Dernières publications de Sadiq Farhan (@sadiqfarhan58) sur Telegram

Publications du canal Sadiq Farhan

Sadiq Farhan
سنفطر في القدس عاصمة فلسطين
1,568 abonnés
279 photos
61 vidéos
Dernière mise à jour 26.02.2025 00:16

Canaux similaires

Sorowar's talks
27,673 abonnés
Sirah
27,103 abonnés
AFB News
13,522 abonnés

Le dernier contenu partagé par Sadiq Farhan sur Telegram


অনুবাদকের কথা

দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি যাঁর জীবনী লেখা হয়েছে, তিনি মহানবি মুহাম্মাদ সাঃ। এমন কোনো সময় নেই, যখন তাঁকে স্মরণ করা হয়নি। এমন কোনো ভাষা নেই, যে ভাষায় তাঁর স্তুতিগাথা রচিত হয়নি। এমন কোনো জনপদ নেই, যেখানে তাঁর জীবনকথা আলোচিত হয়নি। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। তিনি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল। তিনি মনুষ্যত্বের পথিকৃৎ। তিনি রিসালাতের আলোকবর্তিকা।

মহানবির মহাজীবনের আখ্যান নিয়ে যুগ যুগ ধরে এই যে এত এত গ্রন্থরচনা, এটি বিশ্বসাহিত্যে তৈরি করেছে নতুন এক ধারা। এ ধারার নাম সিরাতসাহিত্য। পূর্বসূরি মনীষী সিরাত-লেখকদের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই আমি বলতে চাই, ড. আয়িজ আল কারনির মুলহিমুল আলাম আবহমান সিরাতসাহিত্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। এতে কাহিনি বর্ণনা মুখ্য নয়, কাহিনি ছেঁকে তার তলা থেকে দার্শনিক তাৎপর্য তুলে আনাও লক্ষ্য নয়—এই গ্রন্থ চিরায়ত রীতিপ্রথাভাঙা এক গভীর আবেগসঞ্জাত কাব্যধর্মী সিরাতগ্রন্থ। এ গ্রন্থ নবিজীবন সম্পর্কে পাঠককে যতটা-না জ্ঞান দেয়, তার চেয়ে ঢের বশি দেয় নিবিড়, গভীর, প্রবহমান, জীবন্ত ও উচ্ছল অনুভূতি।

প্রকাশের পরপরই ব্যতিক্রমী এ সিরাতগ্রন্থটি আরববিশ্বে হইচই ফেলে দিয়েছে। সাহিত্য-সমালোচকেরা বলছেন, মুলহিমুল আলামই আয়িজ আল কারনির শ্রেষ্ঠ রচনা। সংগত কারণেই বাংলাদেশের কালান্তর প্রকাশনী গ্রন্থটির বাংলা করতে দেরি করা ঠিক মনে করেনি। লেখকের তরল আলংকারিক ছন্দোময় কল্লোলিত গদ্যকে সরল কথ্যগদ্যে তরজমা করতে অনুবাদক হিসেবে আমাকে পদে পদে বেগ পেতে হয়েছে। তরজমায় মূলের রসসঞ্চারের ঘাটতি ঘটল কি না, এ নিয়ে আমার চিন্তার অন্ত ছিল না। এ-ই শুধু আশ্বস্ত করতে পারি, সেই চেষ্টায় আমি কোনো কসুর করিনি।

একটি ‘সাহিত্যিক রচনা’ হিসেবে লেখক তাঁর গ্রন্থে অজস্র তথ্য-উপাত্ত বলে গেলেও সেসবের সূত্র উল্লেখ করেননি। আমরা সেটা করেছি, পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় পাদটীকায় সকল উদ্ধৃতির উৎস জুড়ে দিয়েছি। এমনকি যেখানে তিনি তাঁর গদ্যপ্রবাহে নিজস্ব ধরনে বিশেষ কোনো হাদিসের একটিমাত্র শব্দ উল্লেখ করে সেই হাদিসের দিকে বিজ্ঞ পাঠককে ইশারা করেই বাক্যের স্রোত অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন, আমরা সেই হাদিসটিরও সূত্র পাদটীকায় তুলে দিয়েছি। কালান্তরের প্রামাণ্যতার দায় মেটাতেই এটা করতে হয়েছে। এতে লাভ শেষমেশ অনুসন্ধিৎসু পাঠকেরই।

