来自 Focused (@banglafocused) 的最新 Telegram 贴文

Focused Telegram 帖子

Focused
2,066 订阅者
417 张照片
1 个视频
最后更新于 06.03.2025 01:45

Focused 在 Telegram 上分享的最新内容

Focused

24 Dec, 14:39

362

বড়দিন উপলক্ষে
যে কথা হলো খ্রীষ্টান পোপের সাথে!
==========================
- আচ্ছা বলুন তো, ঈশ্বর কে?
- যিশু!
- যিশুই কি মাতা মেরীর পুত্র?
- জ্বি।
- মাতা মেরীকে কে সৃষ্টি করেছে?
- ঈশ্বর!
- ঈশ্বর কে?
- যিশু!
- যিশুই কি মাতা মেরীর গর্ভে জন্ম নেয়া
সন্তান?
- জ্বি।
- তার পিতা কে?
- ঈশ্বর!
- ঈশ্বর কে?
- যিশু!
- যিশু কি ঈশ্বরেরর সেবক?
- জ্বি।
- যিশুকে কি শুলে চড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল?
- জ্বি।
- যিশু কি প্রেরিত পুরুষ?
-জ্বি।
- তাকে কে পাঠিয়েছিলেন?
-ঈশ্বর!
- ঈশ্বর কে?
- যিশু!
- আচ্ছা, যিশু কি পৃথিবীতে থাকতে উপাসনা করতেন?
- জ্বি।
- কার উপাসনা করতেন?
- ঈশ্বরের!
- ঈশ্বর কে?
- যিশু!
- ঈশ্বরের কি ‘সূচনা’ আছে?
- নাহ!
- তাহলে ২৫ ডিসেম্বরে কে জন্মগ্রহণ করেছেন?
- যিশু।
- যিশু কে?
- ঈশ্বর!
- ঈশ্বর কোথায় আছেন?
- স্বর্গে!
- স্বর্গে কতজন ‘উপাস্য’ আছেন?
- এক ও অদ্বিতীয় একজন উপাস্য আছেন।
- যিশু এখন কোথায়? (fb- newmuslimsbd)
- ঈশ্বরের ডানপাশে বসে আছেন!
- তাহলে জান্নাতে কয়জন উপাস্য আছেন?
- একমাত্র একজনই আছেন!
- তাহলে কয়জন উপাস্য স্বর্গে উপবিষ্ট আছেন?
- একজন!
- যিশু কোথায় আছেন?
-ঈশ্বরের পাশে বসে আছেন!
- যিশু কে?
- ঈশ্বর!
- যিশু কোথায় আছেন?
- ঈশ্বরের পাশে বসে আছেন!
- তাহলে যিশু কে?
- ঈশ্বর!
ওয়েট! ওয়েট!! আবার নতুন করে শুরু করতে হবে....🧐
Focused

23 Dec, 23:06

305

Focused #157

স্বামী-স্ত্রর'র সত্যিকারের
গুন তো এগুলোই!
=================
স্ত্রী যেমন হবেঃ
==========
১) দ্বীনদার নারী।
২) পর্দাশীল।
৩) স্বামীর বাধ্য।
৪) স্বামীর হক আদায়কারীনি।
৫) নরম মেজাজওয়ালী।
৬) স্বামীর সাথে মিষ্টিভাষী।
৭) কুরআন তেলাওয়াতকারীনি।
৮) সুন্নতের অনুসরণকারীনি।
৯) আমানতদারী।
১০) স্বামীর গোপনীয়তা রক্ষাকারীনি।
১১) বিপদে ধৈর্য্য ধারণকারীনি।
১২) দুঃখে-কষ্টে স্বামীর সঙ্গী।
১৩) স্বামীর সেবাকারীনি।

স্বামী যেমন হবেঃ
============
১) দ্বীনদার পুরুষ।
২) নামাজী।
৩) সত্যবাদী।
৪) আমানতদার।
৫) স্ত্রীর হক আদায়কারী।
৬) স্ত্রীর সাথে পরামর্শকারী।
৭) স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণকারী।
৮) হালাল ইনকামকারী।
৯) আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী।
১০) ক্ষমাশীল।
১১) বিপদে ধৈর্য্যশীল।
১২) স্ত্রীর সাথে নরম আচরণকারী।
১৩) স্ত্রীর উত্তম অভিভাবক।
১৪) দ্বীনের জরুরি বিষয়ে জ্ঞানী।
Focused

18 Dec, 01:28

329

Focused #156

"মুআব্বাজাতাইন"
=============
"মুআব্বাজাতাইন" শব্দটি সাধারণত ইসলামী শিক্ষা এবং পরিভাষায় ব্যবহৃত হয়। এটি আরবি শব্দ مُعَوِّذَتَيْن (Mu'awwidhatayn) থেকে এসেছে। এই পরিভাষাটি সূরা আল-ফালাক এবং সূরা আন-নাস এর জন্য ব্যবহৃত হয়।

