Reflections @reflections_nayla Channel on Telegram

Reflections

@reflections_nayla


Ustaza Nayla Nuzhat’s Telegram Channel

🍃কমেন্টের ক্ষেত্রে অনুগ্রহ করে ইসলামী বিধিনিষেধ মেনে চলুন🍃

🚫অনুগ্রহ করে মাস'আলা জিজ্ঞেস করবেন না

Reflections (Bengali)

মনোযোগ দিন! আপনার জীবনের প্রতিটি ক্ষণের মধ্যে একটি চিন্তনশীল অংশ হতে পারে এই 'Reflections' টেলিগ্রাম চ্যানেল। Ustaza Nayla Nuzhat এই চ্যানেলের মূল নির্দেশিকা যেখানে মোটামুটি সব বিষয়ে আলোচনা চলছে। এই চ্যানেলে ইসলামী বিধিনিষেধ মেনে চলার অনুরোধ করা হচ্ছে। আপনি এখানে মাস'আলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে পারবেন না। তাই, 'Reflections' চ্যানেলে যোগদান করে নতুন জ্ঞান ও আলোকিত হোন আপনার জীবনের প্রতিটি চিন্তা।

Reflections

10 Feb, 11:43


প্রশ্ন: রমাদান মাসে মুসলিম আল্লাহর কাছ থেকে বহুগুণ সওয়াব অর্জনের চেষ্টা করে। তাহলে, যেসব দিনে আমার কোনো শরঈ ওজর থাকে না, সেসব দিনে আসরের সময়টি কুরআন তেলাওয়াত করে কাটানো উত্তম হবে, নাকি আমার মাকে ইফতার প্রস্তুতে সাহায্য করা শ্রেয় হবে?

উত্তর: এই প্রশ্ন দেখে মনে হচ্ছে তিনি (যিনি প্রশ্ন করেছেন) সৎ ও খাইরের পথের অনুসারী, তবে প্রশ্ন থেকে বোঝা যাচ্ছে যে তিনি তার মায়ের ওপর ইফতার ও খাবার প্রস্তুতের দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন। অথচ উচিত ছিল তিনি নিজেই এই কাজ করবেন এবং তার মাকে এই কষ্ট ও পরিশ্রম থেকে মুক্তি দিবেন। যদি তিনি তার বাবা-মা, ভাই-বোন ও পরিবারের জন্য খাবার প্রস্তুত করেন, তবে নিঃসন্দেহে এটি তার মায়ের প্রতি সেরা সেবা ও সম্মান প্রদর্শনের কাজ হবে।

তবে, যদি মা নিজেই রান্না করতে আগ্রহী থাকেন, তাহলে তাকে সাহায্য করাই পড়ার (তিলাওয়াতের) চেয়ে উত্তম হবে। আর কুরআন তিলাওয়াত বা অধ্যয়ন করার জন্য তো অন্য সময় বেছে নেয়া যেতে পারে। আলহামদুলিল্লাহ, কুরআন শোনারও অনেক ফজিলত রয়েছে, তাই হাত দিয়ে কাজ করতে করতেও কুরআন শোনা সম্ভব, এতে দুটো কল্যাণ একসঙ্গে অর্জিত হবে (মাকে সাহায্য করা আর তিলাওয়াত শোনা)। আর অন্য সময়ে পড়া ও তিলাওয়াতের জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করা যেতে পারে।

~ শায়খ আব্দুল করিম আল খুদাইর হাফিজাহুল্লাহ

https://shkhudheir.com/fatawa/800944170

Reflections

03 Feb, 09:35


সিয়ামের প্রভাব:

১. সিয়াম তাকওয়া বৃদ্ধি করে — সিয়াম মানুষকে গুনাহ থেকে রক্ষা করে, আত্মশুদ্ধির প্রশিক্ষণ দেয় এবং আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপনের শিক্ষা দেয়।

২. সিয়ামের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি ঘটে— সিয়াম মানুষকে হারাম থেকে দূরে রাখে, প্রবৃত্তির নিয়ন্ত্রণ শেখায়, ধৈর্য্যের মিষ্টতা উপলব্ধি করায় এবং মুসলিমের ব্যক্তিত্বে দৃঢ়সংকল্প ও আত্মনিয়ন্ত্রণ গড়ে তোলে।

৩. সিয়াম সামাজিক প্রশিক্ষণ দেয়—এতে ধনী মুসলিম দরিদ্র মুসলিমের কষ্ট অনুভব করতে পারে, তার অবস্থা স্মরণ করে, তার প্রতি দয়া প্রদর্শন করে এবং সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়।

. সিয়াম মানুষকে আমানতের গুরুত্ব নিয়ে শিক্ষা দেয়—কারণ এটি এমন একটি ইবাদাহ যা গোপনে পালন করা হয়। ফলে ব্যক্তি সততা ও আমানত রক্ষা করার অভ্যাস গড়ে তোলে, এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে মানুষের হক সংরক্ষণ করতে শেখে।

৫. সিয়াম আত্মশুদ্ধি, চরিত্র গঠনের প্রশিক্ষণ দেয়

. সিয়াম মুসলিম সমাজের জন্য শিক্ষা —এর মাধ্যমে ঐক্য, শক্তি, একতা, উম্মাহর সুখ ও মর্যাদা প্রকাশ পায়।

সিয়ামের মাধ্যমে গোটা উম্মাহ একটি কথার ওপর ঐক্যবদ্ধ হয়, একই ইবাদাহ পালন করে এবং দরিদ্রদের প্রয়োজন অনুভব করে।

৭. সিয়াম মানুষকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে সচেতন করে এবং একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনার সাথে জীবন পরিচালনার শিক্ষা দেয়।

সূত্র:

https://www.alukah.net/spotlight/0/56349/تزكية-النفس-في-الإسلام-الصوم-أنموذجا/#_ftn4

Reflections

01 Feb, 03:12


রামাদান প্রসঙ্গে কিছু ভাবনা:


১. দোয়া করা:

সালাফ ও উম্মতের নেককার পূর্বসূরিরা রামাদানের পর ছয় মাস ধরে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন যেন তিনি তাদের রামাদানের আমল কবুল করেন। এরপর পরবর্তী ছয় মাস তাঁরা দোয়া করতেন যাতে আল্লাহ তাঁদেরকে পরবর্তী রামাদান পর্যন্ত পৌঁছে দেন। এখন, যাকে আল্লাহ জীবন দিয়েছেন এবং তিনি এ রামাদান পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছেন, তাঁর করণীয় কী? তিনি তাঁর জীবনে কী পরিবর্তন আনবেন?

২. আমল একমাত্র আল্লাহর জন্য করা:

এ মাসে মুসলিম তার সময় সিয়াম, সালাত, কাজ, বিশ্রাম, ইবাদতে আত্মনিয়োগ এবং আকাশ ও জমিনের মালিকের নৈকট্য লাভে ব্যয় করে। তাই আমাদের উচিত, সব কাজ শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা এবং এমন কিছু থেকে দূরে থাকা যা আমাদের আমল বাতিল করতে পারে।

৩. সিয়ামের প্রকৃত শিক্ষা:

সিয়াম মানে ক্লান্তি, বিষন্নতা বা মুখ গম্ভীর করে থাকা নয়। বরং এটি ছোট-বড় সকল নেক কাজের মাধ্যমে সোয়াব অর্জনের একটি সুবর্ণ সুযোগ। হাসিমুখে থাকা, কাউকে সাহায্য করা, আশেপাশের মানুষের প্রতি সদয় হওয়া—এগুলো সবই অনেক সওয়াব অর্জনের মাধ্যম।

৪. সালাতের গুরুত্ব:

সালাত দ্বীনের মূল স্তম্ভ, এবং এই মাসে তা আরও যত্নের সঙ্গে আদায় করা উচিত। কিন্তু শুধু সালাত আদায় করাই যথেষ্ট নয়, বরং তা যথাসময়ে এবং আউয়াল ওয়াক্তে আদায় করা উচিত। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত মসজিদে আজানের আগেই পৌঁছানো, প্রথম তাকবির মিস না করা এবং আজান ও ইকামার মধ্যবর্তী সময়ে কুরআন তিলাওয়াত ও জিকিরে ব্যস্ত থাকা।

৫. সময়ের সদ্ব্যবহার:

এ মাসের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। প্রতিটি সেকেন্ডকে কাজে লাগানো জরুরি—হোক তা জিকির, তাসবিহ, কুরআন তিলাওয়াত, বা অন্য কোনো ইবাদতে। আল্লাহ আমাদের জন্য দ্বীনকে সহজ করেছেন, কারণ জিকির করা যায় দাঁড়িয়ে, বসে বা শুয়ে যে কোনো অবস্থায়, যে কোনো সময় ও স্থানে। কিন্তু সমস্যা হলো, আমরা এই নিয়ামতের মূল্য বুঝি না এবং যথাযথভাবে কাজে লাগাই না।

৬. কুরআন তিলাওয়াত ও দোয়া:

কুরআন গভীরভাবে বোঝার চেষ্টা করা, সালাতে এবং দোয়ায় মনোযোগী হওয়া, এবং আত্মশুদ্ধির জন্য সবরের অভ্যাস করা জরুরি। এই বরকতময় মাসের সময়কে কাজে লাগাতে হবে।

৭. দোয়ায় খুশু অথচ কুরআন পাঠে উদাসীনতা:

আমরা অনেক সময় কুনুত দোয়ায় একাগ্রতা ও অশ্রুসিক্ত হৃদয় নিয়ে আল্লাহর কাছে চাই, কিন্তু কুরআন তিলাওয়াতের সময় মনোযোগ হারাই। কখনো কি ভেবে দেখেছি কেন এমন হয়?

৮. শেষ দশ রাতের গুরুত্ব:

রামাদান পুরোপুরি খাইরে ভরপুর, আর শেষ দশকের মধ্যে রয়েছে কদরের রাত, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। কিন্তু কিছু মানুষ ঈদের প্রস্তুতি, কেনাকাটা বা আত্মীয়দের কাছে ভ্রমণের জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ রাতগুলো নষ্ট করে ফেলে। আমাদের উচিত আগে থেকেই পরিকল্পনা করা যেন এই রাতগুলোর কোনো মুহূর্তও হারিয়ে না যায়।

৯. ওমরাহর জন্য সঠিক পরিকল্পনা:

অনেকেই রামাদানে ওমরাহ করতে চায়, কিন্তু ভুল পরিকল্পনার কারণে ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ সালাত ও অন্যান্য ইবাদত মিস করে। তাই সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে ওমরাহর জন্য সময় নির্ধারণ করা উচিত, যাতে ইবাদতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।

১০. তারাবির জন্য নির্দিষ্ট ইমামের অনুসরণে ভারসাম্য রাখা:

অনেকে সুন্দর ক্বারির কণ্ঠ শুনতে দূরবর্তী মসজিদে যান, যা অবশ্যই ভালো। তবে এটি ফরজ সালাত বা সময়ানুবর্তিতার ব্যাঘাত ঘটানোর কারণ হওয়া উচিত নয়।

১১. ট্রাফিক আইন ও অন্যদের সম্মান করা:

তারাবির সময় মসজিদের চারপাশে যানজট হয়। কেউ কেউ গাড়ি ভুলভাবে পার্ক করে অন্যদের কষ্ট দেয়। আমাদের উচিত নিশ্চিত করা যে আমাদের কার্যকলাপ অন্যদের জন্য অসুবিধার কারণ না হয়।

১২. নারীদের মসজিদে আসার আদব:

নারীদের মসজিদে আসা একটি ভালো উদ্যোগ, তবে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার—যেমন সুগন্ধি পরিধান না করা, উচ্চ স্বরে কথা না বলা, সঠিক পর্দা করা এবং শিশুদের এমনভাবে নিয়ে আসা যাতে তারা অন্যদের ইবাদতে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে।

১৩. সন্তানের ধর্মীয় শিক্ষা:

অনেক পিতা-মাতা মসজিদে আসেন, কিন্তু তাঁদের সন্তানদের তদারকি করেন না, যার ফলে তারা সালাতের পরিবেশ নষ্ট করে। পিতা-মাতার উচিত সন্তানদের নিয়ন্ত্রণ করা ও তাদের ইবাদতের প্রতি উৎসাহিত করা।

১৪. ছোট মুসহাফ সাথে রাখা:

যেহেতু এটি কুরআনের মাস, তাই ছোট মুসহাফ সবসময় সাথে রাখা উচিত, যাতে প্রতিটি ফাঁকা সময় কুরআন পড়ে কাজে লাগানো যায়।

১৫. নারীদের তারাবির সময় সারি বিন্যাসের শৃঙ্খলা:

নারীদের সালাতের সময় সামনের সারিতে না দাঁড়িয়ে পেছনে গিয়ে ভিড় করা একটি সাধারণ সমস্যা। আমাদের উচিত সালাতের সারি সঠিকভাবে বিন্যস্ত করা।

১৬. নারীদের সময় ব্যবস্থাপনা:

নারীদের উচিত বাড়ির কাজ ও ইবাদতের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা। স্বামীর সঙ্গে সমন্বয় করে খাবার প্রস্তুত করা এবং অধিকাংশ সময় ইবাদতে ব্যয় করা উচিত।

১৭. অতি আহার এড়ানো:

Reflections

01 Feb, 03:12


অনেকেই ইফতারে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলে, ফলে তারাবির সময় একাগ্রতা হারিয়ে ফেলে। আমাদের উচিত রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সুন্নাহ অনুসারে খাদ্য গ্রহণ করা: “তোমার খাদ্যের এক-তৃতীয়াংশ খাবারের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য, এবং এক-তৃতীয়াংশ শ্বাসের জন্য রেখো।”

১৮. মসজিদের শৃঙ্খলা বজায় রাখা:

কেউ কেউ মসজিদে এসির তাপমাত্রা বাড়িয়ে বা কমিয়ে অন্যদের জন্য অসুবিধা সৃষ্টি করে। এটি মসজিদের ইমাম বা মোয়াজ্জিনের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত।

১৯. ইমামের সঙ্গে বিতর্ক এড়ানো:

কেউ কেউ সালাত দীর্ঘ হলে বা ইকামা বিলম্বিত হলে ইমামের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। এটি বিরোধ সৃষ্টি করে, যা রামাদানের শিক্ষার পরিপন্থী।

২০. রামাদানে খাদ্য নষ্ট করা এড়ানো:

কিছু মানুষ রামাদানে খাবার নষ্ট করে, অথচ আমাদের উচিত গরীব ও দুস্থদের কথা চিন্তা করা। অপচয় না করা।

২১. আত্মপর্যালোচনা:

প্রতিদিন আমাদের আমল যাচাই করা উচিত এবং ভুল হলে দ্রুত সংশোধন করা উচিত।

২২. মিডিয়ার প্রভাব:

মিডিয়া আমাদের দ্বীনদারির সহায়ক হতে পারে, আবার তা ধ্বংসও করতে পারে। আমাদের উচিত সময়কে শুধুমাত্র ইবাদতে ব্যয় করা।

২৩. গীবত ও হারাম থেকে বিরত থাকা:

অনেকে সিয়াম পালন করলেও গীবত, দৃষ্টির হারাম, ও অন্তরের কুপ্রবৃত্তির মাধ্যমে তাদের সিয়াম নষ্ট করে ফেলে।

-----

আল্লাহ আমাদের আমল কবুল করুন, আমাদের রামাদানকে বরকতময় করুন এবং লাইলাতুল কদর পাওয়ার তাওফিক দিন। আমিন!

