Последние посты Abdullah bin bashir (@abdullahbinbashir) в Telegram

Посты канала Abdullah bin bashir

Abdullah bin bashir
প্রয়োজনীয় পিডিএফ ও ব্যক্তিগত নোট
7,352 подписчиков
165 фото
64 видео
Последнее обновление 01.03.2025 06:52

Похожие каналы

Shamsul Arefin Shakti Official
32,333 подписчиков
Conflict Watch Bangla - CWB
29,781 подписчиков

Последний контент, опубликованный в Abdullah bin bashir на Telegram


শাসক নির্বাচনের তুরাসি একটি ধারা
.
বইটির সংক্ষিপ্ত পরিচয়ে যাওয়ার আগে ভূমিকায় লেখকদ্বয় সম্পর্কে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তা প্রথমে সংক্ষেপে বলে নেই।

১। মাওলানা মুশাররফ বেগ আশরাফ। কম্পিউটার সাইন্সে মাষ্টার্স করা এই মাওলানা বর্তমানে পাকিস্তানের একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে উলুমে শরয়িয়্যাহতে অধ্যাপনায় নিয়োজিত রয়েছেন। সাথে দর্শন ও ইসলামি আকিদা বিষয়ে ইসলামাবাদ ইসলামি ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করছেন।

২। যাহেদ সিদ্দিক মোঘল
যাহেদ সিদ্দিক মোঘল দ্বীনি মাদরাসায় পড়াশোনা করেছেন। অর্থনীতিতে পিএইচডি করা যাহেদ সিদ্দিক মোঘল বর্তমানে কর্মরত আছেন ইসলামাবাদের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজিতে এসোসিয়েট প্রফেসরের দায়িত্বে।
.
এই দুজন লেখকের সমন্বিত কাজ হলো এই বইটি।
.
গণ*তন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতারা জনগণ ছাড়া শাসক নির্বাচনের আর যত পদ্ধতি আছে সবগুলোর বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার পৃথিবীব্যাপি চালিয়েছে যে, শাসক নির্বাচনের একমাত্র বৈধ ও যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতি কেবল ভুখণ্ডের সকল মানুষ মিলে ভোটের মাধ্যমে শাসক নির্বাচন করবে। শাসক কর্তৃক অপর শাসক নিয়োগের পদ্ধতিকে এমন ঘৃণিতরূপে হাজির করা হয়েছে যে, এর মত জঘন্য কাজ আর জুলুম দ্বিতীয়টি হতে পারে না!

