Focused @banglafocused Channel on Telegram

Focused

@banglafocused


Focused (English)

Are you looking for a community that is dedicated to self-improvement and personal growth? Look no further than 'Focused' on Telegram! With the username '@banglafocused', this channel is designed to provide you with daily motivation, inspiration, and guidance to help you become the best version of yourself. Whether you are struggling with setting goals, staying motivated, or just need a little push in the right direction, 'Focused' has got you covered. The content shared in this channel is curated to help you develop a positive mindset, cultivate good habits, and achieve your full potential. Join 'Focused' today and start your journey towards a more focused and fulfilling life!

Focused

11 Jan, 10:36


Focused #162

নিরব থাকার ফজিলত
================
ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, নিরবতা বা কম কথা বলা অনেক মূল্যবান গুণ হিসেবে বিবেচিত। একটি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে:

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
"যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা চুপ থাকে।"
(বুখারি, হাদিস: ৬০১৮; মুসলিম, হাদিস: ৪৭)

নিরব থাকার মাহাত্ম্য কেন ইবাদতের চেয়ে উত্তম হতে পারে:
১. অপ্রয়োজনীয় কথা ও পাপ থেকে বাঁচা: কম কথা বললে গুনাহর সম্ভাবনা কমে যায়, যেমন মিথ্যা বলা, গীবত করা বা অন্যকে কষ্ট দেওয়া।
২. মনের প্রশান্তি বৃদ্ধি: নিরবতা মানুষের মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে এবং অহেতুক ঝগড়া-বিবাদ থেকে রক্ষা করে।
৩. আত্মনিয়ন্ত্রণ ও তাকওয়া অর্জন: নিরবতা ব্যক্তিকে আত্মনিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়।
৪. উপদেশ গ্রহণের সুযোগ: চুপ থাকলে শোনা যায় বেশি, যা জ্ঞানার্জনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

নবী করিম (সা.) এর আরেকটি বাণী:
"মানুষের পাপের মধ্যে অধিকাংশ পাপ তার জিহ্বার কারণে হয়।"
(তিরমিজি, হাদিস: ২৪১২)

অতএব, নিরবতা একজন ব্যক্তির জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হতে পারে।

Focused

08 Jan, 17:25


Focused #161

এটাই প্রকৃত সদকা
==============
মদিনার আনসার সাহাবিদের মধ্যে হজরত আবু তালহা (রা.) ছিলেন ধনী। তিনি থাকতেন মসজিদে কুবার পাশের এলাকায়। বাইরুহা নামে সেখানে তাঁর সুন্দর একটি বাগান ছিল। সেখানে ছিল অসংখ্য খেজুরগাছ। এক সময়ে পবিত্র কোরআনে সুরা আল ইমরানের ৯২ নম্বর আয়াত নাজিল হলো। সেই আয়াতে আল্লাহ বললেন,

যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের ভালোবাসার জিনিস আল্লাহর পথে ব্যয় করবে, তোমরা পুণ্য লাভ করতে পারবে না। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় করো, আল্লাহ তো সে সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন।’

আয়াতটি নাজিল হওয়ার পর আবু তালহা (রা.) ছুটে গেলেন নবী করিম (সা.)–এর কাছে। বললেন,
‘হে আল্লাহর রাসুল, আল্লাহ তো আমাদের নিজেদের সবচেয়ে প্রিয় জিনিস থেকে ব্যয় (সদকা) করার আদেশ দিয়েছেন।’

তিনি আরও বললেন, ‘বাইরুহা আমার সবচেয়ে প্রিয় বাগান। আজ থেকে এ বাগানের মালিক আপনি। হে আল্লাহর রাসুল। আপনি যেভাবে চান, যেভাবে আল্লাহ হুকুম করেন, আপনি এ বাগান এবং বাগানের সম্পদকে সেভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।’

রাসুল (সা.) আবু তালহা (রা.)–এর কথা শুনে বললেন, ‘তুমি এই বাগানকে তোমার পরিবারের জন্য ব্যয় করো।’

আবু তালহা (রা.) রাসুল (সা.)–এর কথা মেনে নিলেন। বাগানটিকে তিনি তিন ভাগ করলেন। একটি অংশ পরিবারের জন্য, একটি আত্মীয়স্বজনের জন্য, আর বড় অংশটি নিজের গোত্রের জন্য।

হজরত আবু তালহা (রা.)–র এই ঘটনার তিনটি তাৎপর্য:
১. সাহাবিরা তাঁদের সবচেয়ে প্রিয় জিনিস দান করতে উৎসুক ছিলেন।
২. রাসুল (সা.) চাইতেন না তাঁর সাহাবিরা দারিদ্র্যের মধ্যে দিনযাপন করুক।
৩. কাউকে দান করতে হলে নিজের সবচেয়ে প্রিয় জিনিস দান করতে হবে।

দান করতে গিয়ে অনেকেই সবচেয়ে পুরোনো বা পরিত্যাজ্য জিনিস দান করেন। এটি প্রকৃত দানশীলতার পরিচয় নয়। দান তত উত্তম, যা দান করতে গিয়ে ত্যাগের অনুভূতি তীব্রতর হয়।

Focused

07 Jan, 17:07


ফাতিমা বিনতে মুহাম্মাদ (রা.)
আচরণে যিনি নবীজির সদৃশ ছিলেন
==============================
কন্যাদের ভেতর নবীজি (সা.)-এর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন সাইয়েদা ফাতিমা (রা.)। নবীজি (সা.) তাঁকে অত্যধিক ভালোবাসতেন। তাঁকে সব সময় কাছে রাখতেন। মহানবী (সা.)-এর এই প্রিয় কন্যার মধ্যে আল্লাহ অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্য দান করেছিলেন, যা অন্য কাউকে দেননি।

যেমন আচার-আচরণে তিনি ছিলেন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সদৃশ, তাঁর মাধ্যমেই নবীজি (সা.)-এর বংশের বিস্তার ঘটেছে ইত্যাদি। পরকালেও এই মহীয়সী নারী অনন্য মর্যাদার অধিকারী হবেন।

উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, নবী (সা.)-এর স্ত্রীরা সবাই তাঁর কাছে ছিল। এর মধ্যে ফাতিমা (রা.) হেঁটে (আমাদের কাছে) এলেন।

তাঁর চলন এবং আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর চলনের মধ্যে কোনো পার্থক্য ছিল না। অতঃপর নবী (সা.) তাঁকে দেখে স্বাগত জানালেন এবং বললেন, ‘আমার কন্যার শুভাগমন হোক।’ অতঃপর তিনি তাঁকে নিজের ডান অথবা বাঁ পাশে বসালেন। তারপর তিনি তাঁকে কানে কানে গোপনে কিছু বললেন।

ফাতিমা (রা.) জোরেশোরে কাঁদতে আরম্ভ করলেন। সুতরাং তিনি তাঁর অস্থিরতা দেখে পুনর্বার তাঁকে কানে কানে কিছু বললেন। এবার তিনি হাসতে লাগলেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘অতঃপর আমি ফাতিমাকে বললাম, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর স্ত্রীদের মধ্যে (তাঁদের বাদ দিয়ে) তোমাকে গোপনে কিছু বলার জন্য বেছে নিলেন, অথচ তুমি কাঁদছ? তারপর রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন উঠে গেলেন, তখন আমি তাকে বললাম, রাসুলুল্লাহ (সা.) তোমাকে কী বললেন? সে বলল, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর গোপন কথা প্রকাশ করব না। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুবরণ করলে আমি ফাতিমা (রা.)-কে বললাম, তোমার প্রতি আমার অধিকার রয়েছে।

তাই আমি তোমাকে কসম দিয়ে বলছি যে তুমি আমাকে বলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) তোমাকে কী বলেছিলেন? সে বলল, এখন বলতে কোনো অসুবিধা নেই। আল্লাহর রাসল (সা.) প্রথমবারে কানাকানি করার সময় আমাকে সংবাদ দিয়েছিলেন যে জিবরাইল (আ.) প্রত্যেক বছর একবার করে কোরআন শোনান। কিন্তু এখন তিনি দুইবার শোনালেন। সুতরাং আমি বুঝতে পারছি যে আমার মৃত্যু সন্নিকটে। সুতরাং তুমি (হে ফাতিমা!) আল্লাহকে ভয় করো এবং ধৈর্য ধারণ করো। কেননা আমি তোমার জন্য উত্তম অগ্রগামী। সুতরাং আমি এ কথা শুনে কেঁদে ফেললাম, যা তুমি দেখলে। অতঃপর তিনি আমার অস্থিরতা দেখে দ্বিতীয়বার কানে কানে বললেন, হে ফাতিমা! তুমি কি এটা পছন্দ করো না যে মুমিন নারীদের তুমি সর্দার হবে অথবা এই উম্মতের নারীদের সর্দার হবে? সুতরাং এমন সুসংবাদ শুনে আমি হাসলাম, যা তুমি দেখলে।’

(রিয়াজুস সালিহিন, হাদিস : ৬৯২)

হাদিসের শিক্ষা

উল্লিখিত হাদিস থেকে কয়েকটি বিষয় শিক্ষণীয়—

১. মানুষকে ব্যথিত করে এমন কথা গোপন করা যায়।

২. সন্তানকে বিপদে-আপদে ধৈর্য ধারণের শিক্ষা দেওয়া জরুরি।

৩. মানুষের গোপন কথা গোপন রাখা জরুরি। কেননা এটা আমানতস্বরূপ।

৪. ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাঁর গোপন কথা প্রকাশ করা যায়, যদি না তাতে মৃত ব্যক্তির সম্মানহানি হয় অথবা কোনো ফিতনার আশঙ্কা থাকে।

৫. দুঃসংবাদ শুনে ব্যথিত হওয়া এবং সুসংবাদ শুনে আনন্দিত হওয়া উত্তম।

আল্লাহ সবাইকে সুপথে পরিচালিত করুন। আমিন।

Focused

04 Jan, 17:27


Focused #160

সুখে কিংবা দুঃখে
আলহামদুলিল্লাহ বলার ফজিলত
======================
"আলহামদুলিল্লাহ" আল্লাহর প্রশংসাসূচক বাক্য। এর অর্থ সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। পবিত্র কোরআনের শুরুই হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ শব্দ দিয়ে। এছাড়া আরও কয়েকটি সুরা এই বাক্য দিয়ে শুরু হয়েছে, যা এই বাক্যের তাৎপর্যপূর্ণ হওয়ার প্রমাণ বহন করে।

মহানবী (স.) "আলহামদুলিল্লাহ" বলার অসংখ্য ফজিলত বর্ণনা করেছেন।

এটিকে বলা হয় সর্বোত্তম দোয়া। আল্লাহ তাআলার মাহাত্ম্য বর্ণনা ও প্রশংসার জন্য আলহামদুলিল্লাহর চেয়ে উত্তম বাক্য আর নেই।

নবীজি মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন,
‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ সর্বোত্তম ফজিলতপূর্ণ বাক্য এবং সর্বোত্তম দোয়া হলো আলহামদুলিল্লাহ।’
(তিরমিজি: ৩৩৮৩)

এক হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে বেশি নিজের প্রশংসা পছন্দ করেন, এজন্য তিনি নিজের প্রশংসা করেছেন এবং আমাদেরও তাঁর প্রশংসার নির্দেশ দিয়েছেন। (বুখারি, ২/১৮১৭)