অর্থ ও ব্যাখ্যাঃ

"মুআব্বাজাতাইন" অর্থ:
দুইটি আশ্রয় প্রার্থনার সূরা।

এই দুই সূরা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূরা, যেগুলোতে মানুষ আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায় শয়তান, জাদু, কুদৃষ্টি এবং অন্যান্য অনিষ্ট থেকে।

---

সূরা আল-ফালাক (সূরা ১১৩):

এই সূরায় আল্লাহর কাছে ভোরের প্রভুর আশ্রয় চাওয়া হয় চারটি বিপদ থেকে:

১. রাত্রির অন্ধকার,

২. জাদুকরদের গাঁথা,

৩. হিংসুকের হিংসা,

৪. সৃষ্টির অনিষ্ট।

---

সূরা আন-নাস (সূরা ১১৪):

এই সূরায় তিন গুণবাচক নাম (প্রভু, বাদশাহ, ইলাহ) উল্লেখ করে মানুষের আশ্রয় চাওয়া হয়:

১. শয়তানের কুমন্ত্রণা,

২. মানুষের অন্তরে প্রবেশকারী অনিষ্ট,

৩. মানুষ ও জিনদের মধ্যে শয়তানের অনিষ্ট।


---

গুরুত্বঃ

রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায়, শোবার সময় এবং অসুস্থতার সময় এই দুই সূরা তিলাওয়াত করতেন।

হাদিসে এসেছে, এই দুই সূরা "সবচেয়ে উপকারী দোয়া" বলে বর্ণিত হয়েছে (জামে আত তিরমিজি ২৯০২ )।
__
সংক্ষেপে: মুআব্বাজাতাইন হল সূরা আল-ফালাক ও সূরা আন-নাস, যা মুসলিমদের দৈনন্দিন জীবনে রক্ষা এবং আশ্রয় লাভের দোআ হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

মহান আল্লাহ আমাদেরকে প্রতিদিন এই দুই সূরা পাঠ করে তাঁর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন।
আমিন।
Focused

13 Dec, 13:49

338

Focused #155

ইসলামে দাবা খেলা নিষিদ্ধ কেন?
=======================
অনেকের কাছে আকর্ষণীয় হলেও ইসলামে দাবা খেলা হারাম। আর এই খেলা হারাম হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করা হয়েছে বিভিন্ন ইসলামী ফিকহগ্রন্থ ও আলেমদের ব্যাখ্যায়। যদিও কুরআনে সরাসরি দাবা খেলা সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি, তবে বিভিন্ন হাদিস এবং ফিকহের ব্যাখ্যা অনুসারে দাবা হারাম হওয়ার প্রধান কারণগুলো হলো:

---

১. সময়ের অপচয়ঃ
দাবা খেলায় দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয় যা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত বা অন্যান্য কাজ থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে দিতে পারে। কুরআনে তাদেরকে ব্যর্থ বলা হয়েছে যারা অনর্থক কাজে লিপ্ত থাকে। আর তাদেরকেই সফল বলা হয়েছে যারা অর্থহীন বিষয়াদি থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করার চেষ্টা করে।

কুরআনে আল্লাহ বলেন:
"আর যারা অর্থহীন বিষয়াদি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।"
(সূরা আল-মু'মিনুন: ৩)


---

২. জুয়া খেলার সাথে সম্পর্কেঃ
অনেক সময় দাবা খেলাকে অর্থের বিনিময়ে বা বাজি ধরে খেলা হয়, যা স্পষ্টতই জুয়া হিসেবে গণ্য।

আল্লাহ বলেন:
"হে ঈমানদারগণ! মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারণকারী তীর — এগুলো শয়তানের অপবিত্র কাজ। সুতরাং তোমরা এগুলো পরিহার করো।"
(সূরা আল-মায়িদা: ৯০)


---

৩. ইবাদত থেকে মনোযোগ সরানোঃ
দাবা খেলায় অনেক সময় মগ্ন হয়ে মানুষ নামাজের সময় পেরিয়ে ফেলতে পারে অথবা একাগ্রতা হারিয়ে ফেলে।

নবী (সা.) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি কোনো বস্তুর সাথে অধিক পরিমাণে সম্পর্ক রাখে, সে তার বন্দী হয়ে যায়।" (ইবনে মাজাহ: ৪১৩৬)



---

৪. মূর্তি বা চিত্রের ব্যবহারঃ
দাবার গুটিগুলোতে অনেক সময় মানুষ বা পশু-পাখির আকৃতি ব্যবহৃত হয়, যা ইসলামে চিত্র বা মূর্তি তৈরির নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারে।


---

৫. আসক্তি সৃষ্টি করাঃ
দাবা খেলা অনেকের মাঝে এমনভাবে আসক্তি তৈরি করে যে তারা জীবনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বা ইবাদত থেকে বিমুখ হয়ে পড়ে।

দাবা খেলা নিসন্দেহে একটি হারাম কাজ। এতে করে জুয়ার প্রশস্ত পথ খুলে যায় এবং প্রচুর মূল্যবান সময় বিনষ্ট হয়।

