আমেরিকা ইরানের সঙ্গে বড় আকারের যুদ্ধ বাধাতে অনাগ্রহী। এটি সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে, কারণ বাইডেন প্রশাসন ইরানের সঙ্গে চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। তবে কিছু বিশ্লেষক যুক্তি দেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং ইসরায়েলকে প্রতিরক্ষা সরবরাহ দিয়ে যাচ্ছে।

3. ইরানের সীমিত প্রতিক্রিয়া:

ইরানের ‘ধীরে খেলার নীতি’ সম্পর্কে বলা হয়েছে, যা মূলত সত্য। ইরান সামরিকভাবে সাবধানী, তবে কিছু বিশ্লেষক মনে করেন যে ইরানের এই কৌশল আসলে তাদের সামর্থ্যকে ভুলভাবে মূল্যায়ন করতে প্ররোচিত করতে পারে। ইরান তাদের প্রতিশ্রুত সামরিক শক্তি দিয়ে ইসরায়েলকে ভীত করার চেষ্টা করে, কিন্তু ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারণে এই হুমকিগুলো সফলভাবে প্রতিরোধ করা হচ্ছে।

4. ইরান-ইসরায়েল আক্রমণের ফলাফল:

ইরানের সাম্প্রতিক হামলার সাফল্য নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দক্ষতা এবং ইরানের মিসাইল ক্ষমতা নিয়ে সমালোচকরা প্রশ্ন তোলেন। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে যে ইরান কতটা সফলভাবে ইসরায়েলি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে, বিশেষত ইসরায়েলের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের কারণে।

5. আমেরিকার প্রতিক্রিয়া:

বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়েছে যে আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, মার্কিন প্রতিক্রিয়া এখনও "মেজর এস্কালেশন" বা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে যায়নি। মার্কিন প্রশাসন আরও কৌশলগতভাবে জটিল কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজছে।

সংক্ষেপে:

এই বিশ্লেষণ বেশিরভাগই সঠিক, তবে বিভিন্ন ভিন্নমত রয়েছে বিশেষ করে ইরানের সামরিক কার্যকলাপ এবং আমেরিকার ভূমিকাকে ঘিরে। সবচেয়ে বড় বিতর্ক ইরানের সামরিক সাফল্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী কৌশল নিয়ে।

Toha

02 Oct, 11:16


একইসাথে এটাও সত্য, ইরান দুই-একটা বিচ্ছিন্ন মিসাইল বাদে মূলত মিলিটারি সাইটগুলোই টার্গেট করেছে। এবং সেটাও করেছে রাতের বেলা, যেন সিভিলিয়ান ক্যাজুয়ালিটি না হয়। কয়েক ডজন ইসরায়েলি সিভিলিয়ানকে হত্যা করে নিজের উপর যুদ্ধ টেনে এনে নিজের ধ্বংস ডাকতে ইরান চায়নি। ইরান যেটা চেয়েছে, সেটা হচ্ছে, মিলিটারি সাইটগুলোর ক্ষয়ক্ষতি করা এবং দেখানো যে, তাদের এরচেয়েও বেশি ক্ষয়ক্ষতি করার সক্ষমতা আছে। সেটাতে তারা কতটুকু সফল হয়েছে, এয়ারবেজগুলোর এবং এফ-৩৫ বিমানগুলোর আসলে কতটুকু ক্ষতি করতে পেরেছে, এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার না।

এই হামলার ফলাফল কী হবে? ইসরায়েল পাল্টা হামলা করবে। এবং মনে হচ্ছে, এই হামলা এপ্রিলের মতো লোক দেখানো না হয়ে সম্ভবত আরেকটু বেশি হবে। অন্তত আমেরিকার প্রতিক্রিয়া দেখে সেরকমই মনে হচ্ছে। এপ্রিলে ইরানের আক্রমণের পর আমেরিকার যে ভাষা ছিল, এবার জ্যাক সুলিভানের ভাষা আরও কড়া, আরও আক্রমণাত্মক।

যদি খুব বেশি পাল্টাপাল্টি আক্রমণ পর্যন্ত না গড়ায়, তাহলেও গতকালের এই আক্রমণ যে গাযাবাসীকে সামান্য একটু স্বস্তি দিয়েছিল, শরণার্থী শিবির থেকে বেরিয়ে তারা যে সাময়িক উল্লাস প্রকাশ করার উপলক্ষ পেয়েছিল, এজন্যও এই আক্রমণটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

