আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ @dawahsalafiyyahbd Channel on Telegram

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

@dawahsalafiyyahbd


আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ (Bengali)

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ হ'ল একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল যেখানে আপনি ইসলামের সঠিক মার্গের উপর ভিত্তি করে জীবনের মূল্যবান পরামর্শ এবং শেয়ারিং পাবেন। এই চ্যানেলে ইসলামিক জ্ঞান, পড়াশুনা, ধর্মীয় প্রশ্নের উত্তর, এবং আরো অনেক কিছু পাবেন। nআপনি যদি ইসলামের সঠিক ধারার উপর আপনার জীবন নির্ভর করতে চান, তাহলে এই চ্যানেলটি একটি অবিচ্ছিন্ন জোরদার সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। চ্যানেলে অনেক উপকারী তথ্য এবং একাধিক ইসলামিক রম্যান শেয়ার করা হয়, যা আপনার ধর্মগত জীবনে ভাল পরিবর্তন এনে দিতে পারে। nতাই, এই চ্যানেলটি এখনই যোগদান করুন এবং ইসলামিক জানাবেন৷

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

14 Nov, 17:07


🚦তালেবে ইলমদের জন্য মুরাজা’আ তথা রিভিশনের গুরুত্ব

“ক্লাসের পর মুরাজা’আ তথা রিভিশন না দিলে সেই পড়ার উপকারিতা নাই অথবা উপকারিতা নিতান্তই কম।
হে প্রিয় ভাইয়েরা! আমরা দারসে উপস্থিত হলাম, খাতায় কিছু নোট করলাম, কিন্তু বাড়ি গিয়ে সেটা আর রিভাইজ দিলাম না!

মুরাজা’আ তথা রিভিশনকে ইলমের সঞ্জীবনী সুধা বলা চলে। সত্যিই, মুরাজা’আ না করলে অনেক ফায়েদাই হারিয়ে যায়।
এই মুরাজা’আ না করার কারণেই বেশিরভাগ তালেবে ইলম কয়েক বছর চলে যাওয়ার পর বুঝতে পারে যে, আসলে সে খুব বেশি ইলম অর্জন করতে পারেনি! এর মূল কারণ কিন্তু সে নিজেই। সে দারসে উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে খুব তৎপর, কিন্তু মুরাজা’আ করার ব্যাপারে উদাসীন, দারস থেকে পাওয়া ফায়েদাগুলো মুখস্থের ব্যাপারে শিথিল!

অতএব, তোমাদের প্রতি অসিয়ত থাকবে হে প্রিয় ভাইয়েরা! এই মুরাজা’আর ব্যাপারে সচেতন হবে।”

🎙️আশ-শায়খ আল-মুরুব্বী সালেহ সিন্দী হাফিযাহুল্লাহ।

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

09 Nov, 07:09


আলেমদের কাজ হলো:
-মুমিনদেরকে তাদের দ্বীনের উপর অটল রাখা
-দ্বীন হেফাজতের ব্রত পালন করা।

এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন তখনই কেবল সম্ভব, যখন তারা:
-আল্লাহর জন্য পূর্ণাঙ্গ ইখলাস নিয়ে তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য কাজ করবে,
-দুনিয়া লিপ্সা থেকে মুক্ত থাকবে এবং
-সৃষ্টির সন্তুষ্টির ব্যর্থ চেষ্টা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবে।

✍️শায়খ সালেহ আল-উসায়মী হাফিযাহুল্লাহ।

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

09 Nov, 06:54


যখন ফিতনা ছড়িয়ে পড়ে, তখন
-মাহদী সম্পর্কে,
-কালো পতাকাধারী দল সম্পর্কে,
-মালহামা সম্পর্কে,
-স্বপ্ন সম্পর্কে,
-কারামাত সম্পর্কে,
-পবিত্র গ্রন্থের ভবিষ্যদ্বাণী সম্পর্কে আলাপ আলোচনা বেড়ে যায়।

এতে করে
-সত্যের সাথে মিথ্যার মিশ্রণ ঘটে,
-কল্পনার রাজ্য বিস্তৃত হয়,
-মানুষকে কল্পলোকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।

যার ফলশ্রুতিতে মানুষ তৃণলতার মতোই ভেসে বেড়ায়, মরীচিকার পেছনে ছুটতে থাকে।

এর মাধ্যমে কত শত রক্ত ঝরে, কত মাল লুট হয়!