আবূ মূসা আশ্‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدِ ؛ فَقَدْ عَصَى اللهَ وَرَسُوْلَهُ.
‘‘যে ব্যক্তি দাবা খেললো সে আল্লাহ্ তা‘আলা ও তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবাধ্য হলো’’। (আবূ দাউদ ৪৯৩৮; ইব্নু মাজাহ্ ৩৮৩০)

বুরাইদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

مَنْ لَعِبَ بِالنَّرْدَشِيْرِ فَكَأَنَّمَا صَبَغَ، وَفِيْ رِوَايَةٍ: غَمَسَ يَدَهُ فِيْ لَـحْمِ خِنْزِيْرٍ وَدَمِهِ.
‘‘যে ব্যক্তি দাবা খেললো সে যেন তার হাত খানা শুকরের গোস্ত ও রক্তে রঞ্জিত করলো অথবা তাতে ডুবিয়ে দিলো’’। (মুসলিম ২৬৬০; আবূ দাউদ ৪৯৩৯; ইব্নু মাজাহ্ ৩৮৩১)



---

সারমর্ম:
দাবা খেলা সরাসরি হারাম বলে কুরআনে উল্লেখ নেই, তবে উপরোক্ত কারণগুলো (সময়ের অপচয়, জুয়া, ইবাদতে বাধা) এর হারাম হওয়ার ভিত্তি তৈরি করে। একজন মুসলিমের উচিত এসব বিষয় থেকে দূরে থাকা, বিশেষ করে যদি তা ধর্মীয় ও পার্থিব দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

রেফারেন্স:

সূরা আল-মায়িদা (৫:৯০)

সূরা আল-মু'মিনুন (২৩:৩)

ইবনে মাজাহ (৪১৩৬)
Focused

26 Nov, 01:18

185

Focused #154

সালাম প্রেরণ করুন রাসূল (সাঃ) এর তরে
=============================
নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর দরূদ পাঠের অসাধারন সব ফযিলত রয়েছে। শেষ নবীর উম্মত হওয়ার কারণে আমরা সেই ফজিলত গুলো কেন লুফে নেব না? প্রিয়নবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে জানিয়েছেন অনেক বার্তা যা এই উম্মতদেরকে আরো মর্যাদায় উন্নীত করেছে। চলুন জেনে নেয় নবী (সাঃ) এর উপর সালাম প্রেরণ সম্পর্কে কিছু হাদিস।

>> নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করবে, তার বিনিময়ে আল্লাহ্ তার উপর দশবার দরুদ পাঠ করবেন।” [১] 

>> নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “তোমরা আমার কবরকে ঈদ তথা সম্মিলনস্থলে পরিণত করবে না, আর তোমরা আমার উপর দরূদ পাঠ কর;কেননা তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌঁছে যায়, তোমরা যেখানেই থাক না কেন।” [২] 

>> নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “যার সামনে আমার নাম উল্লেখ করা হলো অতঃপর সে আমার উপর দরূদ পড়লো না, সে-ই কৃপণ।” [৩] 

>> রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “পৃথিবীতে আল্লাহর একদল ভ্রাম্যমাণ ফেরেশতা রয়েছে যারা উম্মতের পক্ষ থেকে প্রেরিত সালাম আমার কাছে পৌঁছিয়ে দেয়।” [৪] 

>> রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “যখন কোনো ব্যক্তি আমাকে সালাম দেয়, তখন আল্লাহ আমার রূহ ফিরিয়ে দেন, যাতে আমি সালামের জবাব দিতে পারি।” [৫]

মহান আল্লাহ তাআ'লা আমাদেরকে বেশি বেশি সালাম তথা দরুদপাঠের তাওফিক দান করেন সেই দোআ করতে আমরা যেন ভুলে না যায়।

__
[১] হাদীসটি সংকলন করেছেন, মুসলিম ১/২৮৮, নং ৩৮[৪] 
[২] আবূ দাউদ ২/২১৮, নং ২০৪৪; আহমাদ ২/৩৬৭, নং ৮৮০[৪] আর শাইখ আলবানী একে সহীহ আবি দাঊদে ২/৩৮৩, সহীহ বলেছেন। 
[৩] তিরমিযী, ৫/৫৫১, নং ৩৫৪৬, ইত্যাদি। আরও দেখুন, সহীহুল জামে‘ ৩/২৫; সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৭৭। 
[৪] নাসাঈ, ৩/৪৩, নং ১২৮২; হাকেম, ২/৪২[১] আর শাইখ আলবানী একে সহীহুন নাসাঈ ১/২৭৪, সহীহ বলেছেন। 
[৫] আবূ দাউদ, নং ২০৪[১] আর শাইখ আলবানী সহীহ আবি দাউদে ১/৩৮৩, একে হাসান হাদীস বলেছেন।
Focused