Toha

02 Oct, 11:16


গত নয়-দশ মাস ধরে আপনি যদি নিউজ অ্যানালাইসিস ফলো করেন, তাহলে একটা বিষয় নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারার কথা, সেটা হচ্ছে, ইসরায়েল শুরু থেকেই চেয়েছে যুদ্ধটা বিস্তৃত করতে, ইরানকে যুদ্ধে টেনে আনতে। কিন্তু ইরান তাতে সাড়া দেয় নাই, আমেরিকাও রাজি হয় নাই।

ইসরায়েল ইরানকে থ্রেট মনে করে। কেন, সেটা হেজবুল্লাহ আর হুথিদেরকে দেখলেই বোঝা যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ইসরায়েলের একার পক্ষে সম্ভবত ইরানকে পরাজিত করা সম্ভব না। সেজন্যই তারা চায়, আমেরিকাকে দিয়ে ইরানকে শায়েস্তা করতে। কারণ আমেরিকার শক্তির সামনে বাকি বিশ্ব অসহায়।

আমেরিকা এই মুহূর্তে ইরানের সাথে বিশাল যুদ্ধ বাধাতে আগ্রহী না। কিন্তু ইরান যদি সীমা লংঘন করে, ইসরায়েলের উপর আক্রমণ করে তাদের কয়েকশো তো অনেক বড়, কয়েক ডজন সিভিলিয়ানকে হত্যা করে, তাহলেই আমেরিকার উপর যেই চাপ আসবে, তাতে ইরানের উপর সরাসরি বম্বিং করা ছাড়া আমেরিকার কোনো উপায় থাকবে না।

ইরান এই সমীকরণ খুব ভালোভাবেই জানে। এবং সেজন্যই তারা ইসরায়েলের উস্কানিগুলোর বিপরীতে, ইসরায়েল একের পর এক তাদের অনুগত বাহিনীগুলোকে ধ্বংস করার পরেও, কমান্ডারদেরকে হত্যা করার পরেও ঠিক ততটুকুই রেসপন্স করে, যতটুকু না করলেই না। আমেরিকার অতুলনীয় শক্তিমত্তার সামনে ইরান এখনও অসহায়।

এই সাম্যাবস্থার প্রমাণ সব সময়ই দেখা যায়। এর সবচেয়ে ভালো উদাহরণ আমরা দেখেছি গত এপ্রিলে। সে সময় ইরানের একটা জবাব দেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছিল। কিন্তু একইসাথে তাদের ভয় ছিল, জবাব দিতে গিয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেলে যুদ্ধ নিজেদের উপর চলে আসবে।

ফলে তারা যেটা করে, আক্রমণ করে ঠিকই, কিন্তু আমেরিকাকে আগেই জানিয়ে দেয়। ইসরায়েলের পাশাপাশি আমেরিকা এবং তার মিত্ররা মিলে সব আক্রমণ ঠেকায়। কিন্তু এর ফাঁকেও একটা মিলিটারি টার্গেটে তারা ঠিকই ভালোভাবে আক্রমণ করে, যেটা ইসরায়েল ঠেকাতে ব্যর্থ হয়।

এর মাধ্যমে তারা ইসরায়েলের বড় ধরনের ক্ষতি না করেই গত পাঁচ দশকের ইতিহাসে প্রথম কোনো রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের উপর আক্রমণ করে, এবং নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দেয়। এবং আশা করে, ইসরায়েল তাতে কিছুটা ভীত হবে এবং নিজেদেরকে সংবরণ করবে।

কিন্তু বাস্তবে ইসরায়েল এসক্যালেশন চালিয়েই যেতে থাকে। গত কয়েক সপ্তায় হানিয়া এবং নাসরাল্লাহ হত্যাকাণ্ড, লেবাননে আক্রমণ - সব মিলিয়ে ইসরায়েল পরিস্থিতিকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যায়, তাতে পরিষ্কার হয়, তাদের থামার কোনো ইচ্ছা নাই। তারা চিরস্থায়ীভাবে তাদের শত্রুদেরকে নিষ্ক্রিয় করতে চায়। শুধু তাই না, গত কয়েকদিন ধরে ইসরায়েল সরাসরি ইরানের উপর আক্রমণের কথাও বলছিল।