অতএব আপনারা শয়তানের ষড়যন্ত্র থেকে সাবধান থাকুন।

✍️শায়খ সালেহ আল-উসয়মী হাফিযাহুল্লাহ।
(০৮/১১/২০২৩)

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

07 Nov, 17:48


দোয়ায় গোঁজামিল দেওয়ার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করুন: আরবীর জ্ঞান কম থাকা সত্ত্বেও নিজ থেকে শব্দ বানিয়ে বলা পরিহার করুন। এর মাধ্যমে বান্দা:
-শরীয়তে বর্ণিত দোয়া থেকে বিমুখ হতে শুরু করে,
-সমস্যাযুক্ত/নিষিদ্ধ শব্দের ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়।

এর থেকে বাঁচার উপায় হলো:
-শরয়ী দোয়া করা এবং
-এসব নবাবিষ্কৃত শব্দাবলি পরিহার করা।

✍️শায়খ সালেহ আল-উসায়মী হাফিযাহুল্লাহ।
(০২/০৮/২০২৩ ইং)

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

05 Nov, 06:50


🚦 আলেমদের সম্পর্কে সুধারণা রাখুন!

তালেবে ইলমের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী, ইলম বুঝতে সহায়ক এবং আলেমদের ইলমের গভীরতায় পৌঁছতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর পন্থা হলো: আলেমদের সম্পর্কে সুধারণা রাখা।

এই কথা বললে মোটেও আশ্চর্যজনক হবে না যে, ইলমের তিনটা ভাগ আছে:
১ম ভাগে তালেবে ইলম নিজেকে সবচেয়ে জ্ঞানী মনে করে! আল্লাহ যাকে রহম করেন সে ব্যতিত।

২য় ভাগে পৌঁছলে মানুষের সাথে ন্যায়বিচার করা শেখে!

আর তৃতীয় স্তরে উপনীত হলে নিজেকে সবচেয়ে মূর্খ মনে করে!

প্রথম ভাগে থাকাকালীন সময়ে অন্যদের খন্ডন এবং আলেমদের ভুল ধরার প্রবণতা তার বেশি থাকে। সে এটা পছন্দ করে না, ওটা তার ভালো লাগে না!
এখানে দাঙ্গা লাগায় তো ওখানে ঝগড়া!

এখানে ইবনু হাজার আসকালানী নমনীয়তা (তাসাহুল تساهل) দেখিয়েছেন!
এখানে স্ববিরোধী হয়েছেন, ওখানে তিনি সঠিকতায় পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছেন!
অমুক জায়গায় তিনি নিজের শর্তের বিরুদ্ধে নিজেই লিখেছেন!
এই জায়গাতে ইবনু হাজার আসকালানী অন্যান্য উসূলে হাদীসের পরিভাষাবিদদের বিপরীতে গেছেন!!

ইবনু হাজার আসকালানী এরকম কথা কেন বললেন, সেটা বোঝার মতো তার জ্ঞানও নাই সময়ও নাই!

তার মনে এই প্রশ্ন জাগে না যে, বর্ণনাকারীর অবস্থা এরকম হওয়া সত্ত্বেও ইবনু হাজার আসকালানী তার ব্যাপারে সিকাহ বা সদূক শব্দ কেন ব্যবহার করলেন!? এটা কি মানা যায়!

এই ধরনের পন্ডিতম্মন্য লোকের কাছে এই প্রশ্ন হওয়াও সম্ভব:
আরে ইবনু হাজার আবার কে?
সুয়ূতী কে?
আলবানী কি?
ইবনু বায আবার কেডা?!
ইবনু উসায়মীন কে?
বরং (আরো একধাপ এগিয়ে)
যাহাবী, ইবনু রজব এরা কারা?
ইবনু তায়মিয়া, ইবনুল কয়্যিম কোত্থেকে এলো এরা!?

কিন্তু ইলম অর্জন, পড়াশোনা, গবেষণা ও চিন্তাভাবনার নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টায় কিছুদিনের মাঝেই সে নিজের কাছে থাকা ইলমের দৈন্যতা ধরতে পারে! সে বুঝতে পারে যে, আসলে ওনারা সবাই একেকজন ইলমের পাহাড়সম ব্যক্তিত্ব।

অতীতে গত হওয়া আলেমদের তুলনায় আমরা তো খেজুর গাছের নিচে থাকা তৃণলতার মতোই! যেমনটা বলেছেন আবু আমর ইবনুল 'আলা রহিমাহুল্লাহ।

সে ধীরে ধীরে আবিষ্কার করতে থাকে, আলেমরা কেন এই কথা বলেছেন? তিনি কেন এমন কাজ করেছেন?
সে এমন এক জগতে ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে থাকে, যেখানকার প্রতিটা পদক্ষেপ তাকে নিজের দীনতা বুঝিয়ে দেয়, দৈন্যতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। নিজেকে মনে হয় একঝাঁক মোরগের সাথে খাঁচার মাঝে সে একাই মুরগির ছোট্ট ছানা।