নবীজি (সা.) আরো বলেছেন, "আলহামদুলিল্লাহ" মিজানকে পূর্ণ করে দেয়। আর সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ শব্দ দুটি আসমান ও জমিনের খালি জায়গা পূর্ণ করে দেয়।
(সহিহ মুসলিম: ২২৩)

আলহামদুলিল্লাহর ফজিলত বর্ণনায় নবীজি মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন,

"যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল (সূর্যোদয়ের আগে ও সূর্যাস্তের আগে) এই দুই সময়ে ১০০ বার ‘আল-হামদু লিল্লাহ’ বলল সে যেন আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য ১০০টি ঘোড়ার পিঠে মুজাহিদ প্রেরণ করলো, অথবা আল্লাহর রাস্তায় ১০০টি গাজওয়া বা অভিযানে শরিক হলো..।’

(তিরমিজি: ৫/৫১৩, নং ৩৪৭১; নাসায়ি, সুনানুল কুবরা: ৬/২০৫; সহিহুত তারগিব: ১/৩৪৩)

সুবহানাল্লাহ। কত ফজিলতপূর্ণ আমল এটা।

হাদিসে আরও এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

‘যদি আমার কোনো উম্মতকে পুরো দুনিয়া দিয়ে দেওয়া হয় আর সে 'আলহামদুলিল্লাহ' বলে তাহলে এই বাক্য বলা পুরো দুনিয়া থেকে উত্তম।

অর্থাৎ, পুরো পৃথিবী পেয়ে যাওয়া এত বড় নেয়ামত নয়, যা আলহামদুলিল্লাহ বলার মধ্যে রয়েছে। কারণ এই পৃথিবী একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে কিন্তু আলহামদুলিল্লাহর সওয়াব থেকে যাবে। (ইবনে মাজা)

হাদিসে আরও এসেছে, আল্লাহ তাআলার কাছে প্রিয় বাক্য চারটি—
> সুবহানাল্লাহ,
> আলহামদুলিল্লাহ,
> লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ,
> আল্লাহু আকবর...
(সহিহ মুসলিম: ২১৩৭; ইবনে মাজাহ: ৩৮১১; আবু দাউদ: ৪৯৫৮; মেশকাত: ২২৯৪)

মূলত 'আলহামদুলিল্লাহ' বাক্যটি মুমিনের সফলতার সোপান। কেননা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার জন্য আলহামদুলিল্লাহ পাঠ কর হয়। আর শুকরিয়া আদায়কারীদেরকে শুধু নেয়ামতের ওপরই রাখা হয়। তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন,

‘যদি তোমরা (আমার) শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের (নেয়ামত) বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড়ই কঠিন।’
(সুরা ইবরাহিম: ০৭)


প্রিয়নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন,
যখন তুমি আলহামদুলিল্লাহ বলার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায় করবে তখন আল্লাহ তায়ালা নেয়ামতে বরকত দেবেন। খাওয়া-দাওয়ার পরে, সকল খুশির খবরে, বাথরুমের কাজ সেরে, হাঁচি দিয়ে, যেকোনো কাজ-কর্ম শেষ করার পরে এবং আল্লাহর অসংখ্য নেয়ামতের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সবসময় আলহামদুলিল্লাহ বলা মুমিনের বৈশিষ্ট্য।

আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

"নিশ্চয় আল্লাহ সেই বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন, যে বান্দা কিছু খেলে আল্লাহর প্রশংসা করে এবং কিছু পান করলেও আল্লাহর প্রশংসা করে (অর্থাৎ আলহামদুলিল্লাহ) পড়ে।"
(মুসলিম: ২৭৩৪, তিরমিজি: ১৮১৬)

তার মানে, সবকিছুতেই 'আলহামদুলিল্লাহ' পাঠ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। এমনকি প্রিয়বস্তু হারানোর পরও আলহামদুলিল্লাহ বলতে অভ্যস্ত বান্দার জন্য জান্নাতে বিশেষ নেয়ামতের ঘোষণা দিয়েছেন প্রিয়নবী মুহাম্মদ (সা.)।

আবু মুসা আশআরি (রা.) বর্ণিত হাদিসে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন,

‘যখন কোনো বান্দার সন্তান মারা যায়, তখন মহান আল্লাহ (জান কবজকারী) ফেরেশতাদের বলেন, ‘তোমরা আমার বান্দার সন্তানের প্রাণ হরণ করেছ কি? তারা বলেন, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তোমরা তার হৃদয়ের ফলকে হনন করেছ? তারা বলেন, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বলেন, ‘সেসময় আমার বান্দা কী বলেছে?’ তারা বলেন, ‘সে আপনার হামদ (প্রশংসা) করেছে ও ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রা-জিউন পাঠ করেছে।’

মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমার (সন্তানহারা) বান্দার জন্য জান্নাতের মধ্যে একটি গৃহ নির্মাণ করো, আর তার নাম রাখো ‘বায়তুল হামদ’ (প্রশংসাভবন)।’ (তিরমিজি: ১০২১)

সুবহানাল্লাহ।

অসুস্থ ব্যক্তির আলহামদুলিল্লাহ বলা সম্পর্কে হাদিসে কুদসিতে এসেছে- মহান আল্লাহ বলেন, ‘যখন আমি আমার মুমিন বান্দাকে রোগাক্রান্ত করি, আর বান্দা সে অবস্থায় আমার প্রশংসা করে আলহামদুলিল্লাহ বলে; তবে সে বিছানা থেকে এমনভাবে ওঠে দাঁড়ায়; যেন তার মা তাকে ভূমিষ্টকালে যেমন জন্মদান করেছিল।’ (হাদিসে কুদসি)

আলহামদুলিল্লাহ বলার প্রচলন থাকবে জান্নাতেও।

Focused

04 Jan, 17:27


মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের অন্তরে যা কিছু মালিন্য (দুঃখ ও ঈর্ষা) ছিল, তা বের করে দেব। তাদের তলদেশে ঝরনাধারা প্রবাহিত হবে। (এসব দেখে) তারা বলবে, আলহামদুলিল্লাহ, যিনি আমাদের এ পর্যন্ত (জান্নাতে) পৌঁছিয়েছেন। আমরা কখনো (এ পর্যন্ত) পৌঁছতে পারতাম না, যদি আল্লাহ আমাদের না পৌঁছাতেন...।’ (সুরা আরাফ: ৪৩)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সুসময়ে-দুঃসময়ে বেশি বেশি আলহামদুলিল্লাহ পাঠ করার তাওফিক দান করুন।
আমিন।

Focused

29 Dec, 14:01


Focused #159

ইসলামে খাতনা করার গুরুত্ব
====================
সহীহ বুখারী 6298 (বাংলা হাদিস)

হাদিস:
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

"ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) আশি বছর বয়সে কাদূম নামক স্থানে খাতনা করেন।"
(সহীহ বুখারী, হাদিস নম্বর: ৬২৯৮)।
---

হাদিসের ব্যাখ্যা ও শিক্ষা:

১. খাতনার গুরুত্ব ও ইতিহাস:

খাতনা করা নবী ইবরাহীম (আ.)-এর সুন্নত। ইসলাম ধর্মে খাতনা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান এবং এটি পুরুষদের জন্য সুন্নত মুয়াক্কাদাহ (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত যা জোরালোভাবে পালনীয়)।

নবী ইবরাহীম (আ.) আল্লাহর নির্দেশে আশি বছর বয়সে নিজের হাতে খাতনা করেন, যা তাঁর আনুগত্য এবং আল্লাহর নির্দেশের প্রতি তাঁর নিষ্ঠার পরিচায়ক।


২. আত্মত্যাগ ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্য:

ইবরাহীম (আ.)-এর আশি বছর বয়সে নিজ হাতে খাতনা করা প্রমাণ করে যে, আল্লাহর আদেশ পালন করতে বয়স বা পরিস্থিতি কোনো বাধা নয়।

এটি মুমিনদের জন্য উৎসাহজনক যে, আল্লাহর হুকুম মানতে কখনও দেরি করা উচিত নয়।


৩. খাতনার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন:

ইসলাম ধর্মে খাতনার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জনের একটি মাধ্যম হিসেবে দেখা হয়। এটি স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

খাতনা পুরুষদের শারীরিক পবিত্রতা রক্ষা করে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
---

খাতনার বিধান (ইসলামে):

বাধ্যতামূলক (ওয়াজিব) বা সুন্নাত মুয়াক্কাদাহ: অধিকাংশ আলেমের মতে, খাতনা পুরুষদের জন্য সুন্নত মুয়াক্কাদাহ। তবে কিছু ইমাম (যেমন: ইমাম শাফেয়ী) খাতনাকে বাধ্যতামূলক মনে করেন।

উম্মতের ঐক্যমত্য: খাতনা মুসলিম উম্মতের মধ্যে একটি সর্বসম্মত আমল। এটি ইসলামী সংস্কৃতির অংশ এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাতনা করার নির্দেশ দিয়েছেন।


কাদূম স্থানের পরিচয়:

হাদিসে উল্লেখিত "কাদূম" শব্দটি একটি স্থান বা সরঞ্জাম হিসেবে বোঝানো হয়ে থাকে। তবে বেশিরভাগ ব্যাখ্যায় এটিকে একটি জায়গার নাম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ইবরাহীম (আ.) অবস্থানকালে খাতনা করেন।


আলেমদের ব্যাখ্যা:

ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) তাঁর "ফাতহুল বারী" গ্রন্থে বলেন:

"ইবরাহীম (আ.)-এর এই খাতনা আল্লাহর প্রতি চূড়ান্ত আনুগত্যের প্রকাশ। নবীগণ সবসময় আল্লাহর আদেশ যথাযথভাবে পালন করে থাকেন। এটি প্রমাণ করে যে, আল্লাহর হুকুম পালন করতে কোনো বয়সসীমা নেই।"
---

হাদিসের শিক্ষা:

1. আল্লাহর নির্দেশ প্রতিপালন করা প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব।

2. খাতনা একটি সুন্নত এবং পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম।

3. নবীদের জীবনী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা মুসলিমদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

4. আত্মত্যাগ ও ধৈর্য মুসলিম জীবনের অন্যতম প্রধান গুণ।

সহীহ বুখারীর এই হাদিস মুসলিমদের খাতনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য বোঝায়। এটি শারীরিক পরিচ্ছন্নতা, সুন্নতের অনুসরণ এবং আল্লাহর আনুগত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

Focused

28 Dec, 10:47


Focused #158

পুরুষাঙ্গে স্পর্শ লাগলে কি উযু ভেঙে যায়?
============================
পুরুষাঙ্গে হাত দিলে উযু ভাঙার বিষয়ে ইসলামি ফিকহে আলেমদের মধ্যে ভিন্ন মত আছে। তবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত হলো—

১. যদি লিঙ্গে সরাসরি স্পর্শ করা হয় (ত্বকের সংস্পর্শে) এবং সে সময় কোনো পর্দা বা কাপড় না থাকে, তাহলে উযু ভেঙে যায়।

দলিল/প্রমাণ:
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“তোমাদের কেউ যদি তার লিঙ্গ স্পর্শ করে, তাহলে সে যেন উযু করে।”
(তিরমিজি: ৮২, আবু দাউদ: ১৮১, ইবনে মাজাহ: ৪৮৩)


২. যদি কাপড় বা কোনো আবরণের উপর দিয়ে স্পর্শ করা হয়, তাহলে উযু ভাঙে না।

দলিল/প্রমাণ:
রাসূলুল্লাহ ﷺ আরও বলেছেন:
“লিঙ্গ তো তোমার শরীরেরই একটি অংশ।”
(তিরমিজি: ৮৫)