এই অপপ্রচারে প্রচুর পরিমান বিভ্রান্ত হয়েছেন উপমহাদেশে মাওলানা মওদুদিসহ আরো অসং্খ্য মানুষ। অথচ আমাদের যত তুরাসের কিতাব আছে, সালাফের যত ফিকহি আলোচনা আছে, তার প্রায় সবটিতেই দেখা যায়, একজন মুসলিম শাসক তার পরবর্তীতে উম্মাহের জন্য কল্যাণকামী ও সকল শর্ত পাওয়া যায় এমন শাসক নিয়োগ দিতে পারবেন এবং উম্মাহের উপর তাকে মান্য করা ওয়াজিবও হবে। ইসলামি শরীয়তে এই বিষয়টিকে বলা হয় ইসতিখলাফ বা ওলিয়ে আহদ।
.
গণতন্ত্রকে ভালো মেনে নিয়ে সে সকল।আলেমরা সিয়াসাত বিষয়ক কিতাব ধরেছেন তাদের প্রায় অধিকাংশই এই মাসআলাকে হয়তো ইসলামই সিয়াসাতে স্বীকৃতিই দেয়নি অথবা যে কজন স্বীকৃতি দিয়েছেন তারা এর সাথে এমন কিছু উদ্ভট শর্ত আরোপ করেছেন যার সাথে ফিকহের কিতাবের কোনো সম্পর্কই নেই!
.
সালাফদের এমন একজনও পাওয়া যাবে না, যারা এই মাসআলাকে নাজায়েয বলেছেন। বরং অসং্খ্য সালাফের এমন ইবারত পাওয়া যাবে যে, ইসতিখলাফ হলো শাসক নির্বাচনের অন্যতম উত্তম পদ্ধতি! যে বিষয়টিকে সালাফরা এভাবে পেশ করেছেন আজ সে বিষয়টিকেও গণ তন্ত্র মনা কিছু মানুষ অনেকটা মুছে দিতেই চাচ্ছে! এরা তুরাস তুরাস করে দুনিয়া চিল্লাফাল্লা করলেও আধুনিক বিশ্বব্যবস্থার সাথে সাঙ্গর্ষিক বিষয়গুলোতে এদের আর খুজে পাওয়া যায় না!
.
যাইহোক, ড. যাহেদ সিদ্দিক মোঘল ও মাওলানা মুশাররফ বেগ সাহেব এই বিষয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরে কলম ধরেছেন এবং চারো মাজহাবের আলোকে এই মাসআলার পূর্ণ হক আদায় করেছেন।
.
ইমাম আশআরি রহিমাহুল্লাহের বক্তব্য, একজন আহলুল হাল্লি ওয়াল আকদের মাধ্যমেই শাসক নিয়োগ হয়ে যাবে, এই মাসআলাটা যখন কিতাবে পড়তাম অদ্ভুত লাগতো কিছু। কিন্তু এই মাসআলার গোড়া যে এত শক্ত তা এই বইতে এত চমৎকার উপস্থাপন করা হয়েছে যে, বেশ অবাক হলাম! আমাদের ফকিহদের চিন্তা কত গভির!
.
বইটিতে ইসতিখলাফের মাসআলা ছাড়াও আহলুল হাল্লি ওয়াল আকদের মাসআলাও আলোচনা চলে এসেছে বেশ সুন্দর করে।
.
তবে সবেচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে ও লেখকদ্বয়ের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো একটি মাসআলায়, আর তা হলো, শাসক ও জনগনের মাঝের সম্পর্ক কী হবে এই আলোচনাটি।
গ ণ ত ন্ত্র ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আবশ্যকীয় বিধানকে বর্তমান সময়ে ইসলামিকরণের সবচেয়ে বড় যে হাতিয়ার, এবং যে হাতিয়ার দিয়ে গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে জায়েয করা হয় খুব জোরেশোরে, তার মধ্যে একটি হলো শাসক আর জনগনের মাঝে যে চুক্তি হয় তা হলো, আকদে তাওকিল অর্থাৎ, শাসক হলো জনগনের পক্ষ থেকে ওকিল। আর এটা মেনে নিলে অসং্খ্য মাসআলা অটোমেটিক গ ণ ত ন্ত্রের ছাছে তৈরি করা সম্ভব। (এই মাসআলায় বহু মুখলিস আলেমরাও হোচট খেয়েছেন, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করুন।)

লেখকদ্বয় এখানে ফিকহের বক্তব্যের আলোকে এটাকে বেশ শক্তিশালীভাবে স্পষ্ট করেছেন যে, ইসলামি শরীআর দৃষ্টিতে শাসক ও জনগনের যে আকদ হয় তা মূলত ‘আকদে বিলায়াত’ অর্থাৎ, জনগন তাদের জীবনকে কুরআন সুন্নাহের আলোকে পরিচালনা করার জন্য শাসককে নিজের অবিভাবক হিসেবে মেনে নিয়েছে, সুতরাং এখন তাদের কাজ হলো শাসকের চূড়ান্ত আনুগত্য করে যাওয়া, যতক্ষণ না শাসক আল্লাহ ও তার রাসুলের আইনের খেলাফ কিছু করে।

এই একটি মাসআলা গণতন্ত্রকামীদের পুরো কোমর ভেঙ্গে দিতে সক্ষম।
.
যাইহোক, যারা ইসলামি সিয়াসাতকে ইসলামের জায়গা থেকে বিস্তর পড়তে চান তাদের জন্য অবশ্যই পাঠ্য এই বইটি।