(
আরবী থেকে অনুবাদ করা)

Reflections

31 Jan, 18:53


রামাদানের পরিকল্পনা ও সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার

ভালো পরিকল্পনা করুন

রামাদানের জন্য কিছুটা পরিকল্পনা করা সময় ও পরিশ্রম বাঁচাতে সহায়ক হতে পারে। তাই, পরিবারের সদস্যদের একত্রিত হয়ে কাজের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া উচিত। এটি মায়ের ওপর চাপ কমাবে এবং পুরো পরিবারে সহযোগিতার পরিবেশ তৈরি করবে। এছাড়া, পুরো মাসের জন্য খাবারের একটি তালিকা তৈরি করলে প্রতিদিন কী রান্না হবে তা নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন হবে না, যা আরও বেশি ইবাদত ও আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার সুযোগ করে দেবে।

নিজেকে অতিরিক্ত চাপ দিবেন না

অনেকেই রামাদানে অসংখ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করেন—একাধিকবার কুরআন খতম করা, প্রতিদিন তারাবিহ সালাতে যাওয়া, দান-সদকায় ব্যস্ত থাকা ইত্যাদি। যদিও এসব লক্ষ্য থাকা উত্তম, কিন্তু নিজের ওপর অত্যধিক চাপ দিলে তা হতাশার কারণ হতে পারে এবং কোনো একটা কাজও সম্পন্ন করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই, এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করুন যা বাস্তবসম্মত।

অগ্রাধিকার নির্ধারণ করুন

নিজের সঙ্গে বসে ভাবুন, রামাদানে কোন বিষয়গুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু এটি কুরআনের মাস, তাই আল্লাহর ইবাদত ও কুরআন তিলাওয়াতকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এরপর অন্যান্য বিষয় নিয়ে ভাবুন।

পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন

অনেকেই মনে করেন যে, রামাদানে ঘুমানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় নেই। তবে সঠিকভাবে সময় পরিকল্পনা করলে ঘুমের জন্যও পর্যাপ্ত সময় বের করা সম্ভব। যদি অগ্রাধিকার ঠিক রাখা হয়, তবে এশার সালাতের পর থেকে ফজরের আগে পর্যন্ত বিশ্রাম নেওয়া সম্ভব। কিন্তু যদি অপ্রয়োজনীয় কাজে সময় ব্যয় করা হয়, তবে ঘুমের জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া কঠিন হবে।

পুষ্টিকর ও হালকা খাবার গ্রহণ করুন

রামাদানে সুস্থ ও সক্রিয় থাকার জন্য ভারী খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। অতিরিক্ত তেলযুক্ত ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে হালকা ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন। সীমিত পরিমাণে মিষ্টি ও পানীয় গ্রহণ করুন এবং তার পরিবর্তে ফলমূল ও পর্যাপ্ত পানি পান করুন। এটি আপনাকে দিনের বেলায় কর্মক্ষম রাখবে এবং ক্লান্তি এড়াতে সহায়তা করবে।

অতিরিক্ত পরিশ্রম ও ক্লান্তি এড়িয়ে চলুন

নিজের শারীরিক অবস্থার প্রতি সচেতন থাকুন। যদি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেমন—উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস থাকে, তবে সিয়ামের সময় অতিরিক্ত পরিশ্রম করা উচিত নয়। প্রয়োজনীয় কাজগুলো ইফতারের পর করা ভালো। আর যদি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকেন, তাহলে দিনের বেলায় প্রয়োজনীয় কাজ সেরে রাতকে ইবাদতের জন্য সংরক্ষণ করুন। দীর্ঘ ভ্রমণ বা কঠোর পরিশ্রমের কাজ রামাদানের আগে বা পরে সম্পন্ন করাই উত্তম।

সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করুন

রামাদানের দিনগুলো সীমিত এবং এটি বছরে মাত্র একবার আসে। তাই প্রতিটি মুহূর্ত কল্যাণকর কাজে ব্যয় করা উচিত। অপ্রয়োজনীয় কাজে সময় নষ্ট না করে ইবাদত, দান-সদকা এবং নেক আমলে মনোযোগ দেওয়া উচিত। অতিরিক্ত সময় রান্নায় ব্যয় না করে সহজ ও কম সময়ে তৈরি করা যায় এমন খাবার বেছে নেওয়া উত্তম। রামাদানের সময়টিকে সর্বোচ্চ উপায়ে কাজে লাগানোই বুদ্ধির কাজ।


(আরবী পোস্ট থেকে সংগৃহীত)

Reflections

31 Jan, 18:33


রমজান মাসে একজন মুসলিমের সারাদিন :

https://islamqa.info/bn/answers/26869/রমজন-মস-একজন-মসলমর-জনয-পরসতবত-রটন

Reflections

31 Jan, 03:02


শায়খ খালিদ আস সাবতের পরিচালনায় এখানে অনেক আগে থেকেই দ্বীনের অনেক বড় বড় কাজ চলছে। এখন ইংলিশে পাওয়া যাচ্ছে কিছু কাজ। এই সাইটটি নির্ভরযোগ্য, জ্ঞান অর্জনের জন্য।

https://dorar.net/en

Reflections

30 Jan, 21:48


শিশুদের জন্য রামাদানের সিয়ামের ফজিলত ও তাৎপর্য

রামাদান মাসে সিয়াম পালন করা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি শুধু সিয়াম রাখা নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য, কৃতজ্ঞতা ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি বিশেষ সুযোগ। শিশুদের রামাদানের সিয়ামের গুরুত্ব বোঝাতে সহজ ও আকর্ষণীয় উপায়ে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।

১. রামাদানে সিয়ামের গুরুত্ব

• সিয়াম ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি।
• এটি আল্লাহর আদেশ পালন এবং তাকওয়া অর্জনের মাধ্যম।
• শুধু খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থাকা নয়, বরং মন্দ কাজ ও কথাবার্তা থেকে দূরে থাকা এবং সদাচরণ ও নৈতিক গুণাবলী চর্চা করা।

২. সিয়ামের ফজিলত

• গুনাহ মাফের সুযোগ: রামাদানে সিয়াম পালনের মাধ্যমে আগের গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়।
• জান্নাতে প্রবেশের বিশেষ দরজা: রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “জান্নাতে ‘রাইয়ান’ নামক একটি দরজা আছে, যা শুধুমাত্র সিয়াম পালনকারীদের জন্য।”
(বুখারী ও মুসলিম)
• তাকওয়া অর্জন
(সূরা আল-বাকারা: ১৮৩)
• আল্লাহর বিশেষ পুরস্কার

৩. শিশুদের জন্য সিয়ামের সহজ শিক্ষা

শিশুরা যাতে সিয়ামের শিক্ষা সহজে বুঝতে পারে, সে জন্য কিছু মজার ও আকর্ষণীয় পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে:

সিয়ামের পুরস্কার বোঝানো:
• শিশুদের বোঝানো যেতে পারে যে সিয়াম রাখলে তারা আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করবে।
• তাদেরকে বলা যেতে পারে যে সিয়াম পালনকারীদের জন্য জান্নাতে বিশেষ পুরস্কার অপেক্ষা করছে।

ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখানো:
• সিয়াম শুধু খাবার থেকে বিরত থাকা নয়, বরং রাগ নিয়ন্ত্রণ করা, ভালো ব্যবহার করা, ও ধৈর্য শেখার অনুশীলন।

সিয়ামের আনন্দ ও ইফতারের গুরুত্ব:
• শিশুরা যেন ইফতার প্রস্তুতিতে অংশ নিতে পারে, এতে তাদের সিয়ামের প্রতি আগ্রহ বাড়বে।
• পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে ইফতার ও সেহরি করা, যাতে তারা রামাদানের পরিবেশ অনুভব করতে পারে।

৪. রামাদানের শিক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধ

• দানশীলতা ও সহানুভূতি: শিশুরা যেন বোঝে যে সিয়াম কষ্ট পাওয়া নয়, বরং গরিব-দুঃখীদের কষ্ট অনুভব করার মাধ্যম।
• সততা ও আমানতদারি: তাদের শেখাতে হবে সিয়ামের সময় সত্য বলা, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা এবং দায়িত্ব পালন করা।
• শরিয়ত মেনে চলা: শিশুরা যেন সালাত, কুরআন তিলাওয়াত ও দোয়ার প্রতি আগ্রহী হয়।

শিশুদের সিয়ামের শিক্ষা দিতে হলে তাদের জন্য বিষয়গুলো সহজ, মজার ও উপভোগ্য করতে হবে। শিশুদের রামাদানের প্রকৃত শিক্ষা বোঝানো গেলে তারা ভবিষ্যতে আরও সচেতন হয়ে পরিপূর্ণ সিয়াম পালন করতে পারবে ইন শা আল্লাহ।

(আরবী আর্টিকেল থেকে সংগৃহীত)

Reflections

30 Jan, 21:40


💡রামাদান মাস: শিশুদের জন্য

রামাদান হলো হিজরি বর্ষের নবম মাস, যা শাবান মাসের পরে আসে। এ মাসে আল্লাহ তাআলা মুসলিমদের জন্য সিয়াম ফরজ করেছেন। রামাদান মাসের সময়কাল ২৯ বা ৩০ দিন, যা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে।

রামাদান মাসে সিয়ামের বিধান

রামাদান মাসে মুসলিমরা ফজরের সূচনা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য, পানীয় এবং সিয়াম ভঙ্গকারী কাজ থেকে বিরত থাকে। এটি আত্মশুদ্ধি, আল্লাহর আনুগত্য এবং তাকওয়া অর্জনের মাধ্যম।

রামাদানের বিশেষ ফজিলত

এই মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে, যা মানবজাতির জন্য হিদায়াতের উৎস।
লাইলাতুল কদর রামাদান মাসে রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম
জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়
নেক আমলের সওয়াব বহুগুণে বৃদ্ধি পায়

💡রামাদানের আদব

রামাদান মাসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আদব অনুসরণ করা উচিত, যেমন:
সেহরি খাওয়া এবং ইফতারে দেরি না করা
বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা
তারাবিহ সালাত আদায় করা
দান-সদকা ও সৎকর্ম করা
মিথ্যা কথা, গীবত ও অনর্থক কাজ থেকে বিরত থাকা

💌শিশুদের জন্য রামাদানের শিক্ষা

শিশুদের রামাদান মাসের গুরুত্ব, সিয়ামের নিয়মাবলী এবং এর ফজিলত সম্পর্কে শেখানো উচিত, যাতে তারা ছোটবেলা থেকেই ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ সম্পর্কে সচেতন হতে পারে

---------

🖋️রামাদান: নৈতিক শিক্ষা ও আত্মউন্নয়নের সুযোগ

পিতামাতারা এই সুযোগটি ব্যবহার করে শিশুর মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো গড়ে তুলতে পারেন:

১. ঈমানী চেতনা বৃদ্ধি করা

শিশুরা কেন রামাদানে সিয়াম পালন করে এবং এর উদ্দেশ্য কী— এ বিষয়ে তাদের সাথে আলোচনা করা।
• রামাদানের হিকমত ও শিক্ষাগুলো সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা।

২. রামাদানকে আনন্দময় অভিজ্ঞতা হিসেবে উপস্থাপন করা

• শিশুদের যেন মনে না হয় রামাদান কেবল সিয়ামের কষ্ট ও ক্লান্তির মাস


৩. ধৈর্য শেখানো

• শিশুরা যখন ক্ষুধা ও পিপাসা সহ্য করে ইফতার পর্যন্ত অপেক্ষা করে, তখন তাদের মনে করিয়ে দিতে হবে যে এটি ধৈর্যের অনুশীলন
• তাদের বলা যেতে পারে: “তোমরা যে ধৈর্য দেখাচ্ছো, এটি ‘সবরুন জামীল’ (সুন্দর ধৈর্য), আর আল্লাহ এর জন্য উত্তম পুরস্কার দিবেন।”


৪. দায়িত্বশীলতা ও পরোপকারিতা শেখানো

• শিশুদের কাজ করার ও অন্যকে সাহায্য করার ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন করা
• তাদের একটি নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া, যা তারা পুরো রামাদান মাসে পালন করবে, যেমন:
• পরিবারের জন্য পানি নিয়ে আসা
• ঘর পরিষ্কারে অথবা রান্নাঘরে সহায়তা করা
• ছোট ভাই-বোনদের দেখাশোনা করা

রামাদানে শিশুদের মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ গড়ে তোলার উপায়:

১. দানশীলতা শেখানো


২. ঈমানী শিক্ষা

• শিশুরা অনেক সময় ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে আগ্রহ হারায় বা বিরক্তি অনুভব করে। তবে, তাদের নতুন নতুন ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে যুক্ত করা যেতে পারে।
• যেমন: কোনো নবী বা সহবার জীবনী শোনানো।
• এমন আলোচনা শুনতে দেয়া যা কুরআনের গল্প বা নবীদের জীবনের ওপর ভিত্তি করে বলা। (বড়দের উপস্থিতিতে)


৩. সহানুভূতির সম্পর্ক বজায় রাখা

• পরিবারে সহানুভূতির ভিত্তিতে একে অপরকে সহায়তা করা উচিত, যেমন প্রত্যেকের প্রয়োজন পূরণের প্রতি মনোযোগ দেওয়া।
• বাবা-মায়ের উপর সব কাজের ভার না দিয়ে পরিবারে একে অপরের কাজে সহায়তা করা
রামাদান হলো সহানুভূতি শেখার মাস, বিশেষত যখন আমরা একে অপরকে সম্মান ও ক্ষমা করতে শিখি, এমনকি যদি আমাদের কারো সঙ্গে কোনো মতপার্থক্য থাকে, তারপরও।

৪. সিয়ামের মূল উদ্দেশ্য বুঝানো

• শিশুকে সিয়ামের পূর্ণ অর্থ বোঝানো জরুরি, যে এটি এক ধরনের আত্মশুদ্ধি। এটি তাকওয়া অর্জনের মাধ্যম (কিভাবে তাকওয়া অর্জন করা যায় সেটাও বুঝানো)


৫. রামাদানে রুটিন মেনে চলা
• রামাদান নিয়ম মেনে চলার মাস।
• আমরা একই সময় সেহরি খাই, ইফতার করি, এবং নামাজ পড়ি
• শিশুদের অতিথির প্রতি শ্রদ্ধা, সময়ের গুরুত্ব এবং পরিকল্পিত জীবনধারা শেখানো যায়।

৬. পারিবারিক ঐক্য

একসাথে খাবার খাওয়া, গল্প করা, কুরআন তিলাওয়াত করা এবং সালাতে একত্র হওয়া পরিবারে সুদৃঢ় সম্পর্ক ও একাত্মতার ভিত্তি গড়ে তোলে।