কিছুদিন যেতে না যেতেই সে নিজেকে "অনেক কিছুই জানে না" এরকম অবস্থায় পায়।

এর মূল চাবিকাঠি হলো: আলেমদের সম্পর্কে সুধারণা রাখা।

✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

30 Oct, 17:37


রাসূল ﷺ বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি দশ আয়াত পাঠ করে (রাতের) কিয়াম করবে, সে গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হবে না। একশো আয়াত পাঠ করলে সে একনিষ্ঠদের অন্তর্ভুক্ত হবে। এক হাজার আয়াত পাঠ করলে মহান সওয়াবের অধিকারী হবে।” অতএব যে ব্যক্তি দশ আয়াত হলেও পাঠ করবে, সে গাফিলতির খাতা থেকে মুক্ত থাকবে।

আপনি কি জানেন, হে ভাই/বোন, যদি প্রতি রাতে সূরা ফাতিহা -যার আয়াত সংখ্যা সাত- এবং সাথে সূরা ইখলাস -যার আয়াত সংখ্যা চার- পাঠ করে এক রাকাআতও পড়েন তাহলেও আপনি সেই ফজিলত লাভ করবেন?!

আর কোনো ব্যক্তি একশ আয়াত পাঠ করে রাতের কিয়াম করলে সেই রাতে সে একনিষ্ঠদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। যদি আপনি সাত রাকাআত পড়েন, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়লেই আপনার ৪৯ আয়াত পড়া হবে, তিন রাকাত বিতরে সূরা আ’লা, কাফিরুন আর ইখলাস পাঠ করলেই ২৯ আয়াত; তাহলে এখানেই মোট আয়াত সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৮ আয়াত! বাকি থাকল ২২ আয়াত। চার রাকাতে ছোট ছোট সূরা দিয়ে এই ২২ আয়াত পূরণ করলেই আপনি এই ফজিলত লাভ করতে পারবেন। এই ছোট্ট আমলের মাধ্যমে এত্তো মহান ফজিলত লাভ করা সম্ভব হলে কেন আমরা এই ফজিলত পেতে সচেষ্ট হব না?!

✍️শায়খ সুলায়মান আর-রুহায়লী হাফিযাহুল্লাহ।
(৩০/১০/২০২৪ ইং)

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

30 Oct, 05:43


নতুন পোশাকে দলান্ধতা...

“তুমি যতই হকের সাহায্যকারী হও না কেন, এটা তোমাকে মতভেদপূর্ণ মাসয়ালায় নিজ মতের বিপরীতে অবস্থানকারী কাউকে খাঁটো করার অধিকার দেয় না। তো তারা যে বলে:
১) আরে (মতের বিপরীতে) অমুক তো ছাত্র, আর আমাদের শায়খ আলেম। অথবা বলল:
২) যারা এই মতের বিপরীতে তারা তো অমুক দেশের, তাদের উপর বিবিধ চাপ আছে। কিন্তু আমাদের শায়খ তো স্বাধীন!!

ওয়াল্লাহি, আমরা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের মাঝে এরকম কোনো কথা দেখি না।‌ বরং এটা হলো দলান্ধদের পন্থা, যারা এইসব উল্টাপাল্টা ও অবাস্তব কথাবার্তা বলে আলেমদের মানহানি করতে চায়। এটা বলাও জায়েয নেই।

প্রিয় ভাইয়েরা, এই মানহাজ ও পদ্ধতি একই দেশের আলেমদের মাঝে বিদ্বেষ তৈরি করে। সময়ের পরিক্রমায় এই বিদ্বেষভাব বেড়ে যায়, তারপর নিকৃষ্ট ঘৃণিত দলান্ধতায় পরিণত হয়। ফলে অনেকেই নির্দিষ্ট শায়খের দল করে এবং তার যাবতীয় কথাকে সত্যজ্ঞান করে, কোনো ভুলের অবকাশ যেন নেই!!

এটাই হলো দুর্গন্ধযুক্ত নিকৃষ্ট দলান্ধতা, যা ছাড়তে হবে, এর থেকে দূরে থাকতে হবে এবং সতর্ক সাবধান হতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, অনেকেই এর মধ্যে পড়ে আছে, অথচ নিজেও সে বুঝতে পারে না।”

🎙️শায়খ সুলায়মান আর-রুহায়লী হাফিযাহুল্লাহ।
--[শরহু দালীলিত ত্বালিব, ৯ই সফর ১৪৪৩ হি: দারস থেকে।]

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

28 Oct, 21:12


উপরে বক্তব্যের অনুবাদ

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

28 Oct, 21:11


আবু উমামা আল-বাহিলী রাযিয়াল্লাহু আনহু এক ব্যক্তিকে মসজিদে সিজদায় খুব কান্নাকাটি করতে দেখে বললেন: আরে তুমি! এই কান্না যদি বাড়িতে করতে! 
এখানে মানুষের সামনে লৌকিকতা আর কৃত্রিমতা দেখানোর কি দরকার!? আল্লাহকে ভয় করো।

উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু এক ব্যক্তিকে ঘাড় নিচু করে বিনয়াবনত হতে দেখে বললেন: হে ঘাড়ওয়ালা, উপরে তোলো ঘাড়। খুশু’ তো ঘাড়ে না অন্তরে থাকে। 

আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন: লোক দেখানো আমলকারীর তিনটা আলামত: ১) একাকী থাকলে ইবাদতে গড়িমসি করে আর লোকজন দেখলে খুব আগ্রহী হয়। ২) প্রশংসা পেলে ইবাদত বেশি বেশি করে, নিন্দা শুনলে ইবাদত কমিয়ে দেয়। 

এক ব্যক্তি উবাদা বিন সামেত রাযিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন: আমি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করব; এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো: আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং মানুষের প্রশংসা! এই কথা শুনে তিনি বললেন: তোমার কিছুই পাওয়ার নাই। 
তিনবার ঐ লোকটা একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছিল আর সাহাবী একই উত্তর দিচ্ছিলেন। সর্বশেষে বলেন: “আল্লাহ বলেন, আমি শিকরকারীদের শিরক থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।” এটা বলে এ সম্পর্কে রাসূলের হাদীস বর্ণনা করে শুনালেন।

ইরবায বিন সারিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহুর উপনাম/কুনিয়াত হলো, আবু নাজীহ। তো তিনি বলেন: “লোকজন ‘আবু নাজীহ এরকম করেছেন’ এই কথা বলার আশঙ্কা না থাকলে আমি সব সম্পদ দান করে দিয়ে লেবাননের কোনো এক উপত্যকায় গিয়ে আমৃত্যু ইবাদত করতাম। কিন্তু আমার ভয়, লোকজন পরবর্তীতে এটা বলতে থাকবে যে, “আবু নাজীহ এরকম করেছেন”। 

🎙️শায়খ মুহাম্মাদ বিন সাঈদ রাসলান হাফিযাহুল্লাহ।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদেরকে যাবতীয় লৌকিকতা এবং কৃত্রিমতা থেকে হেফাজত করুন, ছোট বড় শিরকবিহীন ইবাদত করার তাওফীক দিন। আমীন।

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

27 Oct, 18:55


দুনিয়ার জীবনকেই বড় মনে করা, এখানেই উন্নতি সমৃদ্ধির ধারণা সীমাবদ্ধ করা, দুনিয়াদার লোকদেরকে সবক্ষেত্রে অগ্রগামী মনে করা এবং তাদেরকে ‘দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ’ আখ্যা দেওয়া ইসলামের সাথে যায় না।

কারণ ইসলাম আমাদেরকে:
-আখিরাতের জন্য আমল করতে আদেশ দেয়,
-সুউচ্চ মাকামে পৌঁছার চেষ্টায় রত লোকদের প্রশংসা করে; এগুলোর পাশাপাশি বান্দা দুনিয়ায় তার নিজের অংশ ভোগ করবে।

আর এই ইসলাম শুধু সেই পথেরই প্রশংসা করে, যে পথ আখেরাতের কল্যাণ লাভের মাধ্যমে সফলতা আনয়ন করে।

✍️শায়খ সালেহ আল-উসায়মী হাফিযাহুল্লাহ।

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

16 Oct, 20:54


আল্লাহ ফুল সৃষ্টি করেছেন, যে ফুল তার নিজ স্থান থেকেই আমাদের  সুগন্ধে সুরভিত করে। যদি এই ফুলকেই তার জায়গা থেকে ছেঁড়া হয়, তবে কিন্তু সে শুকিয়ে যাবে, তার সৌরভ হারিয়ে ফেলবে এবং নষ্ট হয়ে যাবে। 

মেয়েদেব ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। আল্লাহ মেয়েদেরকে পুরুষদের প্রশান্তি ও সহায়ক হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। এই বৈশিষ্ট্য থেকে বের হলেই সে তখন হয়ে যাবে পুরুষের দুর্ভাগ্যের কারণ; আল্লাহ বলেন:  “সুতরাং সে যেন তোমাদের উভয়কে জান্নাত থেকে কিছুতেই বের করে না দেয়, তাহলে তোমরা দুর্ভোগ পোহাবে”। (সূরা ত্বহা, ১১৭) 

এই দুনিয়াতে আল্লাহর জাগতিক কিছু রীতি আছে, যেগুলোর কোনো পরিবর্তন আপনি দেখতে পাবেন না। তো সেই রীতিগুলোর অন্যতম একটি হলো: যে যেজন্য সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য সেটাই সহজ হবে।
আর মেয়েদেরকে তাদের সৃষ্টির মৌলিক উদ্দেশ্য থেকে বের করা মানে তাদেরকে আল্লাহর এই জাগতিক রীতি থেকেই বের করা; যেটা তাকে সহ পুরো সমাজকে নষ্ট করে দেবে।

✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

11 Sep, 16:42


“নিজেকে সবসময় ইতিবাচক চিন্তায় ব্যস্ত রাখুন। আল্লাহ যা ইচ্ছা করবেন, তা হবেই। আপনি খুশি, প্রাণবন্ত, খোলা মনের অধিকারী হোন।

আপনার সামনে রয়েছে সুবিস্তৃত দুনিয়া, সব রাস্তা খোলা। এটাই তো আসল কল্যাণ।”

🖋শায়খ ইবনু উসায়মীন রহিমাহুল্লাহ।

(টুইটার থেকে)

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

11 Sep, 06:50


যারা (বিদ'আতকে দুইভাগে ভাগ করে) বিদ'আতে হাসানাহ সাব্যস্ত করতে চায়, তাদেরকে বলা হবে: তুমি কিভাবে বুঝলে যে এটা হাসানাহ?
-যদি বলে, শরীয়তের আলোকে জেনেছি;
তাহলে আমরা বলব: তুমি তো শরীয়তের সুসাব্যস্ত সুন্নাত পালন করছ, তার মানে এটা বিদ'আতই নয়।

-আর যদি বিবেকের মাধ্যমে জানার দাবি করে;
তবে আমরা বলব: এটা তো প্রত্যাখ্যাত, কারণ এর মাধ্যমে দ্বীনের মাঝে নবাবিষ্কার ঘটে। আর হাদীসের ভাষ্য হলো: “আমাদের এই দ্বীনে যারা নতুন কিছুর সৃষ্টি করবে, তা প্রত্যাখ্যাত”।