কাফেরদেরকে সম্মান প্রদর্শন করার বিধা

ভালোবাসা প্রকাশের অন্যতম বহিঃপ্রকাশ হলো শ্রদ্ধা-ভক্তি প্রদর্শন করা। কারও প্রতি ভালোবাসা যখন হৃদয়ে প্রোথিত হয়ে যায়, তখন তার প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি বাড়তে থাকে, যে ভক্তি-শ্রদ্ধার উৎস হলো ভালোবাসা ও অগাধ আস্থা। পাশাপাশি ভক্তি- শ্রদ্ধার কারণে ভালোবাসায় আরও শক্তি সঞ্চারিত হয়। আর এক-দুজনের মাঝে এ জাতীয় শ্রদ্ধা-ভক্তির সম্পর্ক দেখে অন্য মুসলমানরাও কাফেরদের প্রতি ঝুঁকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার কারণে ইসলামের দৃষ্টিতে কাফেরকে সম্মান প্রদর্শন করাও মৌলিকভাবে নাজায়েজ।

আল্লামা ইবনে নুজাইম রহিমাহুল্লাহ লিখেছেন,

ولا يبدأ الذي بسلام إلا لحاجة ولا يزاد في الجواب على وعليك، وتكره مصافحته، ويحرم تعظيمه الأشباه والنظائر ص ٠٨٢، الفن الثالث، أحكام الذمي)

জিম্মিকে আগে সালাম দেবে না এবং সে সালাম দিলে উত্তরের ক্ষেত্রে শুধু 'ওয়া আলাইকা' (অর্থাৎ, তোমার প্রতিও অনুরূপ) এতটুকুর বেশি বলবে না। তবে জরুরত হলে আগে সালাম দিতে পারবে। তার সাথে মুসাফাহা করা মাকরুহ। আর তাকে শ্রদ্ধা জানানো হারাম।

বই: মুসলিম অমুসলিম সম্পর্ক
লেখক : মুফতি উবাইদুর রহমান
অনুবাদ : আব্দুল্লাহ বিন বশির
চেতনা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত

বাশির ইবনুল খাসাসিয়াহ রা. বলেন, 'আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসলাম ইসলামের উপর বাইয়াত হওয়ার জন্য।' তিনি আমাকে বাইয়াতের জন্য শর্ত দিলেন, '১. তুমি সাক্ষ্য দিবে আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নাই, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসুল। ২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে। ৩. রমাজানে রোজা রাখবে। ৪. যাকাত আদায় করবে। ৫. হজ করবে। ৬. আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে।'
(শর্ত শুনে) আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! দুটো বিষয় তো আমি পারবো না। যাকাত আমি দিতে পারবো না, কারণ আমি তো মাত্র অল্প কিছু সম্পদেরই মালিক। আর জিহাদ করতেও পারবো না, কারণ যুদ্ধের ময়দান থেকে পালায়ন করলে আল্লাহর আজাবের সম্মুখীন হতে হবে, আমার আশঙ্কা আমি যুদ্ধের ময়দানে যাবো এবং মৃত্যুর ভয় পাবো।' একথা শুনে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত নেড়ে বললেন, 'যাকাত আদায় আর জিহাদ না করো তাহলে জান্নাতে কীসের মাধ্যমে প্রবেশ করবে?'

আমি বললাম, 'হে আল্লাহর রাসুল! (এসব মেনেই) আমি বাইয়াত হবো।' তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে সব সবগুলো বিষয়ের উপরই বাইয়াত করিয়ে নিলেন। -শরহে মুখতাসারুল কুদুরি ৭/৭; আসসানুল কুবরা লিল বাইহাকী, হাদিস নং ১৭৭৯৬; মুসতাদাকে হাকেম হাদিস নং ২৪২১

আম্লীক যেমন বাংলাদেশ চায়, তেমন বাংলাদেশে বসবাস করা কি আদৌ পসিবল?

আসুন দেখে নিই, আম্লীকের বাংলাদেশ কেমন :

১) আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠে পেপার হাতে নিলেন। দেখলেন হাসিনার বন্দনা। হাসিনার খুৎবা শুনে শুরু হলো আপনার দিন।

২) পেপার পড়ে আপনি বাইরে হাঁটতে গেলেন। 'বঙ্গবন্ধু মোড়' থেকে রিকশা নিয়ে 'বঙ্গবন্ধু পার্কে' গেলেন হাঁটতে। সেখানে আধা কিলোমিটার পরপর দেখলেন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল।