৭. সৎ ও নৈতিক শিক্ষা

• রামাদানে সত্যবাদিতা শেখানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। (সারাবছরই গুরুত্বপূর্ণ) রামাদান এ তারা যে ভালো কাজগুলো করে, সেসব যে অন্য সময়ও তারা করতে সক্ষম এই বিষয়ে তাদের সচেতন করতে হবে।


৮. বিশ্বাস ও কর্তব্য পালন

• আমানত রক্ষার বিষয়ে শেখানো
• আমরা শিশুদের ছোট ছোট দায়িত্ব দিতে পারি, যেমন পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছে খাবার পৌঁছানো, অথবা কোনো ইসলামী মেসেজ পাঠানো (একা ফোনের সাথে ছেড়ে দেয়া যাবে না।)

{কিছু আরবী আর্টিকেল থেকে সংগৃহীত}

Reflections

30 Jan, 00:14


রামাদান: পরিবর্তনের মৌসুম

রামাদান মুসলিমদের জীবনে পরিবর্তন আনার সুবর্ণ সুযোগ এবং রূপান্তরের মৌসুম; যার মাধ্যমে সেই লক্ষ্য অর্জিত হয়, যার জন্য সিয়াম ফরজ করা হয়েছে। আর তা হলো, তাকওয়া অর্জন করা।

এই সুযোগগুলোর মধ্যে প্রথমটি হলো আকিদা মজবুত করা এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার জন্য নিয়তকে খাঁটি করা। কারণ সিয়াম এমন একটি ইবাদত, যা অন্য ইবাদতের মতো রিয়া দ্বারা প্রভাবিত হয় না। তাই আল্লাহ এর প্রতিদান নিজে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার পরিমাণ তিনি ছাড়া কেউ জানে না। রাসূলুল্লাহ ﷺ তার রবের পক্ষ থেকে বর্ণনা করে বলেছেন:

“আদম সন্তানের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য, তবে সিয়াম ব্যতিক্রম; এটি আমার জন্য, এবং আমি নিজে এর প্রতিদান দেব।”

(সহীহ আল বুখারী ১৯০৪)

এই বরকতময় মাসে নিজের মাঝে পরিবর্তন আনার মূল্যবান সুযোগগুলোর মধ্যে আরেকটি হলো ইবাদতে স্থিতিশীলতা অর্জন করা এবং আত্মাকে আনুগত্যের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া, ফরজগুলো রক্ষা করা, নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা এবং রামাদানের পরেও তা অব্যাহত রাখা। যেন সালাত, সিয়াম, যাকাত ইত্যাদি ইবাদত একজন মুসলিমের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। সে সেগুলো সন্তুষ্টি, আত্মসমর্পণ, আনুগত্য এবং ঈমান- এর সাথে এবং সওয়াবের আশায় পালন করে। ফলে সেগুলো তার চোখের শীতলতায় পরিণত হয়, যেমন হাদিসে এসেছে:

“আমার চোখের শীতলতা সালাতে রাখা হয়েছে।”

(আন নাসাঈ ৩৯৩৯)

রামাদান ধৈর্য, সত্যবাদিতা, সহনশীলতা, ধীরস্থিরতা, বিনয় ইত্যাদি সমস্ত উত্তম গুণাবলী অর্জনের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ। পাশাপাশি এটি সমস্ত নিন্দনীয় গুণাবলী, যেমন: সবরের অভাব, মিথ্যা, প্রতারণা, অহংকার, বিদ্বেষ, হিংসা ইত্যাদি পরিত্যাগ করার সুযোগ। কারণ সিয়াম রুহকে পরিশুদ্ধ করে এবং তাকে উত্তম চরিত্র ও সদাচরণের দিকে পরিচালিত করে।

রামাদান ক্ষতিকর এবং শরিয়তের বিরোধী অভ্যাসগুলো থেকে মুক্তির সুযোগ, যেমন: ধূমপান, মাদকদ্রব্য গ্রহণ ইত্যাদি, যা মানুষকে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে। যেহেতু মুসলিম দিনের দীর্ঘ সময় এসব থেকে বিরত থাকে, তাই সে অবশ্যই দিনের বাকি সময় এবং সারা জীবন এগুলো থেকে বিরত থাকতে পারে, যদি সে সেগুলো পরিত্যাগ করার জন্য সত্যিকারের সংকল্প গ্রহণ করে, আল্লাহর উপর ভরসা করে, এবং সেই কুমন্ত্রণা ও ভয়কে দূর করে, যা তাকে কাজের সাথে কথাকে মিলিত করতে বাধা দেয়।

আল্লাহ বলেন:

“আর যারা আমাদের পথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়, আমরা তাদেরকে অবশ্যই আমাদের পথসমূহের হিদায়াত দিব। আর নিশ্চয় আল্লাহ্ মুহসিনদের সঙ্গে আছেন।”

(সূরা আল আনকাবুত:৬৯)


রামাদান আত্মসমালোচনা, তওবা ও ইস্তিগফার করার সুযোগ; কারণ পাপসমূহ বান্দা ও আনুগত্যের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করে, এবং বান্দাকে প্রতিটি কল্যাণ ও সৎকর্ম থেকে বিরত রাখে।

সফল ব্যক্তিরা তারাই, যারা এই মূল্যবান সুযোগকে কাজে লাগায়, যাতে এই মাস সঠিক পথে পরিবর্তনের এবং দৃঢ়তার একটি সুযোগ হয়, যার বৈশিষ্ট্য হলো: ধারাবাহিকতা, সংগ্রাম, ধৈর্য এবং সওয়াবের আশা।


সূত্র:
https://www.alukah.net/spotlight/0/134365/رمضان-نقطة-تحول-وموسم-تغيير/

Reflections

29 Jan, 11:39


রামাদানের প্রস্তুতির ধাপসমূহ:

১. সত্যিকার তওবা করা – আল্লাহর কাছে খাঁটি অন্তরে তওবা করা।

২. দোয়া করা – রামাদানকে ভালোভাবে পালন করার জন্য আল্লাহর সাহায্য চাওয়া।

৩. রামাদানের আগমনে আনন্দিত হওয়া – এই বরকতময় মাসকে পাওয়ার জন্য হৃদয়ে আনন্দ অনুভব করা।

৪. কাজা রোজা থাকলে তা রামাদানের আগে আদায় করা।

৫. সিয়ামের বিধান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা – রোজার সঠিক নিয়ম ও মাসআলা-মাসায়েল শেখা।

৬. রামাদানে ইবাদতে মনোযোগী হওয়ার জন্য অপ্রয়োজনীয় কাজ রামাদানের আগে শেষ করা – যেন কোনো কাজ ইবাদতের অন্তরায় না হয়। (যেমন আলমারি গোছানো, মাসের বাজার ইত্যাদি।)

৭. পরিবারের সদস্যদের রোজার বিধান সম্পর্কে জানানো – রোজার শারঈ বিধান ও করণীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা।

৮. উপকারী বই প্রস্তুত রাখা – রামাদানে পড়ার জন্য কিছু ইসলামিক বই সংগ্রহ করা।

৯. শাবান মাসে কিছু রোজা রাখা – রামাদানের জন্য নিজেকে অভ্যস্ত করা।

১০. কুরআন তিলাওয়াত করা – রামাদানের প্রস্তুতি হিসেবে বেশি বেশি কুরআন পড়া।

(সূত্র: islamqa.info)

Reflections

28 Jan, 06:59


মানুষের জীবন নিয়ে অতিরিক্ত কৌতূহল সরাতে চাইলে:

- এই বিষয়ে ইসলাম কী শিক্ষা দেয় তা নিয়ে পড়ালেখা করতে হবে।
- নিজের মাঝে এই খারাপ স্বভাব আছে কিনা ভাবতে হবে। সেক্ষেত্রে সেটা সরানোর জন্য চেষ্টা করতে হবে এবং আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে।
- মানুষের সাথে অযথা মেলামেশা, ফোনে কথা, আড্ডা কমাতে হবে।
- কিছু মানুষ আছে যারা কথা চালাচালি করে। এদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।
- আমরা চাই না কেউ আমাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করুক। অন্যের জীবন নিয়ে তাহলে আমরা সেই একই কাজ কেন করবো?
- এমন ব্যক্তিত্ব অর্জন করতে হবে যেন অন্যরা এসে কথা কানে ঢালতে না পারে।
- যা কিছু কথা হেঁটে বেড়ায়, সবকিছু শোনামাত্র বিশ্বাস না করা এবং নিজে সেসব প্রচারে অংশ না নেয়া।
- একজন মুসলিমের জন্য অন্য মুসলিমের সম্মান, সম্পদ এবং জীবন হারাম। একথা স্মরণ রাখা।
- সব অযথা আচরণের হিসাব দিতে হবে। তাই এসব থেকে বিরত থাকার আড়ালে নিজেরই যে লাভ, সেটা অনুধাবন করা।

▫️▫️▫️▫️▫️▫️▫️

এই প্রসঙ্গে দুইটা হাদীস সাহায্য করতে পারে।

▫️আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

কোনো ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্যের অংশ হলো, সে এমন বিষয় এড়িয়ে চলে যা তার জন্য প্রয়োজনীয় নয়।

~সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৯৭৬)

ব্যাখ্যা:

রাসূল ﷺ উত্তম চরিত্রের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। তিনি খারাপ আচরণ থেকে সতর্ক করতেন এবং সেগুলোর নিন্দা করতেন। এই হাদিসে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: “কোনো ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্যের অংশ হলো, সে এমন বিষয় এড়িয়ে চলে যা তার জন্য প্রয়োজনীয় নয়।”

এর অর্থ হলো, একজন মুসলিমের ইসলামের সৌন্দর্য ও ঈমানের পরিপূর্ণতার মধ্যে অন্যতম লক্ষণ হলো, এমন কথা বা কাজ থেকে দূরে থাকা যা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, উপকারী নয় বা তার কোনো উপকারে আসবে না। এটি অন্যের ব্যক্তিগত ব্যাপারে অযথা হস্তক্ষেপ না করার এবং তুচ্ছ বিষয় নিয়ে না মাথা ঘামানোর নির্দেশ দেয়।

এখানে এমন বিষয় থেকেও দূরে থাকার ইঙ্গিত রয়েছে, যা আল্লাহ হারাম করেছেন বা রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অপছন্দ করেছেন। একইভাবে, এমন কোনো অতিরিক্ত কথা, কাজ বা আচরণ এড়িয়ে চলাও অন্তর্ভুক্ত, যা প্রয়োজনের অতিরিক্ত এবং অপ্রয়োজনীয়।

এমন বিষয় শুধুমাত্র দুনিয়াবি ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এতে এমন আখিরাত সংশ্লিষ্ট বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত, যেমন গায়েব বা অদৃশ্য জগতের বাস্তবতা নিয়ে অযথা খোঁজাখুঁজি করা বা সৃষ্টির গোপন রহস্য সম্পর্কে এমন প্রশ্ন করা, যা মানুষের জ্ঞানের বাইরে।

এই হাদিস থেকে শিক্ষা নেয়া যায় যে, একজন মুসলিমের উচিত এমন কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা, যা তার দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য কল্যাণকর ও উপকারী।

▫️
অন্য হাদীসটি হলো:

আনাস (রা.) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেনঃ

"তোমাদের কেউ প্রকৃত মু‘মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য সেটাই পছন্দ করবে, যা তার নিজের জন্য পছন্দ করে।"

(
সহীহ আল বুখারী: ১৩)

ব্যাখ্যা:

রাসূল ﷺ এর এই হাদিস-
ইসলামের চতুর্থাংশ এবং চারটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিসের অন্তর্ভুক্ত, যেগুলো থেকে সকল উত্তম আদবের মূলনীতি উদ্ভূত হয়েছে। এখানে তিনি এই বার্তা দিয়েছেন যে, একজন মুসলিমের পূর্ণাঙ্গ ঈমান তখনই সম্পূর্ণ হয়, যখন সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে, তা তার মুসলিম ভাইয়ের জন্যও পছন্দ করে। এখানে ঈমানের অভাব বলতে মূল ঈমানের অভাব বোঝানো হয়নি; বরং পূর্ণাঙ্গ ঈমানের অভাব বোঝানো হয়েছে।

তাই, একজন মুসলিম তার ভাইয়ের জন্য কল্যাণকর বিষয়গুলো কামনা করবে, তা দ্বীন-দুনিয়ার যেকোনো ভালো কাজ হোক। একইভাবে, যা তার নিজের জন্য অপছন্দনীয়, তা তার ভাইয়ের জন্যও অপছন্দ করবে। যদি সে তার মুসলিম ভাইয়ের মধ্যে দ্বীনের কোনো ঘাটতি দেখে, তবে তা সংশোধনের চেষ্টা করবে। আর যদি সে তার ভাইয়ের মধ্যে কোনো ভালো দিক দেখতে পায়, তবে তাকে সঠিক পথে স্থির থাকতে এবং সেই ভালো কাজ বাড়াতে সাহায্য করবে।

সত্যিকারের মুমিন তখনই হওয়া সম্ভব, যখন একজন মুমিন নিজের জন্য যা কামনা করে, তা অন্যদের জন্যও কামনা করে। এটি তখনই সম্ভব হয়, যখন কারো অন্তর হিংসা, বিদ্বেষ, ধোঁকাবাজি এবং ঈর্ষা থেকে মুক্ত থাকে। কারণ, ঈর্ষা একজন মানুষকে এই অনুভূতিতে পেয়ে বসে যে, অন্য কেউ তার থেকে ভালো অবস্থানে থাকবে বা সমান হবে, তা সে সহ্য করতে পারে না। সে চায়, ভালো দিকগুলোতে সে অন্য সবার চেয়ে আলাদা ও বিশেষ হয়ে থাকুক। অথচ ঈমান এর বিপরীত শিক্ষা দেয়; ঈমান বলে, একজন মুমিন তার ভাইদের সঙ্গে আল্লাহর দেওয়া কল্যাণে অংশীদার হতে চায়।
———

ব্যাখ্যার উৎস:

https://dorar.net/hadith/sharh/147242

https://dorar.net/hadith/sharh/7324

Reflections

27 Jan, 06:20


✔️ আদব অর্জনে সহায়ক কিছু উপায়:

▪️ ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের আদবের আলোকে গড়ে তোলা।
▪️ কুরআন ও সুন্নাহর আদর্শে নিজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য শুধরে নেয়া।
▪️ নবী, সাহাবি এবং তাদের পরবর্তী যুগের উলামাদের জীবনী অধ্যয়ন করা এবং তাদের অনুসরণ করা।
▪️ মানুষকে আদবের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া এবং তাদের এই বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দেওয়া।
▪️ আদব মেনে চলার জন্য নিজের নফসের সঙ্গে সংগ্রাম করা।
▪️ আদবের কারণে প্রাপ্ত প্রতিদান সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা এবং বুঝা যে, এটি আল্লাহর নৈকট্য ও জান্নাত লাভের মাধ্যম।
▪️ আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করা এবং বেশি বেশি দোয়া করা।
▪️ আলেম ও নেককার ব্যক্তিদের সঙ্গ গ্রহণ করা, যারা ইসলামের আদব মেনে চলেন।