সারসংক্ষেপ:

সরাসরি স্পর্শ (ত্বক টেনে নিলে বা কাপড় ছাড়া স্পর্শ করলে) — উযু ভেঙে যায়।

আবরণের মাধ্যমে স্পর্শ করলে — উযু ভাঙে না।

এটি হানাফি, শাফেয়ি, মালিকি ও হাম্বলি মাজহাবের নির্দিষ্ট ফিকহের ওপর নির্ভর করে কিছুটা পার্থক্য দেখা যায়। তবে সতর্কতার জন্য সরাসরি স্পর্শ করা হলে উযু করে নেওয়া উত্তম।

Focused

24 Dec, 14:39


বড়দিন উপলক্ষে
যে কথা হলো খ্রীষ্টান পোপের সাথে!
==========================
- আচ্ছা বলুন তো, ঈশ্বর কে?
- যিশু!
- যিশুই কি মাতা মেরীর পুত্র?
- জ্বি।
- মাতা মেরীকে কে সৃষ্টি করেছে?
- ঈশ্বর!
- ঈশ্বর কে?
- যিশু!
- যিশুই কি মাতা মেরীর গর্ভে জন্ম নেয়া
সন্তান?
- জ্বি।
- তার পিতা কে?
- ঈশ্বর!
- ঈশ্বর কে?
- যিশু!
- যিশু কি ঈশ্বরেরর সেবক?
- জ্বি।
- যিশুকে কি শুলে চড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল?
- জ্বি।
- যিশু কি প্রেরিত পুরুষ?
-জ্বি।
- তাকে কে পাঠিয়েছিলেন?
-ঈশ্বর!
- ঈশ্বর কে?
- যিশু!
- আচ্ছা, যিশু কি পৃথিবীতে থাকতে উপাসনা করতেন?
- জ্বি।
- কার উপাসনা করতেন?
- ঈশ্বরের!
- ঈশ্বর কে?
- যিশু!
- ঈশ্বরের কি ‘সূচনা’ আছে?
- নাহ!
- তাহলে ২৫ ডিসেম্বরে কে জন্মগ্রহণ করেছেন?
- যিশু।
- যিশু কে?
- ঈশ্বর!
- ঈশ্বর কোথায় আছেন?
- স্বর্গে!
- স্বর্গে কতজন ‘উপাস্য’ আছেন?
- এক ও অদ্বিতীয় একজন উপাস্য আছেন।
- যিশু এখন কোথায়? (fb- newmuslimsbd)
- ঈশ্বরের ডানপাশে বসে আছেন!
- তাহলে জান্নাতে কয়জন উপাস্য আছেন?
- একমাত্র একজনই আছেন!
- তাহলে কয়জন উপাস্য স্বর্গে উপবিষ্ট আছেন?
- একজন!
- যিশু কোথায় আছেন?
-ঈশ্বরের পাশে বসে আছেন!
- যিশু কে?
- ঈশ্বর!
- যিশু কোথায় আছেন?
- ঈশ্বরের পাশে বসে আছেন!
- তাহলে যিশু কে?
- ঈশ্বর!
ওয়েট! ওয়েট!! আবার নতুন করে শুরু করতে হবে....🧐

Focused

23 Dec, 23:06


Focused #157

স্বামী-স্ত্রর'র সত্যিকারের
গুন তো এগুলোই!
=================
স্ত্রী যেমন হবেঃ
==========
১) দ্বীনদার নারী।
২) পর্দাশীল।
৩) স্বামীর বাধ্য।
৪) স্বামীর হক আদায়কারীনি।
৫) নরম মেজাজওয়ালী।
৬) স্বামীর সাথে মিষ্টিভাষী।
৭) কুরআন তেলাওয়াতকারীনি।
৮) সুন্নতের অনুসরণকারীনি।
৯) আমানতদারী।
১০) স্বামীর গোপনীয়তা রক্ষাকারীনি।
১১) বিপদে ধৈর্য্য ধারণকারীনি।
১২) দুঃখে-কষ্টে স্বামীর সঙ্গী।
১৩) স্বামীর সেবাকারীনি।

স্বামী যেমন হবেঃ
============
১) দ্বীনদার পুরুষ।
২) নামাজী।
৩) সত্যবাদী।
৪) আমানতদার।
৫) স্ত্রীর হক আদায়কারী।
৬) স্ত্রীর সাথে পরামর্শকারী।
৭) স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণকারী।
৮) হালাল ইনকামকারী।
৯) আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী।
১০) ক্ষমাশীল।
১১) বিপদে ধৈর্য্যশীল।
১২) স্ত্রীর সাথে নরম আচরণকারী।
১৩) স্ত্রীর উত্তম অভিভাবক।
১৪) দ্বীনের জরুরি বিষয়ে জ্ঞানী।

Focused

18 Dec, 01:28


Focused #156

"মুআব্বাজাতাইন"
=============
"মুআব্বাজাতাইন" শব্দটি সাধারণত ইসলামী শিক্ষা এবং পরিভাষায় ব্যবহৃত হয়। এটি আরবি শব্দ مُعَوِّذَتَيْن (Mu'awwidhatayn) থেকে এসেছে। এই পরিভাষাটি সূরা আল-ফালাক এবং সূরা আন-নাস এর জন্য ব্যবহৃত হয়।

অর্থ ও ব্যাখ্যাঃ

"মুআব্বাজাতাইন" অর্থ:
দুইটি আশ্রয় প্রার্থনার সূরা।

এই দুই সূরা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যেগুলোতে মানুষ আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায় শয়তান, জাদু, কুদৃষ্টি এবং অন্যান্য অনিষ্ট থেকে।

---

সূরা আল-ফালাক (সূরা ১১৩):

এই সূরায় আল্লাহর কাছে ভোরের প্রভুর আশ্রয় চাওয়া হয় চারটি বিপদ থেকে:

১. রাত্রির অন্ধকার,

২. জাদুকরদের গাঁথা,

৩. হিংসুকের হিংসা,

৪. সৃষ্টির অনিষ্ট।

---

সূরা আন-নাস (সূরা ১১৪):

এই সূরায় তিন গুণবাচক নাম (প্রভু, বাদশাহ, ইলাহ) উল্লেখ করে মানুষের আশ্রয় চাওয়া হয়:

১. শয়তানের কুমন্ত্রণা,

২. মানুষের অন্তরে প্রবেশকারী অনিষ্ট,

৩. মানুষ ও জিনদের মধ্যে শয়তানের অনিষ্ট।


---

গুরুত্বঃ

রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায়, শোবার সময় এবং অসুস্থতার সময় এই দুই সূরা তিলাওয়াত করতেন।

হাদিসে এসেছে, এই দুই সূরা "সবচেয়ে উপকারী দোয়া" বলে বর্ণিত হয়েছে (জামে আত তিরমিজি ২৯০২ )।
__
সংক্ষেপে: মুআব্বাজাতাইন হল সূরা আল-ফালাক ও সূরা আন-নাস, যা মুসলিমদের দৈনন্দিন জীবনে রক্ষা এবং আশ্রয় লাভের দোআ হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

মহান আল্লাহ আমাদেরকে প্রতিদিন এই দুই সূরা পাঠ করে তাঁর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন।
আমিন।

Focused

13 Dec, 13:49


Focused #155

ইসলামে দাবা খেলা নিষিদ্ধ কেন?
=======================
অনেকের কাছে আকর্ষণীয় হলেও ইসলামে দাবা খেলা হারাম। আর এই খেলা হারাম হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়েছে বিভিন্ন ইসলামী ফিকহগ্রন্থ ও আলেমদের ব্যাখ্যায়। যদিও কুরআনে সরাসরি দাবা খেলা সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি, তবে বিভিন্ন হাদিস এবং ফিকহের ব্যাখ্যা অনুসারে দাবা হারাম হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো:

---

১. সময়ের অপচয়ঃ
দাবা খেলায় দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয় যা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত বা অন্যান্য কাজ থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে দিতে পারে। কুরআনে তাদেরকে ব্যর্থ বলা হয়েছে যারা অনর্থক কাজে লিপ্ত থাকে। আর তাদেরকেই সফল বলা হয়েছে যারা অর্থহীন বিষয়াদি থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করার চেষ্টা করে।

কুরআনে আল্লাহ বলেন:
"আর যারা অর্থহীন বিষয়াদি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।"
(সূরা আল-মু'মিনুন: ৩)


---

২. জুয়া খেলার সাথে সম্পর্কেঃ
অনেক সময় দাবা খেলাকে অর্থের বিনিময়ে বা বাজি ধরে খেলা হয়, যা স্পষ্টতই জুয়া হিসেবে গণ্য।

আল্লাহ বলেন:
"হে ঈমানদারগণ! মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারণকারী তীর — এগুলো শয়তানের অপবিত্র কাজ। সুতরাং তোমরা এগুলো পরিহার করো।"
(সূরা আল-মায়িদা: ৯০)


---

৩. ইবাদত থেকে মনোযোগ সরানোঃ
দাবা খেলায় অনেক সময় মগ্ন হয়ে মানুষ নামাজের সময় পেরিয়ে ফেলতে পারে অথবা একাগ্রতা হারিয়ে ফেলে।

নবী (সা.) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি কোনো বস্তুর সাথে অধিক পরিমাণে সম্পর্ক রাখে, সে তার বন্দী হয়ে যায়।" (ইবনে মাজাহ: ৪১৩৬)



---

৪. মূর্তি বা চিত্রের ব্যবহারঃ
দাবার গুটিগুলোতে অনেক সময় মানুষ বা পশু-পাখির আকৃতি ব্যবহৃত হয়, যা ইসলামে চিত্র বা মূর্তি তৈরির নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারে।


---

৫. আসক্তি সৃষ্টি করাঃ
দাবা খেলা অনেকের মাঝে এমনভাবে আসক্তি তৈরি করে যে তারা জীবনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বা ইবাদত থেকে বিমুখ হয়ে পড়ে।

দাবা খেলা নিসন্দেহে একটি হারাম কাজ। এতে করে জুয়ার প্রশস্ত পথ খুলে যায় এবং প্রচুর মূল্যবান সময় বিনষ্ট হয়।

আবূ মূসা আশ্‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدِ ؛ فَقَدْ عَصَى اللهَ وَرَسُوْلَهُ.
‘‘যে ব্যক্তি দাবা খেললো সে আল্লাহ্ তা‘আলা ও তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবাধ্য হলো’’। (আবূ দাউদ ৪৯৩৮; ইব্নু মাজাহ্ ৩৮৩০)

বুরাইদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدَشِيْرِ فَكَأَنَّمَا صَبَغَ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: غَمَسَ يَدَهُ فِيْ لَـحْمِ خِنْزِيْرٍ وَدَمِهِ.
‘‘যে ব্যক্তি দাবা খেললো সে যেন তার হাত খানা শুকরের গোস্ত ও রক্তে রঞ্জিত করলো অথবা তাতে ডুবিয়ে দিলো’’। (মুসলিম ২৬৬০; আবূ দাউদ ৪৯৩৯; ইব্নু মাজাহ্ ৩৮৩১)



---

সারমর্ম:
দাবা খেলা সরাসরি হারাম বলে কুরআনে উল্লেখ নেই, তবে উপরোক্ত কারণগুলো (সময়ের অপচয়, জুয়া, ইবাদতে বাধা) এর হারাম হওয়ার ভিত্তি তৈরি করে। একজন মুসলিমের উচিত এসব বিষয় থেকে দূরে থাকা, বিশেষ করে যদি তা ধর্মীয় ও পার্থিব দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