ইরানের যে ধীরে খেলা নীতি, তাতে সাধারণ অবস্থায় এই ধরনের আক্রমণের পর এত তাড়াতাড়ি তাদের রিয়েক্ট করার কথা না। এবং তারা এটাও জানে, এবার আক্রমণ করলে সেটা গতবারের চেয়েও রিস্কি হবে। তারা জানে, এটা তাদেরকে যুদ্ধে জড়ানোর জন্য একটা ট্র্যাপ। কিন্তু হেজবুল্লাহর টপ লিডারদেরকে মেরে ফেলার পর তাদের নিজেদের ইমেজের যে ক্ষতি হয়, সেটা পুনরুদ্ধার করার জন্যই রিস্ক নিয়ে হলেও তাদেরকে গতকালের আক্রমণটা করতে হয়।

এই প্রেক্ষাপটেই গতকালের আক্রমণটাকে দেখতে হবে। এবারও ইরান রাশিয়াকে, আমেরিকাকে এবং আরব রাষ্ট্রগুলোকে আগেই জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বেশি আগে না। অল্প একটু আগে। এবং সেজন্যই এবার গতবারের তুলনায় ডাইরেক্ট হিট অনেক বেশি হয়েছে।

আগে কেন জানাতে হয়? এটা লিমিটেড যুদ্ধের স্ট্র্যাটেজি। ম্যাসেজ দেওয়ার জন্য যে, আমরা ফুল স্কেল যুদ্ধ চা্চ্ছি না। সোজা কথায়, তোমরা এটাকে ফুল স্কেল যুদ্ধ মনে করে আমাদের উপর নিউক্লিয়ার বোমা মেরে দিও না। আমরা লিমিটেড অ্যাটাক করছি, কিন্তু তোমরা যদি পাল্টা আক্রমণ করো, তাহলে আমরা আরও আক্রমণ করব। যেমন ইরান আমেরিকাকে এবং আরব রাষ্ট্রগুলোকে হুমকি দিয়েছে, ইসরায়েল বা আমেরিকা যদি ইরানের অয়েল রিফাইনারিগুলোতে আক্রমণ করে, তাহলে তারা পাল্টা আমেরিকার মিত্র আরব রাষ্ট্রের তেলক্ষেত্রগুলোতে আক্রমণ করবে।

ইরানের এবারের আক্রমণটার ফলাফল কী হয়েছে? পরিষ্কার না। কারণ টাইমস অফ ইসরায়েলের রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ এবং ছবি প্রকাশ করার ব্যাপারে সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সেজন্য প্রকৃত সত্য হয়তো কখনোই জানা যাবে না। ইসরায়েল অফিশিয়ালি বলছে, কোনো মৃত্যু বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু আল-জাজিরার রিপোর্টার বলেছে, সে আনঅফিশিয়ালে হসপিটালে দুইজন আহতের ভর্তি হওয়ার সংবাদ জানতে পেরেছে।

ইরানের সাথে ইসরায়েলের যে ভৌগলিক দূরত্ব, প্রায় ২০০০+ কিলোমিটার, এই দূরত্ব অতিক্রম করতে মিসাইলগুলোর যে সময় লাগে, তাতে ইরান থেকে আক্রমণ করে ইসরায়েলের উল্লেখযোগ্য প্রাণহানি ঘটানো আসলে কখনোই সম্ভব না।

ইসরায়েল মোটামুটি এক ঘণ্টা আগেই টের পেয়ে যায়, সাইরেন বাজিয়ে দেয়, এবং লোকজনকে শেল্টারে আশ্রয় নিতে নির্দেশ দেয়। ফলে হতাহত যদি কেউ হয়, সেটা পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদেরই হওয়ার শঙ্কা থাকে, যাদেরকে ওয়ার্নিংও দেওয়া হয় না, যাদের শেল্টারও নাই। গতকালও সেটাই হয়েছে। একজন ফিলিস্তিনি মারা গিয়েছে।

Toha

01 Oct, 22:17


ইসরায়েলি পিপল টু দেয়ার ডিফেন্স মিনিস্ট্রি:

আয়রন ডন বানাইছ ভাই, সেই হইসে!