সিরাত রচনায় নতুন মাত্রা যোগ করা এ গ্রন্থটির অনুবাদে আমরা কতটা সফল হয়েছি, কতখানি মূলানুগ ও প্রাণবন্ত হলো কাজটা, সেই বিচারের ভার রইল জ্ঞানী পাঠকের ওপরই। তবে অনুবাদক হিসেবে আমার বড় পাওনাটা আমি পেয়ে গেছি—সে হলো আনন্দ। গ্রন্থটি পড়তে পড়তে, বাংলা করতে করতে বার বার আমার চোখ ভিজে উঠেছে, গভীর আবেগের উচ্ছ্বাসে আমি কেঁপে উঠেছি, নবিজীবনের প্রতি গভীর ভালোবাসায় হৃদয় আমার আর্দ্র হয়েছে। অসামান্য এ গ্রন্থটির সামান্য অনুবাদের কাজে ডুবে থাকা দিনগুলো আমার জীবনের উজ্জ্বল স্মৃতি হয়ে রইল। ব্যতিক্রমী এ গ্রন্থটি তার বিষয়বস্তুর মতোই সম্মান ও সমাদর পাক, এ-ই আমার কামনা।

সাদিক ফারহান
০৮-০৩-১৪৪৬ হিজরি

ইউনুস মাদানি রহ. বলেন: 

‘আমি ইমাম শাফিয়ির চেয়ে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান লোক দেখিনি। একবার কোনো প্রসঙ্গে তার সাথে আমার মতানৈক্য হলে ব্যাপারটি বিতর্ক পর্যন্ত গড়ায়। তারপর আমি নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে যাই। বহুদিন বাদে তার সাথে হঠাত দেখা হলে খুব বিচলিত বদনে তিনি আমার হাত ধরে বসেন। বলেন, আবু মুসা! বিষয়টি কি এমন না যে, আমাদের ভেতর মাসআলাগত কিছু মতবিরোধ থাকলেও ব্যক্তিজীবনে আমরা পরস্পর খুব কাছের? ধর্মীয় ব্যাপারে খানিক দ্বিমত পোষণ করলেও, আমরা কি বেশ ভালো বন্ধু নই? আমি তার এমন উদ্বেগ দেখে বিমোহিত হয়ে যাই; তার মহত্বের উচ্চতা পরিমাপ করতে চেষ্টা করি।’

- সিয়ারু আলামিন নুবালা ১৭/১০ 

একেই তো বলে আদাবুল ইখতিলাফ!

ইবনুল কাইয়িম রহ. বলেন—

শুকরিয়া মূলত পাঁচ কাজের সমন্বিত বাস্তবতা। যদি এর কোনোটি অনাদায়ী থাকে, তাহলে শুকরিয়া যথাযথ হয় না। পাঁচ কাজ হলো: 

১. নিয়ামতদাতার শতভাগ আনুগত্য
২. নিয়ামতদাতার প্রতি নিখাদ মুহাব্বত
৩. নিয়ামতের জবানি শুকরিয়া আদায়
৪. নিয়ামতের প্রেক্ষিতে তাঁর প্রশংসাজ্ঞাপন
৫. নিয়ামত অন্যায্য খাতে ব্যবহার না-করণ 

বান্দা তাঁর নিয়ামতদাতা সত্তার প্রতি কৃতজ্ঞ তখনই হবে, যখন তার ভেতর এই পাঁচ বিষয় বাস্তব হয়ে উঠবে। যদি এর কোনো একটা ছুটে যায় আর সে দাবি করে যে রবের শুকরিয়া আদায় করেছে, তাহলে সে মিথ্যা বলল। 

মাদারিজুস সালিকিন ২/২৩৪ 

‘বাইনারি-ইনক্লুসিভ’ প্রসঙ্গে

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠছে উপসাগরীয় রাষ্ট্র কাতার। পশ্চিমা দেশগুলোর সাথেও তাদের ভালো সম্পর্ক, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ঘাটিগুলোর একটি কাতারে। তাদের ভালো সম্পর্ক আছে ইসলামি দলগুলোর সাথেও। আরব বিশ্বে ইখওয়ানপন্থী আলেমদের সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষকও কাতার। মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে পেশাদার ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যম আল জাজিরাও এগিয়ে যাচ্ছে কাতারের হাত ধরে।

বছরখানিক আগে কাতার ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল। সর্বোপরি আফগান-ফিলিস্তিন সংকটে বিশেষ ভূমিকা রাখার প্রেক্ষিতে কাতারের গুরুত্ব এখন সবার কাছেই সমাদৃত। অবশ্য জনসংখ্যা, সামরিক শক্তি ও আয়তনের বিচারে কাতারের কখনোই আঞ্চলিক শক্তি হয়ে উঠার মতো সামর্থ্য নেই। সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও কাতারের অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হবার মতো অনেক কিছুই আছে।