Reflections

25 Jan, 16:49


আরেকটা বিষয়- রেফারেন্স নাই এমন আজগুবি পোস্ট সঠিক কিনা এটা জানতে চাওয়া অনেক সময়ই সকলের সময় নষ্ট করে। যে জিনিস আছে, সেটা যে আছে- এটা খুঁজে পাওয়া সহজ। যা বানোয়াট, সেটা তো খুঁজে পাওয়া যায় না- হয় সেটা বানোয়াট হিসেবে চিহ্নিত (তখন পাওয়া যায়।) আর নয়ত সেটা নতুন আবিষ্কার (এক্ষেত্রে এটা যে বানোয়াট সেটা খুঁজে পেতে সময় লাগবে।) তাই রেফারেন্স নাই এমন পোস্ট এত দেখা আর "এটা কি সত্যি" নিয়ে সময় নষ্ট না করলেই ভালো।

কখনো কিছু বানোয়াট কথা ভাইরাল হয়ে যায় এবং সবাই ফলো করতে থাকে। সেরকম বুঝলে যারা এটা নিয়ে মানুষকে সচেতন করার যোগ্যতা রাখেন, তাদের দৃষ্টিগোচর করবেন বিষয়টা।

Reflections

25 Jan, 15:18


যেকোনো পোস্ট এ হাদীস থাকলে:

- রেফারেন্স দিয়েছে কিনা দেখবেন। না দিলে ওই পোস্ট শেয়ার দিবেন না। আমল ও দিবেন না ওটায়।

- রেফারেন্স দিলে কি শেয়ার দিবেন? না। সেক্ষেত্রে খুঁজে দেখবেন ওই রেফারেন্স এ হাদীসটি আছে কিনা, আর সেটা নিয়ে উলামাদের মন্তব্য কী। শুধু বুখারী/মুসলিম লেখা দেখাই যথেষ্ট নয়। সেসব বসিয়েও মিথ্যা হাদীস প্রচার করে মানুষ। গতকাল একটি পোস্টে নম্বর সহ বুখারীর হাদীস উল্লেখ করেছে। অথচ সেই হাদীস সহীহ বুখারীতে নেই। এবং হাদীসটি আসলে বানোয়াট হাদীস।

- তারপর দেখবেন যে, সেই হাদীসের ব্যাখ্যা কী? পোস্টে যা বললো সেটা আসলেই তাই কিনা।

- যদি সেটা খুঁজে পাওয়া যায়, ব্যাখ্যাটা সঠিক হয়, তখন শেয়ার দিবেন।

- রেফারেন্স থেকে হাদীসের সোর্স আর মান খুঁজতে হয় কিভাবে জানা না থাকলে- সেই পোস্টটি শেয়ার দিবেন না।

- যারা জানেন, তাদেরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করবেন।

-কারা জানেন এই নিয়ে? যারা হাদীস সাইন্স নিয়ে পড়েছেন। অথবা দ্বীন শিক্ষা করেছেন প্রপার সোর্স এ। অথবা সহিহ আকীদার আলেমগণ। (কেউ শুধু দ্বীনদার হলেই যে এসব বিষয় জানবেন এমন কোনো কথা নেই।

- সুন্দর পোস্ট/অনেক ভালো লাগে- এটা কোনো দলিল না একটা হাদিস গ্রহণযোগ্য হওয়ার অথবা একটা পোস্ট সঠিক হওয়ার।

- আপনার মাধ্যমে মানুষ একটি ভুল কথা জানার চাইতে, আপনি নিশ্চিত না হয়ে একটি পোস্ট শেয়ার করবেন না- সেটাই সঠিক পন্থা হবে।

Reflections

16 Jan, 07:34


ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের ছেলেকে কুরবানী করার ঘটনা কার না ভালো লাগে। কী পরিমাণ নিষ্ঠা আল্লাহর প্রতি, যে তাঁর নির্দেশে প্রাণপ্রিয় সন্তানকে কুরবানী দেয়ার জন্য তিনি প্রস্তুত হতে পারেন! আমাদের আবেগ এই কাহিনী শোনার সময় এমন থাকে যে এমন নির্দেশ আমাদের কাছে আসলে আমরাও দেখিয়ে দিতাম।

এই দেখুন, আবেগ খালি আমাদের কথাতেই। সন্তানকে কুরবানী দিতে হবে না। শুধু একটু ইন্টারনেট থেকে দূরে রাখব, হারাম থেকে, ফ্রি মিক্সিং থেকে- এই বেলায় আমরা "কী আর করবো" বলে পাশ কাটিয়ে পালিয়ে যাই। আমাদের ঈমানের অবস্থা ভাবুন। সন্তানকে আল্লাহর জন্য কুরবানী দেয়া তো পরের কথা, সন্তানকে আল্লাহর পথে হেফাজত করার নির্দেশ পালন করা আমাদের কী অসম্ভই না লাগে!

Reflections

15 Jan, 09:19


"আযান শুরু হয় ‘আল্লাহু আকবার‘* দিয়ে। আল্লাহ ﷻ এর পরিপূর্ণতা, তিনি ত্রুটির উর্ধ্বে- এই ঘোষণার মাধ্যমে।

তারপর আযানের বাণীতে আসে আল্লাহর একত্ববাদ এর ঘোষণা, তাওহীদ এর কথা। অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই। শাহাদাতের প্রথম অংশ। এই সাক্ষ্য হচ্ছে ঈমানের মূল ভিত্তি এবং দ্বীনের আর সব বিষয়ের পূর্বে আসে তাওহীদ।

তারপর আসে শাহাদাতের দ্বিতীয় অংশ, যা প্রথম অংশকে পূরণ করে। এর দ্বারা আল্লাহর রাসূল ﷺ এর উপর, তার নবুয়্যাতের উপর ঈমানের ঘোষণা দেয়া হয়। এই দুই শাহাদাতের মাধ্যমে মানুষ ঈমানে প্রবেশ করে।

যখন এই সাক্ষ্য দেয়া হয়, তারপর সালাতের দিকে ডাকা হয়। সালাতের কথা শাহাদাতের পর আসে এই জন্য যে, ঈমান না এনে সালাত এবং অন্য যেকোনো আমল গ্রহণযোগ্য নয়।

তারপর ডাকা হয় সাফল্যের দিকে - দুনিয়া ও আখিরাতের।

~ موسوعة أحكام الصلوات الخمس - الشيخ دبيان بن محمد الدبيان
(পৃষ্ঠা ৪০-৪১, ভলিউম ১)

আমরা আযান শুনি, অনেকে উত্তরও দেই। কথাগুলোর অর্থ কী গভীর সেটা কি খেয়াল করি?
----------------
*আল্লাহু আকবার (اللَّهُ أَكْبَرُ) অর্থ হচ্ছে, হাক্বীকত এবং আক্ষরিক অর্থে আল্লাহ তাআ’লা সমস্ত কিছুর চেয়ে বড় এবং মহান।
~ শায়খ মুহাম্মদ বিন সলিহ আল উসাইমীন রহিমাহুল্লাহ

Reflections

01 Jan, 06:19


অন্যের জীবনের নিয়ামত কী কী খুঁজে বের না করার অভ্যাস করুন। কার কী আছে, কে কত ভালো আছে- কী দরকার জেনে? যে যেমনই আছে, হায়াতুদ দুনিয়ার জ্বালা যন্ত্রণা নিয়েই আছে। দুইটা মানুষের নিয়ামত এক রকম হয়না, জীবনের পরীক্ষা গুলোও তো ভিন্ন হয়। শুধু শুধু তুলনা করে কেন নিজে কষ্ট পাওয়া আর অন্যকে নিজের হিংসা দিয়ে আঘাত করা? বরং নিজের জীবনে কী কী নিয়ামত আছে খুঁজুন। তাহলে মন থেকে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা আসবে ইন শা আল্লাহ।

Reflections

31 Dec, 09:19


মুসলিম হিসেবে আমাদের কাছে প্রতিটা দিন গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটা দিন নিজেকে উন্নত করার সুযোগ। আর প্রতি বছর ঘুরে আসে এরকম উৎসব আমাদের শুধু দুইটা- দুই ঈদ। এর বাইরে যা কিছু ঘুরে ঘুরে আসছে, বছরের শুরু, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, মৃত্যুদিবস, সব মূল্যহীন। এসব করার মাঝে কাফিরদের অনুসরণ ও আছে। আর করার সময় যেই গুনাহ গুলো হয় সেসব তো আছেই।(এই অনুষ্ঠান গুলো করা হারাম)

"পালন করি না শুধু উইশ করি":

কোনো কিছুতে "উইশ" করা মানে সেটা সমর্থন করা। আর "উইশ" করা মানে কী?

এগুলো শুধু কথার কথা না যা কেউ বলে চলে যায়। এগুলো কোনো বিশেষ দিন/কালচার কে বৈধতা দেয়। সেই আইডিয়াকে সমর্থন করে। যেই আইডিয়ার সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। সেই কালচার যার উৎপত্তি অন্য ধর্ম। (তাই এসবে উইশ করাও হারাম)

মানুষ মাইন্ড করবে:
করুক। কিয়ামতের দিন তো মা পর্যন্ত বাচ্চাকে দেখবে না। এরা কেউ সেদিন কোনো কাজে আসবে না। তাহলে শুধু শুধু তাদের "মাইন্ড" ভেবে আখিরাতের ক্ষতি কেন করবো?

অন্যভাবে ভাবুন:
নতুন বছর শুরু হলে কী হয়? কিছুই হয়না। জীবনের একটা দিন মাত্র। যা আসে আর দ্রুত শেষ হয়ে যায়। এত দ্রুত, যে কবে গত বছর শেষ হয়ে এই বছর এসেছিল, আর শেষ ও হয়ে গেল মনে পড়ছে না। এভাবে আমাদের জীবনটাই শেষ হয়ে যাবে, যেই জীবনের সৃষ্টি হয়েছিল শুধু আল্লাহর ইবাদত করার জন্য। গুনাহের কাজে, ভুল কাজে, কাফিরদের অনুসরণে, হারাম কাজে কাটানোর মত সময় আমাদের সত্যিই নেই। সময় সুযোগ থাকতেই আমরা যেন সেকথা বুঝতে পারি।

Reflections

17 Dec, 09:40


গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানটি হিন্দুদের বিয়ের এমন একটি অনুষ্ঠান যার সাথে ধর্মীয় বিষয়বস্তু জড়িত। এটা জানার পরও সেসব অনুষ্ঠানে কেন যায় কেউ? আত্মীয়রা কী মনে করবেন, তাই। এই আত্মীয়রা কিয়ামতের দিন পাশে থাকবে না।

পর্দা নিয়ে একজন মুরুব্বী বকা দিচ্ছেন ছোট একটা মেয়েকে। এত পর্দার কী দরকার? তারপর বলছেন "আমরা চাইলেও পারবো না- সবাই কী মনে করবে?"
এই "সবাই" কিয়ামতের দিন পাশে থাকবে না।

জন্মদিন পালনের উৎপত্তি অন্য ধর্মে। জেনেও উইশ করছেন কেউ। নাহলে কী মনে করবে?

বিভিন্ন "দিবস" পালন ইসলামের সাথে যায় না।তারপরও সেসব দিনের নির্ধারিত রঙগুলো পরছেন কেউ। সবাই নাহলে কী মনে করবে? এই সবাই কিয়ামতের দিন পাশে থাকবে না।

কখনো যদি "সবাই" কে প্রাধান্য না দিয়ে আমরা "আল্লাহ আমাকে দেখছেন" - এটাকে প্রাধান্য দেই? দেখবো এই বিষয়গুলো থেকে দূরে থাকা সহজ হচ্ছে ইন শা আল্লাহ ।

‘আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ﷺ বলেছেন:

“যে ব্যক্তি মানুষকে অসন্তুষ্ট করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করে, মহান আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যান এবং মানুষকেও তার প্রতি সন্তুষ্ট করে দেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে মানুষের সন্তুষ্টি অন্বেষণ করে, মহান আল্লাহ তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে যান এবং মানুষকেও তার প্রতি অসন্তুষ্ট করে দেন।”

(সহীহ ইবন হিব্বান, ভলিউম ২, হাদীস ২৭৬। শায়খ আলবানির মতে হাদীসটি সহীহ।)

Reflections

17 Dec, 02:48


কেউ বলছে আল্লাহর ছেলে আছে, আর আপনি তাকে তার অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এটা আপনার কাছে উদারতা? আর আল্লাহ, যিনি সমস্ত ত্রুটি আর দুর্বলতার উর্দ্ধে, তাঁকে নিয়ে এমন একটা কথা আপনার গায়ে লাগলো না। নিজেকে "উদার" দেখাতে যেয়ে, নিজের ঈমান বিক্রি করে দিলেন।

মুসলিম হওয়া মানেই শিরক থেকে দূরে থাকা- একমাত্র আল্লাহই রব- এটা অন্তর দিয়ে, কথা দিয়ে, কাজ দিয়ে মানা। মানা তিনি ছাড়া আর কোনো সত্য উপাস্য নেই। এখন ওরা মানে যে আল্লাহর সন্তান আছে- আপনি মানেন না সেটা, খালি ওদের এই মানাটায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন- এই কথাটার কোনো মানে আছে?

মুসলিমদের নিজের মত চলার উপায় নেই- চলার কথা আল্লাহর মত। আর আল্লাহ এই বিষয়টি নিয়ে বলেছেন:

"আর তারা বলে, ‘দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন।’

তোমরা তো এমন এক বীভৎস বিষয়ের অবতারণা করছ;

যাতে আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাবার উপক্রম হয়, আর যমীন খণ্ড-বিখণ্ড হবে এবং পর্বতমণ্ডলী চুর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে"


(সূরা মারিয়াম: ৮৮-৯০)

এখন ক্রিসমাস উইশ করে, সেইসব ফটোতে লাইক দিয়ে, লাভ দিয়ে, উদারতা দেখাতে প্রয়োজনে বাসাটা ক্রিসমাসের জন্য সাজিয়ে, সন্তানকে ক্রিসমাসের "কালচার" শিখিয়ে আপনি সেটা করছেন যার কারণে আসমান জমিন বিদীর্ণ হওয়ার উপক্রম হয়। অথচ আপনার "নামে মুসলিম" হৃদয় একটু কাঁপেও না।

এরপরও নিজেকে বলবেন যে আপনি মুসলিম, মুমিন, আর ঈদের সময় ঈদও করবেন, পূজার সময় পূজা।

আল্লাহ কি আপনার প্রাইভেট প্রপার্টি নাকি যে যা বলবেন সেটাই "ইসলাম" হতে হবে? ঈমান আছে এই দাবি যদি থাকে- তাহলে চেষ্টা করুন নিজেকে আর নিজের পরিবারকে এই সমস্ত শিরক, কুফরী থেকে দূরে রাখতে।

-জানা নেই কোনটা শিরক?
জানুন!