৩) আপনি বাসায় ফিরলেন। নাস্তা করবেন। বাসায় নাই গোশত। বউ সামনে আইনা দিলো কাঁঠাল। বউ বলল— প্রধানমন্ত্রী মাংসের বদলে কাঁঠাল খাইতে কইছে। আপনি বিয়ে, মুসলমানি, শ্রাদ্ধ, যেখানেই যাচ্ছেন মাংস নাই, খালি কাঁঠাল আর কাঁঠাল।

৪) যা হোক, নাস্তা খেয়ে টিভি ছাড়লেন। একটু গান-বাজনা শুনে ফ্রেশ হতে চাইছেন আপনি। কিন্তু টিভি খুলেই দেখলেন চলতেছে— বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক প্রামাণ্য চিত্র— শুঁটকি রপ্তানিতে বঙ্গবন্ধুর অবদান শীর্ষক অনুষ্ঠান। চ্যানেল পাল্টাইলেন। সেখানে চলতেছে— বঙ্গবন্ধুর কারাগারের রোজনামচা পাঠ। আপনি টিভি বন্ধ কইরা বললেন— ধুর ছাতা, টিভিই দেখমু না। যাই, অফিসে যাইগা।

৫) আপনি অফিসে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু ইন্ডাস্ট্রির পাশ দিয়ে, বঙ্গবন্ধু খাল অতিক্রম করে আপনার রিকশা বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে দাঁড়ালো। সেখানে সরস্বতি পূজা উপলক্ষে ১২টি মূ'র্তি বানানো হয়েছে। হি'ন্দু-মু'সলিম নির্বিশেষে সবাই পূজায় অংশ নিয়েছে। এই দৃশ্য আপনার খুব ভালো লাগল। আপনি ভাবলেন, কোনো এক রমজানের সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে কোরআন পাঠ ও ইফতার আয়োজন করবেন। কিন্তু রোজার মাসে দেখলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি তাদের ক্যাম্পাসে ইফতার মাহফিল ও কোরআন পাঠ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে!

৬) এমন টাইমে আপনার বৃদ্ধা ও ধার্মিক মা ফোন করে বলল— বাবা, আমার জন্য একটা তসবীহ আনিস। আর টাকা থাকলে ফাজায়েলে আমল বইটা কিনে আনিস। আপনি বই বিতান থেকে সেগুলো কিনলেন। কিন্তু রাস্তায় পুলিশ আপনাকে ধরে জ'ঙ্গী বলে থানায় চালান করে দিলো। আপনি আইডি কার্ড দেখিয়ে সেই যাত্রায় বেঁচে ফিরলেন। ফেরার পথে আপনার বন্ধুর সঙ্গে দেখা।

৭) আপনার বন্ধুর হাতে একটি বই। নাম— 'শিশুদের এ.আই শিক্ষা'। তার ছেলে ইউরোপে পড়ে। দেশে বেড়াতে এসেছে। ছেলের জন্য বইটি সে কিনেছে। এটা দেখে আপনারও ইচ্ছা হলো আপনি আপনার ছেলেকে এ.আই শেখাবেন। আপনি বাসায় গেলেন। বাসায় গিয়ে ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলেন— আব্বু, আজ স্কুলে তোমাকে কী কী হোমওয়ার্ক দিয়েছে?

৮) আপনার ছেলের হোমওয়ার্ক :

▪️৭ মার্চের ভাষণটি মুখস্ত লেখো।
▪️১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনাটি আলোকপাত করো।
▪️মেট্রোরেলে শেখ হাসিনার সাফল্য রচনাটি লিখো।

(এইবার বলেন, এই রকম একটা বাংলাদেশে ঠিক কতক্ষণ টেকা যায়? ২৪ ঘণ্টা কি কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে এই রকম একটা রেজিমে বাস করা পসিবল?)

