_______
কথিত যুদ্ধাপরাধী আদালতের কথিত বিচারপতি এবং সরকারের আইনজীবীর ফাঁস হওয়া একটি মন্তব্য ভাইরাল হয়েছিল— 'আমি খাড়ায়া যামু, আপনি বসায়া দেবেন।'
এই ঘটনা মূলত একটি রাজনৈতিক ও আদর্শিক বাস্তবতাকে তুলে ধরে, যেখানে আওয়ামী লীগ এবং তাদের সহযোগী কালচারাল বামেরা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ইকোসিস্টেম গড়ে তুলেছিল। এই ইকোসিস্টেমের লক্ষ্য ছিল এমন এক শ্রেণির 'বুদ্ধিজীবী' তৈরি করা, যারা দলীয় অপকর্মকে স্যানিটাইজ করার দায়িত্ব নেবে।
তাদের ভূমিকা ছিল একদিকে সরকারের ভুলত্রুটিকে ন্যায্যতা দেওয়া, অন্যদিকে সমালোচনা আসলে তা বিএনপি-জামায়াতের সাথে মিশিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের দায় লঘু করা। এভাবে, সরকার-বিরোধী যেকোনো সমালোচনাকে নিরপেক্ষ না রেখে একটি তুলনামূলক কাঠামোর মধ্যে ফেলে দেওয়া হতো, যা শেষ পর্যন্ত মূলত আওয়ামী লীগকেই সুবিধা দিত।
এরই প্রতিফলন দেখা যায় আনু মোহাম্মদের ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারির এক বক্তব্যে, যেখানে তিনি লিখেছিলেন—
❝ ‘জনগণ ছাড়া নির্বাচন’ আর ‘জনগণ ছাড়া আন্দোলন’ই যদি হয় দুই প্রধান দলের রাজনীতির পরিচয়, তাহলে তার ভয়াবহতায় জনগণের জীবন দুর্বিষহ হবে তাতে তো অবাক হওয়ার কিছু থাকে না। সে জন্যই ৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে অবিরাম সহিংসতা। ❞
চিন্তা করুন! সে সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার ১৫৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে ইতিহাসের উদ্ভটতম সরকার গঠন করেছে। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার, শত শত নেতা-কর্মীকে গুম ও ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে। বিএনপির কর্মীরা মাঠে নামলেই সরাসরি গুলি করা হয়েছে। আর আনু মোহাম্মদেরা বক্তব্য দিচ্ছে ‘জনগণ ছাড়া নির্বাচন’ আর ‘জনগণ ছাড়া আন্দোলন’—এই দুই প্রক্রিয়া সমান! কতটা অনৈতিক হলে এমন বক্তব্য দেওয়া সম্ভব?
এটাই ছিল কালচারাল বামদের ভূমিকা—সরকারের দমন-পীড়নের সমালোচনা করতে গিয়ে সেটাকে ‘সমান দায়’ তত্ত্বে পরিণত করা, যেন মূল অপরাধী পার পেয়ে যায়।
সেই আনু মোহাম্মাদেরা এখনো সক্রিয়...