রেফারেন্স:

সূরা আল-মায়িদা (৫:৯০)

সূরা আল-মু'মিনুন (২৩:৩)

ইবনে মাজাহ (৪১৩৬)

Focused

26 Nov, 01:18


Focused #154

সালাম প্রেরণ করুন রাসূল (সাঃ) এর তরে
=============================
নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ পাঠের অসাধারন সব ফযিলত রয়েছে। শেষ নবীর উম্মত হওয়ার কারণে আমরা সেই ফজিলত গুলো কেন লুফে নেব না? প্রিয়নবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে জানিয়েছেন অনেক বার্তা যা এই উম্মতদেরকে আরো মর্যাদায় উন্নীত করেছে। চলুন জেনে নেয় নবী (সাঃ) এর উপর সালাম প্রেরণ সম্পর্কে কিছু হাদিস।

>> নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করবে, তার বিনিময়ে আল্লাহ্ তার উপর দশবার দরুদ পাঠ করবেন।” [১] 

>> নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “তোমরা আমার কবরকে ঈদ তথা সম্মিলনস্থলে পরিণত করবে না, আর তোমরা আমার উপর দরূদ পাঠ কর;কেননা তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌঁছে যায়, তোমরা যেখানেই থাক না কেন।” [২] 

>> নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “যার সামনে আমার নাম উল্লেখ করা হলো অতঃপর সে আমার উপর দরূদ পড়লো না, সে-ই কৃপণ।” [৩] 

>> রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “পৃথিবীতে আল্লাহর একদল ভ্রাম্যমাণ ফেরেশতা রয়েছে যারা উম্মতের পক্ষ থেকে প্রেরিত সালাম আমার কাছে পৌঁছিয়ে দেয়।” [৪] 

>> রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “যখন কোনো ব্যক্তি আমাকে সালাম দেয়, তখন আল্লাহ আমার রূহ ফিরিয়ে দেন, যাতে আমি সালামের জবাব দিতে পারি।” [৫]

মহান আল্লাহ তাআ'লা আমাদেরকে বেশি বেশি সালাম তথা দরুদপাঠের তাওফিক দান করেন সেই দোআ করতে আমরা যেন ভুলে না যায়।

__
[১] হাদীসটি সংকলন করেছেন, মুসলিম ১/২৮৮, নং ৩৮[৪] 
[২] আবূ দাউদ ২/২১৮, নং ২০৪৪; আহমাদ ২/৩৬৭, নং ৮৮০[৪] আর শাইখ আলবানী একে সহীহ আবি দাঊদে ২/৩৮৩, সহীহ বলেছেন। 
[৩] তিরমিযী, ৫/৫৫১, নং ৩৫৪৬, ইত্যাদি। আরও দেখুন, সহীহুল জামে‘ ৩/২৫; সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৭৭। 
[৪] নাসাঈ, ৩/৪৩, নং ১২৮২; হাকেম, ২/৪২[১] আর শাইখ আলবানী একে সহীহুন নাসাঈ ১/২৭৪, সহীহ বলেছেন। 
[৫] আবূ দাউদ, নং ২০৪[১] আর শাইখ আলবানী সহীহ আবি দাউদে ১/৩৮৩, একে হাসান হাদীস বলেছেন।

Focused

19 Nov, 14:00


Focused #153

এক প্যাকেজেই সব!
===============
আজ একটা আকর্ষণীয় প্যাকেজ নিয়ে কথা বলতে চাই যে প্যাকেজে আপনি যদি নিজের জীবনকে ইনস্টল করতে পারেন তাহলে পেয়ে যাবেন আনলিমিটেড স্বস্তি ও প্রশান্তি ইনশাআল্লাহ।
গল্প দিয়ে শুরু করা যাক!
আল্লাহর নবী নূহ আলাইহিসসালাম সম্পর্কে আমরা জানি যে উনি মহান আল্লাহর রহমতে দীর্ঘ সময় দাওয়াতি কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন। অনেক চেষ্টা, পরিশ্রম আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনার মাধ্যমে তিনি তাঁর কওমকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুতেই তাঁর কওম ঈমান আনয়ন করছিল না।

নিজের কওমকে একটা শেষ সুযোগ দিলেন নবী নূহ আলাইহিসসালাম। কারণ সুদীর্ঘ ৯৫০ বছর দিন রাত দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু এই জাতি দ্বীন গ্রহণ ত করেই নি উপরন্তু নাফরমানী করেছে একের পর এক।

নূহ আলাইহিসসালাম নবী হওয়ার কারণে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে আজাব আসন্ন। তিনি তাঁর কওমকে বললেন তোমরা ইস্তেগফার করো। গণ ইস্তেগফার করো।
ইস্তেগফার করলে ক্ষমা তো পাবেই, সাথে সাথে আরও কিছু লাভ হবে৷ কারণ ইস্তেগফারের প্যাকেজটা বরাবরই রিচ। একটা চাইলে সাথে আরও কয়েকটা দিয়ে দেওয়া হয়৷
আল্লাহর নবী নূহ আলাইহিসসালাম বললেন -

فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا * يُرْسِلِ السَّمَاء عَلَيْكُم مِّدْرَارًا * وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَارًا

"তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও-তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর আকাশ থেকে অবিরাম করুণাধারা বর্ষণ করবেন, ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততি দিয়ে তোমাদের সাহায্য করবেন, তোমাদের জন্য রকমারি বাগানের ব্যবস্থা করে দেবেন, আর তোমাদের দেবেন অনেক ঝরনাধারা।"

শুধুমাত্র ক্ষমা চাইলেই এতকিছু দিয়ে দেওয়া হবে? অবাক হওয়ারই মতো ব্যাপার। ক্ষমা চাওয়ার এই প্যকেজে আরো কি কি আছে দেখুন -

এক।। ক্ষমার সুসংবাদ (অর্থাৎ ক্ষমা পেলে আপনি জান্নাতি আর জানেনই তো জান্নাতে আপনার মন যা করতে চাইবে তাই করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ)
দুই।। আকাশ থেকে রহমত বর্ষণ
তিন।। ধন সম্পদ বৃদ্ধি
চার।। উত্তম সন্তান সন্ততি লাভ করা
পাচ।। রকমারি বাগান ও শষ্য ক্ষেত অর্জন করা
ছয়।। প্রচুর নদী নালা ও ঝর্ণাধারা যা মনোমুগ্ধকর ও প্রয়োজনীয়
এ ছাড়াও আছে অগণিত নেয়ামত প্রাপ্তির সুযোগ।

মানুষের জীবন ধারণের জন্য যা যা প্রয়োজন সবই আছে এই ইস্তেগফারের প্যাকেজে! অবাক হতে হয়।

বেকারত্ব, দারিদ্রতা, ফসলহীনতা দুরিকরণ এবং সম্পদ লাভের জন্য ইস্তেগফারের চেয়ে ভালো প্যাকেজ জানা নাই।

একবার মদীনায় অনাবৃষ্টি হলে উমর রা, সালাতুল ইস্তেস্কার আদায় করে মিম্বরে উঠে ইস্তেগফারের আয়াত তথা ক্ষমার আয়াত পড়ে নেমে যান। তারপর বললেন -
'আকাশ থেকে বৃষ্টি নামার যতগুলো দরোজা সকল দরোজা দিয়ে বৃষ্টি নামার জন্য দোয়া করে দিলাম।'

ইস্তেগফার (استغفار) অর্থ হলো আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং ইসলামের অত্যন্ত প্রশংসিত একটি আমল। ইস্তেগফারের মাধ্যমে একজন মুমিন তার পাপ থেকে মুক্তি পেতে পারে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত লাভ করতে পারে। ইস্তেগফারের ফজিলত কুরআন ও হাদিসে বিভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট উল্লেখ করা হলো:

১. গুনাহ থেকে মুক্তি:
ইস্তেগফার গুনাহ মাফের অন্যতম মাধ্যম। আল্লাহ বলেন:
“আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, তারপর তাঁর প্রতি ফিরে এসো। নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন।” (সূরা হুদ: ৩)।

২. রিজিক বৃদ্ধি:
ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ তায়ালা রিজিক বৃদ্ধি করেন। হাদিসে এসেছে:
“যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করে, আল্লাহ তাকে প্রতিটি সংকট থেকে মুক্তি দেন, দুঃখ দূর করেন এবং অপ্রত্যাশিত উৎস থেকে রিজিক দেন।” (তিরমিজি: ৩৫৭০)।

৩. শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ:
ইস্তেগফার মানুষের হৃদয়কে প্রশান্ত করে এবং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। কুরআনে আল্লাহ বলেছেন:
“আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও এবং তাঁর দিকে ফিরে আসো। নিশ্চয়ই তিনি অল্প সময়ের জন্য তোমাদেরকে সুন্দর জীবন-যাপন করাবেন।” (সূরা হুদ: ৩)।

৪. জান্নাতে প্রবেশের উপায়:
ইস্তেগফার জান্নাতে প্রবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি ইস্তেগফার করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন, যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায়।” (আবু দাউদ: ১৫১৭)

৫. বিপদ থেকে মুক্তি:
ইস্তেগফার মানুষকে বিভিন্ন বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করে। আল্লাহ বলেন:
“আর আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন না, যখন তারা ইস্তেগফার করবে।” (সূরা আনফাল: ৩৩)।
নিয়মিত ইস্তেগফার করা মুমিনের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভের অন্যতম উপায়। প্রতিদিন ইস্তেগফার করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত, যেন আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে আমাদের পাপমুক্ত জীবন গঠন করতে পারি।

Focused

19 Nov, 14:00


চলতে, ফিরতে, উঠতে, বসতে সদা সর্বদা আমাদেরকে ইস্তেগফারকে আপন করে নেওয়া দরকার। আর জানেনই তো যে ব্যক্তি তসবিহ হোক কিংবা ইস্তেগফার, মুখে ঠোঁট নাড়িয়ে পড়তেই থাকে এমতাবস্থায় আল্লাহ তার সাথেই থাকেন।
সুবহানাল্লাহ।

ইস্তেগফারের সংক্ষিপ্ত দোয়া:
“আস্তাগফিরুল্লাহ” (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি)।

এতকিছুর পরও বসে থাকবেন নাকি ইস্তেগফার ও ক্ষমা চাওয়ায় মনোনিবেশ করবেন সেই সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই অসাধারণ বিষয় ক্ষমা চাওয়ার তৌফিক দান করুন।
আমিন।

(সংগৃহীত ও ঈষৎ পরিমার্জিত)

Focused

17 Nov, 06:24


Focused #152

এঁদের জন্যেও প্রস্তুত জান্নাতের ঘর!
========================
জান্নাতের ঘর বিশেষভাবে তাদের জন্য প্রস্তুত, যারা এই দুনিয়ায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট গুণাবলী ধারণ করে। হাদিস ও কুরআনের আলোকে নিম্নে উল্লেখ করা হলো জান্নাতের ঘরের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদের কিছু গুণ:

১. নম্র ও বিনয়ী লোক
নবী করিম (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে জান্নাতে একটি ঘর দান করবেন।" (তিরমিজি)

২. সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যক্তি
যারা সবসময় সত্য কথা বলে এবং আমানতদার, তাদের জন্য জান্নাতে ঘর প্রস্তুত রয়েছে। (কুরআন ৩৩:৭০-৭১)

৩. তাহাজ্জুদ পড়া ব্যক্তি
যারা রাতে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকে, তাহাদের জন্য জান্নাতে উচ্চ মর্যাদার ঘর প্রস্তুত। (মুসলিম শরিফ)

৪. মহানুভব ও দানশীল ব্যক্তি
নবী (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি একজন ইয়াতিমকে প্রতিপালন করে, সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।" (বুখারি)

৫. নবী (সা.)-এর সুন্নাহ পালনকারী
যারা নবীর সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরে চলে এবং নামাজে মনোযোগ দেয়, তারা জান্নাতে সম্মানের ঘর লাভ করবে। (তিরমিজি)

৬. কষ্ট সহ্যকারী এবং ধৈর্যশীল ব্যক্তি
আল্লাহ বলেন, "ধৈর্যশীলদের জন্য তাদের প্রতিদান সীমাহীনভাবে দেওয়া হবে।" (সূরা যুমার ৩৯:১০)

৭. পরোপকারী ও অন্যের উপকারকারী
যারা দুনিয়ার জীবনে অন্যদের কল্যাণে কাজ করে এবং অন্যের প্রয়োজন মেটায়, তাদের জন্য জান্নাতে বিশেষ মর্যাদার ঘর রয়েছে।

জান্নাতের ঘর পাওয়ার জন্য আমাদের উচিত আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এই গুণগুলো নিজেদের জীবনে প্রতিষ্ঠা করা।

Focused

11 Nov, 14:33


Focused #151

Man will be Man!
================
Dear Sisters : Let your men be "men"

পোস্টটা ইংরেজী একটা বাক্য দিয়ে শুরু করতে হলো, এর সঠিক উপযোগী বাংলা এ মুহুর্তে মনে আসছে না। বোনদের ব্যাপার নিয়ে কোন কিছু লিখলে সবাই প্রথমে ধরে নেয় নিশ্চয়ই এই প্রসঙ্গ লেখকের পরিবারের এক্সপিরিয়েন্স থেকেই লেখা হয়েছে। হতে পারে, কিন্তু নট নেসেসারিলি।
.

উম্মুল মু'মিনিন সায়্যিদা আইশা  রাদিয়াল্লাহু আনহার একটা হাদিস আমরা সবাই জানি। সেখানে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাসায় থাকাকালীন কী করতেন ? উত্তর ছিল "বাসার কাজে সাহায্য করতেন"। খেয়াল করুন বাসার কাজে *সাহায্য* করতেন। যারা সীরাত একটু ভালমতো পড়েছেন তাদের জানার কথা উম্মাহাতুল মু'মিনিনদের কামরা কতটুকু ছিল। আইশা রাদিয়াল্লাহু আনহা ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় রাসুলুল্লাহ নামাজ পড়লে সিজদা দেবার সময় পায়ে স্পর্শ লেগে যেত, তখন মা আইশা পা সরিয়ে নিতেন। বা বিয়ের সময় আসবাবপত্র হিসেবে কী পেয়েছিলেন। এমন কোন সীরাতের ঘটনা বা হাদিস মনে পড়ে না যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রান্না করেছেন। মদীনার পুরা জীবনটাই তো ছিল গাযওয়া আর সারিয়্যা নিয়ে ব্যস্ত। এর মধ্যে যতটুকু সময় পাওয়া গিয়েছে, পরিবারের প্রতি উত্তম ইনসাফ করে আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত দাঁড় করেছেন। আর বাসায় সাহায্য করার মধ্যে ছিল কাপড়ে তালি দেয়া, জুতা মেরামত করা ইত্যাদি। মাসের পর মাস চুলায় আগুন জ্বলেনি, সাহাবীদের হাদিয়া খেজুর খেয়ে দিন পার হয়েছে। হাদিসে আছেঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাইরে থেকে এসে বলতেন "আইশা, ঘরে খাবার কিছু আছে ?" মা আইশা উত্তর দিতেন "না, ইয়া রাসুলাল্লাহ"। রাসুলুল্লাহ "তাহলে রোজা রেখে দিলাম" বলতেন বলে ঘটনা আছে। আর উম্মাহাতুল মু'মিনিন আল্লাহর রাসুল থেকে আশাও করেননি তাদের জন্য রান্না করবেন। অনুরুপভাবে অন্যান্য সাহাবীর ক্ষেত্রেও খেয়াল পড়ে না। 

.

কিন্তু বাসায় সাহায্য করার হাদিসটাকে যে যার মতো ইন্টারপ্রেট করে যাচ্ছে। স্ত্রীর অসুস্থতায় কারো হাজবেন্ড রান্না করে কদিন খাইয়েছে - গুড, বারাকাল্লাহু ফিহ, কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় বাসায় রান্না করা কাজটা ইটসেলফ পুরুষদের থেকে আশা করা ঠিক নয়। পুরুষরা করবে কঠিন সব কাজগুলো, বাচ্চাদেরও ট্রেইনিংও দিবে কঠিন কাজের। কঠিন বলতে পেশীশক্তিওয়ালা এবং রিস্কি কাজগুলো বুঝাতে চাচ্ছি। যদি এর বাইরেও ফ্রি থাকে তাহলে পরিবারের সময় দিয়ে রিজিক বৃদ্ধির চেষ্টায় ব্যস্ত থাকা উচিত। পুরুষদের দিয়ে "আনম্যানলি" কাজ করিয়ে সেটা নিয়ে গর্ব করার কিছু নেই। এখানে ফেমিনিজম টেনে আনতে চাই না। যেটা পয়েন্ট আউট করতে চাই, তা হচ্ছে "আধুনিক পুরুষরা দূর্বল থেকে দূর্বলতর হচ্ছে", পুরুষালি সব দায়িত্ব নিচ্ছে না। মেয়েরা পুরুষের দায়িত্ব নিচ্ছে, একটা সময় পর মিজারেবলি ফেইল করছে। নিউজে দেখলাম কোলকাতার সল্ট লেকের এক লোক কীভাবে তার স্ত্রী তাকে মারধর করে সেটার ভিডিও করে ভাইরাল করেছে, কী লজ্জার কথা! স্ত্রী কাজ করছে আর স্বামী রান্না করে খাইয়েছে সেই গল্পে প্রচুর পুরুষ লাইক / লাভ রিয়্যাক্টও দিচ্ছে। এর মানে হচ্ছে পুরুষরা ভুলতে বসেছে পুরুষসুলভ কাজ কী কী। পৌরুষের বদলে কিউটনেস দেখে মানুষ বেশি আনন্দ পায় এখন।
.

আরবের সে সমাজে পুরুষরা যে পুরুষসুলভ কাজ করতো, শুধু তাই না, মহিলাদেরও এক্সপেকটেশন ছিল পুরুষরা পুরুষের মত আচরণ করবে। হিন্দ বিনতে উতবা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) কে বিয়ের জন্য অপশন দেয়া হয়েছিল সুহাইল ইবন আমর আর আবু সুফিয়ান (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) এর মধ্যে বেছে নিতে। হিন্দের কাছে আবু সুফিয়ানকে পৌরুষময় আর বুদ্ধিমান মনে হয়েছিল, তাই আবু সুফিয়ানকে বেছে নিয়েছিলেন। ইয়ারমুকের যুদ্ধে মহিলাদের ডিপ্লয় করা হয়েছিল যাতে পুরুষরা পিছু হটলে তাদের পাথর মেরে যুদ্ধে আবার ফেরত পাঠিয়ে দেয়। বংশমর্যাদার পর বীরত্ব ছিল মোটামুটি নাম্বার ওয়ান প্যারামিটার।
.

থট প্রসেস শিফটের জন্য আমি পুরা দোষ বোনদের দিতে রাজী নই, তারা আমাদের অর্থাৎ পুরুষদের বর্তমান আচরণের জন্যই এমন সব চিন্তা করছেন যা আসলে আদর্শ পূরুষের ক্ষেত্রে সমীচীন না। এটা বুঝলে অনেকেই হয়তো উল্টোটাই প্রেফার করতেন। হাজবেন্ড মাঝে মাঝে রান্না করে খাওয়ালে সেটাকে ইহসান ধরে আল্লাহর কাছে দুয়া করতেন যাতে এরকম বেশিদিন না হয়, এটাকে প্রাইড হিসেবে পাবলিকের কাছে ছড়িয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগতেন না। যা হোক, আজকাল অ্যাডভাইস অনেক সস্তা এবং সবাই অ্যাডভাইস দেবার কারণে কেউ নিতেও চায় না, তবুও একটা প্রসঙ্গ আসলে সেই প্রসঙ্গে নসীহাহ দিয়ে শেষ করা উচিত। নসীহাহ থাকবে সীরাত আরো একটু ভালমতো অধ্যয়ন করুন, কোনটা রাসুলের সুন্নাহ সেটার সঠিক ব্যাখ্যা শিখুন, আর আপনার স্বামী-ছেলেদের পুরুষ হতে দিন, পুরুষ।

— মুফতি মাহবুবুর রহমান (হাফি.)

Focused

07 Nov, 06:11


Focused #150

কৃতজ্ঞ প্রকাশের বাক্যই তো "আলহামদুলিল্লাহ"
==============================
সেদিন বুয়া এসে ঘর পরিষ্কার করার সময় বিছানায় কাঁথা দেখে খুব অবাক হয়ে বললো, "আপা, এই গরমে আপনে কাঁথা গায়েত দেন!!"

তারপর নিজেই আবার স্বগতোক্তি করলো, " আপনারার তো এসি আছে, এর লাইগ্যা শীত করে। আমরার বাড়িত টিনের চাল, এমুন গরম পরে.."

তার চেহারায় প্রচণ্ড গরমের বিদ্ধস্ততা প্রকট ভাবে বিদ্যমান।

হঠাৎ করে কেন যেন আমার অসম্ভব লজ্জা বোধ হল, বুয়ার দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারলাম না। প্রয়োজন হলে এসি ছাড়তে পারি, গরমের রাতেও শীতের আমেজ পাই, আল্লাহ এর কত বড় রহমত এটা!!

কোন দিন আই পি এস ফেইল করলে, গরমে যেরকম ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা করে আস্ফালন করি, শীতাতপের শীতল হাওয়াতে কি সেই পরিমান কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি!?

নাকি এই বিলাসীতাকে 'অবশ্য পাওনা" হিসেবে ভেবে নিয়েছি?