©

পশ্চিমা সভ্যতা নিয়ে আরবী, উর্দু আর বাংলায় যে কয়টা বই নেড়েচেড়ে দেখার তাওফিক আমার হয়েছে তার মধ্যে যদি বিশেষ পাঁচটি বইয়ের তালিকা করতে হয় তাহলে এটাকে আমি তিনের মধ্যেই রাখবো। এত গভির থেকে পশ্চিমা সভ্যতাকে লেখক চিহ্নিত করতে পেরেছে, যা আমাকে বেশ অবাক করেছে।
.
বইটি মূলত পাকিস্তানের এক কুখ্যাত মডার্নিষ্টের খণ্ডণে লেখা। কিন্তু কোনো বইয়ের খণ্ডন করতে গিয়ে খণ্ডনের সাথে পুরো বিষয়ের বাস্তবতা এত সুন্দর করে উপস্থাপন করা যায় তা বেশ অবাক করা। সবেচেয় বেশি আশ্চর্য লেগেছে, লেখকের রেফারেন্স। পশ্চিমের থেকে এত এত রেফারেন্স সে উল্লেখ করেছে যে, আপনি হতবাক হয়ে যাবেন।
.
পশ্চিমের সাথে ইসলামের মূল দ্বন্দ্বটা আসলে কোথায়, পশ্চিমের সাথে ইসলামের মেলবন্ধনের বাস্তবতা, সাইন্সের পুর বাস্তবতা লেখক এত এত পশ্চিমের রেফারেন্স আর ইসলামের মৌলিক জায়গা থেকে তুলে এনেছেন যে, এই বিষয়ে যাদের কিঞ্চিৎ পড়াশোনা আছে তারা অবাক হয়ে যাবেন।
.
লেখক একটি বিষয়ে বেশ জোর দিয়েছেন, পশ্চিমের সাথে যারা মেলবন্ধনের স্বপ্নে বিভোর তারা পশ্চিমকে চিনেই নাই। যে পশ্চিমা জ্ঞানতত্ত্ব ইসলামের ওহী, রাসুলের বানীকে জ্ঞানের বৈধ উৎস হিসেবে স্বীকারই করে না, সে পশ্চিমের সাথে ইসলামের মেলবন্ধন কী আদৌ সম্ভব!
-পশ্চিম ইসলামের মৌলিক জ্ঞানের উৎসকে জ্ঞানের বৈধ উপকরণই মনে করে না!
-পশ্চিম ইসলামের নৈতিকতাকে বর্বর ও সম্পূর্ণ ভুল মনে করে।
-পশ্চিমের ভালোমন্দ নির্নয়ের নিজস্ব মাপকাঠি আছে, যেটা স্বীকার করার পর ইসলাম অস্বীকার করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
-পশ্চিমের তৈরি আজ যে সাইন্সের পুরো পৃথিবী গোলাম হয়েছে, সে সাইন্সের মানুষের স্বভাবজাত পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা নয়, বরং নির্দিষ্ট একটি মেটাফিজিকাল ঈমান থেকে তা উৎসারিত হয়েছে।

এমন আরো অসং্খ্য বিষয় লেখক দলিল ভিত্তিক ও স্পষ্ট করে উপস্থাপন করেছেন। মোটকথা যারা পশ্চিমকে ইসলামাইজেশনের কাজ করছে তারা হয় দ্বীনের শত্রু অথবা চূড়ান্ত জাহেল। লেখক বেশ জোর দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন, আজ যারা পশ্চিমের গ ণ তন্ত্রকে ইসলামাইজেশনে লিপ্ত শাব্দিকিকরণ করে তারা চূড়ান্তভাবে ধোকাগ্রস্ত হয়ে বসে আছে!
.
পশ্চিমা সভ্যতা নিয়ে যাদের কিছুই পড়াশোনা নাই তার এই বই থেকে তেমন উপকৃত হতে পারবেন না, তাই আগে পশ্চিমের ব্যাপারে অন্যান্য মৌলিক বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করুন, তারপর এই বইটি হাতে নিন ইনশাআল্লাহ ব্যাপক ফায়দা হবে।
.
এই বইটি থেকে সবচেয়ে উপকৃত হিতে পারবেন ভার্সিটির ভাইরা। কিন্তু এদেশের ভার্সিটির ভাইরা উর্দু তো পারে না বললেই চলে। মাদরাসার উপরের দিকের তালেবে ইলম ও ভার্সিটির কিছু ভাই যদি গ্রুপ স্ট্যাডির মত করে এই বইটি পড়তে পারেন তাহলে ব্যাপক উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ।

ফিকহের তালেবে ইলমদের জন্য বিশাল এক তোহফা আসতেছে উস্তাদে মুহতারাম আব্দুস সামাদ সাহেবের পক্ষ থেকে! ফিকহের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল তালেবে ইলমের জন্যই বইটি সংগ্রহ করা জরুরি মনে করি!