Toha

01 Oct, 07:44


বাংলাদেশের ইসলামপন্থীদের উচিত রিঅ্যাক্টিভ না হয়ে প্রো-অ্যাক্টিভ হওয়ার চেষ্টা করা। এবং একইসাথে "ইনক্লুসিভ" হওয়া। নাহ, LG TV বিষয়কইনক্লুসিভনেস না; ডান-বাম, "হুজুর"-"প্রগতিশীল" টাইপ ইনক্লুসিভনেস।

৫ আগস্টের পর থেকে অনেকে অনেক ধরনের সংগঠন গড়ে তুলছে, সেমিনার করছে, বক্তব্য দিচ্ছে। এরমধ্যে শিক্ষা, সংবিধানের ধারা, রাষ্ট্রব্যবস্থা - এসব নিয়ে যতগুলো আলাপের আয়োজন চোখে পড়ছে, তার অধিকাংশই করছে সেই চেনা-পরিচিত মানুষজন; মোস্টলি প্রগতিশীল, বামপন্থী হিসেবে যারা পরিচিত, তারা। এবং সেই সাথে অল্প কিছু সেন্টার-রাইটে থাকা প্রো-ইসলামিস্ট কিছু তরুণ।

অন্যদিকে ইসলামপন্থী হিসেবে যারা পরিচিত, তাদের সেমিনারগুলো কী নিয়ে? মোস্টলি শরিয়া ব্যবস্থা, খিলাফত প্রতিষ্ঠা, ইসলামোফোবিয়া, পশ্চিমা নারীবাদের বিরোধিতা - প্রভৃতি নিয়ে। এর ব্যতিক্রমও আছে নিশ্চয়ই, কিন্তু এগুলোই প্রধান চিত্র।

দ্বিতীয় বিষয়গুলো যে অপ্রয়োজনীয়, সেটা আমি বলছি না। কিন্তু আপনি যদি শুধু সেগুলো নিয়েই থাকেন; শিক্ষাব্যবস্থা, আইনব্যবস্থা, সংবিধানব্যবস্থা নিয়ে আলাপ না করেন, সেমিনার না করেন, তাহলে ড: ইউনুস আর আসিফ নজরুল যে আপনাকে না চিনে যারা এগুলো নিয়ে আলাপ করছে, তাদেরকেই চিনবে, তাতে আশ্চর্য হওয়ার কী আছে? (আনফরচুনেটলি উনাদের চোখে পড়া বা পরিচিত হওয়াটা প্রধান একটা যোগ্যতা।)

ফলাফলটা কী হবে? এই ধরনের প্রথম কোনো কমিটিতেই আপনি বা আপনার পছন্দের লোকেরা স্থান পাবে না। আপনাদেরকে আন্দোলন করতে হবে, দেশ অচল করার হুমকি দিতে হবে, এরপর পূর্বের কমিটি বাতিল করে আপনাদের সাথে সমঝোতায় আসতে হবে। এটাকে অনেকের কাছে বিজয় মনে হলেও বাস্তবে এটা বিশাল পরাজয়। এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষের সাথে শত্রুতা পাকাপোক্ত হবে, এবং পুরো বিশ্বের সামনেই নেগেটিভ ইমেজ যাবে।

সেজন্যই ইসলামপন্থীদের খিলাফত প্রতিষ্ঠা টাইপের সুদূর এবং তত্ত্বীয় বিষয়কে এই মুহূর্তে কম গুরুত্ব দিয়ে ইমিডিয়েটলি রাষ্ট্রের কাজে লাগে, এরকম বিষয়ে প্রো-অ্যাক্টিভ হওয়া প্রয়োজন। এবং এক্ষেত্রেও শুধু ইসলামপন্থীদেরকে নিয়ে পৃথক সেমিনার না করে যতদূর সম্ভব এলিট, প্রগতিশীল, বামধারার মানুষজনের সাথে মিলে ইনক্লুসিভ সেমিনারে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করা উচিত।

এটা কেন জরুরী, বলি। প্রথমত, শুধু ইসলামপন্থীদের সম্মেলন হলে ইউটোপিয়ান ধ্যান-ধারণা প্রাধান্য পায়। কিন্তু যারা অলরেডি ক্ষমতায়/দায়িত্বে, তাদের সাথে আলোচনা করতে গেলে বাস্তব চিত্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