19 Nov, 14:00

263

Focused #153

এক প্যাকেজেই সব!
===============
আজ একটা আকর্ষণীয় প্যাকেজ নিয়ে কথা বলতে চাই যে প্যাকেজে আপনি যদি নিজের জীবনকে ইনস্টল করতে পারেন তাহলে পেয়ে যাবেন আনলিমিটেড স্বস্তি ও প্রশান্তি ইনশাআল্লাহ।
গল্প দিয়ে শুরু করা যাক!
আল্লাহর নবী নূহ আলাইহিসসালাম সম্পর্কে আমরা জানি যে উনি মহান আল্লাহর রহমতে দীর্ঘ সময় দাওয়াতি কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন। অনেক চেষ্টা, পরিশ্রম আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনার মাধ্যমে তিনি তাঁর কওমকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুতেই তাঁর কওম ঈমান আনয়ন করছিল না।

নিজের কওমকে একটা শেষ সুযোগ দিলেন নবী নূহ আলাইহিসসালাম। কারণ সুদীর্ঘ ৯৫০ বছর দিন রাত দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু এই জাতি দ্বীন গ্রহণ ত করেই নি উপরন্তু নাফরমানী করেছে একের পর এক।

নূহ আলাইহিসসালাম নবী হওয়ার কারণে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে আজাব আসন্ন। তিনি তাঁর কওমকে বললেন তোমরা ইস্তেগফার করো। গণ ইস্তেগফার করো।
ইস্তেগফার করলে ক্ষমা তো পাবেই, সাথে সাথে আরও কিছু লাভ হবে৷ কারণ ইস্তেগফারের প্যাকেজটা বরাবরই রিচ। একটা চাইলে সাথে আরও কয়েকটা দিয়ে দেওয়া হয়৷
আল্লাহর নবী নূহ আলাইহিসসালাম বললেন -

فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا * يُرْسِلِ السَّمَاء عَلَيْكُم مِّدْرَارًا * وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَارًا

"তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও-তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর আকাশ থেকে অবিরাম করুণাধারা বর্ষণ করবেন, ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততি দিয়ে তোমাদের সাহায্য করবেন, তোমাদের জন্য রকমারি বাগানের ব্যবস্থা করে দেবেন, আর তোমাদের দেবেন অনেক ঝরনাধারা।"

শুধুমাত্র ক্ষমা চাইলেই এতকিছু দিয়ে দেওয়া হবে? অবাক হওয়ারই মতো ব্যাপার। ক্ষমা চাওয়ার এই প্যকেজে আরো কি কি আছে দেখুন -

এক।। ক্ষমার সুসংবাদ (অর্থাৎ ক্ষমা পেলে আপনি জান্নাতি আর জানেনই তো জান্নাতে আপনার মন যা করতে চাইবে তাই করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ)
দুই।। আকাশ থেকে রহমত বর্ষণ
তিন।। ধন সম্পদ বৃদ্ধি
চার।। উত্তম সন্তান সন্ততি লাভ করা
পাচ।। রকমারি বাগান ও শষ্য ক্ষেত অর্জন করা
ছয়।। প্রচুর নদী নালা ও ঝর্ণাধারা যা মনোমুগ্ধকর ও প্রয়োজনীয়
এ ছাড়াও আছে অগণিত নেয়ামত প্রাপ্তির সুযোগ।

মানুষের জীবন ধারণের জন্য যা যা প্রয়োজন সবই আছে এই ইস্তেগফারের প্যাকেজে! অবাক হতে হয়।

বেকারত্ব, দারিদ্রতা, ফসলহীনতা দুরিকরণ এবং সম্পদ লাভের জন্য ইস্তেগফারের চেয়ে ভালো প্যাকেজ জানা নাই।

একবার মদীনায় অনাবৃষ্টি হলে উমর রা, সালাতুল ইস্তেস্কার আদায় করে মিম্বরে উঠে ইস্তেগফারের আয়াত তথা ক্ষমার আয়াত পড়ে নেমে যান। তারপর বললেন -
'আকাশ থেকে বৃষ্টি নামার যতগুলো দরোজা সকল দরোজা দিয়ে বৃষ্টি নামার জন্য দোয়া করে দিলাম।'

ইস্তেগফার (استغفار) অর্থ হলো আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং ইসলামের অত্যন্ত প্রশংসিত একটি আমল। ইস্তেগফারের মাধ্যমে একজন মুমিন তার পাপ থেকে মুক্তি পেতে পারে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত লাভ করতে পারে। ইস্তেগফারের ফজিলত কুরআন ও হাদিসে বিভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট উল্লেখ করা হলো:

১. গুনাহ থেকে মুক্তি:
ইস্তেগফার গুনাহ মাফের অন্যতম মাধ্যম। আল্লাহ বলেন:
“আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, তারপর তাঁর প্রতি ফিরে এসো। নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন।” (সূরা হুদ: ৩)।

২. রিজিক বৃদ্ধি:
ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ তায়ালা রিজিক বৃদ্ধি করেন। হাদিসে এসেছে:
“যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করে, আল্লাহ তাকে প্রতিটি সংকট থেকে মুক্তি দেন, দুঃখ দূর করেন এবং অপ্রত্যাশিত উৎস থেকে রিজিক দেন।” (তিরমিজি: ৩৫৭০)।