পশ্চিমা সভ্যতা নিয়ে এখন পর্যন্ত আরবী, উর্দু ও বাংলাতে যে কয়টি কাজ পড়ার আমার তাওফিক হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম সেরা কাজ হলো এই বইটি। যারা পশ্চিমা সভ্যতাকে একদম গোড়া থেকে বুঝতে চান তাদের জন্য এই বইটি অত্যান্ত জরুরি। ইনশাআল্লাহ, সময় করে বইটি নিয়ে লেখবো। যারা উর্দু জানেন তারা অবশ্যই এই বইটিকে নিজেদের মোতালায় রাখতে পারেন।

বইটির আলোচনা একটু উচ্চ মানের। তাই আগে পশ্চিমা সভ্যতা নিয়ে কিছু পড়া না থাকলে এটা বুঝা কষ্টকর হবে।

আর যারা আগে কিছু পড়েছেনও তাদের জন্যও সবচেয়ে ভালো হয়, এই বইটি যদি মাদরাসার তালেবে ইলম ও ভার্সিটির ভাইরা গ্রুপ করে পড়তে পারেন। কারণ প্রচুর ইংরেজি টার্ম যেমন আছে, তেমনি রয়েছে ইসলামি টার্মও।

মাওলানা আবু সাবের আব্দুল্লাহ সাহেবের বইয়ের ব্যাপারে আমার স্পষ্ট ঘোষণা ছিলো, আমার উস্তাদের নিষেধের কারণে আমি বইটির খণ্ডন লেখা বন্ধ করেছি। নচেৎ, যতটুকু খণ্ডন করেছি তার থেকেও আরো অনেক বেশি আপত্তি রয়েছে আমার বইয়ের উপর। এবং সেগুলোর কিছু তো যা লেখেছি সেগুলোর তুলনায় আরো ভয়ংকর।

কিন্তু হুজুরের কিছু কাছের মানুষরা আমার নামে কিছু অসত্য প্রচার করে বেড়াচ্ছে, 'ফেসবুকের একটা ছেলে এক দুটো শাখাগত (?) বিষয়ে কিছু আপত্তি করেছে, এতটুকুই। সেগুলোর জবাবও দেওয়া হয়ে গেছে।'

দেখুন, এসকল মিথ্যাচার আসলে কোনো ফায়দা নেই। এগুলো বলে কিছু বই বিক্রি বেশি করা যাবে, তবে এগুলোর দ্বারা উল্লেখযোগ্য কোনো ফায়দা পাবেন না! বরং যাদের সামনে রেখে এগুলো বলছেন তারা যখন আমাদের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করে বাস্তবতা জানতে পারছে, ঐ সকল ছাত্রদের কাছে আপনারাই ছোট হচ্ছেন! আল্লাহ ক্ষমা করুক মিথ্যুক সাব্যস্ত হচ্ছেন!

আমি আমার উস্তাদের আদেশের কারণে চুপ হয়েছি। আমাকে মুখ খুলতে বাধ্য করবেন না। যে সকল কারগুজারী আমাদের কাছে আসছে, আপনাদের ছাত্ররাই যার অনেকগুলো নিয়ে আসছে, সেগুলো বললে আপনাদের ব্যক্তিত্ব নষ্ট হবে, যা এই ভুখণ্ডের মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। আমি তেমন ভালো কেউ না, আমার নামে ভালো কিছু আপনারা বলেন সেটাও আমার দরকার নাই, কিন্তু মিথ্যাচার কইরেন না আল্লাহর ওয়াস্তে!
.
সাবের সাহেবের একান্তই আরেকজন কাছের মানুষ দরসে বসে ছাত্রদের সামনে আমাদেরকে তুচ্ছভরে বলেছেন, 'তাদের সামর্থ থাকলে তারা বই আকারে খণ্ডন নিয়ে আসুক। ওলামায়ে কেরাম পড়ে দেখুক কোনটা ভুল কোনটা সঠিক। ফেসবুকের লেখা কে পড়ে?'

