শহীদ মুনতাসির রহমানঃ
শহীদ মুনতাসির রহমানের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের দৌলখাঁড় ইউনিয়নের দেওভাণ্ডার সৈয়দ বাড়ি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি ডাইরেক্টর বাবা সৈয়দ গাজিউর রহমান ও মা শিরীন সুলতানার একমাত্র ছেলে মুনতাসির। তিনি মিরহাজারীবাগ তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় বিজ্ঞান বিভাগে আলিম প্রথম বর্ষে ভর্তি হন।
যেভাবে শহীদ হনঃ
সোমবার (৫ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে, সেনাবাহিনী এসে যাত্রাবাড়ী থানার সব পুলিশ সদস্যদের নিয়ে যায়। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা থানার দখল নিয়ে থানার গেট আটকে দেয়। এ সময় আন্দোলনরত ছাত্ররা দূর থেকে যাত্রাবাড়ী থানা ঘেরাও করে রাখেন। ফলে থানার দখল নেয়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ থানা থেকে লুণ্ঠিত অস্ত্র নিয়ে ছাত্রদের ওপর বেপরোয়াভাবে গুলি করতে থাকেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা যাত্রাবাড়ী এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে ঢুকেও অনেক ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করে। সেখানেই মুনতাসির রহমান মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকে।
সৈয়দ গাজিউর রহমান ছেলের মাথায় গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত নিথর দেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরের অনেক লাশের স্তূপের মাঝে খুঁজে পান। ছেলের মাথায় গুলি লেগে চোখের নিচ দিয়ে বের হয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত মাথা জাতীয় পতাকা দিয়ে বেঁধে দেয়া হয়। যাতে রক্ত বের না হয়।৫ আগস্ট দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বাবা সৈয়দ গাজিউর রহমান ছেলের মাথায় গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত নিথর দেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরের অনেক লাশের স্তূপের মাঝে খুঁজে পান। ছেলের মাথায় গুলি লেগে চোখের নিচ দিয়ে বের হয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত মাথা জাতীয় পতাকা দিয়ে বেঁধে দেয়া হয়। যাতে রক্ত বের না হয়।
পিতামাতা ও শিক্ষকের অভিব্যাক্তঃ
ছেলের বিনিময়ে আমি কিছু চাই না। ছাত্ররা চাকরিতে কোটাপ্রথা বাতিল, সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত দেশ, মুনাফাখোর, মজুদদারি, সিন্ডিকেট, অর্থ লুটকারীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, বাকস্বাধীনতা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলন করেছেন। তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য খোদভীরু, সৎ, দক্ষ ও যোগ্য লোক ক্ষমতায় আসতে হবে। তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন হলে আমার ছেলের স্বপ্ন পূরণ হবে।
শহীদ সৈয়দ মুনতাসির রহমান (১৫) তার বাবাকে বলতেন, দেশে কিসের স্বাধীনতা? আমরা চাকরি পাবো না। কথা বলতে পারি না। দেশ স্বাধীন না হলে। আমি লেখাপড়া করব না। আবার দেশ স্বাধীনের জন্য প্রয়োজনে যুদ্ধ করে আমি শহীদ হবো। শহীদ মুনতাসিরের প্রাণের বিনিময়ে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা নতুন বাংলাদেশ পেলেও মুনতাসির তা দেখে যেতে পারলেন না।