৩. শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ:
ইস্তেগফার মানুষের হৃদয়কে প্রশান্ত করে এবং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। কুরআনে আল্লাহ বলেছেন:
“আর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও এবং তাঁর দিকে ফিরে আসো। নিশ্চয়ই তিনি অল্প সময়ের জন্য তোমাদেরকে সুন্দর জীবন-যাপন করাবেন।” (সূরা হুদ: ৩)।

৪. জান্নাতে প্রবেশের উপায়:
ইস্তেগফার জান্নাতে প্রবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসে রাসূল (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি ইস্তেগফার করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন, যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায়।” (আবু দাউদ: ১৫১৭)

৫. বিপদ থেকে মুক্তি:
ইস্তেগফার মানুষকে বিভিন্ন বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করে। আল্লাহ বলেন:
“আর আল্লাহ তাদের শাস্তি দেবেন না, যখন তারা ইস্তেগফার করবে।” (সূরা আনফাল: ৩৩)।
নিয়মিত ইস্তেগফার করা মুমিনের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভের অন্যতম উপায়। প্রতিদিন ইস্তেগফার করার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত, যেন আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে আমাদের পাপমুক্ত জীবন গঠন করতে পারি।
Focused

19 Nov, 14:00

292

চলতে, ফিরতে, উঠতে, বসতে সদা সর্বদা আমাদেরকে ইস্তেগফারকে আপন করে নেওয়া দরকার। আর জানেনই তো যে ব্যক্তি তসবিহ হোক কিংবা ইস্তেগফার, মুখে ঠোঁট নাড়িয়ে পড়তেই থাকে এমতাবস্থায় আল্লাহ তার সাথেই থাকেন।
সুবহানাল্লাহ।

ইস্তেগফারের সংক্ষিপ্ত দোয়া:
“আস্তাগফিরুল্লাহ” (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি)।

এতকিছুর পরও বসে থাকবেন নাকি ইস্তেগফার ও ক্ষমা চাওয়ায় মনোনিবেশ করবেন সেই সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই অসাধারণ বিষয় ক্ষমা চাওয়ার তৌফিক দান করুন।
আমিন।

(সংগৃহীত ও ঈষৎ পরিমার্জিত)
Focused

17 Nov, 06:24

255

Focused #152

এঁদের জন্যেও প্রস্তুত জান্নাতের ঘর!
========================
জান্নাতের ঘর বিশেষভাবে তাদের জন্য প্রস্তুত, যারা এই দুনিয়ায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট গুণাবলী ধারণ করে। হাদিস ও কুরআনের আলোকে নিম্নে উল্লেখ করা হলো জান্নাতের ঘরের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদের কিছু গুণ:

১. নম্র ও বিনয়ী লোক
নবী করিম (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে জান্নাতে একটি ঘর দান করবেন।" (তিরমিজি)

২. সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যক্তি
যারা সবসময় সত্য কথা বলে এবং আমানতদার, তাদের জন্য জান্নাতে ঘর প্রস্তুত রয়েছে। (কুরআন ৩৩:৭০-৭১)

৩. তাহাজ্জুদ পড়া ব্যক্তি
যারা রাতে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকে, তাহাদের জন্য জান্নাতে উচ্চ মর্যাদার ঘর প্রস্তুত। (মুসলিম শরিফ)

৪. মহানুভব ও দানশীল ব্যক্তি
নবী (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি একজন ইয়াতিমকে প্রতিপালন করে, সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।" (বুখারি)

৫. নবী (সা.)-এর সুন্নাহ পালনকারী
যারা নবীর সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরে চলে এবং নামাজে মনোযোগ দেয়, তারা জান্নাতে সম্মানের ঘর লাভ করবে। (তিরমিজি)

৬. কষ্ট সহ্যকারী এবং ধৈর্যশীল ব্যক্তি
আল্লাহ বলেন, "ধৈর্যশীলদের জন্য তাদের প্রতিদান সীমাহীনভাবে দেওয়া হবে।" (সূরা যুমার ৩৯:১০)

৭. পরোপকারী ও অন্যের উপকারকারী
যারা দুনিয়ার জীবনে অন্যদের কল্যাণে কাজ করে এবং অন্যের প্রয়োজন মেটায়, তাদের জন্য জান্নাতে বিশেষ মর্যাদার ঘর রয়েছে।

জান্নাতের ঘর পাওয়ার জন্য আমাদের উচিত আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এই গুণগুলো নিজেদের জীবনে প্রতিষ্ঠা করা।
Focused

11 Nov, 14:33

366

Focused #151

Man will be Man!
================
Dear Sisters : Let your men be "men"

পোস্টটা ইংরেজী একটা বাক্য দিয়ে শুরু করতে হলো, এর সঠিক উপযোগী বাংলা এ মুহুর্তে মনে আসছে না। বোনদের ব্যাপার নিয়ে কোন কিছু লিখলে সবাই প্রথমে ধরে নেয় নিশ্চয়ই এই প্রসঙ্গ লেখকের পরিবারের এক্সপিরিয়েন্স থেকেই লেখা হয়েছে। হতে পারে, কিন্তু নট নেসেসারিলি।
.

উম্মুল মু'মিনিন সায়্যিদা আইশা  রাদিয়াল্লাহু আনহার একটা হাদিস আমরা সবাই জানি। সেখানে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাসায় থাকাকালীন কী করতেন ? উত্তর ছিল "বাসার কাজে সাহায্য করতেন"। খেয়াল করুন বাসার কাজে *সাহায্য* করতেন। যারা সীরাত একটু ভালমতো পড়েছেন তাদের জানার কথা উম্মাহাতুল মু'মিনিনদের কামরা কতটুকু ছিল। আইশা রাদিয়াল্লাহু আনহা ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় রাসুলুল্লাহ নামাজ পড়লে সিজদা দেবার সময় পায়ে স্পর্শ লেগে যেত, তখন মা আইশা পা সরিয়ে নিতেন। বা বিয়ের সময় আসবাবপত্র হিসেবে কী পেয়েছিলেন। এমন কোন সীরাতের ঘটনা বা হাদিস মনে পড়ে না যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রান্না করেছেন। মদীনার পুরা জীবনটাই তো ছিল গাযওয়া আর সারিয়্যা নিয়ে ব্যস্ত। এর মধ্যে যতটুকু সময় পাওয়া গিয়েছে, পরিবারের প্রতি উত্তম ইনসাফ করে আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত দাঁড় করেছেন। আর বাসায় সাহায্য করার মধ্যে ছিল কাপড়ে তালি দেয়া, জুতা মেরামত করা ইত্যাদি। মাসের পর মাস চুলায় আগুন জ্বলেনি, সাহাবীদের হাদিয়া খেজুর খেয়ে দিন পার হয়েছে। হাদিসে আছেঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাইরে থেকে এসে বলতেন "আইশা, ঘরে খাবার কিছু আছে ?" মা আইশা উত্তর দিতেন "না, ইয়া রাসুলাল্লাহ"। রাসুলুল্লাহ "তাহলে রোজা রেখে দিলাম" বলতেন বলে ঘটনা আছে। আর উম্মাহাতুল মু'মিনিন আল্লাহর রাসুল থেকে আশাও করেননি তাদের জন্য রান্না করবেন। অনুরুপভাবে অন্যান্য সাহাবীর ক্ষেত্রেও খেয়াল পড়ে না। 

.

কিন্তু বাসায় সাহায্য করার হাদিসটাকে যে যার মতো ইন্টারপ্রেট করে যাচ্ছে। স্ত্রীর অসুস্থতায় কারো হাজবেন্ড রান্না করে কদিন খাইয়েছে - গুড, বারাকাল্লাহু ফিহ, কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় বাসায় রান্না করা কাজটা ইটসেলফ পুরুষদের থেকে আশা করা ঠিক নয়। পুরুষরা করবে কঠিন সব কাজগুলো, বাচ্চাদেরও ট্রেইনিংও দিবে কঠিন কাজের। কঠিন বলতে পেশীশক্তিওয়ালা এবং রিস্কি কাজগুলো বুঝাতে চাচ্ছি। যদি এর বাইরেও ফ্রি থাকে তাহলে পরিবারের সময় দিয়ে রিজিক বৃদ্ধির চেষ্টায় ব্যস্ত থাকা উচিত। পুরুষদের দিয়ে "আনম্যানলি" কাজ করিয়ে সেটা নিয়ে গর্ব করার কিছু নেই। এখানে ফেমিনিজম টেনে আনতে চাই না। যেটা পয়েন্ট আউট করতে চাই, তা হচ্ছে "আধুনিক পুরুষরা দূর্বল থেকে দূর্বলতর হচ্ছে", পুরুষালি সব দায়িত্ব নিচ্ছে না। মেয়েরা পুরুষের দায়িত্ব নিচ্ছে, একটা সময় পর মিজারেবলি ফেইল করছে। নিউজে দেখলাম কোলকাতার সল্ট লেকের এক লোক কীভাবে তার স্ত্রী তাকে মারধর করে সেটার ভিডিও করে ভাইরাল করেছে, কী লজ্জার কথা! স্ত্রী কাজ করছে আর স্বামী রান্না করে খাইয়েছে সেই গল্পে প্রচুর পুরুষ লাইক / লাভ রিয়্যাক্টও দিচ্ছে। এর মানে হচ্ছে পুরুষরা ভুলতে বসেছে পুরুষসুলভ কাজ কী কী। পৌরুষের বদলে কিউটনেস দেখে মানুষ বেশি আনন্দ পায় এখন।
.

আরবের সে সমাজে পুরুষরা যে পুরুষসুলভ কাজ করতো, শুধু তাই না, মহিলাদেরও এক্সপেকটেশন ছিল পুরুষরা পুরুষের মত আচরণ করবে। হিন্দ বিনতে উতবা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) কে বিয়ের জন্য অপশন দেয়া হয়েছিল সুহাইল ইবন আমর আর আবু সুফিয়ান (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) এর মধ্যে বেছে নিতে। হিন্দের কাছে আবু সুফিয়ানকে পৌরুষময় আর বুদ্ধিমান মনে হয়েছিল, তাই আবু সুফিয়ানকে বেছে নিয়েছিলেন। ইয়ারমুকের যুদ্ধে মহিলাদের ডিপ্লয় করা হয়েছিল যাতে পুরুষরা পিছু হটলে তাদের পাথর মেরে যুদ্ধে আবার ফেরত পাঠিয়ে দেয়। বংশমর্যাদার পর বীরত্ব ছিল মোটামুটি নাম্বার ওয়ান প্যারামিটার।
.

থট প্রসেস শিফটের জন্য আমি পুরা দোষ বোনদের দিতে রাজী নই, তারা আমাদের অর্থাৎ পুরুষদের বর্তমান আচরণের জন্যই এমন সব চিন্তা করছেন যা আসলে আদর্শ পূরুষের ক্ষেত্রে সমীচীন না। এটা বুঝলে অনেকেই হয়তো উল্টোটাই প্রেফার করতেন। হাজবেন্ড মাঝে মাঝে রান্না করে খাওয়ালে সেটাকে ইহসান ধরে আল্লাহর কাছে দুয়া করতেন যাতে এরকম বেশিদিন না হয়, এটাকে প্রাইড হিসেবে পাবলিকের কাছে ছড়িয়ে আত্মতুষ্টিতে ভুগতেন না। যা হোক, আজকাল অ্যাডভাইস অনেক সস্তা এবং সবাই অ্যাডভাইস দেবার কারণে কেউ নিতেও চায় না, তবুও একটা প্রসঙ্গ আসলে সেই প্রসঙ্গে নসীহাহ দিয়ে শেষ করা উচিত। নসীহাহ থাকবে সীরাত আরো একটু ভালমতো অধ্যয়ন করুন, কোনটা রাসুলের সুন্নাহ সেটার সঠিক ব্যাখ্যা শিখুন, আর আপনার স্বামী-ছেলেদের পুরুষ হতে দিন, পুরুষ।

— মুফতি মাহবুবুর রহমান (হাফি.)
Focused

07 Nov, 06:11

413

Focused #150

কৃতজ্ঞ প্রকাশের বাক্যই তো "আলহামদুলিল্লাহ"
==============================
সেদিন বুয়া এসে ঘর পরিষ্কার করার সময় বিছানায় কাঁথা দেখে খুব অবাক হয়ে বললো, "আপা, এই গরমে আপনে কাঁথা গায়েত দেন!!"

তারপর নিজেই আবার স্বগতোক্তি করলো, " আপনারার তো এসি আছে, এর লাইগ্যা শীত করে। আমরার বাড়িত টিনের চাল, এমুন গরম পরে.."

তার চেহারায় প্রচণ্ড গরমের বিদ্ধস্ততা প্রকট ভাবে বিদ্যমান।

হঠাৎ করে কেন যেন আমার অসম্ভব লজ্জা বোধ হল, বুয়ার দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারলাম না। প্রয়োজন হলে এসি ছাড়তে পারি, গরমের রাতেও শীতের আমেজ পাই, আল্লাহ এর কত বড় রহমত এটা!!

কোন দিন আই পি এস ফেইল করলে, গরমে যেরকম ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা করে আস্ফালন করি, শীতাতপের শীতল হাওয়াতে কি সেই পরিমান কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি!?

নাকি এই বিলাসীতাকে 'অবশ্য পাওনা" হিসেবে ভেবে নিয়েছি?

এখনো মনে পড়ে, যেদিন ঘরে প্রথম আই পি এস লাগানো হয়েছিল, প্রথম বার কারেন্ট যাবার পরেও আমাদের ঘর আলোকিত রয়ে গিয়েছিল। প্রতিবেশীদের অন্ধকার ঘরের মাঝে, নিজ ঘরের আলোয় আম্মু খুব সংকোচ বোধ করছিলেন। এই নতুন পাওয়া সুবিধায় আনন্দিত হবার বদলে বহুদিন দেখেছি মায়ের লজ্জিত, সংকুচিত মুখাবয়ব।

আশে পাশের সবাইকে ফেলে একা একা আরাম করার সেই লজ্জা থেকে স্বাভাবিক হতে অনেক দিন লেগেছিল।

আমরা প্রতিনিয়ত কত অজস্র নিয়ামতে যে ডুবে থাকি, তার সঠিক হিসাব নিজেরাও দিতে পারবো না। কি পেলাম না সেই ফিরিস্তি যত সহজে দিতে পারি, কত কিছু না চাইতেই পেয়ে গিয়েছি তা নিয়ে কিন্তু তত সহজে ভাবতে চাই না।

আর নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাও হয় না। যেমন কল খুললে পানি আসে। এই আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ বিষয়টি কি বিশাল আশির্বাদ তা কি জানেন? পৃথিবীর অনেক দেশে পানি যেন সোনার মত মূল্যবান।

বেশ ক'বছর আগে একবার উটের পিঠে চেপে থর মরুভূমিতে যাচ্ছিলাম, আমার উটের মালিক ছিল তের/ চোদ্দ বছরের এক বালক। তার রোদে পোড়া তামাটে চেহারা আজও ভুলি নি।

শুষ্ক রুক্ষ মরুভূমিতে তাদের বসবাস। তাদের মত মরুভূমির আরো অনেক গ্রামের বাসিন্দারাই, প্রতিদিনের ব্যবহার্য পানি নিয়ে আসে কয়েক মাইল দূরের নদী থেকে। সকাল হলেই গ্রামের মেয়েরা মাথার উপর অদ্ভুত উপায়ে একাধিক কলসি নিয়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে পানি আনতে যায়।

সেদিনের পর থেকে অনেক দিন কলের পানি খুললে আমি কিছুক্ষণের জন্যে হলেও মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। এই সহজলভ্য পানি যে এত মূল্যবান তা এর আগে অনুভব করি নি।

শুধু কলের পানি নয়, ফ্রিজ খুললে খাবার পাওয়া যে একটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয় তা আপনি কখনোই বুঝবেন না, যদি না কখনো খাবারের কষ্ট করে থাকেন। অথবা খাবারের কষ্টে মানুষ কত ত্যাগ, তিতিক্ষা করতে পারে তা না দেখে থাকেন।

বেশিদূর যেতে হবে না, এরকম মানুষ আশে পাশেই পাবেন। আমার শশুরবাড়িতে নতুন বুয়া রেখেছে কিছুদিন হল। মহিলাটির বার/তের বছরের একটি ছেলে আছে, স্বামী মারা গেছেন। বাচ্চাকে খাওয়াতে পারছেন না দেখে, বুকের ধনকে রেখে এসে অন্যের বাড়িতে কাজ করছেন।

মা তাকে ফেলে চলে এসেছে, এই অভিমানে বাচ্চাটি দিনের পর দিন মায়ের সাথে কথা বলছে না। এই মায়ের সামনে দিয়ে যখন আমি বাচ্চা কোলে নিয়ে বলতে থাকি, "আমার বাচ্চা খায় না", সারাদিন পারলে ইউটিউব ঘেঁটে, রান্না ঘরে গিয়ে বাবুর জন্য এটা সেটা রান্না করি, তখন নিজের আদিখ্যেতায় নিজেই বিরক্ত হই।

এক জন তার কলিজার টুকরার মুখে দুটো ভাত তুলে দেবার জন্য, ঘর বাড়ি ছেড়ে আমাদের ঘর সাজাতে এসেছে... যে খাবার আমার ছেলে হয়তো একবার মুখে তুলে, দ্বিতীয়বার মুখ বাঁকিয়ে ফেলে দেবে, সেই অর্থহীন খাদ্য রান্নার জন্য পেঁয়াজ কুটছে, পুরো ব্যাপারটিই কেমন যেনো হৃদয় বিদারক লাগে।

হায়রে, সন্তানের জন্য খাবার কেনার সামর্থ্যও যে কত বড় প্রাপ্তি, তা কি আমরা জানি?

মাথার ওপর ছাদ, ভালবাসার মানুষের সান্নিধ্য, এমনকি নিজের সংসারের জন্য খাটতে খাটতে হাঁপিয়ে ওঠার জন্যেও আলহামদুলিল্লাহ বলা উচিত।

নিজের সংসারের জন্যই তো পরিশ্রম করতে হচ্ছে। পরের বাড়িতে যেয়ে তো কাজ করতে হচ্ছে না। তাছাড়া কত মেয়ে একটা সংসার, সন্তান পাবার জন্য দিনের পর দিন দুয়া করে যাচ্ছে, তার খবর কি আমরা রাখি!

আমাদের অনেকে এই বুড়ো বয়সেও মা বাবার আদর পাচ্ছি। মাঝে মাঝে তাদের কাছে গিয়ে বিশ্রাম নিতে পারছি। কতজনের তো তাও নেই। কিংবা থাকলেও, তাদের কাছে যাওয়া সম্ভব নয়।

আসলে না পাওয়ার হিসেব করতে গেলে, তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকবে। তার চেয়ে কি কি পেয়েছি, তার হিসেব করলে কেমন হয়? সারাজীবিনেও হিসেব শেষ করতে পারবেন না।

সচেতন বা অবচেতন ভাবে কত নিয়ামতে আমরা আকন্ঠ ডুবে আছি তা আমরা নিজেরাও জানি না।

জীবন নিয়ে কৃতজ্ঞ হলে, লাভ বই ক্ষতি নেই।

দুনিয়ার পেছনে, নিরন্তর চাহিদার পেছনে ছুটতে ছুটতে, জীবনে যা আছে তা উপভোগ করার আগেই ওপারে পাড়ি জমায় অনেকে।

তাই মাঝে মাঝে গন্তব্যহীন ইঁদুর দৌড় থেকে একটু থমকে দাঁড়ালে কেমন হয়?

নাহলে জানবো কি করে, আমার রব আমাকে কত কিছু দিয়েছেন?

আমরা উনার কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করব?

#collected