এই বিষয়ে শুধু এতটুকু বলি, আমাদের করা খণ্ডনগুলো কী আপনারা সৎসাহস নিয়ে পড়েন! নিজেরাও পড়েন না, অন্যান্য মুরব্বিরাও যেনো না পড়ে সে ব্যবস্থাও তো করে থাকেন! এগুলোও তো আমরা বেশ নির্ভরযোগ্য সূত্রে পেয়ে থাকি!

যাইহোক, তারপরও যেহেতু আপনাদের দিলের তামান্না তাই জানিয়ে রাখা মুনাসেব মনে করছি, মাওলানা আবু সাবের আব্দুল্লাহ সাহেবের বইয়ের বিকৃতিগুলো নিয়ে বিস্তৃত একটি কাজ আসছে। ইসলামি সিয়াসাতের মৌলিক বিষয়সহ সাবের সাহেবের 'রাষ্ট্র-রাজনীতি' বইয়ের মৌলিক বিষয়গুলোর খণ্ডনে প্রায় এক হাজার পৃষ্ঠাব্যাপি তিন খণ্ডে হবে এই কাজটি। খুব দ্রুতই বইটির প্রথম খণ্ড আসবে ইনশাআল্লাহ। আর বইটি লেখতেছেন মারকাজুস সাহওয়ার শিক্ষাসচিব মাওলানা আবরার সিদ্দিকী হাফিজাহুল্লাহ। আল্লাহ কাজটিকে কবুল করে নিন এবং দ্রুত বের করার তাওফিক দান করুন।

আশা করি, বই আকারে খণ্ডন লেখার যে তামান্না আপনাদের সেটাও এই বইয়ের মাধ্যমে পূরণ হবে। এবং আশা রাখি আপনারা সেটা পড়বেন ইনশাআল্লাহ।

কাফেরদের প্রতি ভালোবাসার প্রকার ও বিধান

কাফেরদের সাথে আন্তরিক ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব রাখা হারাম। আর যদি এই ভালোবাসার ভিত্তি হয় তাদের ভ্রান্ত ধর্ম ও বিশ্বাসকে ভালো জ্ঞান করা, তবে তা স্পষ্ট কুফর। যদি তা ধর্মবিশ্বাসের কারণে না হয়, বরং পার্থিব কোনো কল্যাণ লাভ বা সৎ গুণগরিমার কারণে হয়, তাহলে সেটি কুফরি নয় বটে, তবে শরিয়তে তা নিষিদ্ধ ও গর্হিত কাজ।

হজরত মাওলানা মুফতি কিফায়াতুল্লাহ সাহেব রহিমাহুল্লাহ একটি প্রশ্নের জবাবে লিখেছেন, মুসলমানদের জন্য কাফেরদের প্রতি ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব লালন করা এবং মুসলমানদের বাদ দিয়ে কাফেরদের সাথে মেলামেশার প্রতি মুহাব্বত রাখা নাজায়েজ ও হারাম।

বই: মুসলিম-অমুসলিম সম্পর্ক
মুফতি উবাইদুর রহমান মারদান
চেতনা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত

"জালেম ও কাফেরকে ঘৃণা করা আহলে সুন্নাত ওয়াল-জামাতের আকিদার অংশ"

ইমাম তাহাবি রহিমাহুল্লাহ ইমাম আবু হানিফা, আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মাদ রহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণিত আহলুস সুন্নাহর আকিদাসমূহ একটি সংক্ষিপ্ত পুস্তিকায় একত্র করেছেন। সেখানে মুমিনের প্রতি বন্ধুত্ব আর কাফেরের সাথে শত্রুতার আকিদাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইমাম তাহাবি বলেন,
ونحب أهل العدل والأمانة ونبغض أهل الجور والخيانة.
আমরা ন্যায়নিষ্ঠ ও ইনসাফকারীদের ভালোবাসি আর অপরাধী ও খেয়ানতকারীদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করি।

বলাবাহুল্য, অপরাধ, জুলুম ও খেয়ানতের বড় একটি বহিঃপ্রকাশই হলো কুফরি গ্রহণ করা। আমাদের সালাফদের আকিদার কিতাবসমূহে এই মাসআলাটির অন্তর্ভুক্তি দ্বারা বিষয়টি তাদের নিকটও কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল তার কিছুটা আঁচ করা যায়।

বিস্তারিত জানতে পড়ুন: মুসলিম অমুসলিম সম্পর্ক
চেতনা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত