🔰 এক আপু পোস্ট করেছে,
স্বামী যদি বলে, "আমার মা বোন যেভাবে আমার খিদমত করে, তোমারটা তেমন হয় না। " - এর উত্তরে মেয়েদের কী বলা উচিৎ!
🔰 ২-৩ টা বাদে বাকি সবার উত্তর -
"মা বোন থেকেই সেবা নেন।
আপনিও যা যত্ন করেন তা আমার বাপ ভাইয়ের মত না
তারা আর আমি কি এক যে একরকম হবে?"
আল্লহু আকবার!
🔰 আমার কমেন্ট-
আমরা বোনেরা এটাই বুঝি না যে, এরকম পালটা উত্তর আমরা দেওয়া ঠিক মনে করলেও আসলে এগুলাই সমস্যা তৈরি করে।
আমরাই তখন বলি যে কী এমন বললাম, আমার কী দোষ? সে এমন করে কেন। নিজেদের দোষটা চোখেও দেখি না আমরা।
আমাদেরকে বাবা মা বকা দিলে কি আমরা এমন পালটা বেয়াদবি উত্তর দেই? কোন উস্তাযকে, কোন দলের নেতাকে আমরা এমন বলতে পারি তারা শাসন করে? তাহলে স্বামী, এত বড় অভিভাবক, আমার নেতা, আমি যার অধীনস্থ তাকে কেন আমরা এত ছোট করে দেখি?
মনের দুঃখে হোক বা রাগে হোক সে হয়ত দুটা কথা বলেই ফেলেছে। কিন্তু এভাবে উত্তর দেওয়া মানে সংসারের হিকমাহই তার নেই৷ পরে আমি খিদমত কিভাবে করলাম না করলাম সেটা পরের ব্যাপার। কিন্তু তাৎক্ষণিক আমি যে উত্তরটা দিব, আমার সেই আখলাকই তার মনে গেথে যাবে৷ এই আখলাক, চরিত্র, মুখের ভাষাই একটা সময়ে তার মনে টান তৈরি করবে।
আমরা বলতে পারি, "তাই? আফওয়ান। আমি এরপর থেকে আরো ভালভাবে চেষ্টা করব ইন শা আল্লাহ। মা আপু তো জন্ম থেকে দেখছে তোমাকে, আমি অল্প কদিনের মানুষ কি এত ভাল পারি? আমাকে তুমি শিখিয়ে দিও। আমি চেষ্টা করব। আমার অপারগতা মাফ করে দাও, অসন্তুষ্ট থেকো না।"
এভাবে সুন্দর করে কথা বললে কতই না উত্তম হয়! এভাবে ভাবতেই পারি না আমরা। যেন যে বলেছে সেই ভুল সেই খারাপ মানুষ! অথচ আমাদের অন্য অভিভাবকেরা আমাদের কত বকতে পারে। এই একটা মানুষের বেলাতেই আমরা এত অসহনশীল! এখানেই সে কী করলো আমি কত কিছু করে উলটে ফেললাম, সেই হিসাবই করতে থাকি শুধু!
উল্টাভাবে উত্তর দিলে, আমি সারাজীবন যতই সেবা করি না কেন তার মনে গেথে থাকবে যে একটা কথা বললাম তাতেই এমন আচরণ করলো? পুরুষ ফিতরাতগতভাবে নেতা! এ ধরনের বেয়াদবি তাদের নেতা মনোভাবে আঘাত দেয়। কেউ কষ্ট পায় কেউ আরো রেগে যায়। আর নারী ফিতরাতগতভাবেই নরম, অধীনস্থ। তাকে তার নরমিয়ত দিয়েই নেতাকে জয় করে নিতে হবে। যেমন ছাত্র কিন্তু পারে না প্রশ্ন কঠিন কেন করেছে তা নিয়ে শিক্ষককে কথা শোনাতে৷ বরং সে ভাল পড়াশোনা করে, রেজাল্ট কম হলেও অন্যদিকে টিচারের কথা শুনে, কোন কাজে হেল্প করে টিচারের মন জয় করতে পারে। ঐ যে বললাম, অন্য সম্পর্কে আমরা যেমন মাথা নত করি, স্বামীকে সেভাবে মানিই না!
অথচ, স্বামীর সন্তুষ্টি দিয়েই যে, আল্লাহর সন্তুষ্টি কামাই করতে হবে এটা আমরা ভুলেই যাই! স্বামীর সকল হালাল চাওয়া পূরণ করা, আদেশ পালন করা, অনুগত্য করা যে নামাজ, পর্দার মতই ফরয, না পালন করলে কবীরাহ গুনাহ তা আমরা ভুলে যাই।
আপাত দৃষ্টিতে এমন লোকেরা বেঠিক। কিন্তু তাদের বেঠিকের বিপরীতে আমাদের সঠিক, উচিৎ জবাব দিতেই হবে এমন না বিষয়টা। তারা আমাদের অধীনস্থ তো ননই, প্রতিদ্বন্দ্বী নন, ৫০-৫০ পার্টনারও না। তারা আমাদের হাই লেভেলের, অভিভাবক, নেতা। আমরা এভাবে কথা বলতে পারি না৷
🍀 আমরা ভুলে যাই, একটু শাসনে, বকায় তার আমলনামার কিছুই হবে না৷ বরং অভিভাবকের সাথে বেয়াদবিতে আমাদের জবাবদিহি কঠিন হয়ে যাবে।
আল্লাহ আমাদের বুঝ দান করুন।
- Zainab Binte Abdur Rahman