এখনো মনে পড়ে, যেদিন ঘরে প্রথম আই পি এস লাগানো হয়েছিল, প্রথম বার কারেন্ট যাবার পরেও আমাদের ঘর আলোকিত রয়ে গিয়েছিল। প্রতিবেশীদের অন্ধকার ঘরের মাঝে, নিজ ঘরের আলোয় আম্মু খুব সংকোচ বোধ করছিলেন। এই নতুন পাওয়া সুবিধায় আনন্দিত হবার বদলে বহুদিন দেখেছি মায়ের লজ্জিত, সংকুচিত মুখাবয়ব।

আশে পাশের সবাইকে ফেলে একা একা আরাম করার সেই লজ্জা থেকে স্বাভাবিক হতে অনেক দিন লেগেছিল।

আমরা প্রতিনিয়ত কত অজস্র নিয়ামতে যে ডুবে থাকি, তার সঠিক হিসাব নিজেরাও দিতে পারবো না। কি পেলাম না সেই ফিরিস্তি যত সহজে দিতে পারি, কত কিছু না চাইতেই পেয়ে গিয়েছি তা নিয়ে কিন্তু তত সহজে ভাবতে চাই না।

আর নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাও হয় না। যেমন কল খুললে পানি আসে। এই আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ বিষয়টি কি বিশাল আশির্বাদ তা কি জানেন? পৃথিবীর অনেক দেশে পানি যেন সোনার মত মূল্যবান।

বেশ ক'বছর আগে একবার উটের পিঠে চেপে থর মরুভূমিতে যাচ্ছিলাম, আমার উটের মালিক ছিল তের/ চোদ্দ বছরের এক বালক। তার রোদে পোড়া তামাটে চেহারা আজও ভুলি নি।

শুষ্ক রুক্ষ মরুভূমিতে তাদের বসবাস। তাদের মত মরুভূমির আরো অনেক গ্রামের বাসিন্দারাই, প্রতিদিনের ব্যবহার্য পানি নিয়ে আসে কয়েক মাইল দূরের নদী থেকে। সকাল হলেই গ্রামের মেয়েরা মাথার উপর অদ্ভুত উপায়ে একাধিক কলসি নিয়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে পানি আনতে যায়।

সেদিনের পর থেকে অনেক দিন কলের পানি খুললে আমি কিছুক্ষণের জন্যে হলেও মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। এই সহজলভ্য পানি যে এত মূল্যবান তা এর আগে অনুভব করি নি।

শুধু কলের পানি নয়, ফ্রিজ খুললে খাবার পাওয়া যে একটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয় তা আপনি কখনোই বুঝবেন না, যদি না কখনো খাবারের কষ্ট করে থাকেন। অথবা খাবারের কষ্টে মানুষ কত ত্যাগ, তিতিক্ষা করতে পারে তা না দেখে থাকেন।

বেশিদূর যেতে হবে না, এরকম মানুষ আশে পাশেই পাবেন। আমার শশুরবাড়িতে নতুন বুয়া রেখেছে কিছুদিন হল। মহিলাটির বার/তের বছরের একটি ছেলে আছে, স্বামী মারা গেছেন। বাচ্চাকে খাওয়াতে পারছেন না দেখে, বুকের ধনকে রেখে এসে অন্যের বাড়িতে কাজ করছেন।

মা তাকে ফেলে চলে এসেছে, এই অভিমানে বাচ্চাটি দিনের পর দিন মায়ের সাথে কথা বলছে না। এই মায়ের সামনে দিয়ে যখন আমি বাচ্চা কোলে নিয়ে বলতে থাকি, "আমার বাচ্চা খায় না", সারাদিন পারলে ইউটিউব ঘেঁটে, রান্না ঘরে গিয়ে বাবুর জন্য এটা সেটা রান্না করি, তখন নিজের আদিখ্যেতায় নিজেই বিরক্ত হই।

এক জন তার কলিজার টুকরার মুখে দুটো ভাত তুলে দেবার জন্য, ঘর বাড়ি ছেড়ে আমাদের ঘর সাজাতে এসেছে... যে খাবার আমার ছেলে হয়তো একবার মুখে তুলে, দ্বিতীয়বার মুখ বাঁকিয়ে ফেলে দেবে, সেই অর্থহীন খাদ্য রান্নার জন্য পেঁয়াজ কুটছে, পুরো ব্যাপারটিই কেমন যেনো হৃদয় বিদারক লাগে।

হায়রে, সন্তানের জন্য খাবার কেনার সামর্থ্যও যে কত বড় প্রাপ্তি, তা কি আমরা জানি?

মাথার ওপর ছাদ, ভালবাসার মানুষের সান্নিধ্য, এমনকি নিজের সংসারের জন্য খাটতে খাটতে হাঁপিয়ে ওঠার জন্যেও আলহামদুলিল্লাহ বলা উচিত।

নিজের সংসারের জন্যই তো পরিশ্রম করতে হচ্ছে। পরের বাড়িতে যেয়ে তো কাজ করতে হচ্ছে না। তাছাড়া কত মেয়ে একটা সংসার, সন্তান পাবার জন্য দিনের পর দিন দুয়া করে যাচ্ছে, তার খবর কি আমরা রাখি!

আমাদের অনেকে এই বুড়ো বয়সেও মা বাবার আদর পাচ্ছি। মাঝে মাঝে তাদের কাছে গিয়ে বিশ্রাম নিতে পারছি। কতজনের তো তাও নেই। কিংবা থাকলেও, তাদের কাছে যাওয়া সম্ভব নয়।

আসলে না পাওয়ার হিসেব করতে গেলে, তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকবে। তার চেয়ে কি কি পেয়েছি, তার হিসেব করলে কেমন হয়? সারাজীবিনেও হিসেব শেষ করতে পারবেন না।

সচেতন বা অবচেতন ভাবে কত নিয়ামতে আমরা আকন্ঠ ডুবে আছি তা আমরা নিজেরাও জানি না।

জীবন নিয়ে কৃতজ্ঞ হলে, লাভ বই ক্ষতি নেই।

দুনিয়ার পেছনে, নিরন্তর চাহিদার পেছনে ছুটতে ছুটতে, জীবনে যা আছে তা উপভোগ করার আগেই ওপারে পাড়ি জমায় অনেকে।

তাই মাঝে মাঝে গন্তব্যহীন ইঁদুর দৌড় থেকে একটু থমকে দাঁড়ালে কেমন হয়?

নাহলে জানবো কি করে, আমার রব আমাকে কত কিছু দিয়েছেন?

আমরা উনার কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করব?

#collected

Focused

06 Nov, 15:15


Focused #149

পুরুষদের জন্য রান্না শেখাও জরুরি!
========================
মুসলিম পুরুষের জন্য রান্না শেখা একাধিক কারণে জরুরি ও উপকারী হতে পারে। এটা নিসন্দেহে একটা ভালো কাজ।

১. স্বনির্ভরতা ও স্বনির্ভর জীবনযাপন:

ইসলামে ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ ও স্বনির্ভরতার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। পুরুষদেরও স্বনির্ভর হয়ে নিজের কাজ করার ক্ষমতা অর্জন করা উচিত। যদি কোনো কারণে স্ত্রী বা পরিবারের সদস্যরা রান্না করতে না পারেন, তাহলে পুরুষরাও সেই দায়িত্ব নিতে সক্ষম হবেন।

২. পরিবার ও সঙ্গীর প্রতি দায়িত্ব:

ইসলামে পরিবারকে সুন্দর ও সুখী রাখার জন্য পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি ও দায়িত্বশীলতা গুরুত্বপূর্ণ। নারীর প্রতি করুণা ও সাহায্যের জন্য পুরুষদের রান্নায় দক্ষতা থাকলে তা সংসারকে আরও সুস্থির করতে পারে।

৩. নবীজির (সা.) আদর্শ:

হাদিসে পাওয়া যায় যে, নবী মুহাম্মদ (সা.) নিজে বিভিন্ন ঘরোয়া কাজে সাহায্য করতেন, যা মুসলিম পুরুষদের জন্য একটি অনুকরণীয় আদর্শ। তিনি নিজ হাতে নিজের কাজ করতেন, এমনকি কাপড় সেলাই ও নিজের খাবার তৈরি করতেন (সহিহ আল-বুখারি)।

৪. স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রস্তুতি:

রান্না শিখলে নিজের ও পরিবারের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করা যায়। এটি ইসলামের রক্ষণশীল জীবনযাপনের দিকেও নির্দেশ করে, যেখানে সুস্থ জীবনযাপন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৫. কঠিন পরিস্থিতিতে জীবনযাপন:

কখনো দুর্যোগ বা যেকোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে রান্না করার দক্ষতা একজন পুরুষকে নিজের ও পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার যোগানে সক্ষম করে তোলে।

৬. সম্পর্কের উন্নতি:

ঘরের কাজে অংশগ্রহণ এবং স্ত্রীকে রান্নায় সহায়তা করা, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসা ও সম্পর্কের গভীরতা বৃদ্ধি করে, যা দাম্পত্য সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।

সুতরাং, রান্না শেখা একজন মুসলিম পুরুষের জন্য শুধুমাত্র পারিবারিক ও সামাজিক কারণে নয়, বরং এটি একটি ধর্মীয় দায়িত্ব ও উত্তম আচরণ হিসেবেও বিবেচিত।

Focused

28 Oct, 07:02


Focused #148

হাঁচি আসলে যেকারণে বলি "আলহামদুলিল্লাহ"
==============================
"হাঁচি" মহান আল্লাহর এক অপার নেয়ামত।
ইসলামে হাঁচি আসলে "আলহামদুলিল্লাহ" বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কারণ হাঁচি শরীরের এক ধরনের বিশুদ্ধতার সংকেত বহন করে।
হাঁচি শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় বস্তুকে বের করে দেয়, যার ফলে শরীর অনেকাংশে স্বস্তি অনুভব করে।

একটি হাঁচির গতিবেগ ঘন্টায় প্রায় ১০০ মাইল, সাধারণত এটি এক সেকেন্ড স্থায়ী হয়। এই প্রক্রিয়ায় এক ধাক্কায় প্রায় ১০০ মাইল প্রতি ঘন্টা গতিতে শ্বাস বের হয়, যা হাঁচির মাধ্যমে নাক ও মুখের মাধ্যমে বেরিয়ে আসা অণুজীব বা ধূলিকণা শরীর থেকে বের করতে সহায়তা করে। এতে শ্বাসযন্ত্র পরিষ্কার হয়, যা শরীরের জন্য উপকারী।

জোরে হাঁচির কারণে আপনার পাঁজর ভেঙ্গে যাওয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি করার জন্য যথেষ্ট।এখানে মূলত যা ঘটে তা হলো আপনার নাক চেপে ধরে এবং হাঁচি দেওয়ার সময় আপনার মুখ বন্ধ করার ফলে সিউডোমেডিয়াস্টিনাম (আপনার ফুসফুসের মধ্যে আটকে থাকা বাতাস), একটি সেরিব্রাল অ্যানিউরিজম (মস্তিষ্কের ফাঁপা রক্তনালী) বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং এর ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

বৈজ্ঞানিকভাবে বললে বলা যেতে পারে হাঁচি আসলে শরীরের একটি প্রাকৃতিক প্রতিক্রিয়া, যার মাধ্যমে শরীর নাসারন্ধ্রের ক্ষতিকর বা অস্বস্তিকর কণাগুলো বের করে দেয়। যখন নাকের ভিতরে ধুলো, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা অন্যান্য ক্ষুদ্র কণা ঢুকে পড়ে, তখন নাসারন্ধ্রের অভ্যন্তরের স্নায়ুগুলো মস্তিষ্ককে সংকেত দেয়। মস্তিষ্ক তখন শ্বাসযন্ত্রকে দ্রুত বাতাস বের করতে নির্দেশ দেয়, যার ফলে হাঁচি হয়।
হাঁচি দেওয়ার সময় হৃৎপিণ্ড সহ সমগ্র মানবদেহের সিস্টেমই কাজ করা বন্ধ করে দেয়।

আপনি যখনই হাঁচি দেন এবং হাঁচি শেষে স্বাভাবিক হন তখন আপনি মূলত নতুন এক জীবনে ফিরে আসেন। অর্থাৎ আপনি যখন হাঁচি দিচ্ছেন তখন আপনার হৃদপিণ্ড কাজ করা বন্ধ করে দেয় বা আপনার মৃত্যু তখনই হয়ে যাওয়ার অবস্থায় চলে যায় কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ আপনাকে আবার জীবন দান করেন কৃপা করে। এ কারণেই তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরুপ আমরা বলি "আলহামদুলিল্লাহ"। ইসলামে এই শারীরিক স্বস্তির জন্য আল্লাহর প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
হাদিসে এসেছে, মহানবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন,

"যখন তোমাদের মধ্যে কেউ হাঁচি দেয় এবং আলহামদুলিল্লাহ বলে, তখন তার ভাই বা সঙ্গী তাকে 'ইয়ারহামুকাল্লাহ' বলবে।" (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬২২৪)।

এখানে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে ইসলামের ধ্যানধারণায় আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীলতা এবং শারীরিক ও আত্মিক কল্যাণের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
তাই, হাঁচির পর "আলহামদুলিল্লাহ" বলা মানে আল্লাহর দেওয়া শারীরিক স্বস্তি ও নেয়ামতের জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে আলহামদুলিল্লাহ বলার মাধ্যমে এই শারীরিক স্বস্তি ও শ্বাসযন্ত্রের সুরক্ষার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
মহান আল্লাহ সূরা আর রহমানে এজন্য আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন একাধিক বার।

"সুতরাং তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে?"
আল্লাহর অগণিত নেয়ামতের মধ্যে আমরা ডুবে আছি সদা সর্বদা। এ কারণে শুধু মুখে নয় মন থেকেই আমাদের বলা উচিত "আলহামদুলিল্লাহ"।

Focused

26 Oct, 08:02


Focused #147

এই আহ্বান উপেক্ষা করবেন কীভাবে?
==========================
আজান মানে আহ্বান। কে আহ্বান করছেন? উত্তর হলো মুয়াজ্জিন মানে যিনি আজান দিচ্ছেন। কাকে আহ্বান করছেন?
- আমাকে, আপনাকে সকলকে।
কাঁর দিকে আহ্বান করছেন?
- একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর দিকে আহ্বান করছেন।
কেন আহ্বান করছেন?
- কারণ এতেই আছে প্রকৃত সফলতা। জীবনের উদ্দেশ্য।

আজানের শব্দগুলো চলুন জেনে নিই।

আজানের প্রতিটি শব্দের অর্থ নিম্নরূপ:

1. আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর
"আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান"
অর্থ: আল্লাহ সর্বশক্তিমান এবং সবকিছুর উপরে।

2. আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
"আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ (উপাস্য) নেই"
অর্থ: একমাত্র আল্লাহই উপাসনার যোগ্য।

3. আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ
"আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসুল"
অর্থ: মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসুল।

4. হাইয়া আলাস সালাহ
"আসুন সালাতের দিকে"
অর্থ: নামাজের জন্য আহ্বান।

5. হাইয়া আলাল ফালাহ
"আসুন কল্যাণের দিকে"
অর্থ: সফলতা ও কল্যাণের দিকে আহ্বান।

6. আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর
"আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান"
অর্থ: পুনরায় আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষিত।

7. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
"আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ (উপাস্য) নেই"
অর্থ: একত্ববাদে পূর্ণ বিশ্বাস।

আজান ইসলামে নামাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান, যা মুসলমানদেরকে নামাজে উপস্থিত হওয়ার জন্য উদ্দীপিত করে। তো এতকিছু তো জানলেন, এই আহবান এরপরও উপেক্ষা করা যায় কি?

Focused

22 Oct, 15:51


Focused #146

কথা বলুন স্পষ্ট করে
===============
স্পষ্ট করে কথা বলা একটা আর্ট। সবাই এটা রপ্ত করতে পারে না সহজেই। যিনি বলেন তিনিও দেখবেন এটা হঠাৎ করে এমনিতেই অর্জন করেননি। বার বার চেষ্টা করে, বেশি বেশি পড়াশোনার মাধ্যমে শব্দভাণ্ডার উন্নত হয় যা স্পষ্ট করে কথা বলার অন্যতম একটি উপায়। প্রতিদিনই আমাদেরকে কতশত কথা বলতে হয় তার ইয়ত্তা নেই। কথা বলার ক্ষেত্রে আপনি যদি স্পষ্টভাষী হন তবে সেটা শুনতেও যেমন ভালো লাগে তেমনি শ্রোতারাও আপনার কথা গুলো বুঝতে পারেন খুব সহজেই।
মহা গ্রন্থ আল কুরআন এ এমনই একটা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহ আমাদেরকে শিখিয়েছেন সুন্দর করে কথা বলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি দুআ।
স্পষ্টভাবে কথা বলার জন্য এই প্রার্থনা বা দুআ যা মূসা (আ.) আল্লাহর কাছে করেছিলেন। কারণ তার কথা বলার ক্ষেত্রে জড়তা ছিল। দুআ টি কুরআনের সূরা ত্বহা-তে (২০:২৫-২৮) উল্লেখ করা হয়েছে। দুআ টি হলো:

رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي (رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي)
وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي (وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي)
وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِي (وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِي)
يَفْقَهُوا قَوْلِي (يَفْقَهُوا قَوْلِي)

উচ্চারণ:
"রাব্বি শ্‌রাহ্‌ লি সাদরী, ওয়া ইয়াস্‌সির্‌ লি আম্‌রী, ওয়াহ্‌লুল উক্‌দাতাম্‌ মিল্‌ লিসানী, ইয়াফ্‌কাহূ কাওলী।"

অর্থ:
"হে আমার পালনকর্তা! আপনি আমার বক্ষকে প্রশস্ত করে দিন, আমার কাজ সহজ করে দিন, এবং আমার জিহ্বা থেকে জড়তা দূর করে দিন, যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।"

কোন কোন সময় করতে পারবেন এই দুআ?=============================
যেকোনো সময়ই করতে পারেন। সেটা হতে পারে
১. আপনি কাউকে কোনো কথা বোঝাতে চাচ্ছেন সুন্দর করে কিছু প্রতিবন্ধকতা কাজ করছে মনে যে পারবেন কি না সেই মুহূর্তে এই দুআ করতে পারেন।
২. কোনো প্রেজেন্টেশন আছে কিন্তু ভয় লাগছে খুব! এমন অবস্থায় করতে পারেন এই দুআ।
৩. চাকরির ইন্টারভিউ এর আগে বুক ধড়ফড় করা একটা স্বাভাবিক বিষয়। এই ধড়ফড়ানি কমিয়ে ফেলুন দুআ টি অনবরত পাঠের মাধ্যমে!
৪. আপনি শিক্ষক, ক্লাস নিবেন, কোনো বিষয় নিজে বোঝেন কিন্তু আপনার স্টুডেন্টরা বুঝতে পারছে না হয়তো বিষয়টার জটিলতার কারণে, এমন অবস্থায় দুআ টি করতে পারেন।
৫. কাউকে কথার মাধ্যমে কনভিন্স করা প্রয়োজন কিন্তু মনে ভয় অথবা পেরেশানি কাজ করছে; এমন অবস্থায় করতে পারেন এই দুআ।
৬. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কুরআন তিলাওয়াতের আগে এই দুআ করে কুরআন পড়তে শুরু করুন, ইনশাআল্লাহ পড়া সহজ হয়ে যাবে।

মূলত এই দুআটি স্পষ্টভাবে কথা বলার জন্য এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে বক্তব্য প্রকাশ করার জন্য অত্যন্ত কার্যকর। তাই নিজে মুখস্ত করুন আর অন্যকেও উৎসাহিত করুন। মহান আল্লাহ আমাদেরকে দুআ টি বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন।
আমিন।

Focused

21 Oct, 09:45


Focused #145

মুসলিম জীবনে প্রয়োজনীয় কিছু হালাল ব্যবসা
==============================
মুসলিম জীবনে হালাল ব্যবসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ইসলামের নিয়ম মেনে জীবিকা নির্বাহের একটি পবিত্র উপায়। কিছু প্রয়োজনীয় হালাল ব্যবসার উদাহরণ হলো:

1. কৃষি ও পশুপালন: খাদ্য উৎপাদন যেমন শস্য, ফলমূল চাষ এবং হালাল পশুপালন (যেমন গরু, ছাগল ইত্যাদি) একটি পবিত্র ও হালাল পেশা।

2. খাদ্য ব্যবসা: হালাল খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুত ও বিক্রয়, যেমন হালাল মাংস, দুধ, মাছ, এবং অন্যান্য খাবার সরবরাহ একটি প্রচলিত ও ন্যায়সঙ্গত ব্যবসা।

3. কাপড় ও পোশাক ব্যবসা: ইসলামী পোশাক যেমন জুব্বা, বোরকা, স্কার্ফ ইত্যাদি তৈরি ও বিক্রি করা একটি জনপ্রিয় হালাল ব্যবসা।

4. প্রযুক্তি ও ই-কমার্স: তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ই-কমার্স, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট একটি দ্রুত বর্ধনশীল এবং হালাল ক্ষেত্র।

5. পুস্তক ও প্রকাশনা: ইসলামী বই, পুস্তক, পবিত্র কোরআন শরিফ বিক্রি এবং ধর্মীয় শিক্ষা সম্পর্কিত ব্যবসা।

6. সেবা খাত: হালাল সেবা প্রদান যেমন আইনি পরামর্শ, ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যাংকিং পরামর্শ, হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা, এবং স্বাস্থ্যসেবা।

7. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ইসলামী নীতি ও মূল্যবোধে ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, যেখানে ধর্মীয় এবং সাধারণ শিক্ষা একসাথে প্রদান করা হয়।


এইসব ব্যবসাগুলি শুধু হালাল নয়, বরং মুসলিমদের জন্য আখিরাতেও সওয়াব অর্জনের মাধ্যম হতে পারে, যদি সঠিক নিয়ত এবং পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়।

Focused

14 Oct, 00:56


Focused #144

হতে চাই 'মুস্তাজাবুদ দাওয়া'!
====================
মুস্তাজাবুদ দাওয়া (مستجاب الدعوة) অর্থ হলো সেই দোয়া, যা আল্লাহ তাআলা কবুল করেন। ইসলামিক পরিভাষায়, কিছু সময়, পরিস্থিতি বা ব্যক্তিদের জন্য দোয়া বিশেষভাবে আল্লাহর নিকট কবুল হয়।

কিছু সময় ও অবস্থা যেখানে দোয়া মুস্তাজাব হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে ইসলামি শিক্ষায় উল্লেখ রয়েছে:

1. তাহাজ্জুদের সময়: রাতের শেষ অংশে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য করা দোয়া।
2. জুমার দিন: বিশেষ করে আসরের পরের সময়ে দোয়া।
3. আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়।
4. রোযাদারের ইফতারের পূর্ব মুহূর্ত।
5. দীনের জন্য কষ্টের মুহূর্তে দোয়া।

কিছু ব্যক্তি আছেন যাদের দোয়া বিশেষভাবে কবুল হয় বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে:

1. মা-বাবার দোয়া।
2. মযলুমের দোয়া।
3. নিরীহ মুসাফিরের দোয়া।

মুস্তাজাবুদ দাওয়ার মর্যাদা অর্জনের জন্য কিছু নির্দিষ্ট আমল ও দিকনির্দেশনা কুরআন ও হাদিস থেকে নেওয়া হয়েছে, যা নিম্নে রেফারেন্সসহ উল্লেখ করা হলো:

১. সৎকাজ ও আল্লাহর আনুগত্যে অটল থাকা:

আল্লাহ তাআলা বলেন:
>> “আর তোমরা যে কল্যাণই কর, আল্লাহ তা জানেন।” (সূরা আল-বাকারা, ২:১৯৭)