দ্বিতীয়ত, ডান-বামের মধ্যে যত শত্রুতা, যত ফোবিয়া, তার একটা বড় কারণ হচ্ছে এই দুই শ্রেণির মধ্যে দূরত্ব। এই দূরত্ব যত দূর হবে, দুই পক্ষের মধ্যে ইন্টারেকশন যত বেশি হবে, ভুল বোঝাবুঝি, অনর্থক আতঙ্ক তত দূর হবে।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর উপর হাজার হাজার বিদেশী নিউজ আর্টিকেল এবং প্রচুর বই পড়তে গিয়ে একটা প্যাটার্ন আমি লক্ষ্য করেছি: অধিকাংশ সাংবাদিক বা লেখক, যারা টিপিক্যাল ওরিয়েন্টালিস্ট বয়ান দেয়, তাদের অধিকাংশই জীবনে ঐসব দেশে থাকেনি, ঐসব দেশের মানুষের সাথে ইন্টারেক্ট করেনি। জাস্ট লিমিটেড টাইমের জন্য অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে রিপোর্ট করার জন্য গেছে।

কিন্তু যারা কয়েক বছর ধরে ঐ দেশগুলোতে ছিল, ওখানকার মানুষের সাথে মিশেছে, এরকম আমেরিকান ইহুদি-খ্রিস্টান সাংবাদিকদের কাছ থেকে আমি এত চমত্‍কার, এত সিম্প্যাথেটিক বর্ণনা পেয়েছি, যেটা অনেক মুসলমানের কাছ থেকেও পাওয়া যায় না।

কিছু মানুষ আছে, যারা কখনোই ফিরবে না। কিন্তু এর বাইরে বিপুল সংখ্যক মানুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটানোর জন্য, দূরত্ব কমানোর জন্য নিজেদের গন্ডি থেকে বেরিয়ে এসে তাদের সাথে মেশা প্রয়োজন। প্রো-অ্যাক্টিভ হওয়া প্রয়োজন। সরাসরি তাদের দৈনন্দিন জীবেনকে প্রভাবিত করে, এরকম বিষয়ে বাস্তবসম্মত আলোচনা তাদের সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন।

Toha

28 Sep, 13:51


গাযাবাসীকে কিছুটা রিলিফ দেওয়ার জন্য ফিলিস্তিনের বাইরে সর্বোচ্চ ত্যাগটা শেষ পর্যন্ত ইরানই স্বীকার করল।

হাসান নাসরাল্লাহ শুধুমাত্র লেবানিজ মিলিশিয়া লিডার ছিলেন না, শুধুমাত্র হেজবুল্লাহ প্রধান ছিলেন না; একইসাথে তিনি ছিলেন ইরানের সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ। ইরান দশকের পর দশকের ধরে অস্ত্রশস্ত্র এবং ট্রেনিং দিয়ে নাসরাল্লাহকে এবং তার হেজবুল্লাহকে তৈরি করেছে নিজের প্রধান রক্ষাকবচ হিসেবে। যেন আমেরিকা বা ইসরায়েল কখনও তাদের উপর আক্রমণ করার সাহস না করে।

সেই হেজবুল্লাহর প্রধান নেতাসহ উপরের দিকের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতার মৃত্যু তাই হেজবুল্লাহর জন্য তো বটেই, ইরানের জন্যও অপূরণীয় ক্ষতি।

হেজবুল্লাহ কেন পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধে জড়াচ্ছিল না, এটা বিভিন্ন সময় বলেছি। হেজবুল্লাহর সেই সক্ষমতা নাই। ইনফ্যাক্ট কারোই নাই। হামাসেরও ছিল না। এবং সে কারণে হামাসও চায়নি ইসরায়েলের সাথে "পূর্ণমাত্রায়" যুদ্ধ শুরু করতে। তাদের লিমিটেড অপারেশনের পরিকল্পনা ছিল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বসে পড়ায় সব হিসেব-নিকেশ পাল্টে যায়।

ফলাফল? গাযায় অফিশিয়ালি ৪১ হাজার, আনঅফিশিয়াল লাখ দেড়েক মানুষের মৃত্যু, গাযার অর্ধেক ইনফ্রাস্ট্রাকচার পুরোপুরি ধ্বংস, এবং চারদিক থেকে আবদ্ধ থাকার পরেও লাখ তিন-চারেক মানুষের গাযা ত্যাগ। শুধুমাত্র মিসর বর্ডার ওপেন করেনি বলে; তা না হলে গাযায় যোদ্ধারা ছাড়া আর কোনো সাধারণ মানুষ থাকতে পারত না।