-আর ইসলাম এত কঠিন না?
না ভাই, আপনার কথায় তো ইসলাম চলে না। চলে আল্লাহ আর আল্লাহর রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথায়। কুরআন সুন্নাহ থেকে এনে দেখাবেন কোথায় অন্য ধর্মের কালচার/উৎসব করতে ইসলাম উৎসাহিত করেছে। পাবেন না। নিষেধই করেছে। বার বার। সেটাই পাবেন।

অনেক তো হলো। এবার ছেড়ে দিন শিরক আর কুফরীর সাথে একাত্মতা। আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করতে দেখেও বুক ভেঙে যায় না- কেমন মুসলিম আপনি?

(ডিসেম্বর ২০২২)

Reflections

14 Dec, 05:01


আপনার ব্র্যান্ড কী?

যেদিন জন্মেছিলেন, সেদিন আপনার আর আরেকজন এর মাঝে পার্থক্য এটাই ছিল যে আল্লাহ যার জন্য যেই পরিবার চেয়েছেন, দিয়েছেন।

যেদিন মারা যাবেন, কবরটা "কো...." বা "............" বা অন্য কোনো ব্র্যান্ড এর হবে না। একটাই ব্র্যান্ড তখন: মাটি ব্র্যান্ড। আপনার, আপনার উপরের এবং নিচের সব লেভেলের মানুষের জন্য একই। কারো কবর যদি ব্র্যান্ডেড হতও, তাহলেও তাতে তার কোনো উপকার হত না। এটা তার স্ট্যাটাস আল্লাহর সামনে বৃদ্ধি করতো না।

তাই এই জন্ম আর মৃত্যুর মাঝে যেই জীবন, এটাতে শো অফ এর ধোঁকায় পড়বেন না। আল্লাহ সামর্থ্য দিলে ইসলামের সীমায় থেকে যা কেনা হালাল কিনুন। কিন্তু এগুলো যেন জীবনের অপরিহার্য অংশে পরিণত না হয়- যা দিয়ে নিজের জীবন শো অফ করবেন আর অন্যের জীবন মূল্যায়ণ করবেন।

নিজের "worth" প্রমাণ করতে যদি আপনার "ব্র্যান্ডেড" জিনিস "দেখানো" লাগে, তারমানে আপনার নিজের কাছে নিজের "worth" নাই। তাই এসব তুচ্ছ বিষয় নিয়ে নিজের দাম বাড়ানো লাগছে। অন্যের কাছে নিজেকে "validate" করা লাগছে। এই চক্রের কোনো শেষ নাই। পৃথিবীর সব ব্র্যান্ড কিনে ফেললেও অন্য কারো কাছে সবসময়ই আপনার চাইতে বেশি থাকবে। আর যদি আপনার সবার চাইতে বেশি থাকে সব জিনিস, সেটাও আল্লাহর চোখে আপনাকে আলাদা মর্যাদা দিবে না।

নিজেদের, আর সন্তানদের- ব্র্যান্ড কে বড় করে দেখার অভ্যাস করা থেকে হেফাজত করুন। দিন শেষে এর থেকে হয় অহংকার আসবে, নয়ত অন্তরের অশান্তি। আর শেষ পর্যন্ত কার তাকওয়া বেশি, সেটাই ম্যাটার করবে আল্লাহর কাছে।

--------

(অনেকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ভালো জিনিস ব্যবহার করেন। তাতেই তাদেরকে অহংকারী ভাবারও প্রয়োজন নেই। ভালো কিছু ব্যবহার করা মানেই শো অফ না। ভালো কিছু ব্যবহার করে নিজেকে "উপরের স্তরের" ভাবাটা হলো সমস্যা। মোট কথা এটা অন্যকে বিচার করার পোস্ট না। নিজে সতর্ক হওয়ার পোস্ট।)

Reflections

28 Nov, 02:46


প্রচণ্ড গরম আর প্রচণ্ড শীত- জাহান্নামের শাস্তির মাঝে দুইটা। কষ্টকর বিষয়। এই পৃথিবীর জীবনেও, তার চাইতে হয়তবা অকল্পনীয় মাত্রায় কম গরম অথবা ঠান্ডায়, আমাদের কষ্ট হয়। তারপর আমরা এসব কথা বলছি আল্লাহর অশেষ রহমতে মাথার উপর ছাদ আছে এমন অবস্থায়। এই নিয়ামত অনুধাবন করা আর এর শুকরিয়া আদায় করা- কোনোটাই আমরা ঠিকমত করতে পারি না।

সবাই বলে, ঠান্ডা কবে আসবে। যেন পিকনিক। ওদিকে গাজা, সিরিয়া, এবং মাথার উপর ছাদ নাই এমন সমস্ত স্থানের মুসলিম ভাই/বোনদের জীবন এই সময় কেমন হয় আমরা হয়ত কল্পনা করতে পারি না। সেসব থাক, আমাদের যার যার গ্রামের অবস্থাই আমরা কল্পনা করতে পারি না। আল্লাহ আরহামুর রাহিমিন। আল্লাহ যেন তাদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।

আল্লাহই তাদের জন্য যথেষ্ট।

তারপরও, অসহায় ভাই বোনদের স্মরণ রেখে, সবাই যেন সাধ্যমত এই শীতে তাদেরকে সাহায্য করি। গরম পানি, কম্বল আর ছাদের নিয়ামতে ডুবে ভুলে না যাই যে এসব আমাদের প্রাপ্য না। এই সবই আল্লাহর রহমত যা আমাদের জন্য নাও থাকতে পারতো। আমরা যেন আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হতে চেষ্টা করি।

Reflections

19 Nov, 21:15


“তাঁর কাছে হাত তুলুন (দোয়া করুন),
তা কখনোই খালি ফিরে আসবে না,
কারণ আপনি সেই সত্তার কাছে প্রার্থনা করছেন,
যিনি শূন্যতা থেকে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন।”

~ একটি আরবি কবিতা থেকে নেয়া

Reflections

18 Nov, 21:07


“আল্লাহ কোনো বিষয় দেরি করিয়ে দেন, যা (যার হিকমাহ) আপনি জানেন না।

যদি গায়েবের বিষয় প্রকাশ পেত, তবে আপনি সেটাই বেছে নিতেন যা আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন।

~ একটি আরবি কবিতা থেকে নেয়া

Reflections

17 Nov, 21:20


"তিনি বললেন, ‘আমি আমার অসহনীয় বেদনা, আমার দুঃখ শুধু আল্লাহর কাছেই নিবেদন করছি এবং আমি আল্লাহর কাছ থেকে তা জানি যা তোমরা জান না।"

{সূরা ইউসূফ: ৮৬}

▫️ আল্লাহর কাছে দুঃখ নিবেদন করা ধৈর্যের বিপরীত নয়, বরং ধৈর্যের বিপরীত হলো মানুষের কাছে অভিযোগ করা।▫️

🖊 আস-সা’দি

Reflections

13 Nov, 08:10


If we study their [scholars] lives, the question that will immediately come to mind: what could possibly have made them so in-distractable throughout their lives?

https://tinyurl.com/hxfdksnw

Reflections

22 Oct, 20:33


প্রশ্ন: অনেকে বলেন মানুষকে সৎকাজে আদেশ আর মন্দ কাজে নিষেধ করা অনর্থক নাক গলানো, অন্যের জীবনে। তাই কি? কারণ হাদীসে এসেছে:

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অনর্থক আচরণ ত্যাগ করা।
(আত তিরমিযী)

উত্তর: না। যখন শরিয়তের বিধান নিয়ে কথা হয়, সেটা অনর্থক আচরণ না। সেটা অবশ্যই আমাদের "কনসার্ন"। আমরা ভুল দেখলে, প্রতিহত করতে হবে।

আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন:

“তোমাদের মধ্যে যে অন্যায় দেখবে সে যেন তা তার হাত দিয়ে বাধা দেয় আর যদি হাত দিয়ে বাধা না দিতে পারে তবে যেন মুখ দিয়ে বাধা দেয়, আর যদি মুখ দিয়ে বাধা না দিতে পারে তবে যেন অন্তর দিয়ে বাধা দেয়, আর এটি হলো দুর্বল ঈমানের পরিচয়।”

(সহীহ মুসলিম: ৪৯)

বরং প্রশ্ন করা হবে সেই ভুলের জন্য যা চোখের সামনে সংঘটিত হয়েছে এবং তা প্রতিহত করার চেষ্টা করা হ‍য়নি।

~ শায়খ আব্দুল করিম আল খুদাইর হাফিজাহুল্লাহ এর লেকচার থেকে, সারমর্ম অনুবাদ করা হয়েছে।

https://t.me/A_Alkhudhair/20041

Reflections

15 Oct, 10:19


আমাদের প্রিয় "With the Qur‘an" চ্যানেল এখন Whatsapp এও থাকছে ইন শা আল্লাহ।

ফেসবুক এর পেজটি বন্ধ করে দেয়ার পর আমাদের শুধু টেলিগ্রামে চ্যানেল ছিল। অনেকেই টেলিগ্রাম ব্যবহার করেন না। তাই এখন থেকে এই চ্যানেল Whatsapp এও থাকবে, টেলিগ্রামের পাশাপাশি।

https://whatsapp.com/channel/0029VanGhQtD38CXd6q4nJ0B

Reflections

13 Oct, 19:57


This Has Never Occurred Before in the Past! Shaykh 'Abdurrazzāq al-Badr حفظه الله

Reflections

06 Oct, 13:05


টিনএজারদের গ্রুপে যখনই উপদেশ দেই বাবা মায়ের সাথে যেকোনো সমস্যা নিয়ে পরামর্শ করার, এই একটা জায়গায় এসে থমকে যাই। বাবা মায়েরা কি সন্তানদের সেই সুযোগ দেন?

কয়জন বাবা/মা সন্তানকে এই আশ্বাস দিতে পেরেছেন যে তুমি যত বড় ঝামেলায় পড়, যত বড় ভুল করো, আমার কাছেই এসে বলবে? বাইরের মানুষকে না, বন্ধু বান্ধবকে না যারা হয়ত আরো বিভ্রান্ত করবে তাদেরকে?

অনেক পরিবারে আবার এটা করতে গিয়ে সন্তানকে যা খুশি করার অধিকার দিয়ে রাখে। সেটাও ভুল। আপনি জেনে বুঝে থাকে হারাম করতে দিবেন কেন?

মাঝামাঝি ব্যালেন্স করতে পারা শেখা জরুরি। সঠিক পথ দেখানো, হারাম থেকে বিরত রাখা জরুরি। সেই সাথে জরুরি এমন একটা কমিউনিকেশন রাখার যেন বাচ্চার জীবনে কী চলছে এটা বাবা মায়ের জানা থাকে। কোনো বিপদে পড়লে বাচ্চারা জানে প্রথম মানুষ যার কাছে সে যাবে হচ্ছে তার মা অথবা বাবা।

এটা কিভাবে করবেন?

- কথোপকথনের অভ্যাস থাকতে হবে। আলোচনা। মত বিনিময়। ওদের মনে কী আছে না জানলে সমাধান দিবেন কিভাবে?

- আপনার নিজের স্বভাব এমন হতে হবে যে আপনার moral values এর উপর ওদের আস্থা থাকে। ওরা জানবে আপনি মিথ্যা বলবেন না। আপনি কথা রাখবেন। আপনি ভনিতা করবেন না। এটা ওরা কিভাবে জানবে? বাবা মায়ের নিজেদের সম্পর্ক দেখে। এবং অন্যদের সাথে বাবা মায়ের আদান প্রদান দেখে।

- আপনার স্বভাব সুন্দর হলে আপনি যখন তাদেরকে বলবেন যে যেকোনো কঠিন পরিস্থিতিতে আপনার কাছে আসতে, ওরা সেটা বিশ্বাস করবে। বিশ্বাস করবে আপনার কাছে তখন আসলে আপনি সব কিছুর আগে তাদেরকে স্পেস দিবেন নিজের পরিস্থিতি বলার। আপনি বুঝবেন।

- কথা দিলে, কথা রাখতে হবে। অভয় দিলে, ভয় দেখানো যাবে না। এখন কোনো মা যদি বলে "বলো কী হয়েছে, আমি বকবো না।" আর শোনার সাথে সাথে বলে "কী, এসব করে এসেছ না?" তাহলে নিশ্চিন্ত থাকুন সন্তান আপনাকে ভবিষ্যতে আর বিশ্বাস করবে না।

এখন সন্তান কুকর্ম করে আসলে কি শাসন করবেন না? অবশ্যই করবেন। জন্ম থেকে শেখাতে থাকবেন আল্লাহর সীমা। পরিবেশ দিবেন। আর কুকর্ম করে এসে আপনাকে কেন বলছে সেটা বুঝবেন- বলছে সাহায্যের জন্য। অনুশোচনা আছে তাই বলছে। তখন সেখান থেকে বের হওয়ার পথ দেখান। ডুবে যাওয়ার পথ না।

এই যে বিশ্বাস তৈরি করা, কথোপকথনের অভ্যাস করা, এসব ছোট বেলা থেকেই করতে হয়। আর সেটা যদি করা না হয়ে থাকে, এখনও করতে চেষ্টা করুন। "আমি কথা খুঁজে পাই না" অথবা "আমার এত আহ্লাদী করতে ভালো লাগে না" এসব বলবেন না। আপনি মা মানে আপনার ভূমিকা অনেক বড়। সেই ভূমিকা পালনের যোগ্য নিজেকে করে তুলতে হবে। আপনি কথা না শুনলে, অন্য কেউ শুনবে এবং ভুল পথ দেখাবে, এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকুন।

(
লেখাটি প্রাইভেট গ্রুপে শেয়ার করা হয়েছিল। On request এখানে দেয়া হলো।)

Reflections

01 Oct, 21:58


রামাদানের প্রস্তুতি নিয়ে লেখা থাকবে উইথ দ্যা কুরআন চ্যানেলে। ইন শা আল্লাহ।

https://t.me/WiththeQuran

Reflections

30 Sep, 04:22


রামাদানের প্রস্তুতি ১

এই প্রসঙ্গে কথা এবার বেশি আগে শুরু হয়ে গেল তাই না?

গত রামাদানের পর অনেকে জানিয়েছিলেন মোবাইল আসক্তির কারণে তাদের রামাদান সুন্দর ভাবে পার হয়নি। অনেক কষ্টের কথা। সারাবছরের অপেক্ষা। আর ঠিক সেই সময়েই পদস্খলন।

তাই মনে হলো এবার একটু আগে থেকেই এই বিষয়ে কথা শুরু হোক।

পদস্খলন কিভাবে হয়?

ইদানিং প্রচুর মানুষের বর্ণনায় যা বুঝা যায়, সেটা হলো ভালো উদ্দেশ্যে স্ক্রল করতে গিয়েও পদস্খলন হয়। কী রকম?