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “আল্লাহ্‌ তাঁর বান্দার দোয়া কবুল করেন, যতক্ষণ না সে তাড়াহুড়ো করে (অর্থাৎ দোয়া কবুলের জন্য অস্থিরতা প্রকাশ না করা)।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ২৭৩৫)

২. নিয়মিত ইবাদত করা:
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আপনার জন্য ফরজ করা হয়েছে, কোনো রকম অজুহাত ছাড়াই নামাজ আদায় করতে হবে নিয়মিত। এ ছাড়া এশরাকের নামাজ ও তাহাজ্জুদ সালাত আদায়েরও অভ্যাস করতে হবে।

কুরআনে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন:

>> “আর আপনি রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়ুন, এটি আপনার জন্য অতিরিক্ত ইবাদত। আশা করা যায়, আপনার রব আপনাকে প্রশংসিত অবস্থানে অধিষ্ঠিত করবেন।” (সূরা আল-ইসরা, ১৭:৭৯)

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, "রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, কে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব; কে আমার কাছে কিছু প্রার্থনা করবে, আমি তাকে তা দেব।” (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১১৪৫)

৩. অহংকার ও রিয়ার থেকে মুক্ত থাকা:

হাদিসে বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি নিজেকে অন্যদের থেকে উত্তম ভাবে, তার মধ্যে কণামাত্র অহংকার থাকলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৯১)

৪. দু'আর মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাস রাখা:

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে যে তিনি কবুল করবেনই।” (তিরমিজি, হাদিস নং ৩৪৭৯)

৫. হালাল রিযিক উপার্জন করা:

হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “হালাল রিজিক উপার্জন করা হলো প্রত্যেক মুমিনের জন্য একটি ফরজ কাজ।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১০১৫)

আরও বলা হয়েছে: “হারাম থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা দোয়া কবুলে অন্যতম শর্ত।” (মুসলিম, হাদিস নং ১০১৫)

৬. অন্যদের সাথে ভাল আচরণ করা ও তাদের হক আদায় করা:

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “মুসলিম হলো সে ব্যক্তি যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১০)

মায়ের সাথে উত্তম আচরণের মাধ্যমেও মায়ের দোয়া পাওয়া যায়।একদা মু‘আবিয়াহ বিন জাহিমাহ আস-সুলামী রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খেদমতে এসে জিজ্ঞাসা করলেন,

‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি যুদ্ধে যেতে চাই। আর এ ব্যাপারে আপনার পরামর্শ কামনা করছি। উত্তরে তিনি বলেন, তোমার মা জীবিত আছেন কি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে তাঁর খিদমতে লেগে থাক। কেননা জান্নাত তাঁর দু‘পায়ের নিচে
(নাসাঈ, হা/৩১০৪; সনদ হাসান)।

৭. মাযলুম ও মুসাফিরের দোয়া প্রার্থনা করা:

হাদিসে বলা হয়েছে, “মাযলুমের (অত্যাচারিত ব্যক্তির) দোয়া ও মুসাফিরের দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।” (তিরমিজি, হাদিস নং ১৯০৫)

এই রেফারেন্সগুলো ইসলামের বিভিন্ন বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে নেওয়া হয়েছে, যা আল্লাহর নৈকট্য লাভে এবং দোয়া কবুলের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

তাই আসুন, আমরা মহান আল্লাহর পছন্দের কাজগুলো বেশি বেশি করার মাধ্যমে 'মুস্তাজাবুদ দাওয়া' এর মতো মর্যাদাবান হওয়ার চেষ্টা করি। নিশ্চয়ই মহান রব আমাদের চেষ্টা করা দেখেন।

Focused

13 Oct, 08:48


Focused #143

জান্নাতে যাওয়ার ২০টি আমল
======================
জান্নাতে যাওয়ার জন্য অসংখ্য কুরআন ও হাদিসের রেফারেন্স পাওয়া যায়।কিছু হাদিস নিচে উল্লেখ করা হলো। প্রতিটি হাদিসের রেফারেন্সসহ দেয়া হলো:

১. শহীদ হওয়ার মর্যাদা
হাদিস: "যারা আল্লাহর পথে মারা যাবে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ বুখারী 2810]


২. নামাজের গুরুত্ব
হাদিস: "যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নির্ভুলভাবে আদায় করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের জন্য প্রতিশ্রুতি দেন।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 635]


৩. জাকাত দেয়ার প্রতি উৎসাহ
হাদিস: "যে ব্যক্তি তার ধনসম্পদের জাকাত আদায় করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 985]


৪. সৎকর্ম করার মর্যাদা
হাদিস: "যে ব্যক্তি একজন মুসলিম ভাইয়ের সাথে ভাল ব্যবহার করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 2564]


৫. রোজার মর্যাদা
হাদিস: "যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 1151]


৬. সদকা ও দানের পুরস্কার
হাদিস: "যে ব্যক্তি একটি খেজুরের পরিমাণ সদকা দেয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 1016]


৭. ভাল কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা
হাদিস: "যে ব্যক্তি ভাল কাজের দিকে মানুষকে উৎসাহিত করবে, সে তাদের সঙ্গী হবে জান্নাতে।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 189]


৮. কুরআন পড়া
হাদিস: "কুরআন পড়া জান্নাতের মধ্যে আপনাকে উচ্চ মর্যাদা দেবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ বুখারী 5010]


৯. মরহুমদের জন্য দোয়া করা
হাদিস: "যে ব্যক্তি তার মৃতদের জন্য দোয়া করে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 979]


১০. আল্লাহর জন্য ভালবাসা
হাদিস: "যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য ভালোবাসে এবং বিদ্বেষ পোষণ করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 2565]


১১. অন্যদের ক্ষমা করা
হাদিস: "যে ব্যক্তি অন্যের ভুল ক্ষমা করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।"
রেফারেন্স: [সুনান আবু দাউদ 4860]


১২. পিতা-মাতার সেবা
হাদিস: "যে ব্যক্তি পিতা-মাতার প্রতি ভালো আচরণ করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ বুখারী 5971]


১৩. নেক কর্ম করার উদ্দেশ্য
হাদিস: "আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে যারা নেক কাজ করে, তাদের জন্য জান্নাতের সাফরকারী।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 2710]


১৪. দরিদ্রদের সাহায্য
হাদিস: "যে ব্যক্তি দরিদ্রদের সাহায্য করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 1054]


১৫. পরহেজগারি
হাদিস: "যে ব্যক্তি পরহেজগারি অবলম্বন করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 19]


১৬. প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে লড়াই করা
হাদিস: "যে ব্যক্তি নিজের প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে লড়ে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সুনান ইবনে মাজাহ 4243]


১৭. সৎ উদ্দেশ্যে কাজ করা
হাদিস: "যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কাজ করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ বুখারী 6820]


১৮. পরস্পর সহযোগিতা
হাদিস: "যে ব্যক্তি অন্যদের সহযোগিতা করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 217]


১৯. মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখা
হাদিস: "যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সুনান আবু দাউদ 4890]


২০. আল্লাহর পথে চেষ্টা করা
হাদিস: "যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে চেষ্টা করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।"
রেফারেন্স: [সহীহ মুসলিম 125]


এই হাদিস গুলো ছাড়াও অসংখ্য রেফারেন্স আছে জান্নাতে যাওয়ার। আসুন আমরা আন্তরিকতার সাথে চেষ্টা করি আমাদের জন্য সহজসাধ্য আমলগুলো নিয়মিত করার। মহান আল্লাহ আমাদের প্রচেষ্টা গুলোকে বিবেচনা করে নিয়ে সেই চিরকাল থাকার জায়গা জান্নাতের বাসিন্দা হিসেবে কবুল করে নিন।
আমিন।

Focused

11 Oct, 00:34


Focused #142

মন্দ ভাগ্য বা দুর্ভাগ্য থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ দুআ
===============
মন্দ ভাগ্য থেকে বাঁচার জন্য নিম্নলিখিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ দুআ ও আয়াত রয়েছে, যা প্রমাণিত হাদিস ও কুরআন থেকে নেওয়া হয়েছে:

১. মন্দ ভাগ্য থেকে বাঁচার দুআ (সুনান আবু দাউদ)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) এই দুআটি করতে নির্দেশ দিয়েছেন:

اللهم إني أعوذ بك من جهد البلاء، ودرك الشقاء، وسوء القضاء، وشماتة الأعداء.

উচ্চারণ:
"আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন জাহদিল বালাআ, ওয়া দারকিশ শাকাআ, ওয়া সু’ইল কাদাআ, ওয়া শামাতাতিল আ'দাআ।"

অর্থ:
"হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই কষ্টকর পরীক্ষা থেকে, দুর্ভাগ্য থেকে, খারাপ সিদ্ধান্ত থেকে এবং শত্রুদের উপহাস থেকে।"

রেফারেন্স:

সুনান আবু দাউদ (১৫৪৭)

সহিহ বুখারি (৬৩৪৭)

২. সুরা আল-ফালাক এবং সুরা আন-নাস

কোনও খারাপ ভাগ্য, দুর্ভাগ্য বা কষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই দুইটি সূরা পড়া সুপারিশ করা হয়েছে। এগুলোকে মুআ'ওয়িজাতাইন বলা হয়।

সুরা আল-ফালাক (১১৩:১-৫):

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ، مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ، وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ، وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ، وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ.

অর্থ:
"বলুন, আমি আশ্রয় চাই ভোরের পালনকর্তার কাছে, তার সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে, অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা ছেয়ে যায়, এবং গাঁটের মধ্যে ফুঁকারীদের অনিষ্ট থেকে, এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে।"

সুরা আন-নাস (১১৪:১-৬):

قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ، مَلِكِ النَّاسِ، إِلَٰهِ النَّاسِ، مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ، الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ، مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ.

অর্থ:
"বলুন, আমি আশ্রয় চাই মানুষের পালনকর্তার কাছে, মানুষের অধিপতির কাছে, মানুষের ইলাহর কাছে, কুমন্ত্রণা দানকারী শয়তানের অনিষ্ট থেকে, যে মানুষের বুকে কুমন্ত্রণা দেয়, যারা জিনদের মধ্য থেকে বা মানুষের মধ্য থেকে।"

রেফারেন্স:

কুরআন, সুরা আল-ফালাক (১১৩:১-৫)

কুরআন, সুরা আন-নাস (১১৪:১-৬)

৩. দুআ ইস্তিয়াজা

এই দুআটি রাসূলুল্লাহ (সা.) তার সাহাবীদের শিক্ষা দিয়েছিলেন, যাতে তারা খারাপ ভাগ্য এবং কষ্ট থেকে রক্ষা পান।

اللهم إني أعوذ بك من زوال نعمتك، وتحول عافيتك، وفجاءة نقمتك، وجميع سخطك.

উচ্চারণ:
"আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন যাওয়ালি নিআমাতিকা, ওয়া তাহাওয়ুলি আফিয়াতিকা, ওয়া ফুজাআতি নিখমাতিকা, ওয়া জমী'ই সকাতিকা।"

অর্থ:
"হে আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই আপনার দেওয়া নিয়ামত হারিয়ে ফেলার থেকে, আপনার দেয়া শান্তি পরিবর্তন থেকে, হঠাৎ করে আপনার গজব আসার থেকে, এবং আপনার সকল অসন্তুষ্টি থেকে।"

রেফারেন্স:

সহিহ মুসলিম (২৭৩৯)

এগুলো নিয়মিত পড়লে এবং আল্লাহর উপর ভরসা রেখে চললে, মন্দ ভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ইনশাআল্লাহ।