হেজবুল্লাহ যে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরু করেনি, তার একটা কারণ, তারা নিজেদের এই পরিণতি চায়নি। হ্যাঁ, হামাসও ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করতে পারছে, হেজবুল্লাহ হয়তো আরও বেশিই পারত; কিন্তু ইসরায়েলকে "পুরোপুরি পরাজিত" করতে পারত কি? অন্তত এই মুহূর্তে পারত বলে মনে হয় না। এরকম পরিস্থিতিতে নিজেদের লাখ লাখ জনগণের মৃত্যু ডেকে আনা হেজবুল্লাহর জন্য লজিকাল অবস্থান না।

আরও দুইটা সমীকরণও এখানে আছে। প্রথমত, লেবাননে হেজবুল্লাহর দারুণ জনপ্রিয়তা আছে। কিন্তু সেটা এই কারণে যে হেজবুল্লাহ লেবাননের মাটিকে ইসরায়েলের হাত থেকে রক্ষা করেছে। কিন্তু ফিলিস্তিনের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে লেবাননের সাধারণ জনগণ কি রাজি আছে? বিভিন্ন সময় সাক্ষাত্‍কার দেখে সেরকম মনে হয়নি।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি তাদের সমর্থন আছে, সহানুভূতি আছে, কিন্তু তাদের নিজেদেরই অর্থনৈতিক সঙ্কটে জীবন পর্যুদস্ত। সেখানে অন্য একটা দেশের জন্য নিজেদের মৃত্যু ডেকে আনার পক্ষপাতী যদি তারা না হয়, তাদেরকে খুব একটা দোষ দেওয়া যায় না।

দ্বিতীয়ত, ইরানের হিসেব-নিকেশ। গাযাবাসীর জন্য যুদ্ধ করতে গিয়েই যদি হেজবুল্লাহ ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে ইরানের উপর আক্রমণ হলে তাকে রক্ষা করবে কে?

সেজন্যই সরাসরি পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধে জড়ানো হেজবুল্লাহর জন্য কখনোই লজিকাল ছিল না। কিন্তু সরাসরি যুদ্ধে না জড়িয়েই যতটুকু করা সম্ভব, তার সর্বোচ্চটা তারা করেছে। নিয়মিত বিরতিতে নিজেদের যোদ্ধাদের প্রাণের বিনিময়ে ইসরায়েলের বর্ডার স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ করে গেছে। তাদের সীমান্তের সেটলমেন্টগুলোর অন্তত ৩০,০০০ বাসিন্দাকে প্রায় স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করেছে। বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করেছে।

এগুলো সবাই তারা করেছে নিজেদের উপর যেকোনো সময় আক্রমণ শুরু হওয়ার ঝুঁকি নিয়েই। এবং শেষপর্যন্ত সেটাই হয়েছে।

এই যুদ্ধের ভবিষ্যত কী? জানি না। হেজবুল্লাহ এই মুহূর্তে কতটুকু পাল্টা আক্রমণ করতে পারবে, নিশ্চিত না। তাদের এত বেশি টপ কমান্ডার মারা গেছে, গুছিয়ে উঠতে বেশ সময় লাগার কথা। আমার ধারণা পাল্টা আক্রমণ - সেটা যতটকুই হোক - হেজবুল্লাহর কাছ থেকে আসা সম্ভব না। সেটা আসবে ইরাক, সিরিয়া, এবং সবচেয়ে বেশি হুথিদের কাছ থেকে। মোস্ট প্রবাবলি হুথিরাই হবে আগামী দিনের হেজবুল্লাহ।

নাসরাল্লাহ ফেরেশতা ছিলেন না। দুনিয়ার কেউই ফেরেশতা না। সিরিয়া যুদ্ধে নাসরাল্লাহর এবং তার বাহিনী হেজবুল্লাহর হাতে প্রচুর নিরাপরাধ মানুষের রক্ত আছে। কিন্তু সবকিছুর পরেও হাসান নাসরাল্লাহই এই যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদেরকে একটুখানি রিলিফ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। পুরোপুরি যুদ্ধে না জড়ানোর সর্বশেষ সীমানায় দাঁড়িয়ে ইসরায়েলের উপর আক্রমণ করে গেছেন।

আল্লাহ সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহর সকল অপরাধ ক্ষমা করে তাকে শহিদ হিসেবে কবুল করে নিক।