🖋শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

18 Aug, 09:53


রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠের ৩৯ টি উপকারিতাঃ

ইমাম ইবনুল কয়্যিম রহিমাহুল্লাহ বলেছেনঃ

১) আল্লাহর নির্দেশ পালন।
২) রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর দরূদের সাথে মিল রাখা। যদিও দূটোর মাঝে বিস্তর ফারাক। কেননা, আমাদের দরূদ মানে: দোয়া ও (তাঁর মর্যাদা) চাওয়া; আর আল্লাহর দরূদ মানে: প্রশংসা ও মর্যাদা বর্ণনা।
৩) দরূদ পাঠের মাধ্যমে ফেরেশতাদের সাথে মিল রাখা।
৪) একবার দরূদ পড়ার মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ থেকে দশ বার রহমত লাভ।
৫) এর মাধ্যমে দশটি মর্যাদা উন্নীত হয়।
৬) দশটি সওয়াব লাভ হয়।
৭) দশটি গুনাহ মাফ হয়।
৮) দোয়ার পূর্বে পড়লে সেই দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কেননা, এই দরূদই দোয়াকে আল্লাহ বরাবর উঠিয়ে নিয়ে যায়।
৯) রাসূলের সুপারিশ লাভের মাধ্যম। এটার সাথে ওয়াসীলাহ (রাসূলের জন্য নির্ধারিত স্হান/মর্যাদা) চাইলেও (তো ভালোই) হলো, না হলে শুধু দরূদ পড়লেও হবে।
১০) গুনাহ মাফের মাধ্যম।
১১) দরূদ পাঠের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার চিন্তার ভার নিয়ে নেন।
১২) কিয়ামতের দিন রাসূলের কাছে থাকার অন্যতম কারণ এই দরূদ পাঠ।
১৩) অস্বচ্ছলদের জন্য সাদাকার সওয়াবও হবে।
১৪) বান্দার অভাব/চাহিদা পূরণের মাধ্যম।
১৫) এর মাধ্যমে দরূদ পাঠকারীর উপর আল্লাহ পক্ষ থেকে রহমত ও ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে রহমতের দোয়া লাভ হয়।
১৬) দরূদ পাঠকারীর জন্য যাকাত ও পবিত্রতা স্বরূপ।
১৭) মৃত্যুর পূর্বেই জান্নাতের সুসংবাদ লাভের মাধ্যম।
১৮) কিয়ামতের ভয়াবহতা থেকে মুক্তির উপায়।
১৯) যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর দরূদ ও শান্তি পাঠায়, তাদের উত্তর দেন স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
২০) বান্দার ভুলে যাওয়া বিষয় স্মরনে আসে এই দরূদ পাঠ করলে।
২১) কোনো মজলিস বা বৈঠককে সৌন্দর্য মন্ডিত এবং বৈঠককারীদের আফসোসের কারণ না হওয়ার মাধ্যম।
২২) দারিদ্রতা দূরীকরণের মাধ্যম।
২৩) রাসূলের নামোল্লেখের সময় দরূদ পাঠকারীদেরকে কৃপণতা থেকে মুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
২৪) দরূদ পাঠকারীদেরকে জান্নাতের পথে চালিত করে, আর যারা পাঠ করে না- তাদেরকে এই পথ থেকে বিচ্যুতি ঘটায়।
২৫) যে মজলিসে আল্লাহ ও রাসূলের স্মরণ ও প্রশংসা জ্ঞাপন হয় না, যেখানে রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠ হয় না; সেই বৈঠকের পঙ্কিলতা (ও বোঝা) থেকে মুক্তি দান করে।
২৬) যে-ই বক্তব্য ও কথা আল্লাহর প্রশংসা ও রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠের মাধ্যমে শুরু হয়, সেটাকে সুন্দর সমাপ্তি ঘটায়।
২৭) পুলসিরাত পার হওয়ার সময় বান্দার আলোর ব্যবস্থা করবে এই দরূদ।
২৮) মানুষের কঠোর স্বভাবকে দূর করে দেয়।
২৯) এর মাধ্যমেই আসমান যমিনের মাঝে দরূদ পাঠকারীর প্রশংসা ধ্বনিত হয়।
৩০) দরূদ পাঠকারীর স্বত্ত্বা, কাজকর্ম, বয়স, জীবনের চাহিদা ইত্যাদিতে বরকত লাভের এক মহা মাধ্যম এটি। কেননা, দরূদ পাঠকারী মূলত এর মাধ্যমে রাসূলে ও তাঁর পরিবারের প্রতি বরকত নাযিলের দোয়া করে। আর এই দোয়া তো নিশ্চিত কবুল হয়। সুতরাং, ফলাফলটাও অনুরূপ পেয়ে যায়।
৩১) আল্লাহর রহমত লাভের মাধ্যম।
৩২) রাসূলের মহব্বত বৃদ্ধি, স্হায়ীত্ব ও ক্রমান্বয়ে উন্নতির মাধ্যম।
৩৩) দরূদ পাঠের মাধ্যমে রাসূলের ভালোবাসা অর্জন।
৩৪) মানুষের হিদায়াত লাভ ও অন্তর সঞ্জীবিত হওয়ার মাধ্যম।
৩৫) এর মাধ্যমে বান্দার নামোল্লেখ করা হয় রাসূলের কাছে। যেমনটি তিনি বলেছেন: "তোমাদের দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়।"
৩৬) পুলসিরাতে পায়ে অবিচলতা ও পার হতে সহায়ক হবে এই দরূদ।
৩৭) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা রাসূলের মাধ্যমে আমাদের প্রতি যে নিয়ামত দিয়েছেন, সেই নিয়ামতের সামান্যতম শুকরিয়া আদায় করা হয় এই দরূদ পাঠের মাধ্যমে। পাশাপাশি, রাসূলেরও সামান্যতম হক আদায় করতে পারি এর মাধ্যমে।
৩৮) দরূদ পাঠের মাঝে একাধারে আল্লাহর যিকর, তাঁর শুকরিয়া ও রাসূল প্রেরণের মাধ্যমে আমাদের প্রতি নিয়ামতের স্বীকৃতি দিয়ে থাকি।
৩৯) রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠ মানেই (বান্দার নিজের জন্যও) দোয়া করা। এই দোয়া দুইভাবে হয়ঃ
ক) বান্দার নিজের প্রয়োজন, চাহিদা ইত্যাদি সরাসরি চাওয়া। অর্থাৎ, নিজের চাওয়াকেই প্রাধান্য দেয়া। সুতরাং, এটা দোয়া এবং চাওয়া।
খ) আল্লাহর কাছে তাঁর প্রিয় নবীর প্রশংসা করা এবং রাসূলের মর্যাদা ও সম্মান বুলন্দ করার জন্য দোয়া করা। অর্থাৎ, রাসূলের হককেই প্রাধান্য দেয়া। নিঃসন্দেহে আল্লাহ ও তদ্বীয় রাসূল এটাই ভালোবাসেন।

📚জালাউল আফহাম, ৪৪৫-৪৫৪ পৃষ্ঠা; ঈষৎ পরিমার্জিত।
মূল বইয়ে দলীল সহ বিস্তারিত আলোচনা আছে।

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

06 Aug, 14:24


গত রমজানে প্রকাশ করার ইচ্ছা ছিল, ব্যস্ততায় পিছিয়ে কুরবানীর ছুটিতে নিলেও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এখন সংক্ষিপ্তভাবে মূল বই প্রকাশ করা হলো। আল্লাহ চাইলে বড় আকারে সামনের সংস্করণে প্রকাশ করা হবে। আল্লাহ তাওফীক দিন।

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

06 Jul, 15:44


অনুরূপভাবে তাশরী'উল 'আম তথা ‘ব্যাপকভাবে গাইরুল্লাহর বিধান প্রণয়ন করা’ মাসয়ালাটির ক্ষেত্রে সামাহাতুশ শায়খের নিকট তাকফীরের মূল কারণ একবার, দুইবার বা তাশরী'উল 'আম করা নয় বলেই মনে হয়; বরং মূল কারণ হলো, ই'রায তথা দ্বীন ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া এবং তাওয়াল্লী তথা অমুসলিমদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা, যেটা আসলে কুফরীর অন্যতম স্বয়ংসম্পূর্ণ আলাদা একটি প্রকার। এজন্যই তার কথাগুলো নিয়ে আপনি চিন্তা করলে দেখবেন, এই বিষয়েই তার মূল ফোকাস ছিল, একদম স্পষ্ট হয়ে যাবে। যে অবস্থায় কুফরুল ই'রায ও তাওয়াল্লী বাস্তবায়ন হবে, সেটাই শায়খের মতে হবে কুফরে আকবার। সাধারণভাবে কেউই এটাতে দ্বিমত করেননি। কিন্তু তাশরী'উল 'আমের উপর এটার প্রয়োগ করাতেই মূলত মতভেদ।

সামাহাতুশ শায়খের কথার সমসাময়িক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে পাঠকের কাছে আরেকটা বিষয় ধরা পড়বে; সেটা হলো: ইসলামী বিশ্বে সেই সময় মানব রচিত সংবিধান প্রণয়নের হিড়িকের সূচনাকাল ছিল। একই বিষয়ে আহমাদ শাকেরের কথাও (আমাদের) এই মতের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়।

উপর্যুক্ত বিষয়গুলোর কারণে সংশয়বাদীদের উপরোক্ত বুঝ সঠিক হওয়ার ব্যাপারটা ঝামেলাযুক্ত থেকেই যায়।
আল্লাহই ভালো জানেন।

✍️শায়খ মুহাম্মাদ বিন উমার বাযমূল হাফিযাহুল্লাহ।

আদ-দা'ওয়াহ আস-সালাফিয়্যাহ

06 Jul, 15:44


🚦 গায়রুল্লাহর শাসন বিষয়ক সামাহাতুল মুফতী মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম রহিমাহুল্লাহ-র মতামত‌‌‌ কেমন ছিল?

সংশয়ঃ এক অবস্থা, দুই অবস্থা বা কিছু মাসয়ালায় গায়রুল্লাহর হুকুম দিয়ে বিচার করলে সেটা কুফরে আসগর হয়, এটা প্রায় আহলুস সুন্নাহর ইজমায়ী মতামত। কিন্তু যে ব্যক্তি সংবিধান প্রণয়ন করে মানুষকে সে অনুযায়ী বিচার ফয়সালা করে, অধিকাংশ মুসলিম দেশগুলোতে বর্তমানে যেরকম চলছে, এটা তো কুফরে আকবার। যেমনটা বলেছেন মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম রহিমাহুল্লাহ এবং সালেহ আলুশ শায়খও এটাকেই পছন্দনীয় বলেছেন, বেশি সম্ভব উসূলুস সালাসা ও কিতাবুত তাওহীদের শরহে।

🔖খন্ডনঃ
এই সংশয় বিদূরণে আমি বলছি:
(প্রথমে) তর্কের খাতিরে আপনার বুঝমতো উপরোক্ত কথাকে সামাহাতুশ শায়খ মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম রহিমাহুল্লাহ এবং শায়খ সালেহ আলুশ শায়খ‌‌‌ সাল্লামাহুল্লাহ-এর দিকে নিসবত সঠিক ধরে উত্তর দিতে গিয়ে বলব:
জেনে রাখুন, -আল্লাহ আপনাকে হক কবুল করতে ও হকের দিকে ফিরে আসার হেদায়েত দিন- রাসূল ﷺ শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে আমাদেরকে সেসময়ই বৈধতা দিয়েছেন যখন "আমরা তার থেকে স্পষ্ট কুফরী দেখতে পাব, যেটার ব্যাপারে আমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে দলীল থাকবে"; এই বাক্যটি সহীহতে (বুখারী মুসলিমে) উবাদা বিন সামেত রাযিয়াল্লাহু আনহুর হাদীসে এসেছে।

কোনো শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে:
১) "যতক্ষণ না তোমরা দেখতে পাবে", অর্থাৎ একদম চোখে দেখার মতো নিশ্চিতভাবে আমাদের কাছে প্রমাণিত হতে হবে।
২) এই প্রমাণিত হওয়াটা ঐক্যবদ্ধতার ভিত্তিতে হতে হবে, কারণ হাদীসে বহুবচনের ওয়াও রয়েছে।
৩) শাসকের থেকে সঙ্ঘটিত ও আমাদের দেখা বিষয়টা অবশ্যই "কুফর" হতে হবে, কাবীরা গুনাহ বা এমনি গুনাহ হলে চলবে না।
৪) "বাওয়াহ" তথা সুস্পষ্ট হতে হবে।
৫) "তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে দলীল থাকতে হবে", অর্থাৎ এ ব্যাপারে মতভেদ থাকা চলবে না।

আপনি যদি রাসূলের "তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে দলীল থাকতে হবে" এই কথার দিকে দৃষ্টি দেন, তাহলে বুঝতে পারবেন যে, এর মর্মার্থ হলো: কোনো বিষয় যদি কুফরী কি কুফরী না- এটা নিয়ে মতভেদ হয় তাহলে সে বিষয় নিয়ে শাসককে তাকফীর করা জায়েয নয়।

আর যে মাসয়ালা আপনি সামাহাতুল মুফতী মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম -আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন ও ইল্লিয়্যীনে তার দরজা বুলন্দ করুন- এবং তার নাতি ফজিলাতুশ শায়খ সালেহ আলুশ শায়খের দিকে নিসবত করেছেন সেটি তাকফীর বিত-তাশরী'ইল 'আম তথা "ব্যাপকভাবে গাইরুল্লাহর বিধান প্রণয়ন করা"নামে পরিচিত। এটা নিয়ে আলেমদের মাঝে মতভেদ আছে।

সামাহাতুশ শায়খ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায রহিমাহুল্লাহকে (আদ-দাম'আতুল বাযিয়্যাহ ক্যাসেট দ্রষ্টব্য) একই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি গায়রুল্লাহর বিধান দিয়ে বিচার করা এবং তাশরী'উল 'আম তথা ব্যাপকভাবে গাইরুল্লাহর বিধান প্রণয়ন করা-এর মাঝে কোনো পার্থক্য করেননি, বরং তিনি দুটোর ক্ষেত্রে একই হুকুম লাগিয়েছেন। একই কথা বলেছেন ইবনু উসায়মীন ও আলবানী রহিমাহুমাল্লাহ!
এটা দেখে কিছু লোকের মাথা বিগড়ে গেছে, ফলে তারা এই তিন শায়খকে সালূসুল ইরজা (ثالوث الإرجاء) তথা "মুরজিয়া ত্রয়" বলে বিদ্রুপ করে থাকে। আল্লাহ বিদ্রুপকারীদের উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন।

বিন বায, ইবনু উসায়মীন ও আলবানী রহিমাহুমুল্লাহ-র মতামতই পোষণ করেন তার জুমহুর ছাত্র।

এর অর্থ হলো, তাকফীর বিত-তাশরী'ইল 'আম তথা ‘ব্যাপকভাবে গাইরুল্লাহর বিধান প্রণয়ন করা’ মাসয়ালাটিতে যেকোনোভাবে বিরোধী ব্যক্তি মুতাআওয়িল তথা উপযুক্ত ব্যাখ্যাকারী, আর তাআওয়ুল তথা উপযুক্ত ব্যাখ্যা করা তো তাকফীরের অন্যতম প্রতিবন্ধক বিষয়। মানে মাসয়ালাটিতে আল্লাহর পক্ষ থেকে দলীল নেই। অতএব এই কারণে শাসকদের তাকফীর করা জায়েয নেই।

আমি আগেই বলেছিলাম যে, আমার উপরোক্ত কথাগুলো মূলত আপনি সামাহাতুশ শায়খ মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম এবং শায়খ সালেহ আলুশ শায়খের কথাগুলো সঠিকভাবে বুঝেছেন- তর্কের খাতিরে এটা মেনে নিয়ে বলা হয়েছে। নচেৎ আমার মতে তাদের দুজনের কাছে তাকফীর করার মূল কারণ তাশরী'উল 'আম তথা ‘ব্যাপকভাবে গাইরুল্লাহর বিধান প্রণয়ন করা’ নয়, কারণ কুফরী বিষয়ের কম আর বেশির মাঝে কোনো পার্থক্য নেই।
উদাহরণস্বরূপ, যে স্বেচ্ছায় জেনেশুনে অন্যের থেকে বাধ্য না হয়ে কোনো নবীকে হত্যা করে, সে তো কাফের ঐ ব্যক্তির মতোই যে অনেক নবীকে হত্যা করে। এক্ষেত্রে একজন নবীকে হত্যা করা আর কয়েকজন নবীকে হত্যা করার মাঝে কোনো পার্থক্য নেই।

জেনেশুনে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধ্য না হয়ে কেউ কুরআন পদদলিত করলে সে কাফের। একইভাবে পদদলিত করার পাশাপাশি কয়েকবার কুরআনের উপর লাফালাফি করলেও সে কাফের। এক্ষেত্রে একবার বা একাধিকবার করার মাঝে কোনোই তফাৎ নেই। কারণ কাজটা কুফরী, শর্ত পূরণ হলে এবং প্রতিবন্ধকতা দূর হলে তাকে তাকফীর করা হবে; কম বা বেশির মাঝে কোনো পার্থক্য করা হবে না।