মনে করুন কেউ এমনিই ঢুকেছিল ফেসবুকে অথবা ইনস্টাগ্রামে। ধরুন রান্না দেখতে। একটা ভিডিও শেষ হতে আরেকটা চলে এসেছে। সেটা কোনো মুভির ক্লিপ। না চাইতেও একটু দেখা হয়ে গিয়েছে। হয়ত বর্তমানে চলছে এমন কোনো মুভি বা হঠাৎ trending আগের কোনো মুভির ক্লিপ। বেশ কয়েকবার চোখে পড়লো। কয়েকবার সামনে আসার কারণে নামটাও জানা হয়ে গিয়েছে মুভির। সিন টা ভালো লাগছে। এবার মন চাইলো একটু সার্চ দিয়ে দেখতে। ট্রেলার দেখে আরো ভালো লাগলো। মন চাইলো দেখতে। দেখা হলো। অনুশোচনা হলো। কিন্তু আবার কিছু একটা করতে গিয়ে আরেকটা রিল আসলো। এবার সেটা কোনো ড্রামার দৃশ্য। একটু মুসলিম মুসলিম লাগছে- ভদ্র। "মুসলিমদের" ড্রামা। কিছুক্ষণের জন্য শয়তান ভুলিয়ে দিবে যে, ভদ্র হলেও সেটা অশ্লীলতা। হারাম। এবার ওটা খুঁজে দেখা। এগুলো আবার অল্প দেখায় শেষ হয়ে যায় না। অজস্র পর্ব। এবার অভ্যাস হয়ে গেল দেখার। একটা থেকে আরেকটা। অনুশোচনা এখনও আছে। কিন্তু পাপ থেকে সরে থাকার মজবুত মনটা কেমন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে।

গতবার যারা মন খারাপ করে নিজেদের অধঃপতনের বর্ণনা দিয়েছিলেন, এভাবেই দিয়েছেন। কিভাবে একটু একটু করে হারিয়ে ফেলে মানুষ নিজেকে। অতঃপর সালাতে তাড়াহুড়া। সুন্নাহ বাদ দেয়া। কুরআনে সময় না দেয়া। ড্রামা এমন জায়গায় এসে থামলো, যে রামাদানে না দেখলে পর্ব মিস।

এই বিষয়টা থেকে রামাদান এ না শুধু, সবসময়ই সতর্ক হওয়া উচিত।কারণ, মৃত্যুর তো কোনো নির্দিষ্ট মাস নেই!

যাদের এধরনের সমস্যা নেই, তাদের জন্যও কিন্তু সময় নষ্ট এক অনেক বড় সমস্যা। এই অযথা স্ক্রল করার অভ্যাস রামাদানের অনেক অমূল্য মুহূর্ত ছিনিয়ে নেয়।

তাহলে কী করণীয়?

এই একাউন্টগুলো বন্ধ করে দিন। যেকোনো আসক্তির মত প্রথম প্রথম খারাপ লাগবে। তারপর দেখবেন, এসব ছাড়া চলা যায় এবং খুব ভালোই চলা যায়। অ্যাপ মুছে দিন। যেন অন্যমনস্ক হয়ে সেসবে ঢুকতে না পারেন।

এই চেষ্টা এখন থেকে শুরু হোক। ইন শা আল্লাহ আমরা অনেক সুন্দর একটি রামাদান পাবো সামনে।

Reflections

29 Sep, 04:24


অনেকে বলেন যে আগস্ট থেকে ইউটিউবে খবর দেখা বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে সময় নষ্ট হচ্ছে, মনোযোগ থাকছে না। অনেকে নিউজের জন্য ইউটিউবে ঢুকলেও এরপর আর বিষয়টা শুধু নিউজ দেখাতে সীমাবদ্ধ থাকছে না। এর থেকে কিভাবে নিজেকে বের করা যাবে?

▪️আগস্ট থেকে নিউজ দেখাতে সময় দেয়া অনেক ভালো মানুষেরও বেড়ে গিয়েছিল। তখন একটা সময় কিছুদিন, কিছু পরিমাণে সেটা জরুরি ছিল।

▪️এরপর যা চলছে, এটা কিন্তু একটি প্রক্রিয়ার অংশ। এটা নিয়ে সারাদিন নিউজ দেখে আমরা কোনো পরিবর্তন আনতে পারব না। কী চলছে এটা জানা যদি উদ্দেশ্য হয়- সেটা নিউজ না দেখেও জানা সম্ভব। সম্ভবত এমন কোনো বাসা এখন নেই যেখানে পুরুষেরা জানেন না দেশের পরিস্থিতি কী। তাদের থেকে জেনে নেয়া যায় সার্বিক পরিস্থিতি। সেটা সম্ভব না হলেও অন্য কোনো মানুষের থেকে জেনে নেয়া যায়। অনেক টক শো, অনেক থিওরি দেখে আপনি-আমি কী করবো?

▪️ আজকে যদি আমরা মারা যাই, এই দেশ, টক শো সবই নিজের মত চলবে। তাহলে এখন কেন এসব জীবনের এতখানি জায়গা নিবে যে আখিরাত ভুলে যাবো?

▪️শয়তানের প্রকৃতি হলো সে একটা খারাপে মানুষকে দেখে সন্তুষ্ট হয়না। চেষ্টা করে আরো খারাপে নিয়ে যেতে। তাই বিষয়টা শুধু নিউজ দেখাতে সীমাবদ্ধ থাকে না অনেকের জন্য। থাম্বনেইল এ আসা ড্রামা/সিরিয়ালের সাজেশন, শর্টস এ দেখা মুভির ক্লিপ এসবে চলে যায়। একটা থেকে আরেকটায়।

শুধু যদি নিউজে সীমাবদ্ধ থাকে বিষয়টা কারো জন্য, তারপরও সেখানে সময় নষ্টের বিষয়টা থাকে। জরুরি কাজ পিছিয়ে যাওয়া, দ্বীনি পড়ালেখায় মন না বসা, ইবাদতে তাড়াহুড়া হওয়া এসব হতে পারে। আর নিউজে আসা মিউজিক, বিজ্ঞাপনের হারাম কনটেন্ট- এসব তো আছেই।

এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?

আমরা সচেতন হয়ে থাকলে এসবের সমস্যা নিজেরাই বুঝি। তাহলে সত্যিই মন থেকে চেষ্টা করতে হবে নিজেদের এই অভ্যাস থেকে মুক্ত করার।

▫️সালাতে মনোযোগ বাড়াতে হবে। সালাতে মানুষকে খারাপ কাজ থেকে, অশ্লীলতা থেকে দূরে রাখে। আযানের উত্তর দেয়া। সুন্দর করে অজু করা। সময়মত সালাত আদায় করা, সালাতের রোকন, ফরয এবং সুন্নাহ কাজগুলো আদায়ে মনোযোগী হওয়া। ফরয সালাতের আগের/পরের সুন্নাহ গুলো পড়া। সালাতের পরের যিকির শান্ত হয়ে বসে পড়া। মন যতই ইউটিউবে ছুটে যাওয়ার জন্য অস্থির হোক, তাকে বেঁধে রাখা, শাসন করা যে, সালাতে কোনো তাড়াহুড়া হবে না।

▫️সকাল ও বিকালের যিকির নিয়মিত পড়া। কী পড়ছি সেটা বুঝতে চেষ্টা করা।

▫️আল্লাহর কাছে দোয়া করা। অনুনয় করা যেন তিনি এই বদঅভ্যাস দূর করে দেন। যেন তিনি দৃঢ় করেন। এক্ষেত্রে সাজদায় দোয়া গুলো পড়া যায়।

▫️কুরআন পড়া। আপনি কুরআন স্টুডেন্ট হলে আপনার জন্য এটা সহজ। আপনি কেন অযথা কাজে সময় দিবেন? কত রিভিশন দেয়ার আছে, কত কী পড়ার আছে? আপনি কুরআন স্টুডেন্ট না হলে ভাবুন, কুরআন পড়া ঠিক করার সময়গুলো কিসে যাচ্ছে? কুরআনের চাইতে ভালো কিছুতে অবশ্যই না। আমরা কি এভাবে সময় নষ্ট করতে পারি?

▫️ সাধারণত ফ্রি সময়ে মানুষ এসব নিয়ে বসে। রাতের খাওয়া শেষ হলে। বিকালের অবসরে। সেই সময়টায় অন্য কিছু করতে চেষ্টা করা। একটা লেকচার শুনতে চেষ্টা করা। অথবা ইউটিউবের থেকে অনেক দূরে থেকে কিছু করা। যেমন কাপড় গুছানো। নাস্তা বানানো। ফার্নিচার পরিষ্কার করা। দৈনন্দিন কাজ যেগুলো না করে খালি ইউটিউব নিয়ে বসতে মন চায়। সেসব করা। শুরু করতে ইচ্ছা না করলেও দেখবেন করার পর ভালো লাগছে। কাজ জমে নাই। মাথায় প্রেসার লাগছে না। যেহেতু কাজ থেকে মন পালাতে চাইছে না, তখন ইউটিউব ছাড়াও অন্য কিছু করতে মন চাইবে।

▫️কেউ বলতে পারেন যে তিনি সালাত ঠিকমত পড়েন, বাসার কাজও করেন। তারপরও আসক্তি যাচ্ছে না। তার অর্থ হলো তার জীবনে ফ্রি টাইম অনেক বেশি। বাসার কাজ করে, শান্তিমত ইবাদত করে, বাসার মানুষকে সময় দিয়ে, আত্মীয়দের খোঁজ নিয়েও যদি আপনার ইউটিউব নিয়ে সময় ব্যয় করার মত সময় থাকে, আপনার উচিত হবে কোনো উপকারী কোর্স এ ভর্তি হওয়া। কারণ সেই সময় আপনার আছে। সেই সময়কে ভালো কাজে না লাগালে শয়তান এসে সেই সময়টা ছিনিয়ে নিবে। ইউটিউব দিয়ে না হলে অন্য কিছু দিয়ে।

🔳আপনার আসক্তি যেটাই হোক, এভাবে চেষ্টা করে দেখুন। একাউন্ট গুলো মুছে দিন, অ্যাপ গুলোও। দরকারে কোনো একাউন্ট রাখতে হলে অ্যাপ uninstall করে রাখুন। যখন লাগবে নামিয়ে কাজ শেষ করে আবার মুছবেন।

এই জীবনটা পুরাটা জুড়েই আমাদের শয়তানের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করা আছে। যেই জানালা দিয়ে সে ঢুকতে চায়, সেটাকেই বন্ধ করুন।

Reflections

29 Sep, 04:23


(নিচের লেখাটি বোনদের উদ্দেশ্যে লেখা ছিল। বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে শেয়ার করার সুবিধার্থে এখানে দেয়া হলো)

Reflections

28 Sep, 03:50


"সন্তানদের প্রতি অন্ধ ভালোবাসা বাবা/মা কে যেই পরিমাণে বিরত রাখে তাদের (সন্তানদের) আল্লাহর পথ দেখানো থেকে, সেই অনুপাতে কিয়ামতের দিন সন্তানদের সাথে তাদের বাবা/মায়ের শত্রুতা থাকবে।"

~ শায়খ খালিদ আস সাক‘আবি হাফিজাহুল্লাহ

Reflections

08 Sep, 10:39


আপনি যাকে ভালোবাসা দেখাবেন, সে কিভাবে সেই ভালোবাসা দেখতে চায় সেটা কিন্তু মাথায় রাখার কথা।

আপনার অতি ভালোবাসার মানুষটার গরুর গোশতে এলার্জি। কিন্তু আপনি চান তাকে সেটাই খাওয়াতে- তাই এলার্জি জেনেও জোর করে তাকে গরুর গোশতই খাওয়াবেন- সেটা কী ভালোবাসা?

এমনিই একটা উদাহরণ দিলাম আরকি।

-----------

আপনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনেক ভালোবাসেন?

তাঁর অনুসরণ করুন। ইনফ্যাক্ট, আল্লাহকে ভালোবেসে থাকলে তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ করতে হবে। তাঁকে সবচেয়ে বেশি যারা ভালোবাসতেন, তাঁরা কী করতেন বুঝতে হবে। সাহাবা রাদিয়াললাহু আনহুম তাঁর কথা মেনে চলতেন। তিনি যেই দ্বীন শিখিয়ে গিয়েছেন, তাঁরা সেটা আল্লাহর ইচ্ছায় হুবহু হেফাজত করেছেন। কতখানি - সেটা আসলে এই সামান্য লেখায় বুঝানো সম্ভব না- তার জন্য একটু পড়ালেখা করতে হবে। আর হ্যাঁ- আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ হিসেবে তাঁরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিন করেননিআপনি সেটা করার কে?

এটা কি এমনিই করছেন? Happy Birthday যেভাবে করে মানুষ? তাহলে তো শয়তানের পূজারীরা যেই অনুষ্ঠান উদ্ভাবন করেছে সেটা করছেন। নাকি এটা দ্বীন ভেবে করছেন? তাহলে এমন কিছু করছেন যা দ্বীনের অংশ ছিলই না!
আর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গিয়েছেন:

যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনে (নিজের পক্ষ থেকে) কোন নতুন কথা উদ্ভাবন করল---যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।” (বুখারী ২৬৯৭, মুসলিম ৪৫৮৯নং)

যেই উৎসব আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করেননি, তাঁর সাহাবারা যারা তাঁকে জীবন দিয়ে ভালোবাসতেন তাঁরা করেননি- সেই উৎসব করে দ্বীনকে অপমান করা ছাড়া আর কী হচ্ছে? আর এটা কেমন ভালোবাসা যা দ্বীনের মাঝে নতুন কিছু সংযোজন করার মাধ্যমে দেখানো হচ্ছে? প্রত্যাখ্যান যোগ্যকে সাদরে পালন করে কী ভালোবাসা দেখানো হচ্ছে? এই ভালোবাসা কি সেই ভালোবাসা, যা দেখানোর কথা? এটা কি আদৌ ভালোবাসা??

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিন পালনের কোনো দলিল নেই। জন্মের তারিখটা আসলে কবে সেটা নিয়েই ঐক্যমত নেই।

আর আপনার তাঁর প্রতি ভালোবাসার দলিল? সেটা তাঁর শেখানো দ্বীনকে মেনে চলার মাধ্যমে দেখান। দ্বীনের বিরোধিতা করার মাধ্যমে না!

আল্লাহুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আ'লা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ।

---------------

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

‘‘তোমরা (দ্বীনের) নব প্রচলিত বিষয়সমূহ থেকে সতর্ক থাক। কেননা প্রত্যেক নতুন বিষয় বিদআ‘ত এবং প্রত্যেক বিদআত ভ্রষ্টতা’’। [সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৯৯১ ও সুনান আত-তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৭৬। তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান ও সহীহ বলেছেন।]

অনুগ্রহ করে ভালোবাসার নাম করে বিদআতে শামিল হবেন না।

Reflections

30 Jul, 03:30


কারো কারো ধারণা উলামারা দুনিয়াবি বিষয়গুলো, ঘটনাগুলো বুঝেন না। ভালো কথা। এই রকম ধারণা যারা রাখেন, তাদেরকে আমন্ত্রণ দেয়া থাকলো, আলেম হওয়ার প্রক্রিয়া পার করার। অবশ্য তার আগে তারা যেন প্রক্রিয়াটি কী জেনে নেন। নাহলে আলেম হওয়ার চেষ্টায় কেউ কেউ আবার ঘাস খাওয়া শুরু করতে পারেন। কারণ বেশিরভাগের তো এটাই ধারণা- ঘাস খেলেই উলামা হওয়া যায়, পড়ালেখা লাগে না। যাই হোক, দুনিয়ার ঘটনা বুঝার তাবৎ জ্ঞান(!) তো সেসব মানুষের আগে থেকেই আছে। সাথে আলেম হয়ে গেলেই পারেন সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া পার হয়ে। তাহলে "আলেমরা তো আসলে বুঝতে পারেন না" সমস্যার একটা সমাধান হয়।

আপনি আলেম হবেন না, দ্বীনের বিষয়ে ভালো করে জানবেন না, কিছু বিষয়ে আলেম বুঝেন আর কিছু বিষয়ে আপনিই বেস্ট বুঝেন ভাববেন, আবার পুরাপুরি দুনিয়া মুখিও হবেন না। আপনার তো পুরাই "বিদঘুটে জানোয়ার কিমাকার কিম্ভুত" অবস্থা!

নিজের যা মনে চায় সেটাকে সঠিক দেখাতে কেউ কেউ উলামাদের "দালাল", "বুঝে না", "জানে না", বলে কত কথা শুনিয়ে দেয়। যেই প্রক্রিয়া পার করার যোগ্যতা নিজেদের নাই, দুই চারটা কোর্স/ডিপ্লোমা করে আর একটু লিখতে শিখে ভাবেন সেই প্রক্রিয়া পার হওয়া আলেমদের যা ইচ্ছা বলা যায়। বলতে থাকুন। শুধু গীবতের বোঝা বইতে হবে তা না, আলেমদের কথা না শোনার কারণে অজ্ঞতার বোঝাও বইতে হবে। সেই সাথে বইতে হবে না জেনে কথা বলে বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার বোঝা।

নিজের আখিরাত কিসে নিরাপদ সেটাই বুঝতে পারছেন না। ওদিকে আলেমদের আজীবনের অধ্যবসায়কে "উনারা এসব বুঝেন না" বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। আচ্ছা পাগল তো!

Reflections

29 Jul, 10:52


“তোমাদের কেউ যখন কোন অন্যায় দেখবে তখন সে যেন তা হাত দ্বারা (শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে) পরিবর্তন করে দেয়। যদি সে সে সামর্থ্য না রাখে তাহলে যেন মুখ দিয়ে পরিবর্তন করে (মুখে প্রতিবাদ করে)। যদি এ সামর্থ্যও না থাকে তাহলে যেন অন্তরে তাকে ঘৃণা করে (এবং মনে মনে ভিন্ন পন্থায় তা প্রতিহত করার পরিকল্পনা আঁটতে থাকে)। আর এটি হচ্ছে ঈমানের দুর্বলতার স্তর।” [সহিহ মুসলিম]

এ হাদিসে অন্যায় প্রতিহত করার তিনটি স্তর বলা হয়েছে। এ তিনটি মধ্যে ১ম স্তরটি অর্থাৎ হাত দ্বারা বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে পরিবর্তন করা এর পরের দুটি স্তর থেকে নি:সন্দেহ অধিক উত্তম। তবে তা শক্তি-সামর্থ্যের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ যদি কারও অন্যায় প্রতিরোধের জন্য পর্যাপ্ত শক্তি-সামর্থ্য থাকে তাহলে তা ব্যবহার করে অন্যায় পরিবর্তন করবে। আর এটি হল শক্তিশালী মুমিনের বৈশিষ্ট্য। কিন্তু সে শক্তি না থাকলে মুখে (যেমন: মৌখিকভাবে সরাসরি প্রতিবাদ করা, বক্তৃতা, সভা-সেমিনার, টকশো, সামাজিক মাধ্যম, লেখালেখি, সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ইত্যাদি মাধ্যমে) প্রতিবাদ করবে। সে সুযোগ না থাকলে অন্তরে উক্ত অন্যায় কর্মের প্রতি ঘৃণা পোষণ করবে এবং বিকল্প পন্থায় অন্যায় প্রতিহত করার সুযোগ খুঁজবে। অন্যায়ের প্রতিবাদে এই ধারাবাহিকতা লঙ্ঘন করা যাবে না।

❑ দেশে সংঘাত ও হানাহানি পরিবেশ কতটা ক্ষতিকর?

আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, নিজেদের মধ্যে সৃষ্ট সংঘাত, হানাহানি, কাটাকাটি ও রক্তপাত আমাদের একতা, সংহতি ও শক্তিকে বিনষ্ট করবে যা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারে। কেননা শত্রুরা এমন ফিতনা-সংকুল ও বিশৃঙ্খল পরিবেশের অপেক্ষায় থাকে।

অরাজক পরিস্থিতি দেশের সাধারণ জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে, দেশের অর্থনীতিতে ধ্বস নামে, দেশের সার্বিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে, সমাজে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র, হাহাকার ও অশান্তি বৃদ্ধি করে, শিক্ষা, গবেষণা, দ্বীন চর্চা, দাওয়াতি কার্যক্রম ইত্যাদি সব কিছুই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অবশ্য আমাদের দেশে তথাকথিত গণতন্ত্র না আছে সরকারের মধ্যে, না আছে জনগণের মধ্যে। বরং এখানে বিশৃঙ্খলা করাটাই যেন নিয়ম। এটাই যেন গণতন্ত্রের ভাষা।
বাস্তবতা হলো, যেমন জনগণ তেমন সরকার। যে দেশের অধিকাংশ মুসলিম ইসলামি আদর্শ ও রীতি-নীতি এবং ইসলাম চর্চা থেকে দূরে চলে যায় আল্লাহ তাদের উপর আজাব হিসেবে জালিম শাসককে চাপিয়ে দেন।

সুতরাং এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় আল্লাহর দ্বীনের পথে আমাদেরকে ফিরে আসতে হবে এবং সব ধরণের পাপাচার ও আল্লাহর নাফরমানি থেকে তওবা করতে হবে। অন্যথায় এহেন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

আমাদের কর্তব্য, সর্ব প্রকার পাপাচার, আল্লাহর নাফরমানি, শিরক, বিদআত, মুনাফেকি, নৈতিক স্খলন, জুলুম-নির্যাতন, অন্যায়-অবিচার, অধিকার হরণ, দুর্নীতি ইত্যাদি থেকে আল্লাহর নিকট তওবা করা এবং নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো। তাহলে আল্লাহও আমাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাবেন। অন্যথায় পরিবর্তনের আশা করা দূরাশা ছাড়া কিছু নয়।

✪ আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ اللَّـهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا مَا بِأَنفُسِهِمْ

"আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। (অর্থাৎ পাপ-পঙ্কিলতা ও আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে ফিরে আসে)।" [সূরা রা'দ: ১১]

✪ তিনি আরও বলেন,

ذَٰلِكَ بِأَنَّ اللَّـهَ لَمْ يَكُ مُغَيِّرًا نِّعْمَةً أَنْعَمَهَا عَلَىٰ قَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا مَا بِأَنفُسِهِمْ

"তার কারণ এই যে, আল্লাহ কখনও পরিবর্তন করেন না সে সব নেয়ামত, যা তিনি কোন জাতিকে দান করেছিলেন, যতক্ষণ না সে জাতি নিজেই পরিবর্তিত করে দেয় নিজের জন্য নির্ধারিত বিষয়।" [সূরা আনফাল: ৫৩]

আল্লাহ এই সরকার, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাধারণ জনগণকে সঠিক বুঝ দান করুন এবং দেশে ফিতনার আগুন নির্বাপিত করে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করুন। আমিন।
-আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
জুবাইল, সৌদি আরব
তারিখ: ১৮-০৭-২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ
#abdullahilhadi

Reflections

29 Jul, 10:52


কোটা সংস্কার আন্দোলন: ইসলামের দৃষ্টিতে রাষ্ট্র ও জনগণের করণীয়

প্রশ্ন: কোটা সংস্কার আন্দোলনের বিষয়ে আমাদের করণীয় কী? উভয় পক্ষের দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সংঘর্ষ, অবরোধ ইত্যাদি কার্যক্রমে জন দুর্ভোগ বাড়ছে বৈ কমছে না। এ বিষয়ে শরিয়ার হুকুম কী?
উত্তর:
একটি দেশে সুস্থ ও সুন্দর জীবনধারার জন্য অশান্তি ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা কোনভাবেই প্রত্যাশিত নয়।

এ ক্ষেত্রে সরকারের কর্তব্য, অনতিবিলম্বে কোটা সংস্কার বিষয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের সাথে বসে তাদের দাবী-দাওয়া আন্তরিকতার সাথে শোনা এবং অতি দ্রুত সুষ্ঠু সমাধানের পথ বের করা ও সংকট নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যদি তাদের দাবি-দাওয়া সঠিক ও ন্যায় সঙ্গত হয় তবে তা মেনে নেওয়া। অন্যথায় তাদের নিকট যৌক্তিকভাবে তাদের দাবীর অন্যায্যতা ও অসারতা ব্যাখ্যা করা অথবা আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা।

কিন্তু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মহল থেকে ছাত্রদেরকে ব্যঙ্গোক্তি ও উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে খেপিয়ে তোলা কোন শাসকের জন্য গ্রহণযোগ্য আচরণ হতে পারে না। এর দ্বারা দেশে হিংসাত্মক কার্যক্রম, রক্তপাত ও বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পাবে এতে কোন সন্দেহ নেই।

অনুরূপ ভাবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব দেশে সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সর্বসাধারণের নিরাপত্তা বিধান করা। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতেই নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের রক্ত ঝরছে। ইতোমধ্যে নিহত হয়েছে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। আহত হয়েছে, কয়েক শত। হাসপাতালের শয্যায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে অনেকে।

একজন নিরস্ত্র প্রতিবাদ কারী শিক্ষার্থীকে দু হাত উপরে উত্তোলিত অবস্থায় সামনে থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এটা কোনও দায়িত্বশীল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ হতে পারে না। প্রয়োজন বোধে তাকে অন্যভাবে সরানো‌ যেত।

আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, সরকার দলীয় ক্যাডার বাহিনী লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। হাসপাতালে আহত রোগীদের উপর আক্রমণ করছে। অথচ সেখানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্যাতিতদের সাহায্যে এগিয়ে না এসে তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে প্রশাসনের এহেন ভূমিকা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আর ছাত্রদের উচিত, কোন ধরনের ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও জানমালের ক্ষতি হয় এমন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা এবং শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরা, গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা, জনমত সৃষ্টি করা, সভা, সেমিনার, লেখালেখি, সোশ্যাল মিডিয়া, টকশো, স্মারকলিপি প্রদান‌ ইত্যাদি বিভিন্নভাবে কোটা সংস্কারের যৌক্তিকতা তুলে ধরা। আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া।

এত কিছুর পরও সরকার দাবি পূরণে সম্মত না হলে ধৈর্যের সাথে বিকল্প পন্থা খুঁজবে, ইমানদারগণ সমস্যার সমাধানের জন্য মহান আল্লাহর নিকট দুআ করবে ও অন্য সুযোগের অপেক্ষায় থাকবে কিন্তু কোনভাবেই ফিতনা-ফ্যাসাদ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অবকাশ নেই। কোন এমন পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না যাতে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরে। কেননা ইসলাম তা সমর্থন করে না।

❑ দাঙ্গাহাঙ্গামা, মারামারি-কাটাকাটি ও রক্তপাত সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?

ইসলামে সমাজে ফেতনা-ফ্যাসাদ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং জি**হাদের ময়দা ছাড়া র**ক্তপাত ও দাঙ্গাহাঙ্গামাকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করা হয়েছে।

এ মর্মে কয়েকটি হাদিস পেশ করা হলো:

✪ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজের ভাষণে বলেন,

« إنَّ دِماءكُمْ ، وَأمْوَالَكُمْ ، وأعْرَاضَكُمْ ، حَرَامٌ عَلَيْكُمْ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا »

“নিশ্চয়ই তোমাদেল পরস্পরের রক্ত (জীবন), ধন-সম্পদ ও মান-সম্মান পরস্পরের জন্য হারাম ও সম্মানের যোগ্য, তোমাদের আজকের এ দিনের সম্মানের মতই।” [বুখারী, হাদিস নং ১০৫; মুসলিম, হাদিস নং ৪৪৭৭]

✪ তিনি আরও বলেন,

« كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ : دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ »

“প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির রক্ত (জীবন), ধন-সম্পদ ও মান-সম্মান অপর সব মুসলিমের জন্য হারাম।” [মুসলিম, হাদিস নং ৬৭০৬]

✪ তিনি আরও বলেছেন,

« سِبَابُ المُسْلِمِ فُسُوقٌ ، وَقِتالُهُ كُفْرٌ »

“মুসলিম ব্যক্তিকে গালি দেওয়া পাপ এবং তার বিরুদ্ধে লড়াই করা কুফরি।” [বুখারী, হাদিস নং ৬৬৬৫; মুসলিম, হাদিস নং ২৩০]

❑ অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করার ব্যাপারে ইসলামের মূলনীতি কী?

আবু সাঈদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি,

مَنْ رَأَى مِنْكُم مُنْكراً فَلْيغيِّرْهُ بِيَدهِ ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطعْ فبِلِسَانِهِ ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبقَلبهِ وَذَلَكَ أَضْعَفُ الإِيمانِ

Reflections

28 Jul, 16:28


আমরা কি বিশ্বাস করি যে আল্লাহ দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেছেন? আমরা কি বিশ্বাস করি যে কুরআন সুন্নাহের মাঝে আমাদের জীবনে প্রয়োজন এমন সকল নির্দেশনা রয়েছে?
আমরা কি মানি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের আদর্শ?