আমাদের সমাজে অনেকে মনে করেন, ‘বাইনারি’ ভাঙতে হবে। মৌলবাদ-মডারেটদের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাতে হবে, উভয় পক্ষের সমালোচনা করে নিজেকে মধ্যপন্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আমার ব্যক্তিগত মূল্যায়ন হচ্ছে, বাস্তব জীবনে কার্যত মধ্যপন্থা বলে কিছু নেই। সবাই নিজের ডান দিককে মনে করে মৌলবাদী, বামদিককে মনে করে শিথিলপন্থী, আর নিজে মধ্যপন্থী। বাস্তবতা হচ্ছে, আপনার দুইপাশের দুইজনও নিজেদেরকে মধ্যপন্থীই মনে করে।

আমার কথা হচ্ছে, ‘বাইনারি’র সমালোচনা করা যেতে পারে, এর সাময়িক ও সীমিত গুরুত্ব আছে, তবে দুই বাইনারি মিলিয়ে মিথস্ক্রিয়ায় তৃতীয় পক্ষ/ শক্তি বানানোর কোন উপযোগিতা নেই। কোন মহাপুরুষ অলৌকিক দক্ষতায় এমন কাজে সক্ষম হলেও এখন জনে জনে নন-বাইনারি-ক্রিটিকাল হয়ে উঠার চেষ্টা করছেন। দিনশেষে এতে লাভবান হচ্ছে ক্ষমতাসীন-সুশীল গোষ্ঠীগুলোই, ধরেন, হুজুরের সমালোচনা করা যতটা সহজ, জাতীয় নেতাকে নিয়ে ততটা সহজে সমালোচনা করতে পারবেন? পারবেন না। সমীকরণে হুজুরের সমালোচনটাই প্রধান হয়ে উঠবে।

ইসলামপন্থী/হুজুরদের ইলমি/কৌশলগত সমালোচনা করাই যেতে পারে, তবে যারা একেই নিজেদের ব্রত বানিয়ে নেন, তারা দিনশেষে নিজেদেরকে ভুল যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলেন, নিজেদেরকে দাড় করিয়ে দেন নিজেদের জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। আবার যারা সেকুলারদের সংশোধন/খণ্ডনে মনোনিবেশ করেন, তারাও একপর্যায়ে ইসলামি ব্যাখ্যা দান করতে শুরু করেন। এর খুব ভালো দৃষ্টান্ত হচ্ছে ফরহাদ মজহার। সেকুলারদের সমালোচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও একসময় এসে দেখা যাচ্ছে তিনি ইসলামের নতুন ব্যাখ্যা কায়েম করতে চাচ্ছেন।

কাতারের দিকে দেখেন, বাইনারি/ননবাইনারি/ এনটি-থিসিসে না গিয়েও প্রকল্প আকারে এর উপযোগিতা অনেক বেশী। ইসলামপন্থীদের ‘মোডারেট’ বানানোর চেষ্টাগুলো ব্যর্থ হবে, সেকুলাররাও কখনোই ‘ইসলামপন্থী’ হবে না, তাই তাদেরকে ‘ইসলামি’ বানানোর প্রচেষ্টার অর্থ পিনাকী ভট্টাচার্যকে কমেন্ট সেকশনে ইসলামের দাওয়াত দানের মতই। যোগাযোগ, কূটনীতি, বোঝাপড়া অনেকবেশী জরুরী।

সেকুলারদের ইসলামপন্থীদের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেন, প্রতিষ্ঠানে রাত কাটানোর আমন্ত্রণ জানান। ভয় কাটাতে সাহায্য করেন। সেকুলার প্রতিষ্ঠান-ব্যক্তিত্বের সাথে বসেন, একসাথে চা খান, তাদের বই কিনেন, আড্ডা মারেন। তবে মূল কথাটা আগের মতই রইল, ইসলামপন্থী ও সেকুলারদের ‘উদার’ বানিয়ে তৃতীয় শক্তি গঠনের প্রচেষ্টাটা অর্থহীন, কখনো বিপদজনক।

রাজাকার বাহিনীর হাইকমান্ডে কোনো আলিম ছিলো না

'অসম্পূর্ণ হলেও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, বহুল উচ্চারিত-আলোচিত রাজাকার বাহিনীর হাইকমান্ডে কোনো আলিম পাওয়া যায় নি। আলিমমাত্রই তথা 'আলিম অবয়বের' যে কাউকে 'রাজাকার মনে করার' যে দৃষ্টিভঙ্গি বাংলাদেশের মিডিয়া-মাস মিডিয়া-সাহিত্য-সংস্কৃতির ধারক-বাহকেরা জনমনে সৃষ্টি করেছে, আমার এই গবেষণা তার ভিত্তিকে অশুদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এটি একটি গুরুতর ও তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি। সাধারণভাবে বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক ও নির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশের উলামার এ প্রসঙ্গটি অনুধাবনের সুযোগ আছে।'

তারেক মুহম্মদ তওফীকুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশের রাজনীতিতে উলামা : ভূমিকা ও প্রভাব (১৯৭২-২০০১)