সম্প্রতি সোহেল গালিব নামক এক মানুষরূপী পশু আমাদের চোখের শীতলতা, সর্বশ্রেষ্ঠ মানব মহানবী মুহাম্মাদ (সা:) এর শানে বেয়াদবি করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। এই মারাত্মক ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রাখাল রাহা নামক আরেক ব্যক্তি আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা ও ইসলামকে নিয়ে কটূক্তি করেছে। প্রসঙ্গত রাখাল রাহা বর্তমান সরকার কর্তৃক জাতীয় পাঠ্যক্রম সংশোধন কর্মসূচীর সদস্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিল।
প্রিয় দেশবাসী, সাম্প্রতিক ঘটনা প্রকাশ করে দিয়েছে আপামর জনতার আত্মমর্যাদা, স্বাধীনতা ও দীনি অধিকার সংরক্ষণে বিদ্যমান রাষ্ট্রব্যবস্থা অক্ষম। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষকে আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ব্রিটিশদের চাপিয়ে দেয়া সেকুলার রাষ্ট্রব্যবস্থা পৌনে তিনশ বছর ধরে মুসলিম-হিন্দু, বাঙ্গালি-পাহাড়িসহ সকল জাতিগোষ্ঠীর স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার হরণ করে চলেছে। তার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত হচ্ছে সিংহভাগ মানুষের আত্মমর্যাদা ও গভীরতম অনূভুতির উপর এই বেপরোয়া ও উগ্র আচরণ।
ইউনুস সরকার কি রাখাল রাহার আদর্শ, মানসিকতা, রুচিবোধ ও লক্ষ্য সম্পর্কে কিছু না জেনেই তাকে শিক্ষাক্রম সংশোধনের দায়িত্বে নিয়োজিত করেছে? সচেতন মানুষ মাত্রই এপ্রশ্নের উত্তর জানে। নির্দ্বিধায় বলা যায়, রাখাল রাহার বেফাঁস মন্তব্য সেক্যুলার রাষ্ট্রযন্ত্রের চরিত্র নতুন করে প্রকাশ করে দিয়েছে, পরিস্কার করে দিয়েছে কেমন মানুষেরা এই রাস্ট্রের পক্ষ থেকে নীতিনৈতিকতা ও রুচি নির্ধারণে লিপ্ত। যদিও এটা প্রথম নয়, এবং সম্ভবত শেষও নয়।
মুসলিম ভাই ও বোনদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, বিদ্যমান সেক্যুলার শাসনব্যবস্থা ও তাদের কালচারাল ফ্রন্টের প্রভাব ও কর্তৃত্ব যতদিন বিদ্যমান থাকবে, ক্রমাগত ইসলাম এভাবে আক্রান্ত হতেই থাকবে। শুধু রাজা গিয়ে রাজা আসলে কিংবা অধ্যাদেশ ও আইনের বিবর্তন ঘটিয়ে ইসলামবিদ্বেষের রাজনীতি বন্ধ করা যাবে- এই ধারণা অমূলক।
যে রাষ্ট্রব্যবস্থা ও আইনি কাঠামো অনিবার্যভাবেই ইসলামবিদ্বেষকে সামাজিক বৈধতা দান করে, সেই রাষ্ট্রব্যবস্থার কাছে অসহায় আর্জি জানানো আদর্শিক ও রাজনৈতিক উভয় দিক থেকেই অযথার্থ।
বাংলাদেশের মানুষের, বিশেষত মুসলিমদের আদর্শ, মূল্যবোধ ও স্বাধীনতার উপর ধারাবাহিক আক্রমণ চলমান থাকবেই, যতদিন না এদেশের আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন ও স্বাধীনচেতা মুসলিমরা সচেতন ও সক্রিয় হবে। সেক্যুলার সরকারের কাছে নয়, বরং সমাধানের শক্তি আপামর জনতার সাহস, উদ্যম ও আত্মত্যাগের মাঝেই নিহিত।
বিশেষত সম্মানিত উলামায়ে কেরাম ও নের্তৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের প্রতি অনুরোধ থাকবে, আপনারা আমাদের দাবীর ন্যায্যতা ও শক্তি জনমানুষের কাছ থেকে অর্জন করুন। কেননা মুসলিমদের স্বাধীনতা ও মুক্তি প্রকৃত অর্থে কেবল তারাই নিশ্চিত করতে পারবে, ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের পূজারী শাসকগোষ্ঠী নয়।
পরিশেষে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের উদ্দেশ্যে আমরা বলতে চাই, ইসলাম ও মুসলিমদের উপর ক্রমাগত আক্রমণের প্রশ্নে আপনারা সরব হোন। আপনাদের জীবন, সম্মান ও সম্পদের নিরাপত্তা ঐতিহাসিকভাবেই মুসলিমদের কাছে, ইসলামী শাসনের অধীনেই সবচেয়ে সুরক্ষিত ছিল। ব্রিটিশ, পাকিস্তানি বা বাংলাদেশী সেক্যুলারদের কাছে নয়। তাই আমরা জাতির আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন সকল মানুষদের আহবান জানাই, নিজ অবস্থান থেকে আপনারা ইসলামের উপর পরিচালিত জঘন্য আক্রমণ প্রতিহতকরণে আপন দায়িত্ব পালন করুন।
আল্লাহ তালা আমাদের তাওফিক দান করুন।
রাদিউজ্জামান অনিক
সাধারণ সম্পাদক
ইসলামিক রিভাইভাল ফ্রন্ট (আইআরএফ)