কোনো পরিস্থিতিতে সেক্ষেত্রে আমাদের কুরআন সুন্নাহে ফেরত যেতে হবে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উদাহরণে ফেরত যেতে হবে। এবং এই কুরআন সুন্নাহ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর সাহাবারা কিভাবে বুঝেছেন, তাদের ছাত্ররা কিভাবে বুঝেছেন সেখানে ফেরত যেতে হবে।

আবেগ দিয়ে যদি ইসলাম চলতো, হুদাইবিয়া সন্ধির দিন ইসলাম শেষ হয়ে যেত। আবেগ দিয়ে ইসলাম চললে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কবর একদিন মাজারে পরিণত হতো। আবেগ দিয়ে ইসলাম চললে এতদিনে ইসলামে যা ইচ্ছা তাই ঢুকে যেত।

ইসলাম আবেগ দিয়ে চলে না। গরম গরম লেখা দিয়েও চলে না। জ্ঞান বিবর্জিত অনেক যুক্তি আর অনেক তর্ক দিয়েও চলে না। ইসলাম চলে না সেলিব্রিটি বা ফলোয়ার দিয়ে।

আমার মন অনেক কিছু চাইবে। কিন্তু সেই মনকে আমি ইসলামের সীমার মাঝে আঁটিয়ে নিয়ে চলবো। এখানে হলো আত্মসমর্পণ- নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর ইচ্ছার কাছে সমর্পণ করা।

অনেক লেখা ভালো লাগবে। অনেক "আমি মনে করি" ভালো লাগবে। অনেক বিখ্যাত কলমের যুক্তি কপচানো ভালো লাগবে। সেই ভালো লাগাকে ইসলামের সীমায় আঁটাতে হবে। এই কথা কি আমার ভালো লাগছে বলে আমার কাছে গ্রহণযোগ্য? তাহলে আমি আমার "মন" এর দাস। এই ভালো লাগার ভিত্তি কি কুরআন, সুন্নাহ, রাসূলের অনুসরণ এবং সেইভাবে শরিয়ত কে বুঝা যেভাবে আমাদের পূর্ববর্তীরা বুঝেছেন? সাহাবারা, তাদের ছাত্ররা? তাহলে হ্যাঁ, আমরা আল্লাহর আনুগত্য করছি।

বুঝতে পারছেন না পথ ঠিক আছে কিনা? জ্ঞান চর্চা করুন। আলেম উলামাদের থেকে জ্ঞান চর্চা করুন। যে যা খুশি থিওরি দিবে করণীয় আর বর্জনীয় নিয়ে, উলামাদের নিয়ে বাজে কথা বলবে, কুরআন সুন্নাহ থেকে এক চিমটি নিয়ে বাকিটা নিজে কী ভাবে বলে দিবে আর আপনি নিজেকে বুঝাবেন সেটাই দ্বীন- নিজেকে এত নামাবেন না।

দ্বীন জানুন এবং দ্বীন মানুন। নাহলে সত্যিই হারিয়ে ফেলবেন নিজেকে চারিদিকের সকলের থিওরির কচকচানির ভিড়ে।

Reflections

27 Jul, 16:09


মুসলিম শাসকের প্রতি আমাদের কীরূপ আচরণ হওয়া উচিত? এবং অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কী হওয়া দরকার সেই বিষয়গুলো নিয়ে উস্তায মোহাম্মদ এনামুল হক এর অসাধারণ একটি আলোচনা! আলোচনাটি মাসজিদ আস সিদ্দিক (রাঃ) কমপ্লেক্স এ দেয়া হয়েছিল ২৮ জানুয়ারী ২০২২ সালে। ভিডিও মাসজিদ আস সিদ্দিক (রাঃ) কমপ্লেক্সের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেল থেকে নেয়া। যে বইটি থেকে আলোচনা করা হয়েছে সেটি হচ্ছে - ‘‘Abdullah Al-Athari’’ এর লেখা ‘‘Islamic Beliefs A Brief Introduction to the 'Aqeedah of Ahl Assunnah Wal-jama'a’’ বইটি থেকে ‘‘The obligation to obey Muslim leader with regard to that which his right and proper’’ অধ্যায় থেকে আলোচনা করা হয়েছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বক্তব্য যা আমরা নিজেরা জানবো এবং অন্যদের কাছেও এটি শেয়ার করবেন, ইনশাআল্লাহ।


https://youtu.be/pGiNJ1Rs0g0?si=KujEpMwWPnwP2LDa

Reflections

26 Jul, 21:56


"এই চিঠিটি তোমার কাছে পৌঁছাবে না। কিন্তু আমার দোয়া তো আল্লাহর কাছে পৌঁছাবে।"

(প্রসঙ্গ: কাফিরদের দেশে সন্তান বড় করা)

https://naylanuzhat.wordpress.com/2024/07/27/dearlittleone/

Reflections

09 Jul, 09:35


আক্রমণ মাঝে মাঝে ব্যক্তিগত হয়ে যায়। নাম ধরে সবার সামনে কাউকে নিয়ে বদনাম করার মত নিম্নরুচির। কারো অধ্যবসায়ের আড়ালে শুধু স্বামীর উচ্চশিক্ষার অবদান খুঁজার মত হিংসুটে মনোভাবের। আরেকজনের দ্বীনের জ্ঞান নাই ধরে নিয়ে ‘সে কেমন দ্বীনদার হলো’ এটা পাবলিকলি বলার মত ছোট মানসিকতার। আরেকজনের দুনিয়া নিয়ে জানা নেই বা অভিজ্ঞতা নেই ধরে নিয়ে তাকে অজ্ঞ ভেবে নেয়ার মত অজ্ঞতার।

https://naylanuzhat.wordpress.com/2024/07/09/untold/

Reflections

08 Jul, 03:21


আমার নানা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর। PHD করেছেন সেই আমলে। সাহিত্যিক। আমাদের আগের জেনারেশনের কাছে পরিচিত নাম। সেই নানা নানীকে আজীবন অনেক সাধারণ জীবন যাপন করতে দেখেছি। পছন্দমত খেয়েছেন, পরেছেন। কিন্তু সবাইকে নিয়ে থেকেছেন। সেকেন্ড হ্যান্ড ফার্নিচার ব্যবহার করতে উনাদের লজ্জা লাগেনি। সেটা যে টাকার অভাবে করতে হয়েছে তা কিন্তু না। উনাদের এক কথা- কী প্রয়োজন? এর চাইতে গ্রামে ঘরে ঘরে সবার জন্য টিউবওয়েল আর বাথরুম বানিয়ে দিবেন। এভাবেই জীবন পার হয়েছে তাদের। আমাদের বলতেন, "কত কাপড় লাগে তোমাদের? গ্রামে মানুষের কাপড় নাই।" অথচ তুলনা করলে আমাদের এমন কোনো বেশি জিনিস ছিল না। উনারা অভাব দেখেছেন, ভালো সময় দেখেছেন, দেশ বিদেশ ঘুরেছেন। কিন্তু যেমন সাধারণ লাইফস্টাইল ছিল, সেটাই রেখেছেন আজীবন।

সেখান থেকে সেই দুনিয়ার দাস না হওয়ার শিক্ষা পেলেন আমার মা। কলেজের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এর স্ত্রী। জীবন পার করে দিলেন ব্র্যান্ড আর প্রাইসের চক্করে না পড়েই। বাবার চাকরির সুবাদে বাসায় অনেক দামি জিনিস এসেছে আবার মানুষকে বিলিয়েও দেয়া হয়েছে। সেগুলোর মোহ কখনো ছিল না উনাদের। আজকে আমাদের ড্রইং রুমে কেউ আসলে তার এসি ছাড়া বসতে হবে। এসি লাগানোর সামর্থ্য নেই তা না। জরুরত লাগছে না কারো। একটু গরম লাগল কী হয়? আমার বাবার চাকরি জীবনের সুভিনিয়র সাজানো পাবেন না চকচকে টেবিলে। কিছু আছে কোথাও রাখা। সেলফে থাকে, লাইফস্টাইল এ না। আমাদের বাসায় আজীবন কাজ করা প্রত্যেকে স্বগর্বে আপনাকে বলবে, আপনি যা খাচ্ছেন, তিনি এবং বাড়ির মালিকও তাইই খাচ্ছেন।

বাবা-মায়ের থেকে কিছুটা এই স্বভাব এসেছে আমাদের মাঝে। খাওয়া, পরা, খরচ চলবে। কিন্তু কোনোকিছু এত অপরিহার্য করে নিবো না যে সেটা ছাড়া চলবেই না।সৌদি আরব এর ২৪/৭ এসি থেকে এসে আমার সন্তান এসি বিহীন রুমেই থাকছে, পড়ছে। বাংলাদেশকে অস্পৃশ্য ভাবছে না। ভাবলে নিজেরই ক্ষতি।

"যেকোনো মূল্যে আমার এমনটা লাগবেই" এই চক্রে না পড়ার মাঝে যে কী অদ্ভুত শান্তি, অদ্ভুত স্বাধীনতা, সাহস- এটা আমি আমার মুরুব্বীদের দেখে শিখেছি।

আমরা সবাই ভালো থাকতে চাই। কিন্তু সেটা god হতে পারে না যে তার জন্য আমাদের যেকোনো মূল্য দিতে হবে। ঈমানের মূল্য হলেও দিতে হবে। এইটুকু নিজে শেখা আর সন্তানদের শেখানো কি এতটাই কঠিন যে সবাইকে অর্থের দাস হয়ে যেতে হবে?

মানুষের যখন টাকা হয়, অথবা দেশের বাইরে থাকার সুযোগ হয়, মানুষ খুব দ্রুত নিজের অভ্যাস বদলে ফেলে। এক সময় তার মনে হয় এটা ছাড়া তার চলবে না। এই টাকা। এই বিলাসিতা। এই বাড়ি। এই গাড়ি। এই চাকচিক্য। এই যেমন খুশি খরচ করা। তাই হারাম চাকরিটা ছাড়বো ছাড়বো করেও ছাড়তে পারে না। কাফিরদের দেশে ছেলে মেয়ে এমনকি নিজের ঈমান বিনষ্ট হয়ে গেলেও সেই দেশ ছাড়ার কথা ভাবতেই পারে না। ছেলে মেয়েরা একসময় অভ্যস্ত হয়ে যায় সেই লাইফস্টাইল এ। ওরা আর কোনোদিন হালালের দিকে পা বাড়ানোর কথা ভাবতেই পারে না (আল্লাহর প্ল্যান ভিন্ন হলে সেটা অন্য ব্যাপার)।

আমরা কি আসলেই ইসলাম নিয়ে চিন্তিত? আমরা শেষ পর্যন্ত আমাদের দুনিয়ার আরাম আয়েশ নিয়েই চিন্তিত। আমরা শেষ পর্যন্ত সেই দুনিয়ার দাস যার মূল্য আল্লাহর কাছে মশার ডানার চাইতেও কম।

----------

তিন বছর ব্যাপী একটা ব্লকেড। সন্তানদের খাবার নেই। নিজেদের খাবার নেই। সবাই সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। গাছের পাতা পেলে সেটাই খাওয়া। দূর দূর থেকে ক্ষুধার্ত শিশুদের কান্নার আওয়াজ পাওয়া যেত।

সেদিন যদি আল্লাহর রাসূল ﷺ আর সাহাবাগণ রাদিয়াল্লাহু আনহুম দুনিয়া নিয়ে ভাবতেন, যদি ভাবতেন কেমনে এত আরাম ছেড়ে দিবো, আজকে পৃথিবীর বুকে ইসলাম থাকতো না। আর আজকে আমরা নিজেদের দুনিয়া নিয়ে ভাবতে ভাবতে নিজেদের হৃদয়ে থাকা ঈমানটুকু বিক্রি করে দিচ্ছি।

ছেলে মেয়ে জাহান্নামে যাক, হারাম খাক, ব্যভিচার করুক, ঈমান হারিয়ে ফেলুক। আমাদের সোনার হরিণ চাইই চাই।

অথচ সমস্ত হারাম কামাই দিয়েও, এমনকি হালাল কামাই দিয়েও দুনিয়া নামক সোনার হরিণে নির্ধারিত সময়ের চাইতে এক মুহূর্ত বেশি থাকতে পারবো না। তারপর আখিরাত। আজীবন।

দুনিয়ার জীবনের এত সীমা লঙ্ঘনের পর আখিরাতের লাইফস্টাইল কেমন হতে পারে সেই নিয়ে কবে ভাববো আমরা?

Reflections

25 Jun, 12:34


আমার ইসলামী বিষয়ে লেখার শুরুটা ছিল ফেসবুকে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার অশেষ রহমত যে কিছুদিন পর উপলব্ধি করলাম যথাযথ দ্বীনি যোগ্যতা অর্জনের আগে লেখালেখি খুব ভয়ংকর জিনিস (যদিও তখন আমি ইসলামিক স্টাডিজ পড়ছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে)। এবং সেই প্ল্যাটফর্মের আরো কিছু সমস্যা আছে যা অন্যত্র লিখেছি। এখন বিস্তারিত না বলি।

এই প্ল্যাটফর্মগুলোর হাত ধরে এখন সকলে কথা বলতে শিখেছে। যারা ইসলাম মানেই না তাদের কথা আর না বলি। যারা ইসলাম জানেন কিছুটা বা ইসলামের প্রতি দুর্বলতা আছে, তারা অনেকে লিখছেন নিজের মতামত। নিজের মনে হওয়া। নিজের পছন্দ অপছন্দ। ছড়িয়ে দিচ্ছেন হয়ত ভালো চেয়ে- কিন্তু কথাটা ভুল লিখেছেন ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে না ঠিক লিখেছেন সেটা নিজেই জানেন না। ফলাফল- কখনো কোনো ফরয ইবাদত নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। কখনো মানুষ ভুল ট্রেন্ড এ যাচ্ছে। কখনো মানুষ অযথা উত্তেজিত হয়ে পড়ছে। কখনো ভুল হাদীস, ভুল আমল শেয়ার হচ্ছে। কখনো ভুল উপদেশ দিচ্ছেন এখন আরেকজনকে। সাথে গালাগালি, কথার পিঠে কথা বলা, অভদ্রতা- এসব গুনাহের কাজ তো রইলোই।

কিয়ামতের দিন আমাদের ছোট খাটো সমস্ত আমলের হিসাব হবে। নিজের ভুল কাজের হিসাব তো আছেই। সাথে যদি মানুষকে বিভ্রান্ত করার দায় আসে?

সবাই চেষ্টা করুন সহিহ আকীদার উলামাদের লেখা বা কথা প্রচার করতে। চেষ্টা করুন রেফারেন্স সহ নির্ভরযোগ্য কথা প্রচার করতে। জ্ঞান অর্জনের পথ খুঁজুন- শিক্ষকের কাছে। জ্ঞান অর্জন শেষ হলে শিক্ষককে জিজ্ঞেস করুন আপনার চিন্তা ধারা বুঝে তিনি কী মনে করেন? আপনি লিখতে পারবেন, নাকি এখন না লেখাই ভালো? তারপর অনুমতি পেলেও মাঝে মাঝেই শিক্ষকদের সাথে পরামর্শ করুন এই ভাবনা কি ঠিক আছে? আপনার এই লেখায় মানুষের বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই তো?

আর যদি এভাবে লিখতে না পারেন, তাহলে লিখবেন না। আপনার মত প্রকাশ যদি আপনার আখিরাতের কাজে না আসে, মানুষকে বিভ্রান্ত করে, সেই মত আপনি প্রকাশ না করাই আপনার জন্য উত্তম।

(এই লেখালেখির অংশ ২০১২ তে আমিও ছিলাম। এই ট্রেন্ড এর অংশ হওয়ার জন্য আমি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে ক্ষমা চাই। আর উপরের ধাপগুলো, ২০১৯ এ আবার লেখা শুরু করার সময় সেসব মেনেই করেছি। আর এখনও নিয়মিত শিক্ষিকাদের পরামর্শ মেনে চলি। লেখার ক্ষেত্রে এবং নিজের ভুল সংশোধনের ক্ষেত্রেও।)

~ নায়লা নুযহাত

Reflections

20 Jun, 02:42


"এই কথার সাথে ‘আমি একমত নই‘।" বোন, ইসলামী আলোচনায় "তোমার" মত কেউ চাইছে না। কুরআন, সুন্নাহ থাকতে, সাহাবাদের উদাহরণ থাকতে, "তোমার-আমার" এর বিষয়ই তো আসছে না। এইটুকুও যদি "তোমার" জানা না থাকে, তুমি "ইসলাম" নিয়ে কথা বলতে এসো না।

ইসলাম তোমার-আমার "মতের" ওপর চলে না। আর, চলবেও না।